#Love_warning❤️
#your_love_is_my_drug_addiction?
#Part_8
#ফারজানা
???
একদিন তিতি রাতে বাড়ি থেকে আবার পালানোর চেষ্টা করছিলো তখন ওর সাথে শিশিরের দেখা হলো……
“কি রে শিশির কি হয়েছে তোর এত রাতে আমাদের বাসায় তাও এই রকম অবস্থায় কি হয়েছে তোর?”
শিশির হাঁপাতে হাঁপাতে বললো…..
” ও ও এসেছে আজ”
“কে?”
“স্বাধীন ও আবার এসেছে আমাকে বাঁচা তিতি”
“মানে? ও কখন এসেছে আর কি হয়েছে বল সব কিছু?”
“বলছি তার আগে এইখান থেকে চল ও চলে আসতে পারে”
“হুম”
শিশির আর তিতি বাসার পিছন দিকের রাস্তা দিয়ে চলে গেলো পরে একটা নিরাপদ জায়গায় এসে বসলো…..
“হুম বল কি হয়েছে?”
“তুই তো জানিস আজ আব্বু আম্মু নানু বাড়িতে গিয়েছে আমাকে অনেক বলেছে ওদের সাথে যাওয়ার জন্য আমি যাই নি । ”
“হুম । তোকে তো বলেছি আমাদের বাসায় থাকতে বাট থাকলি না এখন বল কি হয়েছে?”
“আমি ডিনার করে টিভি দেখছিলাম তখন সমানে কলিং বেল বাজতে থাকে আমি প্রথম দরজা খুলি নাই বাট অনেক বাজার পর দরজা খুলি তখন সামনে দেখি স্বাধীন দাড়িয়ে আছে।স্বাধীন তখন আমার হাত ধরে টানতে থাকে ।তখন আমি রাগের বশে চড় মারি তাই ও রেগে গিয়ে আমার চুলের মুঠি ধরে রুমের ভিতর নিয়ে যায় আর আমার সাথে খারাপ কিছু করতে চায়(জোড়ে জোড়ে কাঁদতে কাঁদতে) তখন কোনো উপায় না পেয়ে কাচের বোতল দিয়ে বারী মারি। আর দৌড়ে চলে আসি। ও আসছে আমার পিছনে….”
“শুন যা হয়েছে তো হয়েছে এখন চল আমরা কিছুদিনের জন্য কোথাও লুকিয়ে থাকি আর তুই তোর আব্বু আম্মু কে ফোন দিয়ে বলিস সাবধানে থাকতে”
“হুম”
ওইদিন তিতি আর শিশির ট্রেন স্টেশনের সামনে আসতেই কেউ একজন পিছন থেকে তিতির হাত ধরে ফেলে। তিতি পিছনে তাকানোর সাথে সাথে ওর গালে থাপ্পর পড়ে। তিতি থাপ্পড় খেয়ে হুমরি খেয়ে নিচে পরে যাওয়ার আগেই তাকে ধরে ফেলে……
তিতি ছলছল চোখে সামনে তাকিয়ে দেখে অর্ণব রাগী চোখে তার দিকে তাকিয়ে আছে। মনে হচ্ছে এক্ষনি তাকে গিলে খেয়ে ফেলবে ।
“তু তুমি এইখানে?”
“কেনো আমি না আসলে বুঝি তোর পালাতে ভালো হতো? এই নিয়ে কয়বার পালিয়েছিস তুই হিসাব আছে তোর? কি ভেবেছিস আমি কিছু জানবো না আমাকে কি তুই বোকা পেয়েছিস?”
আবার আরেকটা থাপ্পড় মারে অর্ণব তিতি কে…..
“মন চাচ্ছে তোকে এইখানে মেরে মাটি চাপা দিয়ে দেই শুধু ভালোবাসি বলে পারছি না। ”
তিতির মাথার চুল হাতের মুঠোয় নিয়ে বললো…..
শিশির আজ অর্ণবকে দেখে ভয় পাচ্ছে তাও সাহস নিয়ে বললো…..
“ভাইয়া কি করছেন এত মারছেন কেনো আমার তিতি পাখি কে ছাড়েন বলছি”
অর্ণব রাগের বশে শিশির কে থাপ্পড় মারে শিশির থাপ্পড় খেয়ে প্রবণের উপর পড়ে যায় আর সাথে সাথে জ্ঞান হারায়……
“ব্রো কি মাইর দিলি রে অজ্ঞান হয়ে গেছে”
প্রবণ অর্ণবকে বললো…..তিতি দৌড়ে গিয়ে শিশির কে ধরতে যাবে তার আগেই অর্ণব তিতির হাত ধরে টানতে টানতে গাড়ির দিকে নিয়ে যায়। আর যাওয়ার আগে প্রবণ কে বলে……
“সরি দোস্ত, রাগের মাথায় কি করেছি ক্ষমা করে দিস আর শিশির কে কোলে করে নিয়ে আয়”
“হুম যা তুই আসছি আমি”
অর্ণব তিতি কে গাড়িতে তুলে আর প্রবণের জন্য অপেক্ষা করে। প্রণব গাড়িতে বসতেই অর্ণব ড্রাইভার কে বলে,……
“গাড়ি আমার বাংলা বাড়িতে নিয়ে যাও”
“ওকে স্যার”
গাড়ি চলছে তিতি এর মাঝে অনেক বাড়াবাড়ি করায় অর্ণব ক্লোরোফর্ম দিয়ে তিতি কে অজ্ঞান করে ফেলে……
সকালে……
অর্ণব তিতির মুখে এক জগ পানি ঢালে আর সাথে সাথে তিতির জ্ঞান ফিরে ।
“প্রবণ একজনের জ্ঞান ফিরছে আরেকজনের কি অবস্থা”
“আর বলিস না তোর থাপ্পড় খেয়ে বেচারি এখনও অজ্ঞান হয়ে আছে হাহাহাহা”
“আমার থাপ্পড়ের এত ক্ষমতা আগে তো জানতাম না। যা পানি ঢাল এখন তুই ”
“হুম”
প্রবণ শিশিরের মাথায় পানি ঢালার পর শিশির জোরে জোরে চিৎকার দিতে থাকে আর বলতে থাকে……
“প্লিজ হেল্প মী এক হাতি আমাকে লাত্থি মেরেছে প্লিজ হেল্প মী”
শিশিরের কথায় অর্ণব আর প্রবণ কিছুক্ষণ শিশিরের দিকে তাকিয়ে পরে জোরে জোরে হাসতে লাগে…..
শিশির ভয় পেয়ে তিতির পিছনে গিয়ে লুকিয়ে পরে….
“অর্ণব দোস্ত আর হাসিস না বাচ্চা মেয়ে গুলো ভয় পাবে”
“হুম ঠিক বলেছিস”
তিতি ওদের কথা শুনে রাগে সাপের মত ফুঁসতে থাকে….
“আমাকে ধরে এনেছ বুঝতে পারলাম বাট শিশির কে আনলে কেনো?”
” আর বলো না তিতির পাখি তোমার এই বকবক আর কাবাব মে হাড্ডি ফ্রেন্ড তাকে আমার জানে জিগার দোস্ত পছন্দ করে ফেলেছে তাই আর কি ওকে ও নিয়ে আসলাম”
“তাছাড়া ভাবী আপনার তো একা ভালো লাগবে না তাই আপনার সঙ্গী নিয়ে আসলাম দেখেছেন ভাবী আমরা কতো ভালো”
“তিতি কি বলছে ওরা প্লিজ আমাকে বাঁচা আমি কিন্তু এখন হার্ট অ্যাটাক করবো”(কান্না করে)
“আরেহ বউ কি বলছো তুমি এইসব? তুমি হার্ট অ্যাটাক করলে তো আমি বিয়ের আগেই বিধবা হয়ে যাবো”
প্রবণ শিশিরকে চোখ টিপ দিয়ে বললো কথাটা ……
“ভাই আপনি কে আর কি বলছেন? দেখুন ভাই এইটা কোনো সিনেমা না যে আপনি ডায়লগ বলছেন এইটা হলো আমার জীবন তাই ভাই প্লিজ আমাকে আর তিতি কে ছেড়ে দিন”
“দোস্ত, ভাবী কিন্তু এখন বেশি কথা বলছে পরে কিন্তু আমার আবার রাগ উঠবে ভালো ভালোই এখন নিয়ে যা আর একটু রোমাঞ্চ কর ,আর আমিও”
“ওকে ব্রো”
প্রবণ শিশিরের কাছে যেতেই শিশির তিতি কে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে থাকে ।
“দেখো অর্ণব তুমি তো জানো শিশির বাচ্চা স্বভাবের মেয়ে প্লিজ ওকে ছেড়ে দাও আমি তোমার সব কথা শুনবো”
“সরি বউ, তোমার থেকে আমার কাছে প্রবণের দাম বেশি সো ও যেহেতু তোমার এই বাচ্চা ফ্রেন্ড কে ভালোবেসে ফেলেছে তাহলে তো আর কিছু করার নাই ওদের ওদের মতো থাকতে দেও। প্রবণ যা নিয়ে যা”
“আমি যাবো না তিতি আমাকে বাঁচা ওই লোকটি আমায় মেরে ফেলবে”
তিতি শিশিরের হাত ধরে আছে তাই অর্ণব এসে তিতির হাত সরিয়ে তিতি কে কোলে নিয়ে চলে যায় আর প্রবণ শিশির কে কোলে নিয়ে রুমে ঢুকতে থাকে…..
“এই তুমি কি খাও না”
প্রবণ বললো…..
“কেনো কি হয়েছে?”
“নাহ এত পাতলা কেনো তুমি এই নিয়ে তো অনেকবার কোলে নিলাম তোমায়?”
“তো বলেন তো আমার ওজন কত?”
“মনে হয় ৪৮?”
“হুম ঠিক বলছেন”
“আর আমার কতো জানো?”
“কত আর হবে ৬০ মনে হয়”
“হাহাহা ৭৪ কেজি”
“দেখে তো মনে হয় না”
“কেনো তোমার কি ইচ্ছা তোমার স্বামী মোটু হোক”
শিশির কথার তালে ভুলে গিয়েছিল আগের কথাগুলো এখন আবার মনে পড়াতে কান্না করতে থাকে। প্রবণ শিশিরের এইসব কান্ড দেখে হাসতে থাকে……
???
অর্ণব তিতি কে একটা রুমের ভিতর আনে আর খাটে বসিয়ে দেয় তিতি কে……
“তিতির পাখি তুমি কেনো আমার ভালোবাসা বুঝো না বলোতো? কেনো বার বার রাগিয়ে দেও আমায়? আমার তো মোটেও ইচ্ছা করে না তোমার গায়ে হাত তুলতে বাট তুমি এমন এমন কাজ করো তাই বাধ্য হয়ে এই কাজটা করতে হয়”
“এইভাবে আস্তে আস্তে না মেরে একেবারে মারতে পারো না। তাহলে একদিনেই সব শেষ। কেনো যে তোমার মতো সাইকো কে পছন্দ করলাম আর কেনই বা তোমার সাথে আমার পরিচয় হলো। তুমি হলে আমার লাইফের এক অভিশাপ যার জন্য আমার পুরো লাইফ শেষ হয়ে যাচ্ছে”
“রাগাবে না আমায় তিতির পাখি”
“খবরদার আমায় তিতির পাখি বলে ডাকবে না। তুমি তো হলে এক গুন্ডা মাফিয়া সাইকো ভিলেন । না জানি কত মানুষের প্রাণ নিয়েছো আচ্ছা তোমার মা বাবা কি তোমায় ভালো কোনো শিক্ষা দিতে পারে নাই নাকি ওরাও তোমার মতো সাইকো”
তিতির কথাটা উচ্চারণ করতে দেরী বাট অর্ণব তিতির চুলের মুঠি ধরতে দেরি হলো না…..
” কি বলেছিস তুই আমার মা বাবা আমায় ভালো শিক্ষা দিতে পারে নাই তাই না”
তিতি কে থাপ্পড় মারে আর তিতি গিয়ে দেওয়ালে বারী খায়…
“আমার মা বাবা ভালো না তাই না”
দেওয়ালের সাথে বারী দিয়ে……
“তোকে ভালোবাসি বলে যা মন চায় বলবি আমি কিছু বলবো না এইটা ভেবেছিলি তুই”
ধাক্কা মেরে নিচে ফেলে দিয়ে…..
“আমাকে অনেক বলেছিস কিছু বলি নাই কিন্তু তুই আমার মা বাবা নিয়ে কথা বললি আজ এইটার শাস্তি তো তুই পাবি”
বেল্ট দিয়ে মারতে লাগলো…..
মানুষ ঠিকই বলে পায়ের জুতা কে মাথায় তুলতে নাই। তুই কি নিজেকে আহামরি সুন্দরী ভাবিস। তুই জানিস তোর থেকে হাজার হাজার সুন্দরি মেয়েরা এই অর্ণব বলতে অজ্ঞান আর সেখানে তোকে আমি আমার মনের রাণী করে রেখেছিলাম”
অর্ণব তিতি কে অনেক মারতে থাকে । ক্লান্ত হয়ে রাগে গজগজ করতে করতে বাসা থেকে চলে যায়।।।।
কিছুক্ষণ পর আবার আসে অর্ণব আর সাথে করে……
চলবে…..
।