সেই তুমি পর্ব-০৪

0
4360

#সেই_তুমি?
#পর্ব_০৪
#Tabassum_Kotha

ভিতরে ঢুকতেই উপস্থিত মানুষগুলো আমার সাথে কথা বলা শুরু করে দিলো। কেউ জিজ্ঞাসা করছে আমি কেমন আছি, কেউ ঠিক মতো আসতে পেরেছি কিনা, আবার কেউ পায়ে ব্যথা কিভাবে পেলাম? কিন্তু এই মানুষগুলোর কথা বলার ধরণ দেখে মনে হচ্ছে এরা আমাকে অনেক আগে থেকে চিনে। কিন্তু আমি তো এদের কখনও দেখিও নি। আমি চুপচাপ বসে আছি কারো কোনো প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে। তখন একজন মহিলা আমার কাছে এসে আমাকে জরিয়ে ধরলো। ইনি কাজী অফিসে ছিলেন না। আমার কাঁধে একটু ভেজা ভেজা মনে হচ্ছে। তাহলে কি এই আন্টি কান্না করছে আমাকে ধরে?

— কেমন আছিস হীর? আজ কতোদিন পরে দেখলাম তোকে। অনেক শুকিয়ে গেছিস আগের চেয়ে। হ্যাঁ রে হীর, তোর কি আমার কথাও মনে নেই?

এতোক্ষণ এই আন্টির দিকে তাকিয়ে ছিলাম হঠাত তার মুখে এই কথা শুনে মাথাটা কেমন ঘুরে উঠলো।

— আমি তো আপনাকে চিনি না, কে আপনি?

আমার প্রশ্নে মনে হচ্ছে মহিলা অনেক কষ্ট পেলেন। কিন্তু আমি তেমন কোনো খারাপ কথাই বলি নি। আর কিছু বলার আগেই তুর্য সেখানে চলে এলেন।

— আম্মু তোমরা কি শুরু করেছো বলো তো? এসব কথা পরে হবে। হীর এখন আমার সাথে রুমে যাবে।

তুর্যর কথায় যেনো সবাই অনেকটা অবাক হলো। এখানে সবাই চোখে চোখে কথা বলছে, যার কিছুই আমি বুঝতে পারছি না। তুর্য আমাকে কোলে তুলে দুতলার একটা রুমে নিয়ে গেলেন। রুমটা বেশ বড়, মার্জিত ভাবে সাজানো। তুর্য আমাকে বিছানায় বসিয়ে দিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলেন। আমি বসে বসে রুম দেখছি। ব্যালকোনির কাঁচটা খোলা থাকায় হিম শিতল বাতাস ঢুকছে রুমে। খুব ভালো লাগছে, ইচ্ছে হচ্ছে একটু দাড়িয়ে থাকি ব্যালকোনিতে। কিন্তু পায়ে ব্যথা করছে। ওয়াশরুমে পানির শব্দ কমে আসছে, হয়তো তুর্য বের হবে এখন। এই লোকটাকে আর সহ্য করতে পারছি না। এখনি আবার চোখাচোখি হবে তার সাথে। তাড়াতাড়ি করে শুয়ে পরলাম, উদ্দেশ্য ঘুমানোর ভান ধরবো। ভান ধরতে গিয়ে কখন যে ঘুমিয়ে পরেছি নিজেও টের পাই নি।

ঘুমের মাঝে মনে হচ্ছে কেউ আমার গালে, গলায়, কপালে চুমু খাচ্ছে। চুমু খাওয়া শেষে মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে, একটা হাত ধরে রেখেছে। আমি সবটাই অনুভব করতে পারছি কিন্তু চোখ খুলতে পারছি না। ঘুমপরি যেনো আজ আমার চোখ আটকে রাখার শপথ নিয়েছে। মাথায় হাত বুলিয়ে দেওয়াতে ঘুমটা আরো ভালোমতো আসছে। হয়তো আমাকে কেউ জরিয়ে ধরিছে, খুব শক্ত করে। গালের পাশটা ভেজা ভেজা মনে হওয়াতে এইবার ঘুমটা ভেঙেই গেলো। চোখ খুলতেই দেখি তুর্য আমাকে আষ্টে-পৃষ্ঠে জরিয়ে ধরে শুয়ে আছে। রাগে আমার মাথায় আগুন ধরে যাচ্ছে। এই লোকটার সাহস কতোবড় আমাকে ধরে শুয়ে আছে। ধাক্কা দিয়ে তুর্যকে নিজের উপর থেকে সরালাম কিন্তু সে খাটের একদম কোনায় থাকাতে নিচে পরে গেলো। নিচে পরে গিয়েই তুর্য আমার দিকে অগ্নিদৃষ্টিতে তাকালো। তুর্যর এই রূপটা দেখলে আমার ভীষণ ভয় হয়। ভয়ে জড়োসরো হয়ে বসে আছি আমি। আর তুর্য সেই অগ্নিমূর্তি ধারণ করে আমার দিকে এগিয়ে আসছে। নিশ্চিত আমাকে মেরে ফেলবে এখন গলা টিপে। ভয়ে চোখ বন্ধ করে আছি কিন্তু তুর্য আমার গলা চেপে না ধরে আমাকে কোলে তুলে নিলো। আমি অবাক না হয়ে পারলাম না। ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছি তুর্যর দিকে। সে আমাকে নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকছেন। তার মতিগতি আমার কাছে সুবিধের ঠেকছে না। নিশ্চয়ই তার মাথায় কোনো শয়তানি বুদ্ধি খেলছে।
যা ভেবেছিলাম তাই,,, তুর্য আমাকে পানি ভর্তি বাথটাবে ফেলে দিয়েছেন। রাগে মনে হচ্ছে নিজের চুল নিজে ছিড়ে ফেলি।

— এটা আপনি কি করলেন? আপনি কি পাগল? আমাকে এভাবে পানিতে ফেলে দিলেন কেনো?

— প্রতিশোধ নিলাম।

— প্রতিশোধ? কিসের প্রতিশোধ?

— তুমি আমাকে নিচে ফেলেছিলে, আমি তোমাকে পানিতে ফেললাম। এখন হিসাব ঠিক আছে।

— আপনি একটা সাইকো!! আপনার মাথার তার সবগুলো ছেড়া। এভাবে কেউ কাউকে পানিতে ফেলে? আমি যে ব্যথা পেলাম। এখন আপনার অনেক ভালো লেগেছে তাই না?

— তোমাকে ফেলে ভালো না লাগলেও হিসাব বরাবর করে এখন অনেক ভালো লাগছে।

— আপনার মাথার ওই বড় বড় চুল সবগুলো আমি ছিড়ে ফেলবো টেনে।

— আগে গোসলটা করো ভেজা কাপড়ে তোমাকে অনেক হট লাগছে।

— খচ্চর একটা। বের হন এখান থেকে।

তুর্য বেরিয়ে গেলে আমি তার চৌদ্দগোষ্ঠী উদ্ধার করতে করতে গোসলটা সেরে নিলাম।

যেই আন্টি আমাকে জরিয়ে ধরে কেঁদেছিল তিনি এসে আমাকে খাইয়ে দিলেন। সে কথায় কথায় বললেন, তিনি তুর্যর মা, তনিমা চৌধুরী, কাজী অফিসে থাকা লোকগুলোর মধ্যে তুর্যর বাবা তিয়াস চৌধুরী, ছোট চাচা-চাচী আর একমাত্র ফুপি কাকলিও ছিলেন। খাওয়ানো শেষে তনিমা আন্টি আমার মাথায় হাত রেখে বললেন,

— মা রে আমার তুর্য টা একটু রাগী কিন্তু ও মানুষটা খারাপ না। তুই ওকে একটু সময় দে। এমন ভাবিস না যে আমি এখানে তুর্যর সাফাই গাইতে এসেছি। আমি তোর জন্যই এসেছি। জানি তুর্য যা করেছে সেটা অনেক খারাপ একটা কাজ।

আন্টির কথা শুনে আমার লজ্জায় মরে যেতে ইচ্ছা করছে। আন্টি কি সবটা জানে সেদিন কি হয়েছিল? মাথা নিচু করে এসবই ভাবছিলাম, আন্টি আবার বলতে শুরু করলো।

— তোকে এভাবে জোর করে বিয়ে করা টা তুর্যর উচিত হয় নি। তোর মামা মামির সাথে কথা বলে নেওয়ার দরকার ছিল।

আন্টির কথায় আমি হাফ ছেড়ে বাঁচলাম। যাক আন্টি কিছুই জানে না।

— আন্টি আপনি চিন্তা করবেন না সব ঠিক হয়ে যাবে।

–আন্টি কাকে বলছিস? আমি তোর মা হই বুঝলি।

মা ডাক টা শুনেই ভিতরটা মুচরে উঠলো। না জানি কতো বছর হয়ে যায় মা কে হারিয়েছি। আমার তো মায়ের চেহারা টাও মনে নেই। মা বেঁচে থাকলে বুঝতে পারতাম আমি কার মতো দেখতে হয়েছি। আমি আস্তে করে একবার ‘মা’ বলে ডেকে উঠলাম। মা আমাকে আবারো বুকে জরিয়ে নিলো। মা এবার কেঁদে উঠলেন। কেনো জানি না আমারো ভীষণ কান্না পাচ্ছে। আপনা আপনিই চোখ দিয়ে পানি পরছে। মা কে জরিয়ে ধরে হু হু করে কেঁদে উঠলাম। মা আমার কপালে চুমু দিয়ে আমাকে আদর করে দিলেন। আজ যেনো অনেক বছর ধরে শুকনো থাকা মরুভূমিতে কেউ মমতার বর্ষণ করলো।

রাতে তুর্যর বোন তাসফি আমার সাথে দেখা করতে আসে। মেয়েটা আমার বয়সি হলেও আমার থেকে কিছুটা ছোট। কথাতেও একটু বাচ্চামো ভাব আছে, তবে ভারী মিশুক মেয়েটা। মিনিট দশেকের মধ্যেই ওর উপর মায়া পরে গেছে আমার। একটা জিনিস ভাবতে খুব অবাক লাগছে পরিবারের মানুষগুলো এতো ভালো কিন্তু তুর্য! তুর্য এমন কেনো? একটা মেয়ের জীবন নষ্ট করতে একবার ও ভাবলো না। তুর্যকে আমি কিভাবে স্বামী হিসেবে মেনে নেবো? আমি তো কখনই পারবো না তুর্যকে ভালোবাসতে। তাহলে এই সম্পর্কের ভবিষ্যত কি হবে?

আপন মনেই কথাগুলো ভাবছিলাম তখন ফোনটা বেজে উঠলো। স্ক্রিনে রায়ানের নাম্বার দেখতেই কলিজা কেঁপে উঠলো। কি উত্তর দেবো আমি রায়ানকে? সে তো এখনও হয়তো আমার সাথে জীবন কাটানোর স্বপ্ন সাজিয়ে বসে আছে। আর আমি কি না তার সাথেই এতো বড় বিশ্বাসঘাতকতা করলাম!!! রায়ান কি আমার অবস্থানটা বুঝতে পারবে? আমি যে উপায়হীন ছিলাম সেটা কি রায়ান বুঝবে? আমাকে কি কখনও ক্ষমা করবে? ফোনটা বাজতে বাজতে বন্ধ হয়ে গেলো চার্জের অভাবে। রায়ানের কথা ভেবে দুফোঁটা জল চোখ দিয়ে গড়িয়ে পরলো।

তাসফি আর রিসান (তুর্যর চাচাতো ভাই) এসেছে বাসরঘর সাজাতে। কথাটা আমার মাথায় থেকেই বেরিয়ে গিয়েছিল, নিয়ম অনুযায়ী আজকে আমাদের বাসর রাত। কিন্ত আমি তো এটা হতে দিতে পারবো না। তুর্যকে আরো একবার আমাকে স্পর্শ করতে আমি দিতে পারি না। আমাকে কিছু একটা করতেই হবে। কিন্তু কি? সেদিনও আমি তার শক্তির কাছে হেরে গিয়েছিলাম। আর আজ তো তার স্পর্শ বৈধ হবে!!!

তাসফি একপ্রকার জোর করেই আমাকে একটা লাল শাড়ি পরিয়ে দিয়ে গেছে। বিছানার ঠিক মাঝ বরাবর বসে আমি এবস চিন্তা করছি আর ঘামছি। AC চালু আছে তবুও প্রচন্ড গরম লাগছে আমার। দরজায় খটখট শব্দ হচ্ছে তার মানে তুর্য এসে গেছে। হার্ট টা অসম্ভব দ্রুত বিট হচ্ছে। কিন্তু ভয় নেই। আজকে আমি প্রস্তুত। একটা ছুড়ি বাম হাতে নিয়েই বসে আছি। তুর্য আমার কাছে এলেই এক ঘা বসিয়ে দেবো।
তুর্য রুমে ঢুকতেই ওয়াশরুমে গেলো। বেরিয়ে আমার কাছেই এগিয়ে আসছে। আর আমি ছুরি টা বারবার শক্ত করে ধরছি। আমার কাছে এসে আমার দিকে ঝুঁকে তুর্য আমাকে আচমকা জরিয়ে ধরলো। এভাবে জরিয়ে ধরাতে আমি ঘাবড়ে গেলাম। তুর্যর হাত আমার হাত দুটো চেপে ধরে মুখটা আমার কানের কাছে এনে ফিসফিস করে বললো,

— ফল কাটার ছুরি দিয়ে মানুষ কাটা যায় না।

তুর্যর কথায় আমি পুরোই বেকুব বনে গেছি। আমার হাতে ছুরি এই লোকটা কিভাবে জানলো। চোখ দুটো বড় বড় করে তাকালাম তার দিকে।

— এর পরের বার কিচেন থেকে ধারালো ছুরি আনবা। তুমি তুর্য আহমেদের বউ এই ফল কাটার ছুরি দিয়ে মানুষ কাটতে গেছো, এটা মানুষ শুনলে তো হেসে হেসেই মরে যাবে। থিংক সামথিং বিগ ইউ নো!

তুর্যর কথায় আমার গা জ্বলে যাচ্ছে। একে তো এতো টর্চার আবার এমন গা জ্বালানো কথা বার্তা।

— আপনি কিভাবে জানলেন আমি ছুরি হাতে বসে আছি?

— এই ঘরের প্রতিটা জিনিস আমার মুখস্ত। ফলের ঝুড়িতে যখন ছুরি টা দেখতে পাই নি তখনই বুঝেছিলাম সেটা তোমার কাছে।

— আগে বললেই পারতেন এতো অভিনয়ের প্রয়োজন ছিল না।

— প্রতিনিয়ত অভিনয় করতে করতে এখন শুধু ওটাই করতে পারি।

উনি কি বললেন কিছুই বুঝতে পারলাম না। কিন্তু রাগটা কমাতে পারছি না। এখন আমার একা থাকা দরকার। তাই বিছানা থেকে উঠে ব্যালকোনিতে গিয়ে দাড়ালাম।
মেকআপ এমনিতেও করি নি, আর চুলটা কোনোরকম খোঁপা করা ছিল যা খুলে গেছে। আমি চোখ বন্ধ করে দাড়িয়ে আছি। কিছুক্ষণ পর ঘাড়ে কারো গরম নিশ্বাস পরলো। আমি জানি এটা তুর্যই। তার শরীরের ঘ্রাণ টা খুব পরিচিত মনে হয় আমার। এর কারণ অবশ্য আমার জানা নেই। আমার ঘাড় থেকে চুল গুলো সরিয়ে দিয়ে তুর্য চুমু দিতে লাগলো। আস্তে আস্তে তুর্যর হাত আমার পেটে বিচরণ করতে লাগলো। রাগ কমার জায়গায় আরো বেরে গেলো আমার।
পিছনে ফিরেই তুর্যকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিলাম। তুর্য আবারো সেই আহত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। তার এই করুণ দৃষ্টি আমার মনে আঁচড় কাটছে। না আমি দুর্বল হবো না। এই অমানুষটাকে আমি কিছুতেই প্রশ্রয় দিতে পারি না।

— আপনি কোন সাহসে আমাকে স্পর্শ করেছেন? আপনার আমার উপর কোনো অধিকার নেই। আপনি আমার সাথে যা করেছেন এরপর ভাবলেন কি করে আমি আপনার সাথে এসব! ছিঃ! সবাইকে নিজের মতো নোংরা মনে করেন তাই না। এতোই যখন চাহিদা পতিতা পল্লিতে গেলেই তো পারেন। নাকি আমাকেও পতিতাই মনে হয়? একটা কথা মনে রাখবেন, যতোবার আপনি আমার কাছে আসবেন প্রতিবার জোর করেই আসতে হবে। স্ব ইচ্ছায় আমি কখনই আপনাকে কাছে আসতে দেবো না। আমি কখনই আপনাকে আমার স্বামীর মর্যাদা দিতে পারবো না। কখনই পারবো না আপনাকে ভালোবাসতে।

তুর্য একই দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। এতো কিছু বলার পরেও তার চোখ এক মুহূর্তের জন্যও সরে নি আমার উপর থেকে। এই চোখ দুটোয় আজ কোনো রাগ নেই না আছে হিংস্রতা। কেনো যেনো মনে হচ্ছে আমার কথায় সে অনেক কষ্ট পেয়েছে। তুর্যর দুচোখের কোটরে পানি টলমল করছে। আমার ভীষণ কষ্ট হচ্ছে তুর্যর চোখের দিকে তাকিয়ে থাকতে।

তুর্য আমাকে কিছু না বলেই সেখান থেকে চলে গেলো। কোথায় গেলো আমি জানি না, আসলে জানার চেষ্টা করি নি। রাত তখন প্রায় ১ টা। বাসার সবাই হয়তো ঘুমিয়ে পরেছে। ঘুম নেই শুধু আমার চোখে। কিছুক্ষণ ওভাবেই দাড়িয়ে থেকে রুমে চলে এলাম। ঘুম আসছে কিছুতেই। বারবার মনে হচ্ছে তুর্য কষ্ট পেয়েছে। কেনো জানি না তুর্য কেমন আছে, কি করছে জানতে ইচ্ছে হচ্ছে। তুর্যর কথা জানার ইচ্ছা দমিয়ে রাখতে না পেরে রুম থেকে বেরিয়ে পরলাম।
কিন্তু এই বাড়ির কিছুই আমি চিনি না। আন্দাজে যেতে যেতে একটা রুমের লাইট জ্বালানো দেখলাম নিচ দিয়ে। দরজার বাইরে কান পেতে শুনার চেষ্টা করলাম। তুর্য কার সাথে যেনো কথা বলছে। কিন্তু কথাগুলো শুনতে পাচ্ছি না। দরজায় ধাক্কা দিতেই বুঝতে পারলাম দরজা ভিতর থেকে লক করা। কিন্তু আমার জানার অনেক আগ্রহ হচ্ছে ভিতরে তুর্য কার সাথে কথা বলছে। বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে আমি রুমে ফিরে এলাম আর শুয়ে পরলাম।

একটা ফটো ফ্রেম বুকে জরিয়ে ধরে আছে তুর্য। দুচোখ বেয়ে নোনাজলগুলো ঝড়ে যাচ্ছে। এদেরই বা কি দোষ দেবে সে! দোষ তো তার ভাগ্যের। সবকিছু কাছে পেয়েও আজ তার কাছে কিছুই নেই। তার বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন যেই মানুষটা, সেই মানুষের কাছে চরম ঘৃণার সে। যাকে একনজর না দেখলে হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয় সেই মানুষটা তুর্যর মুখটাও সহ্য করতে পারে না। এই কষ্ট না কাউকে বলতে পারবে সে আর নাই কেউ বুঝতে পারবে।

চলবে..

[ভুল-ত্রুটি ক্ষমার চোখে দেখবেন?।]

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে