My_Mafia_Boss পর্ব-২৫
Writer:Tabassum Riana
জানালার বাহিরে তাকিয়ে আছে রোয়েন।বাহিরের পরিবেশটা ওর কষ্টগুলোকে মনে করিয়ে দিচ্ছে বারবার।ওর মায়াবতীকে কষ্ট দিয়ে ফেলেছে ও মনের অজান্তেই।আজ যা করেছে সেটাকি না করলে হতো না?ভালো ভাবে বুঝালেই পারতো কিন্তু…….দীর্ঘনিশ্বাস বেরিয়ে আসে রোয়েনের বুক চিরে।চোখের কোনে জমে থাকা অশ্রুকনা গুলো না চাইতেই গাল বেয়ে গড়িয়ে পড়লো।আরেকটা বার মায়াবতীকে দেখতে পেত?একটু ভালবাসতে পারতো আরেকটাবার?পকেট থেকে মোবাইল বের করে রুহীর ছবিটি একবার দেখে নেয় রোয়েন।আর কি মায়াবতীর দেখা পাবে ও?আজ যদি ওর কিছু হয়ে যায় তাহলে হয়ত মায়াবতী তার আগের জীবনে ফিরে যাবে।মায়াবতী কি ওকে মিস করবে?হয়ত করবে?রানা!!!!!!
ড্রাইভিং করতে থাকা লোকটি রোয়েনের দিকে তাকালো।জি স্যার বলুন।রোয়েন বলতে লাগলো আজ যদি আমি মারা যাই তাহলে রুহীকে আমার ব্যাংকে জমানো টাকা গুলো দিয়ে দিও।আমার ফার্ম হাউজে থাকার ব্যাবস্থা করে দিও।ওর যেন কোন সমস্যা না হয় বলেই থামলো রোয়েন।রানা বেশ অবাক হয় রোয়েন কখনো মৃত্যুকে ভয় পায়নি তাহলে আজ এমন কথা কেন বলছে? জি স্যার আমি করবো।রোয়েন আবার জানালার বাহিরে তাকায়।
জায়াগামতো পৌছে যায় ওরা কিছুক্ষনের মাঝেই।ওদের লোক চারিদিকে ছড়িয়ে পড়েছে।ডার্ক গ্রুপের লিডার রুহান আসলাম বেশ চতুর টাইপের মানুষ তাকে জব্দ করা বেশ জটিল।রোয়েনরা চারটা কালো গাড়ি নিয়ে এসেছে।এখান থেকে বের করা মুশকিল রোয়েন কোন গাড়িতে আছে।ডার্ক গ্রুপের লোকেরা কিছুক্ষন প্রচেষ্টা চালানোর পর তারা রোয়েনকে খুঁজতে ব্যার্থ হয়প পড়ে আর সেটার সুযোগে টাাইগার গ্রুপ ডার্কগ্রুপের ওপর আক্রমন চালায়।বেশ কিছু লোককে মারতে সক্ষম হয় তারা।রোয়েন তার দলবলকে ইশারা করলো জলদি সরে যেতে কারন ডার্ক গ্রুপ পালিয়েছে।তাও বলা যায়না ওরা যদি রোয়েনদের ওপর উল্টা আক্রমন করে বসে?রোয়েনের গাড়িতে তিনজন বসেছে ওকে সেফটি দেয়ার জন্য।
রুহীর মধ্যে ভীষন অস্থিরতা কাজ করছে।রোয়েনকে একটাবার না দেখা পর্যন্ত কোনভাবেই শান্তি পাবেনা ও।ড্রয়িংরুমের জানালা দিয়ে তাকিয়ে রোয়েনের আসার অপেক্ষায় আছে রুহী।হঠাৎ রোয়েনের গাড়ি বন্ধ হয়ে গেল।স্যার আপনি বসুন আমরা দেখছি লোক গুলো বেরিয়ে পড়লো গাড়ি থেকে।কিছুক্ষন পর একজন এসে বলে পানি লাগবে গাড়িতে। যাও নিয়ে এসো বলে গাড়ি থেকে বেরিয়ে আসে রোয়েন সিগারেট ধরায়।রুহী হঠাৎ জানালা দিয়ে রোয়েনের গাড়ি দেখতে পায়।মুখে হাসি ফুটে উঠে ওর।দৌড়ে গিয়ে দরজা খুলতেই রোয়েনকে দেখতে পায় রুহী চোখে পানি চলে এসেছে ওর।কি অানন্দ লাগছে তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো ও নয়।রোয়েন বলে উঠে ঠিক আছো রুহী?রোয়েনের চোখে পানি জমে আছে কেমন করুন চোখে রুহীর দিকে তাকিয়ে আছে ও।হ্যা আমি ঠিক আছি বলতেই রোয়েন রুহীর কাঁধে ঢলে পড়লো।কি হয়েছে আপনার?রুহী জিজ্ঞেস করে রোয়েনের মাথায় হাত দিতেই ভিজা লাগে ওর।হাত বের করে দেখে পুরো হাত রক্তে মেখে গেছে রুহীর।রুহী কিছু বলতে পারেনা আর।
বর্তমান
রোয়েনকে ইমার্জেন্সি তে নেয়া হয়েছে।ওনার অবস্থা নাকি ভালো না।রুহী কিছু বলছেনা শুধু পলকহীন ভাবে রুমটির দিকে তাকিয়ে আছে।ওর চোখ জোড়া বেয়ে অনবরত অশ্রু গড়িয়ে পড়ছে।ম্যাম উঠে বেঞ্চে বসেন। লোকগুলো রুহীকে উঠানোর চেষ্টা করে কিন্তু রুহী আগের মতোই বসে আছে।কিছুক্ষন পর পরই ডুকরে কেঁদে উঠছে রুহী।ডাক্তার আসতেই উঠে দাঁড়ালো ও ওনার কি অবস্থা?ওনার অবস্থা আগের থেকে একটু ভালো।দেখা করা যাবে না(রুহী)?না ম্যাম স্যার রেস্ট নিচ্ছেন।কাল দেখা করতে হবে। আমি থাকতে পারবো ওনার সাথে(রুহী)?না কাল আসলেই পারবেন(ডাক্তার)।
আমি ওনাকে ডিস্টার্ব করবোনা শুধু ওনার পাশে বসে থাকবো।প্লিজ দিন না আকুতির স্বরে বলল রুহী।ডাক্তার কিছুক্ষন চিন্তা করে বলল ওকে।ওনার কাছে থাকেন।হালকা হাসে রুহী ধন্যবাদ।ডাক্তার চলে যেতেই রোয়েনের রুমে ঢুকে রুহী।ওর বুকে মাথায় ব্যান্ডেজ করা।রুহী মুখে হাত চেপে ধরে।চোখের কোনা বেয়ে দুফোঁটা অশ্রু গড়িয়ে পড়ে।রুহী রোয়েনের পাশের টুলটায় বসে রোয়েনের হাতের ওপর হাত রাখে।
সকালে রোয়েনের জ্ঞান ফিরে আসে।পাশে তাকাতেই মায়াবতী কে দেখতে পায় রোয়েন।রুহি চেয়ারে হ্যালান দিয়ে ঘুমিয়ে আছে আর একহাত দিয়ে রোয়েনের হাত ধরে আছে।রুহী!!! রুহী!!!!ফিসফিসিয়ে ডাকছে রোয়েন।কিন্তু রুহীর ঘুম ভাঙ্গছে না।রোয়েন রুহীর ধরে থাকা হাতে জোরে চাপ দিতেই ধড়ফড়িয়ে উঠে বসলো রুহী।আপনি উঠেছেন?রোয়েনের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলো রুহী?হুম রুহীর দিকে একনজর তাকিয়ে জবাব দিলো।হঠাৎ ডাক্তার আর নার্স রুমে এসে রোয়েনের কাছে দাঁড়ালেন।রোয়েনের মেডিসিন চেক করছেন ওনারা।হঠাৎ ডাতার রুহীর দিকে তাকিয়ে বলে উঠে মিসেস আহমেদ নাস্তা কিছুক্ষণ পর পাঠানো হবে ওনাকে খাইয়ে দিবেন।রোয়েন ডাক্তারের মুখের দিকে তাকিয়ে রুহীর দিকে তাকালো অবাক চোখে।জি ডাক্তার মুচকি হেসে বলল রুহী।
এখন আমাদের অনেক বেশি সাবধানে থাকতে হবে রুহী।রুহী মাথা নিচু করলো সে তো রোয়েনকে আর হারাতে চায়না।কি হলো শুনোনি কি বলছি?রোয়েন রাগী গলায় বলে উঠলো।হুম শুনেছি আপনি যা বলবেন তাই করবো মাথা নিচু করে বলল রুহী।
হুম রোয়েন একটা নম্বরে কল দিলো ওপাশ থেকে কিছু বলার পর ও বলল অস্ট্রিয়ার ২টো টিকিট করার ব্যাবস্থা করো আর্জেন্ট।(এখন এখানে থাকা ঝুঁকিপূর্ণ।)
ফোন কেঁটে দিলো রোয়েন।
চলবে