#সেই_তুমি?
#পর্ব_০৮
#Tabassum_Kotha
একটা অন্ধকার ঘরে আটকে রাখা হয়েছে রায়ানকে। চেয়ারের সাথে বেঁধে রেখেছে। কপাল কেটে ফিনকি দিয়ে রক্ত পরছে। হাত, পিঠ মেরে ফাঁটিয়ে দেওয়া হয়েছে। রায়ান অস্পষ্ট স্বরে পানি চাইছে। কেউ একজন এক গ্লাস পানি হাতে সামনে এগিয়ে এলো। রায়ান চোখে ঝাপসা দেখছে তাই গ্লাস টা খেয়াল করতে পারছে না। হাতটাও বাঁধা অবস্থায় আছে।
— পানি টা খেয়ে নেও রায়ান।
— কন্ঠস্বর টা পরিচিত মনে হচ্ছে। কে তুমি?
— এতো সহজেই ভুলে গেলে? আমি তো ভেবেছিলাম আর যাই হোক তুমি আমাকে কখনও ভুলতে পারবে না।
— তুর্য!! তুমি আমাকে তুলে এনেছো!
— That’s like a good boy. এইতো চিনতে পেরেছো।
তখনই ঘরের লাইট টা জ্বলে উঠলো।
— আমাকে এভাবে তুলে আনার মানে কি তুর্য? কি করেছি আমি যে আমাকে মারা হলো?
— রায়ান তোমার মুখ থেকে এতো ইনোসেন্ট কথাগুলো আমি আর নিতে পারি না। কিভাবে পারো নিজেকে এতো ইনোসেন্ট বানিয়ে রাখতে। যেখানে তোমার আসল রূপটা আমি খুব ভালো করেই চিনি।
— তুমি আমাকে ভুল বুঝছো তুর্য। আমি কিছুই করি নি।
তুর্য রায়ানের নাক বরাবর একটা ঘুসি দিলে রায়ানের নাক দিয়ে রক্ত পরতে লাগলো।
— জানিস তো তুর্য মাহমুদ কখনই কারণ ছাড়া কিছু করে না। তোকেও কারণ ছাড়া আনি নি। আজকে আমার আর হীরের আলাদা হওয়ার পিছনের কারণ তুই।
— তুমি আবারো ভুল বুঝছো। এটা সত্য যে আমি হীরকে অনেক বেশি ভালোবাসি। কিন্তু তোমার কাছে থেকে ওকে আলাদা করি নি।
— আলাদা করো নি!! এটা কি আমি বিশ্বাস করবো! সত্যি!!
— দেখো তুর্য আমি মানছি হীরের বেঁচে থাকার কথা টা আমি সবার কাছে থেকে লুকিয়েছি কিন্তু বিশ্বাস করো এর পিছনের কারণ শুধু একটাই। আমি হীরকে সেই ছোটবেলা থেকে ভালোবাসি।
— তোমার ভালোবাসায় তুমি এতোটাই অন্ধ ছিলে যে ভুলেই গেছো হীর আমার বউ। একবারও মনে হলো না আমি হীরকে ছাড়া কিভাবে বাঁচবো?
— তুর্য তুমিও হীরকে ভালোবাসো আমিও হীরকে ভালোবাসি। তোমার যেমন ওকে কাছে পেতে ইচ্ছে হয় আমারো তেমনি ইচ্ছে হয়। ওর জন্য তোমার হৃদয় যেমন পুড়ে আমার হৃদয়ও পুড়ে। পার্থক্য শুধু এটুকুই তুমি ওর স্বামী।
তুর্য আরেকবার মারতে যেয়েও হাত নামিয়ে নেয়।
— এতোই যখন ভালোবাসো হীরকে তাহলে কেনো ড্রাগস্ দিচ্ছিলে ওকে? তুমি জানো ওই ঔষধ গুলোর সাইড এফেক্টের জন্য হীরের ব্রেইন একসময় সম্পূর্ণ কাজ করা বন্ধ করে দিত।
— কি বলছো এসব তুর্য!! হীরকে ড্রাগস্ তাও আবার আমি! আমি স্বপ্নেও এই কাজটা করতে পারি না। আমি ভালোবাসি হীরকে। সবসময় ওকে লুকিয়ে আমার কাছে রাখতে চেয়েছিলাম। তাই সেদিন হীরের কথা কাউকে বলি নি। কিন্তু বিশ্বাস করো আমি হীরের ক্ষতি করতে পারি না।
তুর্য এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে রায়ানের দিকে। কেনো যেনো রায়ানকে বিশ্বাস করতে ইচ্ছা হচ্ছে তার। রায়ানের চোখ দুটো বলে দিচ্ছে তার বলা প্রতিটা কথা সত্যি। তুর্য জন কে ফোন করে রায়ানকে হসপিটালে পাঠালো। আর রায়ানের প্রোপার ট্রিটমেন্টের ব্যবস্থা করলো।
ঝর্ণার নিচে বসে কাঁদছি আমি। নিজেকে অনেক অসহায় মনে হচ্ছে। এইমাত্রই তো তুর্যকে ভালোবাসতে শুরু করেছিলাম তাহলে এমন কেনো হলো! কেনো বারবার আমার সাথেই এমন হয়! আমার কি খুশি হওয়ার অধিকার নেই? আমি তো তুর্যকে ঘৃণা করতাম তাহলে কেনো তুর্যর প্রতি দুর্বল হলাম? কেনো ভালোবাসলাম তার মতো একটা লম্পটকে? তুর্য এতোটা খারাপ এখনও আমার বিশ্বাস হচ্ছে না। আমার মন বলছে তুর্য এমন কিছু করতে পারে না। কিন্তু আমি যে নিজের কানে শুনেছি। তবুও আমার মন যে তুর্যকে নির্দোষ বলছে! আমি কি তাহলে ভুল শুনেছি? হয়তো কিয়ারার সন্তানের বাবা তুর্য নয়, হয়তো কিয়ারা মিথ্যে বলেছে। হয়তো সবটা কিয়ারার সাজানো নাটক আমাকে আর তুর্যকে আলাদা করার জন্য। হ্যাঁ তাই হবে! কিন্তু কিয়ারা আমাকে আর তুর্যকে আলাদা করতে চাইবে কেনো? সে যাই হোক আমাকে সবটা জানতেই হবে।
তাড়াতাড়ি শাড়ি পাল্টে নিয়ে কিয়ারার ঘরে চলে এলাম, উদ্দেশ্য কিয়ারা সত্য বলছে নাকি মিথ্যা যাচাই করা। খুঁজাখুঁজির পর যা পেলাম সেটা দেখে আমার মাথায় আকাশ ভেঙে পরলো। আমি ভেবেছিলাম হয়তো কিয়ারা আমাকে আর তুর্যকে আলাদা করার জন্য প্রেগন্যান্ট হওয়ার নাটক করছে। কিন্তু না কিয়ারা তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা। প্রেগনেন্সি রিপোর্ট গুলো চিৎকার করে বলছে কিয়ারা মা হতে চলেছে।
সব শেষ হয়ে গেলো। তুর্য আর কিয়ারা একে অপরকে ভালোবাসে। আর তাদের ভালোবাসার প্রমাণ ওই বাচ্চা। ওদের দুজনের মাঝে আমি এসেছি। আমার জন্য তুর্য কিয়ারা আর ওর অনাগত সন্তানকে অস্বীকার করছে। তুর্য কি আমাকে এতোদিনে একটাবারের জন্য হলেও একটুও ভালোবাসে নি? আমি তো তুর্যকে ভালোবেসে ফেলেছি। আমি কিভাবে থাকবো তাকে ছেড়ে। কিন্তু তার সাথেও যে থাকতে পারবো না। আমি কিয়ারা আর ওর সন্তানের জীবন নষ্ট হতে দিতে পারবো না। আমি চলে যাবো ওদের জীবন থেকে, অনেক দূরে চলে যাবো।
তুর্য বাড়ি ফিরে ফ্রেশ হয়ে হীরকে খুঁজতে থাকে। সারা বাড়িতে কোথাও খুঁজে না পেলে তুর্যর মাথায় রক্ত উঠে যায়। তুর্যর ভয় হয় হয়তো হীর ওকে ছেড়ে চলে গেছে। আর হীরের শত্রুরা এই সুযোগেই রয়েছে কখন হীর তার কাছে থেকে দূরে যাবে। তুর্য গাড়ীর চাবি নিয়ে নিচে নামতে থাকে তখন তনিমা চৌধুরী তাকে জানায় হীর ছাদে আছে। তুর্য একছুটে ছাদে চলে যায়। সেখানে হীরকে দাড়িয়ে থাকতে দেখে যেনো তুর্য প্রাণ ফিরে পেলো। তুর্য হীরকে শক্ত করে জরিয়ে ধরলো বুকে। হীরের গালে, কপালে অসংখ্য চুমু খেলো।
— আমাকে না জানিয়ে তুমি এখানে কি করছিলে? জানো তোমাকে বাড়িতে দেখতে না পেয়ে আমার কি অবস্থা হয়েছিল। কতোটা ভয় পেয়েছিলাম আমি? এক মুহূর্তের জন্য মনে হয়েছিল আমি তোমাকে হারিয়ে ফেলেছি।
এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি তুর্যর চোখের দিকে। সত্যি চোখ দুটোতে আমাকে হারিয়ে ফেলার ভয় ছিল। কিন্তু আমাকে যে হারাতেই হবে। তা না হলে তুর্যর সন্তান যে ওর প্রাপ্য অধিকার পাবে না।
তুর্য আবারো আমাকে জরিয়ে ধরলেন।
— তুর্য আমি আপনার সাথে আর থাকতে চাই না। আমি ডিভোর্স চাই।
— হোয়াট কি বলছো এসব তুমি!! (আমাকে ছেড়ে দিয়ে)
— যা শুনছেন তাই। আমি ডিভোর্স চাই। আপনার সাথে থাকা আমার পক্ষে আর সম্ভব না।
— তোমার কি হয়েছে হীর? হঠাত এসব কথা কেনো বলছো? কি সমস্যা হয়েছে তোমার? কেউ কিছু বলেছে? আমাকে বলো?
— না তুর্য কেউ আমাকে কিছু বলে নি কিন্তু আপনার মতো একটা চরিত্রহীন-লম্পটের সাথে সারাজীবন কাটানো আমার পক্ষে সম্ভব না।
কথাটা শেষ করতে দেরি হলেও গালে একটা চড় পরতে দেরি হলো না। তুর্য এতোটাই জোরে চড়টা মেরেছেন যে আমার মাথা ঝিম ধরে গেছে। তুর্য আবার আমাকে বুকে জরিয়ে নিলেন।
— আই এম সরি কলিজা! আমি তোমার গায়ে হাত তুলতে চাই নি কিন্তু বিশ্বাস করো আমি চরিত্রহীন নই। আমি আজ পর্যন্ত তুমি ছাড়া অন্যকোনো মেয়ের দিকে চোখ মেলে পর্যন্ত তাকাই নি। কোনো মেয়ের প্রতি আমার কোনো ইন্টারেষ্টই ছিল না কখনও। কারণ সেই শুরু থেকে আমি তোমার মোহে আটকে আছি।
— কোনো মেয়ের দিকে চোখ তুলেও তাকান নি কিন্তু কিয়ারাকে প্রেগন্যান্ট করে এখন ছেড়ে দিতে পারছেন। একটাবারও ভাবলেন না ওর বাচ্চার কি হবে! বাবার পরিচয় ছাড়া কিভাবে এই সমাজে বড় হবে ওই শিশু।
— কি বলছো তুমি এসব! মাথা ঠিক আছে তোমার? কিয়ারাকে আমি প্রেগন্যান্ট করেছি!! তোমাকে কে বলেছে কিয়ার প্রেগন্যান্ট?
— আমি কিয়ারার প্রেগনেন্সি রিপোর্ট দেখেছি। তিন মাসের প্রেগনেন্সি চলছে। আমি আপনার আর কিয়ারার ফোনে কথা শুনেছি আপনি এই বাচ্চাকে অস্বীকার করছেন এখন। সেটা শুধু মাত্র আমার জন্য। তাই আমি আপনাদের জীবন থেকে চলে যাবো। আপনি আপনার ভালোবাসা আর বাচ্চা নিয়ে সুখে থাকবেন।
তুর্য আবারো ঠাসস্ করে একটা চড় বসিয়ে দিলো আমার গালে। এতোক্ষণ নিজেকে শক্ত রাখলেও দ্বিতীয়বারের চড়টা সহ্য করতে পারলাম না। ছোট বাচ্চাদের মতো কেঁদে দিলাম।
— চুপ একদম চুপ। একদম বাচ্চাদের মতো ন্যাকা কান্না করবা না। কি মনে করো নিজেকে? মাদার তেরেসা নাকি আরো বড় কিছু? পুরো দুনিয়ার মানুষের সুখের গ্যারান্টি তুমি নিয়ে ঘুরো? কিয়ারা বলেছে ও আমার সন্তানের মা হতে চলেছে। একটাবার আমাকে জিজ্ঞেস করেছো যে এটা কতোখানি সত্যি? মনে রেখো হীর সবসময় চোখে দেখা বা কানে শোনা সত্যি হয় না। দৃষ্টিসীমার আড়ালেও সত্য লুকায়িত থাকে।
তুর্যর কথায় এখন আমার মাথা কাজ করছে। হ্যাঁ এটা আমি কেনো ভাবি নি। কিয়ারা তখন ফোনে কেনো এই কথাগুলো বলছিল? তুর্য আর সে তো একই বাড়িতে থাকে। সামনা সামনিও কথাগুলো বলতে পারতো। তুর্যকে এভাবে অবিশ্বাস করে আমি অন্যায় করেছি। সত্য মিথ্যা যাচাই না করেই এভাবে রিয়েক্ট করা ঠিক হয় নি। ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদছিলাম আর কথাগুলো ভাবছিলাম। তুর্য আবার বলতে শুরু করলেন,
— তুমি যেই কিয়ারা সত্যবাদীর কথা শুনে আমাকে অবিশ্বাস করেছো চলো তার কাছে। এখনই সত্য মিথ্যা প্রমাণ হয়ে যাবে।
তুর্য আমার হাত ধরে টেনে আমাকে নিচে নিয়ে গেলেন। কিয়ারার রুমের বাইরে আমাকে দাড় করিয়ে তিনি ভিতরে ঢুকলেন।
— কিয়ারা!
— তুর্য তুই, এই সময়?
— তুই নাকি প্রেগন্যান্ট?
তুর্যর প্রশ্নে কিয়ারার চেহারার রং পাল্টে গেলো হঠাত। আমতা আমতা করে কিয়ারা বললো,
— কি বলছিস এসব?
— তুই খুব ভালো করেই জানিস আমি কি বলছি। তুই প্রেগন্যান্ট এটা সত্যি হলেও এ বাচ্চার বাবা আমি না। এটা তুইও জানিস।
— তুর্য তুই ভুল বুঝছিস। এসব মিথ্যে। হীর তোকে বানিয়ে বানিয়ে বলেছে সব।
তুর্য ঠাসস্ করে কিয়ারার গালে একটা চড় বসিয়ে দিলো।
— একটা কথাও মিথ্যে না। তুই হীরকে এসব বলেছিস ইচ্ছে করে যাতে আমাকে আর হীর কে আলাদা করতে পারিস। আর এসব যদি মিথ্যেই হয় তাহলে তুই কিভাবে জানলি এসব আমাকে হীর বলেছে। কি হলো চুপ করে আছিস কেনো। বল।
— তুর্য,,,,,
— এখন তুই প্লিজ টিভি সিরিয়ালের লজিক দিস না যে আমি ড্রিংক করে তোর কাছে গিয়েছিলাম, পরে সব ভুলে গেছি। আর এমনিতেও আমার কাছে আমার ইনোসেন্সের প্রমাণ আছে। তোর প্রেগনেন্সি রিপোর্টে লেখা যে তোর তিন মাস চলছে তাই না? কিন্তু তুই তো ছয় মাস যাবত বাংলাদেশে ছিলি না। আর আমিও গত ছয় মাসে দেশের বাইরে যাই নি। তাহলে তুই কোন সাহসে বললি এটা আমার বাচ্চা?
— তুর্য আমাকে ক্ষমা করে দে। তুই তো জানিস আমি তোকে অন্য কারো সাথে সহ্য করতে পারি না। হীর কে তুই আমার চেয়ে বেশি গুরুত্ব দিস এটা আমার সহ্য হয় না।
— Are you mad Kiaara? তুই বুঝতে পারছিস হীর আমার ওয়াইফ। আমার জীবনে সবার চেয়ে ওর গুরুত্ব বেশি।
— কিন্তু তুর্য আমি তোর ছোট বেলার বন্ধু।
— Shut up Kiaara. Just shut up. তোর এই লেইম লেইম রিজন আমি আর নিতে পারছি না। তোর একটা বোকামির জন্য আমার আর হীরের সংসার ভেঙে যেতে পারতো।
— সরি তুর্য আমি হীরের কাছে ক্ষমা চয়ে নেবো।
— আই ডোন্ট নিড ইউর সরি। তুই কালকেই এ বাড়ি থেকে বিদায় হবি। যদি কালকে এই বাড়ি থেকে না যাস তাহলে ফুপি আম্মুকে সব বলতে বাধ্য হবো আমি।
— প্লিজ তুর্য আম্মু কে কিছু বলিস না। আম্মু জানতে পারলে অনেক কষ্ট পাবে।
— আমি তোকে দুইটা অপশন দিয়েছি। চয়েজ ইজ ইউরস্।
তুর্য কিয়ারার রুম থেকে বেরিয়ে আমাকে একটা রাগি লুক দিয়ে চলে গেলেন। আর আমি, লজ্জায় মাটিতে মিশে যেতে ইচ্ছে হচ্ছে। এমন একটা মেয়ের কথা শুনে আমি আমার স্বামীকে সন্দেহ করেছি। আমার কথায় তুর্য অনেক কষ্ট পেয়েছে। তার কাছে ক্ষমা চাইতে হবে আমার।
ঘরে গিয়ে দেখি তুর্য শুয়ে পরেছে। কিন্তু এখনও ঘুমায় নি। তুর্যর সামনে গিয়ে কয়েকবার কান্না কান্না চেহারা বানিয়ে ডাকলাম। কিন্তু তুর্য সাড়া দিচ্ছেন না। বোঝাই যাচ্ছে সে অনেক রাগ করেছেন।
কিছু একটা ভেবে তুর্যর উপর শুয়ে উনাকে জরিয়ে ধরলাম। আমার এই কাজে তুর্য রাগি দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আমার দিকে।
— এভাবে উপরে উঠলে কেনো? নামো।
— না নামবো না। আমাকে প্লিজ ক্ষমা করে দেন। আর কখনও এমন হবে না। সত্যি এবারের মতো ক্ষমা করা যায় না?
তুর্য আমার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে আমাকে বুকে জরিয়ে নিলেন। যদি সারাজীবন এভাবেই এই বুকে মাথা দিয়ে ঘুমিয়ে থাকতে পারতাম। কখন যে ঘুমপরী চোখে নেমে এসে কে জানে।
রাত ৩ টা বাজে হীর তুর্যর বুকে ঘুমিয়ে আছে। কিন্তু তুর্যর চোখে ঘুম নেই। সে হীরের চুলে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে আর কিছু একটা ভাবছে। রায়ান হীরকে ড্রাগস্ দেয় নি এটা তুর্যর বিশ্বাস হয়ে গেছে। কিন্তু যদি রায়ান এসবের পিছে না থেকে থাকে তাহলে কে করেছে এসব? রায়ানের সাথে আরেকবার দেখা করতে হবে।
।
।
।
।
কিয়ারা কারো সাথে ফোনে কথা বলছে।
— প্লিজ বেবি আমাকে ভুল বুঝো না। আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি হীরকে তুর্যর জীবন থেকে সরানোর কিন্তু তুর্যর ভালোবাসা বারবার হীরকে আটকে দেয়। আজকে আমার প্ল্যানটা একদম ফুলপ্রুভ ছিল কিন্তু তুর্য যে হীরের পেট থেকে সব কথা বের করে নেবে আমি বুঝতে পারি নি। সত্যি বিশ্বাস করো।
ওপাশ থেকে– Yeah Kiaara baby I know that. You are good for nothing.
— এমনভাবে বলো না প্লিজ। আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি।
— ভালোবাসলেই হয় না। ভালোবাসা প্রমাণ করতে হয়। যেটা তুমি পারো নি। তাই তোমার মতো একটা ইউজলেস কে দিয়ে কিছুই হবে না। এখন যা করতে হবে আমাকেই করতে হবে।
— হ্যালো বেবি! বেবি!
কিয়ারা ফোন রেখে কান্নায় ভেঙে পরলো।
পরদিন সকালে হীর ঘুম থেকে উঠে তুর্যকে কোথাও খুঁজে পেলো না।