Monday, October 6, 2025







বাড়ি"ধারাবাহিক গল্প"রৌদ্দুর তোমার নামে পর্ব-১০+১১+১২

রৌদ্দুর তোমার নামে পর্ব-১০+১১+১২

#রৌদ্দুর_তোমার_নামে🍂
#কায়ানাত_আফরিন(মাইশা)
পর্ব: ১০
.
যেই না আয়াত মাইশার এক হাত টান দিয়ে মাইশাকে নিজের কাছে আনলো সাথে সাথেই মাইশা আয়াতের উন্মুক্ত বুকে মিশে যায়। মাইশার এখন প্রচণ্ড পরিমাণে অস্বস্তি হচ্ছে। আয়াতের উন্মুক্ত বুক থেকে সে নিজের হাত সরিয়ে দিতেই আয়াত মাইশাকে আরও নিজের সাথে চেপে ধরে । মুখে বাঁকা হাসি থাকলেও চোখ দিয়ে তার আগুন ঝড়ছে।
.
”এভাবে আড়চোখে দেখছো কেন মাইশুপাখি….look at me babe ! আমি তোমার সামনে শার্টলেস অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছি।আমাকে কিস করতে মন চাচ্ছে….তাই না ?”
.
” নাউযুবিল্লাহ …বলো কি তুমি ? listen , আমার খেয়ে-দেয়ে আর কাজ নাই যে এইসব ফালতু কাজ আমি করে বেড়াবো? তুমি দরজা লক করো নাই কেন। আমার তো মনে হয় তুমি ইচ্ছা করেই সবাইকে তোমার বডি দেখাতে চাচ্ছো !”
মাইশা এ কথা বলে আয়াত থেকে দূরে সরে আসে। ক্রমাগত নিঃশ্বাস ফেলছে সে। ২৪ বছরের এই জীবনে এতটা অস্বস্তিতে সে কখনোই পড়েনি যতটা আয়াত তাকে ফেলছে এই কয়েক মাসে। আয়াত একগালে হেসে একপা একপা করে মাইশার দিকে এগোয়। মাইশা একটু করে পিছিয়ে যাচ্ছে। আয়াতের হাব-ভাব ঠিক দেখাচ্ছে না। আয়াত চিকন কণ্ঠে বলে…..
.
” আমি ইচ্ছা করে সবাইকে আমার বডি দেখিয়ে বেরাই , তা-ই না ?”
.
লও ঠেলা ! আয়াতকে আবারো ক্ষেপিয়ে ফেলেছে সে। মাইশার এখন মন চাচ্ছে নিজের গালে ঠাডিয়ে দুইটা থাপ্পড় মারতে।মাইশা আমতা আমতা করে বলতে থাকে…
.
” আয়াত….আ..আসলে….”
.
দরজার সাথে মিশে গিয়েছে মাইশা। মাইশা পেছনে ঘুরে দরজা খুলতে যাবে আয়াত সামনে ফেকে ডানহাত দিয়ে দরজা আটকে দেয়। মাইশা এবার শুকনো ঢোক গিলছে।আয়াত মাইশার অনেকটাই কাছে।মাইশার চোখ আয়াতের চোখে পড়তেই থমকে যায় মাইশা। আয়াতের চোখে কোনো কামুকতার দৃষ্টি ফুটে উঠে নি। মাইশার মনে হচ্ছে আয়াতের চোখে এক অদ্ভুদ মায়া আছে যা শুধু সে নিজের জন্য অনুভব করতে পারছে ঠিক যেমনটা আদ্রাফের চোখে ছিলো।
আদ্রাফ তাকে ভালোবাসতো বলেই আদ্রাফের চোখে তার জন্য ভালোবাসা দেখেছে ; কিন্তু আয়াত কি তাকে ভালোবাসে যে সে তার দৃষ্টি দিয়ে মায়া প্রকাশ করছে ?
.
” আ-আয়াত……”
.
” হুসসসসস…………”[মাইশার ঠোঁটে আঙ্গুল দিয়ে] কোনো কথা বলবা না । তোমার কথা শুনে অটোমেটিক্যালি আমার মাথায় রক্ত চড়ে উঠেছে………..এখন যদি আর একটা কথা বলো না তার পরিণামে যে আমি তোমার সাথে কি করবো I don’t know about that….so close your lips and let me scan you….”
.
মাইশার এবার কাঁপাকাপি শুরু হয়ে গিয়েছে। আয়াতের শীতল কণ্ঠে এক অন্য রকম মাদকতা আছে যা কিছুতেই সে ignore করতে পারবে না। আয়াতের গায়ের থেকে এক মিষ্টি সুবাস বারবার তার নাকে এসে ধরা দিচ্ছে। আয়াত আবারো মিহি কণ্ঠে বলে,
.
” Next time আমি যদি তোমাকে আর কোনো উল্টাপাল্টা কথা বলতে দেখি I swear মাইশা তোমার যে আমি কি অবস্থা করবো ভাবতেও পারবানা তুমি……….এখন কেটে পড়ো এখান থেকে। তোমার গলার নিচে already ওই লাল তিলটা দেখে আমার আবার মাথা নষ্ট হয়ে গিয়েছে…….[মাইশার বাহু ঝাঁকিয়ে ] কি proof করতে চাও তোমার শরীর দেখিয়ে……now get out from here ! ” (চিল্লিয়ে)
.
মাইশার চোখ টলমল করছে জ্বলে আয়াতের কথা শুনে। তৎক্ষণাৎ সে রুম থেকে বেরিয়ে যায়। এই নিয়ে ৪ বার আয়াত তার character নিয়ে আঙ্গুল তুললো। নিজেকে গলা টিপে শেষ করে দিতে মন চাচ্ছে মাইশার।
.
” আয়াত ! তুমি সত্যি অনেক খারাপ…….আমারই ভুল হয় তোমাকে ভালো মনে করার…….”[মনে মন]
.
.
সময়টা যে কিভাবে খালামণিদের বাসায় মাইশা অতিক্রম করেছে তা শুধু মাইশাই জানে। আয়াতের সাথে টু শব্দও করেনি সে। কিন্ত বিপত্তি ঘটে বাড়িতে যাওয়ার সময়। আয়াতের সাথেই ফিরতে হচ্ছে তাকে। মাইশা অনেক্ষণ জোরাজুরি করছিলো নুহাশ ভাইকে যাতে তাদের সাথে যায়। কিন্ত ওই গাড়িতে জায়গা না থাকার কারণে নুহাশ তাকে নিয়ে যেতে পারলো না। এখন মাইশার আয়াত ছাড়া বাড়িতে যাওয়ার আর কোনো গতি নেই।
.
গাড়ি জ্যামবিহীন সড়ক দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে বেইলী রোডের দিকে। যেতে এখনো অনেকসময় বাকি। মাইশা চুপচাপ ব্যাস্ত নগরীর সৌন্দর্য উপভোগ করতে মগ্ন। তাকে দেখলে মনে হয় গাড়িতে সে একাই বসে আছে।আয়াত ড্রাইভিং এ ধ্যান দিয়েই বলতে থাকে….
.
”এমন শুকনো আপেলের মতো মুখ করে আছো কেন ? দেখে মনে হচ্ছে খালামণিদের বাসার থেকে নির্যাতিত হয়ে এসেছো….”
.
” তার থেকেও বেশি হয়ে এসেছি ……তোমার সমস্যা? ”
.
বিরক্তির প্রকাশ ঘটাচ্ছে আয়াত। মুখ দিয়ে একটি বিরক্তির sound দেখিয়ে বলে…..
” বাঁকা করে কথা না বললে ভাল্লাগে না ?রিডিকিউলাস !”
.
ক্ষেপে যায় মাইশা। আয়াত তার ধৈর্যের বাঁধ ভেঙ্গে দিচ্ছে। বারবার ও চাচ্ছে আয়াতের কাছে থেকে ১০ হাত দূরে থাকতে। বাট না।
.
” What did you say? আমি রিডিকিউলাস….! ইউ আর দ্যা **** . ”
রাগের বশে মাইশা কি বলছে সেই হুশ ওর নেই। আয়াত এবার জোরে ড্রাইভ করতে থাকে……….মাইশা এবার একটু ভয় পেয়ে যায়। আয়াত নিজের রাগ প্রকাশ করতে চাচ্ছে না মাইশার কাছে বাট মাইশার এভাবে স্ল্যাং ইউজ করাতে ভয়ঙ্কর থেকেও ভয়ঙ্করভাবে রেগে আছে।
.
” আয়াত ! Stop the car !”
.
আয়াত তা শুনে গাড়ির স্পীড বাড়িয়ে দেয়। মাইশার ঠোঁট শুকিয়ে যাচ্ছে। আদ্রাফের সেই ভয়ঙ্কর দৃশ্যের কথা বারবার তার চোখের সামনে ভেসে আসছে। নিজের ঠোঁটটা একটু ভিজিয়ে মাইশা আবারও বলতে থাকে….
.
” আয়াত,…..please stop the car!”
.
আয়াত একই বেগে গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছে। মাইশা আর পারছে না নিজের ট্রমাটাকে এভাবে আড়াল করে রাখতে। বারবার আদ্রাফের অপূর্ণ চোখযুগল ভেসে আসছে তার সামনে। কানে বারবার আদ্রাফের সেই অপূর্ণ কথগুলো ভাসছে। মাথায় চিনচিন ব্যাথা শুরু হয় তার। পারছে না সে অতীতের স্মৃতিগুলোকে সহ্য করতে। মাইশা এবার একটা জোরে চিংকার দিয়ে বলে…….
” আয়াত, I beg you,for God sake please stop the car ! ”
.
আয়াত মাইশার চিৎকার শুনে নিজের রাগকে একপাশে রেখে গাড়ি থামিয়ে দেয়। মাইশার সামনে সবকিছু ঘোলাটে লাগছে । চোখ দিয়ে অনবরত পানি পড়ছে তার। আয়াত মাইশার কাছে এসে আকুলকণ্ঠে বলতে থাকে……
” মাইশা ! কি হলো? please try to open your eyes !”
.
মাইশা নিজের শরীরের ভর ছেড়ে দেয় আমাতের বুকে।নিঃশ্বাস নেয়ার চেষ্টা করে আকুলকণ্ঠে বলতে থাকে…..
.
”আদ্রাফ ! ”
.
#চলবে

#রৌদ্দুর_তোমার_নামে🍂
#কায়ানাত_আফরিন(মাইশা)
পর্ব:১১
রাতের আবছা অন্ধকারে সড়কের লাইটের মিহি আলো তীর্যকভাবে গাড়ির ভেতর আয়াত আর মাইশার মুখে পড়ছে।মাইশা এখনো ট্রমা থেকে বের হতে পারছে না। আয়াতের বুকে মুখ ডুবিয়ে ঘনঘন নিঃশ্বাস ফেলছে সে। আয়াতের বুকে এখন কেউ যেন হাতুড়ি পেটাচ্ছে। মাইশার এমন পরিস্থিতিতে সে কি করবে ভেবে পাচ্ছে না। নিজের বুক থেকে মাইশাকে উঠিয়ে আলতো করে মাইশার গালে নিজের দুহাত রাখে। উদ্বিগ্ন কন্ঠে বলতে থাকে,
“ মাইশা…..দেখো শান্ত হও।কি হচ্ছে তোমার ? “
.
“আ আদ্রাফ!”
আর কিছু বলতে পারেনি মাইশা। আয়াতের বুকে ঢলে পড়ে সে।মাইশাকে অজ্ঞান হতে দেখেই আর কোনো কিছুর হুঁশ থাকে না আয়াতের। এমনকি মাইশার বলা শেষ কথাটিতেও পরোয়া করে নি সে।মাইশাকে চিৎকার করে ডাকছে সে……
.
“মাইশুপাখি ! প্লিজ চোখ খুলো……আই এম সরি পাখি ; প্লিজ ওপেন ইউর আইস”
মাইশা আয়াতের প্রতিটি কথাই শুনতে পারছে কিন্ত আয়াতের কথায় প্রতিক্রিয়া করার মতো নূন্যতম ক্ষমতা নেই ওর কাছে। স্নায়ুতন্ত্র যেনকাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে। আয়াতের গায়ের ঘ্রাণ তার কাছে আ্যলকোহলের মতো লাগছে। ধীরে ধীরে সে মিলিয়ে যায় আয়াতের বুকে…..
.
🌿🌿🌿🌿🌿🌿🌿🌿🌿🌿🌿🌿🌿🌿
.
অতীত
আজ মিহির আপুর জন্মদিন।আপু আজ তার জন্মদিন বাইরে সেলিব্রেট করতে চাইছে। আমিও আজ আপুর সাথে যাবো বলে পণ করেছি। কিন্ত বাঁধ সাজে আমার আম্মু । তার মতে…’ ক্লাস টেনে পড়ুয়া আমার মতো মেয়ের কি তাদের সাথে যাওয়া মানাবে? ‘ পরে ভাইয়া আম্মুকে মানায়। সেই সুবাদে এখন তৈরি হচ্ছি আমি।
.
একটি হাল্কা আকাশী সেলোয়ার কামিজ পড়ে আমি আপুর জন্য আমাদের বাড়ির সামনে দাড়িয়ে আছি। বাইরে ফুরফুরে বাতাস। ক্ষণেক্ষণে বাড়ির পাশে থাকা বকুল গাছটার তীব্র ঘ্রাণ আমার নাকে আসছে।
.
হঠাৎ দেখি আদ্রাফ তার বাইক নিয়ে বাড়ি থেকে বের হচ্ছে। আমাকে দেখেই একটু অবাক হয় সে। বাইকটা সেদিকে রেখেই আমার দিকে এগিয়ে হাসে। পরনে হোয়াইট টি শার্ট, ব্ল্যাক প্যান্ট, হাতে সিম্পল একটা ঘড়ি , গালে খোঁচা খোঁচা দাড়ি সবমিলিয়ে আমার তাকে খুব ভালোলাগছে। আদ্রাফ আমার কাছে এগিয়ে এসে বলে..
.
“ কারও জন্য wait করছো তুমি!”
.
“ জ্বী , আজ না আপুর জন্মদিন ! আপু বলেছে আজ আমাকে নিয়ে ঢাকা ঘুরবে….কেন? আপনি আসছেন না?”
.
“ ইচ্ছা ছিলো….কিন্তু আমার আপুর জন্য গিফট কিনতে হবে…. আসলে আমি ভুলে গিয়েছিলাম”
কাতর কন্ঠে বলে সে। তার কথা শুনে আমি হাসি না থামিয়ে রাখতে পারলাম না। আদ্রাফ ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। তারপর অবাক হয়ে বলে…..
“এত হাসার কি আছে মাইশা?”
.
আমি এবার হাসি থামিয়ে তাকে বলি…
” একজন বোনের কাছে তার ভাই বেশি important আদ্রাফ ভাই ; গিফ্ট না । আমাকে আর নুহাশ ভাইয়াকেই দেখেন…”
.
“ কিন্তু”
.
আমি তার হাত আমার দুহাত দিয়ে আগলে বলি…
” আর কোনো কথা বলবেন না এ ব্যাপারে… এখন চলেন।”
.
“ কোথায়?”
.
“ আপুকে উইশ করতে”
….
….
আপুর সাথে ঘুরাঘুরি করে আদ্রাফের বাইকে বসে বাড়িতে আসছি। একটি সরু রাস্তা দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি আমরা। রাতের আধারে আর বায়ুপ্রবাহের তীব্র গতির জন্য ওর সাথে মিশে বসেছি আমি। আমি খুবই উপভোগ করছি সময়টা। আদ্রাফও বোধহয় উপভোগ করছে।হঠাৎ আদ্রাফ মিহি কন্ঠে গান গাওয়া শুরু করে
.
“ তুমি তো সেই যাকে আমি চাই
কেন এভাবে তোমার হতে চাই
তুমি এভাবে হেসো না”
আমি এবার আনমনেই তার সাথে তাল মিলিয়ে গান গাওয়া শুরু করি,
.
“হৃদয়ের পাতায় তোর নাম লিখেছি
মনের শহরে রঙধনু একেঁছি
মন বলে তাকে ডেকোনা”
আদ্রাফ এবার আবার সুর তুলে বলে,
.
“ এই স্বপ্নের শহরে হাঁটবো তোর সাথে
আয়না ছুয়ে দে একবার আমাকে
সব বাঁধা পেরিয়ে থাকবো তোর সাথে
আয়না ছুয়ে দে একবার আমাকে….
(স্বপ্নের শহরে-Me&you last chapter)
.
আমি অবাক চোখে তাকিয়ে আছি। নিশিপথের হিমশীতল বায়ু প্রেমের আবরণে আকড়ে ধরেছে আমাকে। কেননা আদ্রাফের প্রতিটি সুর ইঙ্গিত করেছে আমাকেই। আচ্ছা তবে কি সেও আমাকে ভালোবাসে?
.
🌿🌿🌿🌿🌿🌿
.
নাকে মেডিসিনের কিছু তীব্র গন্ধ ভেসে আসতেই পিটপিট করে চোখ খুলে মাইশা । কানে ভেসে আসে একটি পুরুষালি কন্ঠ
.
“ মিঃ আয়াত ! উনার mentally condition খুবই খারাপ। কোনো একটি ট্রমার মধ্য দিয়ে উনি অনেকবছর ছিলেন & that’s why অই জিনিসটা recall হওয়াতে উনার নিউরন সাড়া দেওয়া বন্ধ করে দেয়।এখন আমি কিছু মেডিসিন প্রেসক্রাইব করে দিয়েছি।Take care herself…excuse me”

মাইশা এবার আয়াতের দিকে তাকাতেই তার দুর্বল চোখ রসগোল্লার মতো হয়ে যায়। আয়াতের চুল উষ্কোখুষ্ক , শার্টের উপরে কয়েকটা বোতাম খোলা, ফর্সা মুখ লাল হয়ে আছে; দেখলেই মনে হয়ে সারারাত ঘুমায়নি সে।
মাইশাকে উঠতে দেখে আয়াত সাথে সাথে মাইশার কাছে গিয়ে কষিয়ে চড়ে মেরে দেয়।
(কি ভাবছিলেন জরিয়ে ধরবো?😐)
মাইশা গালে হাত দিয়ে বোকার মতো বসে আছে।এরপরে আয়াত যা করলো তা মাইশার ধারনার বাহিরে ছিল। মাইশাকে নিজের কাছে এনে কপালে গভীরভাবে নিজের ঠোঁট বুলায়।মাইশা আবেশে নিজের চোখ বুজে নেয়।আয়াত তারপর ওর কানের কাছে বলতে থাকে..
.
“ Sorry মাইশুপাখি। এখনকার জন্য না…আমার কারনে তোমার এ অবস্থা তার জন্য”
.
.
#চলবে

#রৌদ্দুর_তোমার_নামে🍂
#কায়ানাত_আফরিন(মাইশা)
পর্ব:১২
গাড়ি এগিয়ে যাচ্ছে আপনগতিতে।মাইশা আড়চোখে বারবার আয়াতকে দেখে যায়। আয়াত একধ্যানে গাড়ি চালাতে মগ্ন। তার ফেস দেখে মাইশা কিছুই বুঝতে পারছে না। মাইশা ঠিক করেছে এই ছেলেটার সাথে আর একটাও কথা বলবে না। সমস্যা কি ওর ? বারবার ওকে অপমান করে , খারাপ বিহেব করে আবার মাঝেমাঝে এমন ভাব করে ওর মনেপ্রাণে যেন শুধু মাইশারই বিচরণ। আবার ভার্সিটিতে সবার সামনে থাপ্পড় মারলো ; ইভেন হসপিটালেও থাপ্পড় মেরেছে…..দু দুবার আয়াতের চড় খেতে হয়েছে তাকে। কেন যে মারলো তা মাইশার অজানা। উত্তর জানার জন্য তার মনে কৌতুহল আছে বটে কিন্তু এখন আয়াতকে একটা প্রশ্নও সে জিজ্ঞেস করবে না।
.
মাইশার চোখ না চাইতেও বারবার আয়াতের দিকে যাচ্ছে। আয়াত উপরের ঠোঁট দিয়ে নিচের ঠোঁট চেপে গাড়ি চালাচ্ছে। হাওয়ার দোলায় খেলা করছে তার এলোমেলো চুল। শার্টটাও ভীষন অগোছালো লাগছে কিন্ত আয়াতকে এতেও খারাপ লাগছে তা নয়। উল্টো এতে তার লুকোনো সৌন্দর্যের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে । মাইশার মতো আয়াতেরও বাম কানে একটি তিল আছে । মাইশা কিছুক্ষণ সেদিকে তাকিয়ে থেকে আয়াত আচমকা বলে ওঠে…..
.
”এভাবে তাকিয়ে থাকলে কোনো লাভ নেই ! মনে করো না যে-ই গালে থাপ্পড় দিছি ওই গালে চুমু দেবো। ”
মাইশা সাথে সাথে চোখ ফিরিয়ে নেয়। কি ভয়ঙ্কর ছেলেরে বাবা ! কিন্ত একটু আগের করা পণের কথা ভুলে মাইশা অবাক কন্ঠে বলে ওঠে…..
.
” এত বেশি বুঝো কেন তুমি? আমি কি একবারও বলছি যে তুমি ওইটা করবা?”
.
”কি করবো?”
.
”ওইযে কিস !”(গলার স্বর নিচু করে ফেলে সে)
.
”তো ওভাবে তাকিয়ে ছিলে কেন ? আমার মতো অবলা ছেলের দিকে যেভাবে তাকিয়ে ছিলা…..নাউযুবিল্লাহ ! আমি তা কল্পনাও করতে চাচ্ছি না।”
.
” তুমি……অবলা ! ”
.
”অবশ্যই , নাহলে এভাবে তাকিয়ে ছিলে কেনো ! তাকিয়ে থেকে লাভ নেই….আমি তোমার প্রেমে পড়ছি না…”
.
”হুহ, প্রেম আর তু্মি…..! খালি তো পারো আমার মতো নিরীহ মেয়েকে থাপড়াইতে”(বিড়বিড়িয়ে বলে)
.
”কিছু বললা?”
.
নাহ ! কিছু না।(মেকি হেসে)
.
.
বাড়িতে আসতেই সবার প্রশ্নের জোয়ার বয়ে যায়।গতকাল রাতে মাইশার কি হয়েছিলো..কিভাবে হয়েছিলো…নানা কিছু।কিন্ত আয়াত এখানে যেন নীরব দর্শক। কারও প্রশ্নেরই কোনো উত্তর দেয়নি সে। শেষে মাইশাকেই সবকিছু ম্যানেজ করতে হয়েছে।
.
🍂🍂🍂🍂🍂
.
রাত মোটামুটি গভীর। মাইশা এখন ঘুমের রাজ্যে বিচরণ করছে। এই মিহিশীতে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য ফ্যান ছেড়ে কম্বল মুড়িয়ে ঘুমিয়ে আছে। বড্ড আরাম লাগছে তার।হঠাৎ তার আরামের ঘুম হারাম করে দেয়….তার মোবাইল। অনবরত বেজেই চলছে ফোনটি। মাইশা একরাশ বিরক্তি নিয়ে ফোনটির দিকে মিহি চোখে তাকায়। আবার ঘুমিয়ে যায় সে।
,
কিন্ত মোবাইল আবার বেজে উঠলে সে। কম্বল থেকে হাত বের করে ফোন ধরে। দেখে আননোন নম্বরের কল। মাইশার একটু সন্দেহ জাগলেও ঘুমের ঘোরে থাকায় তুলে নেয় কলটি।
.
” আসসালামু আলাইকুম….এত রাতে একটি মেয়েকে এভাবে কল করেছেন কেন..?”
.
” সিরিয়াসলি মাইশা ? তুমি এখনো আমার নাম্বার সেভ করো নি”
.
টর্নেডোর মতো মাইশার ঘুম হাওয়ায় মিলিয়ে যায় আয়াতের রাগী কন্ঠ শুনে।
.
” আ..আয়াত! এভাবে এত রাতে কল করেছো কেন?”
.
”নিচে আসো…Right now…এই ব্যাপারে কোনো হেলফেল হলে কোলে তুলে নিয়ে যাবো..”
.
.
#চলবে

গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ