হয়তো_ভালোবাসি Part_18

0
1843

হয়তো_ভালোবাসি
Part_18
#Writer_Eshetaq_Nora

নীড় নেশার জামা কাপড় নিয়ে ফিরে এলো।।খেয়াল করলো দরজার লক খোলা।।নীড়ের মাথায় তো বাজ পড়লো। নেশা আবার চলে গেল নাহ তো তাকে ছেড়ে।

নীড়ঃ রহিম চাচা,চাচা।

রহিমঃ কি হয়েছে বাবা?

নীড়ঃ দরজার লক খুললো কে??

রহিমঃ আমি তো জানি নাহ বাবা।।আমি তো নিচেই ছিলাম।।কাউকে তো দেখি নি।

নীড়ঃ নেশা কোথায়?

রহিমঃ নেশা তো মনে হয় উপরেই।

নীড় দৌড়ে উপরে গেল।।দেখলো নেশা খাটে বসে আছে।নীড় চিন্তা মুক্ত হলো।নেশাকে গিয়ে জড়িয়ে ধরলো। নেশার ঘোর কাটলো। নীড় যে তার সামনে ছিলো তা নেশার খবরই ছিলো নাহ।

নীড়ঃ দরজার লক খোলা দেখে ভেবেছিলাম তুমি চলে গেছো।।খুব ভয় পেয়ে গেছিলাম।

নেশাঃ ওহহ।

নীড়ঃ কে জানে কে লক খুলে রেখেছিলো।

নেশাঃ মনে মনে- উনি ছাড়া আর কেউ নাহ?

নীড়ঃ কি হলো কিছু বলছো নাহ কেন।

নেশাঃ কি বলবো আমার ধম বন্ধ হয়ে আসছে এভাবে।।আর আপনি আমায় এইভাবে জড়িয়ে ধরে রেখেছেন কেন।। অসহ্য।[ নীড়ের থেকে সরে এসে]

নীড়ঃ অসহ্য!!! আমার কাছে থাকলে তোমার ধম বন্ধ হয়ে আসে?

নেশাঃ হ্যাঁ অসহ্য। আপনার সাথে থাকলে আমার ধম বন্ধ হয়ে আসে।।মনে হয় কেউ গলা চেপে ধরেছে আমার।

নীড়ঃ এই নেশা কেন এমন করে কথা বলছো। কি হয়েছে আমায় বলো নাহ প্লিজ।( নেশার গালে হাত দিয়ে)

নেশাঃ কিছু হয়নি আমার।। সারাক্ষণ খালি ছোয়ার ধান্দা।।টাচ করবেন নাহ আমায়।।আপনার স্পর্শ আমার সহ্য হয় নাহ তা আপনি বুঝতে পারেন নাহ।[ নীড়ের হাত সরিয়ে ]

নীড়ঃ আমার স্পর্শ সহ্য হয়নাহ তোমার??!!

নেশাঃ নাহ নাহ নাহ।।আপনার কিছুই সহ্য হয়নাহ।।আপনাকে দেখতে ইচ্ছে করে নাহ আমার।[ চিৎকার করে]

নীড়ঃ কেন নেশা কি এমন হলো।সব তো ঠিক ছিলো তাহলে?

নেশাঃ কিসের কি ঠিক ছিলো।কিছুই ঠিক ছিলো নাহ।সব নাটক ছিলো।।আমাদের মাঝে কখনো কিছু ছিলো নাহ।কিছু নাহ।

নীড়ঃ সব ছিলো। আর এখনো আছে।।ভালো তুমিও আমায় বাসো।কিন্তু কোন একটা কারনে তুমি খুব ডিস্টার্ব আছো।।আমায় বলো নাহ কি সমস্যা। দুইজন মিলে সলভ করি।

নেশাঃ হ্যাঁ সমস্যা আছে।। সমস্যাটা হলো আপনি।। আমি মুক্তি চাই আপনার থেকে।আই ওয়ান্ট ডিবোর্স

কথাটা বলার সাথে সাথেই নীড় নেশার গালে চড় মেরে দিলো।নেশার দুগাল চেপে দেয়ালের সাথে চেপে ধরলো।

নীড়ঃ মরে গেলেও ডিবোর্সের কথা উচ্চারণ তো দুর নিজের মাথায়ও আনবি নাহ।। আর নাহ আমায় ছেড়ে যাওয়ার কথা ভাববি।।তাহলে আমার থেকে খারাপ কেউ হবে নাহ।

নেশাঃ চলে তো আমি যাবোই।।

নীড়ঃ স্বপ্নেও ভাবিস নাহ এটা।।দরকার হলে তোর পা ভেঙে ঘরে বসিয়ে রাখবো। তবুও তোকে কোথায় যেতে দিবো নাহ।।তুই শুধু আমার সাথে থাকবি।। আমার চারপাশে থাকবি।।শুধু আমার হয়ে থাকবি।

[ নীড় কথাগুলো নেশার গাল চেপে ধরে বলছিস।।নীড়ের রাগে চোখ গুলো রক্তবর্ণ হয়ে গেছে।।নেশাকে ছাড়া নীড় নিজেকে ভাবতেও পারে নাহ।।এইদিকে নেশা যে ব্যাথা পাচ্ছে সেদিকে নীড়ের খবর নেই।তার মাথায় শুধু একটা কথাই ঘুরছে।।নেশা তাকে ছেড়ে কোথায় যেতে পারবে না]

হঠাৎ রহিম চাচা নিচে থেকে রাতের খাবারে জন্য ডাক দিলো।।

নীড়ঃ তুমি বস আমি খাবার নিয়ে আসছি।

বলেই নেশাকে ছেড়ে নীড় নিচে চলে গেল।

নীড় চলে যাওয়ার পর নেশা কান্নায় ভেঙে পড়লো।।

নেশাঃ কি করবো আমি এখন।।নীড় যে আমায় কিছুতেই যেতে দেবে নাহ।।কিন্তু নীড় যদি আমায় যেতে নাহ দেয় তাহলে উনি যে নীড়ের ক্ষতি করে দিবে।পালিয়ে যাবো।হ্যা এটাই ভালো উপায়।।নীড় আমাকে খুজে পাবে নাহ তাহলে।কিন্তু যদি খুজে পায় তখন কি করবো???

একটুপর নীড় খাবার নিয়ে রুমে এলো। দেখলো নেশা বসে বসে কাদছে।।নেশাকে কাদতে দেখেই নীড়ের বুকটা মোচড় দিয়ে উঠলো। এতোক্ষনে রাগটাও একটু কমে গেছে।। গিয়ে নেসার পাশে বসলো।

নীড়ঃ একি জান তুমি কাদছো কেন?

নীড় নেশার দিকে ভালো করে খেয়াল করে দেখলো নেশার ফর্সা গাল গুলোতে আঙুলের চাপের জন্য লাল হয়ে গেছে।।নীড় ভাবলো নেশা এই জন্য ব্যাথায় কান্না করছে।

নীড়ঃ ইসস দেখেছো কেমন লাল হয়ে গেছে।।আই এম সরি জান।।সত্যি আমি ইচ্ছা করে কাজটা করিনি।।কি করবো বলো তুমি আমায় ছেড়ে যাওয়ার কথা বললে তাই রাগ টা কন্ট্রোল করতে পারিনি।প্লিজ মাফ করে দাও।

দেখলো নেশা এখনো থামছে নাহ।
নীড় হুট করে নেশার গালে কিস করে দিলো।নেশা কান্না থামিয়ে নীড়ের দিকে হা করে তাকালো।

নীড়ঃ কি হলো আরেকটা লাগবে বুঝি।এই নাও।
বলেই আরেক গালে কিস করে দিলো।নেশা কিছুক্ষণ তাকিয়ে চোখ নামিয়ে নিলো।নীড় হেসে দিলো।

নীড়ঃ আচ্ছা অনেক হয়েছে।চলো খেয়ে নিবে।

নেশাঃ আমি খাবো নাহ।।

নীড়ঃ নেশা এইরকম জিদ ভালো লাগে নাহ।।আমি ব্যাথা দিয়েছি তো আমায় মারো।।খাবার তোমার কি দোষ করলো।

নেশাঃ আমার খিদে নেই।।আপনি খেয়ে নিন।।

নীড় উপায় না পেয়ে নেশাকে মুখ টিপে খাইয়ে দিলো।

খাওয়াদাওয়ার পর।

নীড়ঃ আজ আমার খুব শান্তি তে ঘুম হবে। কেন জানো

নেশাঃ ??

নীড়ঃ তোমার সাথে যে ঘুমাবো?

নেশাঃ মমানেহহ কি।। আমমার সাথে ককেন ঘুমাবেন।

নীড়ঃ ওমা এখন কি আর আমরা অচেনা নাকি।।এখন তো আমরা হাসবেন্ড ওয়াইফ।তো একসাথেই তো ঘুমাবো।আর রোমান্স করবো?

নেশাঃ নননাহ একসসাথে ঘুমানো যযাবে নাহহ

নীড়ঃ তোমার থেকে অনুমতি চেয়েছি নাকি।।?

নেশাঃ ??

নীড়ঃ উফফ নেশা এইভাবে তাকিয়ে থেকো নাহ।।কেন বুঝো নাহ আমার কিছু কিছু ফিল হয়?

নেশাঃ আমমার ঘঘুম পাচচ্ছে?

নীড়ঃ ???

নীড় লাইট অফ করে দেখলো নেশা অন্যদিকে ঘুরে ঘুমিয়ে আছে।।নীড় একটানে নেশাকে টেনে নিজের বুকের সাথে চেপে ধরলো।নেশা ছুটার জন্য মোচড়ামুচড়ি করছে।

নীড়ঃ এই দেখ বেশি মোচড়ামুচড়ি করবা নাহ সাপের মতো।। আমার কিন্তু কিছু ফিল হচ্ছে।

নেশা কথাটা শুনে চুপটি মেরে গেল।।নীড় আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ঘুমের দেশে পাড়ি দিলো।


রাত ১২ টায়

হঠাৎ কিছুর শব্দে নীড়ের ঘুম ভেঙে গেল।।খাট থেকে উঠে জানালা দিয়ে দেখলো একটা গাড়ি বের হচ্ছে বাড়ি থেকে।।হঠাৎ নীড়ের নেশার কথা মনে হলো।।নেশা তো এখানেই ছিলো। তাহলে কোথায় গেল।।নীড় টেবিলে একটা চিঠি দেখতে পেল।।

চিঠিতে।

প্রিয় নীড়,

আমি আপনাকে আগেই বলেছি আমি এই বিয়েতে রাজি নাহ।।আর আমি আপনায় ভালোবাসি নাহ। তাই আপনার সাথে এই সম্পর্কে জড়িয়ে থাকা আমার সম্ভব নাহ।আর আপনি হয়তো আমায় ডিবোর্স ও দিবেন নাহ।।তাই আমি সব কিছু ছেড়ে চলে যাচ্ছি।প্লিজ আমায় খুজবেন নাহ।।আর আপনি নতুন করে আপনার জীবন শুরু করুন।। আমি আমার সব অধিকার ছেড়ে দিলাম।।ভালো থাকবেন।

ইতি
নেশা।

চিঠি টা পড়ে নীড়ের কপালের রগ ফুলে গেল। নীড় ভুলেই গেছিলো নিচের দরজার লক টা কেউ খুলে ফেলেছিলো।তাই নেশা সহজেই পালাতে পারবে।

নীড়ঃ তোমার এতো সাহস কি করে হলো নেশা আমাকে ছেড়ে যাওয়ার।। এর শাস্তি তোমায় পেতে হবে নেশা।।আমার সুখের মধ্যে তুমি বাধা দিতে পারবে নাহ।তোমার অধিকার নেই আমাকে ছড়ে যাওয়ার।

নীড় ও গাড়ি নিয়ে নেশার গাড়ির পিছনে পিছনে গেল।।কিছুক্ষণ ড্রাইভ করেই নেশার গাড়ি দেখতে পেল।।গাড়ির স্পিড বাড়িয়ে নেশার গাড়ির সামনে ব্লক করে রাখলো।

নীড়ের এই গাড়টা এই বাড়িতে ছিলো বলে নেশা এই গাড়িটা চিনে নাহ।।সে ভাবলো অন্য কেউ হবে হয়তো।
নেশা গাড়ি থেকে বেরিয়ে আসলো।

নেশাঃ এই যে মি. দেখে চলতে পারেন নাহ।।রাস্তার মধ্যে এইরকম করে রেখেছেন কেন।।সমস্যা কি।

হঠাৎ নীড় কে গাড়ি থেকে বের হতে দেখে হাত পা ঠান্ডা হয়ে গেল।

নীড়ঃ সমস্যাটা তো তুমি।

নীড় নেশার হাত শক্ত করে ধরে নিজের গাড়িতে বসালো।

নেশাঃ আমি আপনার সাথে যাবো নাহ।।গাড়ি থামান।।থামান বলছি।

নীড় কিছু বলছে নাহ।।চুপচাপ গাড়ি চালাছে।।কিন্তু অনেক স্পিডের। নেশার ভয় লাগতে শুরু করে।।কি করবে নীড় এখন তার সাথে।।

নীড় বাড়ির সামনে গাড়ি থামিয়ে নেশাকে টেনে রুমে নিয়ে গেল।আর খাটে ছুড়ে মারলো।

নীড়ঃ খুব সাহস হয়েছে তোর তাই নাহ।।আমার জানকে আমার থেকে কেরে নেয়ার অধিকার কে দিয়েছে তোকে হ্যাঁ।। বল কে দিয়েছে[ চিৎকার করে]

নেশা প্রচন্ড ভয় পেয়ে যায়।।একে তো নীড়ের চেহারা দেখে ওর প্রচন্ড ভয় লাগছে।।কারন নীড় কে কখনো নেশা এতো রাগতে দেখেনি।।রাগে নীড়ের পুরো মুখ লাল হয়ে গেছে।।মনে হচ্ছে এখনই নেশাকে চোখ দিয়ে জ্বালিয়ে দিবে।।নেশা ভয়ে কিছু বলতেই পারছে নাহ

নীড়ঃ খুব সখ নাহ তোর সব অধিকার ছেড়ে দেয়ার। আমাকে ছেড়ে যাওয়ার। দেখি আজকের পর থেকে তুই কিভাবে আমাকে ছেড়ে যাস।।।আজ তোর এমন অবস্থা করবো যে তুই আমাকে ছেড়ে কেন এই রুম থেকেই বের হতে পারবি নাহ।।

বলেই নেশার ঠোঁট চেপে ধরলো নিজের ঠোঁট দিয়ে।।নেশা ধাক্কাচ্ছে নীড় কে সরানোর জন্য কিন্তু পারছে নাহ।যতোই হোক একটা ছেলের শক্তির সাথে কি পারা যায়।।নীড় নেশার ঠোঁট ছেড়ে গলায় মুখ ডুবালো।। কামড় কিসে ভরে দিতে লাগলো।।কাধ থেকে জামা সরিয়ে সেখানে কামড় দিলো।।সারামুখে পাগলের মতো কিস করছে।।।নীড়ের কোন হুস নেই।।সে শুধু নেশাকে নিজের করে পাওয়ায় মত্ত।আজ সে নেশার চোখের পানিও দেখতে পারছে নাহ।।একটা সময় নেশা হাল ছেড়ে দেয়।নীড়ের ও রাগটা ধীরে ধীরে কমে যায়।।নেশাকে আলতো করে ভালোবাসার পরশ দিতে থাকে।

মাঝরাতে-??

নীড় খাটের সাথে হেলান দিয়ে নেশার দিকে তাকিয়ে আছে।।এলোমেলো হয়ে শুয়ে আছে নেশা।।বাইরের লাম্প পোষ্টের আলো পুরো রুমটা আলোকিত করে রেখেছে।।নেশার মায়াবী মুখটা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।।নীড় সেদিকে তাকিয়ে আছে।।তার চোখে কোন রাগ নেই।। শুধু নেশার মায়াবী মুখটা দেখছে।।কিছুই করতে পারেনি আজ।। তার আগেই নেশা জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে।।নীড় নেশার দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে নেশার কাধের দিকে তাকালো।।নেশার কাধের জামাটা অনেক টাই নিচে নেমে গেছে।।নীড় জামাটা টেনে ঠিক করতে যাবে হঠাৎ খেয়াল করলো সেই কালো জিনিসটায়।।সেইদিনও নীড় এইটা দেখেছিলো।।কিন্তু পরে আর মনে ছিলো নাহ ব্যাপার টা।। এখন আবার দেখে মনে পড়ে গেল।। মোবাইলের লাইট টা জ্বলিয়ে নেশার কাধের সামনে ধরলো।।পুরোটা দেখা যাচ্ছে নাহ।।নীড় জামাটা আরও একটু নিচে নামালো।।

নীড় অবাক হয়ে জিনিসটা দেখছে।।একটা টেটু।কালো নীল আর সবুজের মধ্য কম্বাইন্ড করে আকা।।নেশার ফর্সা পিঠে খুব সুন্দর করেই ফুটে উঠেছে।।কিন্তু টেটু টা খুব অদ্ভুত।। একটা নেকড়ের মুখের টেটু।নীড়ের মুখটা খুব চিনা চিনা লাগলো।


নীড়ঃ এই মুখটা কোথায় যেন দেখেছি।।হ্যাঁ মনে পড়েছে।ওই চিঠি টাতে।। ওইটাতেও এই রকমই ছিলো।।

ওইদিন চিঠিটাতে যেমন নেকড়ের মুখ ছিলো ঠিক সেই রকমই টেটুর টা।। কিন্তু শুধু একটু পরিবর্তন আছে।।।ওইখানে কিং লেখা ছিলো এইখানে কুইন লিখা।।।

নীড় খুব বেশি অবাক হচ্ছে।।।নেশার কাধে এমন একটা জিনিস আছে তা নীড় ভাবেনি।।অবশ্য নেশার এতো কাছেও যায়নি।

নীড়ঃ যদি নেশার কাধে টেটুটা আগে থেকেই থাকে তাহলে সেটা আমাকে নাহ দেখনোর কারন কি।ওইইদিন দেখতে চেয়েছিলাম বলেই হয়তো নেশা তা আড়াল করেছিলো।।কিন্তু কেন।।আর তাছাড়াও নেশা তারমানে চিঠিটা সম্পর্কেও জানে।।তাহলে আমার থেকে লুকালো কেন, আমায় বললো নাহ কেন।।।নেশার সাথে কি হয়েছে এই ২ বছর।।নাহ আমায় জানতেই হবে।।কালই জানতে হবে সব।।

নীড় নেশার দিকে তাকালো।।কপালে একটা চুমু দিয়ে কাধের জামাটা ঠিক করে দিলো।।

সকালে?

সূর্যের আলো চোখে লাগায় নেশার ঘুম ভেঙে গেলো। ঠোটে আর গলায় অসহ্য ব্যাথা করছে।। নেশা খেয়াল করলো কেউ তাকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে রেখেছে।।।।নেশা মুখ উচু করে তাকিয়ে নীড়ের ঘুমন্ত চেহারা টা দেখতে পেল।।নীড়ের গলায় নেশার নাক লেগে আছে।।।নীড়কে দেখেই কাল রাতের কথা মনে পড়ে গেল নেশার।।নীড়কে ছাড়িয়ে খাটের এককোনায় চলে গেল।।

নড়াচড়ায় নীড়ের ঘুম ভেঙে গেল।।কাল কথা গুলো ভাবতে ভাবতে কখন ঘুমিয়ে পড়েছিলো মনে নেই।।নেশার দিকে খেয়াল করে নেশা খাটের এক কোনায় বসে আছে।।আর বার বার এদিক ওদিক তাকাচ্ছে।।আর জামা ঠিক করছে।।নীড় খুব অবাক হলো।।নেশা এমন কেন করছে।।

নীড়ঃ নেশা তুমি ঠিক আছো? কখন ঘুম ভাঙলো। [ নেশার কাছে গিয়ে নেশাকে ধরতে যাবে]

নেশাঃ ছছোবেনন ননাহহ আমমায়।দদুররে থথাকুনন।

বলেই নিজেকে গুটিয়ে নিলো।।নীড় তো মহা অবাক।।।নেশা যে কাল রাতের জন্য ভয় পেয়ে আছে সেটা তার মুখ দেখেই স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে।।নীড় ভেবেছিলো নেশা হয়তো রাগ করবে কিন্তু নাহ নেশা তো উল্টো ভয় পাচ্ছে।।নীড়ের চোখ গেল হঠাৎ নেশার মুখের দিকে।।রাতে ওতোটা খেয়াল করেনি আর বুঝাও যায়নি।।সারা মুখে আর গলায় কামড়ের দাগ,আর আচড় স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে।অনেক জায়গায় কেটে রক্ত ও বের হয়ে গেছে।

দেখেই নীড়ের বুকটা মোচড় দিয়ে উঠলো।

নীড়ঃ মনে মনে- নিশ্চয়ই খুব জ্বালা করছে নেশার।।সত্যিই আমি মানুষ নাহ।।।

নীড় গিয়ে নেশাকে ধরতে যাবে নেশা পিছাতে পিছাতে খাট থেকে পড়ে যায়।।খাটের পাশের ছোট টেবিলের সাথে লেগে কপালে কেটে যায়।

নীড় গিয়ে তাড়াহুড়ো করে নেশাকে ধরে উঠায়।

নীড়ঃ ঠিক আছো তুমি।।দেখলে তো কপাল কতো টা কেটে গেল। বসো এখানে আমি ফাস্টএইড বক্স নিয়ে আসছি।

নীড় বক্স নিয়ে এসে নেশার পাশে বসে ব্যান্ডেজ করতে নিলো।
কিন্তু নীড় যতো নেশাকে ধরার চেষ্টা করছে নেশা ততো দুরে সরে যাচ্ছে।।

নীড়ঃ কি শুরু করেছো তুমি ব্যান্ডেজ করবো তো।দেখছো নাহ রক্ত বের হচ্ছে।[খানিকটা রেগে বললো]

নেশা আরো ভয় পেয়ে গেল নীড়ের ধমকে।একদম চুপটি মেরে গেল।।নড়াচড়া বন্ধ করে।।
নীড় সামনে এসে নেশার কপালের চুল গুলো সরিয়ে দিলো।।নেশা ভয়ে কেপে উঠলো। নীড় ধীরে ধীরে কাটা জায়গায় ওষুধ দিতে লাগলো।
এইদিকে নেশার প্রচন্ড ভয় লাগছে।।বার বার রাতের ঘটনা গুলো মনে পরছে।হাত পা ঠান্ডা হয়ে গেছে।।।মনে হচ্ছে নীড় এখনই আবার ওর উপর ঝাপিয়ে পড়বে।।

নেশা বেশিক্ষণ এই প্রেসার আর নিতে পারলো নাহ।।অজ্ঞান হয়ে নীড়ের বুকে ঢলে পড়লো।

নীড় নেশাকে কোলে তুলে ঠিক করে খাটে শুইয়ে দিলো।।

তারপর কপালে ব্যান্ডেজ করে দিলো।।তারপর কামড়ের দাগ গুলোতে মলম লাগিয়ে দিলো।।নীড়ের চোখ গেল নেশার হাতের দিকে।।পুরো কালচে নীল হয়ে আছে।।নিশ্চয়ই কাল জোরে চেপে ধরার ফলে এমন হয়েছে।।নীড় হাত টাতে অজস্র চুমু একে দিলো।।কেন জানি নীড়ের খুব কান্না পাচ্ছে।। ভালোবাসার মানুষটা যদি তাকে ভয় পেতে শুরু করে তারকাছে আসতে নাহ চায় তাহলে হয়তো তার থেকে খারাপ কিছুই নেই।

চলবে

(কয়েকটা আপু আমারে পেচানো আপু নাম দিছে। আমার ক্রাশ আরো অনেকেই আমাকে জিলাপিই বলে।।সো তোমরাও বলতে পারো নো প্রবলেম?।।বাট মাক্স নাহ পড়ে আমার গল্প পড়তে আসলে জরিমানা দিতে হবে কিন্তু?)

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে