#Love_warning❤️
#your_love_is_my_drug_addiction?
#Part_19
#ফারজানা
???
তিতি শিশিরের মন ভালো করার জন্য তাকে নিয়ে ঘুরতে বের হলো। দুই বান্ধবী হাঁটছে আর কথা বলছে তখন তিতির চোখ যায় তার অন্যদিকে একটি মেয়ে আর একটি ছেলে একে অপরকে জড়িয়ে ধরে পিক তুলছে। যখন তিতি ভালো করে ছেলেটার মুখ দেখতে পেলো তখন ও নিজের চোখকেই বিশ্বাস করাতে পারলো না কেননা ছেলেটি আর কেউ না অর্ণব ছিলো………
“অর্ণব আমার ফোন না ধরে এই মেয়ের সাথে সময় কাটাচ্ছে আমাকে এত সহজে ভুলে গেলো ও। আজ আমার কোনো দাম নাই ওর কাছে তাই না?”
“ওই কি বলছিস এইসব কি হয়েছে বল?”
তিতির এমন কথা শুনে শিশির প্রশ্ন করলো….
“তোর সামনে তাকিয়ে দেখ অন্ধ”
শিশির তিতির কথা শুনে সামনে তাকায় আর সামু অর্ণবকে দেখতে পায়…..
“আরেহ এত দেখছি অর্ণব ভাইয়া আর সামু আপু চল গিয়ে কথা বলি”
খুশি হয়ে বললো শিশির…..
“কুত্তি তুই হাসছিস আর দেখ ওরা কিভাবে কথা বলছে আর পিক তুলছে”
“তিতি মুরগি তুই কি ওদের নিয়ে খারাপ কিছু চিন্তা করছিস?”
“তুই দেখ ওরা কিভাবে…..”
“শালী তোরে এখন লাত্থি দেওয়া উচিত। গাঁধী ওরা ছোট থেকে ফ্রেন্ড। আর সামু আপু বিদেশ থেকেছে তাই ওর কাছে এমন জড়িয়ে ধরা পিক তোলা কোনো ব্যাপার না”
“বুঝলাম সামু আপু এমন তাই বলে কি অর্ণব ও এমন হবে নাকি ও জানে না আমাদের দেশে এইসব মানায় না”
“তুই ও মুরগি সব সময় একটু বেশীই ভাবিস। ওরা ছোট থেকে একসাথে আছে তাই ওরা ফ্রেন্ডলী আর ফ্রী ভাবে চলে এই জন্য এত কিছু ভাবা ঠিক না”
“তুই বলতে চাচ্ছিস ওরা জাস্ট ফ্রেন্ড ভেবে এমন করছে?”
“হুম। আর তুই ও এখন এইসব বাজে চিন্তা মাথা থেকে দূর কর। মন ফ্রেশ রাখ। অর্ণব ভাইয়ার প্রতি আমার আস্থা আছে। ওনি কোনোদিন তোর কষ্ট হবে এমন কোনো কাজ করবে না”
“তাহলে এতদিন যে মাইর খাইছি তা কি কষ্ট ছিলো না?”
“ওইটা নিজের দোষে খাইছিস অর্ণব ভাইয়ার হাত নাই”
শিশির মুখ ভেঙ্গে বললো…..
“এখন দেখি তোর অর্ণব ভাইয়া খুব ভালো হয়ে গেছে আর আমি খারাপ”
“আমি কি বলেছি তুই খারাপ?”
“না বলিস নি তবু মন চাইলো বলতে বললাম”
“আয় বোন তোর মনের ভিতরে আমি সেভলন আর গরম পানি ঢালি তাহলে দেখবি সব সময় জীবাণু ভাইরাস মুক্ত কথা বলবি”
“আমার সাথে এইভাবে কথা বললে তোকে আমি সাহায্য করবো না বলে দিলাম”
“সরি আমার তিতি মুরগি আর বলবো না চল এখন ভাইয়ার সাথে কথা বলি আর তার পকেট খালি করি”
“আমার বরের পকেটে নজর দিবি না বলে দিলাম”
“তোর বরের পকেটে কে নজর দিচ্ছে আমি তো আমার দুলাভাইয়ের পকেটে নজর দিচ্ছি তুই ও না মুরগি কি সব আবোল তাবোল বলিস”
তিতি চোখ রাঙিয়ে শিশিরের দিকে তাকায় শিশির হেসে দিয়ে তিতিরের হাত ধরে অর্ণবের কাছে যায়……
অর্ণবের হাত সামু এমনভাবে ধরেছে অর্ণব কিছু বলতে পারছে না। ওর সামুর এখন জড়িয়ে ধরা খুব অসস্তি লাগছে কিন্তু কিছু বলতে পারছে না।
“হে আল্লাহ এই সামুর হাত থেকে বাঁচাও দম বন্ধ হয়ে আসছে। কিছু বলতে পারছি না। প্লিজ হেল্প মী”
তখনি শিশির এসে বলে……
“হ্যায় অর্ণব ভাইয়া হোয়াট আ সারপ্রাইজ? আপনারাও এইখানে?”
“ভাগ্যিস বোন তুমি আজ ঠিক টাইমে এন্ট্রি নিয়েছো আগে তো ভুল টাইমে নিতে আজকের এন্ট্রির জন্য তোমাকে মন থেকে ট্রিট দেওয়া হবে”
অর্ণব শিশিরের কথা শুনে শিশিরের দিকে তাকালো আর খুশিতে মনে মনে শিশিরকে ধন্যবাদ দিতে লাগলো।
“কি হলো অর্ণব শিশির কি বললো তুমি শুনতে পাও নি?”
“নাহ আসলে তোমার ফ্রেন্ড আমার শালীকা আজ খুব ভালো সময়ে এন্ট্রি নিয়েছে তাই সময়টা মনে মনে সেভ করে রাখছিলাম”
অর্ণবের এই বোকা বোকা কথা সামু বুঝতে পারলো না তাই জিজ্ঞাসা করলো……
“কি বলছিস এইসব পাগলের মতো অর্ণব?”
“ও তুই বুঝবি না চল এখন আমরা চারজন মিলে কোনো রেস্টুরেন্ট যাই”
শিশির হাসলো অর্ণবের কথাতে।
“কি রে শিশির এইভাবে হাসছিস কেনো?”
“তোর ওই বুদ্ধিওয়ালা মাথায় আমাদের কথা বুঝবি না আমি আর অর্ণব ভাইয়াই বুঝছি এখন চল আমার দুলাভাইয়ের পকেট খালি করি”
“হুম চলেন শালীকা”
অর্ণব তিতি শিশির ও সামু একটি রেস্টুরেন্টে গিয়ে বসলো। সামু তো তিতি ও শিশিরের প্রতি খুব রাগ হচ্ছে বিশেষ করে শিশিরের উপর।
“তিতি অর্ণবের সম্পর্ক শেষ করার আগে এই শিশির মেয়েটাকে রাস্তা থেকে সরাতে হবে।”
“কি সামু আপু তুমি কি কিছু ভাবছো?”
তিতি জিজ্ঞাসা করলো….
“কই না তো কিছু ভাবছি না। আমি তোমাদের ফ্রেন্ডশিপ দেখছি তোমাদের ফ্রেন্ডশিপ আমার খুব ভালো লেগেছে আমার মতে মোটু পাতলুর জুটির মতো তোমরাও সেরা জুটি”
“থ্যাংক ইউ সামু আপু উম্মাহ। আজ তোমার এই সুন্দর উপাধি দেওয়ার জন্য তোমাকে আমার দুলাভাইয়ের পক্ষ থেকে পাঁচ কেজি রসগোল্লা গিফট করা হলো”
“ধন্যবাদ। কিন্তু আমি মিষ্টি লাইক করি না”
“আরেহ সামু আপু এইটা যেই সেই রসগোল্লা না কুমিল্লার রসগোল্লা একবার খাইলে পরে আরো খাইতে চাইবে”
“হুম”
সামু কথা বাড়ালো না। ও জানে শিশিরের সাথে কথায় ও পারবে না তাই চুপচাপ ওর কথাই শুনতে লাগলো……
।।
।।
।।
???
“বানজা তু মেরি রানি তেনু মেহাল বানা দুঙ্গা । বান মেরি মেহবুবা মেইন তেনু তাজ পাবা দুঙ্গা। সুন মেরি রাণী রাণী বান মেরি রাণী রাণী শাহজাহান মেইন তেরা তেনু মুমতাজ বানা দুঙ্গা।
মায়াবিনী তোমার জন্য সব পারি আমি। পুরনো ফ্রেন্ডের জন্য আমি বাংলাদেশ আসি নাই শুধু তোমার জন্য এসেছি তোমাকে তো আমার হতেই হবে। তোমার জন্য এত দুর থেকে আসা আমার কিন্তু দেখো তুমিই আমাকে একটুও সময় দিচ্ছো না এইটা কিন্তু ঠিক না ডার্লিং। তিতি যদি আমার মায়াবিনী হয় তাহলে অর্ণবকে রাস্তা থেকে সরাতেও আমার হাত কাঁপবে না আমি জাস্ট আমার মায়াবিনী কে চাই যে দেয়াল হয়ে দাঁড়াবে তাকে সরাতে আমি দু মিনিট ও ভাববো না”
শুভ্র মায়াবিনী আইডির ম্যাসেজগুলো পড়ছে আর গান গাইছে।
এইভাবেই চলতে থাকে কিছুদিন। সামু অনেক চেষ্টা করে যাচ্ছে অর্ণব তিতি কে আলাদা করার জন্য। শুভ্র তিতি ও দ্বিতীয় মেয়েটির খুঁজ নিচ্ছে শিশির প্রবণ কে বুঝানোর অনেক চেষ্টা করছে কিন্তু প্রবণ শিশিরের সাথে কথা পর্যন্ত বলছে না।
শিশির এই কিছুদিনে বুঝতে পারে ও তনয় কে প্রবণকে ভালোবাসতো। যতদিন ধরে প্রবণ শিশিরকে ইগনোর করছে ততদিন ধরে শিশিরের মন আগের প্রবণ কে পাওয়ার ব্যাকুলতা দেখা দিয়েছে। ও বুঝতে পেরেছে তনয় ছিলো ওর ভালোলাগা। তনয়ের গল্প পড়ে এই ভালোলাগাটা সৃষ্টি হয় ওর মাঝে। শিশির বিশ্বাস করতে পারছে না যে লোক এত সুন্দর গল্প লিখে সে কিভাবে এই খারাপ কাজ করতে পারে। পরে আরো অনেকজনের কাছ থেকে জানতে পারে তনয় তার গল্পের মাধ্যমে মেয়েদের আসক্তি করে। যখন ওর প্রেমে কোনো মেয়ে অন্ধ হয়ে যায় তখন সেই দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে ওই মেয়ের জীবন ধ্বংস করে। মেয়েটি লোক লজ্জার ভয়ে কিছু বলতে পারে না কজ তনয়ের কাছে ভিডিও থাকে আর বলে ভাইরাল করে দিবে।
এইসব শুনে শিশিরের তনয়ের প্রতি খুব রাগ আর ঘৃনা জন্মে একটা মানুষ এত খারাপ কিভাবে হতে পারে।
এইভাবে প্রায় অনেকদিন চলে যায়। তিতির মনে কিছুটা সন্দেহ সৃষ্টি হয় সামু কে নিয়ে তাই একদিন অর্ণবের ফোনে একটা ম্যাসেজ দিয়ে একটা ঠিকানা লিখে দেয় অর্ণব যেনো বিকাল চারটায় এইখানে এসে দেখা করে ইম্পর্টেন্ট কথা আছে।
ভুলবশত ওই সময় ফোনটা ছিলো শুভ্রর হাতে। ওর ফোনে ব্যালান্স না থাকায় অর্ণবের ফোন নিয়েছিলো।
শুভ্র ম্যাসেজে তিতির নাম দেখে ম্যাসেজ পড়লো। আর মুখে ডেভিল হাসি দিয়ে ম্যাসেজ ডিলেট করে অর্ণবের ফোন অর্ণবকে দিয়ে দিলো……..
চলবে…..