হয়তো_ভালোবাসি Part_21

0
1933

হয়তো_ভালোবাসি
Part_21
#Writer_Eshetaq_Nora

নীড়ের মনে হচ্ছে এটা নেশাই।।চোখ গুলো যে নীড়ের চিনা।।।কিন্তু সে নেশার পিছনে যেতে পারছে নাহ।।তার শরীর যে অবশ করা।।নীড় অনেক বার নেশাকে ডাকলো কিন্তু কোন লাভ হলো নাহ।।

এইদিকে

আবিরঃ তুমি বেচে আছো নেশা।।বাট এটা কিভাবে পসিবল??

আবির সেই কখন থেকে নেশাকে একটার পর একটা প্রশ্ন করে যাচ্ছে।।আর নেশা সে তো দুইহাত থুতনিতে রেখে আবিরের দিকে তাকিয়ে আছে।।কোন প্রশ্নের জবাবই সে দিচ্ছে নাহ।গভীর কোন চিন্তায় আছে সে।

আবিরঃ আমি তোমায় কিছু বলছি নেশা।।তুমি কি বয়রা হয়ে গেলে নাকি।

নেশাঃ বালাইশাট।।বয়রা কেন হবো।।আমি সব শুনতে পাচ্ছি।।আসলে আমি ভাবছি।।??

আবিরঃ কি ভাবছো এতো।

নেশাঃ আসলে তোমায় কিভাবে মারবো তা ভাবছি।

আবিরঃ ??।তুমি আমায় মারবে।।লাইক সিরিয়াসলি।। যে আমার দিকে চোখ তুলে তাকানোর সাহস করে নাহ সে নাকি আমায় মারবে।।হাও ফানি।

নেশাঃ তোমার ওভার কনফিডেন্স টা গেল নাহ আবির।।

আবিরঃ তা মরার আগেও যাবে নাহ।।তুমি জানো আমাকে পাঁচ মিনিট আটকে রাখার ক্ষমতা ও তোমার নেই।।

নেশাঃ তাতো জানিই।তাই তো ভাবছি কিভাবে মারবো।আমি জানি তুমি এখানে এসেছো একদম প্রোটেকশন ছাড়া।ভেবেছো নীড়কে মেরে চলে যাবে।।

আবিরঃ তাতো ভেবেছিলামই।।কিন্তু তা আর হতে দিলে কোথায়। সে যাই হোক।।তুমি বেচে আছো তাতেই হবে।।।কিন্তু এতো নজর রাখার পরও তুমি সবাইকে ফাকি দিলে কিভাবে।।

নেশাঃ এইসব হ্যান্ডেল করা আমার কাছে ব্যাপার নাহ তা তুমি জানো আবির।

আবিরঃ হুম তাতো জানিই।।আজ আবার তোমার প্রেমে পড়ছি নেশা।।এই নতুন নেশার নেশায় পড়ছি?।।তুমি আমায় তুমি করে বলছো সেই জন্য আই এম সো হেপি?।।

নেশাঃ ????

আবিরঃ আচ্ছা একটা কথা বলো তুমি বাচলে কিভাবে।?

নেশাঃ ম্যাজিক ?

আবিরঃ ???

নেশাঃ আরে বলছি বলছি।।এইভাবে তাকানোর কি আছে।।

ফ্লাশব্যাক

যেইদিন নেশাকে হসপিটালে নেয়া হয়েছিলো সেইদিন নেশা সত্যিই সুইসাইড করতে চেয়েছিলো।আর ওর ব্রেন স্ট্রোক টাও সত্যি ছিলো।নেশার প্লেনই ছিলো নাহ বাচার।।কিন্তু ডাক্তার রা যখন ওর শরীর থেকে বিষ সরিয়ে ফেলেছিল তার পর নেশার ব্রেন স্ট্রোক হয়।।অর্থাৎ কিছু সময়ের জন্য তার হুস ছিলো।।নেশা খুব ভালো করেই জানতো আবির একদিন না একদিন নীড়কে মারবে।।।তাই নেশা রি প্লেন টা করে।।নেশার অপারেশন টা পুরোপুরি সাকসেসফুলি হয়নি।।সে কোমায় চলে গিয়েছিলো।।নেশা জানতো যে সে যদি পুরপুরি সুস্থ নাও হয় তাহলেও তাকে আবির নিয়ে যাবে।।তাই অপারেশন এর আগেই ডাক্তারদের টাকা খাইয়ে রেখেছিলো।।যাতে তারা তার মরার খবর দেয়।।ডাক্তাররা তাই করে।।নেশা জানতো আবিরের লোক চারদিকে ছড়িয়ে আছে।।তাই নেশা নীড়কেও সত্যি টা জানাতে পারেনি।।

ডাক্তার নেশাকে সরিয়ে আরেকটা লাশ এনে রাখে।।নেশা জানতো নীড় লাশটির সামনে আসলেই বুঝে যাবে এটা নেশা নয়।।তাই ডাক্তারদের বলে নীড়কে হাই ডোস এর ঘুমের ওষুধ দেয়।।কিন্তু তবুও আধা ঘন্টা পরই নীড়ের ঘুম ভেঙে যায়।।কিন্তু ঘুমের ডোজটা বেশি থাকার কারনে বেশিক্ষণ সজাক থাকতে পারে নাহ।।সবাই ভাবে অজ্ঞান হয়ে গেছে।

আবিরঃ বাহ বেবি।। কি প্লেনটাই নাহ করেছো।।এই নাহ হলে আমার রানী।

নেশা মুচকি হাসলো।

আবিরঃ তুমি তো আমায় মারতে এনেছো তো মারছো নাহ কেন বেবি?

নেশাঃ তুমি ওতো পালাতে পারবে।।তাহলে পালাচ্ছো নাহ কেন।

আবিরঃ কারন আমি জানি তুমি আমায় মারতে পারবে নাহ?

নেশাঃ ইয়েস আবির।।এইটাই প্রবলেম আমি তোমায় মারতে পারবো নাহ

[ আসলে আবির আর আকাশ দুইজনই নেশাকে নতুন করে বাচতে শিখিয়েছে।।হয়তো বা তাদের উদ্দেশ্য খারাপ ছিলো কিন্তু যতোই হোক তারা নেশার বিপদে তার পাশে ছিলো।।আর আবির খুব ভালো করেই জানে নেশা এই কারনে তাকে চাইলেও নিজের হাতে মারতে পারবে নাহ।।কারন সে আকাশকেও মারতে পারেনি।।
এখন আপনারা পাঠক রা বলতে পারেন নেশা বেশি ন্যাকামি করছে।।সেটা আপনাদের ব্যাপার।। কিন্তু আমি নেশাকে সার্থপর বানাতে পারলাম নাহ।।যদি আমরা কারো দ্বারা উপকৃত্ব হই তাহলে যদি সে আমাদের শত্রুও হয় তাহলে ও তাকে সম্মান জানানো উচিত।।এটা আমি মনে করি?]

নেশাঃ আবির এইটা তে একটা টিপ দাও প্লিজ।।[ একটা রিমোট হাতে দিয়ে]

আবিরঃ এইটা কি বেবি।

নেশাঃ দিয়েই দেখ নাহ।

আবির কিছু নাহ ভেবে টিপ দিয়ে দিলো।।

আবিরঃ নাও দিলাম তো।

নেশাঃ ??

আবির কিছু বলতে যাবে তার মোবাইলে একটা কল আসলো।।
আবির রিসিভ করলো।কথা গুলো শুনেই আবিরের মাথা নষ্ট হয়ে গেল।।রাগি চোখে নেশার দিকে তাকাল.।

আবিরঃ কাজটা তুমি ঠিক করলে নাহ নেশা।

নেশাঃ তোমার ওভার কনফিডেন্সই তোমায় ধ্বংস করেছে আবির।।তোমার ভেবে প্রেস করা উচিত ছিলো

আসলে রিমোট টা বোমের রিমোট ছিলো।।নেশা আবিরের সব অফিস, গোডাউন আর বাড়িতে বোম লাগিয়ে রেখেছিলো।।আবির রিমোটে প্রেস করার সাথে সাথে সেগুলো ব্লাস্ট হয়ে যায়।নেশা আগে থেকেই সব ব্যবস্থা করে রেখেছিলো।আবির এইদিক থেকে টিপ দিলেই ওইদেশের একজন লোক সব ব্লাস্ট করে দিবে।।নেশা আগে থেকেই সেখানে লোক ঠিক করে রেখেছিলো।

নেশাঃ তোমার মৃত্যু আমার হাতে না হলে ও তোমার ধ্বংস আমার হাতে আবির??।

আবিরঃ আমি ভাবতেও পারিনি তুমি এতো বড় কাজটা করবে।।আমি অবাক।।সত্যিই তুমি পাল্টে গেছো নেশা।।তুমি একা হতে পারো নাহ।।তোমার সাথে আরো কেউ আছে তাই নাহ।

নেশাঃ আপাদত কেউই নেই।

আবিরঃ আপাদত মানে।

নেশাঃ মানে একটু পর তোমার মৃত্যু তোমার সামনে আসছে।।

আবিরঃ মানে!!

নেশা পিছনে তাকালো।।

আবিরও দেখলো।।তাদের সামনে নীড় দাড়িয়ে আছে।।

নেশাঃ আরে এইতো এসে গেছে।

আবিরঃ!!!!!

নেশাঃ হাই নীড়

নীড় কিছুই বলছে নাহ।।তার চোখ আবিরের দিকে।।

নেশাঃ জানো নিজেকে নায়িকা নায়িকা মনে হচ্ছে।।আমার জন্য এতো মানুষ পাগল হবে তা আমার জানাছিলো নাহ।।বাট ভালোই হলো।তোমাদের দুইজনের মধ্যে আজ যদি তুমি বেচে থাকো তাহলে আমি তোমার[ আবিরের কানে ফিসফিসিয়ে বললো কথাটা]

আবির অবাক হয়ে নেশাকে দেখছে।।এই নেশাকে সে চিনে নাহ।।কেমন করে যেন কথা বলছে নেশা আজ।।আজ নেশার চোখে বিন্দু মাত্র ভয় দেখতে পারছে নাহ আবির।।যেই মেয়ে কিনা ঝগড়া মারামারি পছন্দ করতো নাহ সে কিনা চাইছে খুনাখুনি।।

নেশা আবিরের অবাক হওয়ার কারন টা বুঝতে পেরে মুচকি হেসে উঠে গিয়ে নীড়কে জড়িয়ে ধরলো।।নীড়ের হুস আসলো।।এতোক্ষণ এক ধ্যনে আবিরের৷ দিকে তাকিয়েছিলো।।এই আবিরের জন্য নীড়ের একটা বছর নষ্ট হয়ে গেছে।।এক বছর সে নেশাকে ছাড়া থেকেছে।

কথাগুলো ভাবতে ভাবতেই নেশাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো। আজ একবছর পর নেশাকে পেল সে।

আবিরের ব্যাপারটা ভালো লাগলো নাহ।।নীড়ের পিছন দিকে গিয়ে তাকে মারতে যাবে নীড় ঘুরে শুরু করলো মাইর।।নেশা মুচকি মুচকি হাসছে।।এইটাই তো চেয়েছিলো সে।।নীড় এখন আহত সিংহ হয়ে আছে।।আবিরকে যে সে কিছুতেই ছাড়বে নাহ তা সে ভালো করেই জানে।

নীড় মেরে আবিরের অবস্থা খারাপ করে দিলো।।আফটার অল ও আমাদের হিরো।।আবির অজ্ঞান হয়ে গেল।

নীড় আবিরকে ছেড়ে নেশার সামনে এসে তাকে জড়িয়ে ধরতে গেল নেশা পিছিনে সরে গেল।

নীড়ঃ নেশা!!

নেশাঃ সাদী মোবারক নীড়?

নীড়ঃ নেশা তুমি..

নেশাঃ আপনার তো বিয়ে ঠিক হয়েছে তাই নাহ।।আই এম সরি আমার জন্য আপনার বিয়েতে বাধা পড়লো।আর কোন সমস্যা আসবে নাহ।

বলেই নেশা চলে যেতে নিলো।।যতোই হোক নীড়ের প্রতি একটা অভিমান জন্ম নিয়েছে নেশার মনে।

অপারেশনের ৫ মাস পর নেশা কোমা থেকে বেরিয়ে আসে।।নেশা ভেবেছিলো নীড়ের কাছে আগে খবরটা দেবে।।কিন্তু সে জানতে পারে নীড়ের বিয়ে ঠিক হয়েছে। তাও আবার নিহার সাথে।।নেশা এতে খুব বেশি কষ্ট পায়।।নীড় নেশার মরার একবছর ও ওয়েট করলো নাহ।।বরং বিয়ে করতে যাচ্ছে।।নেশা রাগে আর নীড়ের সামনে যায়নি।।কিন্তু সে সবসময় নীড়ের আর আবিরের খবর রাখতো।।নেশা জানতো আবির একদিন নাহ একদিন নীড়কে মারার প্লেন করবেই।

নেশা জানে নীড় নিজের ইচ্ছায় বিয়েতে রাজি হয়নি।।বরং তাকে জোর করা হয়েছে।।কিন্তু যতোই হোক নেশা মানতে পারছে নাহ।।নেশাকে তার মা বাবা ও নতুন করে জীবন শুরু করতে বলেছিলো।।কিন্তু নেশা তো পারেনি।।সে তার বাবা মার কথা নাহ মেনে নীড়কেই ভালোবেসে গেছে।।তাহলে নীড় কেন পারলো নাহ।

নীড় নেশার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলো।।

আবিরঃ পাবে নাহ তুই ও নেশাকে পাবি নাহ??

নীড় ঘুরে আবিরের দিকে তাকালো।।কথা ও বলতে পারছে নাহ ভালো করে।।তবুও হাসছে লোকটা।।

নীড় রাগে ছুড়ি দিয়ে আবিরের বুকে ঢুকিয়ে দিলো।একবার নাহ।।বার বার ঢুকিয়ে আবিরের বুকটা ক্ষতবিক্ষত করে দিলো।।আবির মারা গেল।।

নেশা খুব অবাক হলো।।নীড় যে এইভাবে আবির কে মেরে ফেলবে তা নেশা ভাবেনি।।কিন্তু কিছু নাহ বলে সেখান থেকে বেরিয়ে গেল।।

নীড়ঃ নেশা শুধু আমার।।।নেশাকে আমি নিজের করেই ছাড়বো।।ওর যতো রাগই থাকুক নাহ কেন সব ভুলিয়ে দিবো।।।

চলবে

( কেউ কিছু বলবা?।।)

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে