Sunday, October 5, 2025







বাড়ি"ধারাবাহিক গল্প"রৌদ্দুর তোমার নামে পর্ব-৪২+৪৩

রৌদ্দুর তোমার নামে পর্ব-৪২+৪৩

#রৌদ্দুর_তোমার_নামে🍂
#কায়ানাত_আফরিন(মাইশা)
পর্ব:৪২
.
সময়ও কেমন করে যেন চলে যায় অবিরাম স্রোতের ধারায়।কোথায় যায়, কখন কিভাবে চলে যায় তা মানুষ ধারনাই করতে পারে না।আয়াত আর মাইশার বিয়ে হয়েছে আজ ৯ মাস পূর্ণ হতে চলেছে।এই বিষয়টা ভেবেই ঠোঁটে এক চিলতে হাসি ফুটে ওঠে মাইশার।এখন প্রায় মধ্যরাত।তবুও ঢাকায় যেন বিন্দুমাত্র নীরবতার রেশ নেই।শুধু জনমানবের পরিমাণ কমে রাস্তাঘাটে যানবাহনের লাইটের প্রতিফলন অবলীলায় এক চমৎকার রূপ ধারন করেছে।
বারান্দায় গরম গরম কফির সাথে এই বিষয়টাই চরমভাবে উপভোগ করছে সে।আয়াত পাশের রুমে অফিসের কাজ করছে আর খাওয়া-দাওয়া করে বাকি সদস্যরা যার যার কাজে ব্যস্ত।মাইশাও এতক্ষণ খালামণির সাথে আনন্দ মজলিশে মেতে ছিলো কিন্ত এখন সে একাই নিশি শহরের সৌন্দর্য অনুভব করছে।
.
আয়াত ! এই নামটা এখন তার হৃদয়ের সাথে জড়িত । তার জীবনচক্র পাল্টে দিতে মুখ্য ভূমিকা রাখে আয়াত।মাইশা কখনোই ভাবতে পারিনি যে আদ্রাফের মতো পুনরায় সে কাউকে মনে জায়গা দিতে পারবে।যাকে সে একবিন্দুও হারানোর কল্পনা করতে পারবে না।
.
হঠাৎ পেছন থেকে কোমড়ে কারও হাতের স্পর্শ পেয়ে ঘোর কাটে মাইশার।আয়াত তার কাধে নিজের থুতনি রেখে ক্লান্তি গলায় বলে ওঠে…..
.
”এখনো ঘুমাওনি যে?”
.
” তোমার জন্যই অপেক্ষা করছিলাম।”
.
আলতো হাসে আয়াত।নিজের মুখটা মাইশার চুলে ডুবিয়ে নিতেই মাইশা চোখ বন্ধ করে নেয় আবেশে।আয়াত যতবারই ওর কাছে আসে ততবারই ওর অনুভূতিটা দমিয়ে রাখতে পারে না মাইশা।আয়াত চুলে মুখ ডুবিয়ে বলে ওঠে……….
.
”শুধু কি আমার অপেক্ষাই করছিলে নাকি আমার কথা ভাবছিলে?”
.
”দুটোই।”
.
মাইশাকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে নেয় আয়াত।রুমের ডিমলাইটের আলোটা তীর্যকভাবে বারান্দায় মাইশার মুখে পড়ছে।আর এই বিষয়টা আয়াতের কাছে দারুন লাগে।ওর গালে আলতো করে নিজের হাত স্পর্শ করতেই মাইশা আয়াতের টিশার্টটি খামচে ধরে।আয়াত দুষ্টু হেসে বলে ওঠে…..
.
”এই গালটিতে তোমায় বিয়ের আগে কত যে থাপ্পড় মেরেছি তার কোনো ইয়াত্তা নাই।আর বিয়ের পরে এই গালে কিস করতে করতে গালটা এখন আমার থাপ্পড়ের জন্য কান্না করে।দেবো নাকি………?”
.
ভ্রু কুচকে ফেলে মাইশা।আয়াত এখনও মুচকি মুচকি হেসে যাচ্ছে।কত সুন্দর একটা মোমেন্ট ছিলো আর আয়াত তার উল্টাপাল্টা কথা দিয়ে পুরাই বারোটা বাজিয়ে দিলো।রাগ করে আয়াতকে সরিয়ে সে রুমে যেতেই আয়াত তার হাত টেনে বারান্দার গ্রীলের সাথে মিশিয়ে ফেলে।
.
একটু ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে মাইশা আয়াতের দিকে তাকাতেই তার দৃষ্টি আয়াতের চোখে আটকে যায়।আয়াতের কালচে বাদামী চোখযুগলের প্রখর দৃষ্টি মাইশার মুখশ্রীর দিকে ডুবে আছে।ওর চোখের বড় ঘন ঘন পাপড়িগুলো খুব করে টানছে মাইশাকে।আর ওর বামগালের তিলটা যতবারই ওর নজরে পড়ে ততবারই ভয়ঙ্কর কোনো কাজ করতে মন চায় তার।শুধু আয়াতের টিজ মারার কথা ভাবলেই আর এগোয় না সে।
.
”মাইশু……..”
.
আয়াতের এই একটা কথাই মাইশার রাগকে মুহূর্তেই পানির সাথে মিলিয়ে দেয়।কেননা মাইশার কাছে আয়াতের মুখে শোনা ডাকটি খুবই নিজের মনে হয় যার নুন্যতম ভাগ সে কাউকে দিতে পারবে না।একটু আগে আয়াত দুষ্টুমির স্বরে তাকে থাপ্পড় মারার কথা বললেও কয়েক সেকেন্ডের ব্যাবধানে তার দুষ্টু মুখ কিভাবে এতো গম্ভীর হয়ে গেলো তাই বুঝতে পারছে না মাইশা।
.
”একটা কথা বলার ছিলো তোমাকে……..”
.
”বলো?”
.
”কিভাবে বলবো …………বুঝতে পারছি না।”
.
” তোমার কি হয়েছে বলোতো? এই প্রথম তোমায় কথা বলার সময় এতো hesitate feel করতে দেখছি……..”
.
”আগামীকাল আম্মুর ফ্রেন্ডের ফ্যামিলি আ্যমেরিকা থেকে আসবে একথাটা আম্মু বললো না?”
.
”হ্যাঁ……খালামণিতো বললো।”
.
” ওই আন্টির একটা মেয়ে আছে ; জেসমিন নামের।যদিও আ্যমেরিকায় থাকতে আমরা ফ্রেন্ডসরা সবাই তাকে জেসি নামেই ডাকতাম।বিকজ…..আ্যমেরিকানরা অলয়েজ নামের শর্ট ফ্রমই ইউজ করতো।আমরা কিন্ডারগার্ডেন…..হাইস্কুল…..আন্ডারগ্রাজুয়েট……পোস্ট-গ্রাজুয়েট সবই একসাথে কমপ্লিট করি। সি ইজ নট মাই বেস্টফ্রেন্ড বাট উই আর বেস্ট ক্লাসমেট।”
.
”সবই তো বুঝলাম……..বাট আমায় এসব কথা বলার মানে?”
.
কিছু একটা বলতে গিয়েও থেমে যায় আয়াত।মাইশা বুঝতে পারছে না আয়াত থেমে গেলও কেন…..একটা লম্বা শ্বাস নিয়ে হুট করে আয়াত বলে ওঠে………
.
”সী লাভস মি….”
.
মাইশার একথাটা বুঝতে প্রায় দুই মিনিট লাগে।এরকম অনেকবারই হয় অনেকের সাথে।কিছু কিছু কথা আছে যা ব্যক্তি ও পরিবেশের কাছে অপ্রাসঙ্গিক লাগে।সহজ কথাটাও তাই মানুষ সহজে বুঝতে বা মানতে চায় না।মাইশার ক্ষেত্রও ঠিক এক। নিজের প্রিয় ব্যাক্তিকে যখন অন্য কেউ মনে আকঁড়ে রাখে সবারই বিষয়টা অপ্রাসঙ্গিক লাগে যা বুঝা বা মানতে পারার সঙ্গে সংযুক্ত নয়।
.
তবুও মাইশা স্বাভাবিক গলায় বলে ওঠে…..
.
”সী ক্যান লাভস ইউ…….সে তোমায় ভালোবাসতেই পারে এটা অস্বাভাবিক না। কিন্ত সম্পূর্ণ ব্যাপারটা তো আমায় জানতে হবে।বলবে…….?”
.
আয়াত মাথা নাড়ায়।তারপর প্রতিউত্তরে বলে ওঠে……
.
”জেসি আর আমি বেস্ট ফ্রেন্ড না।আর না আমাদের ফ্রেন্ড সার্কেলও সেম ছিলও। বাট পারিবারিক আত্নীয়তার কারনে ওর সাথে ক্লাসে- ট্যুরে ইভেন ক্যাফেতেও মিট করতে হতো।
তখন আমরা সেন্ট ফ্রান্সিসকো তে থাকতাম।পোস্ট গ্রাজুয়েট কমপ্লিট করার পর যখন আমারা বাংলাদেশের আসার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম এমনি এক ফ্রেব্রুয়ারির রাতে সে আমায় প্রোপোজ করে………..”
.
” তুমি কি করেছিলে…….?”
.
”Accept করি নাই……বিকজ আমি কখনোই ওকে সেই চোখে দেখিনি । ইভেন আমার সন্দেহ ছিলো ওর লাভকে নিয়ে।আমার মতো জেসিও আ্যমেরিকায় বড় হয়েছে।বাট আমি আ্যমেরিকায় বড় হলেও ওদের কালচারকে যেভাবে ডিফেন্স করে আগলে নিয়েছিলাম জেসিকার ক্ষেত্রে তেমন না।ওর লাইফস্টাইল…….খাওয়া-দাওয়া……ল্যাংগুয়েজ এসেন্ট সবকিছুই আজ আ্য ট্রু আ্যমেরিকান টাইপ ছিলো।
.
তারপর তো আমি বাংলাদেশেই এসে পড়ি।এখন আমার চিন্তার বিষয় হলো ও কি এখনও বিষয়টি মাথায় রেখেছে?”
.
আয়াতের চোখে-মুখে চিন্তার ছাপ।মাইশা আবারও বলে ওঠে.
”কেন এমন চিন্তা হচ্ছে?”
.
”জেসিকা অনেক জেদি টাইপের মেয়ে মাইশা ! তাই…………”
.
বিনিময়ে আলতো হাসে মাইশা।আয়াতের টিশার্টের কলার চেপে নিজের কাছে নিয়ে এসে টুপ করে গালের ওই তিলটার ওপর চুমু খায় মাইশা।আশেপাশে মৃদু বাতাসের আনাগোনায় পরিবেশটা কেমন যেন চাঞ্চল্যতায় ভরে উঠেছে।
আয়াত নীরব চোখে তাকিয়ে আছে মাইশার দিকে।
.
”যা হওয়ার দেখা যাবে এত চিন্তা করছো কেন? এমন তো না মেয়েটি তোমার প্রাক্তন প্রেমিকা।”(মাইশা)
.
”একটু আগে কি ছিলো ওটা…..?”
আয়াতের স্বতস্ফূ্র্ত প্রশ্নে থমকে গিয়েছে মাইশা।আয়াত বোধহয় হুট করে বিষয়টা মানতে কষ্ট হচ্ছে তাই অবাক চোখে তাকিয়ে আছে মাইশার দিকে।আয়াতের বুকে নিজের মাথা রেখে নিজের কন্ঠ নরম করে মাইশা বলে ওঠে………..
.
”কেনো জানোনা?”
.
ঠোঁটে স্মিত হাসি ফুটিয়ে তুলে আয়াত।সবকিছু তার কাছে যেন নবপ্রেমের ইন্দ্রজালের মতো লাগছে।এই মেয়েটা এখন বড্ড ভালোবাসে তাকে এ বিষয়ে কোনো ভ্রান্ত ধারনা নেই আয়াতের।মাইশাকে নিজের সাথে আরও গভীরভাবে মিশিয়ে আয়াত বলে ওঠে…
.
”ভালোবাসা বিষয়টা কখনো একজনের প্রতি সীমাবদ্ধ থাকে না।পরিস্থিতির দায়ে পড়ে অনুভূতিটাও বদলায় ; অনুভূতির মানুষটাও বদলায়।হয়তো তা সবসময় প্রকাশ পায় না।কিন্ত যখন প‍্রকাশ পায় যতই পরিস্থিতির দায়ে পড়ুক না কেন………….সে ভালোবাসা কখনোই বিচ্ছেদ হয় না।তা রূপ পায় একটি পরিপূর্ণতায়।❤”
.
.
~চলবে~

#রৌদ্দুর_তোমার_নামে🍂
#কায়ানাত_আফরিন
পর্ব:৪৩
.
সোফার এককোণে চুপচাপ বসে সামনে বসা সুন্দরী মেয়েটাকে পর্যবেক্ষণ করে যাচ্ছে মাইশা।মেয়েটার পরনে হলদে কুর্তি যা ওর ফর্সা গায়ে চরমভাবে ফুটে উঠেছে।মেয়েটার চুল কালো হলে মেয়েটাকে দেখতে আরও সুন্দর লাগতো কিন্ত চুলটাতে একটা লালচে ভাব আছে যার কারনে মেয়েটা কি আদৌ বাঙালি বিষয়টা মানতে বেশ কষ্ট হবে।
.
এটাই তাহলে জেসমিন……অর্থাৎ জেসি।মেয়েটির মধ্যে সুমিষ্ট একটা ভাব আছে।মুখে সবসময়ই যেন একটা মিস্টি হাসি ঝুলে আছে।তার পাশেই বসে আছে ওর বাবা-মা।সবার সাথে আলাপচারিতা চালাতে চালাতে আয়াত মাইশার কাধ আগলে বলে ওঠে……..
.
” আঙ্কেল-আন্টি মিট মাই ওয়াইফ মাইশা জামান নূর।”
.
মাইশা বিনিত কন্ঠে তাদের উদ্দেশ্যে বলে ওঠে,
.
”আসসালামু আলাইকুম !”
.
”ওয়ালাইকুম আসসালাম মামণি কেমন আছো?”(আন্টি)
.
”জ্বী আলহামদুলিল্লাহ।”
.
”আমার সাথেও পরিচিত হয়ে নাও মিসেস আরহাম আয়াত ! আমি জেসি। নাইস টু মিট ইউ……….”
.
মাইশা একটু সংকোচ নিয়ে তাকায় মেয়েটার দিকে।জেসি তাকে মিসেস আরহাম আয়াত বলে সম্বোধন করেছে তাই মনে হয়।মেয়েটার তীক্ষ্ণ দৃষ্টি বেশ ভাবিয়ে তুলছে মাইশাকে।মিহি কন্ঠে সেও বলে ওঠে……
.
” সেম টু ইউ…….”
.
”প্লিজ ইগ্নোর মাই বাংলা ল্যাঙ্গুয়েজ।সরি টু সে , বাংলা আমি ওতটাও ভালো বলতে পারি না।”
জেসির এভাবে স্বতস্ফূর্তভাবে কথা বলা মাইশার তার সম্পর্কে আগাম ধারনাই পাল্টে দিয়েছে।মাইশা হয়তো ভেবেছিলো মেয়েটি একটু ইগোস্টিক টাইপ হবে।কিন্ত না। মেয়েটি যথেস্ট মিষ্টভাষী আর সুশীল।কাপড়-চোপড়ে বাঙালীত্বের ছাপ না থাকলেও একপ্রকার শালীনতা আছে।কেন যেন মেয়েটিকে বেশ ভালোলাগছে মাইশার কাছে।
.
”যতটুকু পারো ওতটুকুই বুঝলে হবে।তাছাড়া এমন না যে তুমি বাংলাদেশে এসেছো দেখে তোমায় বাংলাই বলতে হবে।”(মাইশা)
.
”আ্যকচুয়ালি এই ফার্স্ট আমি বিডিতে আসলাম।এন্ড তাই বাংলাতে কথা বলার জন্য কিউরিসিটি জাগছে আমার মধ্যে।”
.
তাদের কথার মাঝে আরিয়াপু হঠাৎ বলে ওঠে,
”এখন এসব কথা থাক।আঙ্কেল-আন্টি-জেসি তোমরা অনেক জার্নি করেছো।এখন রেস্ট নাও কেমন?”
.
জেসি প্রতিউত্তর দেয়…”ওকে।”
.
.
.
বাড়িতে মেহমান আসলে রান্না করাতে অন্য এক আনন্দ আছে।অন্যান্য যেকোনো সময় তা তিক্ত লাগলেও এসময় একঘেয়েমিগুলো কেমন যেন দূর হয়ে যায়—-একথাটা মাইশা চরমভাবে বিশ্বাস করতো।কিন্ত আজ মাইশার রান্নাঘরে মোটেও ভালো লাগছে না।তার মন পড়ে আছে জেসি নামের ওই রহস্যময়ী মেয়েটার দিকে।
.
আজ শুক্রবার বলে আয়াত অফিসে যায় নি।আর এখন খালুর সাথে নামাজ পড়তে গিয়েছে সে।মাইশা ভাবছে ওই মেয়েটা আয়াতকে ভালোবাসতো; বাট আয়াত তাকে রিজেক্ট করেছে……….তবুও এত স্বতস্ফূর্তভাবে আয়াতের সাথে, মাইশার সাথে কথা বললো কিভাবে? তাকে দেখলে মনেই হবে না যে সে কখনো আয়াতকে প্রোপোজ করেছিলো।
.
মেয়েটার মধ্যে অজানা কারনেই অন্যরকম একটা সৌন্দর্য আছে যা পরিপূর্ণ বাঙালী যুবতির মতো।এগুলো কি আদৌ মাইশার ভ্রান্ত ধারনা নাকি অন্যকিছু এই বিষয়টাই বুঝে উঠতে পারছে না সে।
.
রান্নায় অসাবধানতার কারনে হাতে গরম ফ্রাইপ্যানের স্পর্শ পেয়ে চিৎকার দিয়ে ওঠে মাইশা।হাতের তালুতে লালচে দাগ পড়ে গিয়েছে মাইশার।আরিয়াপু আর খালামণিও তার কাছে এসে দেখতে থাকে কি হয়েছে ওর।প্রচণ্ড জ্বলার কারনে চোখ দিয়ে অনবরত পানি পড়ছে মাইশার।
.
ইতিমধ্যে জেসি আর আন্টিও রান্নাঘরে এসে পড়েছে।জেসি ব্যস্ত কন্ঠে বলে ওঠে……..
.
”কি হয়েছে ওর?”
.
”হাত পুড়ে গিয়েছে।”(আরিয়া)
জেসমিন বুঝতে পেরেছে প্রচণ্ড জ্বলছে মাইশার হাতে।কিছু একটা ভেবে সে বলে ওঠে…….
.
”হোয়ার ইজ দ্যা ফার্স্ট এইড কিট?”
.
সবাই এবার জেসমিনের দিকে তাকায়।জেসমিন হতভম্ব হয়ে বলে ওঠে….
.
”এভাবে তাকিয়ে আছো কেন সবাই।হোয়ার ইস দ্যা কিট……..ফার্স্ট এইড বক্স কোথায়?”
.
”কাবার্ডে………”
আরিয়া ইশারা করে দেখিয়ে দিতেই জেসমিন তড়িঘড়ি করে কিটটা নিয়ে এসে মাইশার কাছে হাটুমুড়ে বসে পড়ে।তারপর খুব যত্ন করে বার্ন ক্রিম লাগিয়ে দিয়ে ব্যান্ডেজ করতে থাকে।মাইশা অবাক চোখে তাকিয়ে আছে জেসমিনের দিকে।
.
জেসমিনের সম্পর্কে তার যেই ভ্রান্ত ধারনাগুলো ছিলো সবগুলো কেমন যেন হারিয়ে যাওয়াতে ধাপে ধাপে অবাক হচ্ছে সে।তার চোখে স্পষ্ট মাইশা নিজের জন্য ব্যাথা অনুভব করতে পারছে যেন ব্যথাটা জেসমিনের হাতে হয়েছে। কিছু কিছু সম্পর্ক আছে যা কিছুটা অবাঞ্ছিত; কিছুটা গোলমেলে ; যার হয়তো কোনো ব্যাখ্যা নেই , কিন্ত এর অনুভূতির তাৎপর্যতা অনেক বেশি।❤
.
.
.
বাড়িতে এসে মাইশার হাতে ব্যান্ডেজ দেখে তুলকালাম কাণ্ড বাধিয়ে ফেলেছে আয়াত।মাইশা তো বুঝে গেছে আয়াতের ধমকের থেকে এবার আর নিস্তার নেই তার। বেডরুমে মাইশার কাছে বসে ব্যস্ত গলায় জিজ্ঞেস করে………
.
–হাতে কি হয়েছে তোমার?”
.
মাইশার তো জান যায় যায় অবস্থা।
.
— কিছু বলেছি আমি…..হাতে কি হয়েছে?
.
–রান্না করতে গিয়ে হাতটা বাই মিসটেক পুড়ে গিয়েছে।
.
–সরিয়াসলি! কে বলেছে তোমায় রান্না করতে? মনটা কি তখন চৌরাস্তায় ফেলে আসছিলে? তোমায় আমি বারবার বারণ করেছি রান্নাঘরে যেতে বাট তুমি তো আমার কথা শুনবে না। আমার কথাটা শুনলে কি এমন ক্ষতি হয় তোমার একটু বলবে?(উচ্চস্বরে)
,
আয়াতের ধমকের স্বরে কেপে ওঠে মাইশা।যদিও সে আগেই আন্দাজ করতে পেরেছিলো আয়াত এমন কিছুই করবে।কেননা মাইশাকে ব্যাথা পেতে দেখলেই আয়াত একটু সেন্টিমেন্টাল হয়ে যায়……..কেননা মাইশার এই ছোটখাটো দুর্ঘটনা তার যে নির্ঘুমের কারন হয়ে দাঁড়ায়।টুপ করে এক ফোটা পানি গড়িয়ে পড়ে মাইশার চোখ বেয়ে।আয়াত এবার শান্ত হয়ে বসে।তার প্রগাঢ় কন্ঠস্বর নরম করে বলে……..
.
”এইযে এখন শুরু হবে তার ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল। এখন তো চাইলেও ধমকাতে পারবো না।”
.
মাইশার হাতটাতে আলতো করে নিজের হাত স্পর্শ করে।মলিনভাবে বলে ওঠে……..
.
”অনেক জ্বলছে?”
.
–তোমার কথা শুনে আরও বেশি কান্না পাচ্ছে।
.
–তো বকবো না।আমার কথা অমান্য করলে তোমার তো আবার ভালো লাগে না।কতবার তোমায় বলেছি একটু মনোযোগ দিয়ে কাজ করো যাতে কোনো দুর্ঘটনা না হয় কিন্ত তুমি? আমায় কষ্ট না দিলে কি হয় তোমার?(তীক্ষ্ণ গলায়)
.
মাইশা বুঝে গেছে এই মশাই আজ সারাদিন তার উপর রাগ ঝাড়বে।মাইশা এবার আলতো করে আয়াতের ঠোঁটজোড়া নিজের ঠোঁট দিয়ে আকড়ে ধরে।আয়াত মাথা এবার যেন হ্যাং হয়ে আছে মাইশার হঠাৎ এমন করাতে।কিছুক্ষণ পর মাইশা তার কাছে নরম গলায় বলে ওঠে……
.
”সরি !প্রমিজ আর এমন হবে না।”
.
”আমার ধমক থেকে বাঁচার জন্য ভালোই রাস্তা বের করেছো , তাই না?”
.
ভ্রু নাচিয়ে বলে ওঠে আয়াত।মাইশা তার কাছ থেকে সরে আসতেই আয়াত তার বাহু করে নিজের কাছে নিয়ে আসে।আয়াত দুষ্টু হেসে বলে ওঠে……
.
”মাইশু অনেক কষ্টে নিজেকে আটকে রেখেছিলাম।কিন্ত এখন তোমায় দেখে কেমন জানি প্রেম প্রেম পাচ্ছে। কি করতে পারি বলোতো?😁”
.
.
.
~চলবে~

গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ