#Love_warning❤️
#your_love_is_my_drug_addiction?
#Part_29
#ফারজানা
???
তিতি আগে থেকেই একদম কর্নারে ছিলো। সামু তাই সুযোগ বুঝেই তিতি কে ধাক্কা মারতে গেলো……
ঠিক তখনি শিশির সামুর হাত ধরে বলে…..
“আই অ্যাম আ ডিস্কো ড্যান্সার। তিতি কে মারার স্পর্ধা হয় কেমনে তোমার। আই অ্যাম আ ডিস্কো ড্যান্সার। ”
“তুম তুমি তো মাতাল ছিলে”
অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করলো সামু তখন শিশির বললো…..
“আমি মাতাল ছিলাম না। তুমি যেই ওষুধ গুলো আমার পানিতে মিশাতে তা আমি কোনোদিন খাইনি”
“মাম মানে?”
“কারণ আমি তোমার পরিকল্পনা জেনে গিয়েছিলাম হিহিহিহি”
“এইটা সম্ভব না ”
“হুম সম্ভব আপু। তুমি সব সময় খারাপ কাজ করবে আর ধরা খাবে না তা কি করে হয় বলোতো?”
“মানে তুমি জানলে কিভাবে?”
তিতি তখন বললো……
“শিশির আগে সামু কে অর্ণবের কাছে নিয়ে যাই পরে হবে সব কথা”
“দাড়া তিতি মুরগি। আগে আপুকে কথাটা বলি পরে না হয় ভাইয়ার কাছে নিয়ে যাবো। কজ আমার মনে হয় ভাইয়া আজ এই কাল নাগিনিকে এই পাহাড় থেকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিবে তাই মৃত্যুর আগে কথাটা বলে দেই”
“তোমরা সব জানতে তার মানে?”
শিশির বললো
“আমি জানতাম না কিন্তু তিতি বেবি জানতো”
“তাহলে তিতি এতদিন বলে নাই কেনো?”
“ও তোমাকে সুযোগ দিয়েছিলো। আর তুমি অর্ণব ভাইয়ার খুব কাছের একজন মানুষ তাই তিতি বেবি অর্ণব ভাইয়াকে কষ্ট দিতে চাইনি”
“জানো কি সামু আপু? প্রথম থেকেই তোমাকে কেনো যেনো সন্দেহ হতো। তাও ভেবেছি কিছু বলবো না। ওয়াচ টাওয়ারে শুভ্র ভাইয়া অনুরোধ করেছিল তোমায় যেনো কিছু না বলি কিছুদিন পর নাকি তোমাকে নিয়ে ভাইয়া কানাডা চলে যাবে। তাই আমিও চাইনি তুমি যাওয়ার আগে অর্ণব তোমার এইসব কু কীর্তি গুলো জানক”
“তারমানে ওইদিন জাহাজে তুমি যে আমাকে”
“ওহহহহ ওইটা যে তুমিই আমায় ধাক্কা মেরেছিলে আমি বুঝতে পারছিলাম। কিন্তু শুভ্র ভাইয়ার কথা আর আমাদের এত সুন্দর জায়গায় ঘুরতে আসা আমি নষ্ট করতে চাইনি তাই সব ধামা চাপা দিয়ে রাখছিলাম।”
সামু তিতির কথা শুনে ঢুক গিললো পরে বললো…..
“নেশার ওষুধের কথা তোমরা জানলে কিভাবে?”
শিশির তখন বললো…..
“যেদিন জাহাজ থেকে সব গুছগাচ করছিলাম তখন তোমার ব্যাগে দেখতে পাই আমি। তখন ওই কেবিনে শুভ্র ভাইয়া প্রবেশ করে আর ভাইয়া এইসব দেখে বুঝতে পারে। তখন শুভ্র ভাইয়া সব ঘটনা খুলে বলে আমায়। পরে ভাইয়া বলেছিলো তোমায় নজরে রাখতে তাই আমি ও তোমায় নজরে রাখি আর দেখি তুমি আমার খাবারেই এইসব মিশাও।”
তখন তিতি বললো…..
“তাইতো গতকাল রাতে তুমি ঘুমিয়ে যাওয়ার পর আমি শুভ্র ভাইয়া আর শিশির প্ল্যান করি সকালে আমি পাহাড়ে আসবো আর আসার সময় তোমাকে একটু জাগিয়ে দিয়ে আসবো আর আমি জানি তুমি জেগে যাবে কিন্তু ঘুমানোর নাটক করবে ঠিক তাই করেছো। ”
“তিতি চলে যাবার পর তুমি আমাকে ম্যাঙ্গো জুস দেও খাওয়ার জন্য কিন্তু তুমি বুঝতে পারো নাই আমি না খেয়ে সব বাহিরে ফেলছি। পরে মাতাল হওয়ার অভিনয় করি আর তোমার খারাপ কাজ ভিডিও করি”
ভিডিও করার কথা শুনে সামু বলে…..
“ফোন তুমি তো ফোন বাসায় রেখে এসেছো”
তিতি তখন হাসতে হাসতে বলে…..
“আপু এত কিছু জানার পরও কিভাবে বলছো আমরা ফোন বাসায় রেখে আসবো। দেখো শিশিরের ওরনায় তাকিয়ে”
সামু তাকিয়ে দেখে ওরনা কালার ফোনের বক্স বা কাবার তাই বুঝতে পারে নাই সামু……
“ওহ শিট। আমার আগেই বুঝা উচিৎ ছিলো আমার সবচেয়ে বড় শত্রু শুভ্র ওকেই আগে রাস্তা থেকে সরানো উচিত ছিল। ”
“তুই আমাকে মারতে পারতি সামু?”
সামু পিছনে দেখে অর্ণব প্রবণ আর শুভ্র দাড়িয়ে। অর্ণবের চোখ থেকে মনে হচ্ছে আগুন বের হবে।
“হুম পারতাম। তুই তো ভাই নামের কলঙ্গ তোর মতো ভাই থাকার চেয়ে খুন করা ভালো”
“ঠাস। তোকে খুব আদর ভালোবাসতাম নিজের ছোট বোন ভাবতাম আর তুই কিনা আজ এতটা জঘন্য কাজ করতে পারলি”
অর্ণব সামুর চুলের মুঠি ধরে সামু কে মারতে লাগলো। তিতি কাছে যেতেই শিশির তিতির হাত ধরে ফেলে। শুভ্র তখন অর্ণবের কাছ থেকে সামু কে ছাড়িয়ে নিজেও কয়েকটা থাপ্পড় মারে…..
“ঠিকই বলছিস তোর মত বোন থাকার চেয়ে না থাকা ভালো”
প্রবণ তখন বললো……
“ওকে আর মারিস না। আমি এইখানের পুলিশ কে ফোন দিচ্ছি আর বলি । যেহেতু মার্ডার কেস ওর শাস্তি হবে। আর পরে না হয় আদালত যা বেবস্থা নিবে তাই হবে।শুধু শুধু ওকে মেরে নিজেদের কষ্ট দিস না”
সামু কে পুলিশে দেওয়া হয়। তারপরে তিতিরা দুইদিন থাকে রাঙামাটি। পরে সবাই মিলে আবার ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। তিতির দাদুর ইচ্ছা রাখার জন্য অর্ণব তিতি শিশির প্রবণ ওরা বিয়েতে রাজি হয়। তিতির দাদু শিশিরের আব্বুকে বিয়ের কথা বলায় শিশিরের আব্বু আর না করলো না।
সবাই ট্রেনে চড়ে ঢাকা যাবে বলে ঠিক করেছে………
ট্রেন স্টেশনের কাছে আসতেই ধীরে ধীরে এগুচ্ছে। তখন শুভ্রের চোখ এক জায়গায় গিয়ে আটকে যায়। ট্রেন থামার সাথে সাথেই দৌড়ে চলে যায়। শুভ্রের পিছন পিছন অর্ণব প্রবণ তিতি ও শিশির দুইজনেই চলে যায়।
“মায়াবিনী”
মায়াবিনী নামটা শুনেই মেয়েটি শুভ্রের দিকে তাকালো আর হাসি দিয়ে সাথে অবাক হয়ে বললো……
“শুভ্র তুমি এইখানে?”
শুভ্র তার মায়াবিনী কে দেখে প্রথম রাগ করে চড় বসিয়ে দিলো গালে……
মায়াবিনী তার গালে হাত দিয়ে শুভ্রের দিকে তাকিয়ে রইলো…….
“ওই তুই আমার সাথে মিথ্যা নাটক কেনো করলি কেনো আমায় কষ্ট দিলি কেনোই বা আমাকে ধোঁকা দিলি”
“আমি কোনো ধোঁকা দেয় নি শুভ্র”
শুভ্রের রাগ এখন আরো বেড়ে গেলো। পরিবেশ ঠিক রাখার জন্য অর্ণব বললো……
“শুভ্র আগে তোর মায়াবিনী কে নিয়ে আমাদের সাথে নিয়ে চল পরে বাসায় গিয়ে সব জানা যাবে”
“ওই তোমার কি মাথা ঠিক আছে? তুমি বলবে আর ওনি চলে যাবে নাকি। ওনার পরিবারের মানুষজন আছে না?”
“ওই একদম চুপ। আমার দোস্ত এতদিন কষ্ট পাইছে এখন তার মায়াবিনী কে সে ফিরে পাইছে। এখন যদি মেয়েটা রাজি না হয় তুলে নিয়ে যাবো।”
“সব সব ওয়ার্ণিং এ কি কাজ হয় ভালোবেসে তো বলতে পারো”
“শুনো তিতির পাখি এইটা যে সেই ওয়ার্ণিং না এইটা হলো #Love_warning এই রকম ওয়ার্ণিং গুলো এমনি হয় বুঝতে পেরেছো?”
“তোমার মত পাগলের সাথে কথা বলার কোনো ইচ্ছাই নাই। আর শুভ্র ভাইয়া আপনারা দুই ভাই কি মাইর দেওয়া ছাড়া কথা বলতে পারেন না। কিছু হলেই ঠাস ঠাস বলি এইভাবে না মেরে একটু আদর করে তো বলতে পারেন”
শিশির তখন বললো…..
“শুধু দুইজন নাকি আরো একজন ও আছে অবশ্য আমাকে মারে নাই তাও রাগ কিন্তু একই রকম”
প্রবণ চোখ বাকা করে বললো…..
“এইভাবে না বলে সরাসরি বলতেই পারো যে তোমার আমার হাতের মাইর খেতে ইচ্ছা আছে এত ঢং করে বলার কি আছে”
তিতি তখন রেগে বললো…..
“সব গুলাই এক। দাড়ান আপুটাকে জিজ্ঞাসা করছি…. আচ্ছা আপু তোমার কি আমাদের সাথে যেতে কোনো আপত্তি আছে?”
“নাহ আপু। আসলে আমি বাড়ি থেকে পালিয়ে এসেছি। যেকোনো সময় ওরা এসে যাবে প্লিজ তার আগে এইখান থেকে চলো তোমাদের সব বলছি। আর কেনোই বা তোমার পিকের সাথে আমার পিক এডিট করেছি তার আগে এইখান থেকে চলো”
শুভ্রের মায়াবিনী ভয়ে ভয়ে বললো। শুভ্র কিছু না বলে হাঁটা শুরু করলো সাথে অর্ণব আর প্রবণ। শিশির তিতি মেয়েটাকে নিয়ে যেতে লাগলো……
শুভ্রের মায়াবিনী প্রথম তিতি শিশির কে দেখে অবাক হয় পরে ওদের কথা বার্তা শুনে সব বুঝতে পারে।
তিতির দাদু চাচা চাচী ভাই ভাবী আর ভাইপো ওরা তিতির বাসায় চলে গেলো। অর্ণব তিতি শিশির আর মেয়েটাকে নিয়ে প্রবণের বাসায় চলে গেলো।
সবাই ফ্রেশ হয়ে আসলো। আসার পরেই শুভ্র জিজ্ঞাসা করলো…….
“এমন কেনো করেছো আগে বলো?”
শিশির তখন বললো……
“ভাই রে ভাই এইভাবে পুলিশের মত জেরা করা ছাড়া আর কোনো কাজ নাই। দেখছেন আপুটা সমস্যায় আছে তারউপর আপনার দেওয়া স্পেশাল ঠাস ঠাস এখন একটু খাওয়া দাওয়া করবে তারও কোনো সুযোগ নেই। বলি আপনারা ছেলে বলে আপনাদের কথায় সব হবে নাকি?”
শুভ্র রাগী চোখে শিশিরের দিকে তাকালো। তিতি তখন বললো……
“এইভাবে তাকালে কি ভয় পাই আমরা হুম। ভুলে যেয়েন না দেশের প্রধান মন্ত্রী এখন নারী। সো সাবধানে কথা বলবেন আর চোখ পাকাবেন না”
অর্ণব তখন প্রবণের চুল টেনে বললো…..
“ভাই দেখ তোর বউ আমার কি সর্বনাশ করেছে এখন আমি কই যাবো?”
অর্ণবের কথা শুনে সবাই অর্ণব কে পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখতে লাগলো তখন শিশির বললো……
“প্রবণ স্যার আপনার চুল ধরে বলছি আমি কিছু করি নাই। তওবা তওবা আমি পুরুষ নির্যাতন করি না”
প্রবণ তখন বললো…..
“ভাই তুই তোর বউ রেখে আমার বউয়ের উপর কি দোষ চাপাচ্ছিস দেখ ভাই পেশার বেড়ে যাচ্ছে আমার”
তিতি তখন বললো…..
“ওই সব বাদ আগে বলেন এত বউ বউ করছেন কেনো?”
অর্ণব বললো…..
“আজ একটা সত্যি কথা বলি তিতির পাখি প্লিজ রাগ করবে না?”
তিতি বললো….
“হুম বলো। আর যদি রাগের কথা হয় তাহলে তো অবশ্যই রাগ করবো”
“তাহলে বলবো না বিয়ের পরেই বলবো”
তখন শুভ্র বললো……
“শালারা কইবার বিয়ে করবি। বিয়েতে করেই ফেলেছিস তাহলে ভয় পাওয়ার কি আছে? শুনুন ভাবীরা আমি বলছি….প্রবণ আর অর্ণব বিয়ে করে ফেলেছে আপনাদের না জানিয়ে”
প্রবণ আর অর্ণব শুভ্রের মুখ চেপে ধরলো তাও শুভ্র বলে ফেললো…..
“হোয়াটটটটটটটটটটট?”
তিতি আর শিশির একসাথে চিল্লিয়ে বললো কথাটা…….
চলবে…..
বানান ভুল হলে ক্ষমা করবেন। এক কি দুই পর্বে গল্পটা শেষ করে দিবো ইনশাআল্লাহ।