হয়তো_ভালোবাসি
Part_03
#writer_Eshetaq_Nora
নেশা কিছু নাহ বলে চলে যেতে নিলো।হঠাৎ কিছু ভেবে আবার ফিরে এলো।আর নিহার সামনে দাড়ালো।
নেশাঃ আই এম সরি নিহা আপু।আমি বুঝতে পারিনি যে আমি এতো বড় ভুল করে ফেলেছি। আই এম এক্সট্রিমলি সর????
নিহাঃ হুহ?।পরের বার থেকে আমার সাথে লাগতে
আসলে ১০০ বার ভাববে ওকে?
নেশাঃ জি আপু
[বলেই চলে যেতে নিলো।কেন যেন নীড়ের ও খারাপ লাগছে।কিন্তু ও কি করবে ও যদি কাজটা নাহ করতো নিহা তাকে ছেড়ে চলে যেত।আর নীড় যে নিহাকে ভালোবাসে]
নেশা চলে যাওয়ার সময় ইমানের সাথে ধাক্কা খেয়ে পরে যেতে নিলো।ইমান ধরে নিলো।যা দেখে নীড়ের মাথা গরম হয়ে গেলো। আসলে ইমান আর নীড় সবার সামনে ফ্রেন্ড হলেও তাদের মধ্যে শত্রুতা আছে।।দুইজন দুই গ্রুপের লিডার।
ইমানঃ আর ইউ ওকে।
নেশাঃ ইয়েস।
ইমানঃ হেই।তুমি কান্না করছো কেন।কিছু হয়েছে???
নীড়ঃ নেশা এতো কি কথা বলছে ইমানের সাথে(বিড়বিড় করে)
নেশাঃ নাহ কিছু নাহ।।চোখে মে বি কিছু পড়েছে তাই।।ওকে আমায় যেতে হবে
[। বলেই নেশা চলে গেলো।ইমান তো সেইদিকেই তাকিয়েই তাকিয়ে আছে।নেশাকে দেখে ওতো পুরো ফিদা?।।]
ইমানঃ রাফি এই মেয়েটা কে রে??
রাফিঃ ওর নাম নেশা।
ইমানঃ ওহহ নাইস নেম।।আই লাইক হার?।।
নিহাঃ রিয়েলি!! এই বস্তিকে লাইক হলো।ছি হোয়াট আ চয়েস?
ইমানঃ নান অফ ইউর বিসন্যাস নিহা।স্টে ওন ইউর লিমিট। ও তোমার থেকে অনেক সুন্দর। ওফফ তার চোখ গুলো কি সুন্দর,মায়াবী। তার শরীরে টাচ লাগতেই যেনো কারেন্ট লাগলো।আর তার লিপস গুলো লাইক আ স্টবে…..
নীড়ঃ যাস্ট শাট আপ ??।।[৷কথা গুলো শুনে নীড় তেলেবেগুনে জ্বলে উঠলো ]
ইমানঃ হোয়াট হেপেন???
নীড়ঃ নেশার থেকে দুরে থাকবি তুই।।।না হলে তার পরিনতি খুব খারাপ হবে।।
নিহাঃ রিয়েলি। তুমি সাম হাও ওকে লাইক করতে শুরু করোনি তো??
নীড়ঃ আমি যাস্ট বললাম।ওর থেকে দুরে থাকতে। না হলে কি করবো তা আমি নিজেও জানি নাহ[বলেই নীড় চলে গেল]
তো এতটুকুই ছিলো আমাদের নীড় আর নেশার ২ মাস আগের লাভ স্টোরি।।
❤❤❤❤বর্তমানে ❤❤❤❤
নেশা কফি হাউসে বসে আছে। হঠাৎ নিসু সেখানে আসলো।সাথে রাফিও।তাদের দেখে নেশা চলে যেতে নিলো।ওইদিনের পর থেকে নেশা নিসুর সাথে কথা বলেনি।।
নিসুঃ নেশা প্লিজ দাড়া।।কিছু কথা বলবো।
নেশাঃ আমার কোন কথা নেই।
নিসুঃ প্লিজ যাস্ট একটু।।অনলি ৫ মিনিট।
নেশা বসলো।
নেশাঃ হুম বল।
নিসুঃ আসলে নেশা ওইদিন ওইসব কিছুই আমি জানতাম নাহ।আসলে আমি…
নেশাঃ নিসু প্লিজ আমি ওইদিন সম্পর্কে কিছু জানতে চাই নাহ।
নিসুঃ তুই প্লিজ আগে শোন।।আসলে আমি আর রাফি দুইজন দুইজনকে ভালোবাসি। তাই আমি ওর সাথে সব কিছু শেয়ার করেছিলাম কিন্তু আমি জানতাম নাহ যে ও এইসব নীড় কে বলে।
রাফিঃ আসলে আমি ভেবেছিলাম ও তোমায় ভালোবাসে।আর তাই এইসব ওকে জানাতাম।
নেশাঃ আচ্ছা তার পর
নিসুঃ দেখ নেশা আমাদেত সত্যিই দোষ ছিলো নাহ।প্লিজ মাফ করে দে।
নেশাঃ তোরা কোন দোষ করেছিস আমি কি বলেছি। তাহলে মাফ কেন চাইছিস।
নিসুঃ ???নেশা প্লিজ আই এম সরি।
নেশাঃ নট নিড।আমি এমনিতেই তোকে মাফ করে দিয়েছি।।ইনফেক্ট আমি কারো উপরই রাগ করি নি।
নিসুঃ thank you nesha
নেশাঃ ইটস ও….
হঠাৎ ইমান এসে চেয়ার টেনে বসে পরলো।
ইমানঃ এইযে মিস।কি কথা ছিলো হুম।
নেশাঃ ওহহ সরি আমি একদম ভুলে গেছি।
নিসুঃ কি নিয়ে কথা বলছিস তোরা
ইমানঃ তুমি জানো নাহ।তোমার ফ্রেন্ড সামনের নবীন বরণ অনুষ্ঠানে আমার সাথে নাচ করবে।।
নিসুঃ কিহহহ??।নেশা তুই!!!
নেশাঃ আরে ইমান এতো জোর করলো যে নাহ করতে পারলাম নাহ।
ইমানঃ নেশা রিহার্সাল শুরু হয়ে গেছে চলো যাই।
নেশাঃ হুম চলুন।নিসু টাটা পরে কথা হবে।
।
।
এইদিকে
রাফিঃ নীড় একটা খবর আছে।
নীড়ঃ হোয়াট??
রাফিঃ আমি শুনলাম নবীণ বরনের দিন নেশা ইমানের সাথে নাচবে।
নীড়ঃ কিহহহ ???আর ইউ মেড(চিৎকার করে)
রাফিঃ ননাহ মানে যা সত্যি তাই তো বললাম।।বিশ্বাস নাহ হলে তুই হলরুমে গিয়ে দেখ।ওরা ডান্স প্রেকটিস করছে?
নীড় তাড়াতাড়ি করে হলরুমে গেলো।আর গিয়ে যা দেখলো তা দেখে নীড়ের মাথা নষ্ট হয়ে গেলো। কেননা নেশা আর ইমান খুব ক্লোজ হয়ে নাচছে।আর সবাই দেখছে তাদের নাচ।।নীড় ও সবার সাথে গিয়ে বসলো।রাগে হাতের বোতলটাকে খুব জোরে চেপে ধরেছে।
সায়ানঃ বেচারা মরে যাবে তো।
নীড়ঃ মানে?
সায়ানঃ যেইভাবে বোতল টাকে ধরেছিস এইখানে মানুষ থাকলে তো মরে যেত।ওইটাই বললাম।
হঠাৎ নীড় দেখলো ইমান নেশার কোমড়ে হাত দিয়ে নাচছে।নীড় আর নিজেকে কনট্রোল করতে পারলো নাহ।সবার সামনে নেশাকে টেনে ফাকারুমে নিয়ে গেল।
ইমানঃ হোয়াট দা…
সায়ানঃ হাই ইমান?
ইমানঃ নীড় ওকে নিয়ে কোথায় গেলো।
সায়ানঃ ডোন্ট নো।বলেই সায়ান পালালো।
।
এইদিকে-
নীড় নেশাকে দেয়ালের সাথে চেপে ধরলো।
নীড়ঃ বলেছিলাম নাহ ইমানের থেকে দুরে থাকতে[দাতে দাত চেপে]
নেশা ছুটার জন্য মুচরামুচরি করছে।
নেশাঃ হি ইস মাই ডান্স পার্টনার। আর আমি যার সাথেই থাকি তাতে আপনার কি প্রবলেম।আপনার নিহার কাছে যান নাহ।
নীড়ঃ যা বলেছি চুপচাপ তা করো।গিয়ে ইমান কে বলো তুমি নাচ করবে নাহ
নেশাঃ আমি নাচবো
নীড়ঃ তুমি নাচবে নাহ
নেশাঃ আমি বলেছি আমি নাচবো।মানে নাচবো।আপনি কি করবেন করে নিন।
নীড়ঃ তাই নাকি।।।ওকে তাহলে তাই হোক।।আমি ও দেখি তুমি কিভাবে নাচো।(বাকা হেসে)
নীড় চলে গেল।নেশাও চুপচাপ কাউকে নাহ বলে বাড়ি ফিরে গেলো।এইদিকে ইমান ও নেশাকে নাহ পেয়ে বাড়িতে যাওয়ার জন্য বাইকে উঠলো। যেতে নিলো হঠাৎ কোথা থেকে একটা গাড়ি এসে ইমানের বাইকে খুব জোরে ধাক্কা দিলো।আর ইমান ছিটকে পড়লো।গাড়িটা দাড়িয়ে নাহ থেকে চলে গেলো।
।।
।।
পরেরদিন–
ইমান কে হসপিটালে ভর্তি করা হয়েছে শুনে নেশা ছুটে এলো দেখার জন্য।
নেশাঃ ইমান আপনার এই অবস্থা কিভাবে হলো??
ইমানঃ জানি নাহ নেশা।পিছন থেকে একটা গাড়ি এসে ধাক্কা মেরে দিলো।আই এম সরি আমি তোমার সাথে নাচতে পারলাম নাহ?
নেশাঃ আরে ওইসব বেপার না।আগে আপনি সুস্থ হোন।ওইটা বেশি জরুরি।
হটাৎ নীড়ও এন্ট্রি মারলো সেখানে।হাতে ফুলের তোড়া।মুখে বাকা হাসি।
নীড়ঃ এখন কেমন আছিস ইমান।
ইমানঃ আগের থেকে ভালো।
নীড়ঃ ইসস কি অবস্থা হয়েছে তোর।কে এই কাজটা করলো।ভাবতেই আমার খারাপ লাগছে??
ইমানঃ ?
নীড়ঃ নেশা তোমাদের ডান্সের কি হবে। ইস কি সুন্দর কাপলই নাহ ছিলা তোমরা। কে এইভাবে ইমানের এক্সিডেন্টটা করালো।যদি তার কথা শুনতো হয়তো সে এমন করতো নাহ।
নেশাঃ মানে?
নীড়ঃ নাহ কিছু নাহ।।এমনি বললাম।আচ্ছা টাটা।আমার আবার আজ নিহার সাথে একটু ঘুরতে যেতে হবে।বলেই নীড় চলে গেল।
নেশাঃ ইমান আমি ও এখন আসি।পরে আবার আসবো।
ইমানঃ ওকে।।
নেশাঃ ওয়েট নীড়।
নীড়ঃ কি হলো তুমি এখানে। ইমানের কাছে যাও
।ও একা আছে রুমে।
নেশাঃ আপনিই ওর এই এক্সিডেন্টটা করিয়েছেন তাই নাহ।
নীড়ঃ আরে নাহ আমি কেনো এক্সিডেন্ট করাবো।[নেশার কাছে মুখ নিয়ে]বরং আমি নিজে করেছি?
নেশাঃ হোয়াট। আর ইউ মেড।যদি ওর কিছু হয়ে যেত।আর আপনি এমন কেন করলেন??
নীড়ঃ যাতে তোমার সাথে নাচতে নাহ পারে।
নেশাঃ যাস্ট এই একটা সিম্পল ব্যাপারের জন্য আপনি এই কাজটা করলেন!!!
নীড়ঃ এখন তো শুধু পা আর হাত ভেঙেছি।পরের বার তোমার সাথে দেখলে গলা কেটে ফেলবো। মাইন্ড ইট।
[বলেই সানগ্লাসটা চোখে লাগিয়ে ভাব নিয়ে চলে গেল।আর নেশা তাকিয়ে আছে।নীড়ের কিছুই সে বুঝতে পারছে নাহ। সে নেশাকে ভালোবাসে নাহ তাহলে কেন এমন করছে তা ভেবেই পাচ্ছে নাহ নেশা]
।
।
নবীন বরনের দিন
নীড় সাদা কালারের একটা শার্ট পড়েছে তার উপর ব্লাক কালারের জ্যাকেট।। ব্লাক পেন্ট, ব্লাক ঘড়ি।চুল গুলো স্পাইক করা।এককথায় পার্ফেক্ট। সব মেয়েরা হা করে তাকিয়ে আছে।কিন্তু তাতে নীড়ের কোন ভুক্ষেপ নেই।সেতো তার জান নিহাকে দেখতে বিজি। কারন নিহা আজ শাড়ি পরেছে।খুবই পাতলা।ভিতরের সবই কদেখা যাচ্ছে।
হঠাৎ নেশাও ঢুকলো। আর নেশার দিকে চোখ পড়েই নীড়ের চোখ আটকে গেল।ব্লাক জর্জেট শাড়ি, ব্লাকচুরি,কানে পাথরের দুল,চুল গুলো ছেড়ে একপাশে সাদা গোলাপ লাগিয়েছে।এককথায় অপসরী।
নীড়ঃ উফফ আজ কি নাহ লাগছে।এর থেকে চোখ সরানোই কষ্ট হয়ে যাবে।
নেশা নীড়কে ক্রস করে নিসুর কাছে চলে গেল।দুইজন কিছুক্ষন কথা বলে গিয়ে বসে পরলো।নীড় এখনো নেশার দিকে তাকিয়ে আছে।হঠাৎ দেখলো কলেজের একটা ছেলে নেশার দিকে তাকিয়ে আছে হা করে।নীড় ভালো করে দেখতে গিয়ে খেয়াল করলো ছেলেটা নেশার কোমরের দিকে তাকিয়ে আছে।আর ছেলেটা নেশার কোমড়ে হাত দিতে নিলো।কোথা থেকে নীড় এসে ছেলে টাকে উরাধুরা মাইর লাগানো শুরু করলো।কেউ ভয়ে কিছু বলছে নাহ আর নাহ নীড় কে আটকাচ্ছে।কারন একতো সে বড়লোকের ছেলে।তার উপর কলেজের নেতা।তাই টিচার রাও থামাতে সাহস পাচ্ছে নাহ।নেশা গিয়ে টেনে নীড়কে থামালো।
নেশাঃ পাগল হয়ে গেছেন আপনি।এইরকম কেউ করে।
নীড় চোখ তুলে নেশার দিকে তাকালো।নীড়ের চোখ গুলো মারাত্নক পরিমানে লাল হয়ে আছে।যা দেখে নেশা ভয়ে ঢোক গিললো।
নেশাঃ দেখুন আপনি যা…
আর কিছু বলতে পারলো নাহ।নীড় নেশাকে টেনে আবার ক্লাসরুমে নিয়ে গেল।
নেশাঃ আরে এইটা কোন অভদ্রতা। সব সময় টেনে খালি ক্লাসে নিয়ে আসেন।
নীড় কিছু নাহ বলে নেশার শাফির আচলে টান দিয়ে পুরো শাড়ি নিজের হাতে নিয়ে নিলো।আর পটপট করে পুরো শাড়িটা ছিড়ে ফেললো।
নীড়ঃ মানুষকে শরীর দেখানোর হলে শাড়ি পড়ার দরকার কি ছিলো।এমনিতেই চলে আসতি।আর যেন এইভাবে শাড়ি পড়তে নাহ দেখি।(বলেই নেশার দিকে ঘুরলো।দেখলো নেশা উল্টো দিকে ঘুরে দাঁড়িয়ে আছে।নীড়ের ব্যাপারটা বুঝতে টাইম লাগলো।বুঝতে পেরেই)
নীড়ঃ শিট।[বলেই নিজের জ্যাকেট টা নেশাকে পড়িয়ে দিলো। ]
নীড়ঃ নেশা আমি আসলে….বলতে বলতে নেশা দৌড়ে চলে গেল।নীড় ও পিছন পিছন গেল।কিন্তু নেশা চলে গেছে।।।
।
।
চলবে?
(সবাই বলছো আগের বারের মতো ভিলেন নেশাকে চাই।কিন্তু আমি তো গল্পটা অন্যভাবে সাজাতে চেয়েছিলাম ?)