#রাত_যখন_গভীর
#জান্নাতুল_মাওয়া_মহুয়া
(jannatul_mawa_moho)
Season:02
Part :০৩
************
কি হচ্ছে সবার সাথে?
একের পর এক অদ্ভুত ঘটনার সামনে পড়ছে সবাই?
কি মহা তান্ডব শুরু হতে চলছে তাদের সবার জীবনে?
মুগ্ধ বলেঃ ভালবাসি জান্নাত অনেক।
জান্নাত বলেঃ I’m sorry. আমি এই বিষয়ে কিছু করতে বা বলতে পারবো না।বরাবর বলতে পারেন, ইচ্ছুক নই।
তাছাড়া আপনি ভালো কাউকে পাওয়ার যোগ্য।
i’m not a perfect girl or life partner for u mister mogdu.
মুগ্ধ বলেঃ
আসলে কেউ কারো জন্য পারফেক্ট হয়ে জন্ম নেয় না।
পারফেক্ট করে নিতে হয় ভালবেসে।
আমি না হয় ভালবাসা দিয়ে সব পারফেক্ট করে দিবো!
আজ প্রায় ১ বছর ধরে মুগ্ধ জান্নাত কে ভালবাসি ভালবাসি বলেই যাচ্ছে বরাবরই একি উত্তর।সেবার অর্কের বাসায় যাওয়া তে খুঁজে না পেয়ে পাগলের মতো মোবাইলে কল দিয়ে গেছে। সুমির মোবাইল ও চেষ্টা করেছে।কিন্তু দু’জন এর মোবাইল অফ করে রাখে মহু।
কি হবে এই অপেক্ষ মান ভালবাসার! মুগ্ধের ১বছর অপেক্ষা কি পূর্ণতা পাবে??
কামাল যখন চোখ জোড়া খুলে দেখে। তখন সে নিজেকে আবিষ্কার করে। সে হাসপাতালের বেডের মধ্যে শুয়ে আছে।সকালের রৌদ্র এসে পড়েছে কামালের উপর।
রাবেয়া তার অশ্রুসিক্ত টলটল করা আঁখি নিয়ে চেয়ে আছে কামালের দিকে।কামাল বেশ বুঝতে পারছে,বড্ড কান্না করেছে।
কামাল নিরবতা ভেঙ্গে বলে উঠেঃআচ্ছা,রাবেয়া তোমার সাথে পরশু দিন অদ্ভুত কিছু হয়েছে না কি মনে করে দেখো?
এমন কিছু যা সচরাচর চোখে পড়ে না বা সবার সাথে ঘটে না।
তোমার কাছে কি এমন কোন কিছু নজরে পড়েছে???
রাবেয়া বলেঃপরশু দিন,আমি মধ্য সকালে,অর্থ্যাৎ সকাল ঠিক ১২ টায়।ছাদে গিয়েছিলাম। ছাদে গিয়ে দেখি কেউ একজন দাঁড়িয়ে আছে। লম্বা চুল,পরনে শাড়ী, মার্জিত ঘটন।মুখ দেখা যাচ্ছিলো না।
আমি এগিয়ে যায়, তার দিকে কে দেখার জন্য। কারণ আমাদের ছাদে অপরিচিত কেউ উঠার তো রাস্তা নেই। ছাদে উঠতে গেলে ঘরের ভিতর দিয়ে প্রবেশ করতে হবে। তাই আমি,
ওনি কে তা জানতে এগিয়ে গেলাম!
মনে মধ্যে অজানা ভয় কাজ করছিল। সূর্য একদম মাথার উপর। তবু ভয় আর সংশয় তোয়াক্কা না করে আমি সামনে যেতে লাগলাম।
কিন্তু যখন আমি অনেকটা কাছে চলে আসি।মেয়ে টা মুখ ফেরাচ্ছে,
তখন হঠাৎ করে আমি মাথা ঘুরে পরে যায় ছাদে।
যখন সেন্স ফিরে তখন,
চোখ খোলে দেখি।কেউ ছিলনা।
সে মেয়ে টা ও নেই। তখন আমার মনে হচ্ছিলো,আমার মাঝে কোন এক দ্বিতীয় সত্তার অস্তিত্ব জানান দিচ্ছে।
আমি নর্মালি ছাদ থেকে নেমে রান্না করে ফেলি।রান্নার সময় আগুন জ্বালাতে কেমন জানি লাগছিল। আগুন কে আমার ভয় লাগছিল। কেন তা জানি না!!!
সেদিন থেকে ওয়াশরুমে গেছি গনগন।
কেন জানি ওয়াশরুমে থাকতে অনেক ভালো লাগছিল। আমার প্রিয় জায়গা মনে হচ্ছিল ওয়াশরুম।
তাই কারণে অকারণে,
ওয়াশরুমে যাচ্ছি লাম।
আর এখন ও যায়।
সেদিন বাড়িতে রাখা সব মিষ্টি জাতীয় জিনিস আমি খেয়ে ফেলি।কেন জানি আমার খুব মজা লাগছিল।খুব পছন্দের জিনিস হয়ে যাই ।
কামাল বুঝতে পারে, There’s something wrong.
কামাল বলেঃতোমার না মিষ্টি পছন্দ নই?
রাবেয়া বলেঃকে বলছে?
আমার অনেক পছন্দ তুমি জানো না যে।
কামালের স্পষ্ট জানা আছে। রাবেয়া একদম মিষ্টি খাইনা।মিষ্টি ডিজার্ট কেউ জোর করলে রাবেয়া খুব অল্প একটু খাই।
কামাল বলেঃ রাবেয়া,
তা এখন তুমি সব কেমনে আমাকে বলছো?সেই সত্ত্বা কি তোমাকে এখন ছেড়ে দিছে?
কেমনে ছেড়ে গেল?আর তুমি এতো নিশ্চিত কেমনে হতে পারলে? তোমার মাঝে থাকা দ্বৈত সত্তার সম্পর্কে???
রাবেয়া দ্বৈত স্বরে বলে উঠেঃ হা হাহাহা। কেডা বলছে তুরে আমি চলে গেছি?কাউকে ছাড়বো না।তোদের সবাই কে দেখে নিবো।
এমন সময় রাবেয়া কামালের বেডের কাছে চলে আসে। আচমকা রাবেয়া কামালের গলা টিপে মেরে ফেলতে চেষ্টা করছে। তবে রাবেয়ার হাত কাপছে। কান্না করছে। তবে আবার অট্টহাসি
তে হেসে উঠছে।
দ্বৈত সত্ত্বা ও রাবেয়ার মধ্যে চলছে এক তুমুল যুদ্ধ। রাবেয়া চেষ্টা করছে মারতে?
পরক্ষণেই আবার ছেড়ে দিচ্ছে। এ যেন এক দুটানা পরিস্থিতি।
কামালের শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। মনে হচ্ছে পৃথিবীতে এটা তার শেষ দিন।মেয়ে টার সাথে আর দেখা পাবে না।কম চেষ্টা তো করেনি মেয়েটাকে খোঁজার।সেদিন যে কেমনে গায়েব হয়ে গেছে আজও রহস্য।
কামাল এর আফসোস হচ্ছে,
ইস।সেদিন যদি রাবেয়া, রিনি কে ঘুরতে যেতে না দিতো।তাদের সাথে এমন কিছু হতো না। আফসুস।ভাগ্যের লিখন হয়তো এমন ছিল।
তখনই হাসপাতালের রুমে টুকা দেয়। রাবেয়া যেন হুঁশ ফিরে পেল। দরজা খুলে প্রবেশ করে জান্নাত ও সুমি।
সালাম ভাবি,
বলে।দু’জনে রুমে প্রবেশ করতে যাবে। এমন সময় । সুমি প্রবেশ করতে গিয়ে কেন জানি অদ্ভুত লাগছিল তার।
সুমি বলেঃ জান্নাত আমার অদ্ভুত লাগছে। মনে হচ্ছে রুমে কিছু আছে।
জান্নাত বলেঃ তোর কি মনে হচ্ছে এখানে ভুতপ্রেত আছে। ঢং করিস না।সবসময় এগুলো চিন্তা করস।তাই এমন হচ্ছে।
চল চল।
এরা কি মনে করবে, এইভাবে দরজায় দাঁড়িয়ে থাকলে।
রুমে প্রবেশ করে,
সুমি বলেঃ উঠে। কি অবস্থা তুর?
কামাল বলেঃএখন ভালো। তবে তোরা কেমনে জানছিস?
সুমি বলেঃ আধুনিক যুগে কোন খবর পাওয়া। কোন জটিল কিছু না।।জানিস না নাকি।
জান্নাত বলেঃকামাল জানিস,
সেদিন বাসায় ফিরে আসার পর থেকে ,
রিনির চিন্তায় ঘুমাতে পারি না মেয়ে টা যে কই?
কোন খবর কি আছে?
কামাল একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে দেয়।
কামাল বলেঃ আমার সাথে এক জায়গায় যাবি।
জান্নাত ও সুমি জিজ্ঞেসো দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
অন্য দিকে রাবেয়া নিস্তেজ হয়ে বসে আছে। তবে জান্নাত এবং সুমি, রাবেয়া যে কামাল কে গলা টিপে মেরে ফেলার চেষ্টা করছিল।সে দৃশ্য টা দেখেনি।রাবেয়া খুব সুন্দর করে সামলে নেই ।
কামাল মনে মনে চিন্তা করেঃ
আচ্ছা, রাবেয়ার মধ্যে বাস করা দ্বিতীয় সত্ত্বা টা কে?
কেন সে বারবার আমার উপর হামলার চেষ্টা করছে?
এসব প্রশ্নের কোন উত্তর খুঁজে পাচ্ছে না কামাল।
কামাল তাই প্রথমে সিদ্ধান্ত নিল মর্গে যাবে।
তাই জান্নাত ,সুমির উদ্দেশ্য করে।
কামাল বলেঃ পুলিশ কল দিছিলো।তারা একটা মেয়ের লাশ উদ্ধার করছে। ওই দিন রিনি যে কাপড় পড়ে ছিল। পুলিশের মতে সে মেয়ে টার পোশাক ও এক।মর্গে গিয়ে আমাকে নিশ্চিত করতে বলেছেন ওনারা।যে
লাশটা উদ্ধার করছে,সেটা আমার রিনির নাকি???
কামালের চোখে অশ্রু চকচক করছে। জান্নাত এবং সুমি রাজি হয়ে যাই। কামাল কে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেয়। তার ছোট একটা হার্ট অ্যাটাক
হয়ে ছিল। এখন বিপদ মুক্ত।
সবাই এখন মর্গের সামনে। কামাল ভিতরে প্রবেশ করে। ডাক্তার তাদের কে লাশের পাশে নিয়ে গেল।
কামাল মেয়ে টাকে দেখে,তবে মুখ টা বুঝা সম্ভব হচ্ছে না।মুখটা একদম তেতলে গেছে। তবে পরণের কাপড় টা রিনির।এটা চিনতে কামালের ভুল হচ্ছে না।কামাল লাশটা কে ভালো করে দেখে।
তখন,
কামাল বলেঃ নাহ।এটা আমার মেয়ে না।আমার মেয়ের বাম হাতে একটা তিল আছে। ডান পায়ের তালুতে একটা তিল আছে। আমার মেয়ের চুল অনেক বেশি। এসব এই মেয়ে টার মধ্যে নেই।
একথা শুনে রাবেয়ার মুখ রাগে লাল হয়ে গেছে। এই বিষয় সুমি লক্ষ্য করে।
এরপর সবাই বেরিয়ে আসে। একটা হোটেলে বসে নাস্তা করার উদ্দেশ্যে।
সুমি বলেঃ কামাল,চল তো মেনু তে কি আছে দেখে আসি?
কামাল বলেঃ মেনু কার্ট এখন দিবে তো।
সুমি বলেঃ ওরা কখন দিবে।আমরা যায়।
দুজনে যাচ্ছে। কিছুদূর গিয়ে।
সুমি বলেঃ কামাল,i think,there’s something wrong
.and it’s happening with your wife.
আমি প্যারানরমাল কিছুর অস্তিত্ব টের পাচ্ছি।
কামাল বলেঃ কাল থেকে এমন হচ্ছে। আরেকটা জিনিস কি জানিস, ও ওয়াশরুমে গিয়ে ঘন্টা খানিক পরে বেরিয়ে আসে। তোরা আসার আগে আমাকে মারার চেষ্টা করেছে। এসব,
কি হচ্ছে?
কেন হচ্ছে এমন!
কে করছে?কি দোষ এতে আমাদের?
কিছু বুঝতে পারছিনারে মিসু।
সুমিকে সবাই মাঝে মধ্যে মিসু বলে ডাকে।
কামাল ও সুমি,খাবার
অর্ডার দিয়ে ফেলে। সবাই নাস্তা করছে।তবে সবার মাঝে অদ্ভুত করে খাবার খাচ্ছে রাবেয়া। হাড্ডি জাতীয় খাবার গুলো বেশি খাচ্ছে। মিষ্টি গুলো তো টপাটপ মুখে দিয়ে দিচ্ছে।
হাবিব তার কল্পনা জগৎ থেকে বেরিয়ে আসে।তবে রিসেন্টলি চেষ্টা করে, শাম্মি কে কম চিন্তা করতে।
এখন সে খুব মনোযোগ দিচ্ছে কাজে।
কারণ এখন মন দিয়ে কাজ করতে হবে। আজ পুরো,১ মাস হলো, রিনি নিখোঁজ। পুলিশ ও কোন কিছু করতে পারছেনা।তাই হাবিব দিন রাত এক করে রিনির খুঁজ চালাচ্ছে। তবে হাবিব কাল রাতে ওয়াশরুমের আয়নায় কাকে জানি দেখেছে?
সে এই বিষয় টা মনে ভুল ভেবে এড়িয়ে গেল।
হাবিব স্ফটিক নিয়ে বসে পড়ে।অনেক চেষ্টার পর হঠাৎ স্ফটিকের মাঝে এমন কিছু দেখতে পাবে কল্পনা করেনি হাবিব!
দীর্ঘ একমাস চেষ্টার ফল পেল সে।
অর্ক, রাহাত হুজুর চিন্তার যেন শেষ নেই।এসব কি হচ্ছে?
রেশমীর অসুখকের কথা শুনে, লাবু বাড়ি চলে আসে।
রেশমি কে ডাক্তার চেকআপ করে, সব টিক আছে বলে।
রাহাত হুজুর বলেঃ হঠাৎ, মাথা ঘুরে পড়ে গেলে কেন?
রেশমী বলেঃ তুমি শুয়া থেকে উঠে যখন যাচ্ছি লে।আমি বিছানায় আরেক টা তুমি দেখতে পেলাম।
আবার পাশে তাকাতেই তোমাকে দেখলাম। তবে বিছানায় বসে থাকা তুমিটা বড্ড রহস্য মাখা হাসি দিচ্ছিল।
এসব দেখে মাথাটা চক্কর দেয়।
অর্ক বলেঃ আচ্ছা ভাবি। আপনি আর লাবু থাকেন।রেস্ট নেন। আমদের একটু কাজ করতে হবে।
রাহাত হুজুর, অর্ক দুজনে চলে যায়। তাদের ওয়ার্কিং রুমে।
রাহাত হুজুর তার অনুগত জীনকে ডাক দেই। অর্ক মন্ত্র উচ্চারণ করে কি যেন দেখার চেষ্টা করছে।
একটু পর জিন এসে হাজির হয়ে যাই।
রাহাত হুজুর বলেঃ আজকে তোমার কিন্তু যেকোন মূল্যে আমাকে সাহায্য করতে হবে।
জিন বলেঃ আমি অবশ্যই চেষ্টা করবো।
রাহাত হুজুর বলেঃ আমাদের সাথে কেন এমন হচ্ছে?
আর রিনি কোথায়?
সে কি বেচে আছে!
রিনি কে কে নিয়ে গেছে?
জিন বলেঃ আপনার সব প্রশ্নের উত্তর আমি জানি না।অবশ্য কিছু যা জানি।তা বলে দিলে,আমার পরিবারের কেউ সুরক্ষিত থাকবে না।মাফ করবেন হুজুর।
রাহাত হুজুর বলেঃ সাহায্য কর।আমরা যে নিরুপাই।কামাল তার মেয়েকে খুঁজতে খুজতে পাগল প্রায়।
জিন বলেঃ রিনি যেদিন গায়েব হয়েছে। সেদিন অদ্ভুত কিছু কি দেখেছেন?
বা রিনি আশে পাশে কোন কিছু কি ছিল?
রাহাত হুজুর বলেঃ না তেমন কিছু ছিল না।
রিনি তো একা বেলকনির পাশে বসে ছিল।খোলা চুলে।নিশ্চুপ হয়ে।
জিন বলেঃ ভালো করে মনে করে দেখেন।এমন কিছু যা আপনি মনে করতে পারছেন না।
অর্ক এবার মন্ত্র উচ্চারণ বন্ধ করে দেয়। জিনের কথা শুনছে।
অর্ক অনেক্ক্ষণ ধরে চিন্তা করে বলেঃ সেদিন সব কাজ শেষ হয়ে যাই। আমরা সবাই আড্ডা দিচ্ছিলাম।
সেদিন মনে হচ্ছে একটা কালো বিড়াল দেখেছি।
রাহাত হুজুর বলেঃ আমিও তো দেখছিলাম।এটা এমন কি?
জিন বলেঃ বিড়াল টা গভীর ভাবে জড়িত রিনির হারিয়ে যাওয়াতে।
আর কিছু বলা সম্ভব নই।তবে আপনাদের বন্ধু যারা ছিল,সবাই কে এক জায়গায় নিয়ে আসেন।না হয় বড্ড বিপদ সামনে।
বাড়ির মহিলা দের সতর্ক ভাবে চলাচল করতে বলুন।ওদের উপর বিপদ আরও বেশি।
রাহাত হুজুর বলেঃ আমার বন্ধু দের সাথে ও তাহলে অদ্ভুত সব ঘটনা ঘটছে?তারা কি ঠিক আছে?
জিন বলেঃ হা হচ্ছে ।সবাই ভালো আছে। তবে,
আপনারা একসাথে থাকলে। এই রহস্য উদ্ধার করতে পারবেন।অতি সহজেই। একথাই বল ।
তবে খুব সম্ভব রিনি কে ও পেয়ে যাবেন।তবে…..
অর্ক বলেঃ তবে কি?
জিন বলেঃ তাড়াতাড়ি একসাথে একজায়গায় না থাকলে আপনারা ও আপনাদের বন্ধু গুলো!!
তাহলে বিপদে পড়বে অনেকে। এমনকি , আশংকা করা যায়, কারো কারো প্রাণ যেতে পারে।
অর্ক একথা শুনে আঁতকে উঠল। রাহাত হুজুর জিনকে বিদায় দেয়।
রাহাত হুজুর বলেঃ কালো বিড়াল?
একটা বিড়াল কেমনে আস্তো একটা মানুষকে অল্প সময়ের মধ্যে গায়েব করে?
প্রাণ কেন যাবে?
হাজার প্রশ্নের মাঝে কোন উত্তর নেই। পরদিন সকালে……
চলবে….
#রাত_যখন_গভীর
#জান্নাতুল_মাওয়া_মহুয়া
#(jannatul_mawa_moho)
Season:02
Part :০৪
************
হাজার প্রশ্নের মাঝে কোন উত্তর নেই। পরদিন সকালে,
অর্ক সবাই কে কল দেয়।
অর্ক বলেঃ দুস্ত তোমাদের সবাই কে নিজের বাসায় অনির্দিষ্ট কালের জন্য আসতে হবে। রিনি কে ফিরে পাওয়ার পর সবাই যার যার বাসস্থানে ফিরে যেতে পারবে।
সবাই সম্মতি জানালো।তবে সবাই জানালো বিকালের দিকে সবাই পৌঁছে যাবে।
অর্ক সকাল ৯ টার দিকে লেপটপ নিয়ে কাজ করছিল। কানে ইয়ারফুন দিয়ে গান চলছে। অর্ক কাজ করতে বসার আগেই লাবুকে মাছ ভাজা রান্না করতে বলে।অর্কের প্রিয় খাবারের তালিকায় মাছ ভাজা একদম প্রথমে।
লাবু আপন মনে কাজ করছে।তবে তার একটু পর মনে হচ্ছে, সে ছাড়া অন্য একজন রুমে আছে। লাবু একটা মুচকি হাসি দেয়।লাবু জানে এটা আর কেউ না অর্ক। একটু পর,
লাবু বলেঃ অর্ক ফ্রিজ খুলে মাছ গুলো বের করে দাও।
ফ্রিজ খুলার শব্দ পেল লাবু।লাবু কাজ করছিল তাই মাছগুলো পেছন দিক থেকে হাত দিয়ে এগিয়ে দেয় কেউ একজন । কিন্তু লাবুর চোখ কপালে উঠে গেল। যখন দেখে, যে মাছ দিল তার হাতে অস্বাভাবিক লোমশ।
লাবু মনে হচ্ছে, এটা তার অর্ক নই।অন্য কেই।কারণ তার অর্কের হাতে কোন লোম নেই।
তাহলে এটা কে?
এতক্ষণ ধরে কি করছে পিছনে দাঁড়িয়ে ?
দরজা তো বন্ধ করা ছিল কেমনে প্রবেশ করেছে??
লাবু সাহস করে পিছনে ফিরে তাকাই। যা দেখে তার জন্য একদম প্রস্তুত ছিল না। এটা অর্ক।কিন্তু অর্ক তো দেখতে এই রকম উদ্ভব নই।বড্ড অদ্ভুত দেখতে লাগছে অর্ক কে।একটু আগে ও তো লাবু তার অর্ক কে দেখেছে। ঠিকই ছিল ।লাবু হাত দিয়ে স্পর্শ করে দেখে অর্ক রুপি মানুষ টাকে।। সাথে সাথে সেই প্যারানরমাল জিনিস টা একটা ভয়ংকর রুপ ধারণ করে। সারা দেহে লোপ, চোখ জোড়া লাল, নক গুলো লম্বা লম্বা, ভয়ংকর শরীর কাঁপুনি দিয়ে একটা হাসি।লাবুর তো ভয়ে শরীর দিয়ে একটা ঠান্ডা স্রোত প্রবাহিত হয়েছে।
একটু পর, সেই প্যারানরমাল জিনিস টা লাবুর কাছে চলে আসছে।লাবু ভয়ে একটা চিৎকার দেয় অর্ক।অর্ক প্লিজ হেল্প মি।এই কথা বলে, লাবু সেন্স লেস হয়ে পড়ে যায়। লাবুর চিৎকার অর্কের কান অবধি পৌঁছাতে পারে নি। অর্কের কানে ইয়ারফুন ছিল।যেখানে হাই সাউন্ড দিয়ে গান চলছে। তবে, লাবুর চিৎকার শুনতে পেল, রাহাত হুজুর এর মা।
রাহাত হুজুর এর মা।তাড়াতাড়ি করে লাবুর বাসার দরজার সামনে আসে। কিন্তু দরজা বন্ধ। অর্ক কে অনেক ডাক দেই। কিন্তু কোন সাড়া দিচ্ছে না অর্ক।
অতঃপর,
রাহাত হুজুর এর মা লক্ষ্য করে। জানালা খুলা।তিনি আর দ্বিতীয় বার চিন্তা না করে।জানালা টা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে। তিনি লাবু কে খুজতে লাগলেন। অবশেষে লাবু কে পেলেন রান্না ঘরে।ওনি লাবুর কাছে গিয়ে যা দেখেন!!!!তা দেখে একদম শিহরিত!!!
লাবুর পুরো শরীর বাঁকা হয়ে গেছে। মুখ থেকে সাদা সাদা থুথু বের হচ্ছে। চোখ জোড়া বড় বড় করে তাকিয়ে আছে সামনের দিকে। শরীরের কাপড় কিছু টা ছিড়ে গেছে।
কি হতে চলছে?
সুমি ও জান্নাত ভয়ে চোখ বন্ধ করে আছে। একটু পর সকাল হবে,সকাল হলেই তাড়াতাড়ি বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাবে।বেরিয়ে গিয়ে ফুচকা খেয়ে নিবে।জান্নাত ও সুমি টেনশন হোক বা ভয় পেলে ফুচকা খেলে একটু শান্তি অনুভব করে।ফুচকা খেয়ে বিকাল হতেই বেরিয়ে যাবে সোজা অর্কের বাড়ির উদ্দেশ্যে।
সুমি ও জান্নাত একটু আগে যা দেখেলো।তা দেখে রীতিমতো ভয়ে চুপসে যায়।যার ফলস্বরূপ সকাল হওয়া অবধি চোখ বন্ধ করে আছে।
আসলে,গতকালকে কামালের কথা, ওর সুরক্ষিত থাকার কথা চিন্তা করে। জান্নাত ও সুমি, কামালের বউ রাবেয়া কে তাদের সাথে রেখে দেয়। রাবেয়া ও দ্বিমত করেনি।কামাল বাসায় ফিরে যাই।রাতে ৩ জনে রাতের খাবার খেয়ে নেই। তবে রাবেয়া এখন অনেকটা স্বাভাবিক আচরণ করছে।৩ জনে ঘুমিয়ে পড়লো।
মাঝ রাতে, আনুমানিক রাত ১ টার দিকে। জান্নাতের মোবাইলের শব্দে সুমির ঘুম ভেঙ্গে গেলো। সুমি দেখে জান্নাত বেমালুম ঘুমাচ্ছে।সুমি জান্নাত এর মোবাইল নিয়ে দেখে, মুগ্ধের শখানেক কল ও টেক্সট দিয়ে মোবাইল একদম শেষ করে দিচ্ছে।
লাস্ট কয়েক একটা টেক্সট সুমি পড়ে দেখে, সেখানে লিখা ছিল,
,,,আশা ছিল মনে মনে
,,প্রেম করিব তোমার সনে
,,তোমায় নিয়ে ঘর বান্ধিব
,,,গহিন বালুর চরে গো
,,গহিন বালুর চরে,,,😍😍😍
আরেকটা ছিল,
কেউ চেয়ে পাই না,আর যেটা পেয়ে হারায়,সেটা অবহেলা করে।একদিন সব ছেড়ে চলে যাবো,কারোর বিরক্তির কারণ হবো না😥
পরের আরেক টা টেক্সট,
চিরচোনা তুমি অমৃত
,,ভালোবাসা।
অজান্তে ভাংচো কারো আশা।
,,তার কাছে তুমি সব,
মনে রেখো সব দেখচে রব😣😣
(কবিতা লেখক:কাইছার উদ্দিন বিজয়।)
সুমি উত্তর দেয় ঃ মুগ্ধ ভাইয়া, আপনি যাকে টেক্সট করে যাচ্ছেন সে বেমালুম ঘুমাচ্ছে। আচ্ছা, আপনার কষ্ট হয়না?গত ১ বছর ধরে চেষ্টা করে যাচ্ছেন?
মুগ্ধ বলেঃ সুমি,আসলে কথা হচ্ছে।
অভ্যেস হয়ে গেলে ব্যথাকে ব্যথা মনে বলে মনে হয়না।(সমরেশ মজুমদার)।
মানুষ নিজেকে লুকিয়ে রাখতে পছন্দ করে,সে চায় তাঁকে খুঁজে বের করুক। বিশ্বাস কর,একদিন ঠিকই ওর মন মন্দিরে আমার ঘর হবে। আরেকটা কথা আছে না,
always say yes,i have a failure. I have many failure in my life but one day i will a big success in my life. And that day i will win my jannat Heart 😇
জান্নাত এর প্রতিটি স্পন্দন আমার নাম প্রতিফলিত হবে।জীবনে আশা হারানো আমি শিখি নি।চেষ্টা করে যাবো।সেই মায়াবতীর মনে একটু স্থান করে নেওয়ার।
সুমি বলেঃ আচ্ছা ভাইয়া।গুড নাইট পরে কথা হবে।
সুমি কল কেটে দেয়। সুমি কিছু একটার কটমট শব্দ শুনতে পাচ্ছে। এমন সময় জান্নাত এর ও ঘুম ভেঙ্গে গেলো। তারা দুজন শব্দ টা শুনতে পেল।
জান্নাত বলেঃ এই রাবেয়া ভাবি কই?পাশে নেই কেন?
সুমি বেকুব হয়ে গেল। আসলেই এতক্ষণ সে খেয়াল করেনি।
তারা দুজন রাবেয়া কে পুরো ঘরে খুঁজে,কিন্তু কোথাও পেল না।
আবার রুমে প্রবেশ করে দুজনে।তবে কটমট শব্দ টা এখন ও হচ্ছে। দুজনে এতক্ষণে
বুঝতে পারে শব্দেটা তাদের বিছানার নিচের থেকে আসছে।
দুজনে এতক্ষণ লক্ষ্য করেনি।একটা রক্তের স্রোত বেরিয়ে আসে বিছানার নিচের থেকে।
দুজনে বিছানার নিচে উঁকি দেয়।তারা দেখে, ….
সুমি ও জান্নাত কি দেখছে?
আচ্ছা কিসর রক্ত বিছানার নিচে??
শব্দ টা কিসের?
রেশমির অবস্থা অনেকটা ভালো হয়েছে।তবে রেশমি এখন ও সে রাহাত রুপি মানুষ টাকে স্বপ্নের মধ্যে দেখে।রাতে ঘুমের মধ্যে বারবার জেগে ওঠে।খুব ভয়ংকর স্বপ্ন আসে রেশমীর। তবে রাহাত হুজুর তার বউ কে যথেষ্ট যত্ন করছে।রেশমী তার স্বামীর যত্ন পেয়ে একদম বাধ্য শিশুর মতো। রাহাত হুজুর যেমন বলছে তেমনই করছে।আজ কাল রাহাত হুজুর তার বউয়ের সাথে প্রতিযোগিতা করে।
**স্ত্রীর সাথে খেলার প্রতিযোগিতা করা সুন্নাত। রাসুল (সাঃ) এবং আয়েশা (রাঃ) রাত্রিতে সবাই ঘুমোলে দৌড় প্রতিযোগিতা করতেন( ইবনে মাজাহঃ১৯৭৯,আবু দাঊদঃ২৫৭৮)
স্বামীদের উচিত বউ কে শুধু শোবার সঙ্গী মনে না করে।সুখে,দুঃখের মধ্যে এক সাথে এক হয়ে থাকা।
👑
হাবিব আজ ১ মাস ধরে চেষ্টা করে যাচ্ছে রিনির সন্ধানের জন্য। অবশেষে,আজ স্ফটিকে দেখে, রিনির একটা ভিউ ফুটে উঠেছে। রিনি ঘুমাচ্ছে।
হাবিব বলেঃ মেয়েটার মুখ একদম মলিন হয়ে গেছে।
হাবিব আরো তথ্য বের করতে চেষ্টা করছে। কিন্তু আর পাচ্ছে না।তবে এটা জেনে খুশি রিনি যে বেঁচে আছে।
হাবিব খুশিতে ডগমগ হয়ে অন্য রুমে গিয়ে একটা চিপস নিয়ে নিজের রুমে প্রবেশ করে। কিন্তু রুমে প্রবেশ করে তার চোখ জোড়া গেল আয়নার দিকে। আয়নার মধ্যে দেখে,একটা মেয়ে মুখ দেখতে পারেনি।অবশ্য মুখ দেখা যাচ্ছে না। মেয়ে টা হাবিবের বিছানার মধ্যে বসে আছে। হাবিব তার বিছানার মধ্যে দেখে কেউ নেই। কিন্তু আয়নার মধ্যে স্পষ্ট দেখতে পেল এখন ও পাচ্ছে একটা মেয়ে।
তবে বাস্তবে দেখতে পাচ্ছে না।
ব্যাপার টা কি বুঝার জন্য হাবিব আয়নার খুব কাছে চলে আসে।
অতঃপর, হাবিব আয়নার সামনে দাড়িয়ে খেয়াল করছে।কিন্তু, একটু পর এক মেয়ে টার মুখ ডেকে দেয় চুল গুলো দিয়ে। মুখ দেখা যাচ্ছে না। আয়নায় একদম হাবিবের সামনে চলে আসে সে মেয়ে টি।মেয়ে টার হাত দিয়ে হাবিব কে আয়নার মধ্যে ঢুকিয়ে ফেলতে চাইছ।
হাবিব কে রীতিমতো আয়নার ভিতরে টেনেই যাচ্ছে।
কিন্তু সেই আয়নার মধ্যে থাকা প্যারানরমাল জিনিস টার চেষ্টা সফল হয়নি।
কারণ হাবিবের ওমন গুঙিয়ে গুঙিয়ে শব্দ করাটা তার মা শুনতে পেল। সাথে সাথে রুমে প্রবেশ করে হাবিবের মা।তিনি
দেখেন,তার ছেলে আয়নার সাথে লেগে যাচ্ছে।লেগে যাচ্ছে বললে ভুল হবে। আয়নার ভিতরে ঢুকে যাচ্ছে।
হাবিবের মা আর দেরি না করে। বিভিন্ন ধরনের দোয়া পড়ে বোতলে থাকা পানিতে ফুঁ দেয়।
অতঃপর,
পানি গুলো হাবিবের উপর ছিটিয়ে দেয়। সাথে সাথে ধপাস করে বসে পড়ে হাবিব!!!!!!
হাবিব বলেঃ মা, কে সে?
হাবিবের মা বলেঃ বাবা তা আমি জানি না তবে মনে হচ্ছে খুব শক্তি শালী।
হাবিবের মা হাবিব কে তার রুমে নিয়ে গেল। হাবিব চোখ বন্ধ করে আছে। সে বিকাল হতে বেরিয়ে যাবে অর্কের বাড়ির উদ্দেশ্যে।
🔯
অনেক দিন ধরে প্রিন্সের আসে পাশে অন্ধকার হয়ে আছে। কারণ সেদিন মাছ ব্যাটা বোতল টা তার মুখে চালান করে দেয়। এখন প্রিন্সের জন্য মুক্তি পাওয়া অসম্ভব হয়ে গেছে।
কারণ একটা মাছের পেটে আছে। একথা কেমনে জানবে অন্য কেউ।
আর,রাহাত হুজুর এমন পদ্ধতি করে দিছে।যার ফলে কোন জিন ও মানুষের পক্ষে সম্ভব না।প্রিন্স (ইনতিয়াজের) অবস্থান জানা।
প্রিন্সের মনে এখন শুধু একটাই অপূর্ণ চাওয়া দেখা পাওয়া । শেষ বারের মতো তার প্রিয়তমা রিনির সাথে।কিন্তু পূর্ণ হবে তো?
নাকি এই অন্ধকার ই তার চিরজীবন এর সঙ্গী হবে???
প্রিন্সের আশে পাশে বিদঘুটে অন্ধকারে সে যে কেমনে এত দিন কাটিয়েছে।সে জানে, আল্লাহ পাক জানে।
প্রিন্স(ইনতিয়াজ) কিছু শব্দ শুনতে পাচ্ছে। কিন্তু……
চলবে….