#Love_warning❤️
#your_love_is_my_drug_addiction?
#Part_14
#ফারজানা
সামু চলে গেলো শুভ্র একটা সিগারেট ধরিয়ে তার মায়াবিনীর কথা ভাবতে লাগলো।
সময়টা খুব তাড়াতাড়ি চলে গেলো। শিশির ও তিতি নিজেদের বাসায় চলে যায়। অর্ণব আর প্রবণ দুজনেই বিজি হয়ে পরে…..
“ভাইয়া দেখ বাংলাদেশ কিন্তু অনেক চেঞ্জ হয়ে গিয়েছে। সাত বছর আগের বাংলাদেশ আর আজকের বাংলাদেশ কত পার্থক্য।”
“তাই তো দেখছি”
চোখ থেকে সানগ্লাস খুলে দেখতে লাগলো শুভ্র।
“এই ভাইয়া এখন কিভাবে যাবো আমরা অর্ণব প্রবণ ওদের কিছু বলি নাই এত বছরে অনেক কিছু চেঞ্জ চিনবো কিভাবে?”
“আরেহ গাঁধী সব ঠিক করেই এসেছি। কানাডা থেকেই অনলাইনে সব বুক করেই তো এসেছি”
“বাহ। কত টেলেন্ট”
শুভ্র এদিক ওদিক তাকিয়ে সব দেখতে লাগলো। একটি লোক এসে শুভ্র কে দেখে বললো…..
“স্যার,আপনি কি শুভ্র খান?”
“ইয়েস।”
লোকটি শুভ্রকে একটা কার্ড দেখালো। শুভ্র কার্ড থেকে বুঝতে পারলো ওনাদের কাছ থেকেই ও গাড়ি বুকিং করেছে।
শুভ্র আর সামু গাড়িতে বসে অর্ণবের বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিলো……
(আপনাদের একটা কথা বলতে ভুলে গেছি। অর্ণব হলো শুভ্রের মামাতো ভাই। সামিয়া তো জানেন শুভ্রের চাচাতো বোন। শুভ্রের ফ্যামিলি আর সামিয়ার ফ্যামিলি কানাডা থাকে। তাই শুভ্র ও সামিয়া অর্ণবের বাসায় থাকবে।)
“জানিস সামু যতই বাসার উদ্দেশে যাচ্ছি ততই মন কেমন যেনো চটপট করছে”
“আমার তো হার্ডবিট বাড়ছে। এক ঘন্টা অর্ণবকে জড়িয়ে ধরবো প্লেন করে রেখেছি আমি”
“আর আমার প্রথম কাজ হলো আমার মায়াবিনী কে খুঁজা।”
“দোয়া কর সব যেনো ঠিক থাকে”
শুভ্র ও সামু কথা বলতে বলতে যাচ্ছে।
“ট্রাস্ট মী তনয় আমি তোমাকে সত্যিই খুব ভালোবাসি।”
ওপাশ থেকে তনয় বলছে……
“ভালোবাসো না ছাই। তোমাকে কতদিন ধরে বলছি মিট করার জন্য কিন্তু তুমি তো সময় পাচ্ছো না। নাকি আরো রিলেশন করো?”
“ছিঃ ছিঃ তনয় কি বলছো? আমি শুধু তোমাকেই ভালোবাসি। আর কাওকে না”
“এক শর্তে বিশ্বাস করবো তুমি আমায় ভালোবাসো”
“কি শর্ত বলো? ভালোবাসার জন্য সব শর্ত আমি মানতে রাজি”
“তাহলে আজ দেখা করতে হবে”
“তুমি বুঝতে পারছো না তনয়। তোমার সাথে দেখা করলে তোমার আমার দুজনেরই বিপদ”
“কিসের বিপদ? শোনো এত মিথ্যা কথা বলতে হবে না। আমি বুঝে গিয়েছি যে তুমি আমায় ইউজ করছো ভালোবাসো না। এত নাটক করার কি দরকার? তুমি আবারো প্রমাণ করে দিলে সব মেয়েরাই ভালোবাসা নিয়ে খেলা করে”
“প্লিজ তনয় বিশ্বাস করো আমি কিন্তু তোমায় সত্যি সত্যি ভালোবাসি”
শিশির এক প্রকার কান্না করে দিলো…….
“যদি ভালোবাসো তোমাকে একটি ক্লাবের ঠিকানা ম্যাসেজ করে দিচ্ছে চলে এসো আর সন্ধ্যা সাতটায় ওকে”
শিশির কিছু বলার আগেই তনয় ফোন কেটে দিলো। শিশির কি করবে বুঝতে পারছে না।
“আমার কি করা উচিৎ। তিতি কে কি বলবো। নাহ থাক বলা লাগবে না পরে বলবে যেতে হবে না ওই ছেলে তোকে ভালোবাসে না। কি করবো আমি এখন কিভাবে বুঝাবো যে আমি তনয় কে ভালোবাসি।”
অনেক্ষণ ভেবে চিন্তে শিশির ঠিক করলো ও যাবে। আর বাসায় যদি ক্লাবের কথা বলা হয় তাহলে ওর আম্মু দিবে না। তাই তিতির বাসার নাম করে ও তনয়ের সাথে দেখা করতে যাবে তনয়ের দেওয়া ঠিকানায় ……
???
“মামুনি কেমন আছোউউউউউ?”
অর্ণবের আম্মু কে জড়িয়ে ধরে বললো সামু আর শুভ্র। অর্ণবের আম্মু তো ওদের দুজনকে দেখে অবাক হয়ে গেলো…..
“ওই ছার আমায় এইভাবে জড়িয়ে ধরলে তো দম বন্ধ হয়ে মারা যাবো”
“কি যে বলো না মামুনি তুমি তো এখনও কিউটি গার্ল হয়ে আছো এইভাবে জড়িয়ে ধরলে কিছু হবে না”
“যাহ পাগলী মেয়ে এখনো আগের মতোই আছিস”
“কেনো তুমি কি পরিবর্তন হয়েছো যে আমি হবো”
“হুম বুঝছি এইবার বলুন একদিন আগে কিভাবে আসলেন?”
শুভ্র বললো……
“কিভাবে আর বিমানে এসেছি”
“তো বললি না কেনো গাড়ি পাঠাতাম আর অর্ণব তো তোদের আনবে বলে কত কি প্ল্যান করে রেখেছে। তোরা বেচারার প্ল্যানে পানি ঢেলে দিলি”
“তোমাদের সারপ্রাইজ দিবো বলেই তো ভাইয়াকে বলেছি তোমাদের না জানাতে। এখন বলো কেমন সারপ্রাইজ দিলাম”
“অনেক ভয়ংকর, চমক অ্যান্ড আনন্দিত সারপ্রাইজ এইটা”
সামু এদিক ওদিক তাকিয়ে অর্ণবকে খুঁজতে লাগলো। শুভ্র বুঝতে পেরে অর্ণবের আম্মুকে বললো……
“এই যে মামুনি অর্ণব কোথায়? ওকে তো দেখতে পাচ্ছি না”
“ওতো ওর আব্বুর অফিস নিয়ে ব্যাস্ত থাকে সব সময় এখন তো আবার হবু বউ তাকে নিয়েও ব্যস্ত আমার ছেলেটা”
সামু হবু বউ বলতে সে নিজেকে বুঝেছে তার কারণ একটু আগে যখন অর্ণবের আম্মু বলেছে অর্ণব নাকি তাদের দুই জনের জন্য কিসব প্ল্যান করেছে। সামু এখন লজ্জায় লাল হয়ে আছে।
“আমার মনে হয় কোনো অঘটন ঘটে গিয়েছে। সামু কে এখন কিছু বলবো না আগে দেখি আসল ঘটনা কি”
শুভ্র মনে মনে যা বুঝার বুঝে গিয়েছে। সামু জিজ্ঞাসা করলো ….
” প্রবণ কোথায় এখন মামুনি?”
“তোরা উপরের তিন নাম্বার রুমে যা আর গিয়ে দেখ অর্ণব কি করছে আর ওর কাছ থেকেই সব জেনে নে। আমি বরং যাই তোরা কত দূর থেকে এসেছিস তোদের জন্য নিজ হাতে রান্না করবো। তোদের মামা তো এখন ব্যাবসার কাজে আমেরিকায় আছে কিছুদিনের মধ্যেই এসে পড়বে”
“ওকে মামুনি”
শুভ্র আর সামু উপরের তিন নাম্বার রুমে চলে যায়। দরজা আগে থেকেই খুলা ছিলো। দুইজন রুমে ঢুকেই দেখে অর্ণব কার সাথে যেনো কথা বলছে। সামু অর্ণবকে দেখতে পেয়েই দৌড়ে গিয়ে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে।
“কে কে এই ছাড়েন বলছি কে কি করছেন?”
অর্ণব সামু কে না দেখে…..
“আরেহ গাধা আমি সামু”
অর্ণব সামুর হাত সরিয়ে সামুর দিকে তাকিয়ে…..
“তোরা না আগামীকাল আসবি বলেছিলি তাহলে আজকে”
“কেনো রে অর্ণব তুই খুশি হস নাই আমাদের দেখে”
শুভ্র খাটে বসে বললো……
“আরেহ শালা খুশি হবো কেন? আমি ভাবছি তোরা আসছিস আমাকে বলতে পারতি আমি নিয়ে আসতাম”
“তোকে সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য এসেছে বাই দা ওয়ে প্রবণের কি খবর?”
“আর বলিস না শুভ্র প্রবণ তো এখন প্রেমে পড়ে গেছে। আর প্রবণ এখন এক ভার্সিটির প্রফেসর আর মেয়েটি ওই ভার্সিটির স্টুডেন্ট”
“হিহিহিহি প্রবণ ভাইয়া তো এখন ছাত্রীর প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে”
সামুর কথা শুনে অর্ণব সামুর দিকে তাকিয়ে বললো….
“ভাইয়া কবে থেকে হলো?”
“আমাদের সামু এখন বড়দের সম্মান দিয়ে কথা বলে। আমাকেও ভাইয়া ডাকে এখন”
“তাহলে তো আমাকেও ডাকবে হাহাহা”
“তোকে ডাকতে বয়ে গেছে আমার যা ভাগ”
তিনজন কিছুক্ষণ কথা বলে চলে গেলো। অর্ণব শুভ্র এক রুমে থাকবে সামু আলাদা। ওরা ফ্রেশ হয়ে খাবার খেয়ে কিছুক্ষণ গল্প করলো।
“ওই চল আজ এক জায়গায় যাই?”
“কই যাবো তাছাড়া প্রবণের সাথে এখনও কথা হলো না”
“আজ তোদের কে সারপ্রাইজ দিবো”
সামু খুশি হয়ে বললো।।।।।।।
“কি সারপ্রাইজ বল?”
“বললে ওইটা আর সারপ্রাইজ থাকে না। প্রবণ কে সারপ্রাইজ দিবো তোদের নিয়ে যেমন আমি হলাম। আর তোদের দুজনকে দেখাবো আমার স্পেশাল সারপ্রাইজ।”
“কখন দেখাবি সারপ্রাইজ?”
“আজ রাতে”
???
“মানুষের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হলো ভালবাসা,
যার মধ্যে ভালোবাসা নেই তার কোনো দুর্বলতাও নেই,
ভালোবাসার জন্য মানুষ সব কিছু ছেড়ে দেয়।
আর সেই ভালোবাসা তার জন্য কাল হয়ে দাড়ায় !হাহাহা।
শিশির তুমি তো আমার পাতা ফাঁদে পা দিয়ে ফেলেছো। জানো কবে থেকেই এই সুযোগ খুঁজছিলাম কিন্তু পাই নি তাই তো আজ ভালোবাসার কথা বলে তোমাকে দিয়ে আমার ইচ্ছা পূরণ করবো। তুমি বড্ড বোকা শিশির আজ দেখবে তনয়ের আসল খেলা”
তনয় দাবা খেলছে আর একটা একটা গুটি কেটে দিচ্ছে………
।।।
।।।
।।।
।।।
অর্ণব ফোনে প্রবণ কে একটা ঠিকানা দিলো আর বললো খুব তাড়াতাড়ি আসার জন্য।প্রবণ অনেক জিজ্ঞাসা করেছে অর্ণব কিছু বলে নাই। তাই প্রবণ রেডি হয়ে অর্ণবের দেওয়া ঠিকানায় চলে আসলো……..
অন্যদিকে তিতি আজ শাড়ি পড়েছে। আজ অর্ণব তিতি কে বলেছে শাড়ি পড়তে। নীল শাড়ীটা অর্ণব পছন্দ করে পাঠিয়েছে তিতির জন্য সাথে কিছু কসমেটিক। তিতি ও রেডি হয়ে অর্ণবের পাঠানো গাড়িতে বসে পড়লো…..
“আজ কি এমন সারপ্রাইজ দিবে আল্লাহ জানে। প্রতিদিনই তো সারপ্রাইজ দিচ্ছে একদিন এই সারপ্রাইজ দেখতে দেখতে আমি শেষ হয়ে যাবো। আর মহারাজ শাড়ি পরতে বলেছে কি ব্যাপার?”
তিতি নিজের মতই বকবক করে যাচ্ছে……
অন্যদিকে শিশির কি পড়বে বুঝতে পারছে না। ওর মনে এখনও দ্বিধা বোধ হচ্ছে ওইখানে যাওয়া কি ঠিক হবে নাকি অন্য কিছু। কোনো কূল কিনারা না পেয়ে কালো একটা শাড়ি পড়ে রেডি হয়ে গেলো। তনয়ের কালো রং নাকি খুব পছন্দ তাই এই রংটাই বেছে নিয়েছে শিশির।
সবাই সবার মতো নিজ নিজ ঠিকানায় রওনা দিলো। কারো মনে চলছে ভয় আবার কারো মনে আনন্দ। কি জানি কি হয়…….?
চলবে…….