হ্যাকারের_লুকোচুরি পর্ব-১৪
লেখা- sharix dhrubo
সন্ধ্যার অন্ধকারে গা ঢাকা দিয়ে রাফি সোজা চলে যায় তার বাবার বন্ধুর বাড়ি। সেই দুপুর বেলা শেষবারের মত দেখেছে রাফি তার বাবা মা আর তোহা কে। কেন যেন একটু বেশীই টেনশন হচ্ছিলো আজ সবার প্রতি। কিন্তু কারনটা কি তার জীবনের ঝুকি নাকি নববিবাহিত স্ত্রীর প্রতি জন্মানো মায়া সেটা ধরা গেলো না।
বাড়ি পৌছে দরজায় কড়া নাড়লো রাফি। ভেতর থেকে আওয়াজ এলো না কোন। রাফি বুঝলো যে ভেতরের মানুষগুলো নিশ্চিত হতে চায় যে সাড়া দেয়া নিরাপদ হবে কি না।
রাফি – (হালকা আওয়াজে) বাবা, আমি রাফি।
বলার সাথে সাথে খট করে দরজা খুলে গেলো আর অন্ধকারের ভেতর থেকে দুটি হাত রাফিকে জড়িয়ে ধরলো। রাফি কিছুটা ভ্যাবাচ্যাকা খেলেও ওই অবস্থায় টানতে টানতে ঘরে ঢুকলো। ঘরে এতক্ষণ কোন আলো জ্বলছিলো না। রাফি হাতড়ে ঘরের আলো জ্বালানোর সুইচ খুঁজতে লাগলো কিন্তু মানুষটা এমনভাবে জড়িয়ে ধরে আছে যে রাফির নড়াচড়া করতে কষ্ট হচ্ছে। রাফি জানে যে কে এমনভাবে জড়িয়ে ধরে রাখতে পারে। লাইট জ্বালাতে জ্বালাতে রাফি বলে ওঠে,
রাফি – (মৃদুস্বরে) দম আটকে যাচ্ছে…
কথাটি বলার পরপরই হুট করে হাতদুটির বন্ধন মুক্ত হয়ে যায়। কাঁদো কাঁদো স্বরে কথা বলতে থাকে।
তোহা – কোথায় ছিলে এতক্ষণ! জানো আমার কি টেনশন হচ্ছিলো? বাবা মা দুইজনেই প্রেশার হাই হয়ে গেছে। ঔষধও রয়ে গেছে সব ব্যাগের ভেতর। এমনভাবে উধাও হয়ে যেতে হয়! ফোন ও নেই যে খোজ নেবো একবারের জন্য। কোথায় ছিলো?
রাফি অবাক হয়ে মেয়েটার করা অভিযোগগুলো শুনতে থাকে। এইতো গতকালকের আগে তো রাফির মনের কোথাও এই মেয়েটির নাম নিশানাও ছিলো না কিন্তু এখন এমনভাবে অভিযোগ করছে যেন জনম জনম ধরে চেনাজানা।
রাফি -একসাথে এতগুলো প্রশ্ন? কোনটা রেখে কোনটার জবাব দেই বলো।
তোহা – হুহ, যাও জবাব দিতে হবে না । বাবা মা তোমার অপেক্ষায় রয়েছেন, যাও গিয়ে দেখা করে এসো।
তোহা তখন ভেতরের একটা কামরা দেখিয়ে দিলো রাফিকে। রাফি কামরার সামনে গিয়ে দরজায় নক করে ভেতরে উকি দিলো।
বাবা – কে? রাফি? এসেছিস বাবা? তোর জন্যই চিন্তা হচ্ছিল খুব। সেই কখন বেরিয়েছিস, কোথায় ছিলি কি করতেছিলি কিছুই জানতে পারছিলাম না।
রাফি – এইতো বাবা আমি চলে এসেছি।
মা – আয় বাবা আমার বুকে আয়।
বলে রাফিকে বুকে জড়িয়ে নিলো রাফির মা। পেছন থেকে তোহা এসে দাড়ায় দরজার কাছে।
মা – এতদিন জানতাম সরকারী চাকরী নিশ্চিন্তের চাকরী। তোকে না দেখলে হয়তো জানতেই পারতাম না যে সৎ ভাবে দায়িত্ব পালন করতে গেলে এমন জীবনের ঝুকি নিতে হয়।
রাফি – জীবনের ঝুকি বড় কথা নয় মা। সত্যের সাথে থাকার জন্য সর্বোচ্চ করতে পারাটাই বড় কিছু।
মা – বাহ, বিয়ের পর দেখি ছেলে আমার বড় হয়ে গেছে।
বলে হালকা করে ছেলের নাকটা মলে দিলেন রাফির মা। দরজার আড়ালে দাড়িয়েই লজ্জা পেলো তোহা।
মা – কই আমার লক্ষীমন্ত মেয়েটা কোথায়?
তোহা দরজার আড়াল থেকে বেরিয়ে এসে মায়ের সামনে দাঁড়ায় ।
মা – এইযে আমার মেয়েটা। শোন তুমি আবার এসব ভেবে বসে থেকো না যে বিয়েটা হলো আর অমনি সংসারে অমঙ্গল এলো। সবই আল্লাহর ইচ্ছা। তিনি চেয়েছেন আমার সংসারকে পরিক্ষায় ফেলতে তাই এমন হয়েছে। ইনশাআল্লাহ আল্লাহই আবার সব বালা মুসিবত দূর করে দেবেন।
তোহা কখনো ভাবতেও পারে নি যে সে এই সংসারে এত দ্রুত মা বাবার মনে জায়গা করে নিতে পারবে আর এমন ঘটনা ঘটলে যে সচরাচর নতুন বৌকে অপয়া বলে গালি দেয়া হয় তা নতুন কিছু না। এমন আরো কত শত ভাবনা ভাবতে ভাবতে মা কে জড়িয়ে ধরলো তোহা, আর চোখের কোন থেকে হয়তো ২ অথবা সাড়ে ৩ ফোটা জল গড়িয়ে পরে তোহার গাল বেয়ে।
তোহা – সত্যিই আমি ভাগ্যবতী এমন একটা পরিবার পেয়ে। আল্লাহর কাছে লাখ লাখ শুকরিয়া।
রাফি – বাহ, তোমরা ওকে পেয়ে আমাকে ভূলে গেলে তাই তো?
এবার রাফির মা বাবা দুইজনে একসাথে জড়িয়ে ধরে রাফি আর তোহা।
তোহা – আমি যাই, গিয়ে খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা করি গিয়ে।
বলে উঠতে যাবে তখনই কলিংবেলের আওয়াজ। সবাই একসাথে আৎকে উঠলো। এই বাসায় এতো রাতে কে আসবে!
রাফি উঠে রুম থেকে বের হয়ে মেইন দরজার কাছে গেলো। নিশব্দে ডোরনব দিয়ে উকি মেরে দেখলো কে? পোষাক দেখে মনে হলো কোন এক ডেলিভারি বয় দরজায় দাড়িয়ে। রাফি চিন্তায় পড়ে গেলো, এই বাড়িতে ডেলিভারি বয়! রাফি ধীর পায়ে রুমে যেতে চাইলো এটা জানতে যে বাসার কেউ কোন খাবার অর্ডার করেছে কি না। তখনই একটা মেসেজ পেল রাফি। ঠিক এই মুহুর্তে মেসেজের আওয়াজ শুনে রাফির কিছুটা খটকা লাগলেও মেসেজটা দেখার পর সব ক্লিয়ার হয়ে গেলো।
আননোন সোর্স থেকে মেসেজ এসেছে আর মেসেজে লেখা
“Dinner for your family.
Get your laptop ASAP.
We have works to do.”
মেসেজটা পড়ে রাফির কিছুটা রাগ হলো, বিকালেই তো মেসেজ দিয়ে বললো যে আমার ফোন দিয়ে কেউ আমার লোকেশন ট্রেস করতে পারবে না! আর সে নিজেই আমার ফোনের ট্রেস করে বসে আছে। মাফিয়া গার্ল নিজে কি “No one” এর বাইরে! ভাবনাচিন্তা করতে করতে দরজা খুললো রাফি। ডেলিভারি বয়ের কাছ থেকে খাবারগুলো নিলো রাফি। খাবার গুলো দেখে বাসার সবাই অবাক হয়ে গেলো, তাই রাফি ব্যপারটা স্বাভাবিক করার জন্য বললো
রাফি – আমিই খাবার ওর্ডার দিয়েছিলাম। এভাবে অবাক হবার কি আছে!
তোহা – (কৌতুহল নিয়ে) তুমি কিভাবে অর্ডার করলে? তোমার ফোন তো……
রাফি – (ইতস্তত করতে করতে) না মানে আমার ফোন সিকিউর করে নিয়েছি। ফোনে ফোনেই অর্ডার দিয়ে দিয়েছিলাম।
তোহা – কিন্তু …….
রাফি – (প্রসংগ এড়াতে) কোন কিন্তু নয়। প্রচন্ড খিদে পেয়েছে। খেতে হবে।
বলে সবাইকে নিয়ে খেতে বসলো রাফি। খাবারের ম্যানুটাও একদম বাছাই করা। বাবা মা দুইজনেই হাই প্রেশার আর সাথে সুগার প্রবলেম। খাবারের আইটেমগুলোতেও কোন স্বাস্থ্যঝুকি নেই। এই মাফিয়া গার্ল এর ভাবটাই বুঝতে পারে না রাফি। সবাই খাওয়া শুরু করলেও তোহার দিকে চোখ গেলো রাফির। খাবারের ম্যানুতে তেমন চটকদার আইটেম না থাকায় তোহার মুখটা কিছুটা শুকিয়ে গেলো, কিন্তু বাবা মা এর চোখে পড়লে ব্যাপারটা খারাপ হবে বুঝে চুপচাপ খেয়ে নিচ্ছে তোহা। তোহার মুখটা দেখে মায়া হতে লাগলো রাফির। খাওয়াদাওয়া শেষ করে রাফি আবার তৈরী হলো বের হওয়ার জন্য, ল্যাপটপটা উদ্ধার করতেই হবে। এখনো অনেক কিছু করা বাকী। সবাই নিষেধ করা স্বত্বেও রাফিকে বের হয়ে গেল।
ঘড়িতে রাত ৯.৩৫। অন্ধকারে গা ঢাকা দিয়ে নিজেদের বাড়িতে আসে রাফি। জীবনে এই প্রথমবারের মত নিজের এলাকা চুরি করে ঢুকতে হচ্ছে রাফিকে। অচেনা শত্রুকে এড়াতে এছাড়া আর কোন উপায় নেই। ঘরে এখনো বেশ কিছু আত্বীয় স্বজন রয়েছে। হয়তো বাবা দুই একজন আত্বীয়কে সবকিছু ম্যানেজ করতে বলেছেন। ঘর থেকে বের হওয়ার আগে রাফি সব গোছানো ব্যাগপত্র একটা রুমে রেখে এসেছিলো। কিন্তু রাত নেমে এলেও বাড়িতে বিয়ের আলোকসজ্জা সাথে বাইরে রাস্তার চকচকে ল্যাম্পপোষ্টের আলোতে একটা পিপড়া হেটে গেলেও দেখা যাবে। আর অত ব্যাগপত্র নিয়ে বের হওয়াও যাবে না। তবে রাফিকে যেভাবেই হোক তার ল্যাপটপটা বের করে আনতেই হবে। রাফি কি করবে বুঝে উঠতে পারে না। ভাবতে ভাবতে রাফির চোখ পড়লো বিদ্যুতের খুটির সাথে থাকা ট্রান্সমিটারের দিকে। টপ করে একটা বুদ্ধির উদয় হয়। যথেষ্ট রিস্ক এবং ভয়াবহ দূর্ঘটনা হবার সম্ভাবনা থাকা স্বত্বেও এ ছাড়া আর কোন গতি দেখলো না রাফি। কিছুটা দূরে ভাঙ্গারীর দোকানের পাশে খোলা তামার তার পেয়ে গেল রাফি। তাঁরের মাথায় একটা ইটের টুকরো বেধে ছুড়ে মারলো ট্রান্সমিটারের দিকে। তামার তাঁরটি ট্রান্সমিটারের খোলা অংশে স্পর্শ করার সাথে সাথে বিকট আওয়াজ এবং আলোকছটায় পুরো এলাকা অন্ধকার হয়ে গেলো। আসেপাশের লোকজন জড় হয়ে গেলো ট্রান্সমিটারের আশেপাশে আর সেই সুযোগে রাফি সন্তর্পনে ও দ্রুততার সাথে ঘরে ঢুকে গেল। ঘরের ভেতর গিয়ে রুম থেকে ল্যাপটপের ব্যাগ কাধে তুলে নিলো রাফি। কিছুক্ষন পরিবেশ পর্যবেক্ষণ করলো রাফি। বিদ্যুৎ না থাকলে ঘরে যথেষ্ট গরম লাগে তাই বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার সাথে সাথে সবাই ছাদ, বারান্দা অথবা রাস্তায় চলে গেছে। রাফি বুঝলো চাইলে সে ব্যাগগুলোও বের করে নিতে পারবে। রাফি জানালা দিয়ে উঁকি দিলো। রাস্তার ওপাসে একটা ডাস্টবিন চোখে পড়লো রাফির। আবারো প্লান এটে ফেললো রাফি। ব্যাগগুলো মেইন গেটের কাছাকাছি রেখে ডাস্টবিনের পাশে দাড়ালো রাফি। রাস্তায় বেশ লোকজন তাই ব্যাগগুলো নিয়ে বের হলে গায়ে গায়ে ধাক্কা লাগবে। আগেই বাসার রান্নাঘর থেকে কেরোসিনের বোতলটা নিয়ে বের হয়েছিলো রাফি। পুরা বোতল কেরোসিন ডাষ্টবিনে ঢেলে আগুন লাগিয়ে দিলো রাফি। সাথে সাথে দাউদাউ করে আগুন জ্বলে উঠলো। অমনি বাচ্চা কাচ্চা কোথা থেকে দৌড়ে আগুনের কাছে ছুটে চলে এলো আর ডাষ্টবিনের চারপাশে ভীড় করে লাফালাফি শুরু করে দিলো আর বয়স্করা তাদের আটকাতে ব্যস্ত হয়ে গেলো। আর রাফি ও সুযোগ পেয়ে গেলো তার সামানপত্র নিয়ে কেটে পড়ার।
যাওয়ার পথে হঠাৎ তোহার মুখটা ভেসে উঠলো, নিরস খাবার খেতে গিয়ে কি চাপা কষ্টেই না ভুগতে হয়েছে মেয়েটাকে। রাফি এইসব ভাবতে ভাবতে একটা ফাষ্টফুড শপে চলে যায়। একটা ডাবলচীজ বার্গার অর্ডার করে অপেক্ষা করতে লাগলো রাফি। অপেক্ষার মাঝেই একটা মেসেজ এলো রাফির ফোনে, আননোন সোর্স থেকে আসা মেসেজ।
“She order more then 300 ps pizza and 200 ps chicken fry online a year.”
রাফি থ হয়ে যায়। এই আননোন সোর্স না শুধু রাফির উপর চোখ রাখছে, রাফির আশেপাশের মানুষগুলোরও খোজ রাখছে সন্তর্পণে। অর্ডার ক্যান্সেল করে একটা মিডিয়াম সাইজ পিৎজা ও এক বাকেট চিকেন ফ্রাই অর্ডার করলো রাফি। অর্ডারটা নিয়ে সোজা বাসায় গিয়ে হাজির হলো।
দরজা খুললো তোহা নিজেই। ঘাড়ে আর দুই হাতে ঘরে গুছিয়ে রেখে আসা কাপড়ের ব্যাগ দেখে তোহার চোখ কপালে উঠে গেল।
তোহা – (উৎকন্ঠা নিয়ে) তুমি বাড়িতে গিয়েছিলে!!!! (কিছুটা উচ্চস্বরে) আম্মুউউউউ???
বলেই ঘরের ভেতরে দৌড় দিলো তোহা। নাহ, মেয়েটা হয়তো এখনই গিয়ে নালিশ করবে বাবা মায়ের কাছে। রাফিরও এছাড়া অন্য কোন উপায় ছিল না। সবাইকে বুঝাতে একটু বেগ পেতে হলেও অবশেষে পরিস্থিতি বোঝাতে সক্ষম হলো রাফি।
রাফি – দেখো, এখন আমরা যে পরিস্থিতিতে রয়েছি তা এমনি এমনি তৈরী হয় নি। কেউ তার অন্যায় আর দূর্নীতির প্রমানাদী মুছে ফেলতে চাইছে। যদি তারা সফল হয়ে যায় তাহলে আমরা কখনই আর স্বাধীনভাবে বাঁচতে পারবো না, তারা বাঁচতে দেবে না। আমাকে স্যারের করা অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করতেই হবে।
তোহা রাগ করে পাশের রুমে চলে গেল। রাফি চুপচাপ পিৎজা আর চিকেন ফ্রাই নিয়ে সেই রুমে চলে গেল। তোহা গাল ফুলিয়ে বসে আছে বিছানার এক কোনায়। রাফি পিৎজা আর চিকেন ফ্রাই বাকেটটি তোহার সামনে এগিয়ে দিলো। তোহা গাল ভার নিয়ে খাবারগুলো দেখলো। চোখেমুখে আনন্দের ছাপ থাকলেও রাফির কাজের জন্য গাল ফুলিয়েই থাকলো।
রাফি – (ফিসফিস করে) সারাজীবন কি এই চার দেয়ালের ভেতর কাটাবেন নাকি হানিমুন করারও শখ আছে?
তোহা – যদি তোমার কিছু হয়ে যেত তো কি হতো? কার সাথে হানিমুনে যেতাম?
রাফি – ফিরে এসেছি তো? একদম অক্ষত অবস্থায় ফেরত এসেছি। এখনো অভিযোগ! নাও নাও তোমার ফেবারিট পিৎজা আর চিকেন ফ্রাই এনেছি।
তোহা অনেকক্ষণ নিজেকে সামলে রেখেছে কিন্তু আর সম্ভব না। পিৎজার প্যাকেটটা কোলে তুলে নিলো আর চিকেন বাকেটে একহাত গুজে দিলো। বাচ্চা মানুষের মত খেতে থাকলো পিৎজা আর চিকেন ফ্রাই।
তোহা – (কৌতুহল নিয়ে চিবাতে চিবাতে) আচ্ছা পিৎজা আর চিকেন যে আমার ফেবারিট তা তুমি জানলে কিভাবে?
রাফি – লাকি গেস ছিলো। চটজলদি খেয়ে নাও ।
বলে রুমের বারান্দায় চলে গেলো রাফি। এমন সময় টিমমেট সূর্যের ফোন।
সূর্য – রাফি। ব্যাড নিউজ, কিছু দুষ্কৃতিকারী তোমার বাসার সামনে জড় হয়েছে। হয়তো গভীর রাতে তোমার বাসায় হামলা চালাতে পারে। যত দ্রুত সম্ভব তুমি তোমার বাসা থেকে বের হয়ে যাও। চাইলে সেফ হাউজেও আশ্রয় নিতে পারো।
রাফি – ঠিক আছে আমি এখনই বের হয়ে যাচ্ছি, ধন্যবাদ।
বলেই ফোনটা কেটে দিলো রাফি। সূর্যকে আর জানালো না যে সে অনেক আগেই বাসা ত্যাগ করেছে। এমন সময় মেসেজ এলো আননোন সোর্স থেকে,
“Local police are on the way to your house, they just know a robbery is in progress.”
মেসেজটি দেখে রাফির কি করা উচিৎ বুঝলো না। বারান্দা থেকে ঘরে এসে তোহাকে দেখলো না রাফি। প্যাকেটগুলোও নেই। হয়তো রান্নাঘরে প্যাকেটগুলো রাখতে গেছে। তোহার জন্য অপেক্ষা না করে শুয়ে পড়লো রাফি। একদিনের জন্য একটু বেশীই এডভেঞ্চার হয়ে গেছে রাফির জন্য। তোহা ফিরে এসে রাফিকে বিছানায় পেল। গলা উচু করে চেহারার দিকে তাকিয়ে দেখলো ঘুমিয়ে গেছে তার রাজকুমার।
রাফি বাড়িতে গিয়েছে দেখে তোহা অনেক ভয় পেয়ে গিয়েছিলো কিন্তু তোহা জানে যে রাফি ঠিকই একটা পথ বের করে নিতে পারবে। মনে মনে এসব ভাবতে ভাবতেই টুপ করে রাফির গালে একটা ভালবাসার চিহ্ন একে দিলো তোহা। অন্যদিকে আধো ঘুম রাফি তার গালে উষ্ণ স্পর্শ পেয়ে আরো শক্ত হয়ে পড়ে থাকলে। নাহ, বৌ আমার ডেন্জারাস।
সকালে রাফি ফ্রেস হয়ে বের হতেই তোহা রাফির দিকে ফোন এগিয়ে দেয়।
তোহা – দেখো তো কে যেন মেসেজ দিচ্ছে বার বার।
রাফি কোন কথা না বাড়িয়ে ফোনটা হাতে নিলে। চেক করে দেখে আননোন সোর্স।
” turn on the TV. You are in trouble.”
রাফি দ্রুত টিভি অন করে, রাফির তাড়াহুড়ো দেখে তোহা ও রাফির পাশে গিয়ে দাড়ায়। প্রেস কনফারেন্সে অর্থ মন্ত্রনালয় তাদের ইনভেস্টিগেশন রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। তারা নিদৃষ্ট করে কাউকে দোষারোপ না করলেও একটা বিষয় কনফার্ম করেছে যে ইনভেস্টিগেশনের সাথে জড়িত কেউ ইভিডেন্স মিটিয়ে ফেলার চেষ্টা করছে। যাদের একজন ব্রিগেডিয়ার এজাজ মামুন যিনি সড়ক দূর্ঘটনায় মারা গেছেন এবং অন্যজন রাফিউল ইসলাম রাফি যে পলাতক আছে।
খবর শুনে রাফির মাথা খারাপ হবার দশা। তোহা দৌড়ে চলে গেলো মা বাবার রুমে তাদের ডাকতে। আবারো বেজে ওঠে রাফির ফোন। সূর্য ফোন দিয়েছে,
সূর্য – স্যার আপনার নামে স্পেশাল ওয়ারেন্ট ইশ্যু হয়েছে। জীবিত অথবা মৃত। I hope you are in safe place. Good luck, sir.
রাফি কোন কথা বললো না। একটা মেসেজ পেলো রাফি,
আননোন সোর্স থেকে “time to work. Connect your laptop to internet and give me the evidence you’ve collected.”
রাফি কি করবে বুঝতে পারে না, এই মাফিয়া গার্লের ভয়েই সে ল্যাপটপ থেকে সবকিছু সরিয়ে ফেলেছিলো। পোর্টেবল হার্ডড্রাইভও অফিসের লকারে রাখা। এখন বলতে গেলে কোন ইভিডেন্স ই নেই রাফির কাছে। কিন্তু সেটা মাফিয়া গার্লকে জানাবে কিভাবে সে। কোন উপায় না পেয়ে রাফি কিছু না করে চুপচাপ বসে থাকলো। কোন ইভিডেন্স ই নেই রাফির কাছে।
ওহহো।। ডাইরেক্টর স্যারের সেফহাউজের অফলাইন সার্ভারে স্যারের মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সব কেসের আপডেট ইনফো আছে। এখন শুধু সার্ভারটিকে অনলাইন করলেই কেস নিয়ে সাহায্য করতে পারবে মাফিয়া গার্ল। রাফি আর সময় নষ্ট না করে মায়ের কাছে গিয়ে মায়ের বোরখাটি চেয়ে নেয়। রাফিকে আবার তৈরী হতে দেখে তোহা কেদেই ফেলে, সে কোনভাবে রাফিকে বাইরে যেতে দিতে নারাজ।
তোহা – না না না তুমি যেতে পারবে না। সবাইই তোমাকে খুঁজছে। যদি কিছু হয়ে যায়! না না তুমি যেতা পারবে না ।
রাফি – (তোহার মুখটা উচু করে ধরে ) এই তো আর অল্পেক্টু কাজ বাকী। আমার খুবব ভালো একটা বন্ধু আমাকে সাহায্য করার জন্য অপেক্ষা করছে। আমার কাজ শুধুমাত্র তার হাত পর্যন্ত ইভিডেন্স পৌছে দেয়া। এতটুকু যদি না করতে পারি তাহলে নিজেকে নির্দোষ প্রমান করবো কিভাবে?
তোহার ফুপিয়ে কান্না বন্ধ হয় না । রাফি আরো কিছুক্ষন বুঝিয়ে শুনিয়ে মা বাবার কাছ থেকে বিদায় নেয়। রাফিকে আটকাতে না পেরে তোহা নিট রুমে ঢুকে দরজা আটকে দেয়। রাফি তোহার কান্ড দেখে দরজার কাছ থেকে আবার ফেরত আসে। ব্যাগ থেকে একটা আনট্রেসেবল স্যাটফোন দিলো বাবার হাতে।
রাফি – আমি নিরাপদে পৌছে তোমাদের ফোন দিবো। দোয়া করো।
বাবা -নিজেকে নির্দোষ প্রমান করে বাড়ি ফিরিস।
রাফি বোরখা পরে ল্যাপটপের ব্যাগ নিয়ে রওনা হয় সেফ হাউজের দিকে। রাস্তায় তেমন কোন সমস্যা হয় নি রাফির। সেফহাউজে পৌছে পাপোশের নীচ দিয়ে চাবি বের করে ভিতরে ঢুকলো রাফি। তখন ই একটা মেসেজ পেল রাফি, আননোন সোর্স থেকে
“Lock the door from the inside.”
রাফি দরজা লক করে দেয় ভেতর থেকে। ফোন দেয় বাসায়। রাফির বাবা ফোন ধরে।
বাবা -হ্যালো রাফি? বাবা ঠিকঠাক পৌছেছিস তো বাবা? কোন সমস্যা হয় নি তো!
রাফি – না বাবা কোন সমস্যা হয় নি। তোমরা সবাই ঠিক আছো তো?
বাবা – আমি আর তোর মা তো ঠিক আছি কিন্তু তোহা মা মনে হয় একটু বেশীই কষ্ট পেয়েছে। তুইই দেখে গেলি দরজা আটকে ঘরে বসে থাকতে, এখনো সেভাবেই ঘরে বসে আছে দরজা লাগিয়ে। ও সমস্যা হবে না , তুই ঠিকঠাক ফিরে আয়। এমনিতেই ঠিক হয়ে যাবে তখন।
রাফি – আচ্ছা বাবা, রাখছি। দোয়া করো।
বাবা – ফি আমানিল্লাহ।
কথা বলা শেষ করে রাফি সোজা চলে যায় সার্ভার রুমে। নিজের ল্যাপটপটা কানেক্ট করে ইন্টারনেটে। ল্যাপটপের স্ক্রীনে ভেসে আসে,
“Upload the evidence”
রাফি খোঁজাখুজি করে একটা পোর্টেবল হার্ডড্রাইভ পায়। মাফিয়া গার্লকে সরাসরি সার্ভারে কানেক্ট না করে হার্ডড্রাইভের মাধ্যমে ইনফরমেশন দিতে চাইলো রাফি। এমন সময় ফোন এলো রাফির কাছে। নাম্বারটা বড়ই অদ্ভুত, +০০০০০০০০০০
রাফি ফোনটা রিসিভ করে।
কম্পিউটার জেনারেটেড ফিমেল ভয়েস
– Do you have trust issue? If I wanted to kill you or frame you, I could’ve done it long ago.
রাফি – why you are helping me?
– coz you wanted to take a stand against corruption and also wanted to save the country.
রাফি – you are also doing the same but ……
– you can question me later. Lots of works to do. Connect me to the server. Let me have a look.
রাফি কিছুক্ষণ ভাবলো। ভাবনাচিন্তার ফলাফল শুন্য তাই রাফি সময় নষ্ট না করে সার্ভারটিকে অনলাইনে নিলো। মাফিয়া গার্ল টোটাল সার্ভার স্ক্যান করে কপি করে নিলো।
– you can make those server offline now. I have everything I need.
রাফি – আপনি আপাতত ভাষা বদল করেন , ইংরেজিতে কথা বলতে ভালো লাগছে না।
– ওকে, রাফি তুমি ট্রাফিক সার্ভেইল্যান্স ক্যামেরার একসেস করো। ডাইরেক্টর স্যারকে যে হত্যা করা হয়েছে তার প্রমাণ হয়তো এখান থেকে পাওয়া যেতে পারে। স্যারের মৃত্যু যেখানে হয়েছে সেটা অনেক বিজি রাস্তা। সার্ভেইল্যান্স থাকবেই। আমি এদিকে ইভিডেন্সগুলো ম্যাচিং করতে থাকি।
রাফি ল্যাপটপ নিয়ে বসে গেল ট্রাফিক সার্ভেইল্যান্স হ্যাক করতে, চাইলে NSA র একসেস কোড ব্যবহার করে লগইন করতে পারতো কিন্তু তাতে কেউ না কেউ নোটিস করে রাফিকে ব্লক করে দিতে পারে। সরকারি সার্ভারগুলোর ফ্যায়ারওয়াল সিস্টেম কমবেশি একইরকম হওয়ায় রাফিকে খুব বেশী বেগ পেতে হয় নি ট্রাফিক সার্ভেইল্যান্স একসেস পেতে।
ডাইরেক্টর স্যারের এক্সিডেন্ট স্পট এবং তার আসপাসের সার্ভেইল্যান্স ফুটেজ দেখতে শুরু করলো রাফি। খুটিয়ে খুটিয়ে দেখতে থাকলো প্রতিটা সার্ভেইল্যান্স ফুটেজ। ভালোভাবে খুটিয়ে দেখার পরও কোন সার্ভেইল্যান্স ফুটেজ পেলো না রাফি। হয় এক্সিডেন্ট টা কোন একটা ব্লাইন্ড স্পটে হয়েছে অথবা যে ক্যামেরাতে ধরা পরেছে ঘটনাটি সেই পুরা ক্যামেরা ফুটেজটাই উধাও করে দেয়া হয়েছে।
রাফি দেখলো মাফিয়া গার্ল তখনো ফোনে লাইনে আছে।
রাফি – ট্রাফিক সার্ভেইল্যান্স সম্পূর্ণ ব্লাইন্ড। কোন ক্যামেরায় কোন এক্সিডেন্ট ফুটেজ ধরা পড়ে নি।
– that’s almost impossible. কেউ না কেউ কোন না কোন কারসাজি করেছে। Doesn’t matter. তুমি আমাকে এক্সিডেন্ট পয়েন্টের ৩৬০° র ভেতর যত প্রতিষ্ঠান , বাড়ি, দোকান আছে সব কিছুর লিষ্ট দাও।
রাফি – একটু অপেক্ষা করুন।
বলে রাফি এক্সিডেন্টের লোকেশনের চারপাশে যেসব প্রতিষ্ঠান দোকানপাট বা বাড়িঘর আছে তার লিষ্ট বের করলো।
– পেয়েছি। পুলিশ ইনভেষ্টিগেশন রিপোর্ট ও লাগবে।
রাফি মাফিয়া গার্লকে কানেক্ট রেখেই সূর্যকে ফোন দিলো।
সূর্য – স্যার আপনি এখনো আপনার ফোন ইউজ করতেছেন!
রাফি – সমস্যা নেই আমার ফোন ট্যাপ অথবা ট্রেস করা যাবে না, একটা ডকুমেন্টস লাগবে।
সূর্য – বলে ফেলুন।
রাফি – স্যারের এক্সিডেন্টের পুলিশ ইনভেস্টিগেশন রিপোর্ট লাগবে।
সূর্য – পাঠাবো কোথায়! আপনার ইমেইলে?
রাফি হ্যাঁ না কিছু বলতে যাবে তার আগেই মাফিয়া গার্ল খুবই কিম্ভূতকিমাকার মেইল আইডি স্ক্রীনে টাইপ করে দিলো।
#৳%&*@-*—-.com
রাফিও ভেঙ্গেচুরে মেইল আইডিটা দিলো সূর্যকে
সূর্য – Are you sure sir! কারন জীবনে এমন অদ্ভুত মেইল আইডি দেখি নি।
রাফি – চটজলদি পাঠিয়ে দাও রিপোটটি।
সূর্য – আরকিছু লাগবে স্যার।
রাফি – টিভিতে শুনলাম আমাকে পলাতক ঘোষনা করা হয়েছে। কিন্তু আমি তো প্রাতিষ্ঠানিকভাবেই ছুটিতে রয়েছি। এটা কিভাবে হলো একটু খোঁজ নাও।
সূর্য – হয়ে যাবে স্যার। Good luck.
রাফি – thank you.
ফোন কাটতে কাটতে রাফির পিসিতে একগাদা সিসিটিভি ফুটেজ পাঠিয়ে দিলো মাফিয়া গার্ল। সবগুলো ফুটেজ ই গতকাল অর্থাৎ স্যারের এক্সিডেন্টের দিনের। রাফি কিছু জিজ্ঞাসা করার আগে দুই একটা ফুটেজ প্লে করে দেখলো। প্রথম ভিডিওতে টাইম মিলিয়ে চালু করলে স্পষ্ট দেখা যায় স্যার রাস্তার একপাশে গাড়ি রেখে রাস্তা পার হলেন, একটা বাসায় ঢুকলেন, কিছুক্ষন পর’ ফোনে কথা বলতে বলতে বাইরে এলেন। রাস্তা পার হচ্ছেন ঠিক এমন সময় কোথা থেকে একটি জীপ এসে স্যারকে উড়িয়ে দিলো। রাফি টাইম মিলিয়ে অন্যান্য ফুটেজ চালালো যাতে গাড়িটি কোথা থেকে আসলো, কোথা থেকে স্যারের পেছন পেছন ফলো করছিলো এমনকি এক্সিডেন্টের আগে গাড়িটা কোথায় দাড়িয়ে স্যারের জন্য ওয়েট করছিলো তার সব এই ফুটেজগুলোতে উঠে আসছে। রাফির চোখে সত্যিকারের বিষ্ময় তৈরী হয়। মাত্র কয়েকমিনিটের ব্যবধানে মাফিয়ে গার্ল কিভাবে এতসব ম্যানেজ করে নিলো। এতোগুলো সিসিটিভি ফুটেজ কালেক্ট করা তাও আবার ভিন্ন ভিন্ন প্রতিষ্ঠান, দোকানপাটের! কয়েক মাসের কাজ মাত্র কয়েকমিনিটেই! রাফি উৎসাহ ধরে রাখতে পারলো না।
রাফি – wow, amazing. But how?
– I have a very efficient partner. Do you have what we need on those footage?
রাফি – জ্বী পেয়েছি। কিন্তু ভিন্ন ভিন্ন ক্যামেরায় ভিন্ন ভিন্ন এংগেলে।
– leave that to me. Now delete unnecessary footage and I’ll collect the rest.
ওইদিকে মাফিয়া গার্ল ও অবাক করা কিছু ব্রেকথ্রু পেলো।
– ডাইরেক্টর স্যার তো অনেক কাজ সহজ করে দিয়েছেন। এর আগেও অনেক কেস তৈরী হয়েছে এই একই দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কিন্তু কোন অকাট্য প্রমান হাতে আসার আগেই কোন না কোনভাবে কেসগুলোকে মাঝপথেই আটকে দেয়া হয়েছে। তারপরও ডাইরেক্টর স্যার হাল ছাড়েন নি। ইভিডেন্স কালেক্ট করেছেন যতটা সম্ভব। রাফি, we can finish what Mr. Director started. I’m rearranging the evidence.
রাফি- এখন!
– গতকাল রাতে পুলিশ যাবার আগেই দুষ্কৃতকারীরা তোমাদের বাড়িতে ঢুকে পড়ে। আর তোমার কাজিনগুলো তাদের ডাকাত ভেবে তোমার ক্রিকেট সেট থেকে স্ট্যাম্প আর ব্যাট বের করে বেধড়ক পিটিয়েছে। আর পুলিশের কাছে বয়ান দিয়েছে এই ডাকাতদল আসার আগে কে বা কারা চুরি করে ঘরের থেকে ব্যাগপত্রগুলো উঠিয়ে নিয়েছে। তাই তারা আগে থেকেই তৈরী ছিলো।
এই বিপদের মাঝেও এমন খবর পেয়ে রাফির প্রচন্ড হাসি পেলো। রাফির কাজিনগুলো অনেক শক্তপোক্ত জীম করা বডি বিল্ডার। রাফি দৃশ্যগুলো ভাবতে থাকলো আর হাঁসতে থাকলো।
অন্যদিকে মাফিয়া গার্ল বেশকিছু সূত্র আবিষ্কার করলো। এই দূর্নীতিবাজ চক্রটি বিভিন্নভাবে কালো টাকার পাহাড় করেছে আর পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের ব্যাংকে নামে বেনামে সেগুলো জমিয়ে রেখেছে। শুধু তাই ই নয়, বিভিন্নভাবে আইনের ফাঁকফোকর কাজে লাগিয়ে এরা দেশের অনেক ক্ষতি করেছে। মাফিয়া গার্ল একে একে সব ইভিডেন্সগুলো সাজাতে থাকে। দেশের ভেতরে থাকা দেশের শত্রুদের সমূলে উৎপাটন করার পথে এক এক ধাপ করে এগোতে থাকে দুইজন।