Monday, October 6, 2025







বাড়ি"ধারাবাহিক গল্প"মিঠা রোদমিঠা রোদ পর্ব-৪৫+৪৬+৪৭

মিঠা রোদ পর্ব-৪৫+৪৬+৪৭

#মিঠা_রোদ
#পর্ব:৪৫
#লেখা:সামিয়া_খান_প্রিয়া

“ডিভোর্স হলে সন্তান হয়ে যায় জেদের জিনিস।স্বামী বলে সে রাখবে, স্ত্রী বলে সে রাখবে।যাক সেই কথা।তোশার উপর তোর থেকে তাহিয়ার অধিকার বেশী মায়ান।এতোগুলো বছর তুই দেশে আসিস নি।এখন এসে অধিকার দেখালে তো চলবে না।”

“তাই বলে আমার সাথে দেখা অবধি করতে দিবেনা মা?”

“দেখা করতে দেয়না?নাকী তোশা আসেনা?আমি ওর দাদী।বলতে পারবি?প্রত্যেক বছর ইদে ডেকে নিজ হাতে রান্না করিয়ে সামান্য সেমাই খেতে দিয়েছি?তাহিয়া অনেক আহ্লাদে বড় করেছে।কারো আদর পায়নি।”

মায়ান দীর্ঘ শ্বাস ছাড়লো।চোখের চশমাটি ঠিক করে বলল,

“কবীর মানিয়েছে তাহিয়াকে তোশামণিকে যেন এই বাড়ীতে আসতে দেয়।”

“তাহলে এতো কথা উঠছে কেন?হলো তো।”

“কথা উঠবেনা মা?দেখা গেলো আমার থেকেও তোশার বড় অভিভাবক হচ্ছে কবীর।”

নিজ পুত্রের চোখেমুখে হতাশার শীতল ঢেউয়ের ছায়া তিথির চোখ এড়ালো না।মায়ানের কষ্টটি ঠিক কোথায়?তা সরাসরি জিজ্ঞেস করে ফেললো,

“তোর কষ্টটা কোথায়?কবীরের শক্ত জায়গা তোশার জীবনে নাকী নিজের অবস্থান নিয়ে?”

“দুটোই মা।”

“বন্ধু হিসেবে কবীরের মতোন তুই আন্তরিক না।”

“কথাটা তোমার নতুন না।”

গেইট খোলার শব্দে মায়ান বারান্দায় এসে দাঁড়ালো।তোশা একা ড্রাইভ করে এসেছে।মায়ানের মাঝেমধ্যে বিশ্বাস করতে কষ্ট হয় মেয়েটা সেই ছোট্ট পুতুলটা নেই।

ড্রয়িং রুমে অচেনা অতিথির ন্যায় বসে আছে তোশা।এটা তার মায়ের প্রাক্তন সংসার। খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছে সে।অদ্ভূত হলেও জায়গাটি আপন নয় তার নিকট।রান্নাঘর থেকে টুংটাং শব্দ হচ্ছে।তোশা উঠে গেলো।বরং ফোন বের করে কবীরের নাম্বারটিতে ম্যাসেজ পাঠিয়ে দিলো।

“তোশামণি?”

বাবার কণ্ঠে মিষ্টি করে হাসলো তোশা।মায়ান কন্যার মাথায় হাত বুলিয়ে বলল,

“ব্যাগ কোথায়? তুমি কী কয়দিন থাকবেনা?”

“ব্যাগ গাড়ীতে।”

“আমি কাওকে দিয়ে আনিয়ে নিচ্ছি।দাদীর সাথে কথা বলে নাও।সে তোমার অপেক্ষা করছিলো।”

তিথি মায়ানের পিছনে ছিল।নাতনিকে বসিয়ে আদর করে এটা ওটা জিজ্ঞেস করছে।এমনকি তার জন্য হরেক রকমের পিঠা তৈরী করেছে।টিনা দূর থেকে তোশাকে দেখলো।হাজার হোক স্বামীর অন্য পক্ষের মেয়ের আপ্যায়ণ তার মনমতো হলো না।মুহুর্তে ড্রয়িং রুমে কোলাহল জুড়ে গেলো।তোশার অন্য সব কাজিনরা এসে তার সাথে আলাপ করছে।এদের সঙ্গে বছরেরও একটি কথা হয় কীনা সন্দেহ।তবে ওইযে রক্তের সুমিষ্ট ঘ্রাণে সকল আত্মীয় আচ্ছাদিত হয়ে থাকে।তোশার ছোট চাচার মেয়ে তাকে আহ্লাদে জিজ্ঞেস করলো,

“তোমার বয়ফ্রেন্ড আছে তোশা আপু?”

তোশা মিষ্টি করে হাসলো।বড়রা এখন নেই আশে-পাশে।সে একটু গা ছাড়া ভাবে বসে বলল,

“আছে তো।”

“ওয়াও!সে কী করেন?”

অল্প বয়সী মেয়েদের কথাগুলো বেশ বিস্ময়কর হয়।তোশা হেসে বলল,

“তোমার আছে নিশা?”

“আছে।আমাদের ক্লাস টপার।তোমার জন কে?”

“শুনলে ভয় পাবে।”

“কেন?কী এমন মানুষ সে?”

“সে?সে হচ্ছে দৃঢ় ইস্পাত,কঠিন শিলা,শক্ত সেগুন কাঠ।”

নিশা কৌতুহলী হয়ে শুধালো,

“আপু সে কী কালো?কারণ এখানে সব কয়টার রঙ ময়লা।”

পরপর চোখের পাপড়ি ফেললো তোশা।কী আজব?কবীর শাহ যে কালো সেটা সকলে কেন বুঝে যায়?প্রিয় কোলনের সুগন্ধে তোশার টনক নড়লো।সে পাশ ফিরে দেখলো সেই দূঢ় ইস্পাতের মতোন পুরুষটি তার পাশ দিয়ে হেঁটে গেলো।তোশা নিজেকে সুবিন্যস্ত করে নিলো।ভেতর থেকে মায়ান ও কবীরের কথা শোনা যাচ্ছে।তোশাদের আলাপ জমলো না।তাকে নিয়ে নিশা নিজের রুমে চলে গেলো।মানুষটা কী সুন্দর মেয়ে তোশাকে এড়িয়ে গেলো?যুবতীর ভেতর স্বত্ত্বা মুখ বাঁকিয়ে নেয়।

(***)

চায়ের কাপে টুংটাং শব্দ হচ্ছে।বাহিরে কোথাও কাক বিরক্তিকর সুরে ডেকে উঠলো।দুজন কতো কালের বন্ধু।কিন্তু আজ যেন তাদের মধ্যে কোনো দেয়াল গড়ে উঠেছে।

“কী বলতে চাস তুই যে আমার বিয়ে করতেই হবে?এটা জরুরি নাকী?”

“আলবৎ জরুরি।মেয়ে দেখেছি।তোকে বিয়ে দিয়ে এরপর কানাডায় ফিরবো আমি।”

কবীরের ভ্রু যুগল আন্দোলিত হলো।বাহুদ্বয় আড়াআড়ি জুড়ে শুধালো,

“হঠাৎ আমার বিয়ে নিয়ে পড়লি যে মায়ান?দিশা বলেছে?”

“নাহ তো।”

“আমি জানি তুই ওর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলি।মনের কথাগুলো খুলে বল।”

“মনের কথা মনে থাকুক কবীর।মেয়ে কে শুনতে চাইবি না?”

“নাহ তো।”

“কেন?”

“কারণ তাকে বিয়ে করার কোনো কারণ দেখছিনা।বিয়ে আমি করবো।সময় হলে।”

“তাই নাকী?সেই মেয়েটি কে?”

“সময়টা হয়নি বলার।”

কবীরের রহস্যময় কথাবার্তায় মায়ানের মনটা কেঁপে উঠলো।সত্যি অর্থে তোশাকে নিয়ে ভয়টি তার কাঁটেনি।যদি বিষয়টি অবাঞ্চিত হয় তাহলে বন্ধুর সামনে কম নিচু হবেনা সে।

“আমি কী চিনি তাকে কবীর?”

মায়ানের প্রহেলিকাতে সন্দেহের আভাস পাওয়া যাচ্ছে।কবীর চায়ে শেষ চুমুক দিয়ে বলল,

“যদি বলি চিনিস?তাও থাক।সারপ্রাইজ হোক বিষয়টি।”

“শেষে এমন সারপ্রাইজ না পাই যেটা হজম করা কষ্টসাধ্য হয়।”

টিনা উচ্চশব্দে ডেকে উঠলো মায়ানকে।কবীরের থেকে ছুটি নিয়ে রুমের দিকে এগিয়ে গেলো সে।তার কথাগুলো ভাবাচ্ছে কবীরকে।বাঁধ ভাঙা পানির মতোন সময়গুলো বয়ে চলেছে।সবথেকে কঠিন পরীক্ষাতে বসবে কবীর।দেখা যাক পাশ করে নাকী হাঁটুভেঙে মুখ থুবড়ে মাটিতে গড়াগড়ি খায়।অনেকক্ষণ মায়ানের দেখা না পেয়ে উঠে দাঁড়ালো কবীর।সামনে ছাদের সিঁড়ি।কোনোকিছু না ভেবে সেদিকে অগ্রসর হলো।গা গরম হওয়া রোদ পায়চারি করছে কবীর।মায়ানকে দিশা কিছু বলেছে কীনা সেই বিষয়ে সন্দেহ হচ্ছে।অন্যমনস্ক কবীরের হাতটা হঠাৎ ছোট্ট বড়ই গাছটায় গিয়ে লাগলো।সামান্য আঁচড় লাগলো এতে।

“ব্যাথা পেলেন আপনি?”

তোশা ব্যস্ত হয়ে কবীরের হাতখানি ধরলো।আদরে জায়গাটিতে আঙুলের স্পর্শ দিলো।

“বেবি গার্ল,তোমার কী মনে হয়?কবীর শাহ এতো অল্প ছোঁয়ায় ব্যাথা পায়?তার এসবে কষ্ট হয়না।কিন্তু..।”

তোশাকে টেনে একদম নিজের কাছটায় নিয়ে এলো।কপালের সঙ্গে নিজের উষ্ণ কপালটা মিলিয়ে বলল,

“কষ্ট হয় এটা ভেবে যদি সমাজের দোহাই, সম্পর্কের চাদরে আমাদের ভালোবাসা মিথ্যা হয়ে যায়?বয়স ধরে তোমাকে আমার থেকে দূরে সরিয়ে দেয়?যতো সময় আসছে ভয় বাড়ছে।”

মুগ্ধ তোশা কবীরের গালে হাত বুলিয়ে দিলো।মায়াময় কণ্ঠে বলল,

“আমার খুব কান্না পায়।”

“আমার বুকে এসো।এরপর কাঁদো।যদি তোমার শীতল চোখের জলে আমার য’ন্ত্র’ণা কমে যায়।”

বাধ্য মেয়ের মতোন তোশা বুকে মাথা রেখে কাঁদছে।নিজের হাতে ধাতব কিছুর স্পর্শ পেয়ে চমকে মুখ তুললো মেয়েটি।হাতে সুন্দর একটি আঙটি পরিয়ে দিয়েছে কবীর।

“এটা আমাদের বিয়ের প্রথম রীতি ছিল বেলাডোনা।আঙটি বদল।”

চলবে।

#মিঠা_রোদ
#পর্ব:৪৬
#লেখা:সামিয়া_খান_প্রিয়া

“তোশা নামের মেয়েটিকে প্রায় নিজের বাবার বন্ধুর সাথে দেখা যায়।বুঝিস না কাহিনী অন্যরকম।”

“এজন্য ভাবনায় চলে আসতো যার বাবা-মায়ের ডিভোর্স হয়েছে সে কীভাবে এতো উচ্চবিলাসী হতে পারে?”

নতসুরে ক্লাসের দুটো মেয়ে আলাপ করছে তোশার ব্যাপারে।অদ্ভূত কথা হলো তারা দুজন স্পিকারের অতি সন্নিকটে ছিল।এবং যেসব কথা বলেছে তা ক্লাসের সকলের কানে স্পষ্ট গিয়েছে।তোশা নির্বিকার দৃষ্টিতে বারংবার আঁখিপাতা ফেলছে।যে দুটো মেয়ে আলাপ করছিলো তাদের বান্ধুবীরা ইশারায় থামতে বলল।নিজেদের আড়ালের বক্তব্য এরকম সকলের শোনায় কোনো হেলদোল নেই যেন তাদের।

তোশা দীর্ঘ এক শ্বাস ছাড়লো।আশেপাশে তাঁকিয়ে দেখলো ছেলে-মেয়েরা তাকে দেখছে।চোখটি বন্ধ করে সে উঠে দাঁড়ালো।মেয়ে দুটির সামনে গিয়ে বলল,

“কথা পুরো করো।এক মিনিট স্পিকারটা নিজের দিকে ঘুরিয়ে নিতে পারো।”

“দেখো তোশা।”

“দেখছি।কী বলতে চাও ক্লিয়ার করে বলো।আমি নিজের বাবার বন্ধুর সঙ্গে যদি প্রেমটা রাঙিয়েও থাকি তবে সমাজের কী?”

“কিছুনা।বরং কিছু জিনিস দৃষ্টিকটূ।”

“সেক্ষেত্রে তোমাদের দৃষ্টিতে সমস্যা।তাছাড়া আমার মা সৎ ভাবে একজন সফল বিজনেস ওমেন।সে কতোটা ইনকাম করে আমি কীভাবে চলি তা না গুণলেও চলে।”

একটি মেয়ের তোশার কথাটি হয়তো হৃদয়ে লাগলো।সে অতি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে উঠে দাঁড়িয়ে বলল,

“আমার খালাও ডিভোর্সি।তার সন্তানদের কাছে জিজ্ঞেস করলে জানতে পারবে বাবা ছাড়া কী অবস্থা হয়।অথচ তোমাকে দেখো?আর তোমার মায়ের কথা বললে?আমি যতোটা জানি সে নিজেও তোমার প্রেমিকের অফিসে জব করে।সুর কোথায় গিয়ে তাল হারিয়েছে সবটা আমাদের জানা।”

“তুমি কীভাবে জানলে সে আমার প্রেমিক?আমি তো বলিনি।”

“রোজ কার গাড়ীতে করে ঘুরে বেড়াও সব তো দেখা যায়।তাছাড়া এসব আমরা জেনে যাই।”

তোশা কপাল কুঁচকে রইলো কিছুক্ষণ।পরমুহূর্তে মনে পড়লো এই মেয়েটির সাথে বৃষ্টির ভালো চেনাজানা।বড় বিচিত্র অনুভূত হলো তোশার।কবীর শাহ তো বৃষ্টির সবথেকে আপন।তার সম্মান এভাবে উড়ানোর যৌক্তিকতা আসলে কোন জায়গায়?মেয়েটির সঙ্গে কথায় দ্বন্দে না গিয়ে সেখান থেকে উল্টো পথে হাঁটা ধরলো তোশা।পিছনে গুঞ্জন উঠে।হরেক রকমের কথার রঙ ছড়ায়।কিন্তু সে পাত্তা দেয়না।

(***)

“খুব বাজে পারফিউম।এটার জন্য তোকে দশ দিনের কারাদণ্ড দিলাম আমি।যা দূর হ।”

উল্লাসের মুখে কারাদণ্ডের কথা শোনে তার সেক্রেটারী মুখ ভেঙালো।সে এলেমেলো নায়কটার সান্নিধ্য থেকে মুক্তি পেলে স্বস্তি পায়।কিন্তু আফসোস রাজা নাম হলেও মনের জোর বড় দূর্বল ছেলেটির।

“স্যার,আপনার জুস।”

“জুস?তোর কী মনে হয় আমি বাচ্চা?এক মিনিট সেইভ করার পর একটু বেশী ইয়াং লাগছে কী?”

আয়নায় নিজের মুখটা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে কিছুক্ষণ অবলোকন করলো উল্লাস।কিন্তু কোনো পরিবর্তন নেই।হ্যাঁ যদিও গালের মধ্যে নতুন একটা তিল উঠছে।মেয়েরা কী এটাও পছন্দ করবে?দরজা খোলার শব্দে আয়না দিয়ে সেদিকে তাঁকালো উল্লাস।তোশা ভ্রু কুঁচকে তাঁকিয়ে আছে।

“তোকে মটেও কবীর শাহ এর মতোন লাগছেনা সখা।সে কালো।তুই ভীষণ ফর্সা।বাদ দে।”

“তোর কী আমার অভিনয়ে সন্দেহ আছে সখী?”

“নব্বই শতাংশ।”

উল্লাস সেই কথাকে পাত্তা দিলো না।বরং নিজের হাতে ফাউন্ডেশন মাখতে লাগলো।ঘুরিয়ে ফিরিয়ে হাতটাকে দেখে বলল,

“আমাকে কালোতেও মানায়।কী বলিস সখী?”

“মন ভালো না রে সখা।আজকে ভার্সিটিতে কী হয়েছে শুনবি?”

উল্লাস সম্মতিতে মাথা দুলায়।তোশার সঙ্গে তার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক অনেক মজবুত হয়েছে।কীরকম করে দুটো পাগল নিজেদের সখা হয়ে গেলো।সমস্ত ঘটনা উল্লাস শুনে বিজ্ঞের অনুরুপ শুধালো,

“এতোটুকুতে খারাপ লাগছে?অথচ সামনে এমন একটি সময় আসবে যখন এই বলবে।ওই বলবে।রাস্তার পাশে দাঁড়ানো ঝালমুড়ি ওয়ালা মুড়ির সঙ্গে তোদের ঘটনা বানাবে।সেক্ষেত্রে স্টেপ কী হবে তোদের?খুব অল্প সংখ্যায় মানুষ তোদের পক্ষে বলতেও পারে কিংবা না।”

তোশা গুরুগম্ভীর ভাবনায় ডুবে যায়।কাঁধের ব্যাগটা কোলে নিয়ে বসে পড়লো।সত্যি সে যেই সমুদ্রে নৌকা ভাসিয়েছে সেখানে ঝড় আছে।ক্ষণে ক্ষণে বৃষ্টি হয়।

“এলেমেলো উল্লাস,তুই কী সিওর যে কবীর শাহ বিয়ের ক্ষেত্রে পিছিয়ে যাবে?”

“নাহ।কবীর শাহ পিছাবে না কারণ সে কথা দিয়ে কথা রাখতে জানে।কিন্তু পরিস্থিতি যদি অনুকূলে না হয়?বাই দ্য ওয়ে তোদের ভালোবাসা মুহূর্তের কিছু তো পেলাম না স্ক্রিপ্টে।”

“মানে?”

“কবীর শাহ তোকে কিস করেনি?রোমান্টিক মোমেন্ট।”

রাজার মনে হচ্ছে দৌড়ে এখান থেকে চলে যাক।সে স্বভাবগত একজন প্রচন্ড লাজুক একজন মানুষ।আর তার কর্মজীবনে অর্ধেক পাগল এলেমেলো উল্লাসের সাথে জুড়ে গিয়েছে।এতক্ষণ তাদের কথা খুব মনোযোগ দিয়ে শুনছিলো সে।এবার চোখ বন্ধ করে নিশ্বাস টেনে নিলো।তোশা নির্বিকার ভাবে বলল,

“তোর নিউরনগুলোর সিন্যাপসে বহু সমস্যা আছে।জানতাম না এতো পাগল তুই।”

“আমিও তো জানতাম তুই অনেক আহ্লাদী।সেক্ষেত্রে এমন চুপ কেন?”

“কারণ মানুষের আহ্লাদের মানুষটি একজন হয়।”

তোশা পরবর্তীতে নিশ্চুপ হয়ে গেলো।সামনে রাখা ল্যাপটপে বাকী স্ক্রিপ্টটা লিখে দিয়ে যাচ্ছে।সময়ে সময়ে দীর্ঘ শ্বাস বের হচ্ছে মেয়েটির ভেতর থেকে।উল্লাস স্মিত হাসলো।কিছু ভালোবাসা এতোটা জটিল হয় কেন?

“তোশামণি।”

“হ্যাঁ।”

“ভেবে নে।এমন একটি দিন এলো যেখানে কবীর শাহ থাকলো না।কেমন লাগবে?”

তোশা না ভেবে জবাব দিলো,

“এমন দিনটা একদিন এলো।সেদিন আমি হারিয়ে যাবো।”

ভর্ৎসনা করে উল্লাস হাত নাড়ালো।

“টিপিক্যাল প্রেমিকার অনুরুপ ম’রা’র চিন্তা।তখন কবীর শাহ তোর স্মৃতিতে বানাবে চেরীমহল।যা শত শত বছর ধরে সকলের কাছে প্রিয় হয়ে থাকবে।”

তোশা মৃদু হেসে টাইপিং এ মনোযোগ দিলো।তার কথার আড়ালে অনুভূতিটি এলেমেলো উল্লাসের হয়তো বোঝার কথা নয়।

(***)

“বৃষ্টি।বৃষ্টি।”

কবীরের বলিষ্ঠ কণ্ঠ শুনে বাড়ীর সকলে নিজ রুম থেকে বের হয়ে এলো।বৃষ্টি ছাদে ছিল।দৌড়ে এসে শুধালো,

“কিছু বলবে চাচু?”

“আমার রুমে এসো।”

চামড়ার জুতোতে কঠিন শব্দ তুলে নিজ রুমের দিকে এগিয়ে গেলো কবীর।পিছনে বৃষ্টিও গেলো।

“চাচু ডেকেছিলে?”

কথার সমাপ্তিতে অনেক জোরে চ’ড় বসিয়ে দিলো কবীর মেয়েটির গালে।হতভম্ব হয়ে গেলো বৃষ্টি।যে চাচা ছোট্ট পুতুলটির অনুরুপ সামলে রেখেছে সে আজ গায়ে হাত তুলে দিলো?

“চাচু।”

“চুপ।তোমার কী মনে হয় মেয়ে?কবীর শাহ এতোটা সস্তা ও চরিত্রহীন যে টাকার বিনিময়ে নিজ বান্ধুবীর মেয়েকে র’ক্ষি’তা করে রাখবো?একটা মেয়ে হয়ে তার নামে এসব ছড়ানো কোন ধরণের মানসিকতার প্রমাণ।”

বৃষ্টি কোথাও থেকে সাহস জুগিয়ে বলল,

“যে মেয়ে বয়সের দ্বিগুণ মানুষকে পছন্দ করতে পারে সে কীভাবে ভালো হয় চাচু?বরং অর্থলোভীদের কাতারে সবার আগে তার নামটা থাকবে।”

কবীর খলবলিয়ে উঠলো।কপালের চুলগুলো সুবিন্যস্ত করে রাখলো।পুনরায় চড় বসিয়ে দিলো বৃষ্টির গালে।

“তোমাকে কেন কাওকে এক্সপ্লেনেশন দেওয়ার জন্য কবীর বসে নেই।তোমার যে বান্ধুবীকে এগুলো বলে ভার্সিটিতে ছড়িয়েছো তাকে আজকে সব ক্লিয়ার করে দিবে।তা নয় পরের চড়টা তোমার ফুপু সিয়া দিবে।”

“চাচু তোমরা কোনভাবে বিষয়টাকে ভালো ব্যাখায় দাঁড়া করিয়ে রাখতে পারবে না।বরং..।”

“শাট আপ বৃষ্টি।এখান থেকে যাও।”

“একদিন পস্তাবে তুমি চাচু।যখন মেয়েটা তোমাকে বিপদে ফেলে সব সম্মান নষ্ট করে চলে যাবে।”

“তোশা পালাতে চাইলেও ধরে রাখবো আমি।”

বৃষ্টির বড় দুঃখ লাগলো।সে কাঁদতে কাঁদতে রুম থেকে বের হয়ে গেলো।কবীর ক্লান্ত শরীরে ডিভানে গা এলিয়ে দিলো।শৈল্পিক দেহ তার।বড় বড় পা ছড়িয়ে দিলো সামনে।ফোন বের করে তোশার নাম্বারে ডায়াল করতে গিয়ে থেমে গেলো।হাতেগোনা কয়দিন পর বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।অথচ নিজ মস্তিস্কের সঙ্গে সে লড়ছে।মূলত তোশা-কবীর প্রেমিক যুগল দুজনে লড়ছে তাদের মানসিক অবস্থান নিয়ে।কিন্তু কেউ কাওকে জানাচ্ছে না।ভালোবাসার রঙটা তাদের জীবনে বির্বণ হয়েই ধরা দিবে নাকী রঙিন মিষ্টি প্রজাপতি হয়ে?

চলবে।

#মিঠা_রোদ
#পর্ব:৪৭
#লেখা:সামিয়া_খান_প্রিয়া

“প্রাক্তন স্বামীকে এতোদিন পর দেখে কেমন লাগছে তাহিয়া?খুশি তো?যার দুঃখে এতোটা শোকাবহ যে এখন অবধি বিয়ে করার নাম নেই।”

আসিফের কণ্ঠে একরাশ অভিমান মিশে একাকার হয়ে আছে।বোকা পুরুষটি বুঝে না অভিমান করার ক্ষেত্রে দুজনের মধ্যে সহমর্মিতা থাকা জরুরি।তাহিয়া মৃদু হাসলো।অদূরে মায়ানের চোরা চোখের দৃষ্টি মিনিট খানেক পর পর তার কাছে এসে থামছে।

“আমি বিয়ে করিনি জীবনে এর মানে এটা নয় মায়ানকে ভুলতে পারিনি কিংবা তার জন্য এখনও কষ্ট পাই।”

“তোমার হৃদয়ে তবে মায়ানের জন্য কোনো কষ্ট নেই?ধরে নিবো যা আছে সবটা ভালোবাসা?”

“ভালোবাসা যেখানে আছে সেখানে বিচ্ছেদ পা রাখতে পারে?সম্ভব নয়।”

আসিফ সম্মতিতে মাথা দুলায়।পরিবেশে পো’ড়া মা’ংসের সুগন্ধে ভরে গিয়েছে।আজকে সকলকে স্টেক পার্টিতে ইনভাইট করেছে আসিফ।নেপথ্যে কাহিনী হলো তাহিয়াকে যেভাবে হোক বিয়ের জন্য মানিয়ে নেওয়া।

“তাহলে মুভ অন না করার ক্ষেত্রে তোমার গুরুত্বপূর্ণ কারণটা কী?”

“বলতে পারেন সম্পর্ক জড়ানোর মুডটা ঠিক নেই আমার।”

তাহিয়ার খামখেয়ালী কথাবার্তা আসিফের ভেতর থেকে উষ্ণ শ্বাস বের হয়ে আসে।বিবর্ণ কণ্ঠে বলল,

“ঠিক করে বলো।আসলে কী চাও তুমি।মায়ানকে দেখো জীবনে কতোটা এগিয়ে গিয়েছে।তুমি কেন একা থাকবে?”

“শুনেন আসিফ ভাই।আমার দ্বারা সংসার আর হবেনা।রোজ একটা টেনশন, কতোগুলো কার্টেসী মেইনটেইন করা।কিংবা সম্পর্ক নিয়ে সবসময়ের ভয়টা আমি চাইনা।বরং ক্লায়েন্ট ও স্টাফদের সাথে তর্কবহুল আলোচনাকে বেশী স্বস্তিদায়ক মনে হয়।আমি মায়ানকে ভালোবাসি না।সেক্ষেত্রে শোক পালনের প্রশ্নটি নেহাৎ অবাঞ্জনীয়।”

“বুঝলাম।আমাকে তাহলে সারাজীবন একা থাকতে হবে?”

আসিফের করুণ কণ্ঠে তাহিয়া হেসে উঠলো।

“আপনি ভীষণ বোকা আসিফ ভাই।যেখানে আজকাল স্বার্থের আড়ালে শত্রুকে সালাম দেয় মানুষ সেখানে ভালোবাসার জন্য সংসার ধর্ম পালন না করা বোকামো।”

“কিন্তু তোমার অনুযায়ী সংসার খারাপ।”

“যদি তাই হতো আমাদের মা-বাবা কীভাবে থাকলেন?সমস্যা টা হলো চাওয়া-পাওয়া দুই দিক থেকে থাকতে হয়।আপনি তো এক হাতে তালি বাজাতে পারবেন না।”

আসিফ বিজ্ঞের অনুরুপ মাথা দুলায়।এই জীবনে হয়তো চিরকুমার থাকতে হবে তাকে।ওদিকে দুজনের আলাপে মায়ান কৌতুহলী হয়।শুনতে মন চায় প্রাক্তন স্ত্রী কী কথা বলছে।ভরসার স্থান হিসেবে খুঁজে পেলো মেয়ে তোশাকে।যে গালে হাত দিয়ে একমনে কয়লা পুড়তে দেখছে।মায়ান তার পাশে গিয়ে বসলো।

“একা একা কী করো তোশা মা?”

“কিছুনা আসলে বোরিং লাগছে আমার।তোমরা সকলে তো ওল্ড।কীসব কথা আলাপ করো তা বুঝতে সমস্যা হয়।”

“ঠিক।সবসময় এমন ছিলনা।আসলে কবীর ইয়াং থাকতে..।”

মায়ানের কথা শেষ হওয়ার আগে জিহবায় কামড়ে নিজেকে শাসিয়ে নিলো তোশা।গোমড়া মুখে বলল,

“তোমরা ওল্ড না।কবীর শাহ তো আরো না।”

“তাহিয়াকেও তো ইয়াং লাগছে।আচ্ছা সত্যি কী তোমার মা আসিফ ভাইকে বিয়ে করবে?”

“করতেও পারে।”

“তুমি একবার বলেছিলে।মায়ের সঙ্গে এই ব্যাপারে ঠিকঠাক আলাপ কেন করো না?”

“করেছিলাম।তবে মা কী চায় সেটা বেশী গুরুত্বপূর্ণ।”

তাহিয়া পূর্বের জায়গা থেকে উঠে তাদের দিকে এগিয়ে আসছে।কী সুন্দর হাঁটার ভঙিমা,শিল্পীর আঁকা প্রতিচ্ছবিও মনে হচ্ছে চল্লিশের পরেও।সুন্দর করে কপাল থেকে চুল সরিয়ে তোশাকে বলল,

“তোমার খুদা লাগেনি তোশামণি?আমার সাথে এসো।”

মায়ান যেন এই সুযোগের অপেক্ষাতে ছিল।তাহিয়াকে উদ্দেশ্য করে কিছু বলার জন্য গলা পরিষ্কার করলো।কিন্তু আফসোস গলা থেকে বাঘের গর্জন আসা তো দূরের কথা।সামান্যতম বিড়ালের ম্যাও টি বের হলো না।তাহিয়া অবশ্য তোশার হাত ধরে তাকে নিয়ে অন্য একটি জায়গায় এলো।যেখান থেকে কবীরকে খুব ভালোভাবে দেখা যাচ্ছে।তাদের কলেজের অনেকে থাকায় গোল হয়ে বসে কবীরের সাথে পাঞ্জা লড়ছে সকলে।অথচ আফসোস তামাটে পুরুষটির শক্তির কাছে অন্য কেউ পারবে নাকী?তোশার বুক কাঁপে।দীর্ঘ শ্বাস টানে।রোদে পোড়া কবীর শাহ আজকে অন্যরকম সেজেছে।বিশেষ করে চুলে নতুন ধরণের কাটে একটু বিশেষ লাগছে না?এইযে ঠোঁট কপাল কুঁচকে অপর পক্ষের মানুষকে শক্তিতে হারিয়ে দিচ্ছে এতে তোশামণি আরো নাজেহাল যেন।সে বুঝে পায়না শৈল্পিক এই মানুষটিকে কীভাবে পটিয়ে ফেললো?

কবীর একে একে সবাইকে হারিয়ে বেশ গর্ভের সাথে বলল,

“আমাকে হারানো এতো সহজ না।আর কেউ বাদ আছে?মায়ান এক হাত হবে নাকী?”

মায়ান ইশারায় না করে দেয়।কিন্তু একটি নারী কণ্ঠ বিচলিত করে তুলে সকলকে।

“আমি পারবো হারাতে।”

কবীর তোশার কণ্ঠ শুনে ভ্রুঁ কুঁচকালো।মেয়েটি অতি কনফিডেন্টের সাথে কবীরের সামনে দাঁড়ালো।

“আমি পারবো।”

কবীর গোপনে হাসে।অহংকারী সুরে বলে,

“বুঝে কথাটি বললে নাকী না বুঝে?”

“একদম বুঝে।এবং জিতবো আমি।”

“বাচ্চা দেখে কিন্তু আমি সেক্রিফাইজ করবো না।”

পাশ থেকে আসিফ বলে উঠলো,

“তুমি কিন্তু গল্পের সেই খরগোশের মতোন করছো কবীর।হতে পারে তাইয়ুবা হারিয়ে দিলো তোমাকে।”

“এমনটা যদি হয় আসিফ ভাই তাহলে বিরোধী দলের ভাগের একশটি ভোট আপনাকে এনে দিবো।”

“গোপন কথা এভাবে বলতে হয়না কবীর।বাই দ্য ওয়ে তাইয়ুবা এবার কিন্তু জিততেই হবে।”

তোশা অতি কনফিডেন্সের জোরে কবীরের সামনে বসে পড়লো।অতি চেনা ছোঁয়ায় শিহরিত হলো।হাতের তালুতে ছোট্ট হাতখানির কম্পন কবীর বুঝতে পারে।যখন শুরু হলো শক্তির পরীক্ষা আশ্চর্যভাবে কবীর হারছেনা।উল্টো জিতে যাচ্ছে।বিশ সেকেন্ড তার হাতের ভার বহন করতে গিয়ে নাজেহাল হলো তোশা।হেরে গেলো সে।আসিফ ইশ বলে আফসোস করে উঠলো।সকলের এমনভাব যেন এমনটা হওয়ার কথা ছিলনা।তোশা অবাক হয়ে কবীরকে দেখছে।জিতে যাওয়ার খুশিতে তামাটে পুরুষটির চেহারাতে আত্মগৌরবের ছায়া ফুঁটে উঠেছে।তোশার মন বলল হেরে গেলে কী হতো কবীর শাহ এর?

(***)

অন্ধকারে পদধ্বনি বড় অদ্ভূত গম্ভীর শোনাচ্ছে।বাড়ীর সবথেকে নির্জন জায়গায় একটা মেয়ে উড়ো উড়ো চুল নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।পিছন থেকে কেউ তাকে রহস্য ভৌতিক নারী বলে বিবেচনা করে নিতে পারে।কিন্তু তামাটে পুরুষটির কথা ভিন্ন।সে এগিয়ে এসে প্রাণ ভরে তরুণীর সুগন্ধ নেয়।

“তুমি বেবি পাউডার দেওয়া বন্ধ করবে কবে?এমনি বাচ্চা তখন আরো ছোট মনে হয়।”

কবীর শাহ কাঁধ ধরে মেয়েটিকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে নিলো।আলো আঁধারে দেখতে পেলো তোশার চোখদুটো অশ্রুতে ভরে গিয়েছে।ঠোঁটটি উল্টিয়ে রয়েছে।বড় মায়া হলো কবীরের।নিজের হাতখানা দেখিয়ে বলল,

“এসো আবার পাঞ্জা ধরি।এবার তুমিই জিতবে।”

“না হবেনা।সকলের সামনে আপনি জিততে দেননি আমাকে।”

“তোমার হাত দেখো আর আমার হাত দেখো।কখনো দেখেছো সিংহকে বিড়াল হারিয়ে দিতে পারে শক্তিতে?”

“আমাকে বিড়াল বললেন কবীর শাহ?”

“নাহ নিজেকে সিংহ বললাম।”

তোশার চোখদুটো ছোট ছোট হয়ে গেলো।তখন হেরে যাওয়ায় মনটা কীনা এখনও খারাপ।গলাটা একটু পরিষ্কার করে কবীরের সন্নিকটে এলো।সাহস জুগিয়ে পুরুষটির কবজিতে কা’ম’ড়ে ধরলো।সময় যায় এক মিনিট, দুই মিনিট করে।কবীরের মুখের রঙ দ’ং’শ’নে বির্বণ হয়।কিন্ত তোশা নামক ছোট্ট বিড়াল সাহসী সিংহ কবীর শাহ এর কবজি ছাড়ে না।

“আহ! বিড়াল মেয়ে ছাড়ো তো হাতটা।”

তোশা নাছোড়বান্দা।ছাড়বে না হাত।নোনতা স্বাদ স্বাদগ্রন্থিতে লাগায় অবশেষে মায়া হলো।কবীরের বুকে মাথা ঠেকালো।

“আমি ভেবেছিলাম জিতে যাবো।প্রেমিকরা নিজ প্রেমিকাকে জিতিয়ে দেয়।আমি ভুলে গেছিলাম আমার প্রেমিক কবীর শাহ।”

গা দুলিয়ে হাসলো কবীর।সুন্দর করে বলল,

“আমার মধ্যে পার্থক্যটি কী?”

“কিছুনা।আপনি ভীষণ আনরোমান্টিক।”

হুট করে কবীর তোশাকে উঁচু করে ধরলো।তরঙ্গায়িত হয়ে গেলো তরুণীর মন।কোমড়ে শক্ত হাতের ছোঁয়ায় শিওরে উঠলো।মেয়েটির পিঠ দেয়ালে ঠেকিয়ে কবীর শুধালো,

“কী বললে আমি কী?”

“আআআআআআনননননরোরোরোমা..।”

“তুমি সারে গা মা পা কেন বলছো?”

কবীরের শান্ত অথচ গম্ভীর দৃষ্টি তোশাকে বিভ্রান্ত করে তুলছে।মিনিট খানেক পর কবীর তাকে নামিয়ে দিলো।দূরে সরে গেলো।ঈগলের অনুরূপ কঠিন ব্যক্তিত্বের মানুষটিকে তোশার বড় মায়াময় লাগছে।

দূরে গিয়ে এমন এক জায়গায় দাঁড়ালো কবীর যেখানে তোশার ছায়া পড়ে।ঝুঁকে মেয়েটির ছায়াকে চুমো খেলো কবীর।শীতলতা ছড়িয়ে পড়লো তোশার অন্ত:করণে।শিহরণে লাফ দিয়ে অপর দেয়ালে মিশে গেলো।কবীর সোজা হয়ে দাঁড়ালো।তরুণীর নি:শ্বাস আরো গম্ভীর হচ্ছে।

“আমাদের আর তিনদিন পর বিয়ে বেলাডোনা।”

চলবে।
এডিট ছাড়া পর্ব।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধ
গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ