What a হাসবেন্ড পর্ব-৬+৭

0
1058

#What_a_হাসবেন্ড
#Tamanna_Tabassum(লেখনীতে)
#পর্ব-৬
আজ প্রায় ২ দিন হলো মহাশয় ফুলে আছে আমার উপর। গম্ভীর ভাবে হু হা করা ছাড়া আর তেমন একটা কথা বলে না। আমি কতকিছু করলাম সে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখালো না। এখন আমি চুপচাপ বসে আছি। সেও সোফায় চুপচাপ বসে আছে। আমার ননদ, শ্বশুর-শ্বাশুড়ি যে যার রুমে বসে আছে। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলাম ১১ টার উপরে বেজে গেছে এদিকে আমার জামাই মশাইয়ের কোনো হেলদোল নেই। আমার প্রচুর ঘুম পাচ্ছে। হঠাৎ মনে পড়লো আমি বাসা থেকে একটা ডিব্বা এনেছিলাম ওইটা লাগেজ থেকে বের করি নি। তাই লাগেজ থেকে আমার প্রাণ প্রিয় সেই ঐতিহাসিক ডিব্বাটা বের করলাম। আপনারা কিছু মনে করবেন না, আমি এইটাকে ডিব্বাই বলি 😐। ডিব্বা বলতেই শান্তি লাগে৷ আমার মনে আছে আমি যখন নাইনে পড়ি তখন এই ডিব্বাটা আমি আম্মুর কাছ থেকে নিয়েছিলাম। আম্মু দিতে চায় না😕, পরে জোর করে নিয়েছিলাম। ডিব্বা চেয়েছিলাম বলে আম্মু জিজ্ঞেস করেছিলো, ডিব্বা দিয়ে কী করবি?
আমি বলেছিলাম তুমি কী করো ডিব্বা দিয়ে? আম্মু বলেছিলো আমার চিনি, লবন, হলুদ রাখা লাগে তাই আমার এইগুলো লাগে। আমিও এরপর সোজাসাপটা জবাব দিয়েছিলাম যে আমারও অনেক কিছু রাখা লাগে। আমার এমন কথা শুনে আম্মু রেগেমেগে বলেছিলো,, ‘ডিব্বা দে নাইলে ফোন নিয়া যাবো ‘
ডিব্বা ফোন দুইটাই আমার দরকার, কাকে রেখে কাকে ছাড়বো? শেষে অনেক চিন্তাভাবনা করে ডিব্বাটা দিয়ে দিলাম। এরপর ওইদিন রাতে সবাই যখন ঘুমায় তখন ফোনের ফ্ল্যাশলাইট জ্বালিয়ে ওই ডিব্বা নিয়ে এসেছিলাম। ফোন যদি দিয়ে দিতাম তাইলে ডিব্বা পেতাম, কিন্তু ডিব্বা দিয়ে দিলে ফোন ডিব্বা দুইটাই পেতাম। এরপর সকালে আম্মু ডিব্বা ডিবনা করে পাগল বানায় দিচ্ছিলো। আমাকে কয়েকবার জিজ্ঞেসও করেছিলো আমি নিয়েছি কিনা। আমি অত্যন্ত সিরিয়াস হয়ে বলেছিলাম না তো আমি তো নেই নাই। তুমি না কাল নিয়ে গেলা। এরপর আম্মু আর আমি মিলে ডিব্বা অনেক খুজে ছিলাম, কিন্তু কেউই পাই নি 😐,, কোথাউ গেলো ডিব্বা?

আমি মুন আমার আছে মেলা মেলা গুন 😁।

এরপর থেকেই এই ডিব্বায় আমি আমার প্রয়োজনীয় জীনিস রাখি। আমি ডাইরি লিখতে পছন্দ করতাম না। আমার ভালো লাগতো কাগজ ছিড়ে ছোটছোট টুকরো করে নিজের ইচ্ছেগুলো লিখে রাখতে। আমি সারাদিনে যা করি সেগুলো যদি ডাইরিতে লিখতাম তাহলে ডাইরি বোধহয় অজ্ঞা’নই হয়ে যেতো, ডাইরির কথা ভেবে এই পন্থা অবলম্বন করা শুরু করি। i know 😎 i am Very very উদার।
এখন আমার এই ডিব্বাকে সুরক্ষিত একটা জায়গায় রাখতে হবে, কিন্তু কোথায় রাখি? অনেক চিন্তাভাবনার পর আলমারিতে রেখে দিলাম। পেছনে তাকিয়ে দেখলাম আমার উনি আমার দিকে তাকায় আছে। আলমারি লাগায় দিয়ে আমিও তার দিকে তাকায় থাকলাম। সেও আগের মতো তাকায় আছে। আমিও তাকায় আছি। কেউ যদি এখন এসে পড়ে তাহলে আমাদের এই তাকাতাকি দেখে ভরকে যাবে। আমাদের মধ্যে যেন তাকিয়ে থাকার প্রতিযোগিতা চলছে। স্কুলে, কলেজে থাকতে কোনো ছেলে যখন আমার দিকে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে থাকতো আমিও তার দিকে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে থাকতাম শেষমেশ ওই ছেলে লজ্জা পেয়ে অন্যদিকে তাকাতো। এখন জামাইয়ের উপর প্রয়োগ করে দেখি কী ফলাফল আসে। আমাকে এইভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে উনি বলল,” এইভাবে তাকিয়ে আছো কেন?”

-” কিসু কিসু ভালুপাসা তাকিয়ে তাকিয়েই হয় ”
-” কীহ😒”
-” না কিছু না। ঘুমাবেন না?”
-” হুম ”
-” আসুন ”

উনি কিছু না বলে শুয়ে পড়লো। আমি লাইট বন্ধ করে দিলাম। এরপর ঘুমিয়ে পড়লাম।

________________________

সকালে আম্মু ফোন দিয়ে বলল আব্বু নাকি অসুস্থ। আমি শ্বাশুড়িকে বিষয়টা জানালে সে বাড়িতে যাওয়ার অনুমতি দিয়ে দেয়। ওনাকে বলে দিলো আমাকে যেন দিয়ে আসে। উনি মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানালো। এরপর আমি উনি বেরিয়ে পরলাম। বাসে উঠলাম। রাস্তায় আমার সাথে কথা বলল না, এমনকি জানালার পাশের সীটটাও আমাকে দিলো না। উনি আমার সাথে কথা বলতে চান না ভালো কথা তাই বলে জানালার পাশেও বসতে দিবে না! ইচ্ছা তো করে মূলা খাওয়ায় দেই। এর প্রতি’শোধ তো আমি নিবোই নিবো, জানালার পাশে বসার শখ জনমকার মতো মিটায় দিবো।
.
প্রচুর বিরক্ত আমি ওনার উপর। বাতাস আমার কাছে আসতে চাচ্ছে কিন্তু উনি ঘুরে বসে আছে যার জন্য একটু বাতাসও আমার কাছে আসতেছে না। বাতাসের যদি মুখ থাকতো তাইলে ওনার গলা টি’পে বলতো ওই ভূতের মূভিটার মতো বলতো, ” যেতে দিবি না? আমাকে যেতে দিবি না?”
কিন্তু আফসোস বাতাস এমন কিছুই বলল না। আমি এদিক ওদিক তাকিয়ে মানুষদের দেখতেছি। কেউ ফোন টিপতেছে, কেউ ঘুমাচ্ছে। হঠাৎই বাসে একটা লোক জোরে জোরে বলতে লাগলো, ” আমড়া নিবেন?” কেউ নিলো। আমি থম মে’রে বসে আছি, কেননা এইসব আমি খাই না। বাসের প্রায় অনেকেই লোকটার থেকে আমড়া কিনল। আমার পাশে তাকিয়ে দেখলাম উনি প্রকৃতি দেখছে খুবই মনোযোগ দিয়ে, এখন যদি এদিকে তাকায় তাহলে অনেক বড় ধরনের কিছু হয়ে যাবে। সময় ভালো কাটছে না তাই আমি আমড়া চাইলাম লোকটার কাছ থেকে। উনি দিলো। আমিও খেলাম। দেখলাম নাহ, ততোটাও খারা’প না খেতে। খাওয়া শেষ করে আবার নিলাম, সেটা শেষ করে আবার নিলাম। এরপর ঝালমুড়িওয়ালা আসলো, আমি ঝালমুড়ি নিলাম। বুঝলাম না আমার উপর অদৃশ্য কোন আত্মা এসে যেন ভর করলো। আমি উড়াধুরা খেতে লাগলাম। পায়ের কাছে কাগজগুলো ফেলছি আর খাচ্ছি। আড়চোখে তাকিয়ে দেখলাম উনি আমার দিকে কেমন করে যেন তাকিয়ে আছে। আমি খাওয়া শেষ করে আবার চাইলাম। এরপর চানাচুরওয়ালা আসলো আমি চানাচুরও নিলাম। লোকেরা টাকা চাইলে বললাম,” উনি দিয়ে দিবে আমাকে খালি দিতে থাকেন।”
আমার জামা থেকে শুরু করে বাসে ছড়িয়ে ছিটিয়ে চানাচুর, আমড়ার পলিথিন, কাগজ পড়ে আছে।এদিকে আমার খাওয়া আরও বাকি আর ওদিকে লোকগুলো চলে যাচ্ছে। আমি তারাতাড়ি করে ওনাদের ডাকলাম।

-” ওও চাচা আমাকে চানাচুর, আমড়া সব….
আর কিছু বলতে পারলাম না। তাকিয়ে দেখলাম উনি আমার মুখ চেপে ধরে রাখছে। চানাচুরওয়ালা -রা বাস থেকে নেমে যেতেই উনি আমার মুখ ছেড়ে দিয়ে বললেন, ” আসো জানালার পাশে বসো। ”

আমি দাঁত কেলিয়ে বসে পড়লাম। উনি পড়ে থাকা পলিথিন গুলো উঠাতে লাগলেন। আমার কেন যেন খুব হাসি পাচ্ছে। তাহলে……?শেষ পর্যন্ত জানালার পাশে বসতে পারলাম 😉।

চলবে

#What_a_হাসবেন্ড
#Tamanna_Tabassum(লেখনীতে)
#পর্ব-৭
.
-” এই এই মুন ওঠো ”
কেউ আমার ডাকছে কিন্তু চোখে প্রচুর ঘুম তাকাতে পারছি না। কেউ আমাকে জোরে জোরে ধাক্কাচ্ছে। ধাক্কা খেতে খেয়ে একটা সময় ধাম করে বা’রি খেলাম। তাকিয়ে দেখি জানালা। সামনে তাকিয়ে দেখি উনি কোমড়ে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। বিরক্তি নিয়ে তাকালাম।
-” কী ঘুম দিসো হ্যাঁ? এতোবার ডাকার পরও ঘুম ভাঙ্গে না ”
আমি কিছু বললাম না। আমার কাঁচাঘুম ভেঙ্গে দিয়ে বলতেছে ঘুম কেন ভাঙ্গে না এইসব কী ধরনের কথা৷ তার সাথে কথা না বলেই উঠে দাড়ালাম। মন চাচ্ছে সব কিছু সরায় দিয়ে চলে যাই একদিকে। মেজাজ কেমন যেন তিরিক্ষি হয়ে আছে। ইচ্ছা করতাছে চিল্লায় কই যে ” কে আছোস? ঝগড়া করবি? আয় আয় জনমকার মতো ঝগড়া করার শখ মিটায় দিবো। খামড়ায়, থাপড়ায় এমন হাল করবো,,, উফফফ এতো রাগ উঠে কেন?
.
.
রোদের মধ্যে দাঁড়ায় আছি আর উনি কার সাথে যেন কথা বলতেছে। রিক্সাওয়ালারা কই যাইবেন কই যাইবেন করতেছে৷ আবার গাড়ির হর্নের শব্দ, আমার বিরক্তিটা আসতে আসতে যেন বেড়ে গেলো৷ ওনাকে জিজ্ঞেস করলাম, ” এই আপনি কো যাবেন না? রোদে থাকতে থাকতে কঙ্কাল হয়ে যাচ্ছি দেখতে পাচ্ছেন না? ”
উনি ফোন রেখে আমার দিকে তাকালো। মাথা থেকে পা পর্যন্ত চোখ বুলিয়ে নিলো৷ ওনাকে এভাবে তাকাতে দেখে আমি কোমড়ে হাত দিয়ে একটা সেই রকমের পোজ দিলাম। বললাম, ” কেমন লাগে আমাকে? ”
উনি আমার কথাকে পাত্তা না দিয়ে একটা রিক্সাকে ডাক দিলো। মানে কী? আমাকে পাত্তা দেয় না! what a হাসব্যান্ড 😒!
.
বাড়িতে এসে আমি আমার রুমে চলে আসলাম। আম্মু আমাকে ঢুকতে দেখে বলল,” জামাই কই?”
আমি খুঁজে নাও বলে এসে পড়লাম। একটাবার কেমন আছি জিজ্ঞেস করলো না আবার আসছে জামাইয়ের খবর নিতে, এদের ঢং দেখলে বাচি না।
.
এখানে আমার দিন ভালোই কাটছে। এই কয়েকদিনে উনি আমাকে একটা কল ও দেয় নাই। আমিও দেই নাই। আমি আমার বারান্দা নিয়ে বিন্দাস আছি। এমনি কোনো এক বিকেলকে বরবাদ করার জন্য উনি কল দিলেন। আমি ধরলাম, এরপর উনি চুপ আমিও চুপ। কেউ কোনো কথা বলছি না। এমনভাবে কয়েক মিনিট চলে গেলো উনি কথা বললেন না, আমিও বললাম না। শেষে কল কেটে দিলাম। এরপর উনি আবার দিলেন। আমি ধরলাম। আগের মতো নিরবতা পালন করছি আমরা। আমি ফ্রিজ থেকে একটা কমলা নিয়ে খেতে বসলাম, একটা কমলা খাওয়া শেষ হবে এরপর কল কেটে দিবো। এরপর আবার কমলা নিয়ে কল রিসিভ করবো এরপর সেটা খাওয়া শেষ হওয়ার পর পরই কল কেটে দিবো। একবার, দুইবার, তিনবার, চারবারের বেলায় উনি কথা বললেন৷ আমার প্রচুর হাসি পাচ্ছে 🤭। দুইহাত দিয়ে মুখ চেপে হাসছি।

-” হাসো কেন? ”
-” এমনিই ”
-” কথা বলো না কেন? ”
-” আপনিও তো বলেন নি ”
কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে উনি বললেন, “তুমি আলমারিতে কাল কী রেখে গেছিলা? ”
-” কী রেখেছিলাম? ”
-” ওইযে একটা বয়াম! ”
-” আমার ডিব্বার কথা বলছেন আপনি? ”
-” হুম হুম সেটা কোথায় জানো? ”
-” খবরদার ওইটায় হাত লাগাবেন না ”
-” না লাগাই নি। ঢাকনা খুলে কাগজগুলোতে কী লিখা শুধু একটা দেখছি ”
-” আমার সাথে এটা আপনি কীভাবে করলেন হ্যাঁ? ”
-” 🥱”
-” আমার এমন করতে আপনার একটাবারও বুকটা কেঁপে উঠলো না ”
-” না। তোমার সব কিছু জেনে গেছি। হাহ হাহ হা!”
-” শাট আপ ”
আমি ফোন কেটে দিলাম। ডিব্বাটা রেখে আসা আমার জীবনের সব চেয়ে বড় ভুল ছিলো। এখন উনি ওইসব পড়ে আমার উপর হাসবেন। হায় রেএ!
.
রাতে খাওয়া দাওয়া শেষে আব্বুর সাথে কিছুক্ষণ কথা বললাম। জিজ্ঞেস করলাম হঠাৎ করে ওনার কী হয়ে গেলো? আব্বু বলল প্রেসার নাকি একটু বেড়ে গেছিলো। এরপর আম্মু আসলো। আমরা তিনজন মিলে জমপেশ আড্ডা দিলাম। মনে হচ্ছে তিন বন্ধুর কতোদিন পর দেখা হলো। হঠাৎ করে আম্মু বলল, “মুন তোকে একটা জিজ্ঞেস করি সত্যি করে বলবি, ঠিকাছে?”
আমি ইমোশনাল হয়ে বললাম হ্যাঁ বলবো। আম্মু এইবার আব্বুর সামনে বলতে আড়ম্ভ করলো, “সেদিন আলুগুলো কী তুই খেয়েছিলি?”

ব্যাস! হয়ে গেলো 🙂। আমার কলিজা টিপ টিপ করতে লাগলো। আব্বু রেগে গেলো। বলল, “এইসব কী বলো তুমি হ্যাঁ? আলু খেতে ও পছন্দ করে তারমানে এইনা যে চু’রি করে খাবে। ঘরে যা করে বাহিরে গিয়েও কী তাই করবে!”

আমি এমন সময় মারা’ত্মক ইমোশনাল হয়ে বললাম, ” তুমি আমাকে এটা বলতে পারলা আম্মু?এই কথাটা বলতে তোমার একটা বারও কী কলিজাটা কেঁপে উঠলো না? আমি আলু খাই বলে এতো বড় অপ’মান টা করতে পারলা? আমার মনটা এভাবে ভেঙ্গে দিতে পারলে? ঠিকাছে আমি যাওয়ার সময় তোমাকে এক কেজি আলু কিনে দিবো। ”
হৃদয় কাঁপানো কথাগুলো আশা করি সবাইকে ভরকে দিয়েছে, এইবার নিশ্চিন্তে একটা ঘুম দিবো। আসার সময় শুনলাম আব্বু আম্মুকে বলতেছিলো, “এইভাবে ওকে না বললেও পারতে, মেয়েটা কষ্ট পেলো। ”
শুনলাম আম্মু বলছে, ” তোমার আলু খোর মেয়ে কী করতে পারে তা একমাত্র আমিই জানি, তাই বেশি কথা বইলো না, ঘুমাও। আজকেও তরকারির আলুগুলো খেয়ে রাখছে। পাতিল দেখাবোও? ”
আর কিছু শুনতে আমার ইচ্ছে হলো না। ভাবছিলাম বিয়ের পর প্রেস্টিজ বেড়ে যাবে। এখন দেখি পদে পদে লজ্জা পাচ্ছি।
.
.
রাত ১.২০ মিনিট,,,,
অনেক ঘুমানোর চেষ্টা করলাম কিন্তু ঘুম আসছিলোই না। অবশেষে আসলো, আবার ভেঙ্গেও গেলো। ফোন বাজতেছে। তাকিয়ে দেখি স্ক্রিনে বড় বড় করে লিখা ” What a হাসব্যান্ড ”
রিসিভ করে হ্যালো বলতেই উনি অনেক এক্সাইটেড হয়ে বলল, মুন তোমার রিলেশন করে বিয়ে করার ইচ্ছে ছিলো?
-” তো রাতে এটা জানতে ফোন দিয়েছেন? ”
-” আরেএ বলো না,, সত্যিই কী?”
-” ডিব্বা খুইলা দেইখা নেন, আমাকে ফোন দিবেন না ”
বলেই ঘুমিয়ে পড়লাম।
.
সকালবেলা ঘুম ভাঙ্গতেই দেখি আমি দাঁড়ায় আছে।
-” ঘুম ভাঙ্গলো আপনার? উঠেন উঠেন নাস্তা করবেন আসেন ”
-” আসতেছি, এভাবে কথা বলতেছো কেন?”
উঠে দাঁত ব্রাশ করলাম। টেবিলে গিয়ে দেখি মহাশয় বসে আছেন। তাকে দেখে ডাইনিং টেবিলে বসতে গিয়েও বসলাম না। উলটো দিকে হাটা দিলাম। আম্মু পেছন থেকে বলল,” কোথায় যাচ্ছিস? জামাই তোর জন্য বসে আছে”
আমি দরজা লাগায় বসে থাকলাম। আম্মু দরজা ধাক্কাচ্ছে। আব্বু এসেও ডেকে গেলো কিন্তু আমি খুললাম না। ওনার সাথে আমি যাবো না। কিছুতেই না। এই রুম, খাট, বারান্দা, কোলবালিশ ছেড়ে কিছুতেই আমি যাবো না। হঠাৎ ওনার নাম্বার থেকে কল আসলো। আমি সাথে সাথে কেটে দিলাম। ওনার মাথার নাট বল্টু বোধহয় ঢিলা হয়ে গেছে। একই ফ্ল্যাটে থেকে এক রুম থেকে অন্য রুমে কল দিচ্ছেন। বউ ছাড়া পাগল বোধহয় হয়ে গেছেন।
.
উনি অনবরত কল দিয়েই যাচ্ছেন, শেষে আমি মেসেজ পাঠালাম।

-” আপনার মাথার কয়টা নাট বল্টু ঢিলা হয়েছে একটু বলবেন? না মানে স্ক্রু-ড্রাইভার দিয়ে টাইট করে দিতাম। ”
কিছুক্ষণ পর উনি লিখলো, ” সবগুলোই ঢিলা হয়ে গেছে, আর এই নাট বল্টু ঠিক করতে স্ক্রু-ড্রাইভার না, আমার বউকে দরকার ”

মেসেজ টা পড়ে ভীষণ লজ্জা লাগলো। রুমে কেউ নেই তাও নিজের কাছে নিজেরই প্রচুর লজ্জা লাগছে। চাদর গায়ে দিয়ে মুখ ঢেকে ফেললাম। তারপরও লজ্জা পাচ্ছি। উপরে একটা বালিশ দিলাম। এরপরও লজ্জা কমলো না। লজ্জা পেতে পেতে একেবারে চিংড়ি মাছের মতো গোল হয়ে গেলাম। ইসসসসস! এমন লজ্জা আমি কোনোদিন পাইনি।

চলবে 🤭

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে