Monday, October 6, 2025







বাড়ি"ধারাবাহিক গল্প"সে প্রেমিক নয়সে প্রেমিক নয় পর্ব-১৫+১৬

সে প্রেমিক নয় পর্ব-১৫+১৬

#সে_প্রেমিক_নয়
#Mehek_Enayya(লেখিকা)

#পর্ব ১৫

মাথা নিচু করে বসে আছে তনুসফা শেখ। সামনেই চেয়ারে বসে আছে মন্ত্রী সাহেব। মুখে তার রাগের আভাস। তনুসফা একবার তার অ্যাসিস্ট্যান্টকে দেখে শান্ত স্বরে বলে,

-স্যার বিশ্বাস করুণ আমি মিথ্যে বলিনি। ইরান কিছুদিন আগেই বিয়ে করেছে। আমরা বাসার কেউ ওর বিয়ের বেপারে কিছুই জানি না।

-তনুসফা শেখ আপনার উচিত ছিল আপনার ভাইয়ের বিষয় সবটা জেনে আমাকে ওয়াদা দেওয়া। এখন আমার মেয়েকে যে আমি কথা দিয়েছি ওর ইরানের সাথেই বিয়ে হবে।

-স্যার ক্ষমা করে দিন আমায়।

-আমার মেয়ে আমাকে ব্ল্যাকমেল করছে ও ইরানকে ছাড়া অন্য কাউকে বিয়ে করবে না। আমি কখন আমার মেয়ের আবদার অপূরণ রাখিনি।

-স্যার আপনি যদি ইরানের জীবন থেকে ঐ মেয়েকে বের করে আপনার মেয়ের সাথে বিয়ে দিতে পারেন তাহলে আমি আপনার সাথে আছি। ঐ মেয়েকে আমারও পছন্দ নয়।

মন্ত্রী সাহেব (হাসিব আলী) আড়চোখে তনুসফার দিকে তাকায়। কণ্ঠস্বর খাঁদে ফেলে বলে,

-আপনি আমার সাথে থাকবেন?

-জি অবশ্যই স্যার।

-সত্যি তনুসফা শেখ নিজের ভাইয়ের বিরুদ্ধে যাবেন?

-না স্যার। ইরানও ঐ মেয়েকে পছন্দ করে না। শুধু কিছু কারণে ও ঐ মেয়েকে বিয়ে করেছে।

-ঠিক আছে। মেয়ের জন্য এখন অন্যের জীবন নষ্ট করব। আপনি আমাকে ঐ মেয়ের সব ডিটেলস দিয়ে দেবেন।

-আমি এখনই মেইল করছি স্যার।

-যদি গাদ্দারি করেন তাহলে আপনার ভাইয়ের চোখে আপনাকে খারাপ বানাতে আমার এক সেকেন্ডও সময় লাগবে না। তাছাড়াও নির্বাচন কিন্তু সামনে।

-বিশ্বাস করুণ স্যার।

-ঠিক আছে।

🌸🌸

হাতে কফির গ্লাস নিয়ে বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আছে আনাবিয়া। মনোযোগ তার সামনের গাছের ডালে বসা দুইটি পাখির ওপর। চোখের নিচে কালি জমে গিয়েছে। মলিন মুখশ্রী। অগোছালো কেশগুলো অবহেলায় ঝুঁলছে। পরনে কালো পেন্ট, কালো টি-শার্ট ওপরে সাদা রঙের শার্ট। শার্টয়ের বোতাম গুলো খোলা। তার গ্রান্ডমারা রাশিয়া চলে গিয়েছে আজ দু সপ্তাহ হলো। আনাবিয়া এখন একা। সম্পূর্ণ একা। মাঝে মাঝে তার নিজেকে জেলখানার আসামী আসামী মনে হয়। সে ভালো নেই গত দুই সপ্তাহ ধরে। ইরান একটু বেশিই অত্যাচার করে তার ওপর। আর সে চেয়েও পারছে না ইরান থেকে দূরে সরে যেতে। অদ্ভুত এক বন্ধনে আটকে গিয়েছে সে। কফির মগ রাখতে রুমের ভিতরে আসে। সহসা আয়নাতে নিজেকে দেখেই চমকায় আনাবিয়া। ধীরে ধীরে সামনে এগিয়ে যায়। গলায় কালচে আঘাতের দাগ। আনাবিয়া হাত বুলায় সেই আঘাতে। সবাই তো চলে গেলো অথচ তাকে কত জঘন্য স্মৃতি দিয়ে গেলো। জোবান এইরকমটা না করলেও পারত।

গ্রান্ডমারা রাশিয়া যাওয়ার আগের দিন রাতে আনাবিয়া ঘুম ভাঙতেই দেখে পানি শেষ। তখন রাত একটা বাজে। ইরান গভীর ঘুমে মগ্ন। তাই সে-ই দরজা খুলে বের হয়। ড্রইংরুম পেরিয়ে রান্না ঘরে প্রবেশ করে। আইম দিতে দিতে পানি নিচ্ছিলো তখনই সে অনুভব করে তার কোমরে কারো শক্ত হাত। ভীত হয়ে চমকে পিছনে তাকায়। বিকৃত হাসি দিয়ে জোবান দাঁড়িয়ে আছে। আনাবিয়া তপ্ত নিঃশাস নিয়ে বলে,

-তুই এখানে কী করছিস? আমি তো ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।

জোবান কিছু বললো না। লোলুপ দৃষ্টিতে আনাবিয়াকে দেখতে লাগলো। আনাবিয়া বিরক্ত হয়ে বলে,

-সামনের থেকে সর।

-জানিস তো আনা আমি তোকে অনেক বেশি ভালোবাসি। তোর শরীর আমাকে ভীষণ ভাবে আকর্ষণ করে। তোকে নিয়ে আমার মাথায় অনেক উল্টোপাল্টা চিন্তা জন্ম হয়েছে আনা। এখন সেগুলোকে কিভাবে দমিয়ে রাখবো?

-ফালতু বকিস না জোবান।

আনাবিয়া পাশ কেটে যেতে নেয় কিন্তু জোবান তার হাত ধরে ফেলে। আনাবিয়া রাগের চরম পর্যায় পৌঁছে যায়। জোবানকে কিছু বলতে নেবে তার আগেই জোবান পিছনে থেকে আঁকড়ে ধরে তাকে। ঠাস শব্দ করে গ্লাস নিচে পরে যায়। আনাবিয়া রেগে পিছনে ফিরে নিজের সর্বশক্তি দিয়ে চড় মারে জোবানকে। চড় খেয়েও শান্ত হয় না জোবান। আনাবিয়ার পরিহিত শার্ট খামচে ধরে। ওপরের কয়েকটা বোতাম ছিঁড়ে যায়। রাগে ও ভয়ে আনাবিয়া এদিক সেদিক তাকায়। জোবান আনাবিয়ার গলায় মুখ ডুবায়। আনাবিয়া চিৎকার করে বলে,

-জোবান আমার সাথে নষ্টামি করবি না। ইরান তোকে মেরে ফেলবে।

জোবান উত্তর দিলো না। জোবানের গলায় একটা লকেট ছিল। ধরাধরি করতে করতে তার লকেট দিয়ে আনাবিয়ার গলায় অত্যাধিক জোরে আঘাত লাগে। ব্যাথা পেয়েও আনাবিয়া কোনো প্রতিক্রিয়া করল না। একটি করাই নিয়ে আচমকা জোবানের মাথায় বারি দেয়। ব্যাথায় কুঁকরিয়ে উঠে জোবান। আনাবিয়া ছিটকে দূরে পরে যায়।

আনাবিয়াকে রুমে না দেখে তাকে খুঁজতে খুঁজতে রুম থেকে বেরিয়ে আসে ইরান। ভ্রু কুঁচকে ড্রইংরুমে আসে। রান্নাঘর থেকে আওয়াজ শুনতেই দৌড়ে সেখানে যায়। আনাবিয়াকে বিধ্বস্ত অবস্থায় নিচে পরা দেখে ইরান তার দিকে এগিয়ে যায়। সামনেই জোবান ব্যাথায় মাথা চেপে ধরে রেখেছে। আনাবিয়াকে সম্পূর্ণ পরোক্ষ করে ইরানের বুঝতে অসুবিধা হয় না এখানে কী হচ্ছিলো। রাগে হাত মুঠি করে নেয় তেড়ে যায় জোবানের কাছে। একটার পর একটা ঘুষি দিতে থাকে জোবানের মুখে। মুখে অস্বাভাবিক বকা তো আছেই। আনাবিয়া ভীত হয়ে জড়োসড়ো হয়ে উঠে দাঁড়ায়। এতক্ষনে সবাই উপস্থিত হয়ে যায় রান্নাঘরে। আনাবিয়ার গ্রান্ডমা আশ্চর্য হয়ে যায় ইরানের ব্যবহার দেখে। লিলি আনাবিয়াকে জিজ্ঞেস করে,

-কী হয়েছে ইরান ব্রোর? সে এভাবে জোবানকে মারছে কেনো?

লুকাস ক্রিস ইরানকে ছাড়ানোর চেষ্টা করছে। ইরানের ভিতরে জানো আজ দানবের শক্তি ভর করেছে। আনাবিয়া কাঁপাকাঁপা কণ্ঠস্বরে বলে,

-জোবান আমার সাথে নোংরামি করতে নিয়েছিল।

-কী!(আনাবিয়ার গ্রান্ডমা)

-হ্যাঁ।

মারা শেষ হলে ইরান উঠে দাঁড়ায়। উস্কোখুস্ক হয়ে আনাবিয়ার সামনে এসে দাঁড়ায়। আনাবিয়ার হাত, মুখ গলা লক্ষ্য করে অস্থির হয়ে জিজ্ঞেস করে,

-আর ইউ ওকে? কোথায়ও আঘাত লেগেছে ডিয়ার?

আনাবিয়া হতবাক হয়ে যায়। কিছুক্ষন আগেই যে মানুষটি দানব ছিল এখন সে এতো অস্থির কিভাবে হয়ে গেলো। আনাবিয়া থমথমে গলায় বলে,

-ঠিক আছি।

-ওকে তো আমি মেরেই ফেলবো।

-ইরান স্টপ মাই চাইল্ড। কাল তো আমরা চলেই যাচ্ছি। ও আমাদের সাথে চলে যাবে আর মেরো না ওকে। (আনাবিয়ার দাদা)

-হ্যাঁ তুমি এখন আনাবিয়াকে নিয়ে রুমে যাও। ও ভয় পেয়েছে। ঘুমের প্রয়োজন। (দাদি)

-ঠিক আছে দাদিমা। (ইরান)

ইরান আনাবিয়ার হাত ধরে ওকে রুমে নিয়ে যায়। অশান্ত মনে সেই রাত পাড় করে দুইজন। পরেরদিন সবাই চলে যায় ইরান পারে না জোবানকে জিন্দা মাটিতে ঢুকিয়ে ফেলতে। কত বড় স্পর্ধা ঐ জা*নো*য়ারের!

-ম্যাম নিচে কিছু মানুষ এসেছে। স্যার এর সাথে নাকি বিজনেস করে।

ভৃত্যর আওয়াজে ভাবনা থেকে বেরিয়ে আসে আনাবিয়া। শান্ত কণ্ঠে বলে,

-যাও। আসছি।

কাবাড খুলে একটা কামিজ বের করে শরীরে জড়িয়ে নেয়। তারপর ওড়না সুন্দর করে গলায় পেঁচিয়ে রুম থেকে বের হয়। কয়েকজন লোক ড্রইংরুমের সোফায় বসে কিছু একটা নিয়ে কথা বলছে। সিঁড়ি দিয়ে একজন মেয়েকে নামতে দেখে তাঁদের দৃষ্টি সেখানে যায়। সবাই অবাক হয়ে তাকিয়েই রইলো আনাবিয়ার দিকে। আনাবিয়া হেঁটে তাঁদের সামনে এসে দাঁড়ায়। মুখর ভাবভঙ্গি গম্ভীর। দৃঢ কণ্ঠে জিজ্ঞেস করে,

-কারা আপনারা?

তিনজনের মধ্যে একজন লোক বলে,

-আমরা ইরান স্যারের সাথে নির্বাচন নিয়ে কিছু কথা বলতে এসেছিলাম। কিন্তু তার বাসায় অচেনা মেয়ে!

-আমি আপনাদের ইরান স্যারের কাজিন। সে এখন বাসায় নেই। দোয়েয়া করে পরে আসুন।

একজন আনাবিয়ার কথায় উপহাস স্বরে বলে,

-বাহ্! স্যার দেখি বিদেশী কাজিনকে পার্সোনালি নিজের বাসায় রাখে!

আনাবিয়ার রাগ হয়। কঠির কণ্ঠে বলে,

-জুবান সামলে কথা বলুন জনাব।

-স্যারের কাজিন হয়ে এতো দাপট! বেপারটা আশ্চর্যজনক বটে।

লোক গুলো চলে যায়। আনাবিয়া উদাসীন মনে নিজ রুমে চলে আসে। আজ লোকগুলোর কথার তার খারাপও লেগেছে আবার রাগও হয়েছে। কেনো ইরান তাকে সবার সামনে ওয়াইফ বলে পরিচয় দেয় না? কেনো সবাইকে কাজিন কাজিন বলতে হয়? তার ভালো লাগে না ইরানের কাজিন পরিচয়। সে লিগাল ওয়াইফ। তার শান, মান, এটিটিউডই থাকবে অন্যরকম।

___________________🌸

রাতে বাসায় আসে ইরান। রুমে আনাবিয়াকে না দেখে বেলকনিতে যায়। পুলে পা চুবিয়ে বসে আছে সে। ইরান কোট আর টাই খুলে আনাবিয়ার পাশে বসে পরে। ইরানকে দেখে আনাবিয়ার মুখ গোমড়া হয়ে যায়। ইরান নিজ দায়িত্বে আনাবিয়ার গলা থেকে ওড়না সরিয়ে আঘাতের দাগটা দেখে নেয়। শান্ত ভণিতায় বলে,

-অনেকটাই কমেছে।

-আচ্ছা আপনি আমার কে? আমাকে অকারণেই ছোঁয়ার অধিকার আপনাকে কে দিয়েছে?

ইরান হাসলো। দুই ঠোঁট প্রসারিত করে বলে,

-অধিকার দিতে হয় না নিজ দায়িত্বে বানিয়ে নিতে হয়। আমি কিন্তু জানি তোমার মনে ধীরে ধীরে আমার জন্য ফিলিংস জন্ম নিচ্ছে।

-হ্যাঁ বিশ্বজান্তা আপনি! ফালতু।

-ওকে ফালতুই বটে।

-আজ সকালে বাসায় কিছু লোক এসেছিল। আপনার সাথে দেখা করতে।

-বাসায় এসেছিল!

ইরান বিস্ময় হয়। আনাবিয়া বলে,

-হ্যাঁ। আপনার কাজিন রূপে আমাকে এই বাসায় দেখে উপহাস করল তারা।

-তাহলে তারা কেউই আমার চেনা নয়। হয়তো আমার কোনো শত্রু পাঠিয়েছিল তাঁদের।

-কিভাবে বুঝলেন আপনি?

-আমার পরিচিত কারো সাহস নেই আমার জিনিস নিয়ে উপহাস করার।

-ওহ।

নীরবতা বিরাজ করে দুইজনের মাঝে। আনাবিয়া আশেপাশে তাকিয়ে আমতা আমতা করে বলে,

-আমার ভালো লাগে না আপনার কাজিন হয়ে থাকতে।

-তাহলে কী হয়ে থাকতে চাও?

-আমি আপনার যা লাগি সেটা হয়েই থাকতে চাই।

-ওয়াইফ?

আনাবিয়া হ্যাঁ বোধক মাথা নারায়। ইরান মুচকি হাসে।

-তাহলে প্রেমে পরলে এবার?

-একদম না। আমার জাস্ট কাজিন হতে ভালো লাগে না।

-ঠিক আছে। আমি খুব জলদি আমাদের বিয়ের ফাঙ্কশন রাখছি।

-ফাঙ্কশন কেনো আবার?

-বড় করে একটা পার্টি হবে। সেইদিনই সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দেবো তোমায়।

-ট্রু?

-ইয়েস।

খুশিতে চকচক করে উঠে আনাবিয়ার মুখশ্রী। উৎফুল্ল হয়ে উঠে দাঁড়ায়। গুনগুন গান গাইতে গাইতে রুমের ভিতরে চলে যায়।

>>>>চলবে।

#সে_প্রেমিক_নয়
#Mehek_Enayya(লেখিকা)

#পর্ব ১৬

সাদা রঙের তুষারপাতে ডুবে রয়েছে চারপাশ। তার সাথে শীতল হাওয়া তো রয়েছেই। উত্তর সুইজেরল্যান্ড এ বর্তমান উইন্টার সিশন চলছে। ঘড়ির এলামের শব্দে কপাল কুঁচকায় ঘুমন্ত রমণী। চোখ বন্ধ রেখেই দু ঠোঁট প্রসারিত হয় তার। শরীরের ওপর থেকে তুলতুলে কম্বল সরিয়ে উঠে বসে। ঠান্ডায় লাল হয়ে যাওয়া মুখশ্রী দুহাতের সাহায্যে চেপে দেয়। গোল আলিশান পালঙ্গ। পালঙ্ককের চারিপাশে সাদা রঙের মশারি দিয়ে ঘেরা। একে একে কালো পোশাক পরিহিত তিনজন ভৃত্য রুমে প্রবেশ করে। একজনের হাতে খাবারের ট্রে। একজনের হাতে কফির গ্লাস। আরেকজন পর্দা সরিয়ে উম্মুক্ত করে দেয় জালানার গ্লাস। অন্ধকার রুম আলোকিত হয়ে যায়। মশারি খুলে দেয়। বসা রমণী তার স্লিবলেস ব্ল্যাক রঙের নাইটির ওপরে কটির মতো কিছু একটা পরে নেয়। নিচে নামার জন্য উদ্যত হওয়ার আগেই ভৃত্য তার পায়ের সামনে মোক্ষমলের জুতো রাখে। রমণী জুতো পরতে পরতে গমগমে কণ্ঠে বলে,

-সেফিয়া আজকের রুটিন বলো?

সেফিয়া নামের মেয়েটি হাতে একটা ফাইল নিয়ে নেয়। শান্ত কন্ঠে বলে,

-ম্যাম আজ সর্বপ্রথম আপনি আপনার বাবার ফ্রেন্ডের সাথে দেখা করবেন। তারপর আপনার অফিসে কিছু পেপারে সাইন করতে সেখানে যেতে হবে। বিকেলে ফ্রেন্ডদের সাথে ডেট এবং রাতে একটা মিটিং আছে। আজ ডিল ফাইনাল করার কথা ম্যাম।

দম নিলো সেফিয়া। সেফিয়া থামলেও থেমে নেই রমণী। সেফিয়ার কথা শুনতে শুনতে ফ্রেশ হয়ে আসে সে। কফি খেতে খেতে আয়নার স্মুখীন বসে। একজন ভৃত্য চুল বেঁধে দেয় তাকে। আরেকজন মেকআপ। অতঃপর রয়েল ব্লু রঙের লেডিস সুট পরে তৈরি হয়ে আসে সে। লেডিস লং উইন্টার কোট গায়ে জড়িয়ে নেয়। সোফায় বসে হালকা নাস্তা করতে করতে বলে,

-ইট টু মাচ বোরিং! প্রতিদিনই সেই একই রুটিন। ডেডি কল করেছিল?

-ইয়েস ম্যাম।

-কী বলেছে?

-আপনাকে বাংলাদেশে যেতে হবে ম্যাম।

-বাংলাদেশ!

চকচকে উঠে রমণীর অপরূপ মুখ। খাওয়া রেখে উৎফুল্ল হয়ে তাকায় সেফিয়ার দিকে। সেফিয়া চাহনি লক্ষ্য করে বলে,

-ইনশাআল্লাহ ম্যাম খুব জলদিই আপনার স্বপ্ন পূরণ হবে।

-ডেডি বলেছে এটা?

-না ম্যাম আমার মন বলছে।

-দোয়া করো সেফিয়া। দোয়া করো।

-অবশ্যই ম্যাম।

-আগামীকাল বাংলাদেশে যাচ্ছি আমি।

রমণী হরিণী আঁখিজোড়া দিয়ে পালঙ্গকের ঠিক ওপরের দেয়ালে তাকায়। মুখে তার প্রাপ্তির হাসি। চোখ মুখে কিছু পাওয়ার উল্লাস। শান্ত কণ্ঠে পুনরায় বলে,

-অনেক হয়েছে এই দূরত্ব আর পারব না দূরত্ব বাড়াতে। এবার আমাদের এক হওয়ার পালা। তোমাকে আমি আমার রাজ্যে নিয়ে আসবো। চিরকালের জন্যে। আমার ড্রিম হাউসও আমার ড্রিম ম্যানের অপেক্ষায় দিন গুনছে। মুখোমুখি হবো অতি শিগ্রই।

রমণীর চাহনি পরোক্ষ করে একজন ভৃত্যও দেয়ালের ওপরে তাকায়। হঠাৎ করেই ক্ষেপে যায় রমণী। হাতের কাঁটা চামচ ছুঁড়ে মারে ভৃত্যর দিকে। ভয়ে কেঁপে উঠে ভৃত্য। রমণী জোরে জোরে নিঃশাস নিচ্ছে। রাগী কণ্ঠে বলে,

-ও আমার। আমার ইরান। তার দিকে যে মেয়ে নজর দিবে ঐ মেয়ের চোখ আমি নিজ দায়িত্বে তুলে ফেলবো। তার ওপর অধিকার শুধু তাহশিয়ার

সেফিয়া মাথা নিচু করে ভীত কণ্ঠে বলে,

-ম্যাম ও নতুন এসেছে। আগের থেকে অবগত ছিল না এই বিষয়ে। ক্ষমা করে দেন ওকে।

-ভালোভাবে বুঝিয়ে শিখিয়ে দিও এই বেয়াদপকে সেফিয়া।

__________________🖤

খালামুনির বাসায় বেড়াতে এসেছিলো আনাবিয়া। দুইদিন ধরে থাকছে এখানে। কিছুক্ষন পর চলে যাবে। ইরান পছন্দ করে না আনাবিয়ার অন্য কোথায়ও থাকা। তাইতো আনাবিয়া স্বামীর কথায় মর্যাদা দিয়ে আজ না থেকেই চলে যাবে। জয়তি তেল দিয়ে দিচ্ছে আনাবিয়ার চুলে। আনমনে আনাবিয়া বলে,

-খালামুনি কিভাবে কেশ দ্রুত বড় করা যাবে?

চমকায় জয়তি। আনাবিয়ার চুল ছেড়ে মুখের দিকে তাকিয়ে বলে,

-মা তুই চুল বড় করার কথা ভাবছিস! আমি কী ভুল শুনলাম?

-রিয়েলি ইউ আর ড্রামা কুইন খালামুনি।

-সত্যি চুল বড় করতে চাচ্ছিস তুই?

-হ্যাঁ।

-যে এতো বছরে একবারও পিঠ সমান চুল হতে দিলো না সে নাকি চুল বড় করবে!

-তখন অন্য বিষয় ছিল এখন অন্য বিষয় খালামুনি।

-কেউ বলেছে না কি?

-উফফ না। আমি কি অন্যের কথা শুনে কাজ করি?

-না। তাহলে শুন, প্রতিদিন চুলের যত্ন নিবি। তিনদিন পর পর চুল ওয়াশ করবি এবং তেল ইউস করবি। আর ভালো কোয়ালিটির জিনিস ব্যবহার করবি। হেয়ার প্যাক লাগাবি।

-ঠিক আছে। কয়দিনে বড় হবে?

-চুল কি আর গাছ যে কয়দিনেই বড় হয়ে যাবে! কমপক্ষে এক বছর বা মাসখানেক সময় লাগবে তোর চুল পিঠ সমান হতে।

-এতো!

-হ্যাঁ এতো।

-ওকে অলরাইট। আমি তাহলে এবার বাসায় যাই পাঁচটা বাজবে।

-মেয়েরা যখন বেড়াতে আসে তখন কত ভালো লাগে। আর যখন চলে যায় তখন কলিজা ছিঁড়ে যায়!

আনাবিয়া দুই হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে জয়তিকে। আদুরে কণ্ঠে বলে,

-আমি আসবো তো আবার। তুমি ছাড়া আমার আর কেউ আছে? আসবো মন খারাপ করো না।

আনাবিয়া নিজের কাঁধে গরম পানির ফোটা অনুভব করে। তার বুঝতে বাকি নেই জয়তি কান্না করছে।

-এইটুকু বিষয় কেউ কাঁদে না কি! একদম কাঁদবে না খালামুনি।

-তুই যেদিন মা হবি, মমতাময়ী হবি সেদিন বুঝতে পারবি আমার অনুভূতি।

জয়তির কথায় ভাবনার মধ্যে ঢুকে যায় আনাবিয়া। সত্যি কখন সেও মা হবে! তার এই মেদহীন পেট একদিন আলুর মতো ফুলে যাবে! বেপারটা ভয়ংকর লাগলো আনাবিয়ার কাছে।

🌸

রিকশায় বসে ফোন টিপছে আনাবিয়া। আজ বৃষ্টির আভাস নেই। সামনে থেকে চেঁচামেচির আওয়াজ শুনতেই ফোন থেকে চোখ তুলে সেদিকে তাকায়। তার পরনে টপ্স, জিন্স আর গলায় ওড়না পেঁচানো। মুখে মাক্স। চুলগুলো ছেড়ে রেখেছে। অনেকটা এলোমেলো হয়ে কপালে এসে পড়ছে। আনাবিয়ার কপালে দু ভাঁজ পরে। একজন গাড়ির ড্রাইভার এক রিকশালাকে অমানবিক ভাবে মারছে। তাও রাস্তার মাঝখানে। অথচ কেউই কিছু বলছে না বা লোকটাকে বাঁচাচ্ছে না কেনো! আনাবিয়া রিকশা থেকে নেমে পরে। পিতা তুললো একজনকে এভাবে মার খেতে দেখতে সয্য হচ্ছে না তার। চোখ মুখে রাগের বর্ষণ।

ড্রাইভার জঘন্য গালিগালাজ দিচ্ছে আর লোকটাকে মারছে। হঠাৎ কেউ তার হাত ধরায় রাগী চোখে কিনারে তাকায়। একজন মেয়েকে দেখে ক্রোধে বলে,

-হাত ছাড়ো মেয়ে।

-অমানুষের মতো তাকে মারছেন কেনো? উনার দোষ কী?

-মেয়ে মানুষ মেয়ে মানুষের মতো থাকো। পুরুষদের কাজের মধ্যে হাত দিবে না।

-এখন বেশি বললে এইযে হাত দেখছিস এটাই তোর শরীর থেকে আলাদা হয়ে যাবে।

রিকশা চালক জানো সাহস পেলো আনাবিয়াকে দেখে। আরো কয়েকজন এগিয়ে এলো। রিকশা চালক বলে,

-মা আমার কোনো দোষ নাই। এইহান দিয়া আমার রিকশা নিতাছিলাম তখনই হেই ইচ্ছা কইরা হের গাড়ি দিয়া বারি মারে আমার রিকশায়। যহন আমি কিছু কইতে যাই তহনই হেই আইয়া আমারে এমনে মারতাসে।

আনাবিয়া লোকটার কথা স্পষ্ট না বুঝলেও আদৌ আদৌ বুঝেছে। ক্ষেপা বাঘিনীর মতো সপাটে চড় বসিয়ে দেয় ড্রাইভারের গালে। উপস্থিত সবাই চমকে যায়। ড্রাইভার কিছু বলবে তার আগেই আনাবিয়া বলে,

-তোর গাড়ির মালিক কোথায়? এইরকম নোংরা মানুষকে কাজে কেনো রেখেছে? একজন পিতা তুললো লোকের গায়ে হাত দেওয়ার অধিকার তোকে কে দিয়েছে?

-মা থাক কিছু কইয়ো না তুমি। ওরা ভালা মানুষ না।

-এইসব মানুষদের ভালো করার ট্রেকনিক আমার জানা আছে আঙ্কেল। আপনি নিশ্চিন্তে যান।

রিকশা চালক চলে যায়। আনাবিয়া এবার ড্রাইভারের দিকে তাকায়। বয়স কতই বা হবে! হয়তো ২৩ কী ২৪। রাগে কটমট করতে করতে বলে,

-তোর সাহস কত বড় আমাকে থাপ্পড় মারিস! তোকে আমি ছাড়বো না বলে দিলাম।

-আপাদত আবার যদি কারো সাথে এইরকম ব্যবহার করিস আর সেটা যদি আমার চোখে পরে তাহলে তুই গিয়েছিস। তোর মালিকের সাথে দেখা করতে চাই আমি।

মালিকের কথা শুনে একটু নরম হয় ছেলেটা। কিছু না বলেই পাশ কেটে চলে যায় গাড়ি নিয়ে। আনাবিয়া আশেপাশে চোখ বুলিয়ে দেখে অনেকেই তার দিকে চেয়ে আছে। সবার মুখেই বিস্ময়। তাঁদের সকলকে উপেক্ষা করে চলে যায় আনাবিয়া।

__________________

বড় বড় পা ফেলে বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করে আনাবিয়া। মুখের মাক্স খুলে ফেলে। একজন ভৃত্য তাকে দেখে সালাম দেয়। আনাবিয়া থেমে যায়। সালামের উত্তর দিয়ে গম্ভীর কণ্ঠে বলে,

-কিছু বলবে?

-ম্যাম আপনাকে দেখে খুশি লাগছে। স্যারের শরীর ভালো না দুইদিন ধরে। কাল রাতে অনেক বেশি জ্বর হয়েছিল।

-আমাকে জানাও নি কেনো? ডাক্তার দেখিয়েছে?

-জি ম্যাম কাল রাতেই ডাক্তার এসেছিলো।

-এখন কী রুমে?

-না ম্যাম, সকালে বের হয়েছে এখনও বাসায় আসেনি।

-অসুস্থ শরীর নিয়ে কাজে যাওয়ার দরকার ছিল!

-ম্যাম রাতের জন্য কী রান্না করব?

-কিছু করার প্রয়োজন নেই আজ আমি রান্না করব।

-ঠিক আছে।

আনাবিয়া আর দাঁড়ালো না। তার রুমে চলে আসে। কিছুক্ষন বেলকনিতে দাঁড়িয়ে শাওয়ার নিতে ওয়াশরুম চলে যায়। এখন একটা হট শাওয়ার নেওয়া ভীষণ প্রয়োজন।

সন্ধ্যার দিকে বাড়িতে আসে ইরান। চোখ, মুখ, নাক একদম লাল হয়ে আছে। হাতে রুমাল। কিছুক্ষন পর পরই সেটা দিয়ে নাক মুচছে। উস্কোখুস্ক চুল। কোট এর বোতাম খুলতে খুলতে নিজ রুমে প্রবেশ করে। কোনোদিক না তাকিয়ে কোট ছুঁড়ে ফেলে ডিভাইনের ওপর। অস্থির হয়ে যখনই আয়নার স্মুখীন তাকায় তার অস্থিরতা আরো দ্বিগুন বেড়ে যায়। একরাশ ভালো লাগা ছেয়ে যায় তার এলোমেলো মন মস্তিকে। বুকে দুই হাত গুঁজে দাঁড়িয়ে বাঁকা হাসে।

আনাবিয়া মাত্রই শাওয়ার নিয়ে বের হয়েছে। কায়ায় সাদা রঙের বাথসুট জড়ানো। যেটা ওপর দিয়ে সম্পূর্ণ ঢাকা থাকলেও হাঁটুর নিচের অংশের সবই দৃশ্যমান। আনাবিয়া ভেবেছিল সে দরজা আগেই লাগিয়েছে কিন্তু ভুলবশত দরজা খোলাই ছিল। ইরানকে সে খেয়াল করেনি। কানে ইয়ারফোন। গুনগুন করে গান গাইছে আর আয়নার সামনে বসে হাত, পায়ে, গলায় লোশন মাখছে। কোমরের বেল অনেকটা ঢোলা করে রেখেছে। যার জন্য বুকের অনেক নিচের অংশ দেখা যাচ্ছে। ইরান বেশ উপভোগ করছে আনাবিয়ার গুনগুন করে গান গাওয়া। ধীরে ধীরে ডিভাইনে বসে সে। আনাবিয়ার লোশন দেওয়া শেষ হলে ইরারফোন খুলে পাশে রাখে। আয়নায় নিজেকে দেখতে যাবে তখনই তার নজর পরে পিছনে বসা ইরানের ওপর। কোমল মুখশ্রী বাঁকা হেসে ঠোঁটে আঙুল বুলাচ্ছে তার দিকে তাকিয়ে। হতভম্ব হয়ে যায় আনাবিয়া। বসা থেকে দাঁড়িয়ে পিছনে ফিরে যায়। অপ্রস্তুত হয়ে বলে,

-কিভাবে আসলেন আপনি? রুমের দরজা তো লাগানো।

-হ্যাঁ ভুতে এসে খুলে দিয়ে গিয়েছে।

আনাবিয়া দরজা খোলা দেখে ঢোক গিলে। ইসস যদি ইরানের জায়গায় অন্য কেউ হতো তাহলে কত বড় সর্বনাশ হয়ে যেত! আনাবিয়া তেড়ে যায় ইরানের কাছে। ইরানের দিকে ঝুঁকে তার কলার ধরে বলে,

-আপনাকে ভালো ভেবেছিলাম! আমাকে এভাবে দেখে রুমে প্রবেশ কেনো করেছেন? আর কিছু না বলে বসে বসে আমাকে দেখছেন! হাও চিপ ম্যান!

ইরান তখনও ঠোঁট বাঁকিয়ে হাসছে। একবার আনাবিয়ার দিকে তাকাচ্ছে তো আরেকবার দৃষ্টি সরিয়ে ফেলছে। ইরানকে চুপ দেখে আনাবিয়া বলে,

-ধরা পরে জুবান বন্ধ হয়ে গিয়েছে?

-যদি কোনো ব্ল্যাক কালারের চিকন ফি*তা দেখিয়ে আমাকে সিডিউজ করতে চাও তাহলে বলবো তুমি ব্যর্থ ডিয়ার। নিজেকে যতই হ*ট লুকে ধরা দেও আমার কাছে তবুও আমি গলছি না। কজ আমার চরিত্র অত্যান্ত স্ট্রং।

-ইউ শাটআপ ব্লা*ডি ম্যান।

আনাবিয়া পরিহিত বাথসুট ঠিক করার জন্য সোজা হয়ে দাঁড়াবে তার আগেই ইরান নিজের হাত আনাবিয়ার পিছনে নিয়ে আনাবিয়ার চুল মুঠি করে ধরে। আনাবিয়া ইরানের এহেন কান্ডে ভড়কে যায়। ইরান আনাবিয়ার মুখ একদম নিজের কাছাকাছি নিয়ে আসে। কিঞ্চিৎ ফাঁক দু’জনের অধরের মাঝে। ইরান মুগ্ধ দৃষ্টিতে আনাবিয়ার বড় বড় চোখের দিকে তাকিয়ে রইলো। দৃঢ় কণ্ঠে বলে,

-ইউ নো তোমার এই কয়েকটা জিনিস আমাকে তোমার প্রতি উইক করে দেয়। তোমার জায়গায় এখন কোনো বাঙালি মেয়ে হলে এতক্ষনে চোখ বন্ধ করে কাঁপাকাঁপি শুরু করে দিতো। অথচ তুমি কাঁপাকাঁপি তো দূরে থাক চোখও বন্ধ করছো না।

-,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,।

-এই আঁখিজোড়া আমার সর্বনাশ করেছে। এই অধর। যেটায় আমি রোজ ডুব দিতে চাই। এই কোমল মুখশ্রী যেটায় আমি আমার অধরের ছোঁয়া দিয়ে ভরিয়ে দিতে চাই।

-আমি ব্যাথা পাচ্ছি।

আনাবিয়া এক হাতের সাহায্যে বুকের বাথসুট ধরে রেখেছে। আরেক হাত দিয়ে ইরানের হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করছে। ইরান নিজেই ছেড়ে দেয় আনাবিয়ার চুল। আনাবিয়া দ্রুত সরে যায়। পিছনে ফিরে বাথসুট ঠিক করে কোমরের বেল্ট শক্ত করে বেঁধে নেয়। ইরানের দিকে আর ফিরে তাকায় না। আজ প্রথমবার সে ইরানের দিকে তাকাতে লাজে রাঙা হয়ে যাচ্ছে। ইরানকে সম্পূর্ণ ইগনোর করে কাবাড খুলে ড্রেস নিয়ে নেয়। তাড়াহুড়ো করে ওয়াশরুম যেতে নেয় কিন্তু ইরান তাকে যেতে দেয় না। বসা থেকে উঠে আনাবিয়াকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে। অপ্রস্তুততের সাথে অস্থির হয়ে উঠে আনাবিয়া। ইরান শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলে,

-অনেক বেশি মিস করেছি তোমাকে। কারো রাগী ফেইস দেখতে পারিনি। কেউ গায়ে পরে ঝগড়া করেনি। ভীষণ বোরিং কেটেছে দুইদিন।

আনাবিয়া রেগে কনুই দিয়ে গুঁতা মারে ইরানকে। ইরান ছিটকে দূরে সরে যায়। পেটে হাত দিয়ে হাসতে থাকে। আনাবিয়া রাগী কণ্ঠে বলে,

-আপনাকে আমি বেলকনি থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেবো। আই স্যয়ার।

-তোমার প্রেমে তো এমনেও পরে গিয়েছি আর কত ফেলবে?

-উফফ ডিসগাস্টিং।

আনাবিয়া ওয়াশরুম চলে যায় ড্রেস পড়তে। ইরান সেদিকে তাকিয়ে শার্ট এর বোতাম খুলতে থাকে। আনাবিয়াকে দেখে সে জানো অর্ধেক সুস্থ হয়ে গিয়েছে। তবে আনাবিয়াই কী তার রোগের ঔষধ?

>>>>চলবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধ
গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ