#Love_warning❤️
#your_love_is_my_drug_addiction?
#Part_20
#ফারজানা
শুভ্র ম্যাসেজে তিতির নাম দেখে ম্যাসেজ পড়লো। আর মুখে ডেভিল হাসি দিয়ে ম্যাসেজ ডিলেট করে অর্ণবের ফোন অর্ণবকে দিয়ে দিলো……..
“এ তো দেখছি মেঘ না চাইতে জল খুব শীঘ্রই দেখা হচ্ছে তোমার সাথে আমার মায়াবিনি”
এদিকে তিতি অর্ণবকে ম্যাসেজ দিয়ে অপেক্ষা করছে কোনো উত্তর আসে কি না। ম্যাসেজ সীন হয়েছে কিন্তু রিপ্লাই নাই। তিতি আবারো ম্যাসেজ দিতে গিয়েও দিলো না।
“ভাব ভাব সবই ভাব। একদম ভাবের দোকান একটা ম্যাসেজ দেওয়ারও সময় পাচ্ছে না। কি এমন কাজে ব্যাস্ত হুহহ”
তিতি একা একা বকবক করছে । কিছুক্ষণ বকবক করার পর ‘খাদিজা মীম’ আপুর ‘বাতাসে গুনগুন’ উপন্যাসের বইটা পড়তে লাগলো……
আজ তিতি অর্ণবের সাথে দেখা করবে তাই ভার্সিটিতে যায়নি। ওর মনে সামুকে নিয়ে অনেক সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে। এইগুলো যতক্ষণ না পর্যন্ত সমাধান করতে পারবে ততক্ষণ পর্যন্ত ওর মনে শান্তি নাই।
অন্যদিকে অর্ণব আজ তার অফিসের কাজে খুব ব্যাস্ত বেশ কিছুদিন সে তার কোম্পানিতে সময় দিতে পারে নাই। তাই আজ চাপটা খুব বেশি।
।।
।।
।।
প্রবণ ক্লাসে লেকচার দিচ্ছে কিন্তু একবারও শিশিরের দিকে তাকালো না। প্রবণ অনেককে আবার প্রশ্ন করছে শিশিরকে বাদে। শিশিরের খুব কষ্ট হচ্ছে ওকে ইগনোর করানোর জন্য……
“এই স্যার কি বুঝে না আমার কষ্ট। কিছুদিন আগেও তো বলতো মিস বকবক তোমায় ভালোবাসি। মেঘ পরী দূরে চলে যেও না কিন্তু আজ আজতো আমার দিকে তাকাচ্ছে না পর্যন্ত। বুঝি বুঝি সব অহংকার সব ভাব”
“এতদিন আমায় অনেক ঘুরিয়েছো বড় বড় কথাও বলেছো কম কষ্ট দেও নি এখন আমার সময় এসেছে এইবার বুঝো মিস বকবক”
প্রবণ ক্লাস নেওয়ার পাশাপাশি আড়চোখে শিশিরের দিকে তাকিয়ে মনে মনে বললো…..
“এই বজ্জাত স্যার সবাইকে জিজ্ঞাসা করছে আমাকে করছে না কেনো? নাকি নিজে থেকে ভাব নিচ্ছে? হুম বুঝছি যা করার আমাকেই করতে হবে”
শিশির কিছুক্ষণ ভাবার পর প্রবণ কে উদ্দেশ্য করে বললো…..
“এক্সকিউজ মী স্যার, আমার কিছু প্রশ্ন ছিলো?”
প্রবণ শিশিরের কথা শুনে শিশিরের দিকে তাকিয়ে বললো……
“জ্বি বলেন কি বলবেন?”
“আমি এই সাবজেক্টের কিছুই বুঝি নাই। আর এখন আপনি যে কি বলছেন কিছুই বুঝি নাই”
“বুঝবা কিভাবে মাথায় যদি এখন অন্য কিছু ঘুরে”
“স্যার কিছু কি বললেন?”
“নাহ। এখন তো ক্লাসের টাইম শেষ আপনি ক্লাসের অন্যদের কাছ থেকে বুঝে নিন তবুও সমস্যা হলে আমি তো আগামীকাল আবার আসছি তখন বুঝিয়ে দিবো”
“ওকে স্যার”
শিশির মন খারাপ করে বললো। প্রবণ ক্লাস থেকে চলে গেলো।
“স্যার কি বুঝতে পারছে না আমি যে ওনার সাথে কথা বলতে চাচ্ছি নাকি বুঝে না বুঝার ভাব করছে”
ওইদিন শিশিরের কোনকিছুতেই মনোযোগ ছিলো না। ও বার বার প্রবণের কথায় ভাবতে থাকে।
।।
।।
।।
“এই অর্ণব ফ্রী আছিস?”
অর্ণব মাত্র অফিস থেকে রুমে এসে ফ্রেশ হয়ে ফোনটা হাতে নিয়েছে তখনি সামু এসে অর্ণবকে জিজ্ঞাসা করে…..
“হুম ফ্রী আছি। বল কি বলবি? আর তোর মুখ এমন দেখাচ্ছে কেনো কোনো সমস্যা হয়েছে কি?”
“হুম”
“কি সমস্যা হয়েছে বল কেউ কি কিছু বলেছে?”
“আমি ভুলে গিয়েছিলাম এইটা বাংলাদেশ। আর বাংলাদেশে এইসব ড্রেস পরা ঠিক না। গতকাল আমি ঘুরতে গিয়েছিলাম তখন কিছু বাজে ছেলে বাজে কথা বলেছিলো আমার ড্রেস নিয়ে”
সামু কাঁদতে থাকে……
“আচ্ছা অর্ণব আমি খারাপ মেয়ে আমি তো জানতাম না এইসব ড্রেস এইখানের কালচার না”
“আরেহ বোকা মেয়ে কাদছিস কেনো? আয় এইখানে”
সামু অর্ণবের পাশে গিয়ে বসে। অর্ণব সামুর চোখের পানি মুছে দিয়ে বলে…..
“হুম আমাদের বাংলাদেশে এইসব ড্রেস মানায় না। তাছাড়া আমাদের ইসলাম ধর্মে মেয়েদের পর্দা করে চলতে বলেছে এখন দেখ পৃথিবীর ১০০ ভাগের ৯৫ ভাগেই কিন্তু পর্দা করে চলে না। আজকাল এমন শর্ট ড্রেসে মেয়েরা তাদের সস্তা করে ফেলছে। কিন্তু তারা বুঝে না এমন ড্রেসে তাদের কেমন দেখা যায়। যা একজন পুরষের কাছে কতটা লোভনীয়। আচ্ছা এইসব বাদ এখন বল কোন ছেলে কি বলেছে”
“না রে ওই ছেলেদের দোষ নাই দোষ তো আমার এখন থেকে আমাকেই এইসব বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে”
“গুড। বুঝতে পারছিস”
“কিন্তু একটা সমস্যা আছে”
“কি সমস্যা বল?”
“আমার তো ভালো কোনো ড্রেস নাই সব তো কানাডা থেকে আনা”
“শুভ্র কে নিয়ে শপিং এ যা বা অর্ডার কর অনলাইনে প্রবলেম সলভ”
“শুভ্র ভাইয়া কোথায় যেনো যাবে এখন আর অনলাইনে অর্ডার করা জামা ভালো লাগে না। মার্কেট থেকে দেখে দেখে বাছাই করে কিনলে ভালো হবে”
“হুম তাহলে যা গিয়ে কিনে আন”
“আমি একা যাবো আমি তো বাংলাদেশের পথঘাট চিনি না তারউপর ড্রেসের ডিজাইনও পছন্দ করতে পারবো না। এক কাজ করি তোকে নিয়ে যাই যাবি আমার সাথে যদি তোর প্রবলেম না থাকে?”
“আমি”
“হুম সমস্যা হলে যেতে হবে না”
“আরেহ সমস্যা কি তুই গিয়ে রেডি হয়ে পর আমি আসছি। ”
“থ্যাংক ইউ বাবুটা আমার”
“ওই যা তো আমি তোর কোন জন্মের বাবু এইসব ন্যাকা ন্যাকা নামে ডাকবি না ওকে”
“হুম ওকে ”
সামু চলে গেলো। অর্ণব কি করবে বুঝতে পারছে না। যেহেতু সামুকে বলেছে তাই ও রেডি হচ্ছে……
“অনেক জেদ তোমার তাই না তিতির পাখি আজ সারাদিন একটা ফোনও দিলে না। যাও আমি ও দিবো না দেখি তুমি ফোন না দিয়ে কইদিন থাকতে পারো”
।।।
।।।
।।।
।।।
“ওই সামু কাজ হয়েছে?”
“এই সামু যদি কোনো কাজ নেই আর তা হবে না এমন কোনোদিন হয়েছে?”
“তারমানে কাজ হয়েছে”
“হুম। অনেক কষ্টে রাজি করেছি”
“শুন অর্ণবকে কিন্তু চোখে চোখে রাখবি আর দেখবি ফোনে যেনো কথা না বলতে পারে তিতির সাথে। বিজি রাখবি ওকে”
“তা আর বলতে। তুই যা ওই তিতির কাছে গিয়ে তোর কাজ কর। আমি আজকের পুরো বিকাল সন্ধ্যা অর্ণবকে বিজি রাখবো”
“গুড জব। এখন আমি যাই চারটা বাজতে আর কিছু সময় তুইও রেডি হয়ে তাড়াতাড়ি চলে যা”
“ওকে ডেভিল বস”
“হাহাহা তুইও কিন্তু কম যাস না”
“তোর মতো গুরু যেখানে আছে শীর্ষ কি আর কম হবে”
“হুম বুঝছি। বায়”
“বায়। অল দা বেস্ট”
“সেম টু ইউ”
শুভ্র সামুর সাথে কিছু কথা বলে তিতির দেওয়া ঠিকানায় চলে যায়……..
সামু ও রেডি হয়ে অর্ণবকে নিয়ে শপিং মলে চলে যায়…….
।।।
।।।
।।।
“এখনও আসে না কেনো? কি এত কাজ তোর যে এখনও আছিস নাই”
তিতি অর্ণবকে একটা পার্কের ঠিকানা দেয় আর বলে পার্কের ওয়াচ টাওয়ারের উপরে আসার জন্য। এই সন্ধ্যা টাইমে বেশি মানুষজন এত উপরে আসে না তাই তিতি অর্ণবকে বললো এইখানে আসতে…….
তিতির কানে কারো পায়ের শব্দ পেলো। তিতি পিছন দিকে না তাকিয়েই বললো…..
“এখন আসার সময় হলো আপনার মহারাজ। আজ সারাদিন কোনো ফোন নাই আমি ম্যাসেজ দিয়েছি কোনো রিপ্লাই নাই এতই বিজি এখন আপনি বাহ। শুনুন এত কথা বলার কোনো ইচ্ছা আমার নাই। আমি বলতে এসেছি আপনি সামু আপুর সাথে মিশবেন না আপনাদের দুইজন কে একসাথে দেখলে আমার রাগ হয় সাথে কষ্ট ও। আর সামু মেয়েটাকে আমার সুবিধার মনে হয় না। তাছাড়া আপনার ভাই শুভ্র ওনি কেমন ভাবে যেনো আমার দিকে তাকায় যা আমার ভালো লাগে না। আমি জানি এইসব আপনার চোখে চোখ রেখে আমি বলতে পারবো না তাই আগেই বলে দিলাম। আপনি আপনার ভাই আর বান্ধবীকে খুব ভালোবাসেন আমার কথা শুনতেও চাইবেন না। তাই বলে দিলাম। কি হলো কথা বলছেন না কেনো?”
তিতি পিছনে ফিরে শুভ্র কে দেখে শকড খেলো। শুভ্র এক হাত পকেটে অন্য হাতে ওয়াচ টাওয়ারের রেলিং ধরে দাড়িয়ে আছে…….
“আপ আপনি এইখানে অর্ণব কোথায়?”
“আমাকে দেখে বুঝি তোমার কথাগুলো উরে গেলো মায়াবিনী”
“কে মায়াবিনী আমি তিতি কি বলছেন কি আপনি আর আপনি এইখানে কেনো অর্ণব কোথায়?”
“অর্ণব তো সামুর সাথে। আজ ওরা খুব বিজি। তাইতো অর্ণব আমাকে পাঠিয়েছে তোমার কাছে”
“ম মানে কি যা তা বলছেন দাড়ান আমি এক্ষুনি অর্ণবকে ফোন দিচ্ছি”
তিতির কথা শুনে অর্ণব মাথা ঝাঁকিয়ে হাসলো….
“ওকে দেও কোনো প্রবলেম নাই। দেখো পাও কি না”
তিতি বার বার অর্ণবকে ফোন দিচ্ছে কিন্তু অর্ণব ফোন ধরছে না। কিছুক্ষণ পর একটা ম্যাসেজ আসলো তাতে লিখা ছিলো…..
“এত ফোন দিচ্ছো কেনো শুভ্র তোমায় কিছু বলে নাই যে আমি বিজি এখন। সামুকে নিয়ে ঘুরতে এসেছি। যা বলার শুভ্রকে বলো বায়”
ম্যাসেজটা দেখে তিতির চোখ বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়লো…..
“ওহহ মায়াবিনী কান্না করছো কেনো দেখো আমি আছি না তোমার ভয় নেই”
“প্লিজ আমি বাসায় যাবো”
“বাসায় তো যাবে এখন একটু আমার সাথে থাকো না”
“দেখুন আপনি কিন্তু…”
তিতি আঙ্গুল তুলে বললো। শুভ্র তিতির আঙ্গুল হাতের মুঠোয় নিয়ে বললো……
“যা করছি তোমার ভালোর জন্য মায়াবিনী। অর্ণব তোমাকে ভালোবাসে না। ও তোমার সাথে কিছুদিন টাইম পাস করে তোমায় ব্যাবহার করে পরে নর্দমায় ফেলে দিতো। তাই আমি তোমার শুভাকাঙ্ক্ষী হয়ে তোমার পাশে এসে দাঁড়িয়েছি”
“অর্ণব এইসব কোনোদিন করতে পারে না। ও আমায় অনেক ভালোবাসে আর আমি ও । আমি আপনার কথা বিশ্বাস করি না”
“যদি প্রুভ দেখাই তাহলে বিশ্বাস করবে মায়াবিনী?”
“প্রুভ কিসের প্রুভ কি বলছেন কি আপনি?”
“এত হাইপার হয়ে লাভ নাই আগে বলো প্রুভ দেখলে আমায় ট্রাস্ট করবে তাহলে আমি প্রুভ দেখাবো”
“আগে প্রুভ দেখান”
“ওয়েট মায়াবিনী”
চলবে…….