সংসার পর্ব-১৬

0
1418

#সংসার
#পর্ব_১৬

#লেখিকা_সুরাইয়া_ইসলাম_সানজি।

আমি চোখের জল মুছে সিদ্ধান্ত নিলাম এভাবে কষ্ট পাব না। রুদ্র স্যারের নিজের মুখ থেকে সবটা শুনব কেন করল এমন? এর পিছনে শুধু কি আমার ভুল নাকি অন্য কোন সত্যিই লুকিয়ে আছে। যতই যা হোক এটা আমার সংসার। আমি গুছিয়ে রাখব আমার সংসারের যত্নে গড়া ভালোবাসার জিনিস গুলো।

সংসার মানেই তো সংগ্রাম সেখানে আমি কেন সংগ্রাম না করেই হেরে যাব। রুদ্র স্যার যা করেছে তার শাস্তি তিলে তিলে পাবে। আমি কেন কোন কিছু না করে শাস্তি পাব? হেরে যাওয়ার মেয়ে তো আমি না। ছোট বেলায় এত অত্যাচারের মধ্য দিয়ে বড় হলাম তখন তো কখনও বাবা আমাকে হেরে যাওয়ার গল্প শুনাইনি। তাহলে মনে মনে কেন এই কথাটা ঘুরপাক খাচ্ছে যে, আমি সবকিছু ছেড়ে পালিয়ে যাই। নাকি সত্যিই ভালোবাসার কাছে সবাই পরাজিত।

৩১.
রুদ্র স্যার আজ বিকেল থেকে অনেক ব্যস্ত। সব কাজে তাকে প্রয়োজন। সবাইকে সব কিছু দেখিয়ে দিচ্ছে। কোথায় কোনটা রাখবে, কোথায় কি বসাবে, কিভাবে করবে।
আমি অনেকক্ষণ থেকে স্যারের জন্য হল রুমের এক পাশ থেকে ওপাশে হাঁটছি। কখন ফ্রি হবে আর কখন সব কিছুর সত্যিই টা জানব। ছাদ থেকে সন্ধ্যার দিকে কাজ করে নিচে নামছিল তখনই আমি সিড়ির পাশের ছোট্ট চিলেকোঠায় ঘরটিতে রুদ্র স্যারকে টেনে নিয়ে আসি।

“উফফ মেঘ তুমি। এভাবে টান দিয়ে ভয় পাইয়ে দিলে তো। কিছু বললে এমনি ডাক দিতে টান দেওয়ার কি হলো।”

“আমার আপনার সাথে জরুরী কথা আছে।”

স্যার এবার সিরিয়াস ভঙ্গিতে দাড়িয়ে, বাঁকা হেসে বলল-
“জরুরী কথা নাকি অন্য কিছু হ্যাঁ, বরকে তো আজকাল চোখের আড়াল হতেই দেও না। আবার কাছে আসলেও লজ্জায় গুটিয়ে যাও।”

“দেখুন আমি ফাজলামি মুডে নেই। বললাম তো কিছু কথা আছে।”

রুদ্র স্যার এবার সোজা হয়ে দাড়িয়ে, শার্টের কলার ঠিক করতে করতে বলল-
“কী কথা বলো তো। একটা কথা আছে এইটুকু বলছ কিন্তু কী কথা সেটা বলছ না। নাকি রোমান্স চাই, লজ্জায় বলতে পারছ, বলো তো?”

আমি বুঝলাম রুদ্র স্যারকে এভাবে বললে ফাজলামি করেই যাবে। তাই সরাসরি আর কিছু না বলে বললাম-

“আপনার সাথে রুশা ম্যামের ব্যাপারে জানতে চাই। আমি এখন আপনার স্ত্রী । আপনি মানুন বা না মানুন আমি মানি। আর আমার সম্পূর্ণ অধিকার আছে আপনার সব কিছু জানার। রুশা ম্যামের সাথে অতীতে কোন কিছু থাকলে সেটা শুধুই অতীত। কিন্তু বর্তমানে তাকে আপনার জীবনে টানতে পারবেন না যতদিন আমি আপনার জীবনে আছি।”

আমার কথা শুনে রুদ্র স্যার মুচকি হেসে আমার দিকে এগিয়ে আসলে আমি পিছিয়ে যাই। আমাকে পিছিয়ে যেতে দেখে সে আমার আরো কাছে আসে। আমি তাকে আরো কাছে আসতে দেখে ভয়ে ভয়ে পিছিয়ে যেতে নিলে দেয়ালে পিঠ ঠেকে যায়। আমি পাশ ফিরে সেখান থেকে চলে যেতে নিলে রুদ্র স্যার দুই হাত দিয়ে দেয়ালে আটকে দিয়ে আমার নাকের সাথে নাক ঘসে ঠোঁট কামড় দিয়ে বলে-

“কেন বেবী তুমি জেলাস নাকি? রুশা আর আমার ভালোবাসা থাকতেই পারে যেহেতু তুমি আমাকে স্বামী হিসেবে মানো না, কথায় কথায় স্যার বলে ডাকো।

আর আমার সাথে রুশার অতীতে কিছু ছিল না কিন্তু বর্তমানে অনেক কিছু আছে। আমি চাইলেই তো আর রুশাকে ছারতে পারিনা তাই না? এখন তুমি যদি মন খুলে ভালোবাসতে পার, বাঙ্গালী বউদের মতো ওগো বলে ডাকতে পার তবে আমি ভেবে দেখব রুশার সাথে সম্পর্কটা ইতি টানা যায় কিনা। তাছাড়াও বউ ছারা রোমান্স জমে নাকি?”

আমি রুদ্র স্যারের কথা শুনে অবাক হয়ে গেলাম। আমিকে জেলাস ফিল করানোর জন্য এত কিছু। এতটা নিচে নামতে পারল? আমাকে যদি ভালোই বাসতো তবে আমার কাছে তার চাহিদা গুলো সব বলতে পারতো। এভাবে ঠকিয়ে জেলাস ফিল করাতো না।

আমার এসব ভাবতেই চোখ থেকে কয়েক ফোঁটা জল পড়ে। আমাকে হঠাৎ কাঁদতে দেখে রুদ্র স্যার চমকে যায়। আমাকে শান্ত করার জন্য গালে হাত দিতেই আমি তার হাত ছিটকে ফেলে রাগে গালে একটা থাপ্পড় মারি।

দুহাতে শার্টের কলার শক্ত করে ধরে কাঁদতে কাঁদতে বলি- “আমি কখনও আপনাকে ক্ষমা করব না। আপনি শুধু আমার সাথে প্রতারণা করেন নাই আমার বিশ্বাস ভেঙ্গেছেন। আমার বাঁচার সব ইচ্ছে শেষ করে দিয়েছেন। ওই ভিডিও, ওই ছবি, আর মেসেজ আমাকে জ্যান্ত লাশ বানিয়ে দিয়েছে। আমি থাকব না আপনার সাথে কখনই না। আপনি একটা প্রতারক। যতবার ভাবে সব ভুলে যাব ততবারই আপনাদের ছাদের দৃশ্য গুলো মনে পরে যায়। যতবার ভাবি সংগ্রাম করব ততবার আমি ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যাই। সব ছেড়ে চলে যাব আমি আমার বোনের মেয়েকে এই নরকে রেখে যাব না। ওকেও সাথে করে নিয়ে যাব।

“মেঘ কি বলছো, শান্ত হও। কিসের ভিডিও কী,,,,,”

আমি রুদ্র স্যারকে আর কিছু বলতে না দিয়ে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে সেখান থেকে চলে আসি। বার বার নতুন বাহানা তৈরী কেন করছে? আমাকে তার প্রয়োজন না হলে কেন নিয়ে আসল এই বাড়িতে, কেন এত মায়ায় বাঁধলো? শুধুই কি পূর্ণতার জন্য? তাকে প্রয়োজন হলে আমাদের ওই বাড়িতে দিয়ে আসত। মায়ের মমতায় বড় করতাম তবে কেন আমাকে এভাবে ঠকালো।

আমি তারপর থেকে রুদ্র স্যারকে এড়িয়ে চলেছি। স্যার এর মাঝে কয়েক বার ডাকলেও আমি কোন না কোন কাজের বাহানা দিয়ে চলে এসেছি। হয়ত পূর্ণতাকে খাওয়াচ্ছি, নয়তো বাসার কাজ করছি বলে এড়িয়ে গেছি।

সন্ধ্যায় রাইমা আপুর রুমে বসে পূর্ণতাকে নিয়ে আনমনে বসে খেলছিলাম। তখন রাইমা আপু একটা বোরকা পরে অন্য একটা বোরকা হাতে নিয়ে আমার দিকে ছুড়ে দিয়ে বলল-

“মেঘ তাড়াতাড়ি বোরকা টা পরে নেও। আমাদের বের হতে হবে।”

“কেন আপু কোথায় যাবে। আর পূর্ণতা এখনো জেগে আছে?”

“তুমি তাড়াতাড়ি বোরকাটা পরে নাও। শুধু পনেরো মিনিট লাগবে। আর পূর্ণতাকে কারো কাছে মেনেজ করে রেখে যাবোনি। তুমি তাড়াতাড়ি তৈরি হও।”

আমি আর কথা না বাড়িয়ে পাঁচ মিনিটের ভিতর তৈরী হয়ে নিলাম। রাইমা আপু পূর্ণতাকে কোলে নিয়ে রুদ্র স্যারের রুমে জেনি আপুর কাছে নিয়ে গেল। আমি মনেমনে ভয় পাচ্ছিলাম যদি রুদ্র স্যার রুমে থাকে কিন্তু রুমে আসার পর দেখি জেনি আপু আর আকাশ ভাইয়া বসে বসে ফোন টিপছে। রুদ্র স্যার রুমে নেই দেখে স্বস্তির নিশ্বাস নিলাম।

“হেই জেনি আপু তুমি কি ফ্রি আছো। পূর্ণতাকে রাখতে পারবে?”

“হ্যাঁ আমি একদম পাক্কা ফ্রি আছি। দাও দাও আমার ছোট মা টাকে কোলে দাও। কিন্তু তোমারা দুজন এভাবে বোরকা পরছো কেন, কোথায় যাচ্ছ?”

রাইমা আপু লজ্জা পাওয়ার ভঙ্গিমায় বলল-
“আসলে আপু নিচে আমাদের জন্য রাকিব সাহেব অপেক্ষা করছেন। আর বিয়ের একদিন আগে দেখা করব বাড়ির লোকজন দেখে কি ভাববে তাই বোরকা পরে নিলাম।”

“হ্যাঁ তা বুঝলাম, কিন্তু মেঘকে নিয়ে যাচ্ছ কেন? একা গেলেই তো পারতে।”

“আসলে আপু আমাদের দুজনের দেখা করতে লজ্জা করছিল। তাই রাকিব সাহেব বলল মেঘকে যেন নিয়ে যাই। তাছাড়া আমিও একা যাবো কিভাবে তাই আর কি।”

“তা কাল তো বিয়ে বাসর ঘরে ডুকলেও কি মেঘকে নিয়ে ডুকবে? তোমার যা ভাই মেঘকে খুজে না পেলে আস্ত রাখবে না কিন্তু।”

৩২.
জেনি আপুর কথা শুনে আকাশ ভাইয়া হাহা করে হেসে ওঠলো। আর রাইমা আপু লজ্জায় গুটিয়ে গেল। তা দেখে আকাশ ভাইয়া বলল-
“দেখ দেখ রাইমাকে দেখে কিছু শেখ। বরের নাম শুনে বোন আমার লজ্জায় লাল হয়ে গেল আর তুই কিনা বরকে নাম ধরে ডাকিস তাও আবার সোজা আকাইশ্যা বলে।”

আকাশ ভাইয়ার কথা শুনে জেনি আপু হেসে বলল-
“হে হে আমার দ্বারা এসব হবে না। এত যে লুতুপুতু প্রেম করলি তাদের থেকে রোমান্টিক ডাকে মন ভরেনি?

জেনি আপু পূর্ণতার কপালে চুমু খেয়ে আবার বলল-
“পারলে আমাকে পূর্ণতা মত লক্ষী একটা মেয়ে এনে দিস, তোর সব স্বপ্ন পূরন করব।”

“সেগুরে বালি। তোর মেয়ে আবার হবে আবার লক্ষী? আল্লাহ কাছে দোয়া কর আমার মতো যেন মেয়ে হয়।”

আকাশ ভাইয়ের কথা শুনে তাদের দুজনের ভিতর আবার জগড়া বাঝলো। আমরা আর কিছু না বলে বেড়িয়ে আসলাম। তাদের সাথে কথা বাড়ালে আজ আর এখান থেকে বের হতে হবে না।
রুম থেকে চলে আসার সময় দেখি রুদ্র স্যার রুমে ঢুকছে। আমি রুদ্র স্যার কে ঢুকতে দেখেই দরজার একপাশে ভয়ে চলে গেলাম। সেই সময় রাগের মাথায় কত কি বললাম আমার একটা থাপ্পড়ও দিলাম না জানি এখন একা পেলে কী না কী করে।

আমাকে দেখে রুদ্র স্যার গম্ভীর গলায় বলল-
“মেঘ আমার ফোনটা কই দেখছি না তো? তুমি কি জানো?”

আমি মাথা দুলিয়ে না বলে তাড়াতাড়ি রুম থেকে বেড়িয়ে যাই।
সেই রাতে ওই ভিডিও আর ছবি দেখার পর রাগে ফোনটা আছাড় মারি। তখন রুমের কোথায় গিয়ে পরছে জানি না।
,
,

আজ আপুর বিয়ে। পার্লার থেকে লোকজন আসে রাইমা আপুকে সাজিয়ে দিবে বলে। তখন জোর করে রাইমা আপু আমাকেও সাজিয়ে দেয়। সেই সাথে জেনি আপু আর রুশা ম্যাম ও।
আমি গোল্ডেল কালারের একটা গাউন পরে, চুল গুলো খুলে দিয়েছি। সেই সাথে ঠৌঁটে নুড কালারের লিপস্টিক, চোখ কালো কাজল, হাত ভড়া চুড়িতে নব বধুর মতো লাগছে।
রাইমা আপুকেও আজ ভিষন সুন্দর লাগছে, লাল কালারের লেহেঙ্গা পরছে। জেনি আপু পিংক কালারের একটা গাউন পরেছে সব মিলিয়ে সবাইকে অসম্ভব সুন্দর লাগছে। তখনই পাশের রুম থেকে রুশা ম্যাম আসে। সে একা পাশের রুমে গিয়ে সাজছিলো। রুশা ম্যামকে আজ অসম্ভব সুন্দর লাগছে আকাশি কালারের সাড়িটা তার ফর্সা গায়ে ফুটে আছে। কিন্তু রুশা ম্যাম উচ্চতায় বেশ লম্বা হওয়ায় সাড়িটা তেমন মানাচ্ছে না। তবুও মনে হচ্ছে তার রূপ আজ উপছে পরছে। তাকে দেখে রাইমা আপু বলল-

“রুশা আপু আজ যা লাগছে না তোমাকে। আকাশি কালারের সাড়িতে আকাশের পড়ি মনে হচ্ছে। আকাশি কালার কিন্তু ভাইয়ার খুব পছন্দের কালার।”

তখন জেনি আপু বলল-
“না রাইমা তুই যাই বলো আজ কিন্তু সব থেকে মেঘকে বেশি সুন্দর লিগছে। সব দিক থেকে পারফেক্ট। আমার তো মনে হচ্ছে জামাই কনফিউজড হয়ে যাবে কোনটা তার বউ ভেবে।”

জেনি আপুর কথায় আমি খিলখিল করে হেসে ওঠি। আসলেই আজ সবাইকে বউ বউ লাগছে।

অনুষ্ঠানের সময় রুশা ম্যাম রুদ্র স্যারের আসে পাশে ঘুরাঘুরি করলেও রুদ্র স্যার ইগনোর করছে। আমি দূর থেকে সবটা দেখছি আর মনে মনে হাসছি। স্যার বেশ কয়েক বার আমি একা কোথাও থাকলে আমার পাশে এসে কথার বলার চেষ্টা করলে আমি বার বার ইগনোর করে চলে এসেছি।
,

রাইমা আপুর বিদায়ের সময় আমাকে জড়িয়ে ধরে অনেক্ষন কাঁদলো। কৃতজ্ঞতা জানালো আমার জন্যই আজ রাকিব ভাইকে পেয়েছে বলতেই আবার ডুকরে কেঁদে ওঠে শক্ত করে জড়িয়ে ধরল। রুদ্র স্যারকে রাইমা আপু জড়িয়ে ধরলে স্যারকে দ্বিতীয় বারের মতো কাঁদতে দেখলাম।
আসলেই ছেলেরা সহজে কাঁদে না তবে তারা প্রিয় মানুষের কাছে বরাবরের মতো দূর্বল। শাশুড়ি মা খুবই কঠিন একজন নারী তবে আজ সে ও একমাএ মেয়েকে জড়িয়ে ধরে বিদয়ের সময় হু হু করে কেঁদে ওঠলো। আসলে বিদায় তো এমনই। হোক সুখের বা দুঃখের তা সবসময়ই বেদনাদায়ক।

,

আমি মন খারাপ করে রুমে বসে আছি। এই বাড়িতে কেউ যদি আমার সঙ্গ দেওয়ার মতো থাকত সে ছিল রাইমা আপু আজ সেও চলে গেল। তবে মন ভিতরে শান্তি বয়ে যাচ্ছে। আজ আবার একটা ভালোবাসার সংসার শুরু হবে।

সন্ধ্যায় দিকে আমি রুদ্র স্যারের বেডের উপর বসে পূর্ণতাকে খাবার খাওয়াচ্ছিলাম। বাড়িতে কয়েক জন মেহমান ছাড়া বাকি সবাই চলে গেছে। তখন জেনি আপু রুমে ডুকতে ডুকতে বলল-
“মেঘ তোমাদের বাসায় ঝাড়ু টা কই বলো তো। রুমটা খুব নোংরা।

“আপু তুমি বসো। আমি দেখছি।”

“আরে না তুমি বাবুকে খাওয়াও আমি দেখছি। আর রুদ্র তো বাহিরের কাউকে রুমে এলাউ করে না তার থেকে বরং আমি নিজেই ঝাড়ু দেই।”

পূর্ণতা ঘুমায়ে গেলে আমি ওঠে নিজেই ঝাড়ু দেই। জেনি আপু ঝাড়ু খুজে না পাওয়ায় কান্ত হয়ে পূর্ণতার পাশে ঘুমিয়ে গিয়েছে। আমি ঝাড়ু দিতে গিয়ে টেবিলের নিচে রুদ্র স্যারের ফোনটা বন্ধ অবস্থায় কুড়িয়ে নেই।
তখনই রুদ্র স্যার রুমে এসে আমাকে দেখে আমার হাত ধরে দোলনায় বসায়।

আমি ছাড়া পাওয়ার জন্য ছটফট করলে আমাকে শক্ত করে কোমর জড়িয়ে শক্ত করে ধরে বসে।

“কি সমস্যা মেঘ? আমাকে ইগনোর করছো কেন? তোমার সমস্যা না বললে আমি কিভাবে বুঝব বলো। আমার ভুলটা কি বলতো, কেন ইগনোর করছ আমাকে?”

আমি কিছু না বলে একটু ছাড়া পেয়ে ওঠতে গেলেই রুদ্র স্যার ওঠে শক্ত করে আমাকে বুকের সাথে জড়িয়ে নেয়। তখনই আকাশ ভাইয়া রুমে ডুকতে ডুকতে বলে-

“ভাই বউয়ের সাথে পরে রোমান্স করার আগে দরজা আটকিয়ে নিতে হয়। তুই তো আগে আমার সব কাজে বাঁধা দিয়ে বলতি সবুরে মেওয়া ফলে। নিজের বেলায় বুঝি আর সবুর সহ্য হচ্ছে না।”

আকাশ ভাইয়ের কথা শুনে রুদ্র স্যার আমাকে ছেড়ে দিলে আমি দৌড়ে রুমে থেকে বের হয়ে ছাদে ওঠি।

আমি ছাদের একপাশে দাড়িয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে কাঁদতে থাকি। তখনই হাতে রুদ্র স্যারের ফোনটার দিকে চোখ পরে।
ফোনটা সেদিন ছিটকে পড়ায় অফ হয়ে গেছে আমি অন করে ছাদের গ্লিলের পাশে দাড়িয়ে আবার আগের সেই মেসেজ গুলো অন করতেই সেই ভিডিও টা চোখে পরে। ভিডিও আর ছবি দেখে হাত কাঁপতে কাঁপতে ফোনটা গ্লিলের ওপর পাশে ছাদের কর্নারে পরে যায়।

আমি সেখান থেকে ফোন নিতে গেলে কোথা থেকে রুদ্র স্যার এসে বুকের জড়িয়ে ধরে। স্যারের সারা শরীর কাঁপছে। কিছু বলতে পারছেনা। আমাকে ছেড়ে দিয়ে কিছুক্ষণ আমার মুখের দিকে তাকিয়ে আমার ঠোঁটে তার ঠোঁট ডুবিয়ে দেয়।

আমি কিছু না বুঝে আবাক হয়ে দাড়িয়ে থাকি। স্যার কিছুক্ষণ পর আমাকে ছেড়ে দিয়ে কাঁপা কাঁপা গলায় বলে-

“কি কি কর করিছিলে মে মেঘ, আমার কথা একবারও ভাবলে না? অন্তত পূর্ণতার কথা একবার ভাবতে। সামান্য ভুলের শাস্তি এত বড় দিতে একবারও তোমার আত্মা কাপল না? আমি আর দুইটা মিনিট পর আসলি কি হতো?”

#চলবে,,,,
[খুব তাড়াতাড়ি রহস্য সামনে আসছে। কোন কিছু ভুল হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।]

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে