?ভোর? পর্বঃ ০৯।

0
1422

?ভোর? পর্বঃ ০৯।
লেখিকাঃ আয়sHa?
|
|
অফিস আওয়ার শেষে ভোর আর আলো বাসায় ফিরছিলো। আলো গাড়ীর ভিতর থেকে দেখলো ছোট-বড় অনেক ধরনের লাইটিং বেলুন নিয়ে একটা লোক দাঁড়িয়ে বেলুনগুলো বিক্রি করছে। আলো সাথে সাথে ভোরকে বললো গাড়ী থামাতে। আলোর কথায় ভোর গাড়ী থামালো। আলো গাড়ীর দরজা খুলে এক দৌড়ে বেলুনওয়ালার কাছে গেলো। ভোর গাড়ীর সাথে হেলান দিয়ে আলোর কান্ড দেখার জন্য দাড়ালো আলো কি করবে???
|
আলো সব বেলুন গুলো হাতে নিয়ে ভোরের দিকে তাকালো। ভোর আলোর দিকে তাঁকিয়ে চোখ দিয়ে সম্মতি দিলো নেবার জন্য। আলো খুশিতে আত্মহারা হয়ে বেলুন গুলো নিয়ে আশেপাশের সব বাচ্চাদের ডেকে সবাইকে এক একটা বেলুনগুলো দিলো। আর ভোর দূর থেকে বেলুনওয়ালাকে ডেকে দামটা দিয়ে দিলো বেলুনের।
|
আলো সবাইকে বেলুন দিয়ে ভোরের কাছে এলো…
|
আলোঃঃ চলুন… ((হাস্যউজ্জ্বল মুখে))
|
ভোরঃঃ আচ্ছা মিসেস ভোর চৌধুরী বেলুনে পেট ভরে কারো??
|
আলোঃঃ মানে???
|
ভোরঃঃ এই যে আপনি ওদের বেলুনগুলো দিয়ে এলেন। তাতে ওরা খুশি হয়েছে ঠিকি কিন্তু ওদের পেট কি এতে ভরবে??
তাই চলুন ওদের খাইয়ে আসা যাক?
|
আলোঃঃ ওহ হুম তাই তো। চলুন.. ((লজ্জিত কন্ঠে))
|
ভোর আর আলো ওদের কাছে যেতেই সব বাচ্চারা দৌড়ে এসে ভোরকে জড়িয়ে ধরলো আর বলতে শুরু করলো…. ** বন্ধু…. তুমি অনেক দিন পর এসেছো.. এতদিন কোথায় ছিলে??***
|
ভোরঃঃ একটু কাজে ব্যস্ত ছিলাম। তা তোরা সবাই কেমন আছিস??
|
বাচ্চারাঃঃ ভালো। তুমি???
|
ভোরঃঃ এই তো ভালো। তা তোরা ঠিক মতো স্কুলে যাস তো? নাকি আবার ওরা তোদের দিয়ে কাজ করায়??
|
বাচ্চারাঃঃ না না। ওরা আমাদের কিছু বলে না। এখন আমরা লেখাপড়া করি। ঠিকমতো স্কুলে যাই। ঠিকমতো খেতে দেয়। ওরা ভালো হয়ে গেছে বন্ধুু।
|
ভোরঃঃ ওকে তাহলে চল ওদিকে গিয়ে কিছু খেয়ে নি সবাই…
|
বাচ্চারাঃঃ হ্যাঁ চলো বন্ধু। বন্ধু এই আপামনি অনেক ভালো আমাদের বেলুন কিনে দিছে। আপামনি তোমার কি হয় বন্ধু???
|
ভোরঃঃ আপামনি তোদের বন্ধুর কলিজা হয়।
|
একটা বাচ্চাঃঃ ওহ তার মানে বৌ??
|
ভোরঃঃ তুই বেশ পেঁকেছিস? চলো খাবো সবাই। আলো চলো।
|
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি মাসে জিতে নিন নগদ টাকা এবং বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।

গল্পপোকার এবারের আয়োজন
ধারাবাহিক গল্প প্রতিযোগিতা

◆লেখক ৬ জন পাবে ৫০০ টাকা করে মোট ৩০০০ টাকা
◆পাঠক ২ জন পাবে ৫০০ টাকা করে ১০০০ টাকা।

আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/?ref=share

আলোঃঃ হুমমম…
|
সবাই হাসতে হাসতে গেলো পাশের একটা খাবার হোটেলে।
|
খাবার অর্ডার দিয়ে সবার জন্য ভোর আলোর পাশে বসলো। খাবার এলে আলো সব বাচ্চাকে এক এক করে একবার খাইয়ে দিলো। ভোরও হা করলো। আলোর হাতটা থেমে গেলো।
|
ভোরঃঃ খাইয়ে দিবা না?? ওদের মতো আমিও এতিম। আমারও বাবা-মা নাই। ((মুচকি একটা হাসি দিয়ে))
|
আলো কিছু না বলে ভোরকে সম্পূর্ণ খাবারটা খাইয়ে দিলো। হোটেলে বসে থাকা অন্যরা দেখে সবাই হেসে দিলো।
আলো খেলো না হোটেলে। সবার খাওয়া শেষে ভোর বিল পে করে বাচ্চাদের বিদায় দিয়ে আলোকে নিয়ে বাসায় যাওয়ার জন্য গাড়ীতে উঠলো। আলো বাহিরে তাঁকিয়ে ছিলো নিশ্চুপ হয়ে। হঠাৎ গাড়ীটা ব্রেক করলো ভোর আর আলো ওর ভাবনা জগৎ থেকে বের হয়ে ভোরের দিকে তাঁকিয়ে….
|
আলোঃঃ কি হলো???
|
ভোরঃঃ বসোতো। আমি দেখছি কে গাড়ী চালাচ্ছে যে গাড়ীর সামনে গাড়ী নিয়ে এলো?
|
ভোর গাড়ী থেকে নেমে দেখতে গেলো আর আলো সামনে তাঁকিয়ে দেখে অন্য একটা গাড়ী ওদের গাড়ীর সামনে ব্রেক করা। আলো গাড়ীটা ভালো করে দেখে গাড়ীর মালিককে অনেকগুলো বকলো মনে মনে। আর ভোর সামনের গাড়ীর লোকটাকে বের হতে বললো। লোকটা বের হবার সাথে সাথে ভোর জড়িয়ে ধরে একটু কথা বলে। গাড়ীতে উঠে বসলো।
|
আলোঃঃ কে লোকটা?? আপনি না বকে কুশল ব্যবহার করলেন???
|
ভোরঃঃ আরেহ সে আমার বন্ধু তাই বকলে কেমন না?
|
আলোঃঃ ওহ….
|
তারপর ওরা প্রায় ৩০মিনিট পর বাসায় পৌঁছালো। বাসায় পৌঁছে আলো আগে ফ্রেশ হয়ে শুয়ে পড়লো। তারপর ভোর ফ্রেশ হয়ে নিচে গিয়ে আলোর জন্য খাবার নিয়ে এলো।
|
ভোরঃঃ আলো? আলো?
|
আলোঃঃ হুম কি? ((চোখ খুলে))
|
ভোরঃঃ উঠো খাবে। তুমি হোটেলে একটুও খাওনি……
|
আলোঃঃ না। ইচ্ছা করছে না।
|
ভোর আলোকে টেনে উঠিয়ে বসিয়ে আলোর মুখে খাবার গুঁজে দিয়ে….
|
ভোরঃঃ না খেলে শরীর খারাপ করবে। চুপচাপ খেয়ে নাও।
|
আলোর অনিচ্ছা সত্ত্বেও খেয়ে নিলো। খেয়ে নিয়ে……
|
আলোঃঃ এখন তো ঘুমাতে পারি??
|
ভোরঃঃ হুমমম….
|
আলো শুয়ে পড়লো। ভোর প
প্লেট নিচে রেখে এসে দরজা লক করে আলোর পাশে এসে শুয়ে আলোকে টেনে নিজের কাছে নিচ্ছিলো…..
|
আলোঃঃ উফফফ আবার কি?? আমি তো ঘুমাচ্ছি না কি??
|
ভোরঃঃ ঘুম হবে না এখন…
|
আলোঃঃ তো????
|
ভোরঃঃ এখন মিসেস ভোরকে মিস্টার ভোর আদর করবে। মিস্টার ভোরের খুব ইচ্ছা করছে মিসেস ভোরকে ভালোবাসতে।
|
আলো একহাত দিয়ে বিছানার চাদর মুঠো করে ধরলো শক্ত করে।
|
আলোঃঃ আআআআআমি ঘুমাবো। ((ভয়ার্ত কন্ঠে))
|
আলো চোখ বুঝে ফেললো। ভোর আলোকে একটান দিয়ে নিজের কাছে নিয়ে এসে আলোর পেটে হাত দিয়ে স্লাইড করতে করতে আলোর ঘাড়ে মুখ গুঁজে….
|
ভোরঃঃ আমি চাই না জোর করে তোমাকে পেতে। তাই জোড়াজুড়ি করো না। ক্ষতি তোমারই। ((আস্তে করে))
|
ভোরের নিশ্বাস আলোর ঘাড়ে পড়ায় আলো তাল এলোমেলো হয়ে যাচ্ছিলো….
|
আলোঃঃ আআআমার ঘুম পাপাপাচ্ছে…
|
এবার ভোর আলোর উপরে উঠে আলোর কপালে কপাল ঠেকিয়ে দিয়ে….
|
ভোরঃঃ ঘুম আমার আসছে না ঘুম পাড়িয়ে দিবে এই মিষ্টি ঠোঁটের ছোঁয়া দিয়ে???
|
আলো দু’হাত দিয়ে বিছানার চাদর মুঠো করে চোখ বন্ধ করে নিলো। আর ভয়ে নিঃশ্বাস ধপাস-ধপাস করে উঠছে নামছে। ভোর আলোর ঠোঁঠে হাল্কাভাবে ভালোবাসার স্পর্শ করে আলোর বুকে মাথা দিয়ে শুয়ে পড়লো। আর আলো বড় একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললো।
আলোও এবার চোখ বন্ধ করে ফেললো। তখনে……
|
ভোরঃঃ তোমাকে ভালোবাসি। হুমম অনেক ভালোবাসি। একবার তোমার উপর অধিকার খাটিয়েছি জোরপূর্বক। তুমি কষ্ট পেয়েছো। তাই এই কষ্ট তোমাকে আর দিবো না যতদিন তুমি না মন থেকে আমাকে চাও?? কিন্তু এই কাজটা করতে আমাকে কখনো বাধ্য করবে না এমন কিছু করে তুমি। খুব ভালোবাসি আলো খুব।
|
আলো চুপটি করে শুনলো। ভোর আলোকে পেঁচিয়ে ধরে ঘুমিয়ে পড়লো।
|
রাত প্রায় ৩টা ছুঁই ছুঁই ভোরের ঘুম ভাঙ্গলো। পাশে হাত দিতে টের পেল আলো নেই। চোখ খুলে দেখে আলো পাশে নেই। উঠে লাইট অন করলো। না ওয়াশরুমেও নাই। বেলকনিতেও নাই। এরপর সারা বাড়ি খুঁজলো কিন্তু আলোকে পেলো না। কি ভেবে ভোর দৌড়ে ছাদে গেলো। সেখানে গিয়ে দেখে আলো ছাদের একপাশে দাঁড়িয়ে আছে। ভোর সস্তির নিঃশ্বাস ফেলে আস্তে আস্তে গুটি গুটি পায়ে আলোকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরলো আর আলো কেঁপে উঠে…
|
আলোঃঃ কে???
|
ভোরঃঃ আমি আমি। ভয় পাবার দরকার নাই।
|
আলোঃঃ ওহ.. (( একটা বড় নিঃশ্বাস ফেলে))
|
ভোরঃঃ এতরাতে ছাদে কি??
|
আলোঃঃ এমনি। ঘুম আসছিলো না। আপনি উঠলেন কখন??
|

ভোরঃঃ উঠে তোমাকে সারা বাড়ি খুঁজলাম কিন্তু পেলাম না। ভাবলাম আমাকে ছেড়ে হয়তো পালিয়ে গেছো। কিন্তু ছাদে এসে দেখি তুমি এখানে।
|
আলোঃঃ এতো ভয়??
|
ভোরঃঃ হুমমম ভালোবাসার মানুষকে হারানোর কষ্টটা সইতে পারবো না।
|
আলোঃঃ এটা আপনি বুঝেন?? ((কষ্টমাখা কন্ঠে))
|
ভোরঃঃ হুমমম।
|
আলোঃঃ ভালো।
|
ভোরঃঃ ওকে চলো রুমে। আর এখানে দাঁড়াতে হবে না।
|
আলোঃঃ হুমম চলুন।
|
ভোর আলো ধুম করে কোলে নিলো…
|
আলোঃঃ আহ কোলে নিলেন কেন???
|
ভোরঃঃ আমার বৌয়ের পায়ে ব্যথা যেন না করে সিঁড়ি থেকে নিচে নামতে তাই…
|
আলোঃঃ বুকের ব্যথার কি হবে???
|
ভোরঃঃ ভালোবেসে সব ব্যথা মুছে দিবো।
|
আলো আর কিছু বললো না। ভোর আলোকে নিয়ে রুমে গেলো তারপর বেডে আলোকে রেখে….
|
ভোরঃঃ তোমাকে আমি কখনো হাসতে দেখিনি খিলখিল করে… যে হাসিটা শুনেই আমি তোমার প্রেমে পড়েছিলাম। সেটাই দেখিনি এখনো সরাসরি।
|
আলোঃঃ হয়তো আর দেখবেন ও না…
|
ভোরঃঃ আমি তো এখনিই দেখবো…
|
আলোঃঃ সম্ভব না…
|
ভোরঃঃ ওকে দেখা যাক তবে…
|
বলেই ভোর আলোকে সুড়সুড়ি দিতে শুরু করলো আর আলো ভোরকে বাধা দিতেও পারলো না তার আগেই আলো হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছে আর বলছে…
|
আলোঃঃ প্লিজ প্লিজ… এটা করবেন না। সরুন না…প্লিজ
|
ভোরঃঃ এইতো হাসছো… আমি তোমার খিলখিল হাসিটা দেখলাম। ((হেসে হেসে))
|
আলোঃঃ দেদেদেখছেন তো। এএএবার তো সসসসরুন। উহ আর হাহাহাসতে পারছি না।
|
ভোর আলোকে ৫মিনিট ধরে সুড়সুড়ি দিলো। তারপর থেমে আলোকে একটা লং লিপ কিস করে আলোকে ঝাপটে ঘুমিয়ে পড়লো। আলো নিঃশ্বাস জোরে জোরে নিতে নিতে ঘুমিয়ে পড়লো একটা সময়।
|
|
|
চলবে…………..
((আপনাদের দোয়ায় এখন একটু বেটার ফিল করছি তাই গল্প দিতে পারলাম যতটুকু পেরেছি আর কি!! যাইহোক আমি সুস্থ হলে পুরোপুরিভাবে তখন প্রতিদিন গল্প দিবো। ☺))
|
((ভুল-ত্রুটি ক্ষমার চোখে দেখবেন। ধন্যবাদ ?))

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে