Love warning part-15

0
1986

#Love_warning❤️
#your_love_is_my_drug_addiction?
#Part_15
#ফারজানা

সবাই সবার মতো নিজ নিজ ঠিকানায় রওনা দিলো। কারো মনে চলছে ভয় আবার কারো মনে আনন্দ। কি জানি কি হয়…….?

ক্লাবে…..

শিশির ক্লাবে গিয়ে তনয় কে ফোন দেয়…..

“হ্যালো জান তুমি কি চলে আসছো?”

“হুম”

“তাহলে ভিতরে চলে আসো জান”

“তনয় শুনোনা তুমি বাহিরে চলে আসো আমরা এইখান থেকে দেখা করে চলে যাবো আমার কেমন অস্বস্তি লাগছে”

“তুমি পাগল হয়ে গেছো? আমি আমার ফ্রেন্ডের তোমায় দেখাবো আর তুমি কিনা যা তা বলছো। তোমার এইসব বোকা বোকা কথার কারণে মাঝে মাঝে লজ্জায় পড়তে হয় আমার”

তনয় ফোন দিয়ে ধমকের সুরে বলছে……

“এইভাবে কথা বলছো কেনো? আমি তো এসেছি”

“বেশি কথা না বলে সোজা ক্লাবের ভিতরে চলে আসো”

তনয় ফোন কেটে দিলো। শিশির আস্তে আস্তে ক্লাবের ভিতরে চলে গেলো। শিশির দেখে তনয় অনেকগুলো মেয়ের সাথে ড্যান্স করছে। শিশিরের খুব রাগ হয় তবুও কিছু না বলে তনয়ের কাছে যায়……

“তনয়, তনয় তুমি কি শুনছো?”

তনয় এক হাতে ড্রিঙ্কসের গ্লাস হাতে নিয়ে শিশিরের দিকে তাকালো। আচমকাই শিশিরের হাত ধরে ড্যান্স করতে লাগলো…..

“কি করছো তনয় দেখো আমি এইসব লাইক করি জাস্ট ভালোবাসার মর্যাদা রক্ষা করতে এসেছি। এখন বিশ্বাস হলো আমি যে তোমায় ভালোবাসি”

“হুম জানে মন। নেও একটু খাও খুব মজা”

ড্রিঙ্কসের গ্লাস শিশিরের মুখে ধরে……

“ওয়াক থু থু তনয় চলো এইখান থেকে আর তুমি এইসব ছাইপাশ কি খাচ্ছো কি বাজে গন্ধ”

“প্রথম খেলে এমনি লাগবে পরে ঠিক হয়ে যাবে”

“তনয় তুমি বলছিলে তুমি তোমার ফ্রেন্ডের সাথে দেখা করাবে কোথায় ওনারা? আমার যেতে হবে”

“এত তাড়া কিসের আমি আছি না। আগে একটু ড্যান্স করি পরে না হয় কথাবার্তা”

“কিন্তু তনয়…..”

“কোনো কথা না চুপ আমার সাথে চলো…..”

শিশির তনয়ের সাথে ক্লাবের মাঝে চলে গেলো। এত এত ছেলে মেয়ের মাঝে এই রকম পরিবেশে শিশির অনেক অসস্তি বোধ করছে। তনয়ের মন রক্ষা করার জন্য মিথ্যা হাসি দিয়ে একটু একটু তাল মিলাচ্ছে……

অন্যদিকে……

সামু ইংলিশ মিউজিকের সঙ্গে ড্যান্স করছে সাথে শুভ্র ও…….

“কি রে অর্ণব প্রবণ কোথায় এখনও আসছে না কেনো?”

“তাছাড়া এইখানে ভালো লাগছে না। আমি ক্লাবের ভিতরে যাবো”

সামু নাক কুঁচকে বলতে লাগলো। অর্ণব বললো…..

“তোর সব কিছুতেই তাড়াহুড়া। এইখানে তোদের আর প্রবণ কে সারপ্রাইজ দিয়েই তো ক্লাবের স্টেজে যাবো”

“হুহহ”

অর্ণবের ফোনে কল আসলো। প্রবণ কল দিয়েছে।

“ওই তোরা যা গিয়ে অন্য কোথায় লুকিয়ে থাক”

সামু আর শুভ্র এক কোনায় লুকিয়ে থাকে….প্রবণ ক্লাবের প্রাইভেট রুমে আসে…..

“ওই কিসের এত জরুরি তলব বল। আমি তো তোর ফোন ম্যাসেজ পেয়ে ভয় পেয়ে গেছিলাম”

“এখন ভয় সাথে অবাক ও হবি”

“কেনো কি এমন মহৎ কাজ করছিস যে অবাক হবো?”

“স্যার,আপনি একটু কষ্ট করে পিছন তাকিয়ে দেখবেন”

“বাহ স্যার, ওকে দেখছি”

প্রবণ পিছনে তাকিয়ে দেখে শুভ্র আর সামু। শুভ্র সামু তো প্রবণ কে দেখে জড়িয়ে ধরলো সাথে ওরাও……

“আমে দুধে মিলে গেলো আর এইখানে আমি আঁটি হয়ে গড়াগড়ি খাচ্ছি”

প্রবণ অন্য হাত দিয়ে অর্ণবকে এই মিলেনে আহ্বান জানালো……

অবশেষে পুরনো দিনের মতো আবারো এক হলো চারজন।

শুভ্র অর্ণবকে বললো…..

“বাকি সারপ্রাইজ কই?”

“আসছে একটু ওয়েট কর”

সামু ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞাসা করলো এখন আবার কে আসছে……

“স্পেশাল একজন তোরা দেখলে খুশি হবি”

অর্ণব প্রবণ কে চোখ টিপ দিলো।তখন প্রবণ বললো…..

“বুঝতে পেরেছি ওনি সত্যিই খুব স্পেশাল একজন”

সামু ভেবেছে হয়তো প্রবণের গার্লফ্রেন্ড। তাই খুশি হয়ে বললো…..

“হুম স্পেশাল মানুষের জন্যতো স্পেশাল ওয়েট করতেই হয় তাই না শুভ্র ভাইয়া”

“ইয়েস”

তিতি অর্ণবের ফোনে ম্যাসেজ দিলো যে, ও বাহিরে ওয়েট করছে…..

“প্রবণ তুই সামু আর শুভ্রর চোখ রুমাল দিয়ে বেঁধে রাখ”

শুভ্র আচর্য হয়ে বললো…..

“সারপ্রাইজের সাথে চোখ বন্ধের কি সম্পর্ক?”

“সম্পর্ক আছে তোরা চোখ অফ কর”

“হুম”

সামু আর শুভ্রর চোখ বেঁধে দেয় প্রবণ। অর্ণব গিয়ে তিতি কে ভিতরে নিয়ে আসে…..

তিতি কে সামুর পাশে দাঁড় করিয়ে অর্ণব হাটু ভাজ করে বসে পরে……

জীবনের রং বড় বিচিত্র, কখনো লাল কখনো নীল। কখনো মুক্ত পাখির মতো। কখনো আবার চুপসে যাওয়া ফুলের মতো। হারিয়ে যায় কত চেনা মুখ। থেকে যায় সুধু অনাবিল সূখ।

নীল নীলিমায় দূরে কোথায় মন যে হারায় বেকুলতায় মনে পরে যায়। একটা কথা ই মন জানতে চায় অবেলায় অবসরে মনে কি পরে আমায়। আই লাভ ইউ তিতির পাখি লাভ ইউ সো মাচ।

তিতির হাতে কিস করে। সামু এতক্ষণ ভাবছিলো অর্ণব বুঝি তাকে প্রপোজ করছে কিন্তু নাম শুনে নিজেই নিজের চোখের বাঁধন খুলে ফেললো।দেখলো অর্ণব একটা মেয়ের হাত ধরে আছে। শুভ্র ও চোখের বাঁধন খুলে ফেললো।

“কি রে কেমন হলো সারপ্রাইজ?”

সামু কাঁপা কাঁপা গলায় বললো…..

“কে এই মেয়ে আর কিসের সম্পর্ক তোদের?”

“ও হলো তিতি। আমার জীবন। যাকে গিরে আমার পৃথিবী খুব ভালোবাসি ওকে”

অর্ণবের কথা শুনে শুভ্র মেয়েটির দিকে তাকালো। দেখলো তার মায়াবিনীর দেওয়া ছবির একজন।

“এ কি আমার মায়াবিনী নাকি ওর বোন”

মনে মনে ভাবছে শুভ্র। কিন্তু সামু এত বড় ধাক্কা খেয়েও অর্ণবের সামনে তা প্রকাশ করতে চাচ্ছে না। কিন্তু তিতি কে দেখে রাগে বেগুনে ফুলছে ও……

“অর্ণব ভাবী তো দেখছি মাশাআল্লাহ খুব সুন্দর। ভাবির কি কোনো বোন আছে আর…?”

“নাহ রে বউটা আমার ওনলি ওয়ান কোনো বোন নাই”

প্রবণ হেসে হেসে বললো……

“কেনো বোন থাকলে বুঝি প্রেম করতি?”

“তা অবশ্যই করতাম”

“এ কি হলো শুভ্র ভাইয়ার ও তো জানে এখন আমার মনে অবস্থা তাও এইভাবে হেসে হেসে কথা বলছে”

“এই হলো আমার মায়াবিনী। মায়াবিনী তোমায় আজ এত সামনে পেয়েও কথা বলতে পারছি না ভালোবাসার কথা বলতে পারছি না এর চেয়েও কি কোনো কষ্ট থাকতে পারে”

শুভ্র আর সামু অন্য ভাবনায় চলে গেলো। প্রবণের ডাক শুনে ওদের হুস আসে…..

“চল বাহিরে ক্লাবের স্টেজে যাই”

সামু না চাওয়া সত্বেও অর্ণবকে চোখে খারাপ না হওয়ার জন্য স্টেজে যেতে রাজি হলো।

শুভ্র ওর মায়াবিনীর সাথে কিছুটা সময় থাকতে পারবে বলে রাজি হলো…….

প্রবণ আগে চলে গেলো। তিতি আর অর্ণব একসাথে হেসে হেসে কথা বলতে বলতে যাচ্ছে। তখন সামু শুভ্রকে ফিসফিস করে বললো……

“ভাইয়া ওই মেয়ে কে আমি ছাড়বো না। খুন করে ফেলবো আমি ওই মেয়ে কে”

“তিতি হলো আমার মায়াবিনী”

শুভ্রর কথা শুনে সামু দাড়িয়ে যায়……

“হোয়াট?”

“হুম। এখন বেশি কথা বলিস না পরে আলাদা ভাবে কথা বলবো। অর্ণব আর মায়াবিনী কে তো আমি কিছুতেই একসাথে থাকতে দিবো না। বাসায় গিয়ে ওদের কিভাবে আলাদা করা যায় তার প্ল্যান করতে হবে”

“ওকে আমি তোর পাশে আছি। অর্ণবকে পাওয়ার জন্য তুই যা বলবি তাই করবো শুধু অর্ণবকে আমার চাই”

“হুম। এখন চল আর ভুলেও মন খারাপ করে থাকবি না এতে সমস্যা হতে পারে”

“ওকে”

শুভ্র আর সামু ফিসফিস করে কথা বলতে বলতে ক্লাবের ভিতরে চলে যায়।

।।

।।
।।

।।

।।।

অর্ণব তিতি প্রবণ শুভ্র ও সামু ড্যান্স করছে। ডান্স করতে করতে হঠাৎ তিতির চোখ এক জায়গায় গিয়ে আটকে পরে। অর্ণবকে হাতে ইশারা করে ওইদিকে তাকাতে বলে। অর্ণব ওইদিকে ফিরে ড্যান্স করা বন্ধ হয়ে যায়। কেননা শিশির প্রচুর ড্রিঙ্কস করছে আর নাচছে। তিতি অবশ্যই তনয় কে চিনে ……..

“শিশির এইখানে তাও তনয়ের সাথে….?”

“ওই কি তনয়?”

“হুম। ”

“প্রবণ আছে এইখানে শিশিরকে এইভাবে দেখলে রাগ করতে পারে। চলো প্রবণ কে নিয়ে এইখান থেকে চলে যাই পরে তুমি শিশির কে নিয়ে যেও”

“হুম”

অর্ণবের কথা সামু শুনে ফেলে আর বুঝতে পারে এই মেয়ে হলো প্রবণের গার্লফ্রেন্ড। মনে মনে শয়তানি বুদ্ধি করে ফেলে। শুভ্রকে ফিসফিস কথাটা বলে। শুভ্র মেয়েটার দিকে তাকিয়ে প্রবণ কে বলে……

“বাহ আজকাল বাংলাদেশের মেয়েরাও দেখছি বিদেশি মেয়েদের হার মানাবে। দোস্ত দেখ কি সুন্দর একটি মেয়ে আর কি সুন্দর ড্যান্স করছে”

প্রবণ শুভ্রর কথা শুনে তাকিয়ে শিশির কে দেখতে পেলো। শিশির ড্রিঙ্কস করেছে তাই ওর আর কোনো হুস নাই। শিশির তনয়ের সাথে খুব ঘনিষ্ট হয়ে ডান্স করছে। প্রবণ শিশিরের কাছে যেতে নিলেই অর্ণব ধরে ফেলে…..

“কি করছিস কি তুই? রাগের বশে এমন কিছু করিস না যাতে খারাপ কিছু হয়”

“তুই দেখছিস শিশির আমার শিশির। ও কিনা একটা ছেলের সাথে ছিঃ আমার ভাবতেই ঘৃনা হচ্ছে”

“ভাইয়া ওই ছেলেটাকে শিশির ভালোবাসে। ওর নাম তনয়”

তিতির মুখে শিশিরের ভালোবাসার কথা শুনে প্রবণ মনে হয় পাগল হয়ে যাচ্ছে।তখন শুভ্র বললো…..

“শুন ভাই জোর করে ভালোবাসা হয় না। অন্য মেয়ে দেখ”

“ওকে ভালোবাসি আমি। কিভাবে অন্য মেয়ে কে দেখবো”

“ভাইয়া আপনি এখন মাথা ঠান্ডা রাখুন আমি আগামীকাল শিশির কে বুঝাবো প্রমিজ করছি”

“নাহ থাক ভাবী। ও যেহেতু ওই ছেলেকে ভালোবাসে ওদের মাঝে আমি বাঁধা হয়ে দাঁড়াবে না। সত্যিই তো সবারই তো নিজের ভালোবাসা পাওয়ার অধিকার আছে। আমার ভালোবাসা ছিলো এক তরপা তা আমার কাছেই থাকুক”

প্রবণ চলে যায়। তিতি ও অর্ণব ও ওর পিছু পিছু যায়।

শুভ্র ডেভিল হাসি দিয়ে বললো…..

“কি রে কেমন দিলাম?”

“পুরাই ঝাকানাকা ব্রো হাহাহা”

“এই চল এখনও তো নাটক বাকি আছে গিয়ে দেখে আসি”

“হুম চল আর সাথে করে বোতলটা নিয়ে যাই প্রবণের দরকার হতে পারে কি বলিস”

“অফকোর্স”

???

“শিশির দেখছি এখন একদম হুসে নেই। এক্ষনি আসল সময়”

তনয় ফোনে কার সাথে যেনো কথা বলছে। আর বলছে…..

“ক্যামেরা কিন্তু সব দিক দিয়ে লাগাবি একটাও যেনো ভুল না হয়। আর ফুলের পাপড়ি গুলো যেভাবে বলছি ওইভাবে রেখেছিস”

ফোনের ওপাশ থেকে…..

“হুম। তুই যেভাবে বলছিস সেইভাবেই রাখছি। দোস্ত তুই একা মজা নিবি আর আমরা শুধু দেখবো তা কি ভালো হয় নাকি”

“হাহাহা। সময় হোক তোরাও পাবি। আজকের দিন শুধু আমার”

ফোনে কথা বলা শেষ। তনয় শিশিরকে কোলে তুলে ক্লাবের উপরের একটা রুম বুক করা ওইখানে নিয়ে যেতে লাগলো…….

চলবে…….

বানান ভুল হলে ক্ষমা করবেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে