#Love_warning❤️
#your_love_is_my_drug_addiction?
#Part_7
#ফারজানা
অর্ণব তখন প্রবণ কে ইশারা করলো সাথে সাথে প্রবণ শিশিরকে খুলে নিয়ে উল্টো হাঁটা শুরু করলো। আর এইদিকে তিতি কিছু বুঝার আগেই অর্ণব বাইক ছেড়ে দিলো…….
“এই এই কি করছেন ছাড়েন বলছি ছাড়েন”
শিশির প্রবণের চুল টানতে লাগলো আর বলতে লাগলো….
“এই কি করছো ব্যাথা পাচ্ছি মিস বকবক?”
“আপনি কোল থেকে নামান আমাকে আমি তিতির সাথে যাবো”
“ওই তুমি কি পাগল হয়ে গেছো? ওরা এখন নিজেদের মধ্যে কথা বলবে আগের মতো ফ্রী হবে আর তুমি কিনা ওদের মধ্য কাবাব মে হাড্ডি হতে যাচ্ছো”
“কিসের ফ্রী আর কিসের কথা হুম। তিতি তো অর্ণব ভাইয়াকে দেখতে পারে না ওতো চায় এই সম্পর্ক শেষ হয়ে যেতে তাহলে জোড়া লাগানোর কি আছে”
“সব শেষ করতে চাইলে তো আর শেষ হয়ে যায় না। অর্ণব ওর ভালোবাসা নিয়ে সিরিয়াস ও ওর ভালোবাসার জন্য সব করতে পারে তাই বলছি অর্ণব যা চায় ও করুক ওকে বাঁধা দিতে আসবে না”
“মামার বাড়ির আবদার পাইছে মনে হয়। জোর করে ভালোবাসা হয় না। আর আপনার বন্ধু একটা সাইকো যার মনে নিরীহ পাখির মায়া নাই আর সেই মানুষ কিনা ভালোবাসবে হাসালেন স্যার”
“ওই মিস বকবক চুপ করো আর ওদের ব্যাপার ওরা বুঝবে আর তুমি ও সাহায্য করবে বুঝতে পেরেছো?”
“আমি ও দেখবো আমার তিতি পাখির বিরোদ্ধে কে কি চক্রান্ত করে আমি তাকে শাস্তি দিবো এই শিশির কাওকে ভয় পায় না হুহহ”
“ওকে দেখা যাবে এখন চলো ”
“আমি আপনার সাথে যাবো না ”
“এত কথা না বলে চুপচাপ আমার সাথে চলো। অর্ণব তোমার দায়িত্ব এখন আমাকে দিয়েছে তাই তোমাকে ভালোভাবে ওদের কাছে দিয়ে আসলে আমার কাজ শেষ আপাতত এখন চলো বেশি কথা বললে বাইকের সাথে বেঁধে নিয়ে যাবো মাইন্ড ইট”
শিশির প্রবণের কথা শুনে ভয় পেয়ে যায় আর চুপচাপ প্রবণের পিছনে কিছুটা দূরত্ব রেখে বসে পরে….
“এইভাবে বসলে পরে যাবে। তুমি চাইলে ধরতে পারো আমি মাইন্ড করবো না”
হেসে হেসে প্রবণ বললো…..
শিশির কথা না বাড়িয়ে চুপ করে রইলো সাথে তার ওই ফেমাস ওয়ালা ভেংচি……
???
“ওই আস্তে চালাও আমি পরে যাবো অর্ণব অর্ণব প্লিজ প্লিজ ভাই”
“যতবার ভাই বলবা ততবার গাড়ির স্পিড বাড়বে”
“ওই আমার ওরনা আরেহ আমার চুল এই অর্ণব প্লিজ গাড়ির স্পিড কমাও আমি পরে যাচ্ছি”
“তাহলে বলো পিছন থেকে জড়িয়ে ধরবে”
“জীবনেও না । আমি নামবো তোমার সাথে কোথাও যাবো না গাড়ি থামাও বলছি”
“গাড়ি থাকবে না বরং বাড়বে বুঝেছো তিতির পাখি”
“আমি কিন্তু এখন গাড়ি থেকে লাফ দিব বলে দিলাম”
তিতির কথাটা শুনে অর্ণব সাথে সাথে গাড়ি থামিয়ে তিতির দিকে তাকিয়ে রইলো….
“এইভাবে তাকিয়ে আছো কেন ভয় করছে”
অর্ণব চুপ করেই রইলো কিছু বললো না…..
“ওই তোমার এই চুপ থাকা আমার কাছে বজ্রপাতের থেকেও ভয়ানক লাগে প্লিজ কথা বলো….”
অর্ণব কোনো কথা না বলে বাইক থেকে নামলো……
“এই বাইক থেকে নামছে কেনো কি হয়েছে তোমার অর্ণব ?”
অর্ণব বাইক থেকে নেমে আশে পাশে তাকিয়ে দেখলো পরে তিতি কে কোলে নিয়ে সোজা হাঁটা শুরু করলো….
“অর্ণব তুমি আমায় এই জঙ্গলে নিয়ে আসলে কেনো আর কোথায় নিয়ে যাচ্ছে দেখো আমার কিন্তু ভয় করছে”
” তিতির পাখি কি ভয় পায় আমার তো জানা ছিলো না”
শান্ত গলায় বললো অর্ণব…..
“অর্ণব তুমি কি করতে চাচ্ছো বলবে আমায়?”
“তুমি জানো না পাখি আমি যে কিছু বলি না সব করে দেখাই তাই এই কাজটাই বলবো না করে দেখাবো”
অর্ণব তিতি কে জঙ্গলে থাকা একটা পুকুরে ফেলে দিলো……
???
“ভেঙ্গে মোর ঘরের তালা কেউ আমারে নিয়ে পালা”
“কেনো তোমার মনের পাশে কি সিকিউরিটি নাই?”
প্রবণের কথা শুনে শিশির রাগী রাগী ভাব নিয়ে বললো…..
“দূর মিয়া আমি গান গাইছি আর এই শিশিরের মনের ঘরের তালা এতটা সস্তা না যে কেউ ভেঙ্গে ফেলবে ”
“ওহহ তাই বুঝি?”
“হুম। আমার মনের ঘরের তালার যেমন দাম তেমন যে ভাঙবে তারও দাম থাকতে হবে”
“তেমন কাওকে কি পেয়েছো ?”
“হুম পাইছি ”
” কে সে?”
“আপনাকে কেনো বলবো আজব মানুষ তো আপনি ”
প্রণব আর কিছু বললো না। শিশির তার মতো বকবক করে যাচ্ছে আর প্রবণ ওর মতো গাড়ি চালাচ্ছে…..
।।
।।
।।
।।
।।
।।
।।
“এই তিতি কি করছো মরে যাবো তো তিতি এই তিতি কি হয়েছে তোমার? প্রথমে তো ধরতেও চাও নি আর এখন কলার ধরে আমাকে মেরে ফেলার চিন্তা ভাবনা করছো নাকি!”
অর্ণবের কথা শুনে তিতি বাস্তবে ফিরে আসে ….
“তুমি না আমাকে পুকুরে ফেলে দিয়েছো তাহলে আমি এইখানে কিভাবে আসলাম?”
অর্ণব তিতির কথা শুনে ছোটো ছোটো ছোটো করে তিতির দিকে তাকিয়ে রইলো…..
“আমি কখন তোমাকে ফেলে দিয়েছি?”
তিতি কিছু বলতে গিয়েও থেমে গেলো ও বুঝতে পেরেছে ও সব কল্পনা করেছে আর সত্যিই মেনে নিয়েছে…..
“কি হলো বলো কি হয়েছে?”
“কিছু না। শিশির কোথায়?”
“ওরা ও চলে আসবে দাড়াও ওদের জন্য অপেক্ষা করি”
“হুম”
অর্ণব তিতি কে বাইক থেকে নামিয়ে তিতি কে নিয়ে গাছের নিচে বসলো…..
“তিতি তুমি কি আমার ভালোবাসা বুঝো না। জানো না আমি তোমাকে পাগলে মতো ভালোবাসি”
“আমি এইসব কিছু শুনতে চাই না। আমি বলেছি পড়ালেখা শেষ করে বিয়ে করবো। বাট আমি কোনোদিন বলি নাই তোমাকে ভালোবাসবো। তুমি আমার ভালোবাসা পাওয়ার যোগ্য না। যে মানুষ পশু পাখি এমনকি মানুষের প্রতি ভালোবাসা নাই সেই মানুষ কিভাবে আমার মতো মেয়ে কে ভালোবাসবে ”
“যা কিছু হয়েছে তার জন্য আমি খুব দুঃখিত। সত্যি বলতে তোমার ভালোবাসা এতটাই মাধকের মতো যে আমি নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়ি আর তখন কি করি আমি নিজেও বুঝতে পারি না জান প্লিজ ক্ষমা করে দাও”
“তোমাকে ক্ষমা করার কোনো মানে হয় না”
“তিতি জাস্ট…”
“প্লিজ অর্ণব চুপ করো আর কিছু শুনতে চাই না আমি”
অর্ণব আর কথা বাড়ালো না……
নীল আকাশ হটাৎ করেই অন্ধকার হতে লাগলো। এই হলো এখকার অবস্থা হটাৎ বৃষ্টি হটাৎ রোদ। হালকা হালকা বাতাসের সাথে ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টি। কয়েক শো বৃষ্টির ফোঁটা পড়ার পর শুরু হয়ে গেলো ধুম বৃষ্টি। তিতির মন এই বৃষ্টি দেখে বসে থাকতে পারলো না দৌড় দিয়ে চলে গেলো সবুজ মাঠের দারে আর নিজেকে বিলিয়ে দিতে লাগলো অসংখ্য বৃষ্টির ছোঁয়াতে……
অর্ণব গাছের নিচে দাড়িয়ে তিতি কে দেখতে লাগলো। খুব সুন্দর লাগছে তিতি কে তখন তার মুখ দিয়ে তিতি কে দেখে একটা নাম বের হলো….
” বৃষ্টির রাণী”
তিতি উপভোগ করছে বৃষ্টির ছোঁয়া আর এইদিকে শিশির আর প্রবণ চলে আসলো ভিজতে ভিজতে। শিশির তিতি কে ভিজতে দেখে ও চলে গেলো তিতির সাথে ভিজতে……
প্রবণ আর অর্ণব ওদের দুইজন কে ভিজতে দেখে ওরাও যোগ হলো ওদের সাথে……
রিম ঝিম বাদল ধারায়
ভিজে ভিজে মনটি হারায়
ইচ্ছেগুলো দিক হারাক
অবসাদ-ক্লান্তি…সব যাক ভেসে যাক তোর ছোঁয়ায় …..
আমার বৃষ্টির রাণী।
অর্ণব তিতির চুলে মুখ গুঁজে কানে ফিসফিস করে কবিতাটি বলতে থাকে। তিতি চলে যেতে চাইলেও যেতে পারলো না ।
অন্যদিকে……
“এইযে মেঘ পরী এত বৃষ্টিতে ভিজলে পরে ঠান্ডা লাগবে ”
“আমার অভ্যাস আছে কিছু হবে না”
হটাৎ করেই আকাশে বজ্রপাত হলো শিশির আচমকাই প্রবণ কে জড়িয়ে ধরে কাপতে লাগলো…….
“তোমার না অভ্যাস আছে তাহলে জড়িয়ে ধরেছো কেনো?”
“বৃষ্টিতে ভিজতে অভ্যাস আছে বাট বজ্রপাতে না”
“হুম বুঝেছি এখন চলো যাওয়া যাক। এই বৃষ্টিতে আর ঘুরতে হবে না”
“হুম”
???
এইভাবে চলতে থাকে অনেকদিন। একমাস চলে গেলো। এই একমাসে অনেক কিছুই হয়েছে। তিতি অনেক চেষ্টা করেছে পালিয়ে যাওয়ার জন্য বাট পারে নাই।
একদিন তিতি রাতে বাড়ি থেকে আবার পালানোর চেষ্টা করছিলো…..
চলবে…..