#Bestfriend
part : 20
writer : Mohona
.
মেরিন : কুছভি।
নীড় : হাহাহাহাহা। long drive এ যাবে?
মেরিন : কি? long drive এ যাবো তাও আপনার সাথে? কোন সুখে?
নীড় : এই যে ৫দিন পর তোমার আমার বিয়ে হচ্ছেনা সেই সুখে…
মেরিন : না…
নীড় : আচ্ছা আমার কোনো কথা তুমি একবারে কেন শুনোনা ? তুমি কি চাও আমি always তোমাকে force করি?
মেরিন : …
নীড় : last time request করছি। চলো প্লিজ …
মেরিন মনে মনে : না করলেও লাভ নেই।
নীড় : কি হলো? বলো কিছু.. যাবে?
মেরিন : হামম… ?..
নীড় : lets go…
.
কিছুদিনপর…
শুভ্র : অভ্র আমি চাই তারাতারিই সায়ানের সাথে মোহনার বিয়েটা সেরে ফেলতে ।
অভ্র : কিন্তু বাবা পিকু তো মানবেনা … আর পিকুর অমতে কাজটা করা কি ঠিক হবে? আর তার থেকেও বড় কথা হলো এইযে কাজটা কি করা যাবে?
শুভ্র : করতেই হবে । আর মোহনা আমার মেয়ে। আমি ওর বাবা । ও যদি সের হয় তবে আমি সোয়া সের।
অভ্র : বলছিলাম কি বাবা মোহনা তো এমনিতেই আমাদের ওপর অভিমান করে আছে । তারমধ্যে যদি জোর করে বিয়ে দেই তাহলে তো অভিমানের পাহাড়টা যে আরো বড় হবে।
শুভ্র : হোক। আমার কাছে মোহনার ভালো থাকাটা জরুরী। যদি সায়ানের সাথে মোহনার বিয়েটা তারাতারি না দেই তবে রেদ… রেদোয়ান যা তা করতে পারে। ছলে বলে কৌশলে ও মোহনাকে ওদের বাড়ির বউ করে নিতে পারে। আমি মোহনাকে নিয়ে কোনো risk নিতে চাইনা। ও যে আমার কলিজার টুকরা। ওর কষ্ট যে আমি মেনে নিতে পারবোনা।
অভ্র : বাবা… একথা তোমার মুখে সাজেনা।
শুভ্র : অভ্র… মোহনা আমার মেয়ে। তোমার বোন। আর চৌধুরীদের কথা নিশ্চয়ই নতুন করে তোমায় বলতে হবেনা।
মমতা খান : ওই আপদটারে চৌধুরী বাড়ির বউ করে পাঠালেই ভালো হবে । দেমাগ কমতো। আপদ বিদায় হতো। ও সায়ানের বউ হয়ে গেলে অহনার সুখের সংসারটাও নষ্ট হবে। তাই অলক্ষীটাকে চৌধুরী বাড়িতে পাঠালেই ভালো।
শুভ্র : তোমার রায় চাইনি মা। তাই তুমি চুপ থাকলেই খুশি হবো। এমনিতেই অনেক বলেছো। অনেক কিছু করেছো। তাই এখন চুপ । একদম চুপ।
তখন মোহনা ভাবি ভাবি চিল্লাতে চিল্লাতে বাসার ভেতরে ঢুকলো। মোহনার আওয়াজ পেয়ে দিপ্তী রান্নাঘর থেকে দৌড়ে এলো ।
দিপ্তী : কি হয়েছে মিষ্টি ?
মোহনা : ইইই ভাবি জানোনা… আমি এত্তোগুলা happy। জিজ্ঞেস করো কেন?
দিপ্তী : কেন?
মোহনা : মেডিকেল থেকে না ক্যাম্পিং এর জন্য যাচ্ছে ১মাসের জন্য। awwwe ki cute…
দিপ্তী : ও মা তাই।
মোহনা : হামম হামম।
দিপ্তী : কোথায় যাচ্ছো ?
মোহনা : খুলনা , বরিশাল আর চট্টগ্রাম বিভাগের rural কিছু area তে। যেখানে সবার কাছে প্রয়োজনীও vaccine পৌছায়না। specially বাচ্চাদের ।
দিপ্তী : oh great…
শুভ্র : তুমি কোথাও যাচ্ছোনা মোহনা।
মোহনা : না তো আমি আপনাকে inform করেছি। আর না আমি আপনার permission নিয়েছি। আমি যাবো মানে যাবো।
শুভ্র : oh really ? আমার ১টা ফোনই যথেষ্ট তোমার যাওয়া বন্ধ করতে। বুঝেছো ? তুমি কোথাও যাবেনা মানে যাবেনা । আর কিছুদিন পরই সায়ানের সাথে তোমার বিয়ে।
মোহনা : বিয়ে মানে?
শুভ্র : বিয়ে মানে বিয়ে …
মোহনা : আমি বিয়ে করবোনা।
শুভ্র : আমিও তোমাকে নাতো inform করলাম আর না permission নিলাম।
মোহনা : এটাই কি আপনার শেষ কথা ?
শুভ্র : হ্যা …
মোহনা আর কোনো কথা না বলে দৌড়ে রুমে গিয়ে ধিরিম করে দরজা লাগিয়ে দিলো।
.
লিনা দৌড়ে ওপরে গেলো।
লিনা : মামনি… দরজা খোলো। মামনি… মিষ্টি মামনি… স্যার স্যার আমার কিছু ঠিক মনে হচ্ছেনা। ও এমন করে দরজা লাগালো কেন?
অভ্রও ওপর এলো।
অভ্র : পিকু… পিকু দরজা খোলো।
শুভ্র master key দিয়ে দরজা খোলার চেষ্টা করলো। কিন্তু কাজ হলোনা। পর বাবা-ছেলে মিলে দরজা ভাঙলো। ভেঙে দেখে মোহনা just সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলে পরলো। ???
অভ্র : পিকু…
শুভ্র : মামনি …
তারাতারি মোহনাকে নামানো হলো। গলায় দাগ পরে গিয়েছে । মোহনার sense নেই। মোহনাকে হসপিটালে নেয়া হলো।
লিনা : সাগরকে ফোন করবো ? করেই ফেলি …
.
হসপিটালে…
সবাই দারিয়ে আছে। ডক্টর বেরিয়ে এলো।
মেরিন : ডক্টর মিষ্টু কেমন আছে?
ডক্টর : ভয়ের কোনো কারন নেই। কোনো সমস্যা নেই। তবে ভোকাল কর্ডে একটু চাপ পরায় ৮-১০দিন কথা বলতে পারবেনা। আর জ্ঞান ফিরে এসেছে। ১০-১৫মিনিট পর দেখা করতে পারবেন। আর রাত ৮টা নাগাদ বাসায় নিতে পারবেন।
বলেই ডক্টর চলে গেলো।
মেরিন : কাকা এবার তুমি happy তো? তুমি মিষ্টুকে hurt করে কি পাও সেটাই আমি বুঝিনা।
কবির : মামনি চুপ থাকো…
মেরিন : না চুপ থাকবোনা । কেন চুপ থাকবো? কাকা সবসময় মিষ্টুকে কষ্ট দেয়। কাকার কাছে কাকার জেদ আর দীদাই সবথেকে বড় । মিষ্টুর তো কোনো জায়গাই নেই কাকার মনে আর কাকার জীবনে..
শুভ্র : মেরিন মামনি…
মেরিন : মেরিন মামনি?? লজ্জা করেনা মামনি ডাকতে। সেদিনের পর থেকে মিষ্টুকে মামনি ডাকো? ডাকোনা। কি ভুল করেছিলো সেদিন মিষ্টু। সাপের লেজে কেউ পারা দিবে আর সাপ ছোবল মারলেই দোষ? তোমার কোনো জেদের জন্য যদি মিষ্টুকে হারাতে হয় তবে আমি কোনোদিনও তোমাকে ক্ষমা করবোনা। বাবা… মিষ্টুকে আমি আমাদের বাসায় নিয়ে যাবো। ২৪ঘন্টাই ও আমার সামনে থাকবে।
কবির : হামম।
মোহনা মেরিনকে নিরাস করে পাগলাগারদেই গেলো। সাগর দূর থেকে সব দেখলো ।
সাগর : জানিনা কবে তোমার সাথী হতে পারবো…
.
পরদিন….
সবার কথা অমান্য করে মোহনা মেডিকেল গেলো।
মেরিন : তুই কোনো কথা শুনিস না কেন?
মোহনা : ?
মনে মনে : look who’s talking …
মেরিন : আমি তোর মতো এতোটাও অবাধ্য নই।
মোহনা : ?
মনে মনে : আমার থেকেও বেশি…
নীড় : মোহনা…
মেরিন-মোহনা পিছে ঘুরলো।
মেরিন : আবার আপনি?
মোহনা মনে মনে : এই লোকটা আমার মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে মেরুনকে লাইন মারে।
নীড় : হামম আমি। sorry মোহনা কালকে আমি out of town ছিলাম তাই হসপিটালে আসতে পারিনি। সকালে তোমাদের বাসায় গেলাম। জানতে পারলাম তুমি চলে এসেছো। কি দরকার ছিলো আজকে আসার বলো তো … মেরিন তুমিও না ওকে আসতে দিলে কেন ?
মেরিন : আসতে দিলে কেন… ?… কোনো কথা শুনতে চায় আমার… শিংকাটা হনুমান ১টা…
নীড় : অনেক হয়েছে আর বকবেনা আমার ছোটবোনটাকে।
মেরিন-মোহনা 😕
মোহনা মনে মনে : শালি খালি খালি ভাই হতে আসে। আচ্ছা একে কি awwwe ki cute ভাইয়া বানিয়ে দিবো। এ তো মনে হয় অভ্র খানের মতো হবেনা। যে কিনা শুভ্র খানের হাতের পুতল হবে। না না আরো কিছুদিন দেখি।
নীড় : ice cream খাবে তোমরা?
মেরিন : ওই মিস্টার ডেভিল ঢোল আপনি কি চাননা আমার মিষ্টুর voice ফিরে আসুক?
নীড় : বলেকি ? চাইবোনা কেন?
মেরিন : তাহলে কেন ice cream খাওয়াতে চাইছেন?? জানেননা যে ওর ভোকাল কর্ডে problem চাপ পরেছে।
নীড় : uffs … sorry…
.
২দিনপর…
class শেষে…
মেরিন : আরে আরে আরে আমাকে এভাবে গরুর মতো টেনে কোথায় নিয়ে যাচ্ছিস?
মোহনা ইশারা দিয়ে বলল ভেলপুরির কথা ।
মেরিন : ভেলপুরি… ?.. কিন্তু এখন তোর street food না খাওয়াই ভালো।
মোহনা মেরিনের পিঠে ৩-৪টা কিল দিলো।
মেরিন : আম্মুগো… huh… চল চল খাবো । কতো লম্বা লাইন লেগেছে। তারাতারি গিয়ে সিরিয়াল ধরতে হবে । না হলে আরো পিছে পরবো।
মেরিন ৮-১০ কদম সামনে হাটছে। আর মোহনা একটু হেলেদুলে পিছে পিছে হাটছে । হঠাৎ মেরিন দেখলো ১টা লাশ নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
মেরিন : oh no… মিষ্টু…
মেরিন পিছে ঘুরলো। দেখলো মোহনা এদিক সেদিক তাকাতে তাকাতে এগিয়ে আসছে।
মেরিন : আল্লাহ মিষ্টুর নজর যেন এদিকে না পরে…
মোহনা ঘাড় ঘোরাতে ঘোরাতে চোখ জোরা সামনের দিকে গেলো। যেখান দিয়ে লাশ নিয়ে যাচ্ছে। just খাটের দিকে চোখ পরেছে কি পরেনি ঠিক তখনই কোথায় থেকে সাগর এসে ১টানে মোহনাকে বুকের সাথে মিশিয়ে নিলো। খুব শক্ত করে বুকের সাথে মোহনাকে চেপে ধরলো। এই প্রথম সাগর মোহনাকে জরিয়ে ধরলো।
.
ওটা দেখে মোহনার মনের মধ্যে যেই ভয়ংকর ভয়টা জেগে উঠছিলো সাগরের জরিয়ে ধরাতে সেই ভয়টা যেন দূরে কোথাও চলে যাচ্ছে।
সাগর মনে মনে : ভাগ্যেস সময়মতো এসেছিলাম … না হলে আজকে আবার সেই সব হতো যেগুলো হওয়া ওর জন্য ঠিকনা। আমার গাফিলতির জন্য already অনেক কিছু হয়ে গিয়েছে। আর আমি নির্বাক দর্শক হয়ে দেখেছি মাত্র ।
মেরিন মনে মনে : এটা কি হলো? জল্লাদ কুতুবমিনার কোথায় থেকে এলো? অবশ্য এসে ভালোই হয়েছে। না হলে আজকে আবার ওই সব হতো…
মোহনা মনে মনে : আরে সব তো ঠিক আছে। কিন্তু আমি কোথায়…
মোহনা ধীরে ধীরে মাথাটা তুলল। মাথাটু তুলতেই ওর কপালে কিছু পরলো। যেটা সাগরের চোখের পানি… সাগর নিজের চোখের পানি মুছে মোহনার দিকে তাকালো । মোহনার কপালে ভাজ পরলো।
সাগর : ঠিক আছো ?
মোহনা : …
সাগর : ঠিক আছো?
মোহনা মাথা নেরে হ্যা বলল ।
সাগর : thanks god…
বলেই সাগর মোহনার কপালে কিস করলো। এরপর আবার মোহনার মাথাটা নিজের বুকের সাথে চেপে ধরলো।
মোহনা মনে মনে : আরে এটা কি হলো?
মোহনা নিজেকে ছারিয়ে নিলো।
সাগর : i am sorry … আসলে ওই মুহুুর্তে যেটা ঠিক লেগেছে সেটাই করেছি ।
মেরিন : thank u জ… স্যার।
সাগর : hey don’t be…
মেরিন : কিন্তু স্যার… আপনি কি করে জানলেন যে মিষ্টু…
সাগর : আমি আসছি। কাজ আছে।
সাগর চলে গেলো।
মেরিন : যাহ এ তো দেখি কেটে পরলো। ধ্যাত।
.
রাতে…
মোহনা বসে আছে । বারবার থেকে থেকে সেই দৃশ্যই চোখে ভাসছে। সাগরের জরিয়ে ধরা। কপালে কিস করা। সাগরের চোখের পানি।
মোহনা মনে মনে : বারবার এসব কেন ভাবছি…? কেন এগুলোই থেকে থেকে মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে? কেমন ১টা অজানা অনুভূতি হচ্ছে। কিন্তু এটা কেমন অনুভূতি? যেই অনুভূতি মন চায় সেই অনুভূতি। আমার জামাইর কি??
মোহনা শুয়ে পরলো। কিন্তু আবার সেই দৃশ্য আবারও চোখে চোখে ভাসতে লাগলো।
মোহনা মনে মনে : ধ্যাত ভালো লাগেনা । ওই জল্লাদ কুতুবমিনার আজকে মাথার মধ্যে ঢুকে গিয়েছে । huh…
.
৫দিনপর…
মোহনার আওয়াজ ফিরে এসেছে। আজকে ওরা ক্যাম্পিংএর জন্য । শুভ্র আর বাধা দেয়নি। বাসে উঠতেই দেখে সাগর ১ম সিটে বসে আছে।
মোহনা : একি আপনি? এখানে?
সাগর মনে মনে : কতোদিন পর মোহোপাখির শব্দ শুনলাম।
সাগর : হ্যা আমি এখানে। সমস্যা?
মেরিন : চল তো ঝামেলা করার দরকার নেই।
মেরিন-মোহনা অন্যসারির ১ম সিটে বসলাে। মেরিনের জানালার পাশে বসলো। কিছুক্ষনের মধ্যেই বাস চলতে শুরু করলো। মোহনার সাথে কথা বলতে বলতে মেরিনের চোখ বাইরের দিকে গেলো । দেখলো নীড়ের গাড়ি।
মেরিন মনে মনে : একি? নীড়ের গাড়ি ?
নীড় কাচ নামিয়ে দিলো। নীড় হাতের ইশারা দিয়ে হাই বলল। এরপর মেরিনের দিকে তাকিয়ে drive করতে লাগলো ।
মেরিন মনে মনে : এই লোকটা কি পাগল নাকি? এভাবে drive করলে তো accident করবে।
মেরিন নীড়কে message
করলো : সামনে তাকিয়ে drive করুন। please…
নীড় সেটা পড়ে মুচকি হাসি দিলো। মেরিন একটু পরপর নীড়কে দেখছে। মোহনাও কথা বলতে বলতে সাগরের দিকে তাকাচ্ছে। সাগর কালো চশমার আড়ালে মোহনাকে দেখছে।
.
নীড় : ১মাস তোমাকে না দেখে থাকা সম্ভব না। তাই তো যাচ্ছি তোমার সাথে সাথে… ভালোবাসি খুব বেশি ভালোবাসি…
মেরিন মনে মনে : লোকটা সত্যিই আমাকে পাগলের মতো ভালোবাসে… যেখানে কোনো খারাপ উদ্দেশ্য নেই…
সাগর মনে মনে : এখন সময় এসে গিয়েছে তোমার মনেও ভালোবাসা জাগানোর। এই ১টা মাসে তোমার মনেও আমার জন্য ভালোবাসা জাগাবো…
মোহনা মনে মনে : বুঝতে পারছিনা কেন না চাইতেও উনার দিকে তাকাচ্ছি ? ধ্যাত ভালো লাগেনা….
.
চলবে…