হয়তো_ভালোবাসি
Part_14
#Writer_Eshetaq_Nora
নীড় নেশাকে নিয়ে কবরস্থানে নিয়ে গেল।।তারপর একটা কবর ইশারা করে দেখালো।
নেশা সেটা দেখে থমকে গেল।দৌড়ে কবরের সামনে চলে গেল।আর কান্না করতে লাগলো।নীড় ধরতে গিয়েও ধরলো নাহ।।কেন যেন তার এক অজানা কষ্ট লাগছে।।নীড় গিয়ে নেশার হাত ধরে ওকে ওঠানোর চেষ্টা করলো।কিন্তু নেশা তার হাত ছেড়ে আবার গিয়ে আকাশের কবরের পাশে বসে পড়লো।নেশার চোখমুখে আকাশের জন্য যে মায়া ফুটে উঠেছে তা দেখে নীড়ের ভয় হচ্ছে।।সাথে রাগ ও হচ্ছে।।
নীড়ঃ মনে মনে- ও কেন কাদবে আকাশের জন্য।। নেশা তো শুধু আমার জন্য কাদবে।।নেশা কি বুঝতে পারছে নাহ আমার কষ্ট হচ্ছে ওকে অন্যজনের জন্য কাদতে দেখে।
নীড় তবুও কিছু বললো নাহ।।চুপচাপ দাড়িয়ে রইলো।
নেশা এখনো আকাশের কবরের পাশে বসে কান্না করছে।।প্রায় ১ ঘন্টা হয়ে গেল।
নীড়ঃ নেশা এখন আমাদের বাড়ি যাওয়া উচিত। অনেক রাত হয়ে গেছে।
নেশাঃ আপনি চলে যান।।আমি পরে যাবো।
নীড় আর নিজের রাগ কন্ট্রোল করতে পারলো নাহ।।যে কিনা তার মা বাবাকে খুন করলো তার জন্য এত কিসের কান্না করতে হবে।।।আর নেশা কি আকাশকে ভালোবেসে ফেলেছে।।তাহলে আমার কি হবে।
নীড় আর নেশার সামনে নিজের রাগটা প্রকাশ করলো নাহ।চুপচাপ বাড়ি চলে এলো।
আর বাড়িতে এসেই রুমের সব ভাঙতে শুরু করলো।।সবাই থামানোর চেষ্টা করছে কিন্তু পারছে নাহ।কারন সবাই নীড়ের রাগ সম্পর্কে জানে।আর নীড় যখন রাগ করে তখন তাকে কন্ট্রোল করা অসম্ভব হয়ে পরে।।
একটু পর নেশা বাড়িতে চলে এলো।।নেশাকে দেখে নীড়ের মা দৌড়ে এলো।
কথাঃ নেশা দেখোনা নীড়ের কি হয়েছে।
নেশাঃ আমি দেখছি আন্টি আপনি শান্ত হোন।
নেশা গিয়ে নীড়কে থামানোর চেষ্টা করলো। কিন্তু নীড় কিছুতেই থামছে নাহ।।আর না নেশার কোন কথা শুনতে পাচ্ছে।নেশা উপান্তর নাহ পেয়ে নীড়ের গালে ঠাস করে একটা থাপ্পড় দিয়ে দিলো।
নীড় থাপ্পড় খেয়ে মাথা নিচু করে চুপচাপ দাড়িয়ে রইলো।কথা নীড়কে ধরতে যাবে হিয়া আটকালো।
কথাঃ হিয়া নী…
হিয়াঃ মা ওদের সমস্যা ওদের সল্ভ করতে দাও।।আমরা গেলে আরো সমস্যা বাড়বে।।
কথা দাড়িয়ে গেল।
।
।
নেশাঃ বাচ্চা আপনি হ্যাঁ। কি করছেন এইসব।। পাগল হয়ে গেছেন।।দেখেছে রুমটার কি অবস্থা করেছেন।কি সমস্যা আপনার???
নীড় এতোক্ষণ চুপচাপ নিচের দিকে তাকিয়ে ছিলো।
নেশাঃ কি হলো কিছু জিজ্ঞাসা করছি তো।।কথার জবাব দিন।।না হলে ওই গালেও আরেকটা দিবো।
নীড় নেশার কথা শুনে ২ গালে হাত দিয়ে নেশার দিকে বোকার মতো তাকালো।
নেশা নীড়ের এই বোকা বোকা ফেস দেখে আর রেগে থাকতে পারলো নাহ।।ফিক করে হেসে দিলো।
নীড় কিছু নাহ বলে নেশাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।বলতে গেলে অনেক শক্ত করে।
নেশাঃ আরে আরে কি করছেন।।এতো শক্ত করে ধরে নাকি।।মরে যাবো তো।
নীড়ঃ একদম চুপ।।আজেবাজে কথা বলবা নাহ।।এই নাও আস্তে করে ধরলাম।। হয়েছে
নেশাঃ এটা যদি আস্তে হয় তাহলে জোরে কোনটা।
হিয়াঃ এহেম এহেম??।।দেবরজি আমরা কিন্তু সবাই আছি।
নেশা সবার কথা এতোক্ষণ ভুলেই গেছিলো।।হিয়ার কথায় খুব লজ্জা পেল।নীড়ের থেকে ছাড়া পেতে চাইলো।
নেশাঃ কি করছেন নীড় সবাই দেখছে।প্লিজ ছাড়ুন। [ফিসফিসিয়ে]
নীড়ঃ তাতে আমার বাপের কি।
কবিরঃ তোর বাপের আবার কি হবে?।তুই রোমান্স কর আমরা দেখি।
নীড়ঃ উফফ বাবা কই একটু বউকে শান্তিতে জড়িয়ে ধরেছি।।তোমরা সবাই আমাদের একটু একা ছেড়ে দিবে তা না এইখানে দাড়িয়ে দাড়িয়ে ছেলে বউমার রোমান্স দেখছো।আমি কি তোমার আর মামনির রোমান্স দেখি। ।আর হিয়া ভাবি।আমি কিন্তু ভাইয়ার সাথে তোমার আরো অনেক কিছুই দেখেছি।।সবার সামনে বলবো নাকি
হিয়াঃ ?????
কবিরঃ আমি আসছি আমার কিছু কাজ আছে?
ধীরে ধীরে সবাই পালালো।কারন এই ছেলের কোন বিশ্বাস নেই। কখন কাকে কি বলে দেয়।
সবাই চলে যাওয়ার পর
নেশাঃ এখন তো ছাড়ুন।
নীড়ঃ উহু ছাড়বো নাহ।।।
নেশাঃ আমি ব্যাথা পাচ্ছি তো।
নীড়ঃ উফফ এতো আস্তে ধরলেই যদি ব্যাথা পাও তাহলে বিয়ের পর আমার চাপ সামলাবে কি করে
নেশাঃ আপনি একটা.. ???
নীড়কে ধাক্কা দিয়ে খাটে ফেলে দিলো।
নীড়ঃ ওমা যা সত্যি তাই তো বললাম এতে এতো লজ্জা পাওয়ার কি আছে।
নেশাঃ কিছুই নাহ।।
হঠাৎ নেশার চোখ গেল নীড়ের হাতের দিকে।।
নেশাঃ একি আপনার হাত কাটলো কিভাবে
নীড়ঃ এইসময় কিসে লেগে যেনো কেটে গেছে।
নেশা রাগি লুক নিয়ে ফাস্টএইডবক্স নিয়ে নীড়ের পাশে বসলো।তারপর পরম যত্নে নীড়ের হাতে ব্যান্ডেজ করে দিলো।তারপর উঠে যেতে নিলো নীড় নেশার হাত ধরে আবার বসিয়ে দিলো।
নেশাঃ কি?!
নীড়ঃ ভালোবাসি
নেশাঃ ?
নীড়ঃ তুমি বলো
নেশাঃ কি বলবো?
নীড়ঃ আমি যা বললাম
নেশাঃ আমি বাসি নাহ তো কেন বলবো?
নীড়ঃ কি বললা?
নেশাঃ আমি আপনাকে এখন আর ভালোবাসি নাহ।
বলেই উঠে যেতে নিলো।নীড় টেনে খাটে ফেলে নেশার উপর উঠে দুইহাত দুইদিকে চেপে ধরলো।
নীড়ঃ ভালোবাসো নাহ মানে কি হ্যাঁ। ভালো নাহ বাসলেও আমার সাথেই থাকতে হবে।।।
নেশাঃ সরি আমি পারবো নাহ।।আমি আকাশ কে ভালোবাসি
নীড়ঃ কি বললি তুই ?।ওই ছেলের মধ্যে কি এমন ছিলো যা আমার মধ্যে নেই।।মরে গেছে তবুও ওর জন্য এতো দরদ আসে কোথা থেকে হ্যা
নেশাকে ঝাকাতে ঝাকাতে কথা গুলো বলছে নীড়। প্রচন্ড পরিমানে রাগ হচ্ছে তার।এইদিকে নেশার খুব হাসি পাচ্ছে।।নীড়কে রাগাতে খুব মজা লাগছে তার।।
ঠোঁট টিপে হেসে-
নেশাঃ যদি আকাশ না মরতো তাহলে এতোক্ষণে ও আমার সাথেই থাকতো।।খুব মিস করছি তাকে।উফফ কি ভালোটাই নাহ বাসে আমায় ছেলে টা।
নীড়ের আর সহ্য হলো নাহ কথাগুলো।উঠে চলে যেতে নিলো নেশা হাত ধরে থামিয়ে দিলো
নেশাঃ কি হলো চলে যাচ্ছেন কেন।
নীড়ঃ তো কি করবো। নিজের ভালোবাসার কাছে অন্যের সুনাম শুনবো??
নেশাঃ আরে আপনি মন খারাপ করছেন কেন।।যা সত্যি তাই বললাম।।আর তাছাড়াও যদি ও বেচে থাকতো তাহলে হয়তো ভালোবেসে ফেলতাম এতোদিনে।
নীড়ঃ কি বললা তুমি।তোমার এতো সাহস তুমি আমার সামনে এসব বলছো।।?
নেশাঃ আরে এইখানে সাহসের কি আছে ?ওকে না ভালোবেসে থাকা যায় নাকি
নীড়ঃ তাহলে ওকেই ভালোবাসতে।।মারতে গেলে কেন
।বরং আমায় মেরে ফেলতে। তাহলেই তোমার আর আকাশের প্রেমের কাটা দুর হয়ে যেত।
নেশাঃ মনে মনে- এইরে বেশি হয়ে গেছে?
নেশাঃ যা হওয়ার তাতো হয়ে গেছে।।এখন তো আর কিছু করার যাবে নাহ।
নীড়ঃ কেন করা যাবে নাহ।।।তোমার আকাশকে মারতে নিয়ে যাওয়াই ঠিক হয়নি।।ও তো তোমার ভালোবাসা।।ওকেই বিয়ে করতে।।।আমাকে মেরে ফেললে নাহ কেন তাহলে।।যদি আকাশকে এতোই ভালোবাসো তাহলে আমায় বাচিয়ে রাখলে কেন??
নেশাঃ তাহলে এখন মেরে ফেলি?
নীড়ঃ মান……
নীড়কে আর বলার সুযোগ নাহ দিয়ে নেশা নীড়ের কলার ধরে টেনে কাছে এনে নীড়ের ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে দিলো। নীড় তো যাস্ট শক।বড়বড় চোখ করে নেশার দিকে তাকিয়ে আছে।।কিন্তু নেশা চোখ বন্ধ করে কিস করছে।।????
কিছুক্ষণ পর নীড়ও রেসপন্স করতে শুরু করলো।।পরম আবেশে নেশার ঠোঁটের ভিতর নিজের ঠোঁট গুলো ডুকিয়ে দিলো।নেশার ঠোঁটগুলো চুষতে লাগলো আবেশে।
নেশার খুব অদ্ভুত লাগছে।নেশা এতোক্ষণ নিজেকে শান্ত রাখতে পারলেও এখন আর পারছে নাহ।।।কাপাকাপি শুরু করে দিলো।।নীড়কে ছাড়ানোর জন্য চেষ্টা করছে।।কিন্তু নীড় নিজের সমস্ত ভার নেশার উপর ছেড়ে দিয়েছে। এই বিশাল জিম ওয়ালা বডি কি আর নেশার মতো পিচ্ছি মেয়ে সরাতে পারবে।।তারউপর হাত দুটোও খাটের সাথে চেপে ধরে রেখেছে।ধাক্কা দেয়ার ও উপায় নেই।
নেশা কথাগুলো ভাবছিলো।এইদিকে নীড় নেশার ঠোঁটে ছেড়ে গলায় মুখ ডুবালো.।নেশা এবার সেই লেভেলের কেপে উঠলো। গলায় নীড় লিক করছে।।যার ফলে প্রচন্ড সুরসুরি লাগছে নেশার।।মনে হচ্ছে দম বন্ধ হয়ে মরে যাবে নেশা।।
নীড় নেশার চুলের ভিতর হাত ডুকিয়ে নেশাকে আরো কাছে টেনে নিলো।।আলতো করে গলায় কামর দিলো।নেশার হাত গুলো ছাড়া পেয়ে নীড়কে সর্বশক্তি দিয়ে ধাক্কা দিলো।।নীড় খাটের অন্যপাশে সরে গেল ধাক্কা খেয়ে।
নেশা উঠে বসে ওড়না ঠিক করে জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছে।।সারা শরীর কাপছে তার।
নেশাঃ আপনি কি পাগল। এমন কেউ করে।।আরেকটু হলে দম বন্ধ হয়ে মরে যেতাম।
বলেই নীড়ের দিকে রাগি চোখে তাকালো।ছেলেটার মুখে দুষ্টু হাসি
নীড়ঃ ওমা তুমিই তো বললে মেরে ফেলবে।।তাহলে মেরে ফেলি কি বলো[চোখ টিপ মেরে]
নীড় নেশার কাছে আসতে যাবে নেশা দাড়িয়ে গেল
নেশাঃ এএককদমম এএগুবেনন ননাহহ?
নীড়ঃ ওমা এতোটুকুতেই এই অবস্থা।বাকি টুকু করলে কি হবে
নেশাঃ ববাকি টুটুকু মমানেহহ
নীড়ঃ কাছে আসো বুঝিয়ে দেই??
নেশাঃ ননাহ লাগবে ননাহ।।আমি যাচ্ছি।
বলে নেশা চলে যেতে নিলো নীড় হাত ধরে ফেললো
নেশাঃ কি?
নীড়ঃ একটা কথা জিজ্ঞাসা করি
নেশাঃ বলুন।
নীড়ঃ তুমি কি সত্যিই আকাশকে লাইক করো?
নেশাঃ কি মনে হয়??
নীড়ঃ তাহলে আজ এতো কান্না করলে কেন?
নেশাঃ আরে যতো খারাপই হোক মায়া তো লাগবেই।।রক্তের টান বলে একটা কথা আছে নাহ।
নীড়ঃ মানে!!!
নেশা কিছু বললো নাহ।।শুধু বাঁকা হাসি দিলো।
।
।
চলবে
(সবাই আস্তে আস্তে কমেন্ট করবেন। ধাক্কাধাক্কি করবেন নাহ।।আর করলেও মাস্ক পড়ে আসবেন।।দেশের পরিস্থিতি ভালো নাহ।??। আপনারা খালি টুইস্ট চান তাই গল্পে এতো প্যাচ লাগাইছি যে আপনাদের লেখিকাও প্যাচে পড়ে গেছে?)