রৌদ্দুর তোমার নামে পর্ব-২৬+২৭+২৮

0
2507

#রৌদ্দুর_তোমার_নামে🍂
#কায়ানাত_আফরিন(মাইশা)
পর্ব:২৬+২৭+২৮
.
আচমকা আয়াত নিজের ঠোঁট মাইশার ঠোঁট জোড়ায় মিলিয়ে দিতেই চোখ খুলে মাইশা।আয়াত চোখ বন্ধ করে তার সমস্ত ভালোবাসা উজাড় করে দিচ্ছে ওর ঠোঁটে।
.
হৃদস্পন্দন বন্ধ হয়ে গিয়েছে মাইশার।আয়াতের এমন স্পর্শে নিজেকে স্বাভাবিক রাখতে চেশেও পারছে না।যতই হোক আয়াত তাকে ভালোবাসে কিন্তু সে এই জায়গাটিতে সবসময় আদ্রাফকে চাইতো;আদ্রাফকে কল্পনা করতো।তাই আয়াতের এরকম স্পর্শ মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে।
.
নিজেকে ভারসাম্যে রাখতে আয়াতের কাধে আস্তে করে নিজের হাত ছেড়ে দেয় সে।আয়াত এতে মাইশাকে আস্তে করে ছেড়ে একটু দূরে দাঁড়ায়। তারপর আবার মাইশার কপালে নিজের কপাল মিশিয়ে বলতে থাকে….
.
“আমি জানি আমার এমন কাজে কষ্ট পেয়েছো তুমি ; অনেক কষ্ট পেয়েছো। কিন্ত এটা তোমার শাস্তি ছিলো।কি করবো বলো আমার রাগ উঠে গিয়েছে তোমার ওপর। আমি জানতাম অনিক একা পেলে তোমায় কিছু না কিছু বলবে।তাই তোমাকে একা ছাড়তে চাইছিলাম না।কিন্ত তুমি তো শুনলে না আমার কথা”
.
মাইশা আয়াতের বুকে ধাক্কা দিয়ে দূরে সরিয়ে দেয়। অজস্র ধারে জল গড়িয়ে পড়ছে তার।
.
”দূর হও তুমি আমার চোখের সামনে থেকে। এটাই তোমার ভালোবাসা?এটাই তোমার চাওয়া ছিলো তাই না?আদ্রাফের সাথে ৩ বছর সম্পর্ক থাকার পরেও ও কখনো এমন করেনি।আর তুমি এটা করতে পারলে?”
.
”মাইশা ,,,,,,”
.
”আয়াত প্লিজ আমায় যেতে দাও। আমি আর পারছি না।তোমায় ভালো না বাসতে পারলেও বিশ্বাস করা শুরু করেছিলাম।আর নিমিষেই তা তুমি ভেঙ্গে দিলে?”
.
আয়াত আর কিছু বলে না মাইশাকে।মাইশা নিজেকে সামলিয়ে ওর আম্মু-আব্বু আর নুহাশকে নিয়ে বাড়িতে চলে যায়।আয়াতের দিকে একবারেও ফিরে তাকায় না।আয়াতের কাছে এখনও সবকিছু ঝাপসা লাগছে।খোলা আকাশের দিকে তাকিয়ে অপেক্ষা করতে থাকে আগামী দিনের।
.
🍂🍂🍂🍂🍂🍂🍂🍂🍂
ভার্সিটিতে ক্লাস শেষ করে বাহিরে বের হতেই পার্কিং সাইটে আয়াতকে দেখে খানিকটা অবাক হয় মাইশা।আয়াত গাড়িতে হেলান দিয়ে মাইশার দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে আছে। চোখে আছে এক চাপা অভিমান যা মাইশার বোধগম্যে এখনো আসেনি।
.
আয়াতের তো এখন অফিসে থাকার কথা কিন্ত এখন এসময়ে এখানে কি করছে তা-ই মাইশা বুঝে উঠতে পারছে না।আয়াত একটা সবুজ শার্ট আর ব্ল্যাক প্যান্ট পড়েছে যা ফর্সা চামড়ায় মারাত্নকভাবে ফুটে উঠেছে।মাইশার গতরাতের কথা মনে পড়তেই কেমন যেন একটা সংকোচ কাজ করছে আয়াতের কাছে যেতে কিন্ত যখন সে আশেপাশে তাকায় তার মুখ আপনাআপনি লাল হতে থাকে।
.
কেননা অনেক মেয়েরাই উৎসুক দৃষ্টিতে তাকাচ্ছে আয়াতের দিকে।একবার না ; বারবার।এখানে মাইশা সেই গুটিকয়েক মেয়েদের ওপর খামোখা রাগ করার মতো চিন্তাভাবনা নেই ; কেননা আয়াত এমন একজন মানুষ যাকে সকল মেয়েরাই পছন্দ করতে বাধ্য।কিন্ত এটা ভেবে তার রাগ হচ্ছে যে আয়াত এখানে এসেছে কেন?
.
মাইশা আয়াতের কাছে গিয়ে প্রশ্নবোধক চোখে বলে ওঠে……
.
”এখন তো তোমার অফিসে থাকার কথা?এখানে কি করছো?”
.
আয়াত কিছু না বলে হেসে ওঠে তারপর গহীন দৃষ্টি নিয়ে তাকায় মাইশার দিকে।মাইশা আয়াতের এ দৃষ্টিটা উপেক্ষা করার জন্য অন্যদিকে তাকায়।কেননা গতরাতের কথা মনে হয় তার বারবার।মাইশা সেই অনুভূতিটা স্মৃতিতে আনতে চাচ্ছে না।
.
”গাড়িতে ওঠো?”(আয়াত)
.
”কেন?”(মাইশা)
.
”আমি দিয়ে আসি…..”(আয়াত)
.
”থাক্…লাগবে না…..আমি যেতে পারবো…..”
.
”ভেবে নিও…….আমি কিন্ত এখন এখানে ঘুরতে চাচ্ছি…..তোমাকে বাসায় দিয়ে আসলে আর এখানে না ঘুরে সরাসরি বাসায় যাবো । আজ মিটিং করেই অফিস থেকে এসে পড়েছি।”
.
মাইশা আয়াতের কোনো কথার উত্তর না দিয়ে সেখান থেকে উল্টোপথে চলে যেতে থাকে। আয়াত আর কিছু না বলে পকেট থেকে হাত বের করে চলে যায় তার গন্তব্যে।
.
দুকদম এগোতে না এগোতেই মাইশা যখন পিছে ঘুরে আয়াতকে না দেখে তার অনেক খারাপ লাগে । সে নাহয় রাগ করেই একথা বলে ফেলেছে তাই বলে কি আয়াত একটুও তাকে মানাবে না? আর কিছু না ভেবে সে রিক্সা নিয়ে চলে যায় বাড়ির উদ্দেশ্যে।
.
.
একটি সমান্তরাল রাস্তা দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে রিক্সা।দুপাশে সারি সারি কচি দেবদারু গাছ আর লাইটের স্ট্যান্ড।আবাসিক এলাকার রাস্তাদিয়ে রিক্সাটি এগিয়ে যাচ্ছে বলে এখানে জনসামাগমও যেমন কম ; যানবাহনও তেমন কম।মাইশার মন এখনো আয়াতের কাছে পড়ে আছে। গতকালের জন্য আয়াতের উপর তার রাগ এখনো কমে নি বরং আজকের কাজের জন্য তার উপর সেই রাগটাসহ অভিমানও চাড়া দিয়ে উঠেছে।
.
রিক্সার পাশ দিয়ে একটি কালো গাড়ি ওভারটেক করতেই ধ্যান ভাঙ্গে মাইশার।গাড়িটা হঠাৎ রিক্সার সামনে ব্রেক মারতেই রিক্সাটাও তড়িঘড়ি করে ব্রেক মারে আর মাইশাও নিজের ব্যালেন্স হারিয়ে রাস্তায় পড়ে ।
.
বুকটা এখন ধুকধুক করছে মাইশার।তার কনুইয়ে ভিজা কিছু অনুভব করতেই বুঝতে পারে ছিলে রক্ত বের হচ্ছে ওখানে। আদ্রাফের সেই ঘটনার পর থেকে ছোট-বড় সব সড়ক দুর্ঘটনাকে ভয় পায় মাইশা।আবারও তার চোখের সামনে ভেসে আসছে আদ্রাফের রক্তমাখা মুখশ্রী।হাজারো প্রিয় মানুষকে হারানোর আর্তনাদ।
এদিকে রিক্সাওয়ালা দাদুও চিল্লিয়ে গাড়ির লোকটিকে বলে ওঠে…..
.
”কি করলেন ভাইজান এইটা?”
.
মাইশা সেদিকে তাকাতেই দেখে আয়াত গাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে তার দিকে এগিয়ে আসে।মাইশা আস্তে করে উঠে চিল্লিয়ে বলতে থাকে…..
.
”এসব ফালতু কাজ করার মানে কি আয়াত? তুমি কি ছোট বাচ্চা?আমি তোমায়বারবার সাবধান করেছি হাইস্পিডে গাড়ি চালাতে না।আর এভাবে ওভারটেক করে রিক্সার সামনে আসলে কেন?”
.
একথাগুলো বলার সময় মাইশা বারবার দমবন্ধ হয়ে আসছিলো , চোখযুগল জলে টলমল করেছিলো । আয়াত কিছু না বলে কোলে তুলে নেয় মাইশাকে।
.
”চলো আমার সাথে…..আর দাদু? এভাবে ব্রেক দেয়ার জন্য দুঃখিত !”
.
মাইশা এবার ছুটাছুটি করছে আয়াতের কোল থেকে ছাড়া পাওয়ার জন্য।কিন্ত আয়াতও নাছোড়বান্দা ; মাইশা এবার উচ্চস্বরে বলতে থাকো….
.
”আয়াত ছাড়ো……..রাস্তার মধ্যে এগুলো কি ধরনের অসভ্যতা?”
.
”অসভ্য না ! আমার অসভ্যতা গাড়িতে তোমায় দেখাচ্ছি।”
.
মুখ ফ্যাকাশে হয়ে গিয়েছে মাইশার। আয়াত শান্ত কন্ঠে এক ভয়ঙ্কর রাগ অনুভব করতে পারছে সে। গাড়িতে আয়াত মাইশাকে বসিয়ে নিজেও ড্রাইভিং সিটে বসে গাড়ি চালাতে থাকে।রাগে আয়াতের মুখ থেকে ফোস ফোস শব্দ বের হচ্ছে।
.
মাইশা ভেবে কূল পাচ্ছে না আয়াত রেগে আছে কেন ? যেদিকে মাইশার রাগ বা অভিমান যা-ই বলুক; এটা আয়াতের ভাঙগানোর কথা। দুনিয়াটা আসলেই অদ্ভুদ !
.
কিছুক্ষণ পর আয়াত একপাশে গাড়িটা পার্ক করে চেপে আসে মাইশার কাছে।মাইশা তা দেখে গাড়ির দরজার সাথে মিশে যায়। আয়াত অনেকক্ষণ তাকিয়ে ছিলো তার মুখমণ্ডলে।তারপর মিহি কন্ঠে বলে ওঠে….
.
”আচ্ছা মাইশা আমায় প্লিজ একটু বলো গতকাল আমি যা করেছিলাম কোন দিক দিয়ে তা তোমার ভুল মনে হলো? ”
.
মাইশা নিশ্চুপ
.
”বিয়ের আগে তোমায় কষ্ট দিয়েছি অনেক….কিন্ত কখনো বলতে পারবে তোমায় বাজেভাবে ছুয়েছি….বাজে কথা বলেছি.? আর এখন তো আমরা স্বামী-স্ত্রী না?তবুও আমরা একসাথে থাকতে পারিনা…কেন? আমাদের বিয়ে বড় করে হয়নি বলে…..থার্ডক্লাস একটা লজিকের জন্য”
.
মাইশার গলায় আস্তে করে মুখ ডুবিয়ে দেয় আয়াত। মাইশা খনিকটা কেঁপে উঠলেও কিছু বলে না আয়াতকে।
.
”আমি যে কিভাবে এই সময়গুলো পার করছে; কেউ জানে না। আই লাভ ইউ মাইশা। তোমায় ছাড়া আমার এখন সময় পার করাটা অনেক কষ্টের মনে হয় আমার কাছে।আর একটু আগে আমায় অসভ্য বললে তাই না…(তাচ্ছিল্যের হাসি হেসে) ….তোমায় একটু দেখার জন্য যদি আমায় অসভ্য হতে হয় তবুও আমি রাজি।……তবুও প্লিজ আমায় ইগ্নোর করো না….আই হেট ইউর ইগনোরেন্স।”
.
”আ-আ-আমি বাসায় যাবো।”
.
আয়াত মুখ তুসে মাইশার দিকে তাকায়। মাইশা চোখ বন্ধ করে আছে।কিছু না বলে আবার গাড়ি স্টার্ট করে সে।
.
বাড়ির কাছে আসতেই আয়াত গাড়ি থামায় আর মাইশাও গাড়ি নামতে নিলেই আয়াত তার হাত চেপে ধরে।
.
”মাইশা যেই জিনিসটাকে তুমি সবচেয়ে বেশি ভয় পাও এমন যে নাহয় এটাই আমার হারানোর কারন হয়ে দাঁড়ায়।”
.
খনিকটা বিভ্রান্তিতে পড়ে যায় মাইশা আয়াতের এমন কথা শুনে।আয়াত মাইশার দিকে না তাকিয়েই একথাগুলো মিহি কন্ঠে বলে ওঠে।বুকে জমে ওঠেছে তার একরাশ হাহাকার যা মাইশার কাছে অপ্রক্যাশিত।মাইশার হাতটি আলগা করে দিতেই মাইশা হাত ছাড়িয়ে বাড়ির ভেতরে চলে যায় । তা দেখে আয়াত তাচ্ছিল্যের হাসি হাসে।
.
🍂🍂🍂🍂🍂🍂
.
নিস্তব্ধ রাত।ক্ষণে ক্ষণে ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক শোনা যাচ্ছে।মাঝে মাঝে কানে ভেসে আসছে ক্ষীণ গাড়ির শব্দ।অদূরেই হাইওয়ে থেকে এ শব্দগুলো আসছে।গাড়ির সামনে বসে একধ্যানে সুগভীর দীঘির দিকে তাকিয়ে আছে আয়াত।তার মনে হচ্ছে এই দীঘি তাকে খুব করে টানছে।দীঘির টলোমলো পানিতে চাদের আলো প্রতিফলিত হয়ে আয়াতের নজরকাড়া গহীন চোখে পড়ছে।তার কালচে বাদামী চোখজোড়া এতে আরও মারাত্নক লাগছে ।
.
আজ আয়াতের নিজেকে শূণ্য শূণ্য মনে হচ্ছে।বারবার মনে হচ্ছে কিছু পেয়েও সে পেলো না।কিছুক্ষণ আগে ওই অনিককে মেরে এলো সে।সাহস কি কলে হলো ওর মাইশাকে এভাবে নোংরা কথা শুনানোর?
.
এখন আয়াতের নিজের ওপরই বেশ রাগ লাগছে।সে জানে একবার রাগ তার মাথায় চাড়া দিয়ে উঠলে নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে না সে।তাই মাইশাকে কষ্ট দেয়ার জন্যই মাইশার ঠোঁটে জোর করে স্পর্শ দিয়েছিলো সে।সে জানতো মাইশা এতে কষ্ট পাবে। আদ্রাফের জায়গাটা এত সহজে সে আয়াতকে দিতে পারবে না এটাও আয়াত জানে।
.
কিন্ত এখন নিজের উপরই তার রাগ হচ্ছে।মন চাচ্ছে এই টলোমলো দীঘির ঠান্ডা পানিতে কিছুক্ষণ নিজেকে ডুবিয়ে রাখতে।
.
ইদানীং আদ্রাফের কথা ভাবলে তার অনেক হিংসে হয়…..কি আছে আদ্রাফের মধ্যে যা ওর মধ্যে নেই।আদ্রাফ মাইশাকে ভালোবাসতো এটা আয়াত জানে কিন্ত সেওতো মাইশাকে ভালোবাসে ; হ্যাঁ ওর ভালোবাসাটা আদ্রাফের মতো না….তবুওতো ভালোবাসা নামক এক অনুভূতিতো আছে?
.
আয়াত আর কিছু না ভেবে গাড়ি নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্য রওনা হয়।যতই গতরাতে রাগের বশে নিজের করা ভুলগুলোর কথা ভাবছে ততই ওর চোয়াল শক্ত হয়ে উঠেছে।হাইওয়েতে হাইস্পীডে ড্রাইভ করতে থাকে সে।বারবার তার মনে হচ্ছে মাইশার কান্না করে বলা কথাগুলো…অনিকের মাইশার উদ্দেশ্যে সেই নোংরা কথাগুলো।
.
আচমকাই একটা ট্রাক ওভারটেক করে যাওয়াতে আয়াত গাড়ির ব্যালেন্স হারিয়ে ফেলে। গাড়ির স্টেয়ারিং ঘুরিয়ে নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টায় রপ্ত সে।কিন্ত ভাগ্য মনে হয় তার সঙ্গ দেয়নি।তাই ব্রেকে চাপ দিতেই তা সজোরে ট্রাকটির সাথে বারি খায় আর এতে গাড়ির সামনের কাচটি ঝনঝন করে চুর্ণবিচূর্ণ হয়ে গিয়েছে।পরিবেশটা এখন এই ঝনঝন শব্দের জন্য ভয়ঙ্কর এক তান্ডব সৃষ্টি করেছে ।
.
আয়াতের নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসতে থাকে।তার মাথাটি এখন স্টেয়ারিংয়ে ভর দিয়ে রেখেছে সে। এই বিকট শব্দের পরপরই আস্তে আস্তে সব কিছু শান্ত হয়ে যায়।শুধু ভেসে আসছে আয়াতের নিঃশ্বাস আর কপাল বেয়ে টুপটুপ করে রক্ত পড়ার শব্দ।আচ্ছা তারতো এখন অনেক কষ্ট হচ্ছে।আদ্রাফেরও কি এমন কষ্ট হয়েছিলো? সেও কি তবে চলে যাবে না ফেরার দেশে?
.
.
#চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে