Love warning Part-06

0
2188

#Love_warning❤️
#your_love_is_my_drug_addiction?
#Part_6
#ফারজানা

তিতি পিছনে ফিরে যা দেখলো তা দেখার জন্য মোটেও সে প্রস্তুত ছিলো না………

তিতি পিছনে ফিরে দেখলো ওই ছেলেটিকে বেঁধে রেখেছে প্রবণ আর ছেলেটির গায়ে অসংখ্য মারের আঘাত। তিতি ভয়ে চিৎকার করতে থাকে।

“ওহ কাম অন তিতির পাখি,এইভাবে চিৎকার দিচ্ছো কেনো এই ছেলেকে দেখে? তুমি জানো না এই ছেলে তোমার সাথে কি করেছে?”

“ও আমার সাথে যা মন চায় করুক এর জন্য তুমি ওকে এইভাবে মারবে তুমি কি পাগল হয়ে গেছো?”

“ও আমার জানের সাথে খারাপ ব্যাবহার করবে আর আমি তাকে ছেড়ে দিবো কিভাবে ভাবলে তুমি তিতির পাখি?”

“ওকে তো আমি শিক্ষা দিয়েই ফেলেছি তোমাকে তো আমি কিছু বলি নাই তুমি কেনো আবার ওর এই অবস্থা করলে অর্ণব”

“এখনও তো কিছু করি নাই জান। এখন করবো তোমার সামনে…”

কথাটা বলেই অর্ণব ছেলেটির মাথার চুল টেনে ধরে অনেকগুলো থাপ্পড় দিলো। পরে মোমবাতি জ্বালিয়ে আগুন নিয়ে ছেলেটির হাতে ধরে রাখলো আর ছেলেটি চিৎকার দিতে লাগলো। প্রবণ পরে ছেলেটির মুখ চেপে ধরে রাখলো…….

তিতি এইসব আর সহ্য করতে না পেরে ওইখানে অজ্ঞান হয়ে গেলো……

পরের দিন ১০ টায় তিতি চোখ খুলে আর তাকিয়ে দেখে শিশির বসে বসে কান্না করছে। আর অন্যপাশে অর্ণব আর প্রবণ বসে আছে। তিতি শিশিরকে দেখে তাকে জড়িয়ে ধরলো আর কান্না করতে লাগলো…..

“বেবি কান্না করিস না প্লিজ। তুই জানিস না তোর কান্না আমি সইতে পারি না প্লিজ বেবি ডোন্ট ক্রাই”

তিতির কান্না যেনো থামছেই না আর তিতির কান্না দেখে শিশির ও কান্না করছে তখন অর্ণব বললো…..

“তোমাদের এই স্টার জলসা আর জি বাংলার কান্না কি থামবে নাকি আরো হবে”

“তুই জানিস না দোস্ত মেয়েরা হলো কান্না করার মেশিং। ওদের চোখ দিয়ে অল টাইম পানি পড়বেই”

“হাহাহা ঠিক বলছিস”

শিশির ওদের কথা শুনে বাঁকা চোখে তাকিয়ে মুখ ভেংচি কেটে তিতির কে বললো…..

“তিতি বাবু দেখছিস বাজে লোকগুলো আমাদের কথা শুনাচ্ছে তুই আর কাঁদবি না ওকে”

“হুম। শিশির আব্বু আম্মু কোথায়?”

“ওহহ আজ তোর দাদু খুব অসুস্থ হয়ে পড়েন তাই ওনারা সকালে ওইখানে গিয়েছে আর আমাকে ফোন দিয়ে বলেছে এইখানে আসতে । তুই অসুস্থ্য তাই তোকে নিয়ে যায় নি ওরা”

“ওহহ বাট ওনারা এইখানে কেনো?”

“আমি কি আর তোকে একা সামলাতে পারবো যদি তুই বেশি অসুস্থ্য হয়ে পড়িস তাই ওনারা ও এসেছে”

তখন প্রবণ বললো….

“এই যে মিস বকবক এত কথা না বলে ভাবির জন্য কিছু খাবার তৈরি করুন সাথে আমাদেরও”

“শিশির তো রান্না করতে পারে না। আর আমিও তো ওতো বেশি পারি না জাস্ট ডিম ভাজি আলু ভর্তা আর ভাত ছাড়া।”

“পারবা কেমনে সারাদিন তো শুধু ঝগড়াই করতে পারো। ”

অর্ণব বললো…..

তখন শিশির বললো….

“ওকে গাইস আমি আজ রান্না করবো তোমরা বসো আমি যাবো আর আসবো”

“খেতে পারবো তো”

প্রবণ বললো….

“আপনাকে কে খেতে বলছে আজব। চেয়ে চেয়ে খাবার চান লজ্জা করে না?”

প্রবণ শিশিরের কথায় লজ্জা পেয়ে যায় আর তখন কিছু বলে না…..

শিশির তার সামনে থাকা চুলগুলো ফু দিয়ে উড়িয়ে সেন্টার ফ্রুট মুখে দিয়ে প্রবণ কে জিব কেটে চলে গেলো।

“মহা ফাজিল”

প্রায় ৪০ মিনিট পর শিশির তিনটা পরোটা তিনটা ডিম ভাজি নিয়ে আসলো। পরে অর্ণব আর প্রবণ কে একটা পরোটা আর একটা ডিম ভাজি দিয়ে বাকি দুইটা ডিম ভাজি আর পরোটা ও আর তিতি নিলো। শিশির কে দেখে তিতি জোড়ে জোড়ে হাসতে লাগলো। শিশির তিতিরের দিকে তাকিয়ে অর্ণব আর প্রবণের দিকে তাকিয়ে দেখে ওরা মুখ চেপে হাসছে……

“আমাকে কি এলিয়েন মনে হচ্ছে তোমাদের যে এইভাবে হাসছো আজব”

প্রবণ তখন বললো …..

“নাহ তোমাকে বুড়ি লাগছে হাহাহা”

তিতি তখন বললো…

“আয়নায় তাকিয়ে দেখ”

শিশির আয়নায় তাকিয়ে দেখে ওর চুল আটা দিয়ে সাদা হয়ে গেছে । ও নিজেই তখন নিজেকে দেখে হাসতে লাগলো….

“শিশির তুমি আমাদের দুজনকে একটা পরোটা দিলে কেনো?”

“আপনাদের দিয়েছি এইটাই অনেক আবার ভাগ চান যান ফুটেন”

অর্ণব তখন পরোটা রেখে বললো….

“তোমার এই ছিড়া পুরোটার ভাগ আমি জীবনেও চাই না”

“এমন পুরোটা কি জীবনে খেয়েছেন যে ভাগ নিবেন”

তিতি পুরোটা খেতে খেতে বললো…..
তখন প্রবণ বললো….

“দোস্ত ওয়েট কর আমি ফুড পান্ডা থেকে অর্ডার করছি”

“হুম কর। আমরা ওদের দেখিয়ে দেখিয়ে খাবো”

“হুম”

প্রবণ ফুড পান্ডায় খাবার অর্ডার করলো তখন ওরা জানালো খাবার আসতে ২ ঘণ্টা সময় লাগবে। কথা শুনে প্রবণ কারো দিকে না তাকিয়ে বললো…..

“একটা প্রবাদ বাক্য আছে, নাই মামার চেয়ে কানা মামা ভালো। তাই পেটে ক্ষুদা রেখে ২ ঘণ্টা অপেক্ষা করা আমার পক্ষে সম্ভব নয় এর থেকে বরং এই ছিড়া পুরোটাই খেয়ে ফেলি”

প্রবণ খাওয়া শুরু করলো অর্ণব ওর দিকে একবার তাকিয়ে শিশির আর তিতিরের দিকে তাকালো আর দেখলো ওর হাসছে তাই ও কিছু না বলে ফোন টিপতে লাগলো……

???

“তিতি এইভাবে আর কত বসে থাকবো এর থেকে চল কোথায় ঘুরে আসি”

“কই যাবি তুই শিশির?”

“ঘুরতে যাবো চল না। ভালো লাগছে না বসে থাকতে। আজ যদি একটা বিএফ থাকতো তাহলে কত জায়গায় না ঘুরতাম। ”

“তাহলে প্রেম করে ফেল। এই জীবনে তো আর কম প্রপোজ ফেলি না এইবার হয় বিয়ে কর তানাহলে প্রেম কর”

“মনের মতো কাওকে ফেলে অবশ্যই করবো এখন চল ঘুরতে যাই”

“ওই দুই ডেবিল তো ওই রুমে শুয়ে আছে তো যাবো কিভাবে?”

“আমার সাথে চল লুকিয়ে কোথায় চলে যাই”

“ওরা জানলে খবর আছে আমাদের”

“জানবে না কেউ চলতো…..

তিতি আর শিশির লুকিয়ে বাসার মেইন দরজা যখন খুলতে যাবে তার আগেই প্রবণ বললো…..

“কোথায় যাওয়া হচ্ছে তোমাদের?”

তিতি আর শিশির তো ভয়ে দাড়িয়ে রইলো তখন তিতি বললো…..

“বাসার ছাদে উঠবে তাই আর কি…”

“আমাদের কি বোকা মনে হয় আপনার ভাবী? আপনি যদি ছাদে উঠতেন তাহলে বাসার ভিতর থেকেই উঠতে পারতেন বাহিরে যাওয়ার কি আছে?”

শিশির তখন আমতা আমতা করে বললো…..

“রুমে বসে থাকতে থাকতে বোর হচ্ছি তাই আর কি একটু ঘুরে আসতে চাচ্ছি”

অর্ণব রুম থেকে বের হয়ে বললো…..

“কথাটা তো আমাদের বলতেই পারতে এত লুকানোর কি আছে। চলো যাই ঘুরে আসি…..”

তিতি আর শিশির খুশি হয়ে গেল ওরা ও রাজি হলো…..

????

তিতি বসেছে অর্ণবের বাইকে। তিতি ইশারা দিয়ে বলছে শিশির কে ওর পাশে বসার জন্য তাই শিশির গিয়ে তিতির পাশে বসলো। অর্ণব তো বোকার মতো তাকিয়ে রইলো শিশিরের দিকে…..

“এই যে মিস বকবক আপনি ওইখানে বসেছেন কেনো?”

“তো কি আপনার খুলে বসবো আজব কথা বার্তা”

“আমি বলেছি শিশিরকে আমার পিছনে বসতে কেনো কোনো সমস্যা?”

“ভাবী আপনারা এখন দুজন দুজনকে সময় দেওয়া দরকার আর আপনি কিনা এই কাবাব মে হাড্ডি তাকে নিয়ে যাচ্ছেন”

“ও আমার সাথেই যাবে”

অর্ণব তখন প্রবণ কে ইশারা করলো সাথে সাথে প্রবণ শিশিরকে খুলে নিয়ে উল্টো হাঁটা শুরু করলো। আর এইদিকে তিতি কিছু বুঝার আগেই অর্ণব বাইক ছেড়ে দিলো…….

চলবে…..

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে