#Love_warning❤️
#your_love_is_my_drug_addiction?
#Part_21
#ফারজানা
???
“ওয়েট মায়াবিনী”
শুভ্র তার ফোন থেকে লাইভে সামু আর অর্ণবের ঘুরতে যাওয়া ভিডিও দেখাচ্ছে। অর্ণব সামু খুব ঘনিষ্ট ভাবে হাঁটা চলা করছে।
“এইগুলো স্বাভাবিক এইগুলো কোনো প্রুভ হলো নাকি। আপনি আমার সাথে গেম খেলছেন তাই না”
“কাম অন মায়াবিনী। তোমার সাথে গেম খেলবো কেনো? একটু ওয়েট করো দেখাচ্ছি তোমাকে ওয়েট”
শুভ্র আরেকটা ভিডিও দেখালো যা দেখে তিতির চোখ ছানাবড়া হয়ে গেলো।
সামু অর্ণবের কিসিং ভিডিও।
“বিশ্বাস হলো তো মায়াবিনী”
“এইগুলো আমি ট্রাস্ট করি না। আর এইগুলো আপনাদের সব চক্রান্ত আমি বুঝে গিয়েছি আমি এক্ষুনি আপনাদের এইসব কাজের কথা অর্ণবকে বলে দিবো”
“ঠাসসসসস….অর্ণব অর্ণব আর অর্ণব এই নাম ছাড়া আর কোনো নাম নাই মুখে কি এমন দেখেছো অর্ণবের প্রতি যে সারাদিন অর্ণব অর্ণব করে যাচ্ছো। টাকা দেখে থাকলে বলো আমার কাছেও কম টাকা নাই অর্ণবের থেকেও বেশি আছে। আর আমিও অর্ণবের থেকেও বেশি হ্যান্ডসাম।তাহলে কিসের এত অর্ণব বলো”
তিতি কে চড় মেরে বললো শুভ্র তিতি গালে হাত দিয়ে রাগী চোখে বললো…..
“অর্ণবের মনে আমার জন্য রয়েছে অনেক ভালোবাসা। এই দিক থেকে আপনি অর্ণবের থেকে অনেক নিচু।”
“আমিও তোমায় ভালোবাসি মায়াবিনী। শুধু তোমার জন্য আমি কানাডা থেকে চলে আসছি। তোমাকে খুব ভালোবাসি”
“মায়াবিনী কে এই মায়াবিনী আমার নাম তিতি আর ভালোবাসা আপনার মুখে এই ভালোবাসা শব্দটা শুনে সত্যিই খুব হাসি পাচ্ছে। আপনার মুখে ভালোবাসা মানায় না”
“তুমি কেনো এত অভিনয় করছো দেখো এইখানে অর্ণব নাই আর তুমিই তো আমাকে প্রথম প্রপোজ করেছিলে মনে নাই তোমার?”
“প্রপোজ করেছি তাও আবার আপনাকে কবে কখন আমার তো মনে পড়ছে না। আমিও আপনাকে দশ দিন আগে থেকেও চিনতাম না।”
“ছিঃ তুমি এতটা মিথ্যাবাদী। আচ্ছা তোমার কোনো বোন আছে হোক সে কাজিন বা আপন”
“নাহ আমার পরিবারে আমি একাই মেয়ে”
“শিশির ছাড়াও কি কোনো ফ্রেন্ড আছে”
“হুম আছে বাট বেস্ট ফ্রেন্ড শিশির আর কেউ না”
“তোমার কোনো ফ্রেন্ডের আইডির নাম কি মায়াবিনী?”
“আমার জানা মতে না। আপনি এত কিছু জিজ্ঞাসা করছেন কেনো কে এই মায়াবিনী কিভাবে পরিচয় ওর সাথে আপনার”
“তারমানে তুমিই আমার মায়াবিনী। তুমি মিথ্যা কথা বলছো। মায়াবিনী তুমি ভয় পেও না অর্ণবকে আমি বুঝিয়ে বলবো প্লিজ ভয় পেও না”
“জাস্ট শাট আপ। আপনার কি মাথায় কোনো প্রবলেম আছে? ভালো ডক্টর দেখিয়েছেন এখনও সময় আছে পাগল হওয়ার আগে ডক্টর দেখান”
শুভ্র খুব শক্ত করে তিতির হাত ধরে আর বলে…..
“তুমি আমার মায়াবিনী। তোমাকে পাওয়ার জন্যই এই বাংলাদেশে আসা আমার। তুমি শুধু আমারই। ভালোবেসে ওয়ার্নিং দিচ্ছি মেনে নাও নাহলে খারাপ কিছু হয়ে যাবে বলে দিলাম”
“আর কি খারাপ করবেন আপনি? আপনারা দুই ভাইবোন মিলে তো আমাদের ভালোবাসায় এসে ভাগ বসাচ্ছেন আর কি খারাপ হতে পারে মিস্টার শুভ্র”
“তারমানে তুমি আমার কথা শুনবে না তাই না। ওকে প্রবলেম নাই আমি আমার ভালোবাসা নিজেই নিতে পারি”
“অর্ণব কি আপনাকে ছেড়ে দিবে? ও আমার জন্য যা খুশি তাই করতে পারে।”
“সময় হলেই বুঝা যাবে হাহাহা। এখন যাও তুমি সন্ধ্যা হয়ে যাচ্ছে”
তিতি কথা না বাড়িয়ে ওয়াচ টাওয়ার থেকে নেমে পড়লো আর রিক্সা ঠিক করে বাসায় চলে যেতে লাগলো । বড় মুখ করে তো বলেছে যে অর্ণব এমন কাজ জীবনেও করবে না। কিন্তু মনের ভিতর তাও এই কথাগুলো ঝড় তুলছে।
।।
।।।
।।।
।।।
“ওই আমি যাই তোর এত শপিং তুই একা কর ভালো লাগছে না আমার”
“ওই কই যাচ্ছিস আর পাঁচ মিনিট প্লিজ”
“রাখ তোর পাঁচ মিনিট। এই পাঁচ মিনিট আজ সারা রাতেও শেষ হবে না। তুই শপিং কর তোর যত সময় লাগে আমি যাই এখন।”
“অর্ণব তুই কিন্তু এখন চেঞ্জ হয়ে যাচ্ছিস দিনদিন”
“যদি তোর তাই মনে হয় তাহলে হোক আমি যাই”
“এই অর্ণব দাড়া অর্ণব অর্ণব”
অর্ণব আর এক বিন্দুও না দাড়িয়ে ওইখান থেকে চলে গেলো। অর্ণবের সকাল থেকে রাগ ছিলো তিতির উপর এখন হচ্ছে সামুর উপর। আজ সারাদিন ও তিতির সাথে কথা বলতে পারলো না এইজন্য মন ভালো নাই। তার উপর তিতি ও বেশ রেগে আছে তাই ফোন দিচ্ছে না। এইগুলো ভাবছে অর্ণব……
সামুও চলে আসলো অর্ণবের পিছন পিছন। এসে দেখে গাড়ি আছে অর্ণব নাই। এদিক ওদিক তাকিয়ে অর্ণবকে খুঁজতে লাগলো তখন ড্রাইভার বললো…..
“মেম স্যার বলেছে আপনি একা বাসায় চলে যেতে স্যারের একটা ইম্পর্টেন্ট কাজ আছে তাই ওনি এখন বাসায় যাবে না”
“ওহহ। চলুন বাসায়”
সামু রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিলো…….
।।
।।
।।
।।
???
“আজ আমার পিচ্ছি মেয়েটা এত ভদ্র কিভাবে হলো”
শিশিরের আম্মু শিশিরের মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বললো…..
“আম্মু তুমি ঠিকই বলেছো ভালোবাসা আর ভালোলাগা এক না”
“এইতো বুঝতে পেরেছিস। এখন বল কি হয়েছে ?”
শিশির একে একে সব ওর আম্মুকে বললো…….
“শিশির তুই এইসব কথা কিভাবে বলতে পারলি। সত্যিই মা আমি বিশ্বাস করতে পারছি না তুই এইসব কথা বলতে পারিস”
“আম্মু আমি তখন রাগের বশে এইসব বলে ফেলছি। এখন আমি সত্যিই খুব কষ্ট পাচ্ছি বলো আম্মু কি করবো”
শিশিরের আম্মু মেয়ের কষ্ট বুঝতে পারলো তাই বললো…..
“ভুল যেহেতু করে ফেলেছিস তাহলে সংশোধন তোরই করতে হবে”
“কি করবো আমি”
“ওই তুই না ফিল্ম দেখিস ওইখান থেকে কিছু বুদ্ধি বের কর। আমার মেয়ে হয়ে তুই এইটুকু ছোট কাজ করতে পারবি না ছিঃ তুই কি আমার মেয়ে”
“তুমিও মজা নিচ্ছো তাই না যাও কথা বলবো না তোমার সাথেও”
“মজা কই নিলাম যা সত্য তাই বললাম। এখন চল খাবি পরে ভাববি কি করবি”
“আম্মু আমি এখন খাবো না একটু আগে খেয়েছি এখন আমি ঘুমাবো। রাতে একদম ডাকতে আসবে না কিন্তু”
“আচ্ছা যা ডাকবো না। তোর রুমে কিছু খাবার দিয়ে যাচ্ছি আমি ক্ষুদা লাগলে খেয়ে নিবি কেমন”
“আচ্ছা”
শিশিরের আম্মু কিছু খাবার শিশিরের রুমে দিয়ে চলে গেলো। শিশির দরজা আটকিয়ে ভাবতে লাগলো কি করবে। ওর তো ঘুম আসছে না তখন ওর মাথায় একটা দুষ্ট বুদ্ধি বের হলো……
“ওয়াও শিশির কি ভালো বুদ্ধিরে তোর এই বুদ্ধির জন্য তোকে আমি নোবেল ছুড়ে দিবো দেখিস”
শিশির নিজেই নিজেকে বাহ বাহ দিতে লাগলো……
শিশির ওর শাড়ি ওরনা এইগুলো একটার সাথে আরেকটা বেঁধে বারান্দার গ্রীলে বাঁধলো। আর আল্লাহ আল্লাহ বলে নিচে নেমে পড়লো……
“এই যে স্যার আসছি আমি। আপনাকে আজ আমি ভয় না দেখিয়ে ছাড়ছি না হুহহহ”……
।।
।।
।।
।।
তিতি রুমে এসে পড়ছে আর সামু শুভ্রর কথাগুলো ভাবছে তখন ওর রুমে কিসের একটা শব্দ পেলো তাকিয়ে দেখে ছোট পাথর দিয়ে কেউ রুমে ঢিল ছুড়ে মারছে। তিতি জানালার পাশে যেতেই আরেকটা পাথর।
“কোন শালারে আমার রুমে ঢিল মারে ”
অর্ণবকে দেখেই তিতি অবাক হয়ে যায়। অর্ণব ওর রুমে ঢিল মারছে…..
“তুমি এইখানে?”
“ফোন তুলছে না কেনো?”
“বুঝতে পারছি না কি বলছো?”
অর্ণব তখন ইশারা দিয়ে বুঝালো ফোন চেক করতে। তিতি ফোন চেক করে দেখে অর্ণব তাকে অনেকগুলো ফোন দিয়েছে। ফোন সাইলেন্ট থাকায় ও বুঝতে পারে নাই। তখনি ওর ফোন কল আসলো অর্ণব দিয়েছে…..
“হুম বলো”
“কি হয়েছে তোমার সারাদিন কোনো খবর নাই শরীল ঠিক আছে তো”
“হুম আমি ঠিক আছি”
“এইভাবে কথা বলছো কেনো?”
“কিছু হয়নি বলছি না”
“একটু নিচে আসবে কথা আছে”
“পারবো না আমি তুমি চলে যাও এখন”
“তুমি না আসা পর্যন্ত যাবো না”
“তাহলে মশার কামড় খাও”
“আমি একা কেনো মশার কামড় খাবো তোমাকেও খাওয়াবো আসো বলছি”
“বলছি না এখন আসবো না আমি পড়ছি”
“কি আমার বিলিয়ন্ট স্টুডেন্ট ওনি নাকি পড়ছে। আসো বলছি তানাহলে পাথর ছুড়ে মারবো পরে তেলাপোকা পরে সাপ সব ছুড়ে মারবো বলে দিলাম”
“তোমাকে তো আজ মেরেই ফেলবো আমি”
“মারতে হলে তো আসতেই হবে আমার কাছে তিতির পাখি”
“আসছি দাড়াও পরে বুঝাচ্ছি তোমাকে”
“ও প্রাণও সোনা তাড়াতাড়ি আসো না”
“পাগল একটা আসছি দাড়াও”
তিতি সিড়ি বেয়ে নামছে আর ভাবছে সামু আর শুভ্রের কথা বলে দিবে আজ কি কি হয়েছে সব বলে দিবে…..
তিতি অর্ণবের কাছে আসতেই অর্ণব তিতি কে জড়িয়ে ধরলো। মনে হচ্ছে কতদিন ধরে দেখে না। তিতি ও জড়িয়ে ধরলো…..
“এইভাবে রাস্তায় এইভাবে জড়িয়ে ধরলে মানুষ কিছুক্ষণ পর আমাদের রাম ধুলাই দিবে”
“তিতি চলে আজ লং ড্রাইভে যাই”
“এখন”
“হুম। আজ আমরা বাইকে চড়ে লং ড্রাইভে যাবো”
“তার আগে আমার কিছু কথা আছে”
“পরে শুনবো এখন চলো। আমারও কিছু কথা আছে। আমি জানি তুমি অনেক রেগে আছো তাই তোমাকেও কিছু কথা বলতে চাই কিন্তু এখন না আগে ঘুরবো পরে”
“আচ্ছা”
“দাড়াও একটু”
তিতি দাঁড়ালো অর্ণব তিতির একটি পা তার হাঁটুতে নিয়ে কি যেনো পড়িয়ে দিচ্ছে…..
“ছিঃ ছিঃ অর্ণব কি করছো তুমি?”
“দাড়াও বলছি না”
অর্ণব তিতি কে পায়েল পড়িয়ে দিলো….
“আজ মার্কেটে গিয়েছিলাম তখন এই একটায় জিনিস বার বার চোখে এসে পড়ছে। তাই নিয়ে আসলাম আমি জানি এই পায়েল শুধু আমার তিতির পাখির পায়েই মানায়। পছন্দ হয়েছে?”
“খুব পছন্দ হয়েছে।”
“ভালোবাসি তিতির পাখি”
“আমিও। এখন চলো পরে কেউ দেখে ফেলবে”
“হুম চলো…”
চলবে……
বানান ভুল হলে ক্ষমা করবেন।