Monday, October 6, 2025







বাড়ি"ধারাবাহিক গল্প"রৌদ্দুর তোমার নামে পর্ব-২১+২২+২৩

রৌদ্দুর তোমার নামে পর্ব-২১+২২+২৩

#রৌদ্দুর_তোমার_নামে
#কায়ানাত_আফরিন
পর্ব:২১
আয়াতের মাতালকন্ঠের প্রতিটা শব্দ মাইশার বুকের ধুকধুকানিটার পরিমাণ যেন আরও বারিয়ে দিয়েছে। উত্তরের জানালা খোলা থাকার কারনে ঘরে ছেয়ে যাচ্ছে ঠান্ডা উত্তুরে হাওয়া। আর তার সাথে সমানতালে মাইশার ঘাড়ে-গলায় আছড়ে পড়ছে মাইশার উষ্ণ নিঃশ্বাস।আয়াতের এতটা কাছে আসা তার মনে এক অনুভূতি জাগিয়ে তুলছে। আয়াত মাইশার গলায় নাক ঘষতে ঘষতে বলে….
.
” উহু…মাইশুপাখি ! খুব কষ্ট হচ্ছে নিজেকে নিয়ন্ত্রন করা। তোমাকে আমি বারবার সাবধান করেছি এভাবে আমায় পাগল না করতে। আগে একটা বাধাঁ কাজ করতো কিন্ত এখন আর না…..”
.
একথা বলেই আয়াত গভীরভাবে ওই তিলটাতে চুমু দেয়। আবেশে কম্বলটি খামচে ধরে সে। এই আয়াত মনে হয় পাগলই হয়ে গেছে। আয়াত এবার মাথাটা হালকা উঠিয়ে মাইশার দিকে তাকায়। জানালা দিয়ে মিষ্টি রৌদ্দুর আছড়ে পড়ছে ওর তিরতির করে কাঁপতে থাকা ঠোঁট দিয়ে। আয়াত আবার ওর গলায় মুখ ডুবিয়ে দেয়। আস্তে করে নিজের ঠোঁটের স্পর্শে ভরিয়ে দিতে থাকে।
.
” গতকাল তো আমাদের বাসর টা হলো না; আজ নাহয় রৌদ্দুরের সাথে তা করেই ফেলি।”
.
মাইশা এবার একটা একটা জোরে চিৎকার দেয় :” আয়াত? পাগল হয়েছো?”
.
কিঞ্চিত ভ্রুযুগল কুচকে ফেলে আয়াত। এমনিতেও কত সুন্দর একটা সময় পার করতে চেয়েছিলো সে কিন্তু মাইশা তার ১২ টা বাজিয়ে দিলো।মাইশাকে কম্বলের রাজত্ব থেকে মুক্ত করে ফেলে সে।
.
”কাজটা ঠিক করলে না কিন্তু।”
একথা বলেই আয়াত ওয়াশরুমে চলে যায় ফ্রেস হতে।মাইশা এখনো পাথরের মতো শুয়ে আছে চোখ বুজে। নিঃশ্বাস ত্যাগের ফলে বারবার বুক ওঠানামা করছে তার। আয়াতের এহেন কাণ্ডে তার বুকে তোলপাড় শুরু হয়েছে। আচ্ছা আয়াত কি তবে তাকে স্ত্রীরূপে অধিকার দেওয়ার কারনে এমন করছে নাকি নিজের মনের ভালোবাসা থেকে?
.
.
ডাইনিং টেবিলে সবাই একত্রে নাস্তা করছে।এ বাড়ির কড়া নিয়মের মধ্যে এটি একটি…ঘূর্ণিঝড় হোক বা কিয়ামত হোক! কেউ মারা গেলে চল্লিশা খেতে হলেও সবাইকে একসঙ্গে এই বড় টেবিলে খেতে হবে। এই বিষয়ে কোনো গাফলতি চলবে না।
খাওয়ার সময় আয়াতকে দেখে এখন মনে হচ্ছে ওর মতো innocent , ভদ্র, শিষ্টাচারি ছেলে এই জাহানে আর নেই। পুরাই শেন একটা ভদ্রের গুদাম। আর মাইশা আয়াতের এই রূপ দেখেই বারবার বিষমে পড়ছে। কেউ শুনে বলবে এই ছেলে সকালে ওর সাথে এত বড় একটা কান্ড ঘটিয়ে বসলো?
.
” মাইশা আয়াতকে দেখার জন্য তোর কাছে অনেক সময় আছে এখন খাবারটা ঠিকমতো শেষ করো…..”
.
নানিজানের কথা শুনে লজ্জায় চোখ নামিয়ে ফেলে সে।এখন তার নিজের মাথায় একটা বারি মারতে মন চাচ্ছে।
.
খাওয়া শেষে মাইশা আর ওর খালামণি(আয়াতের আম্মু) টেবিল গুছাচ্ছে তখন খালামণি বললো….
.
” মাইশা…..একটা কথা ছিলো রে….!”
,
মাইশা খালামণির দিকে তাকায়। আবার কাজ করতে করতে মিহি কন্ঠে বলে,
” কি কথা?”
,
”আয়াত আর তোর মধ্যে হলো কীভাবে?”
,
কাজ রেখে হতবিধ্ধস্ত হয়ে তাকিয়ে আছে খালামণির দিকে।
”হলো কীভাবে মানে?”
.
বিরক্ত হয়ে সাথী বেগম। কপাল ভাঁজ করে বলে,
”তোর মা আসেই ঠিক বলে ; তোরে ভেঙ্গে ভেঙ্গে না বোঝালে তুই কিছুই বুঝোস মা। আমি বলতে চাইছি আমার ছেলে দেখতে সুন্দর হলে কি হবে ; আস্তো যে একটা হুতুমপেঁচা আমি জানি….এখন প্রশ্ন হলো তোর সাথে ওর প্রেম হলো কীভাবে?”
.
ওর খালামণি যে একটু ফ্রি মাইন্ডেড এটা মাইশা জানে; কিন্ত শ্বাশুড়ি হিসেব করলেও যে এমন প্রশ্ন করে বসবে তা মাইশার অজানা ছিলো।
.
” হঠাৎ……..এই প্রশ্ন?”
.
”বলে কি মেয়েটা; এই প্রশ্ন করবো না? আমি তোদের কখনো একসাথে দুদন্ড কথাও বলতে দেখিনি। আর যতটুকু কথা বলতো ,আয়াত তোকে ধমকের উপর রাখতো আর নয়লে তুই ওর উপর একটু-আধটু চিল্লাতি। এখন বল্ না…… কেমনে কি হলো?”
.
” খালামণি গো ;তোমার ছেলে মানুষের সামনে আমারে ঝাড়লে কি হইবো….পুরাই একটা লুইচ্চার বদনা!(মনে মনে)না….মানে…..খালামণি তুমি যেমন ভাবছো তেমন কিছুই না,,,,,”
.
” আহারে ! লজ্জা পেয়েছে মেয়ে টা। থাক তোকে কিছু জিজ্ঞেস করবো না। তবে আয়াতের মতো রাগী ছেলে তোকে ভালোবেসেছে বুঝে নিস …..মা হিসেবে এতটুকু বলি….তোকে আজীবন আগলে রাখবে !”
বিনিময়ে একটা মুচকি হেসে আবার কাজ করতে থাকে সে।
.
.
এখন প্রায় ভরদুপুর। দুপুরে তপ্ত রোদ থাকলেও শীতে তার রেশ অনেক কম। বেডরুমে বসে বসে আড্ডা দিতে ব্যস্ত মাইশা,সামাদ,ইনায়া,আনান আর পৃথা। হঠাৎ আয়াত কোথা থেকে এসে কোলে তুলে নেয় মাইশাকে। আয়াতের এহেন কান্ডে ওরা রীতিমতো হকচকিয়ে যায়।
.
”আরে ভাইয়া মাইশাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছো?”(ইনায়া)
.
”আরে বোন…..নতুন নতুন বিয়ে হয়েছে ; এখন কি বউকে নিয়ে ঘুরতেও পারবো না?”(চোখ টিপে)
বলেই মাইশাকে ওর রুমে নিয়ে যায় সে।মাইশা চেচাঁমেচি করতে চাইলেও তা সম্ভব না । কেননা বাড়ির বাকিরা ওদের এভাবে দেখলে অন্যকিছু ভাববে।
মাইশাকে খাটে শুয়িয়ে ওকে কোলবালিশের মতো জড়িয়ে চোখ বুজে থাকে আয়াত।
.
” আর একটা কথাও বলবা না।এখন আমি ঘুমাবো।আর একটু নড়াচড়া করলে ডাইরেক্ট কিস্। যদি রাজি থাকো দ্যান মুভ।”
.
.
#চলবে

#রৌদ্দুর_তোমার_নামে🍂
#কায়ানাত_আফরিন(মাইশা)
পর্ব:২২
আর একটা কথাও বলবা না।এখন আমি ঘুমাবো।আর একটু নড়াচড়া করলে ডাইরেক্ট কিস্। যদি রাজি থাকো দ্যান মুভ। Always তো শুধু threat ই দিলাম; এবার কিন্ত যা বলবো তা করেই ঠাড়বো।”
আয়াত ঘুমুঘুমু কন্ঠে মাইশার গলায় মুখ ডুবিয়ে কথাগুলো বলছে। তার প্রতিটা কথা বলার সময় ঠোঁট ছুয়ে যাচ্ছে মাইশার গলায়। যার দরুন মাইশা একটু কেপেকেপে উঠছে। নিজের শুষ্ক ঠোঁটজোড়া জিহবা দিয়ে ভিজিয়ে নরম কন্ঠে বলে,
.
” আয়াত প্লিজ এমন করো না। আমার খুব আনইজি হচ্ছে।”
,
”কেন? আমি তোমায় কোন দিক দিয়ে অস্বস্তিতে ফেলছি?”[মাইশাকে আরও জোরে আকড়ে ধরে]
.
মাইশার রাগে ক্ষোভে মন চাচ্ছে একটা আড়াই কেজির পাথর দিয়ে আয়াতের মাথাটা ফাটিয়ে ফেলতে। মনে মনে ইচ্ছেমতো গালাগাল করছে সে। একটা শুকনো ঢোক গিলে সে বলে…..
.
” আয়াত সবসময় দুষ্টুমি ভালো লাগে না ! আর আমি এসবে অভ্যস্তও না। প্লিজ লিভ মি…..”
.
” তোমার রসকষহীন কপালে দ্যা লেজেন্ড আয়াত পড়েছে মাইশুপাখি। আর রইলো দুষ্টুমির কথা ! তা তো আজীবনই তোমায় বইতে হবে। নাও লেট মি স্লিপ বেবি ! এমনিতেও শেষ রাতে উঠবো।”
,
” কেন?”[ ভ্রু কুচকে ]
.
” তোমার সাথে বাসর করবো বলে। হ্যাপি? let me sleep baby….”
.
কিছুক্ষণের মধ্যে ঘুমের রাজত্বে তলিয়ে যায় আয়াত। তার ঘন কালচে খয়েরী চুলগুলো কপালের উপর পড়ে আছে।
,
মাইশা আস্তে করে আয়াতের হাতের বাধঁন থেকে মুক্ত করে নেয় নিজেক। সে উঠে আসতে নিবে তখনই তার চোখ যায় আয়াতের বাম গালে খোঁচা খোঁচা দাঁড়ির মধ্যে লুকিয়ে থাকা ছোট্ট তিলটির দিকে। আয়াতের মুখে হাল্কা চাপ দাড়ি। আগে সে ক্লিন সেভ করতো কিন্ত ইদানীং তার চাপ দাড়ি রাখার শখ ভর করেছে। প্রবাদটা আসলেই সত্যি যে,” ছেলেদের আসল সৌন্দর্য লুকিয়ে থাকে দাড়ির মধ্যে।”
.
(কে জানে ? কোরিয়ান ছেলেগুলোর তো দাঁড়ির ছিটেফোটাও নেই। দাঁড়ির অস্তিত্ব যেন বিলীন হয়ে গিয়েছে ওদের দেখলে এমন মনে হয়। তবুও এত্ত কিউট কেন ওরা? )
.
আয়াতের ফর্সা গালে কালো তিলটি বেশ নজরকাড়া লাগছে মাইশার কাছে। তার ঠোঁটযুগল অনেকটাই লালচে কালো। মাইশার এই সময় আবার আদ্রাফের কথা মনে পড়ে গেলো। একসময় আদ্রাফ বলেছিলো তাদের বিয়ে হয়ে গেলে সেও মাইশাকে কোলবালিশ বানিয়ে ঘুমিয়ে থাকবে।
একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে মাইশা। আদ্রাফের স্মৃতি চাড়া দিয়ে উঠলেই হাহাকার করে ওঠে তার হৃদয়।যদিও আয়াতের কার্যকলাপ আদ্রাফ থেকে পুরোপুরি ভিন্ন। তবুও মাইশার কাছে ব্যাপারটা অজানা যে কেন সে আয়াতকে দেখে বারবার আদ্রাফের স্মৃতিতে হারিয়ে যায়?
,
,
বসার ঘরে কেমন যেন একটা উৎসবমুখর ভাব। একপাশে পৃথা , ইনায়া আর আরিয়াপু পিঠা বানাতে ব্যাস্ত তো অন্যপাশে আনান,সামাদ, নুহাশ ভাইয়া মাছের ছিপ বানাতে মগ্ন।মাইশার নানি আলতো হাতে মাইশার মাথায় খাটি সরিষার তেল দিয়ে দিচ্ছে। মাইশার কাছে তেল জিনিসটা খুবই বিদঘুটে লাগে। তাই ঠোঁট উল্টিয়ে বসে আছে সে।
.
” কেমন মাইয়্যা দেখো ! আরে তোমাগো বয়সে আমার চুল এত কালো আর ঘন ছিলো যে মাথার তালু দেখা যাইতো না। আর তোমরা তেল না দিয়া দিয়া চুলের আগা ফাটাইয়া ফেলসো, কেমন লাল হয়ে আছে দেখো। কাল তো তোরা চলে যাবি। তাই মাথায় সরিষা তেল দিয়ে দিলাম , চুল মজবুত থাকবো।”
.
”আর বইলো না মা ! তুমিই বোঝাও তোমার আদরের নাতনি কে। আমার কথা তো জীবনেও শুনে না এবার নাহয় তোমার কথাই শুনবো।”(মাইশার আম্মু)
.
”আহারে নানি থাক এবার ছেড়ে দেও ওরে। চোখ দিয়ে যেকোনো সময়ই পানির জলোচ্ছ্বাস উপচে পড়বে।”(আয়াত)
.
মাইশা কপাল কুচকে আয়াতের দিকে তাকায়। কিন্ত সে তো দিব্যি পিঠা খেতে ব্যাস্ত। ইদানীং আয়াতের ব্যবহার তার কাছে অজান্তেই ভালোলাগা শুরু করেছে। কিন্ত সে জানে না এই ভালোলাগার অনুভূতি কবে ভালোবাসায় রূপ নিবে…কখনোই কি এটা ভালোবাসায় রূপ নেবে?
.
.
খাওয়া দাওয়া শেষে। পেছনের খোলা বারান্দায় চাদর পেচিয়ে আয়েশ করে দাঁড়িয়ে মাইশা। টিনের চালা বাতাসের শো শো শব্দে অনেকটাই উন্মাদিত।জানালার কপাট খুলে দেয়ার কারনে একটি মিষ্টি ফুলের সুবাস তার নাকে ভেসে আসছে। ফুলটির ঘ্রাণ আর নাম কিছুই তার জানা না। তবে এটুকু নিশণচিত যে রাতের ফুল এটা। অর্থাৎ যে ফুল রাতে ফোটে। কেননা এর সুবাস অত্যন্ত তীব্র হয়।
.
” একা একা এভাবে দাঁড়িয়ে থাকলে ভূত তোমায় নিয়ে চলে যাবে।”
.
কানের কাছে আয়াতের মিহি গলা শুনে পেছনে ফিরে মাইশা। আয়াত সাথে সাথেই তার কোমল হালকা করে চেপে নিজের সাথে মিশিয়ে নেয়। মুখে আছে মুচকি হাসি। মাইশা আয়াতের বুকে হাত দিয়ে সরে আসতে নিলে আয়াত তাকে বাধাঁ দেয়।মাইশা করুন চোখে আয়াতের দিকে তাকায়।
.
” আয়াত এমন করছো কেন?”
.
” কি করছি আমি? তোমার সাথে রুড বিহেব করেছি? তোমায় অপমান করেছি নাকি তোমার উপর আমার অধিকার ফলিয়েছি।”
.
”মাইশা নিশ্চুপ।”
.
” আমাকে একটু বলবে যে আমায় মেনে নিতে তোমার কি প্রবলেম হয়?”[কড়া গলায়]
.
টুপ করে একফোটা জল গড়িয়ে পড়ে মাইশার। আয়াত আস্তে আস্তে নরম হয়ে যায়। একটা শুকনো ঢোক গিলে মাইশা বলে……
.
”নিজের প্রথম অনুভূতি ভুলিয়ে নতুন করে কাউকে জায়গা দেয়া কি এতই সহজ আয়াত? তুমি কি পারতে যে তোমাকে মনে-প্রাণে ভালোবাসতো তাকে এককোণে আবদ্ধ করে পুনরায় অনুভূতি করতে?…..বলো পারতে?”
.
আয়াত নিশ্চুপ। শুধু পলকহীন চোখে তাকিয়ে আছে মাইশার দিকে।
.
” আদ্রাফ আমার জীবনে অনেক বড় কিছু ছিলো। হয়তো আল্লাহ আমাদের ভাগ্য একসাথে দেয়নি তাই তো আমায় ছেড়ে সে চলে গেলো না ফেরার দেশে।আমাকে তো তুমি এমনিতেও দেখতে পারতে না। হঠাৎ কি এমন হলো যে আমার উপর মায়া দেখাতে লাগলে?”
.
মাইশাকে নিজের আরও কাছে নিয়ে আসে আয়াত।এতে মাইশা একটু ভড়কে যায়। আয়াতের উষ্ণ নিঃশ্বাস এতে বরাবরই বারি খাচ্ছে ওর মুখমন্ডলে।
.
”আচ্ছা আমার একটা প্রশ্ন। ভালোবাসাটা প্রকাশ করলেই ভালোবাসা হয় আর না প্রকাশ করলে তা শুধু মায়া….এটা কেন একটু বলতে পারবে? কিছু কিছু ভালোবাসা মুখে প্রকাশ না করলেও চলবে না?”
.
মাইশা নিশ্চুপ।
.
”ইউ নো হোয়াট…..তোমার জন্য শুরু থেকেই আমার মনে অনুভূতি কাজ করতো। বাট আমার তা প্রকাশ করতে ভালোলাগতো না। আজকাল তো একটু ভালোলাগাকেই মানুষ ভালোবাসায় প্রকাশ করে দেয় যা আমার পছন্দ না। তার মানে কি এই আমি কাউকে ভালোবাসতে পারি না?”
.
”আমি এটা বলতে চাই নি…..”
.
”তাহলে কি বলতে চেয়েছো তুমি?[উচ্চস্বরে] আমি তোমার সাথে বাজে বিহেব করতাম এটা তোমার গায়ে লাগে…..আর তুমি যে আদ্রাফের কথা মনে না করার জন্য জাস্ট টাইমপাসের জন্য বয়ফ্রেন্ড বানাতে এটা আমার লাগতো না?
রাগের বশে তোমায় থাপ্পড় দিয়েছি বলে তুমি বৃষ্টিতে ভিজে অজ্ঞান হয়ে জ্বর বাধিয়েছিলে একবার ভেবেছো আমাদের তখন কেমন লাগতো? আমি এত সেন্টিমেন্টাল না মাইশা যে তুমি বারবার ভুল করবে আর তোমায় ভালোবাসি বলে কিছু বলতে পারবো না।”
.
মাইশা ছলছল চোখে তাকিয়ে আছে আয়াতের দিকে।
.
” আমি হয়তো আমার ভালোবাসা অন্যদের মতো আমি প্রকাশ করতে পারি না মাইশা ; এক মানে এই না আমি কাউকে ভালোবাসবো না। আমি জাস্ট এতটুকু জানি বাঁচার জন্য আমার তোমাকে দরকার! আর আমি কি একবারও বলেছি যে আদ্রাফকে তুমি ভুলে যাও?
আদ্রাফ আদ্রাফের জায়গাই থাকুক। ওর জায়গা আমি চাই না। আমি আমার জায়গা চাই…….তোমার মনে আমার জন্য অনুভূতি চাই। চাই তোমার রৌদ্দুর হয়ে থাকতে। সেই সুযোগটা আমায় দেবে না?”
.
আদ্রাফকে হারানোর পর মাইশা যে আবারও অজান্তেই মনে নবঅনুভূতির ফুল ফোটাবে তা ছিল ওর কল্পনার বাহিরে। আয়াত কি পারবে ওর আধাঁরময় জীবনে রৌদ্দুর হয়ে আসতে?
.
.
#চলবে

#রৌদ্দুর_তোমার_নামে🍂
#কায়ানাত_আফরিন(মাইশা)
পর্ব:২৩
রাত প্রায় শেষ।কিছুক্ষণ পরেই ভোরের আলো ফুটবে।মাইশা ঘুমঘুমু চোখে আয়াতের দিকে তাকিয়ে আছে। আয়াত এই শীতে তাকে কোলে তুলে কই নিয়ে যাচ্ছে এই প্রশ্নটা তার মনে জাগলেও তার চোখে এত ঘুম আছে যে এই প্রশ্নটা করার মতো মনমানসিকতা তার এখন নেই।ঘরের সদর দরজাটা আস্তে করে পেরিয়ে বাইরে গেলেই একরাশ ঠান্ডা হাওয়া ছুঁয়ে দেয় মাইশাকে। একটু উষ্ণতা পাওয়ার জন্য মাইশা আয়াতের বুকে একেবারে মিশে ঘুমানোর চেষ্টা করে । আলতো হাসে আয়াত।
.
”আয়াত বলোনা এই শীতের সকালে আমার সুন্দর ঘুমটা কেড়ে নিয়ে এখন কোথায় নিয়ে যাচ্ছো?”
.
আয়াত কিছু না বলে কোল থেকে নামিয়ে দেয় মাইশাকে।স্বাভাবিক গলায় বলে….
”উঠোনের পাশে কল আছে ; ওখান থেকে মুখ ধুয়ে নাও।”
.
”এত ঠান্ডায় ওই ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুবো?”(অবাক গলায়)
.
”তাহলে তুমি কি এভাবেই আমার সাথে বাইরে যেতে চাও? I’ve no problem….আমি তো তোমার….”
.
মুখ থেকে বিরক্তের একটা প্রতিধ্ধনি বের করে মাইশা। একে তো এই শীতে এই লুচুবাঘটা কোথায় নিয়ে যাচ্ছে তা ওর অজানা আবার এই ঠান্ডা পানিতে এখন ওর মুখ ধুতে হবে ; এটা ভেবেই পশম খাড়া হয়ে উঠেছে তার।
.
”দাঁড়াও আমি মুখ ধুয়ে আসছি।”
.
.
গ্রামের মেঠোপথ পেরিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে দুজন। কুয়াশার অস্পষ্টতার কারনে আশেপাশের সকল দৃশ্যপট অস্পষ্ট।কানে ভেসে আসছে পাখিদের মৃদু কলকাকলির আওয়াজ। শীতের সকালে চাঁদপুরের এই প্রত্যন্ত গ্র্রামে খালে-বিলে দেখা যায় নানা রকমের অতিথি পাখি। এসব দেখে মাইশার ঘুম আস্তে আস্তে কেটে যায়। আয়াতের উষ্ণ হাত ধরে পরনে হলদেটে চাদরটা আরও ভালোভাবে জরিয়ে নেয় মাইশা।
.
অদূরেই গৃহস্থ নারীদের কাঠ-খড় সংগ্রহ করতে দেয়া যাচ্ছে। নাকে ভেসে আসছে কুয়াশার মৃদু ঘ্রাণ। কুয়াশার মধ্যেও অন্যরকম একটি ঘ্রাণ আছে যা অনেকটা মাদকের মতো।মাইশা বিস্মিত কন্ঠে বলে…..
.
”আয়াত তুমি কি আমায় এগুলো দেখাতে চেয়েছো?”
.
মাইশার দিকে না তাকিয়ে কিঞ্চিত হাসে আয়াত। মাইশা এতে নিজের কপাল ভাজ করে ফেলে। আয়াতকে যতই সময়ের সাথে সে জানার চেষ্টা করে ঠিক ততটাই অপরিচিত মনে হয় তাকে। তার কথাবার্তার সাথে তার প্রতিক্রিয়া কোনোকিছুরই কোনো মিল নেই।
.
”কি হলো….এভাবে হাসছো কেন?”(মাইশা)
.
”বড্ড অধৈর্যশীল তুমি।আমারা এখানে আছি সর্বোজোড় আধঘন্টা হলো আর এতেই তোমার কৌতূহলের শেষ নেই।,,,,[একটা শ্বাস নিয়ে]…..আজকে তোমায় নিয়ে সারাদিন চাঁদপুর ঘুরবো তারপর সন্ধ্যায় ঢাকা ব্যাক করবো। এখন এ বিষয়ে আর কোনো প্রশ্ন করবা না ঠিকাছে?”
.
আর কোনো উত্তর দেয় না মাইশা। এতদিনে একটুকু হলেও আয়াতের এই বৈশিষ্ট সম্বন্ধে অবগত হয়েছে সে। ছেলেটা হুটহাট করেই সব সিদ্ধান্ত নেয় আর বড্ড ভ্রমনপিপাসু ।
.
ধীরে ধীরে কুয়াশার আবরণ সরে দৃশ্যমান হয়ে উঠছে সবকিছু। মুখের মধ্যে পড়ছে পূব আকাশের হাল্কা মিষ্টি রৌদ্দুর।একপাশে বয়ে যাচ্ছে সরু একটি খাল যার কলকলে পানির প্রতিধ্ধনি যা বারবার ওদের কানে সুর তুলছে।আর অন্যপাশে রয়েছে দিগন্তজোড়া বিস্তৃত একটি সবুজ ক্ষেত।নীল আকাশের বুক চিরে বেরিয়ে আসছে রৌদ্দুরের সুবিন্যস্ত রশ্নি যা সরাসরি মাইশার গায়ে পড়ে অবর্ণণীয় রূপ ধারন করেছে। কিছুক্ষণ পরে আয়াত একটি ভ্যান ভাড়া করে। ভ্যানে চড়ে দুজন চলে তাদের নবগন্তব্যে।
.
তেতুঁলগাছের নিচে বসে ঝালমুড়ি খাচ্ছে দুজন। ক্ষণে ক্ষণে শীতল হাওয়া স্পর্শ করছে তাদের গায়ে। গাছ থেকে ছোট ছোট পাতাগুলো ঝরে তাদের গায়ে পড়ছে। এত গভীরভাবে কখনো প্রকৃতি উপভোগ করেনি মাইশা। আগে আদ্রাফের সাথে উত্তরা আর বারিধারার আশেপাশেই ঘুরতো । তাই প্রকৃতিটাকে গভীরভাবে উপভোগ করতে পারেনি সে।
.
”তো কেমন লাগছে আমার সাথে ঘুরে?”
আয়াতের প্রশ্ন শুনে মাইশা আয়াতের দিকে তাকায়।আয়াত শান্তদৃষ্টিতে তার উত্তরের জন্য অপেক্ষা করছে।
.
”সত্যি বলতে তুমি যখন থেকেই আমার লাইফে এসেছো তখন থেকেই জীবনটা অন্যভাবে উপভোগ করতে শুরু করেছি আমি। কখনো ভালো তো কখনো খারাপ।তাই তোমার উত্তরটি এই দুটির মধ্যেই একটা যা আমার কাছেও অজানা।”
.
আয়াত একটা আলতো হাসে। নিজের কপালে আছড়ে পড়া কালচে বাদামী চুলগুলো বামহাত দিয়ে পেছনে ঠেলে একদৃষ্টে আকাশপানে তাকিয়ে থাকে সে। চোখের ইশারায় মাইশাকেও বলে সেদিকে তাকাতে।
.
.
সময় কখনো কারও জন্য থেমে থাকে না। আপনগতিতে তা চলে যায় অজানা পথে। এভাবে প্রত্যন্ত পল্লী ঘুরতে ঘুরতে কখন যে আয়াত আর মাইশার সময় কেটে গেল তা তারা বুঝতেই পারেনি।আজ প্রকৃতিকে অন্যভাবে অনুভব করেছে দুজন। নিজের অস্তিত্ব অজান্তেই এই গ্রাম্য পরিবেশে মিশিয়ে ফেলেছিলো তারা।
পড়ন্ত বিকেল।দুজনের গন্তব্য এখন চাঁদপুরের সদরঘাটে।অটোরিক্সাতে চড়ে দুজনে সেদিকে যাচ্ছে। তাদের ব্যাগপত্র সব বাকিরা নিয়ে প্রায় লঞ্চে চড়ে গিয়েছে।আজ আয়াত মাইশার সাথে কোনোপ্রকার কোনো বিরক্ত করেনি..তাকে বিরক্ত করে অতিষ্ঠ করে তোলেনি।আজ আয়াতের ব্যাবহার দেখে মনে হচ্ছে যে তারা সদ্য কিশোর বয়সের প্রেমিক-প্রেমিকা যেখানে কোনো অশ্লীলতা নেই……আছে শুধু অবিরাম ভালোবাসা।
.
আয়াত জানে মাইশার তাকে মেনে নিতে সময় লাগবে তাই সে সময়কেই নিজের ভরসা বানিয়ে চেষ্টা করছে মাইশার মনে নিজের জায়গা করার।
.
”আয়াত?”
.
”বলো………”
.
”ধন্যবাদ……আজ আমি যে আনন্দটা পেয়েছি জানিনা কখনো সে অনুভূতির সম্মুখীন হবো কি-না তবে আজকের এই সময়টা আমি কখনোই ভুলতে পারবো না….”
.
”সময়টার সাথে আমাকেও মনে রেখো কেমন?”
,
জীবনটা সত্যিই অনেক অদ্ভুদ। একেক অধ্যায়ে রয়েছে সুবিন্যস্ত আগ্রহ; কখন কার সাথে কি হয়ে যায় কেউই তা জানেনা।অনুভূতিটাও তার সাথে পাল্লি দিয়ে এগোতে চায় নতুন উচ্ছ্বাসে।মাইশাও মনে প্রাণে চাচ্ছে আয়াতকে তার অনুভূতিক শিকলে আবদ্ধ করতে কিন্ত আদ্রাফকে যে সে ঠকাতে চায় না।হ্যাঁ আদ্রাফ আর নেই কিন্ত আদ্রাফ মৃত্যুর আগেও তার ভালোবাসাটা প্রকাশ করে গিয়েছিলো তাই মাইশা অনেকটাই অসহায়…তার হৃদয়ের কাছে…তার মনের কাছে।
আয়াতের কাধে আলতো করে নিজের মাথা রাখে সে। অশ্রুসিক্ত চোখে অপেক্ষা করতে সাথে এই পথ শেষ হওয়ার সাথে অন্য এক নতুন অধ্যায়ের।
.
.
#চলবে

গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ