#Love_warning❤️
#your_love_is_my_drug_addiction?
#Part_16
#ফারজানা
ফোনে কথা বলা শেষ। তনয় শিশিরকে কোলে তুলে ক্লাবের উপরের একটা রুম বুক করা ওইখানে নিয়ে যেতে লাগলো…….
তনয় যখন দু তলায় শিশিরকে নিয়ে যাচ্ছিলো তখন তিতি এসেছিলো শিশিরকে নিয়ে যাওয়ার জন্য…..
“তনয় শিশিরকে নিয়ে কোথায় যাচ্ছে? ওর কোনো খারাপ উদ্দেশ্য আছে কি? আমি কি যাবো না থাক আমি একা ওইখানে গেলে হতে পারে আরো লোক আছে পরে আমার আর শিশিরের দুইজনের বিপদ হবে। আমি বরং অর্ণবকে ফোন দেই”
তিতি অর্ণবকে ফোন দিলো……
“হুম বলো তিতি কি হয়েছে আর তুমি কোথায়?”
“অর্ণব তুমি আমার কথা শুনতে পাচ্ছো? অর্ণব অর্ণব”
“হুম বলো আমি শুনতে পাচ্ছি। বলো কি হয়েছে? আর তোমার ভয়েস এমন শুনাচ্ছে কেনো তুমি ঠিক আছো?”
“হুম আমি ঠিক আছি। শিশির শিশির ঠিক নাই।”
তিতি অর্ণবকে সব বললো ও যা দেখেছে……
“জান তুমি ভয় পেও না আমি আসছি”
“হুম আসো আর প্রবণ কে কিছু বলো না”
“ওকে”
তিতির ফোন কেটে অর্ণব যখন দু তলায় যাওয়ার জন্য পা বাড়ায় তখন শুভ্র বলে…..
“কি রে কি হয়েছে? এত অস্থির হয়ে কোথায় যাচ্ছিস?”
“ওইখানে তনয় বাদে আরো লোক আছে মনে হয়। তাছাড়া শিশির আর তিতি ও একা যাওয়া ঠিক হবে না শুভ্র কে সাথে করে নিয়ে যাই”
অর্ণব মনে মনে ভাবছে তখন শুভ্র বললো….
“ওই কি ভাবছিস? কি হলো এনিথিং রং?
“হুম। প্রবণের গার্লফ্রেন্ডের একটা সমস্যা হয়েছে চল আমার সাথে”
“হুম চল”
অর্ণব আর শুভ্র যাওয়ার আগে সামু কে বললো প্রবণের খেয়াল রাখতে……
।।
।।
।।
।।
।।
“তনয় কোথায় নিয়ে যাচ্ছো আমায় তনয়?”
নেশার ঘোরে সব অস্পষ্ট দেখছে শিশির…..
“নাহ জান কোথায় না তোমায় তোমার বাসায় নিয়ে যাচ্ছি”
“কিন্তু(গালে হাত দিয়ে) আমি হাওয়ায় ভেসে কিভাবে বাসায় যাচ্ছি?”
“এইটা হলো একটা সাইন্স তুমি বুঝবে না এখন চুপ থাকো তোমার আব্বু আম্মু জেগে যাবে”
শিশির ভাবছে সত্যিই ও ওদের বাসায় যাচ্ছে তাই চুপ করে রইলো……
তনয় শিশির কে রুমের ভিতর নিয়ে গিয়ে খাটে শুয়ে দিলো…..
“ওই মামু পাখি তো দেখছে নেশার ঘোরে একদম অন্য জগতে আছে। মাইয়া কি আর কোনোদিন এইসব খায় নাই”
“নাহ। ও এইসব আজকেই ফাস্ট”
“তাহলে তো মামু আজকের দিন তোমার”
শয়তানি হাসি হেসে বললো তনয়ের বন্ধু……
“হুম গাইস আজকের দিন শুধু আমার। জানিস এই দিনটার জন্য এই মেয়ের জন্য কত সময় যে ব্যয় করেছি তা আমি জানি। অন্য মেয়ের জন্য আমার এত সময় ব্যয় হয় নাই”
“হুম দেখেই বুঝা যাচ্ছে মাইয়া অনেক গভীর জলের মাছ”
“এখন তুই যা। সময় হলে তোকে ডাক দিবো”
“হুম যাচ্ছি। বেস্ট অফ লাক”
তনয়ের বন্ধু যখন রুম থেকে বের হয় তখনি তিতি আসে সামনে…..
“বাহ আজ দেখি মাছ নিজে এসে ধরা দিচ্ছে”
তনয়ের বন্ধু খারাপ দৃষ্টিতে তিতির দিকে তাকিয়ে বললো……
“ঠিকই বলেছিস মাছ নিজে থেকে ধরা দিয়েছে কিন্তু তোদের ভোগের পণ্যের জন্য না তোদের শাস্তি দেওয়ার জন্য”
অর্ণব ও তিতির পিছন পিছন ছিলো তাই ও তনয়ের বন্ধুর কথা শুনতে পায়। রাগে অর্ণবের শরীল জ্বলে যাচ্ছে সাথে শুভ্র ও। কেননা ছেলেটা তার মায়াবিনী কে খারাপ কথা বলেছে। এইখানে এখন অর্ণব না থাকলে ছেলেটাকে খুন করে ফেলতো শুভ্র।
ছেলেটা কিছু বলতে যাবে তার আগেই অর্ণব এসে ছেলেটাকে মারতে লাগলো। শুভ্র ও সুযোগ বুঝে ছেলেটাকে মারতে লাগলো।তিতি রুমে এসে দেখে তনয় ড্রিঙ্কস করছে আর শিশিরের চুলে মদ ঢালছে । রাগের মাথায় তিতি রুমের ভিতর গিয়ে তনয়কে একটা চড় মারলো।
“ওই কে তুই আর এইখানে আসলি কিভাবে?”
তনয় চোখ মেলে তাকিয়ে দেখে তিতি…..
“ওহহহহ তুই। শিশির তোর কথা অনেক বলেছে আর তোর পিক ও দেখেছি শিশিরের সাথে। আর তোর জন্য শিশিরকে বেশি পটাতে পারতাম না সব সময় আমার মাঝে দেয়াল হয়ে আসতি যেমন আজকেও আসলি”
“শিশির তোকে মন থেকে ভালোবাসতো আর তুই ছিঃ । একটা মেয়ের ভালোবাসা নিয়ে তার সাথে খারাপ কাজ করতে তোর বাঁধলো না। তুই তো শিশিরকে কোনোদিন মনে হয় ভালোবাসিস নি”
“তুই ঠিকই বলেছিস আমি কোনোদিন শিশিরকে ভালোবাসি নাই শুধু শিশির কেনো আজ পর্যন্ত যত মেয়ের সাথে প্রেম করেছি কাউকেই ভালোবাসি নাই। ”
“তোর লজ্জা করে না এত এত মেয়ের জীবন তুই নষ্ট করলি । আমার শিশিরের দিকেও তুই খারাপ নজর দিয়েছিলি তোকে আজ আমি ছাড়বো না”
“হাহাহা তুই কিছুই করতে পারবি না। এইখানে এসে বরং নিজের ক্ষতি করে ফেললি। যাক ভালোই হয়েছে আজ একসাথে দুই পাখি শিকার করবো”
“ঠিকই বলেছিস ভাই কিন্তু তোর একটু ভুল হয়েছে কথাটা হলো আজ শিকারি তোকে শিকার করবে”
অর্ণব ওই ছেলেটাকে মেরে এখন তনয়ের উপর হামলা করলো। সাথে শুভ্র ও…….
অর্ণব আর শুভ্র মিলে তনয়কে মারছে……
।।
।।
।।
।।।
???
“শুভ্র আর অর্ণব কোথায় সামু?”
“একটু প্যাঁচ লাগিয়ে দিলে তো মন্দ হয় না”
“কি রে কি ভাবছিস বল ওরা কোথায়?”
“আর বলিস না ভাই। ওই যে মেয়েটা যাকে দেখে তোর এই অবস্থা হলো ওই মেয়ে নাকি একটা ছেলের সাথে নাচতে নাচতে দু তলায় চলে গিয়েছে তাই শুভ্র অর্ণব ওইখানে গিয়েছে যেনো মেয়েটার কোনো ক্ষতি না হয়। কি খারাপ মেয়ে দেখছিস এই মেয়ে তো বিদেশি মেয়েদের ও হার মানাবে ছিঃ ছিঃ।”
প্রবণ কি বলবে বুঝতে পারছে না। ওর এখন কষ্ট, রাগ ও কান্না ও পাচ্ছে। ছেলেরা নাকি এত সহজে কান্না করে না তাই নিজেকে অনেক শক্ত করে বললো…..
“চল ওরা কোথায় গিয়েছে দেখে আসি?”
“এই তো প্ল্যান কাজে দিয়েছে। নাহ ভাই যেতে হবে না পরে কি না কি দেখবি এতে তোর আরো খারাপ লাগবে তোর যেতে হবে না। শুভ্র আর অর্ণব তো আছে”
“তুই আমার সাথে যাবি নাকি আমি একাই যাবো?”
“নাহ নাহ আসছি আমি”
সামু প্রবণ দুজনেই দু তলায় যেতে লাগলো…….
।।
।।।
।।।
“তিতির পাখি তুমি শিশিরের জ্ঞান ফিরনোর চেষ্টা করো আর আমি এই ছেলেটার বেবস্থা করছি”
“হুম।”
“আমার মায়াবিনী আমায় চিনতে পারছে না কেনো? নাকি চিনেও না চিনার ভাব করছে? ওর মুখ দেখে বুঝা যাচ্ছে না ও যে মিথ্যা বলছে নাকি ওর আর অর্ণবের সম্পর্ক যেনো ঠিক থাকে সেই ভয়ে এমন অভিনয় করছে”
শুভ্র তিতির দিকে তাকিয়ে আছে আর এইসব ভাবছে। ওর মাথায় কিছু আসছে না। ও শুধু জানে যেকোনো মূল্যেই হোক ওর মায়াবিনী কে ওর চাই……
“শুভ্র তুই এই ক্লাবের মালিক বা কর্মচারীকে ডেকে আন আজ এই শয়তানকে পুলিশে দিয়ে ছাড়বো”
“ওকে আমি যাচ্ছি। টেক কেয়ার ”
“তুই যা আমি সব ম্যানেজ করতে পারবো”
শুভ্র ক্লাবের মালিক বা কর্মচারী অথবা ম্যানেজারের সাথে দেখা করতে চলে যায়……
।।
।।
।।
“প্রবণ ওই রুম থেকে এত শব্দ আসছে কেনো কিছু কি হয়েছে?”
“জানি না চল গিয়ে দেখা যাক”
“ওই মেয়ের সাথে কি কিছু হয়েছে?”
সামুর কথা শুনে প্রবণ ভয় পেয়ে যায় তাই এক প্রকার দৌড়েই চলে যায় রুমের ভিতর…..
“ওই দাড়া আমাকে নিয়ে যা প্রবণ। যাহ বাবা চলে গেলো। আজব পাবলিক”
এক প্রকার রেগেই সামু ওই রুমের দিকে এগুতে লাগলো……
“কি একটা ঝামেলায় পড়লাম। একে তো ভালোবাসার মানুষ এখন অন্যজনের এখন আবার এই মেয়ে । পুরান পাগলে ভাত পায় না নতুন পাগলের আমদানি। যত্তসব”
সামু রাগে গজগজ করতে লাগলো……
???
“কি হয়েছে শিশিরের এইভাবে শুয়ে আছে কেনো?”
“মনে হচ্ছে মেয়েটা বেশি ড্রিঙ্কস করে ফেলেছে”
প্রবণ সামুর কথা শুনে শিশিরের কাছে গিয়ে দেখলো সত্যিই শিশির প্রচুর ড্রিঙ্কস করেছে।
“অর্ণব কি করেছে এই ছেলে এইভাবে মারছিস কেনো? তাছাড়া শিশির তো ওকে ভালোবাসে”
“নাহ ভাইয়া শিশির ভালোবাসে কিন্তু এই ছেলে না। এই ছেলে আজ শিশিরের সাথে খারাপ কিছু করতে চেয়েছিলো”
প্রবণ ও এসে তনয়কে মারতে থাকে। তখন অর্ণব বললো…..
“আর মারিস না পরে মরে যেতে পারে”
“এই কুত্তাকে তো আজ মেরেই ফেলবো। ও আমার মেঘ পরীর সাথে…..”
“অনেক মার খেয়েছে ও ছেড়ে দে। ওকে মেরে হাত ময়লা করে লাভ নাই। পুলিশের হাতে দিয়ে দেই সব কিছু পুলিশ বুঝে নিবে”
শুভ্র ক্লাবের মেনেজারকে নিয়ে আসে। ম্যানেজার আসার সময় পুলিশকে বলে এসেছে।
পুলিশ আসলো তনয়কে ধরে নিয়ে গেলো। তিতি অনেক চেষ্টা করার পর ও শিশিরের হুস আনতে পারলো না।
“কি করবো এখন? এই অবস্থায় তো শিশিরকে আমাদের বাসা বা ওদের বাসায় নিয়ে যাওয়া পসিবল না। ”
তিতি চিন্তিত সুরে বললো। তখন অর্ণব বললো…..
“তুমি বরং আজ আমার বাংলো তে চলে যাও শিশিরকে নিয়ে। সকালে ও ঠিক হলে বাসায় নিজে যেও”
“বাসায় কি বলবো। আম্মু তো আজ বলছে এখন নাকি আমি ঘনো ঘনো বাসা থেকে বের হই। অনেক সময় বাসায় ও যাই না। এই জন্য নাকি আশেপাশের মানুষজন খারাপ কথা বলছে”
“কে কি বলছে নাম বলো? কস্টিপ দিয়ে মুখ অফ করে রাখবো”
“ওফফ অর্ণব তুমি সব সময় নিজের ক্ষমতার জোরে সব করে ফেলতে চাও। তুমি জানো আজকাল একটা মেয়ে বাসার বাহিরে থাকলে মানুষ কত কিছু বলে। আজ আসার সময় তো পাশের বাসার এক আন্টি বলছে ‘ এই মেয়ে প্রতিদিন এইভাবে না যেয়ে একেবারে বিয়ে করলে তো হয়। তাহলে সব সময় একসাথে থাকতে পারো’ অনেক খারাপ লেগেছিলো তবু ও হাসি মুখে চলে আসি। আম্মু অনেক বলেছে আজ যেনো বাসায় যাই এখন বলো কি করবো। আমি শিশিরকে একা রেখে যেতে পারবো না আবার এই অবস্থায় বাসাতেও নিতে পারবো না”
অর্ণব ভাবছে কি করবে। শুভ্র সামু তো খুব খুশি ওদের সমস্যার কথা শুনে। তখন প্রবণ কাওকে কিছু না বলে শিশিরকে কোলে নিয়ে হাঁটা শুরু করলো…..
অর্ণব প্রবণের এই কান্ড দেখে বললো…..
“ওই কই নিয়ে যাচ্ছিস তুই শিশিরকে?”
“শিশির কে নিয়ে তোদের চিন্তা করতে হবে না। আর ভাবী শিশিরের আম্মু আপনাকে ফোন দিলে বলবেন শিশির আপনার সাথেই আছে। সকালে শিশির ঠিক হলে আমি ওকে দিয়ে আসবো”
“কিন্তু ভাইয়া ও…..”
“কিছু ভাববেন না। ওর কোনো ক্ষতি আমি করবো না। জাস্ট আজকে ওকে একটা জিনিষ বুঝাবো”
“কি জিনিষ?”
তিতি ভয় পায় যায়। তাই জিজ্ঞাসা করে ফেলে…..
“সেইটা না হয় আগামীকাল শিশিরের মুখ থেকেই শুনবেন”
প্রবণ চলে যায় শিশিরকে নিয়ে। অর্ণব শুভ্র আর সামুকে বাসায় পাঠিয়ে দেয়। আর ও নিজে তিতি কে ড্রাইভ করে বাসায় পৌছে দেয়………
চলবে……