?ভোর? পর্বঃ ১০।

0
1436

?ভোর? পর্বঃ ১০।
পর্বঃ আয়sHa?
|
|
সকালে উঠে ভোর অফিসে চলে গেলো। আজ ভোর আর আলো দুজন একসাথেই নাস্তা করেছে।
|
দুজনের ভিতর হাল্কা পাতলা কথা বার্তা আর ভোরের ভালোবাসা এদিকে অন্যদিকে আলোর লজ্জামাখা একটু একটু ভালোবাসা দিয়ে কেটে গেলো ১ মাস।
|
আজ ভোর অফিস শেষে বাসায় এলো। এসে দেখে আলো মুখের উপর ওড়না দিয়ে ড্রইং রুমের সোফাতে বসে শুয়ে আছে। ভোর গিয়ে আলোর পাশে বসলো। গলার টাই খুলতে খুলতে বলতে লাগলো…
|
ভোরঃঃ কি ব্যাপার কি হয়েছে তোমার? তুমি এখানে এভাবে শুয়ে আছো? শরীর খারাপ?
|
বলে আলোর মুখের উপর ওড়না সরিয়ে সাথে সাথে উঠে দাঁড়ালো।
|
ভোরঃঃ কি কি ব্যাপার সার্ভেন্ট তুমি এখানে কেন? আলো কই? আলোর ড্রেস তোমার শরীরে কেন? সার্ভেন্ট? সার্ভেন্ট?
|
ভোর সার্ভেন্টকে ধাক্কা দিলো কিন্তু সার্ভেন্ট বেহুস কথা বলছে না। ভোর দৌড়ে উপরে বেডরুমে গেলো কিন্তু আলো নাই। এরপর এক এক করে পুরো বাড়ি…ছাদে খুঁজলো কিন্তু আলো কোথাও নাই। অবশেষে উপায়ন্তর না পেয়ে সিসি টিভি ফুঁটেজ চেক করতে বসলো।
|
তারপর দেখলো….. আলো সার্ভেন্টকে ওর একটা ড্রেস দিলো পড়ার জন্য হাসিমুখে। সার্ভেন্ট খুশি হয়ে নিয়ে ওটা পড়লো। যখন সার্ভেন্ট ড্রেস চেঞ্জ করতে তখন আলো কিচেনে গিয়ে কফি বানালো তারপর কফির মধ্যে পাউডার জাতীয় কিছু একটা মেশালো। সার্ভেন্ট আসার পর সার্ভেন্টকে জড়িয়ে ধরে। হাসি মুখে কি কি যেন বলে কফির ট্রে হাতে ধরিয়ে দিলো। সার্ভেন্ট বাড়ির ভিতরের দুইজন গার্ডকে কফি দিলো। তারপর অন্য দুজন সার্ভেন্টকেও দিলো। এরপর আলো আর সার্ভেন্ট কফি নিয়ে ড্রইংরুমে কফি খেলো। কফি খেয়ে সার্ভেন্ট মাথা ধরে অচেতন হয়ে পরে গেলো সোফাতে। আলো সার্ভেন্টের পা দুটো উপরে উঠিয়ে সুন্দর করে জামা ঠিক করে দিয়ে মুখটা ওড়না দিয়ে ডেকে উপরে বেডরুমে চলে তারপর আলোর পার্স ব্যাগটা নিয়ে সার্ভেন্টের পড়নের ড্রেস পড়ে মুখে মাস্ক লাগিয়ে বাড়ি থেকে হয়ে গেলো। বাহিরের ফুঁটেজ চেক করে দেখলো… আলো সব গার্ডদের চোখের আড়াল থেকে সহজেই মেইন গেইট থেকে বের হয়ে চলে গেলো।
|
ভোর এসব দেখার সাথে সাথে ল্যাপটপ ধরে এক ছাড়া দিয়ে দৌড়ে নিচে গিয়ে গাড়ী স্টার্ট দিয়ে বেরিয়ে পড়ে। ভোর আলোর বাড়ি চলে যায় কিন্তু আলো সেখানে নাই। তন্ন তন্ন করে সারা শহর ভোর আলোকে খুঁজতে লাগলো।
|
এদিকে আলো রিহামকে খুঁজে বের করে রিহামের বাড়ি গিয়ে রিহামের জন্য ড্রইং রুমে বসে অপেক্ষা করছে। কিছুক্ষণ পর রিহাম এসে…..
|
রিহামঃঃ Who are you?
|
আলোঃঃ আলো। আলো শাখাওয়াত।
|
রিহামঃঃ রিহাম। রিহাম খান। আপনাকে তো ঠিক চিনলাম না?
|
আলোঃঃ আমি আলো… ((ছলছল নয়নে))
|
রিহাম এক্টুভেবে….
|
রিহামঃঃ রং নম্বর?
|
আলোঃঃ হুমম ((মাথা ঝাঁকিয়ে
|
রিহামঃঃ ওহ আপনাকে তো ছবিতে দেখেছিলাম। আপনার বোরখার নেকাপটা খুলুন এক্টু।
|
আলো নেকাপ খুললো….
|
রিহামঃঃ আপনি এতোদিন পর তাও আমার সামনে। কীভাবে? কি করে?
|
আলোঃঃ সে অনেক কথা। আপনাকে খুঁজে পেতে আমার অনেক কিছু করতে হয়েছে।
|
রিহামঃঃ আপনার চোখ.. মুখ এমন দেখাচ্ছে কেন?
|
আলোঃঃ আমি পালিয়ে এসেছি তাই।
|
রিহামঃঃ পালিয়ে এসেছেন মানে?
|
আলোঃঃ হ্যাঁ মিথ্যাবাদী ভোর চৌধুরীর কাছ থেকে আমি পালিয়ে এসেছি।
|
রিহামঃঃ ভোর? আপনি ভোরকে কি করে চিনেন? আর ওর কাছ থেকে পালিয়ে এসেছেন মানে কি?
|
আলোঃঃ আমি তার ওয়াইফ। যদিও বা আমি তাকে মন থেকে স্বামী হিসেবে মানি না।
|
রিহামঃঃ What? আপনি ভোরের ওয়াইফ?
|
আলোঃঃ হুমমম…
|
রিহামঃঃ কীভাবে? কি করে হলো এসব?
|
আলোঃঃ আমার সাথে রিহাম সেঁজে মিস্টার ভোর চৌধুরী দিনের পর দিন কথা বলেছে ইমুতে.. ফোনে.. এবং কি সামনাসামনি ও। তারপর বিয়ে হয় আমাদের। বাসর রাতে উনি বলে উনি রিহাম না। উনি ভোর চৌধুরী। কিন্তু প্রশ্ন হলো আপনি জানতেন না এসব?
|
রিহামঃঃ না। কিছুই জানতাম না। আপনি ইমুতে যেদিন প্রথম ছবি দিলেন তারপর ওকে দেখাই আপনার ছবি। ওর সাথে কথা বলে চলে আসি বাসায়। পরেরদিন আমি আর আমার মোবাইলটা খুঁজে পাইনি। আর আপনার নম্বরটাও আমার মনে ছিলো না। এখন বুঝলাম ফোনটা ভোরই সরিয়ে দিয়েছে।
|
আলোঃঃ ছিঃ উনি এত নিচু মনের মানুষ। রিহাম আমি ওনার কাছ থেকে পালিয়ে এসেছি। উনি হয়তো এখন আমাকে খুঁজছে। আমাকে না পেলে হয়তো বাবা-মায়ের উপর অত্যাচার করবে। আপনি প্লিজ কিছু একটা করুন? ((কেঁদে কেঁদে))
|
রিহামঃঃ ওকে ওকে… চলুন আমার সাথে। এখনি গিয়ে আপনার বাবা-মা’কে নিয়ে আসি।
|
আলোঃঃ হুমমম….
|
রিহাম আলোকে নিয়ে বেরিয়ে পড়লো।
|
ওদের বের হবার ১০মিনিটের মাথাতেই ভোর রিহামের বাড়ি এসে হাজির। রিহামের বাড়ির কাজের লোককে আলোর ছবি দেখালে তারা বলে দেয় ১০মিনিট আগেই রিহাম আলোকে নিয়ে বেরিয়ে যায়। ভোর আর এক মুহূর্ত দেড়ি না করে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়ে আবার আলোকে খুঁজতে। ভোর পাগলের মতো গাড়ি চালাচ্ছে আর চোখ দিয়ে পানি ঝড়ছে।
|
রিহাম আলোকে নিয়ে শহরে পথ থেকে একটা জঙ্গলের রাস্তায় ঢুকলো। তখন…
|
আলোঃঃ এ রাস্তায় কেন?
|
রিহামঃঃ এদিক দিয়ে তাড়াতাড়ি যেতে পারব। আর মেইন রোড দিয়ে গেলে ভোর আমাদের দেখে ফেলতে পারে তাই।
|
আলোঃঃ ওহহ..
|

এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি মাসে জিতে নিন নগদ টাকা এবং বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।

গল্পপোকার এবারের আয়োজন
ধারাবাহিক গল্প প্রতিযোগিতা

◆লেখক ৬ জন পাবে ৫০০ টাকা করে মোট ৩০০০ টাকা
◆পাঠক ২ জন পাবে ৫০০ টাকা করে ১০০০ টাকা।

আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/?ref=share


কিছুক্ষণ পর রিহাম গাড়ী থামালো।
|
রিহামঃঃ আচ্ছা নেমে পড়ো এখানে। এই যা সরি তুমি করে বলে ফেললাম। আসলে পুরনো অভ্যাস তো।
|
আলোঃঃ ইটস ওকে। কিন্তু আপনি এখানে গাড়ি থামালেন কেন?
|
রিহামঃঃ ঐ যে বাড়িটা দেখছেন ওটা আমার বাংলো। আপাতত ভিতরে গিয়ে কিছু পেপারস নিতে হবে। যা খুব জরুরী। চলো আর দেড়ি করো না। ভোর খুব dangerous মানুষ। চলো চলো….
|
আলো কিছু না বলে রিহামের সাথে ঐ বাংলোর ভিতর ঢুকলো। দুজন মানুষ আছে বাংলোতে। তারা রিহামকে দেখে সালাম দিলো। রিহামের পিছু পিছু আলো রিহামের সাথে উপরে রুমে চলে গেলো। উপরে রুমে যাবার পর রিহাম থেমে গিয়ে পিছন ঘুরে দাঁড়িলো আলোর মুখোমুখি। তারপর আলোর দিকে একটু তাকিয়ে একটা জোরে অট্ট হাসি দিয়ে বললো….
|
রিহামঃঃ তুমি কি পাগল? তুমি আমাকে বিশ্বাস করে এতদূর এলো?
|
আলোঃঃ মানে..?
|
রিহামঃঃ মানে? হুম মানে? ওকে তাহলে তোমাকে সবটা খুলেই বলি… কাম সিট সিট.. ((সোফায় বসতে বলে))
|
আলো আস্তে গিয়ে সোফায় বসলো। তারপর রিহাম দরজাটা লক করে দিলো। আর আলো উঠে দাড়িয়ে…
|
আলোঃঃ এএএকি আপনি দরজা লক করলেন কেন?
|
রিহামঃঃ লক করলে কি? তুমি তো আমাকে ভালোবাসো তাই না?
|
আলোঃঃ হুম বাসি। বাসি বলেই এতদূর এসেছি তাই বলে আপনি দরজা লক করবেন? আপনি দরজা খুলুন।
|
রিহামঃঃ হাহাহাহা…..
|
আলো রিহামের হাসিতে অন্য কোনো কিছুর সন্দেহ পেলো তাই নিজেই দরজা খুলতে গেলো। আর রিহাম আলোকে এক ঝটকায় টান দিয়ে বেডের উপর ছুড়ে মেরে আলোর হাত বেডের সাথে শক্ত করে চেপে ধরে….
|
রিহামঃঃ তুই এত সহজে আমার কাছে এসেছিস আর তোকে আমি ফ্রি ছেড়ে দিবো? এই দেহটা আগে ভোগ করি তারপর চলে যাস।
|
আলোঃঃ প্লিজ আমাকে ছেড়ে দিন প্লিজ… আমি তো আপনাকে ভালোবেসেই এসেছিলাম এত কিছু করে। প্লিজ ছেড়ে দিন আমাকে। ((কান্না করতে করতে))
|
রিহামঃঃ চুপপপপ একদম চুপপপপ… তোকে আমি কোনদিনও ভালোবাসিনি। সবসময় তোকে ফ্রি ভোগ করার ধান্দা ছিলো। কিন্তু ঐ ভোর সব নষ্ট করে দিলো। ঐ ভোরও মাঝে তোর সাথে মেসেজিং করতো। যেদিন তোর ছবি দেখি ঐদিন ই ঠিক করি যেভাবে হোক তোকে এই বাংলোতে এনে ভোগ করবো। এটা ঐ ভোরকে বলি। কিন্তু তারপর তো মোবাইলটাই হারিয়ে গেলো। হারিয়ে যায়নি ঐ ভোর ই সরিয়ে ছিলো। আজ বুঝলাম। কিন্তু পাখি যখন নিজেই ধরা দিয়েছে তবে তাকে কি করে ছেড়ে দি। তোকে ভোগ করে প্রতিশোধ নিবো আমার সাথে জালিয়াতি করার। ঐ ভোরকে শিক্ষা দিবো রিহাম খানের সাথে ধোঁকাবাজি করার। এখন তো তুই ওর বৌ। এটাই হবে পারফেক্ট প্রতিশোধ ওর জন্য।
|
রিহাম আলোর বোরখা একটানে ছিড়ে ফেললো। আলো চিৎকার দিয়ে কান্না করে….
|
আলোঃঃ আমাকে ছেড়ে দিন প্লিজ.. আমার ক্ষতি করবেন না।
|
রিহাম আলোর মুখ চেপে ধরে..
|
রিহামঃঃ একদম চিৎকার চেঁচামেচি করবি না। তোকে ছেড়ে দিতাম কিন্তু তোর সর্বনাশ করবো শুধুমাত্র ভোরের জন্য। ও আমার চিরিয়া কীভাবে নিজের করে নেয় আমাকে ধোঁকা দিয়ে।
|
রিহাম আলোর দুহাত একসাথে চেপে ধরে অন্যহাত দিয়ে আলোর কামিজের গলা ধরলো…. আলো সাথে সাথে ওর একহাত ছাড়িয়ে… রিহামের হাতটা ধরে….
|
আলোঃঃ আমি প্রেগন্যান্ট। আমার গর্ভে ভোর চৌধুরীর সন্তান। আমার বাচ্চাটাকে নষ্ট করবেন না প্লিজ.. ((কাঁদতে কাঁদতে))
|
রিহামঃঃ What??
|
আলোঃঃ হ্যাঁ। এক সপ্তাহ আগেই জেনেছি। উনি জানে না। দয়া করুন আমার উপর প্লিজ দয়া করুন। ((কান্না করতে করতে))
|
রিহাম আলোর গালে একটা চড় দিয়ে বেরিয়ে যায় দরজা বাহির থেকে লক করে আর আলো দৌড়ে দরজা ধাক্কাতে থাকে আর বলতে থাকে…
|
আলোঃঃ দরজা খুলুন প্লিজ… দরজা খুলুন। আমাকে ওনার কাছে যেতে দিন। আমি ভোরের কাছে যাবো। আমাকে যেতে দিন।
|
এরকম প্রলেপ বকলো আলো কিন্তু দরজা খুললো না। কাঁদতে কাঁদতে বসে পড়লো।
|
|
|
চলবে…….
((ভুল-ত্রুটি ক্ষমার চোখে দেখবেন। ধন্যবাদ ?))

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে