হয়তো_ভালোবাসি
Part_12
#Writer_Eshetaq_Nora
নীড়ঃ নেশায়ায়ায়ায়ায়া??
আকাশ কথাটা শুনে পিছনে ঘুরলো। আর দেখলো নেশা দাড়িয়ে আছে।কিন্তু তার গেটআপ পাল্টে গেছে।।অল ইন ব্লাক।।মাফিয়াদের মতো লাগছে।।
নীড় আর আকাশ অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।কারন নেশাকে কখনো এইরুপে কেউই দেখেনি।
নেশাঃ তোমার সাহস কি করে হয় আমার ভালোবাসার দিকে হাত বাড়ানোর মি. আকাশ
আকাশঃ মানে কি?।তুমি এখানে আর এই অবস্থায় কেন।
নেশাঃ জানো ভেবেছিলাম তোমায় এতো তাড়াতাড়ি মারবো নাহ।কিন্তু কি করবো বলো।।তোমার টাইম যে শেষ হয়ে গেছে।।
[বলেই আকাশের ঘাড়ে একটা ইঞ্জেকশন লাগিয়ে দিলো।আর আকাশ অজ্ঞান হয়ে গেল। নেশা কিছু লোককে ইশারা করলো তারা আকাশকে নিয়ে গেলো।। নেশা এসে নীড়ের সামনে দাড়ালো।।নীড় তো অবাক হয়ে নেশাকে দেখছে]
নেশাঃ বাড়ি চলে যান।।পরে দেখা হবে আপনার সাথে।
নীড়ঃ….
নেশাঃ কি হলো কিছু বলছি তো?
নীড়ঃ আমি তোমার ভালোবাসা??
নেশাঃ মুচকি হেসে- এই মুহুর্তে এইসব কথা বলা আপনার দ্বারাই সম্ভব
নীড়ঃ রোমান্স আর প্রেমের কোন নির্দিষ্ট টাইম নাই??
নেশাঃ ?।আচ্ছা বাড়ি যান।।আমি কাজ টা শেষ করে আসছি।
নেশা কিছুটা যেয়ে আবার ফিরে এলো।
নেশাঃ পিছন পিছন আসবেন নাহ। সোজা বাড়ি যাবেন।
বলেই নেশা বেরিয়ে গেল।।নীড় ও পিছে পিছে গেল।।দেখলো আকাশ ওকে যেই গাড়ি দিয়ে নিয়ে এসেছিলো সেটা রাখা আছে।।
নীড়ঃ তোমাকে একা কি করে ছাড়ি জান।তোমার জীবনের অনেক পাতা এখনো খোলা বাকি যে।।
নীড় গাড়িতে উঠে নেশার পিছন পিছন গেল।নেশা আকাশকে একটা গোডাউনে নিয়ে গেল।নীড় ভিতরে গেল নাহ।।আড়ালে দাড়িয়ে কি হয় দেখার চেষ্টা করলো।
নেশা আকাশ কে বাধলো।।তারপর তার মুখে পানি দিয়ে জ্ঞান ফিরালো।
আকাশের জ্ঞান ফিরলো।আর দেখলো নেশা তার সামনে চেয়েরে বসে আছে পায়ের ওপর পা তুলে।।আকাশ তার হাতের দিকে খেয়াল করলো ব্যাথাটা এখন অনেক টা কম।আর হাতের মধ্যে ব্যান্ডেজ করা।
নেশাঃ কি দেখছিস।।হ্যাঁ ব্যান্ডেজ করে দিয়েছি।।যাতে আপাদত ব্যাথা টা কমে।
আকাশঃ তুমি এসব কি বলছো নেশা।।তোমার কি হয়েছে।নিশ্চয়ই নীড় তোমাকে কিছু বলছে তাই নাহ।বিশ্বাস করো আমি কিছু করিনি।।ও যা বলেছে সব মিথ্যা।
নেশাঃ আরে নীড়ের কথা বাদ দাও।।ও জানে কি যে ও বলবে।।।ও শুধু জানে তুমি ইশাকে খুন করেছো।।কিন্তু আর কিছু তো জানে নাহ।
আকাশঃ মমমাননেহহ?
নেশাঃ আকাশে কাছে গিয়ে- এই যে তুমি আমার মা- বাবাকে খুন করেছো তাতো নীড় জানেই নাহ?।
আকাশঃ ককি সসবব ববলছো ততুমি????
নেশাঃ কেন তোমার মনে নেই বুঝি।।২ বছর আগে আমার মা- বাবাকে খুন করেছিলে।।তাও নিজের পাপ ডাকার জন্য?
নেশা এমন ভাবে কথা বলছে যেন সব নরমাল। আর সবকিছু যেনেও সে কোন রিয়েক্ট করে নাহ।
নেশাঃ কি ভাবছো আকাশ।
আকাশঃ তুমি এতো নরমাল কিভাবে!!
নেশাঃ ??হাসালে।।।শত্রুদের সামনে দুর্বল হতে নেই।।
আকাশঃ আমি তোমার শত্রু?।।তুমি নাহ আমায় ভালোবাসতে??!!
নেশাঃ ভালোবাসা???।।অভিনয় ছিলো সব।।তোমার থেকে প্রতিশোধ নিতে।।তুমি শুধু একজন খুনি।।আমার মা বাবার খুনি।
আকাশঃ আমি যদি আগে তোমায় দেখতাম তাহলে সত্যি নেশা আমি তোনার বাবা মাকে মারতাম নাহ।।তোমার বাবা আমার নামে ওইসব ছড়িয়ে ছিলো তাই ওনাকে মেরেছি।
নেশাঃ তারপর আমায় মারতে যাও।।কিন্তু আমার রুপের জালে আটকা পড়ে যাও?
আকাশঃ তুমি এইসব জানলে কিভাবে??
নেশাঃ অবশ্যই বলবো।।তোমার রাইট আছে সব জানার।।
তুমি যেদিন আমার মা বাবা কে খুন করেছিলে আমাদের বাড়িতে সে দিন সেই বাড়িতে আমার দাদুও ছিলো। তিনি সব দেখেছে।
আকাশঃ কিন্তু আমি তো উনাকে…..
নেশাঃ মেরেফেলেছিলে তাই তো
আকাশঃ ?
নেশাঃ কিন্তু তার আগেই তিনি আমায় সব বলে দিয়েছিলো।।যেদিম তুমি আমাদের বাড়িতে এসেছিলে আমায় খুন করতে সেইদিনই দাদু আমায় সব বলে দিয়েছিলো। জানো ওইদিন ইচ্ছা করছিলো তোমায় শেষ করে দেই।।কিন্তু আমার বাবা মার খুনিকে এতো সহজে মেরে ফেললে যে আমার বাবা মার আত্তা শান্তি পাবে নাহ।তাই শুরু করলাম অভিনয়। তোমার আমার বাড়িতে প্রতিদিন আসা যাওয়া দেখে বুঝে গেছিলাম তুমি আমায় লাইক করো,আমার প্রতি দুর্বল হয়ে গেছো।।সেই দুর্বলতাকেই কাজে লাগালাম তোমায় ধ্বংস করতে।
আকাশঃ নেশা আমি সত্যিই তোমায় ভালোবাসি। আমি যদি আগে তোমায় দেখতাম তাহলে কখনো তোমার বাবা মাকে খুন করতাম নাহ।
নেশাঃ তাহলে আমার দাদুকে কেন খুন করলে
আকাশঃ উনি সব জেনে গেছিলো তাই।।যদি উনি তোমায় সব বলে দেয় এই ভয়ে।
নেশাঃ ??।।এই তোমার ভালোবাসা।।।আমার পরিবারের সবাইকে শেষ করে তুমি বলছো তুমি আমায় ভালোবাসো।।যদি সত্যিই আমায় ভালোবাসতে তাহলে সেইদিনই সব সত্যি বলে দিতে যেদিন তুমি আমায় দেখেছিলে।।কিন্তু তুমি বলোনি। বরং নিজের পাপ ঢাকতে একের পর এক মিথ্যা বলেছো।
আকাশঃ ?
নেশা হাতে বন্দুক নিলো।
নেশাঃ বন্দুক চালানো আমায়্য তুমিই শিখিয়ে ছিলে তাই নাহ আকাশ। আজ এই বন্দুকই তোমার জান নেবে।
বলেই আকাশের দিকে বন্দুক তাক করলো
আকাশঃ??
নেশা পারছে নাহ আকাশকে গুলি করতে।।কিভাবে পারবে।আকাশ যতোই নেশার বাবা মার খুনি হোক নেশাকে তো আকাশ সত্যিই ভালোবাসে। তা নেশা নিজেও জানে।আকাশের চোখে আজ ও নেশা সেই ভালোবাসা দেখতে পারছে।।।তাহলে কিভাবে খুন করবে তাকে।
নেশাঃ নাহ আমি পারবো নাহ।।পারবো নাহ আমি
নেশা অনেক চেষ্টা করলো কিন্তু পারলো নাহ।।বন্দুকটা জোরে নিচে ফেলে দিয়ে চলে যেতে নিলো।পিছনে ঘুরে নিড় কে দেখতে পেলো।
নেশাঃ তোমাকে নাহ বলেছি আমার পিছন পিছন না আসতে।
নীড়ঃ আমি আসলে….
নীড় এর চোখ গেল আকাশের দিকে।আকাশ নেশাকে শুট করার জন্য বন্দুক তাক করছে।।
আসলে আকাশ অনেক আগেই হাতের বাধন গুলো খুলে ফেলেছিলো।কিন্তু নেশা তার সামনে দাড়িয়ে ছিলো বলে আকাশ কিছু করেনি।।
আকাশ যেই নাহ শুট করলো নীড় নেশাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলো।।নেশা দেখতে পায়নি কারন নেশা আকাশের উল্টো দিকে ঘুরেছিলো।
নেশা গুলির আওয়াজ পেয়ে সেদিকে তাকালো।।দেখলো আকাশ বন্দুক হাতে দাড়িয়ে আছে।।আর মুখে শয়তানি হাসি।
আকাশঃ তোকে যদি আমি নাহ পাই নেশা তাহলে আর কেউ পাবে নাহ।[বলেই নেশাকে গুলি করেদিলো]
পুরো কাজ গুলো এতো তাড়াতাড়ি হলো যে নীড় কিছুই করতে পারলো নাহ।।যখন দেখলো নেশার গুলি লেগেছে তার দিকে ছুটে গেল।
নীড়ঃ নেশা তুমি ঠিক আছো।। এই নেশা
আকাশঃ ??ও গেছে ওর পরিবারের মতো ও চলে গেছে।।।এখন তোর পালা নীড়
বলেই নীড়ের দিকে যেই গুলি করতে নিবে নীড় গিয়ে আকাশের হাত থেকে বন্দুক টা নিয়ে নিলো।।আর দুইজনের হাতাহাতিতে আকাশের মাথায় গুলি লাগলো।।আর মাটিতে পরে গেল।।
নীড় নেশাকে কোলে তুলে হসপিটালে নিয়ে গেল।।
হসপিটালে–
নীড়ঃ ডাক্তার আঙ্কেল ইমার্জেন্সি। প্লিজ ওকে বাচান।।।
ডাক্তারঃ আরে নীড় তুমি?..এই মেয়ে কে
নীড়ঃ আগে ওকে বাচান। পরে সব বলছি।
ডাক্তারঃ ওকে তুমি শান্ত হও।।নার্স ওকে ওটিতে নিয়ে যাও।।
ডাক্তাররা অপারেশন শুরু করলো।আসলে নীড়ের বাবা ডাক্তারের পরিচিত তাই নীড়কে চিনে।।।
নীড় পাগলের মতো করছে।।সবাইকে জিজ্ঞাসা করে করে মাথা খারাপ করে দিচ্ছে।।উপান্তর নাহ পেয়ে ডাক্তার নীড়ের পরিবারকে ফোন দেয়।। সবাই ছুটে আসে হসপিটালে।
নীড়ের বাবা কবির আর মা কথা দৌড়ে এলো তাদের কাছে।
কথাঃ নীড় বাবা কি হয়েছে।।তোর শরীরে রক্ত কেন???
নীড়ঃ মামনি নেশা [ বলেই কথাকে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করে দিলো]
কথা আর কবির খুব অবাক হলো। নেশা কে তাতো আর তারা জানে নাহ।।নীড় কখনোই তাদের নেসগার ব্যাপারে বলেনি এতো বছরে।।
কথাঃ ঠিক হয়ে যাবে বাবা।।।তুমি প্লিজ শান্ত হও।।ওর কিছু হবে নাহ।।
হঠাৎ ডাক্তার দরজা খুলে বাইরে বের হলো।
নীড়ঃ ডাক্তার আঙ্কেল নেশা??
ডাক্তারঃ ও এখন ঠিক আছে।।কাধে গুলি লেগেছে তাই খুব সহজে বাচানো গেছে।।কিন্তু ওর খেয়াল রাখবেন।। এখনো অনেক উইক।অনেক রক্ত পড়েছে তাই
নীড়ঃ ডাক্তার আমি ওকে দেখতে যাই?
ডাক্তারঃ নাহ এখন নাহ।জ্ঞান ফিরার পর ওকে কেবিনে শিফট করা হবে তারপর দেখা করো।।
নীড়ঃ আঙ্কেল প্লিজ দেখা….
কবিরঃ আকবর তুই যা।।আমি ওকে সামলাচ্ছি[৷ আকবর ডাক্তারের নাম]
ডাক্তারঃ ওকে
কবিরঃ নীড় শান্ত হও ও ঠিক আছে।।
নীড়ঃ কিন্তু বাবা আমি ওকে
কবিরঃ বললাম তো।।পাগলামো করো নাহ।।এতে ওরই ক্ষতি হবে।এখন বলো মেয়েটি কে?
নীড়ঃ আমার ভালোবাসা
কবিরঃ মানে???কিসব বলছো??
নীড়ঃ বাবা প্লিজ এখন আমায় কিছু জিজ্ঞাসা করো নাহ।।সময় হলে আমিই তোমাদের সব বলবো।।
২ ঘন্টা পর নেশাকে কেবিনে শিফট করা হলো। নীড় তার কাছে গেল।।।দরজা খোলার আওয়াজ পেয়ে সেদিকে তাকালো।
নীড়ঃ এখন কেমন লাগছে তোমার নেশা??[ নেশার হাত ধরে]
নেশাঃ আকাশ কোথায় নীড়?
নীড়ঃ আসলে…
নেশাঃ কি বলুন
নীড়ঃ ও মারা গেছে
কথাটা শুনে নেশা সাথে সাথে জ্ঞান হারালো।
চলবে