#রাত_যখন_গভীর
#জান্নাতুল_মাওয়া_মহুয়া
#(jannatul_mawa_moho)
Season:02
Part :০৯
************
লাবু,রেশমি, রাহাত হুজুর লক্ষ্য করে। তাদের রুমের লাইট অন এন্ড অফ হচ্ছে। একটু পর দেখে,
জিন রাজা (রশিদ),রানী(লোভা),সাথে রাজকন্যা শাম্মি আছে। কৌশল বিনিময় করার পর।সবাই বসে।লাবু কিছু মিষ্টি আনে।সবাই কে সার্ব করে দেয়। এমন সময়,
অর্ক বলেঃ হঠাৎ কি মনে করে আসলেন?
জিন রাজা বলেঃ আপনাদের সাথে দেখা করতে। সাথে রিনি মার সাথে একটু দেখা খরবো
।ওই দিন পর থেকে আর খুঁজ খবর নেয়া হয়নি।সেদিন যে গেলাম আর তো দেখা করিনি।তাই ভাবলাম বেড়িয়ে আসি।
রাহাত হুজুর বলেঃ হুহ রিনি।রিনি তো বলে একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে ।তারপর, বলে
মেয়ে টা ওই দিনই গায়েব হয়ে গেছে রাতের সময়।আমরা কোন রহস্য উদ্ধার করতে পারিনি।
শাম্মি, রশিদ,লোভা ৩ জনই চমকে উঠে। কথা টা তাদের বড্ড কষ্ট দিয়েছে। মেয়ে টা কে দেখতে আসলো,আর কি যে মর্মাহত হওয়া কথা শুনলো।
শাম্মি বলেঃ আমাদের জানাননি কেন?
রাহাত হুজুর বলেঃ রাজা মশাই কে জান্নাত ঢেকেছিল। কিন্তু সারা দেইনি।
আজ প্রায় ১ মাস হয়ে গেছে। তাছাড়া, বন্ধু রা সবাই আসছে আজকে। আরও অনেক কিছু অদ্ভুত ঘটনার সামনে পড়ছি আমরা।তাই, রিনির রহস্য উদ্ধার করেই ছাড়বো।
রাজা রশিদ বলেঃ আচ্ছা সবাই আসুক।আমরা ও থাকি। সবাই মিলে চিরুনি অভিযান চালিয়ে দেখবো।ইনশাআল্লাহ খুঁজে ও পাবো।
লোভার ও খারাপ লাগলো। আহারে,মেয়ে টা যে কই আছে, আল্লাহ ওকে দেখে রেখো।
লোভা বলেঃ আচ্ছা, আমার ছেলে কি মুক্তি পাবে না?সারাজীবন কি সাগরে ভেসে বেড়াবে?
অর্ক বলেঃ ভাগ্য ঠিকই আপনার ছেলে কে মুক্তি দিবে।সঠিক সময়ে সব কিছু হবে।সো চিন্তা করবেন না।
সবার মন খারাপ।তাছাড়া, কখন যে ওরা এসে পৌছাবো আল্লাহ জানে।অপেক্ষা করছে ওদের আসার জন্য।
গাড়ি চালাচ্ছে হাবিব। মেইন রোড এ উঠে পড়ে।একটু পর,বড় একটা ট্রাক তাদের দিকে ছুটে আসছে। হাবিব ঘাবড়ে গিয়েছে।এমন সময় ট্রাক সামনা সামনি আসতেই, মুগ্ধ হাবিবের হাতের উপর হাত দিয়ে অন্য দিকে ঘুরিয়ে দেয়। এতে করে একটা পাথরের সাথে গাড়ি ধাক্কা খেয়ে একটা বট গাছের গিয়ে আবার ধাক্কা খেল গাড়ি ।সবাই সুরক্ষিত ছিল তবে জান্নাত পিছনের দিকে বসাতে ধাক্কা লেগে, একটু ব্যথা পেয়েছে।সামনে সিট বেল পড়ে ছিল তাই ওদের কিছু হয়নি। মাথা দিয়ে রক্ত পড়ছে। মুগ্ধ পিছনের সিটে চলে আসে।সুমি কে সামনে পাঠিয়ে দেয়।হাবিব গাড়ি টাকে খুব সতর্কতার সঙ্গে আবার রাস্তায় তুলে।হাবিব গাড়ি চালাচ্ছে।
মুগ্ধ জান্নাত এর মাথা থেকে রক্ত মুছে দিচ্ছে।জান্নাত রক্ত দেখে বেহুশ হয়ে যায় । মুগ্ধের রুমাল টা বেধে দেয় ক্ষত স্থানে। সবার চোখ এর আড়ালে ক্ষত স্থানে একটা চুমু দেয়। মুগ্ধ হালকা পানি দেয় জান্নাত এর সেন্স ফেরানোর জন্য। অবশেষে, সেন্স ফিরে আসে। জান্নাত মাথা তে হাত দিয়ে দেখে ব্যথা নেই। কপালে জাস্ট একটা রুমাল বাধা।
জান্নাতএর বসে থাকতে থাকতে ঘুম পাচ্ছি লো।তাই ঘুমিয়ে পড়লো। আস্তে করে,জান্নাত এর মাথা টা গিয়ে পড়ে মুগ্ধের কাঁধে।
মুগ্ধ বলেঃ
খুঁজি তোমায় অদৃশ্য শহরে,
কাটেনা সময় তোমারও
প্রহরে।
খুঁজি তোমায় এসে ফিরে
যাওয়া ঢেউয়ের মাঝে,
খুঁজি তোমায় অথিতি
পাখির মাঝে।
তোমায় দেখি নতুন ভোরের
কুয়াশায়,
তাই তো থাকি তোমার এক
পলক চাহনির আশায়।।
ভালবাসি ভালবাসি ভালবাসি
তোমায় জান্নাত….. (কবিতা লেখকঃবিজয়)
হঠাৎ, জান্নাত এর ঘুম ভেঙ্গে গেলো। নিজেকে মুগ্ধের বুকে দেখে লজ্জা পেল।
গাড়ি চলছে। সবাই দোয়া পড়ছে যত দ্রুত সম্ভব পৌঁছাতে হবে।আর মাত্র আধা কিলোমিটার দূরত্বে আছে সবাই। এমন সময়, গাড়ির আয়নার মধ্যে কার যেন বিবৎস চেহারা দেখে। সবাই ভয়ে চুপসে গেছে।
তখনই, মুগ্ধ বলেঃ আয়নার মধ্যে না তাকিয়ে সামনে গাড়ি চালিয়ে যাও।
আর একটু পর সবাই অবশেষে অর্কের বাসায় পৌঁছে যায়। একটু গাড়ি তে রেস্ট নিয়ে।রাবেয়া কে সহ নিয়ে অর্কের বাসায় প্রবেশ করে।
কিন্তু অর্কের বাসায় প্রবেশ করতেই, রাজা,লোভা এবং শাম্মি কে দেখে অবাক হয়ে যাই সবাই।
সবার মনে একটাই প্রশ্ন, ওরা কেন এসেছে? আসছে,তবে আমরা যেদিন আসলাম সেদিন কেন আসলো????
তবে সবাই প্রশ্ন নিয়ে চিন্তা করলেও হাবিবর তাকিয়ে আছে শাম্মির দিকে।শাড়ি টাতে বেশ লাগছে।একদম পরী র মতো। বাস্তব,পরী লাগতো,যদি পেছনে দুটো ডানা থাকতো।তখনই,
প্রিন্স বোতল এর ভিতর থেকে মহিলার গতিবিধি লক্ষ্য করছে।কোন ভাবে যদি বের হতে পারে তাহলেই হলো।বের হয়ে, সবার প্রথমে রিনির কাছে যাবে।রিনি যে কেমন আছে খুব জানতে ইচ্ছে করছে প্রিন্স এর।মেয়ে টার পাগলামি গুলো বড্ড মিস করছে প্রিন্স।
তবে মজার ব্যাপার হচ্ছে, প্রিন্স জানে না এখন কার বাসায় আছে?তাছাড়া, রিনিও যে এই ঘরে আছে তাও জানে না।অবশ্য, বোতলের ভিতরে, প্রিন্স এর শক্তি কাজ করে না।আধু মিল হবে তো রিনি ও প্রিন্স এর?
এমন সময়, রিনি কেউ একজন এর পায়ের শব্দ শুনতে পেল। রিনি চোখ বন্ধ করে দেয়। দরজা খুলে রহমান প্রবেশ করলো।
আবার রিনি কাছে চলে আসে। কপালে একটা চুমু দিতে গিয়ে ও দিল না।রহমান আবার বলেঃ
jindegi mey sabkuc
Malum nehi hota,kuc
Baat or paal hudko bana
Lena cahie.
কিন্তু বিবেক বাঁধা দিল রিনি।তোমাকে স্পর্শ করতে পারিনি।তোমাকে যখন দেখি দেখে দেখে থাকতে মন চাই। যদি সাধ্য থাকতো তাহলে তোমাকে ২৪ ঘন্টা আমার সামনে রাখতাম।আমার সামনে তোমাকে রেখে অপলক দৃষ্টি তে তাকিয়ে থাকতাম। আসলে,
tomko jab dektahu na,
Tab mere dilmey kuc
Hota hey.
Apko jab dektahu na tab
Marke pir ekbar jineki
Dil karta hey…
রহমান একটা জোরে নিশ্বাস নেই। তারপর, আলতো স্বরে বলে ঃ রিনি ও রিনি।
রিনির কোন সাড়া শব্দ শুনতে পেল না। আবারও ডাক দেই। কিন্তু কোন কাজ হচ্ছে না। রহমান জিন কিছু পানি নেই। পানি গুলো রিনির উপর ফেলে দেয়। সাথে সাথে রিনি হুর মোর করে উঠে পড়ে। রিনি ডেব ডেব করে তাকিয়ে আছে রহমান এর দিকে।
রহমান বলেঃ কেমন আছো? ফ্রেশ হয়ে আস।তারপর কিছু খাবে।
রিনি এক চুল পরিমাণ ও নড়ে নি।রিনি বলেঃ আমি বাসায় যাবো!আমাকে যেতে দিন প্লিজ। আপনার তো কোন ক্ষতি করিনি তাহলে আমাকে এখানে রাখছেন কেন???
রহমান অপলক দৃষ্টি তে তাকিয়ে আছে। চটরপটর৷ করে কথা বলা অপসারীর দিকে। কথা বলার সময় রিনির চোখ জোড়া ছোট বড় হচ্ছিল বেশ লাগছিল।
মনে মনে বলছে, মানুষ যতই শক্তি শালী হোক না কেন, প্রিয় মানুষ টির কাছে সবসময় দুর্বল।
রহমান ও দুর্বল হয়ে গেছে রিনির প্রতি। আজকাল স্বপ্ন তে ও আসে রিনি নামক মেয়ে টা।
রহমান বলেঃ সরি এটা সম্ভব হচ্ছে না। যা বলছি তাই কর।
রিনি তো রহমানের কথা তে কর্ন পাত ও করেনি এখনো বসে আছে একেই ভাবে।
রহমান বলেঃ শেষ বার বলছি। অন্যতাই সারাদিন কিছু দিবো না।না খেয়ে থাকতে হবে।
রিনি এবার ও নিস্তব্ধ হয়ে আছে।
রহমান রুম থেকে বেরিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়। সারাদিন রিনি কে কিছু দেয় নি।খিদের জ্বালায় রিনির নাজে হাল অবস্হা।
রাতের দিকে রহমান আবার আসে রুমে।রিনির ম্লান মুখ সাথে এলোমেলো চুলে বেশ লাগছে।রাহমানের একটা কবিতা বলতে ইচ্ছে করছে, তাই মৃদু স্বরে বলে,
” ভালবেসে এই মন, তোকে চাই সারাক্ষণ
আছিস তুই মনের মাঝে, পাশে থাকিস সাঝে।
কি করে তুকে ভুলবে এই মন,
তুইই যে আমার জীবন।
তোকে অনেক ভালোবাসি।।
রহমান রিনির পাশে বসে।
রহমান বলেঃ খিদা পাইছে না অনেক? এই নাও বড় মাছ দিয়ে ভাত এনেছি খেয়ে নাও।
রিনি মনে মনে বলছেঃহুম ছুতো মেরে গরু দান করতে এসেছে। সারাদিন না খাইয়ে রেখে এখন এসেছে।
রহমান বলেঃ কই চুপ কেন? নাকি এখন ও খাবে না।অনেকটা রেগে।
রিনি বলেঃ খাবো না খিদে নেই।
রহমান রিনির কোন কথাই শুনেনি।জোর করে চামচ দিয়ে খাইয়ে দিচ্ছে। অবশ্য, রিনি প্রথমে না খেতে চাইলে ও এখন চুপচাপ খাচ্ছে। খিদে যে পেয়েছিল।
তাছাড়া না খেয়ে থাকলে অসুস্থ হয়ে যাবে রিনি।তা একদম চাইনা রহমান।
রিনিকে খাওয়া শেষ করে। রহমার পানি টা এগিয়ে দেয়। তারপর রহমান বলেঃরিনি,আমি তোমাকে……
চলবে……..
#রাত_যখন_গভীর
#জান্নাতুল_মাওয়া_মহুয়া
#(jannatul_mawa_moho)
Season:02
Part :১০
************
রিনিকে খাওয়া শেষ করে। রহমার পানি টা এগিয়ে দেয়। তারপর,
রহমান বলেঃরিনি,আমি তোমাকে বিয়ে করছি।
এটা বলে,রিনির হাতটা ধরে।
রহমান আবার বলেঃ
পরশু মানে আগস্ট এর ২ তারিখ আমাদের বিয়ে। কাল আমাদের গায়ে হলুদ হবে। আমি তোমাকে প্রিন্সের মতো অবৈধ ভাবে স্পর্শ করতে চাইনা।সম্পূর্ণ বৈধ ভাবে নিজের করতে চাই। তাছাড়া, মানুষের সাথে হঠাৎ কথা বন্ধ হয়ে যাওয়া, আর দম বন্ধ হয়ে যাওয়া একই কথা। আমি চাই আজীবন তোমার সাথে কথা বলতে। মৃত্যুর আগ অবধি তোমার অবুঝ মনের কথা গুলো শুনতে। তোমার কথা বলা যেন বন্ধ না হয়।সব সময় কিচির মিচির কথা বলেই যাবে।সারাজীবন এর এই বাঁধনে পরশু বেধে নিবো ওগো রূপসী কন্যা।চাইলে ও পারবে না ছাড়তে। সবার শেষে বলে,
Ek tum ho jo
Kuch kehti nahi,
Ek tumhari yaadein hai,
Jo chup rehti nahi….
এই কথা বলেই রিনির প্রতি উত্তর এর অপেক্ষা না করেই রুম থেকে বেরিয়ে আসে রহমান। রিনি এখনো নিজের কানকে বিশ্বাস কর তে পারছেনা।
মেয়ে টার ধৈর্য এর বাঁধ যেন একদম ভেঙ্গে যায় যায় অবস্থা । হাত, পা ঘুটিয়ে বসে আছে রিনি। চোখ গুলো বড্ড জ্বালাচ্ছে, অনবরত টপটপ পানি ঝরে পড়ছে।
রিনি বলেঃ ইয়া, আল্লাহ। মা- বাবার দুইজনের সম্মতি না থাকলে কোন কাজ করা উচিত নই।আমার ভুলের জন্য আজ আমি নিজের অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলছি।আসলেই, মা বাবা কোন একজনের মনে ও যদি কষ্ট পাই।তাহলে সন্তান কখনো সুখে থাকেনা।
ইয়া মাবুদ,আমার ভুলের শাস্তি কি এখনো শেষ হয়নি।বাবার অমতে সেদিন বের হওয়ার এতো বড় শাস্তি ।আর কতো প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে????
বন্ধ ঘরে, অন্ধকার করে রেখেছে রিনি।এই বন্ধ করে, অবিরত অবুঝ মেয়ের মতো কান্না করে চলছে। কিন্তু তার কান্না শুনার জন্য কেউ নেই। মায়ের কোলে মাথা রেখে শোয়ে থাকলে যে কতটা কষ্ট কমে তা আজ রিনি হারে হারে টের পাচ্ছে।
রিনি বলেঃ আমার মনে না জায়গা করতে পারলো প্রিন্স(ইনতিয়াজ)
না পারলো রহমান।তাদের কাছে আমার মনটা কিছু না।আমি যেন তাদের খেলনার পুতুল। আজ থেকে সব ভাগ্যের উপর ছেড়ে দিলাম যা হবে মেনে নিবো।আল্লাহ যা করেন।যদি এক পর্যায়ে আমার মরণ ও হয় হাসি মুখে মেনে নিবো।
তাছাড়া,
সবাই বলে কাউকে
কষ্ট দিয়ে সারাজীবন
সুখী থাকা যায় না।
কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়
সুখী তারাই থাকে
যারা অন্যকে কষ্ট দেয়।।।
মেনে নিবো সব কষ্ট। মনে করবো আমার মাঝে কোন অনুভূতি নেই।
এসব বলে বলে, রিনি
কান্না করতে করতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়লো,নিজে জানে না। কতক্ষণ ঘুমালো রিনি জানে না।ফজরের আযান কানে আসে।রিনি জেগে ওঠে। গোসল করে নেই। কারণ সারারাত ফ্লোরে ঘুমিয়ে ছিল। তাছাড়া মানসিক ভাবে প্রস্তুতির জন্য একটা গোসল করে মনটা হালকা করে নেই। অতঃপর নামাজ পড়ে। রিনি তাকিয়ে আছে জানালা দিয়ে। একটু দূরত্বে একটা সাগর দেখা যাচ্ছে। সাগরের প্রত্যেকটা গর্জন যে কিছু বলতে চাইছে। রিনির আজ প্রিন্স এর কথা মনে পড়ছে। কারণ, এত সব কিছু যখন ঘটে গেছিলো রাতের গভীরে রিনির সাথে। তাই রিনি, প্রিন্স কে মনে মনে স্বামী হিসেবে মেনে নিয়েছে। কিন্তু কাল থেকে রিনির নামের পাশে থাকবে অন্য একজনের নাম।একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে।
হঠাৎ দরজার মধ্যে কড়া নাড়ে কেউ। রিনির মনে হচ্ছে, কেউ রুমে প্রবেশ করেছে। রিনি যেমন ছিল তেমনই বসে আছে। দরজা দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে তাসনিয়া(রহমানের বোন)।
তাসনিয়া বলেঃ এই যে এইদিকে আসেন?
রিনি চুপচাপ তাসনিয়ার কাছে গেল।এমন সময়, তাসনিয়া তার হাতে হাততালি দেয়। হাততালি দেয়ার সাথে সাথে বেশ কয়েক টা মেয়ে রুমে প্রবেশ করে। রিনি লক্ষ্য করে দেখে.
সবার হাতে একেক টা থালি আছে। একটা তে আছে, হলুদ লেহেঙ্গা, সাজ সজ্জা, ফুল, হরেক রকমের জিনিস।
তাসনিয়া বলেঃ রিনি তুমি কাল থেকে শয়তান জিনের একমাত্র পুত্র বধু হবে। তাছাড়া, একমাত্র শক্তি শালী শয়তান জিন প্রিন্স রহমান এর বউ হবে। আজ তোমার গায়ে হলুদের আয়োজন করা হয়েছে। চুপচাপ, কোন কথা না বলে, বসে পড়।ওরা তোমাকে প্রস্তুত করবে।
রিনি বসে পড়ে। একটা শব্দ ও বলে নি।কারণ কাল রাতেই সব কিছু ভাগ্যের হাতে ছেড়ে দিয়েছে।তবে,
রিনি একটা জিনিস বুঝতে পারছেনা।প্রিন্স(ইনতিয়াজ) তো ভালো জিন।নেহাত আমার সাথে খারাপ কিছু করেছে। তবে,
তাদের তো কোন শত্রু নেই। কারণ, খারাপ জিন দের এড়িয়ে চলতো তারা। যার ফলে, প্রিন্সদের ধারণা তাদের শত্রু নেই।তাহলে, রহমানের সাথে বন্ধুত্বের সৃষ্টি কেমনে?প্রিন্স কি জানতো না? রহমানের জন্ম পরিচয়ের বিষয়ে???এমন সময়,
কে যেন একজন বলে উঠে ঃ…….
প্রিন্স (ইনতিয়াজ) এর আজ বড্ড অদ্ভুত লাগছে। মন টা আনচান করছে।অবশ্য এই উদ্ভব অনুভূতি টা কাল থেকে শুরু হয়েছে।তবে সকাল থেকে মন খু ডাক দিচ্ছে। তার মনে হচ্ছে, খুব কাছের কিছু দূরে স্বরে যাচ্ছে। আপন কাউকে হারিয়ে ফেলছে।তবে এমন কেন হচ্ছে স্পষ্ট বুঝতে পারছে না।তাছাড়া বোতলটা ও এখনো একি জায়গায় আছে।
প্রিন্স কি তাহলে কিছু একটা হারিয়ে ফেলছে?????
অর্কের বাসায় প্রবেশ করতেই, রাজা,লোভা এবং শাম্মি কে দেখে অবাক হয়ে যাই সবাই।তখনই,
শাম্মি বলেঃ সবাই কেমন আছেন?আপনারা আমাদের দেখে নিশ্চিত অবাক হয়ে গেছেন।
অতঃপর, শাম্মি সম্পূর্ণ ঘটনা খুলে বলে সবাই কে। সবাই ফ্রেশ হয়ে একসাথে বসে।
অর্ক বলেঃ মুগ্ধ ভাই,আপনার চেম্বার বন্ধ রাখছেন নাকি?
মুগ্ধ বলেঃ হুম। এখানে আসবো বলে বন্ধ রাখছি।
সুমি তাদের সাথে যা যা হয়েছে সব খুলে বলে। হাবিব ও সব কিছু খুলে বলে। হাবিবের সাথে ও সুমি, জান্নাতের সাথে যা হয়েছে তা শুনে, অর্ক ও রাহাত হুজুর লাবু এবং রেশমির সাথে যা যা হয়েছে তা খুলে বলে। সবাই বিস্ময় হয়ে যাই। সবাই মুগ্ধ কে ধন্যবাদ দেয়।সুমি ও জান্নাত কে রক্ষা করার জন্য।সুমি কে সবাই বলে,ভালোই করেছিস, মুগ্ধ কে নিয়ে এসে।
এমন সময়,
রাজা রশিদ বলেঃ হুহ অনেক কিছু ঘটে গেল।তবে এর পেছনে কে আছে অনুমান করতে পারছি।রিনি মা কে খুঁজে পাই।তারপর দোষী দের সাজা দেবার ব্যবস্হা করবো।
লাবু ও রেশমী বলেঃ সবাই আসেন খেতে বসি।রাত তো অনেক গভীর হয়েছে।
সবাই খেতে যাচ্ছে।সাথে রাবেয়া ও যাচ্ছে। তাছাড়া, এইখানে রাবেয়া আসার পর থেকে একদম স্বাভাবিক হয়ে গেছে। ঘুমের ইনজেকশনের ইফেক্ট কেটে যেতেই স্বাভাবিক হয়ে গেছে।সবার সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে। সুমি ও জান্নাত এর কাছে ক্ষমা চাইলো।তারা অবশ্য, মাফ করে দেয়। কারণ, রাবেয়ার কোন দোষ ছিলো না। যা করছে, প্যারানরমাল কিছু একটা করেছে।সবাই প্রফুল্ল মনে টেবিলের দিকে যাচ্ছে।
তবে, সবার পেছনে ছিল, রাজা মশাই ও মুগ্ধ।
রাজা মশাই বলেঃ মাহাবুব উদ্দিন মুগ্ধ। একদম বাবার মতো হয়েছো।তবে তোমার বিষয়ে জান্নাত জানে তো?
মুগ্ধ একটু চমকে উঠে। নিজেকে সামলে নিয়ে মুগ্ধ বলেঃ আপনি কেমনে জানেন আমার বাবার দেয়া নাম।
রাজা মশাই বলেঃ তুমি যে জিন তা আমি তোমাকে দেখে বুঝতে পারছি। অবশ্য এমনি এমনি তো আর রাজা হয়নি জিন রাজ্যের।আর তোমার বাবা আমার বন্ধু। আমি জানি তুমি জান্নাত কে অসম্ভব ভালোবাস।তবে,নিজের বিষয়ে না লুকিয়ে সব সত্যি বল।কারণ, বিশ্বাস ভেঙ্গে গেলে,আর জুড়া লাগনো যায় না।বিশ্বাস হলো আয়নার মতো। ভেঙ্গে গেলে জুড়া লাগাতে পারবে না শত চেষ্টা করে ও।
ভালোবাসা,পবিত্র ইচ্ছে, বিশ্বাস, যোগ্যতা থাকলে ভালবাসা কে জয় করা যায়। সব কিছু গুণ তোমার মাঝে দেখতে পাচ্ছি,
তাছাড়া তুমি পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছ।।তুমি খুব ভালো ভাবে রাখতে পারবে জান্নাত কে।তোমার অস্তিত্বের কথা টা বলে দিবে।আশা করছি,রিনি কে খুঁজে বের করতে সাহায্য করবে।
মুগ্ধ একটা মৃদু হাসি দিয়ে বলেঃ ইনশাআল্লাহ।
সবাই রাতের খাবার শেষ করে। কথা মতে,কাল সকাল থেকে শুরু হবে তাদের অনুসন্ধান।ছেলেরা ২ টি রুমে, মেয়ে রা বাকি দুটি রুমে ঘুমাতে গেল।
ঘুম একটু গভীর হতেই, জান্নাত এর ঘুম ভেঙ্গে গেলো। জান্নাত রুম থেকে বেরিয়ে আসে, জানালার দিকে তাকিয়ে আছে। দেখে,,,,,,,
চলবে……..