#Bestfriend
part : 31
writer : Mohona
.
মেরিন : সেটাতে focus কর…
মোহনা : তুই বোঝার চেষ্টা কর ।
মেরিন : তুই চুপ থাক । দেখতে দে দেখি কেমন লাগছে আমার কলিজাটাকে ?? মাশাল্লাহ… নজর না লাগুক… এমা ফুপ্পিরা চলে এসেছে…. জল্লাদ কুতুবমিনার উইমা sorry সাগর ভাইয়া না আজকে ট্যারা হয়ে যায়… ?
মোহনা : ?। ১মিনিট ফুপ্পি মানে?
মেরিন : আন্টি। ভুলে বলে ফেলেছি।
শিখা মেরিন-মোহনার কাছে এলো। শিখাকে আসতে দেখে মেরিন-মোহনা খুসুর-ফুসুর করতে লাগলো ।
.
মেরিন : ওই মহিলাটাই তোর শাশুড়ি হচ্ছে ভাবা যায়?
মোহনা : হ্যা লেডি ভয়ংকরী।
শিখা : কেমন আছে আমার মামনি ২টা?
মেরিন-মোহনা : ভালো …
শিখা : ভালোই হয়েছে যে আমার কপালে কোনো বোরিং বউমা জুটেনি। প্রতিদিন ২জন মিলে কারো না কারো ব্যান্ড বাজাবো। আর কাউকে না পেলে ২জন ২জনেরই ব্যান্ড বাজাবো ।
২জন : হাহাহা ।
শ্রাবনী : আমাকে ছারা এখানে সবাই মজা করা হচ্ছে দেখি। এটা কিন্তু ঠিকনা …
মেরিন : আসোনা আপু।
সবাই মিলে অনেক আড্ডা দিতে লাগলো। অনেকক্ষন হয়ে গেলো এখনও সাগর এলোনা।
শিখা : এই রেদ সাগর যে এখনও এলোনা। কোথায় ও ?
রেদোয়ান : সেই তখন থেকে ফোন করছি। switched off বলছে ।
শিখা : আজবতো। এই ছেলেটা না। কখনো তো এমন করেনা।
নিশান : মামনি সাগর মনে হয় over excited হয়ে পার্লারে চলে গিয়েছে।
শ্রাবনী : কি যে বলোনা …
শুভ্র : মিস্টার রেদোয়ান তোমার তোমার ছেলে কোথায়?
রেদোয়ান : আসছে।
শুভ্র : timing বলেও তো ১টা কথা আছে।
রেদোয়ান : আমার ছেলে যথেষ্ট punctual…
শুভ্র : সে তো দেখতেই পাচ্ছি ।
রেদোয়ান : huh huh…
মনে মনে : আসছেনা কেন সাগর?
শুভ্র মনে মনে : আসবেও না সাগর। তোমরা যাই বলো না কেন , সাগর যতোই ভালোবাসি ভালোবাসি বলে চেচাক না কেন আমি জানি তোমরা আমার মেয়েটার জীবনটাও নষ্ট করার জন্য আমার মেয়ের পেছনে পরেছো। সাগর চৌধুরী দেখবো তোমার ভালোবাসা বেশি না বন্ধুত্ব। যদি নীড়কে ভালোবাসো তবে আমার মোহনার জীবন থেকে সরে যাবে। আর যদি সত্যিই আমার মেয়েকে ভালোবাসো তবে নিজের বন্ধুত্বের কাছে হারবে। দেখি তুমি কি করো । তবে আফসোস … যদি তুমি না আসো তবে কখনোই জানতে পারবেনা যে কবির নীড়-মেরিনের সম্পর্ক মেনে নিয়েছে।
.
নীড় তখন থেকে মেরিনের সাথে কথা বলার চেষ্টা করছে । কিন্তু সাহস পাচ্ছেনা ।
মোহনা : দেখ ঢোল ভাইয়া বারবার তোকে দেখছে।
মেরিন : চুপ থাকতো। সাগর ভাইয়া আসছেনা । tension করবি তা না …
মোহনা : tension করবো কেন? জল্লাদ তো জাহান্নাম থেকে হলেও আসবে। হাহাহা।
নীড় : সাগর …
নীড়ের শব্দ শুনে সবাই দরজার দিকে তাকালো। দেখলো সাগর দারিয়ে আছে। অবাক হলো ওর গলায় মালা দেখে ।
রেদোয়ান : এতো দেরি কেন করলে?
তখন সাগরের পেছন থেকে রুষা বেরিয়ে এলো। রুষা সাগরের মামাতো ভাবির বোন। রুষা লাল রঙের লেহেঙ্গা পরা। গলায় মালা। সবাই তো মহাঅবাক ।
শিখা : এসব কি সাগর?
সাগর : আমি রুষাকে বিয়ে করেছি মামনি …
কথাটা বলতে না বলতেই রেদোয়ান ঠাস করে থাপ্পর মারলো।
নীড় ছুটে এলো।
নীড় : এসবের মানে কি সাগর ? কেমন মজা ?
সাগর : সাজা। শুভ্র খান আর তার মেয়ে মোহনা খান মিষ্টি মেয়ের জন্য। কারন শুভ্র খানের জন্য আমার চাচ্চু suicide করেছিলো। কিছু না করেই দোষী হয়েছিলো সবার সামনে। আর তাই আমি প্রতিশোধ নেয়ার জন্যেই ভালোবাসা ভালোবাসা খেলেছি ।
নীড় : কি পাগলের প্রলাপ বকছিস।
সাগর : ঠিকই বলছি ।
মোহনা অবাক চোখে সব দেখছে।
মেরিন : ভাইয়া আমি জানি তুমি মজা করছো। কারন আমি জানি তুমি মিষ্টুকে ভীষন ভালোবাসো।
সাগর : you are mistaken… all was just drama… আমি কখনোই মোহনাকে নয় রুষাকে ভালোবেসেছি। আর এখনও বাসি । তাই তো বউ করে নিয়ে এলাম।
সাগর মোহনার দিকে এগিয়ে গেলো।
সাগর : sorry dear… তোমার বাবা-কাকার জন্য তোমার awwwe ki cute মনটাকে ভাঙতে হলো। আমি তোমাকে ভালোবাসিনা।
অভ্র ছুটে এসে সাগরের কলার ধরলো।
সাগর : কলার ছেরে কথা বলাে…
অভ্র : ছারবোনা। কি করবি তুই? তুই আমার বোনকে ভালোবাসিস কি বাসিসনা সেটা matter করেনা। আমার বোন তোকে ভালোবাসে সেটাই বড়। আজকে তোর আর মোহনা engagement হবেই। no no… engagement না বিয়েই হবে।
সাগর নিজেকে ছারিয়ে নিলো ।
সাগর : আমি বিবাহিত। ১ম স্ত্রী থাকতে কখনোই ২য় বিয়ে করা যায় না। আর রুষাকে আমি ছারবোনা।
অভ্র : ok… তাহলে ১ম বউকে দুনিয়া থেকেই সরিয়ে দিচ্ছি।
বলেই অভ্র গান বের করে রুষার দিকে এগিয়ে যেতে লাগলো । সাগর মোহনার মাথায় গান ঠেকিয়ে
বলল : ওখানেই দারিয়ে পরো মিস্টার অভ্র খান। না হলে তোমার বোন …
অভ্র : পিকু…
সাগর : বুঝতে পারছো তো মিস্টার অভ্র খান জোর করে বিয়ে দিলে তোমার বোনের সাথে কি কি হতে পারে?
অভ্র গানটা ছুরে ফেলে দিলো।
সাগর : wow… বোনের প্রতি কি ভালোবাসা ।
সাগরও নিজেরটা ফেলে দিলো।
কবির : দেখো মেরিন দেখো। খুব করে বলছিলেনা যে সাগর ভাইয়া মোহনাকে সত্যিই খুব ভালোবাসে । দেখো সেই ভালোবাসার নমুনা। এর ভালোবাসায় বিশ্বাস করে নিজের ভালোবাসা ত্যাগ করেছো … দেখো এটা মানুষ না । এটা এর চাচ্চুর মতোই অমানুষ… এর চাচ্চু যেমন শোভার জীবন বরবাদ করেছিলো এও আজকে একই কাজ করলো।
মোহনা ১টা না ২টা না ৩টা ঝটকা খেলো ।
সাগর : excuse me কবির “মামা” … আমার চাচ্চু নির্দোষ ছিলো । আর সেটার সাক্ষী আমার মামনি মানে তোমাদের বোন।
কবির ঠাস ঠাস করে সাগরকে থাপ্পর মারলো।
কবির : লজ্জা করেনা কথা বলতে ? হ্যা? তোর চাচ্চুর জন্য আমাদের ২বোনকে হারিয়েছিলাম। আর আজকে তোর জন্য আমার ২কলিজার টুকরার জীবনে তুফান উঠেছে। তোর জন্য আবার ইতিহাস পেছনে ঘুরলো।
সাগর : তাই? তোমার মেয়েকে আমি বলেছিলাম ভালোবাসা ত্যাগ করতে? আমার দোষ কোথায়?
মেরিন : দোষটা তোমার নয় দোষটা আমার। আমি আমার মিষ্টুকে তোমার মতো অমানুষের কাছে থেকে রক্ষা করতে পারিনি।
নীড় : সাগর আয় তো আমার সাথে আয়। কথা আছে।
সাগর : যা বলার এখানেই বল।
নীড় : আসতে বলেছি আয়।
নীড় সাগরকে টেনে নিয়ে গেলো।
.
নীড় : এসবের মানে কি? তুই তো সবসময় রুষাকে অপছন্দ করিস। আর মোহনাকে পাগলের মতো ভালোবাসিস।
সাগর : no buddy .. হ্যা এটা সত্যি যে রুষাকে অপছন্দ করি… তাই বলে কি … মোহোকে ..? হাহাহা । ডক্টর না হয়ে actor হলে ভালো হতো তাইনা?
নীড় : দেখ অনেক হয়েছে এবার বন্ধ কর। রুষাকে divorce দে। সব ঠিক করে নে। আচ্ছা তুই কারো চাপে পরে তো এসব করছিস না?
সাগর : সাগর চৌধুরী কারো ইশারায় নাচেনা। আমি আমার চাচ্চু আর আমার পরিবারকে ভীষন ভালোবাসি । তোকে অনেক ভালোবাসি। যা করেছি তা আমিই করেছি … প্রতিশোধ নিতে করেছি।
নীড় : সাগর …
বলেই নীড় সাগরকে ঘুষি মারলো।
সাগর : জান… ওই মেয়েটার জন্য তুই আমাকে মারলি?
নীড় সাগরকে কলার ধরে তুলল ।
নীড় : ওই মেয়ে যেন তেন কেউ না। got it ? তোর এই ভুলের জন্য , না ভুল না অপরাধের জন্য আমি কোনোদিনও ক্ষমা করবো না। তোর আর আমার বন্ধুত্ব এখানেই শেষ ।
সাগর : নীড় তুই এটা বলতে পারলি?
নীড় : হ্যা পারলাম….
নীড় সাগরকে ফেলে চলে গেলো।
নীড় সোজা মোহনার কাছে গেলো।
নীড় : আমি ভাবতেই পারিনি যে সাগর এতোটা খারাপ হবে। পারলে আমাকে ক্ষমা করে দিও বোন…
সাগর : hey music বন্ধ কেন? সাগর চৌধুরীর বিয়ে বলে কথা …
এবার শিখা আর পারলোনা। শিখাও থাপ্পর লাগালো।
শিখা : আজকে থেকে তুই আমার কাছে মৃত।
সাগর : ok but.. strange … আজকে কি থাপ্পর দিবস নাকি? যে নয় সেই এসে থাপ্পর মারছে!!
সাগর মোহনার দিকে এগিয়ে গেলো।
সাগর : hey crazy girl…. তুমিও কি ১টা থাপ্পর মারতে চাও? মারলে মারো… সুন্দর নরম হাতে থাপ্পর খেলেও শান্তি।
বলেই সাগর নিজের গাল বারিয়ে দিলো …
মোহনা মুচকি হাসি দিলো।
মোহনা : already পচা ডোবায় গা ভাসিয়ে নোংরা হয়ে গিয়েছি। তাই আপনাকে থাপ্পর মেরে নিজে পচা ডোবা হতে চাইনা …
সাগর : বাহ কবি কবি ভাব। তাে সুন্দরী ত…
শুভ্র : অনেক হয়েছে তোর ড্রামা। শুধুমাত্র আমার মেয়ে তোকে ভালোবাসে বলেই তোকে মেনে নিয়েছিলাম। আমার মেয়ের ভালোবাসায় বিশ্বাস ছিলো । কিন্তু তোর ভালোবাসায় ছিলোনা। তাই তোকে ঘরজামাই রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কারন রক্তের গন্ধ রক্তে থাকবেই। আমার মেয়ে জীবনে অনেক কিছু সয়েছে। আর সইতে দিবোনা।
শুভ্র সাগরের হাত ধরে টানতে টানতে নিয়ে যেতে লাগলো।
একেবারে বাহিরে নিয়ে গেলো। সেখানে কেউ নেই। ওখানে গিয়ে শুভ্র সাগরের হাত ছারলো। এরপর ৩বার তালি দিলো।
শুভ্র : বাহ। তুমি ১জন ভালোবন্ধু সেটা তুমি প্রমান করলে।
সাগর : আমি আপনার মতো নিম্নস্তরের মানুষের কাছে কোনো কিছু প্রমান করার জন্য এসব করিনি। আমি যা করেছি সেগুলো আমার বন্ধু , আমার ভালোবাসা আর আমার পরিবারের জন্য করেছি। আমি জানি আপনি কোনোদিনও নীড়-মেরিনকে এক হতে দিবেননা। আর আমাদের সব property আপনি কেরে নেয়ার ছক করেছেন। এই property এর বিষয় আমাকে বাবা আগে বলেনি। মোহোর নামে সব property ছলে বলে কৌশলে যে আপনি নিজের নামে করে আমার বাবাকে দেউলিয়া করতে চাইছেন সেটাও বুঝে গিয়েছি। আর সবশেষে আমার ভালোবাসা …. মোহোর সাথে আমার বিয়ে হলে যে আপনি আমাদের জীবনটা বিষিয়ে দিতেন সেটাও জানি। হয়তো আপনার কর্মকান্ডে মোহো আরও আঘাত পেতো। কারন কেউ না জানুক আমি জানি যে মোহো যতো অভিমান করে থাকুক না কেন … ও আপনাকে আর ভাইয়াক অনেক ভালোবাসে। আর তাই আপনার দেয়া আর আঘাত ও সহ্য করতে পারবেনা। তাই আঘাতটা আমিই দিলাম। কারন আমাকে ও এতোটা ভালোবাসেনা যতোটা আপনাকে বাসে। আমি চলে যাচ্ছি। কিন্তু …. যদি আমার মোহোর জীবন কোনো ঝড় আসে আমি ওর ঢাল হয়ে সামনে দারাবো। সেটা যেন মাথায় থাকে।
তখন সেখানে রুষা এলো।
রুষা : বেবি…
বলেই সাগরকে ধরতে গেলো। সাগর পিছে সরে গেলো।
সাগর : don’t you dare to touch me… ভুলে যেওনা ভেতরে সবকিছু কেবল নাটক ছিলো। তুমি আমার বউ হওয়ার নাটক করছিলে। thats it… আর কোনো দিন আমার সামনে এলে জানে মেরে দিবো…
বলেই সাগর গাড়ি নিয়ে চলে গেলো।
রুষা : আজ না হয় কাল তুমি আমার হবেই সাগর…
রুষাও গাড়ি নিয়ে চলে গেলো।
শুভ্র : আমি কি কোনো ভুল করলাম…? না না । কিসের ভুল। আমার মেয়েটা কষ্ট পেলো। তবুও ভালো। সারা জীবন কান্না করার থেকে ২-৪ দিন কান্না করা ভালো।
ওদিকে মোহনা চুপচাপ হেটে বাহিরের দিকে যেতে নিলো।
মেরিন : মিষ্টু…
মোহনা : you hurt me…
বলেই মোহনা শিখার সামনে দারালো ।
মোহনা : শিখা চৌধুরী । you deserve the chowdhuri title greatly …কারন খানেরা ধোকা দিতে জানেনা।
শিখা : মা রে …
মোহনা : shut up…
মোহনা রেদোয়ানের সামনে গিয়ে দারালো।
মোহনা : বাবা ঠিকই করেছিলো। আপনাদের খান বাড়িতে ঢুকতে বাধা দিয়ে । আসলে বাবারা কখনোই ভুল হয়না।
মোহনা : বাবা-ভাইয়া আমি গাড়িতে wait করছি। জলদি এসো।
বলেই মোহনা চলে গেলো।
শুভ্র : আমার মেয়ে কতোদিন পর আমাকে বাবা বলে ডাকলো।
অভ্র : আর আমাকে ভাইয়া …
সবাই নিজ নিজ বাসায় চলে গেলো ।
.
মেরিন : i am sorry নীড় …
নীড় : চুপ। কোনো কথানা। তোমার জায়গায় আমি থাকলেও হয়তো এটাই করতাম। তবে তোমার ভুল কেবল এতোটুকুই ছিলো যে তুমি আমাকে কিছু বলোনি।মেরিন যেমন তোমার কলিজা তেমনি সাগরও তো আম…
মেরিন : আমি কখনো সাগর চৌধুরীকে ক্ষমা করবোনা নীড় …
.
চলবে…