Monday, October 6, 2025







হঠাৎ হাওয়া (১৫)

হঠাৎ_হাওয়া (১৫)

মায়া বাকি কথা বলার আগেই ওর বাবা এসে ডেকে বলল,
—আমি তো চলে যাচ্ছি মায়া তুমি কি থাকবে?
—না, আমিও যাবো চলো যাই।
হিমালয় মায়ার হাত মুঠোর মধ্যে নিয়ে ধীরে বলল
—পারলে যাও,
মায়ার আর যাওয়া হলো না হিমালয়ের বন্ধুরা আজ কেউই বাড়ি যাবে না তাই ওরা মায়াকেও যেতে দিল না বড়রা সবাই চলে গেলো,হিমালয় মায়া আর ধ্রুব বাহির পর্যন্ত এলো ওদের আব্বু আম্মুকে এগিয়ে দিতে, মায়ার বাবা গাড়ি রেখে যেতে চাইলে হিমালয় জানালো ওর সাথে বাইক আছে মায়াকে বাইকেই ড্রপ করে দিয়ে আসবে।ধ্রুব ঢোক গিলে বলল
—তুই বাইক বের করছিস কেন?মনে নাই একবার কি হইলো, আন্টি তোরে বাইক আনতে দিল?এই মায়া তুমি ওর সাথে বাইকে উঠবা না
মায়া উৎসুক হয়ে চাইলো,
—আরে বাবার গাড়িতে কিছু কাজ ছিল গ্যারেজে নিছে বাবা আর মা আমার গাড়িতে আসছে,আর তুই তো জানিস সেদিন আমি আবিরের উপর কত্ত রাগ ছিলাম এইজন্যই এত বাজেভাবে এক্সিডেন্ট টা হইছিল
—হ্যা আর তোর ওই এক্সিডেন্ট এর পরই তো আবিরও ড্রাগ নেওয়া ছাড়লো তোরা দুইজন একসাথে সুস্থ হইলি,
—থাক ধ্রুব ওইসব কথা এখন দেখ আমাদের আবির কত্ত হ্যাপি!আমি কোনোদিন ভাবি নাই যে ও এত তাড়াতাড়ি মিষ্টির সাথে স্বাভাবিক হবে,ওহ মায়া তুমি বললে না তো কি করে হলো?
মায়া আর ধ্রুব চোখাচোখি হতেই চোখ ফিরয়ে নিলো, মায়ার হঠাৎ করেই ভয় হতে শুরু করলো,ওর হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসছে,মায়া ধ্রুবর দিকে তাকাতেই হিমালয় ভ্রু কুচকে তাকালো,
—কি হয়েছে মায়া তুমি কি আমাকে কিছু বলবে?
অনেক্ষণ হলো ওদের তিনজনকে দেখতে না পেয়ে নিরব পুষ্প আর দিহানও বাইরের দিকে এসে দেখলো ওরা তিনজন এক জায়গায়,
মায়া ভয়ে ভয়ে ধ্রুবর দিকে তাকিয়ে বলল,
—আসলে,
ধ্রুব ওমনি বাধা দিয়ে বলল,
—আরে যেভাবেই হোক হয়েছে তো এখন এসব বলার সময়? সব গেস্ট চলে গেছে মিষ্টি আর আবির একা হয়ে গেছে চল আমরা ভেতরে যাই অনেক ঠান্ডাও পড়তে শুরু করেছে আর…
হিমালয় ধ্রুব কে থামিয়ে বলল,
—তোরা আমার থেকে কিছু আড়াল করছিস,ধ্রুব আগামী পাচ মিনিট তুই কোনো কথা বলবি না,মায়া তুমি বলো আবির কেন এত তাড়াতাড়ি রাজি হয়ে গেলো?
মায়া হিমালয়ের হাত ধরে বলল,
—প্লিজ মহারাজ আপনি রাগ করবেন না, আমি জানি আবির ভাই একজনকে মনে প্রাণে খুব ভালোবাসতো আর কোনো কারণে সে অতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ খেয়ে মারা গেছেন আর এরপর আবির ভাই পাগলপ্রায় হয়ে যান, তিনি প্রচুর ড্রাগ নেন তার স্বাভাবিক লাইফ স্থির হয়ে যায়,তখন আপনিই আবির ভাই কে সামলান,
মায়া খেয়াল করলো হিমালয়ের চোয়াল শক্ত হয়ে গেছে ওর কপালের রগ স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে তবুও যথেষ্ট শান্ত কণ্ঠে বলল,
—মায়া এসব কথা তো তোমার জানার কথা না তাই না? এগুলো আমাদের বন্ধুদের মধ্যেকার ব্যাপার এসব তুমি কিভাবে জানলে আর এর সাথে আজকের সম্পর্ক টা কোথায়?
ধ্রুব ভয় পেয়ে গেলো ওর মনে হলো এখানে আবিরের থাকা দরকার হিমালয় রেগে যাবে এক্ষুনি, ধ্রুব ছোট করে আবিরকে মেসেজ করলো ইমিডিয়েট বাইরে আসার জন্য।পুষ্প আর নিরবও মুখ চাওয়াচাওয়ি করে এগিয়ে এসেছে,
—মহারাজ আমি জানি এতে হিতের বিপরীত হতে পারতো, আবির ভাই তার কোনো কাছের মানুষের কাছে ঘুমের ওষুধ দেখলে সহ্য করতে পারেন না তিনি রিয়েক্ট করে ফেলেন,সেদিন রাতে আমি মিষ্টি আর আপনার কথা শুনে ফেলেছিলাম আমার মনে হলো মিষ্টি খুবই ডিপ্রেসড,আমি মিষ্টি কে বলেছিলাম যাতে এক পাতা ঘুমের ওষুধ এনে ওর বেডসাইডের টেবিলে রাখে, এতে যদি আবির ভাই ওর প্রতি কিছু ফিল…
হিমালয় মায়ার হাত ছাড়িয়ে ফেললো মায়া আরো কিছু বলার জন্য হিমালয়ের হাত ধরতে গেলে হিমালয় ছিটকে দূরে সরে যায়,এক প্রকার চেচিয়েই বলে
—আর ইউ ম্যাড মায়া! মানে তোমার কি নূন্যতম কোনো কমনসেন্স আছে যে যদি এর উলটো কিছু হতো?যদি স্নিগ্ধার কথা আবিরের মনে পড়ে যেত? তুমি জানো স্নিগ্ধা কে ও পাগলের মত ভালোবাসত! যদি ও আবার আবোল তাবোল কিছু করত! তুমি জানো ওর সেসব দিনগুলো কিভাবে কেটেছে? তুমি জানো না আমি জানি আমি কাছে থেকে ওকে দেখেছি আরেহ! এখনো আবির কাউকে ভালোবাসতে ভয় পায়,ওর বাবা মায়ের কি অবস্থা ছিল তুমি জানো! এখনো আবির তাদের সাথে ঠিক মত কথা বলে না! তুমি সবসময় এরকম করো কেন মায়া! সবই কি ছেলে মানুষি!
মায়া কেদে ফেললো,ও বারবার হিমালয়কে ধরে বোঝাতে চেষ্টা করতে লাগলো কিন্তু হিমালয় কিছুই শুনতে নারাজ, ধ্রুব নিরব পুষ্প সবাই অনেক চেষ্টা করলো ওকে বোঝাবার,আবির সবটা বোঝার চেষ্টা করছিল একটু দূরে দাঁড়িয়ে
—ধ্রুব তুই আমার সামনে থেকে প্লিজ সর আমি কিন্তু কিছু করে ফেলব তুই প্লিজ সর আমি জানি এসব তুই মায়াকে বলেছিস
—ধ্রুবর কোনো দোষ নেই
—ইউ শাট আপ, তোমার কাছে আমি কোনো এক্সপ্লেইনেশন চাই না, যাস্ট গেট লস্ট ফ্রম হেয়ার।তুমি কি ভাবো সব তোমার ইচ্ছে মতো? আমি তোমার সব কথা শুনি মানে কি? তুমি যা ইচ্ছে করবে? আরে এটা আবির আর মিষ্টির মধ্যেকার ব্যাপার একটা সময় ওরা ঠিক সামলে নিত তোমাকে কেউ বলেছে মাথা ঘামাতে?আমি তোমার সাথে কথা বলছিই বা কেন, আমি বুঝলাম না নিরব তুমি কেন এভাবে আমাকে ধরে রেখেছো? এই পুষ্প সর প্লিজ।
দিহান এগিয়ে এসে হিমালয় কে ধরে বলল,
—হিমালয় প্লিজ শান্ত হও আমি জানি হয়তো খারাপ কিছু হতে পারতো কিন্তু কিছু তো হয় নি তাই না?
হিমালয় চুপ করে রইলো ও কারো কথা শুনছে বলে মনে হচ্ছে না, আবির এগিয়ে এসে বলল,
—কি ব্যাপার এত চেচামেচি কিসের,মায়া তুমি কাদছ কেন?
মায়ার কান্নার বেগ বেড়ে গেল ওর এবার ভয় হতে লাগলো, মায়া শব্দ করে কাদতে লাগলেই হিমালয় এবার সশব্দে ধমক দিয়ে উঠলো ও এত জোড়ে ধমক দিলো যে সবাই হচকচিয়ে গেলো মায়া কেপে উঠলো আবির হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে রইলো।মায়া চুপ করে গেলো ও আর দাড়িয়ে থাকতে পারছে না, হিমালয় নিরবের হাত ঝাকুনি দিয়ে ছাড়িয়ে বাইকের দিকে এগিয়ে যেতে লাগলো এবার আবির ভয় পেয়ে গেলো আগের বারের কথা ওর খুব ভালো মনে আছে আবির চেচিয়ে উঠলো
—তুই যদি বাইকে উঠিস আমি সত্যি কথা তোর সাথে আর কোনোদিন কথা বলব না
হিমালয় কারো কথা শুনছে বলে মনে হলো না, ও বাইক স্টার্ট দিতেই বুঝলো কেউ একজন উঠে বসেছে পেছন থেকে কেউ ওকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরেছে, হিমালয় যথেষ্ট শান্ত কণ্ঠে রাগ নিয়ে বলল,
—এমনিতেই অনেক বড় অন্যায় তুমি করে ফেলেছো মায়া প্লিজ এখন নেমে যাও আমি একা থাকতে চাই,আমি তোমাকে অনেক খারাপ কথা বলে ফেলেছি এখানে থাকলে আরো বাজে কথা বলে ফেলব যা তুমি সহ্য করতে পারবে না আর না আমি সহ্য করতে পারব,
আবির আর এগিয়ে গেল না ওরা একটু তফাতেই দাঁড়িয়ে রইলো,মায়া হিমালয়ের কথা শুনলো না ও খুব শক্ত করে হিমালয় কে জড়িয়ে ওর পিঠে মুখ লুকিয়ে অঝোরে কেদে চলেছে
—মায়া নামো,
—আমি আপনার সাথে যাবো
—তোমাকে নিয়ে আমি এই মুহুর্তে বাইক চালাতে পারব না
মায়া আরো শক্ত করে পেছন থেকে মুঠো ভরে হিমালয়ের ব্লেজারের কলার চেপে ধরে কান্নার বেগ বাড়িয়ে বলল,
—আপনি আমাকে বকুন আরো বকুন দরকার হলে আপনি আমাকে মেরে ফেলুন,কিন্তু আপনি এখান থেকে কোথাও যেতে পারবেন না কোথাও না, আমি ভুল করেছি ছেলে মানুষি করেছি সব আমার দোষ আপনি আমাকে শাস্তি দিন কিন্তু আপনাকে আমি ছাড়ব না আমাকে ছাড়িয়ে আপনি কোথাও যেতে পারবেন না। কোত্থাও না।আমি কিন্তু মরে যাবো সত্যি মরে যাবো…
হিমালয়ের হঠাৎ মনে হলো মায়ার হাত আলগা হয়ে আসছে… ও এক হাতে মায়ার হাত ছুটে যাওয়ার আগেই চেপে ধরলো মায়া ওর শরীর হিমালয়ের উপর ছেড়ে দিলো হিমালয় চেচিয়ে আবিরকে ডাকলো এবার সবাই দৌড়ে এলো হিমালয় ধ্রুব কে বলল,
—বাইক টা ধর,ও অজ্ঞান হয়ে গেছে।

হিমালয় আবিরদের বাড়ির একটা ঘরে সোফায় বসে আছে মায়ার দিকে তাকিয়ে আছে, ওর খুবই অনুশোচনা হতে লাগলো বারবার ও মায়াকে কষ্ট দিয়ে ফেলে, কথাগুলো ও মায়াকে বুঝিয়েও বলতে পারতো যেখানে মায়ার বাবা ই কখনো ওকে কিচ্ছুটি বলে না সেখানে হিমালয় কতবার মায়াকে বকে ফেলেছে, অথচ এই মেয়েটা একটু জোরে কথা সহ্য করতে পারে না,হিমালয় ওর পাশের দেয়ালে মুঠো পাকিয়ে জোড়ে আঘাত করলো,পাশে খুলে রাখা ব্লেজারটা ছুড়ে ফেলল,নিজের চুল নিজেই টানতে লাগলো,নিজের ওপরই এবার ওর নিজের রাগ হতে লাগলো।এমন সময় হিমালয় দেখলো মিষ্টি দরজায় নক করছে, হিমালয় মিষ্টির দিকেও তাকাতে পারলো না, মিষ্টি ভেতরে এসে মায়াকে দেখে হিমালয় কে জিজ্ঞেস করলো
—ওর কতক্ষণ নাগাদ জ্ঞান আসতে পারে কিছু জানেন ভাইয়া?
হিমালয় উঠে দাড়িয়ে বলল,
—কিছুক্ষণের মধ্যেই ফিরে আসবে, তুমি চিন্তা করো না আসলে…
—আমার চিন্তা কখনোই আপনার থেকে বেশি না,আমি আমার একটা নরমাল ড্রেস নিয়ে আসছি ওকে চেঞ্জ করিয়ে দেবো এত ভারী ড্রেস পড়ে আছে,
—আমি একটু বেশি রিয়েক্ট করে ফেলেছি মিষ্টি আসলে আমার কাছে আবির যে কি আমি তোমাকে বোঝাতে পারব না
—হয়তো এজন্যই মায়া চেয়েছিলো আপনার বন্ধু আবির ভালো থাকুক
হিমালয় আর কিছু বলতে পারলো না,মিষ্টি বেরিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর আবির আসলো,
—নিরব পুষ্প ওরা সবাই তো চলে যেতে চাচ্ছে কি বলব?
—জানি না।
—আচ্ছা
—আবির…
—হুম বল,
—তুইও কি আমার উপর রেগে আছিস?
—জানিস হিমালয় যখন আমি আমার বেডসাইডের টেবিলে এক পাতা ঘুমের ওষুধ দেখলাম আমার ভেতরে তোলপাড় শুরু হয়ে গেলো কারণ তার কিছুক্ষণ আগেই আমি মিষ্টির সাথে খুবই দুর্ব্যবহার করেছি,মিষ্টি কখনোই আমাকে বলে নি ওকে বিয়ে করতে যা করার আমি করেছি আমি শুধু ওকে কষ্টই দিয়েছি যা ওর কখনোই প্রাপ্য না, আমি ওষুধ গুলো দেখে যখনই মিষ্টি কে জিজ্ঞেস করলাম ওগুলোনকার আর মিষ্টি বলল ওষুধ গুলো ওর আমার কি হলো আমি জানিনা আমি শক্ত করে মিষ্টি কে জড়িয়ে ধরে কেদে ফেললাম অশান্ত হয়ে গেলাম, আমাকে শান্ত করলো মিষ্টি। তখন বুঝলাম ভালোবাসা হুটহাট ই হয়ে যায় কিছু কিছু শূন্যতার মধ্যে দিয়েই ভালোবাসা আসে…
এপর্যন্ত বলেই আবির মায়ার দিকে তাকালো মায়া স্থির চোখে তাকিয়ে আছে দেখে আবির আর কিছু বললো না ও খেয়াল করলো মায়ার চোখ টলটল করছে, মায়া ওর মুখের ওপর কম্বল টেনে নিলো অন্যপাশে মুখ ঘুরিয়ে ফেললো,আবির হেসে ফেললো হিমালয়কে ইশারায় মায়ার দিকে দেখিয়ে ও ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো।হিমালয় ছোট করে একটা নিঃশ্বাস ফেলে মায়ার বিছানায় গিয়ে বসলো,
—এইদিকে ঘোরো মায়া
—আমার এখনো জ্ঞান ফেরে নি
হিমালয় হেসে ফেলল,
ওর মুখের উপর থেকে কম্বল টা সরিয়ে কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে বলল,
—কখন ফিরবে?
মায়া চোখ বন্ধ করে আহ্লাদে কেদে ফেললো নিচের ঠোট কামড়ে কান্না আটকে বলল,
—আমি চাই কোনোদিন যাতে না ফেরে,
হিমালয় বুঝলো অভিমানের পাল্লা অনেক বেশি ভারী হয়ে গেছে, তাতে কি পুরো রাত পরে আছে মহারানীর এই অভিমান মহারাজ ঠিক ভাঙিয়ে নেবে।মায়া হিমালয়ের হাত ছাড়িয়ে উঠে বিছানায় পা ঝুলিয়ে বসে মাথা নিচু করে রইলো হিমালয় মায়ার সামনে মেঝেতে দুই হাটু গেড়ে বসে মায়ার মুখ দুহাতে আজলা ভরে নিয়ে বলল,
—কতবার ভুল করে দেখেছো, দ্যা গ্রেট হিমালয়কে কতবার তোমার সামনে সরি বলতে হয়?এর পর থেকে কাউন্ট করে রাখবে ঠিক আছে?
মায়া কান্নার বেগ বাড়িয়ে দিল তবে শব্দ করল না,এমন সময় মায়ার ফোন বেজে উঠলো,মায়া দেখলো ওর বাবা কল করেছে মায়া রিসিভ করে বেলকনিতে চলে গেলো,বাবা কে কিছু বুঝতে দিল না কথা শেষ করে ও আর রুমে আসলো না হিমালয় ই বারান্দায় গিয়ে দেখলো মায়া ফুপিয়ে ফুপিয়ে কেদে চলেছে,হিমালয়ের নিজের কাছে নিজেকে খুব বেশি ছোট লাগছিলো কতটা কষ্ট ও মায়াকে দিয়ে ফেলেছে কতটা! হিমালয় মায়াকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলো মায়া কিছুক্ষণ চেষ্টা করেও ছাড়িয়ে নিতে পারল না হিমালয় শক্ত করে মায়ার হাত ধরে বলল,
—ছাড়িয়ে চলে যেতে চাও
মায়া আর নড়লো না,শব্দ করে কেদে ফেললো আহ্লাদী কন্ঠে বলল,
—আপনি আবার আমকে বকেছেন,সবার সামনে বকেছেন, আপ্নি জানেন আপনার ধমক শুনে আমার গা কেপে উঠেছিল?আমার কত কষ্ট হচ্ছিল?, আবার আপনি বাইকে উঠে চলে যাচ্ছিলেন আমাকে ফেলে? একবার এক্সিডেন্ট করে তো সবাইকে ভয় ধরিয়ে দিয়েছেন এখন আবার যাচ্ছিলেন আমার কত ভয় লাগছিল আপনি জানেন?আপনার এত রাগ এর আগে আমি কোনোদিন দেখি নি।আপনার ভালোবাসার মত আপনার রাগও ভয়ংকর।
হিমালয়ের ভালোই লাগছিলো মায়ার বাচ্চা বাচ্চা কথা গুলো,মায়ার মুখের সাথে গাল ঘষে আদুরে গলায় বলতে লাগলো
—আমার মহারানী কি খুব রেগে আছে? খুব? তাকে কি সরি বলতে হবে? নাকি সে কষ্ট পেয়েছে অনেকখানি আদর করে দিলে হবে?
মায়ার গা শিরশির করে উঠলো ও আর কোনো কথা বলতে পারলো না, হিমালয় মায়াকে বলল,
—তুমি কিন্তু আমায় যেতে দাও নি মায়া কি এক বাধনে তুমি আমায় বেধে ফেলেছো তুমি নিজেও জানো না কারো কথা না শোনা আমি তোমাকে কিছুতেই উপেক্ষা করতে পারি না এত রাগের মধ্যেও আমি ভাবছিলাম তোমাকে যাতে আমি কষ্ট না দিয়ে ফেলি তাই সেখান থেকে চলে যাচ্ছিলাম বিশ্বাস কর তখন চলে গেলে আমার ঠিক কিছু একটা হয়ে যেত কিন্তু তোমাকে অগ্রাহ্য করার ক্ষমতা হয়তো সৃষ্টিকর্তা আমাকে দেননি।

হিমালয় মায়ার ঘাড়ে একটা চুমু খেতেই মায়া কেপে উঠলো হিমালয় স্পষ্ট তা বুঝতে পারলো,হালকা হেসে বলল,
—এখন শুধু তখন দেওয়া ধমকটা শোধ করলাম বাকিটা খুব শীঘ্রই শোধ করে দেবো বিয়েটা হোক।তোমার সব কষ্ট আমি আদর দিয়ে বিলীন করে দেব,আমি বাইরে যাচ্ছি তুমি চেঞ্জ করে ঘুমিয়ে পড়ো তোমার রেস্ট প্রয়োজন এখন বাসায় গেলে আঙ্কেল বুঝে যাবেন আমি সকালে এসে তোমাকে বাসায় পৌঁছে দেবো,
মায়া হিমালয়ের হাত ধরে বলল,
—আপনি চলে যাবেন!
হিমালয় হালকা হেসে বলল
—চিন্তা করো না আমি অন্য রুমে আছি তুমি দরজা লক করে দাও।কোনো অসুবিধা হলে আমায় কল করো
হিমালয় বেরিয়ে গেলো, মায়া তারপরেও অনেক্ষণ সেখানে দাড়িয়ে রইলো মনে মনে বললো আপনি দূরে গেলেই আমার অসুবিধা হয় আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি এ কেমন অসুখ মহারাজ আপনি এ কেমন ওষুধ বলুনতো!

চলবে…
সামিয়া খান মায়া

পূর্ববর্তী নিবন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধ
গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ