#রাত_যখন_গভীর
#জান্নাতুল_মাওয়া_মহুয়া
(jannatul_mawa_moho)
Season:02
Part :01
রিনি গায়েব। প্রিন্স বোতল বন্দী হয়ে আছে।ভেসে চলেছে বোতলবন্দী,প্রিন্স (ইনতিয়াজ) গভীর নিস্তব্ধ সমুদ্রে।
প্রিন্সের তেমন কোন কিছু করার নেই এই বোতলের ভিতর। বোতলের ভিতর থেকে প্রকৃতি টা অসাধারণ লাগছে। হালকা হালকা বৃষ্টি শুরু হয়ে গেছে।প্রিন্স প্রকৃতি প্রেমি তাই তার দৃশ্য টা অসাধারণ লাগছে।
😍
সাধারণ বৃষ্টির সময় মনে আলাদা এক অনুভূতি জেগে ওঠে। অনেকে বৃষ্টির সময়টা কাঁটায় স্মৃতি বিচরণ করেই।
,,,মেঘলা আকাশ,
,,বিষন্ন হাওয়া,
,,মনের অদ্ভুত লুকোচুরি,
,,,বারবার বহিঃপ্রকাশ করছে,
,,,ভালোবাসি প্রিয়তমা।।।
(কবিতাঃলেখিকা আমি নিজেই)
প্রিন্স আজকাল অদ্ভুত অদ্ভুত ছড়া রচনা করে। রিনির সাথে দেখা হলে সব রিনিকে শুনাবে প্রিন্স মনে মনে ঠিক করলো।কবিতা শুনে তার প্রিয় তমা খিলখিল করে হেসে দিবে।হাসিটা একদম হৃদয় ঘায়েল করে দেয়।
প্রিন্স বিষন্ন মনে ছেয়ে আছে আকাশের দিকে জান্নাতুল মাওয়া মহুয়া আকাশে যেমন মেঘের আনাগুনা।প্রিন্সের মনে ও তেমন কালো মেঘের আনাগোনা চলছে । মন তার বড্ড জ্বালাচ্ছে।সে বোতল বন্দী হয়েছে আজ এক সপ্তাহ ধরে।আসলে মনটা খুব বেশি অবুঝ। কাকে জানি মিস করে যাচ্ছে প্রতি টা সময় !অনেক বুঝালেও বুঝতে নারাজ এই মন।
মানুষ যতই জ্ঞানি আর বুদ্ধিমান হোক না কেন মনের অজানা দুর্বলতার কাছে প্রায় বোকা বনে যেতে হয়।😳
মন কে বুঝনো দায় হয়ে গেছে। প্রিন্স একটা মুচকি হাসি দেয়। ঠিক,
পরক্ষণেই তার বিবেক বলে উঠেঃপ্রেম ভালোবাসা তো পূর্ণতার নাম নয়,বিরহকে ও প্রেম বলে।
প্রিন্স এই ৩ বছরে যেমন রাগ,প্রতিশোধের নেশা পোষে রেখেছে। ঠিক ততটা ভালোবেসে ফেলে তার প্রিয়তমা রিনি কে।কেন জানি প্রিন্সের ইচ্ছে জান্নাতুল মাওয়া মহুয়া সেই অপসারী কে এক ঝলক দেখার। রিনিকে এক ঝলক দেখার আশার প্রহর গুনছে।হঠাৎ করে বিবেক নাড়া দেয়।বিবেক বলেঃজগৎ তে অনিশ্চিত অপেক্ষার চেয়ে ভয়ংকর কিছু নেই। রিনির সাথে আধু দেখা হবে নাকি একটা কিন্তু থেকে যায়। মেয়ে টার জীবন তুই অঙ্কুরেই বিনষ্ট করে দিছোস। তুর রাগ আর প্রতিশোধ এর নেশা শেষ করে দিয়েছে সদ্য ফোটা সেই পুষ্পটা কে!
তাইতো আল্লাহ পাক রাগকে নিয়ন্ত্রণ করতে বলেছেন। আমাদের
প্রিয় হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) কে অনেক এ অনেক ভাবে ক্ষতি করেছে অপমান করেছে কিন্তু ওনি কারোর সাথে খারাপ আচরণ করেন নি জান্নাতুল মাওয়া মহুয়া কারো কাছ থেকে প্রতিশোধ নেন নি।ক্ষমা করাই উত্তর কাজ।আমাদের প্রিয় সবাই কে ক্ষমা করে দিতেন।
কিন্তু তুই এমনটা করোস নাই। প্রতিশোধ নিয়েই ধম নিয়েছিস।
হঠাৎ প্রিন্সের মন বলে উঠেঃ যখন অঘটন ঘটলো তখন কই ছিল এই নীতি কথা?
বিবেক আর মস্তিষ্কের এমন যুক্তি শুনে প্রিন্স আস্তে আস্তে অনুতপ্ত অনুভব করছে।
প্রিন্সের প্রতিশোধের নেশায় তার পবিত্র ভালোবাসা আজ সবার চোখে ঘৃণিত কাজ হিসেবে গণ্য হচ্ছে।
আসলে জীবন কখন কি হয় কেউ জানে না।তবে ভালোবাসা সে-তো বলে,কয়ে আসে না।ভালোবাসা আসে হঠাৎ করেই সবার জীবনে।আর দিয়ে যায় ভুলতে না পারা কিছু মূহুর্ত।কারো ক্ষেত্রে এসব মূহুর্ত পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মূহুর্তের মধ্যে একটা। কারো কাছে এসব মূহুর্ত জীবনের কাল বৈশাখী ঝড়ের চেয়ে ভয়ংকর মূহুর্ত।
প্রিন্স লক্ষ্য করলো,আজ আকাশ টা বড্ড অদ্ভুত লাগছে। প্রকৃতির ও মনে তার মতো মন খারাপ। আচমকা একটা সমুদ্রের জলে তীব্র তা বাড়তে থাকে। সমুদ্রের ঢেউ গুলো জোরে জোরে গর্জন করছে। কোথা থেকে একটা ঠান্ডা স্রোতের সাথে উত্তাল ঢেউ জান্নাতুল মাওয়া মহুয়া এসে প্রিন্সের বোতল সাগরের তল দেশে ডুবিয়ে নিচ্ছে। প্রিন্সের সব কিছু ঘোলাটে মনে হচ্ছে। কিছু দেখতে পারছে না।
অন্য দিকে, জীন রাজা ও শাম্মি রাজ্যে ফিরে অনেক দিন হলো। তবে জীন রাজা(রশিদ) এর রানী লোভা,বারবার জিজ্ঞেস করে যাচ্ছে প্রিন্স কই?
আমার ছেলে কে কোথায় রেখে আসলে?
উত্তর দাও প্লিজ!!!!
এমন সময় শাম্মি এসে বলেঃমা প্লিজ কান্না বন্ধ কর।
বাবা, আমি মা কে সব সত্যি বলে দিচ্ছি।
জীন রাজা নিরব ভাষায় বুঝিয়ে দিলেন। আচ্ছা, বলে দে!
অতঃপর শাম্মি তার মা লোভা কে সব খুলে বলে।প্রিন্স রিনির সাথে কি কি করেছে।
সব শুনে জীন রানী বলে উঠেঃ ওই মানুষ মেয়ে টা জন্য আমার ছেলে আজ ১ সপ্তাহ অবধি সমুদ্রের জলে ভেসে বেড়াচ্ছে।আমার ছেলে টার সঠিক সন্ধান ও তোমরা জানো না।ওই রিনি মেয়ে টাকে আমি ছাড়বো না।ধ্বংস করে দিব সব।
শাম্মি তার মাকে এমন ভাবে রেগে যেতে কখনো দেখেনি।
রানী লোভা বলেঃ শাম্মি তুকে আমি রাজ্য থেকে বিতাড়িত করলাম।আমার ছেলে কে ফিরিয়ে আনতে পারলে আসিস।
রশিদ বলে উঠেঃ তুমি একটা মেয়ে হয়ে কেমনে অন্য মেয়ের অপরাধীর পক্ষ নিচ্ছো।সমাজে এমন অনেক মানুষ ও জীন অবশ্য আছে যারা অপরাধী দের সাহায্য করে। তবে জেনে রাখা উচিত, অন্যায় যে করে,সে সহ্য করে এবং সে অন্যায়কারীর সাথে সহযোগিতা করে বা পক্ষ নেই সমান ভাবে দোষী।শাম্মির কি দোষ ছিলো? ও প্রিন্স কে ওদের সামনে ডেকে এনে ওর স্বীকার উক্তি নেয়া টা কি ওর খুব অন্যায় কাজ হয়ে গেছে? রিনির সাথে না হয়ে জীন রাজ্যের কেউ যদি আমাদের মেয়ের সাথে রাত যখন গভীর তখন এমন কিছু করতো তুমি কি তখন ও অন্যায় কারীর পক্ষ নিতে?
লোভা কোন প্রশ্নের উত্তর দেয় নি।লোভা এতকিছু বুঝে না।তার শুধু তার ছেলে ইনতিয়াজ কে চাই।
সকালে কলের শব্দে কামালের ঘুম ভেঙ্গে গেলো।সেদিন এর পর থেকে রাবেয়া ও কামাল রাতে ঘুমাতেই পারে না। রাবেয়া তো পাগল প্রায় মেয়ের শোকে। সেদিনের ঘটনার পর দিন সকালে রাবেয়া ও কামাল শহরে ফিরে আসে।
কল বেজেই চলেছে।
কামাল কল রিসিভ করতেই অপর প্রান্ত থেকে একজন বলে উঠেঃ মিস্টার কামাল।আপনি একটা মিসিং রিপোর্ট করেছিলেন আমাদের থানায় ।সে প্রেক্ষিতে, আজ আমরা হিমছড়ির ঝর্ণার তীরে একটা মেয়ের লাশ উদ্ধার করি।বয়স আনুমানিক ১৭ হবে ।আপনি আপনার মেয়ের যে বিবরণ দিয়েছেন অলমোস্ট সব মিল পেয়েছি। আপনি সদর হাসপাতালে মর্গে এসে চিহ্নিত করে যাবেন।
অপর প্রান্ত থেকে কল কেটে গেছে। কামাল পাশে তাকাতেই দেখে,…..
চলবে……
#রাত_যখন_গভীর
#জান্নাতুল_মাওয়া_মহুয়া
(jannatul_mawa_moho)
Season:02
Part :02
************
অপর প্রান্ত থেকে কল কেটে গেছে। কামাল পাশে তাকাতেই দেখে,রাবেয়া অট্টহাসিতে হেসে দেয়।রাবেয়ার হাসিটা খুব অদ্ভুত লাগছে। এই হাসি যেস খুব রহস্যময়ী।
কামাল চিন্তায় পড়ে যায়। কারণ একজন মায়ের কাছে তার সন্তান অমূল্য রত্মের মতো।সন্তানের কোন বিপদ হলে মায়ের মনে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়।তাছাড়া আজ ৮ দিন হলো রিনির কোন খুঁজ নেয়। পুলিশ যে খবর দিলো মনে হচ্ছে কোন খারাপ খবর! যেখানে খারাপ খবর পাওয়ার আশঙ্কা আছে। সেখানে রাবেয়ার কান্নায় ভেঙ্গে পড়ার কথা? কিন্তু একি দেখছে কামাল!রাবেয়া অট্টহাসি যেন থাকছে না।
কিন্তু রাবেয়া অট্টহাসি দিচ্ছে কেন?
কি হতে চলছে রাবেয়ার সাথে। কামালের আজ বড্ড অচেনা মনে হচ্ছে এই রাবেয়া কে।তাদের এত বছরের সংসারে রাবেয়ার এই রুপ আজ প্রথম দেখছে।কেমন যেন অদ্ভুত আচরণ করেছে পুলিশের কল কেটে দেওয়ার সাথে সাথে। কামালের মনে হচ্ছে, মৃত মেয়ের দেহটা রিনির বলে অনুমান করছে পুলিশ। তবে এ কথা শুনে রাবেয়া অনেক খুশি। কিন্তু কেন?যদি সত্যি সত্যি ওইটা রিনি হয়?কামাল মরে যাবে। তার রাজকুমারী কে ছাড়া। নিখুঁজ থাকলে একটা সম্ভাবনা থাকে কোন সময় হয়তো ফিরে পবে!বা নিজে ফিরে আসবে তাদের রিনি।কিন্তু
পরপারে পাড়ি জমালে তো কখনো আর ফিরবে না😧😦😦
কামাল আর কিছু ভাবতেই পারছে না। আবার লক্ষ্য করে রাবেয়ার দিকে। তবে রাবেয়া এখন কান্না করছে। কামাল চিন্তা করে কোন কোল পাচ্ছে না?
কি হয়েছে রাবেয়ার?
কামাল বলেঃ একটা মানুষ এখন হেসে আবার এখন কেমনে কান্না করে?অদ্ভুত
আগে কি অপেক্ষা করছে রাবেয়া ও কামালের জন্য ?
কামাল বলেঃ মেয়ে কে হারিয়ে জীবন অর্ধেক বিনষ্ট হয়েছে। তাহলে কি এখন সহধর্মিণীর ও কোন বিপদ ? এই কথা ভাবতেই কামালের বামপাশে চিনচিন ব্যাথা শুরু করছে।
কামাল বলেঃরাবেয়া এমন করছো কেন?কি হয়েছে? প্রথমে হাসলে এখন কান্না করছো?কি বুঝাই তে চাইছো?নাকি ঢং করছো?
রাবেয়া কিছু বলে না।কান্না থামিয়ে তাকিয়ে আছে কামালের দিকে।এক দৃষ্টি তে।এ দৃষ্টি যেন কামাল কে কিছু বুঝাতে চাচ্ছে।
কামাল বলেঃ পৃথিবীতে সবচেয়ে কষ্টের ব্যাপার হচ্ছে কি জানো রাবেয়া?
সেটা হচ্ছে নীরবতা পালন করা।উত্তর দিবে না এই তো?তাকো চুপ করে।
হঠাৎ,
একথা বলে ১ মিনিট পার হতে না হতেই,
কামাল মাথা ঘুরে পড়ে যায়।
প্রিন্স(ইনতিয়াজ) চোখ জোড়া খুলে দেখে। সে সাগরের অতলে পড়ে আছে।উত্তাল সমুদ্র এখন নিস্তব্ধ হয়ে গেছে।
সমুদ্র দেখে বুঝার উপায় নেই। কি ভয়ংকর প্রলয়ের সৃষ্টি হয়েছিল।
প্রিন্স সাগরের নিচের দৃশ্য দেখছে। রকমারি মাছ সাথে বিভিন্ন ধরনের লতা, পতা।অসম্ভব সুন্দর লাগছে।
কিছু কিছু ছোট ছোট মাছ।বিভিন্ন রঙের। জড়ো হয়ে আছে প্রিন্সের বোতলের আসে পাশে।
প্রিন্স বলেঃ
বোতলের ভিতর থেকে এত সুন্দর লাগছে,
না জানি বাস্তব রূপে দেখলে কতো সুন্দর হতো এই সাগর তলের ভিতর!!😍
এমন সময় প্রিন্স লক্ষ্য করে, একটা বড় মাছ প্রিন্সের বোতলের দিকে এগিয়ে আসছে তিব্র গতিতে। প্রিন্স এ দেখে হতভম্ব হয়ে যাই।
প্রিন্স কিছু করতেও পারছেনা।মাছ টাকে বোতলের কাছে আসা থেকে বিরত করতে পারছেনা। কারণ বোতল বন্দী অবস্থায় প্রিন্সের কোন জাদু কাজে আসবে না।
প্রিন্স বলেঃ মাছের এগিয়ে আসা দেখে মনে হচ্ছে মাছ ব্যাটা,আমাকে সহ বোতল টা পেটে চালান করতে আসছে ।
আমি বাকি জীবন এই মাছের পেটে কাটাতে চাইনা।😣😣
প্রিন্স বোতল বন্দী থাকলেও প্রকৃতির অপরুপ সৌন্দর্য দেখতে পেরে তার ভালোই লাগছিল।বন্দী হয়ে তার কোন আপসোস নেই। তার প্রতিশোধের শাস্তি এটা।সে মেনে নিয়েছে। এমনি নিয়ম এটাই নিয়তি। তার বোন শাম্মি বলেছিল, জীবনে ভুল করলে,জীবন তার আপন নিয়মে ঠিকই শাস্তি দিয়ে দেয়।কথায় আছে না” মাপ তার বাপ কে ও ছাড়ে না”।
তবে প্রিন্স একদম চাইনা ওই মাছের পেটে তার আস্তানা হোক । মাছ যে গতি তে বোতলের দিকে এগিয়ে আসছে দেখে বুঝতে পারা যাচ্ছে মাছ ব্যাটা এক বারে পুরো বোতল নিজের মুখে চালান করবে😥😥
কি হতে চলছে প্রিন্সের সাথে? তাহলে কি সত্যি প্রিন্সের বাকী জীবন মাছের পেটে কাটাতে হবে?? রিনির সাথে তার একটা বার দেখা করার ইচ্ছে কি ইচ্ছেই থেকে যাবে?????
হাবিব বারবার চেষ্টা করছে তার স্ফটিক দিয়ে রিনি কোথায় আছে? কোন অবস্থায় আছে? সেটা অনুসন্ধান করার চেষ্টা চালাচ্ছে ।
কিন্তু বারবার ব্যর্থ হচ্ছে।তবে স্ফটিক বেশি নাড়াচাড়া করার ফলে আগের কিছু ভিউ ফুটে উঠছে।স্ফটিক তো অতীত দেখায়।তাই স্ফটিকে বেশি বল প্রয়োগ হওয়াতে অতীত তে অল্প অল্প প্রচ্ছদ দেখাচ্ছে। হাবিব ও হেল্প লেস। বাধ্য হয়ে তাকিয়ে আছে।অসহায় দৃষ্টিতে স্ফটিক এর দিকে ।
এমন সময় হাবিব দেখে স্ফটিকের মাঝে হঠাৎ করে শাম্মির একটা ভিউ /চিত্র ভেসে উঠে।এই টা সেদিন মহু,সুমি,অর্ক,রাহাত হুজুর, লাবু,কামাল কে দেখিয়ে ছিল হাবিব।
হাবিব সেদিন শাম্মি কে প্রথম দেখায় মন মন্দিরে ছোট একটা জায়গায় আসন দিয়ে ফেলে এই অপসারী কে।তবে অদ্ভুত ভালো লাগা কাজ করে।
প্রেমে পরার মতো অবস্থা আরকি 😅
।হাবিব চাইছে অপসারীর সাথে আবার দেখা হোক।কিন্তু এটা কি সম্ভব?
হাবিব বলেঃ যত দেখি তত মনে হয় কম দেখি তাকে।হাবিবের মনে হচ্ছে শাম্মির কোন এক মায়া আছে। না হলে কেন এত মনে নাড়া দিচ্ছে।তার স্মৃতি ।
হুহ মায়া জিনিস টা আসলেই মারাত্মক। তবে চেহারার মায়ার চেয়ে কথার মায়া আরও বেশি মারাত্মক।
হাবিব শুধু শাম্মির রুপে নই। তার কথার মায়ার মধ্যে ও পড়ে গেছে।যেদিন প্রথম দেখা হয়েছে এর পর প্রতি রাতে স্বপ্নে শুধু শাম্মি থাকে।প্রতিটা মূহুর্তে শাম্মির সেদিনের বলা কথা গুলো কানে এলার্ম এর মতো টুনটুন করে।
ইস মেয়েটার কথায় ও অনেক মায়া।হাবিব তার কল্পনার মধ্যে ডুবে আছে।😣😣😣😣😣
হঠাৎ হাবিব শুনতে পাই,পাশের বাসার আয়ান একটা ছড়া কাটছে।
আয়ানের ছড়ার শব্দে হাবিব বাস্তবে ফিরে আসে। আয়ান হচ্ছে হাবিব এর প্রতীবেশি।অসম্ভব মিষ্টি একটা ছেলে।বয়স বেশি না ৮ বছর। শখের বসে কবিতা লিখে। তবে খুব সুন্দর করে আবৃত্তি করতে পারে।
আয়নের ছড়াটা ছিলো,
,,,,, কুয়াশা ভরা সকালে পুষ্প
,,হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আমি 😍
নীল পরী রুপে হয়তো সামনে
,,,,এসে দাঁড়াবে তুমি 😇
সব ভালবাসা প্রকাশ করতে, না পারলেও 😑
তোমাতেই বিভোর হব আমি ☺
তুমি কোন অদৃশ্য মায়ার,
পাহাড় সমান ছায়া,
চাইলেও পারিনা ছাড়তে😥😥
তোমার মায়া😟😟
কবিতা লেখকঃ(বিজয়)
হাবিব এক মনে কবিতা শুনছিল।
হাবিব বলেঃ আসলেই নীল পরী রুপে সামনে এসেছিল শাম্মি সেদিন। নীল শাড়ি। ইস!
হাবিবের অবশ্য নীল রঙ অনেক প্রিয় ।তার প্রিয় রংয়ের শাড়ি তে এক অপসারী কে দেখে মুগ্ধ হয়ে যাওয়া ব্যাপার টা স্বাভাবিক।
তবে,
হাবিবের এখন শাম্মির জন্য ২ লাইন কিছু বলতে মন চাইছে। অনেক ভেবে হাবিব বলেঃ
tumhein hazar baar
dekh kar😯
Bhi dil nahi bharta😥
Har baar lagta hai😣
Ek baar aur😍
Writer :(mohoua)
আসলেই সেদিন দেখে মন ভরেনি হাবিবের। তাই স্ফটিক থেকে সেই অপসারীর মুখখানা মোবাইলে ক্যামেরা বন্দী করে হাবিব।তারপর,
আবার ডুব দেয় শাম্মির স্মৃতির মায়াজালে।হাবিব এর আজকাল এটা একটা প্রিয় কাজ হয়ে গেছে। যখন তখন শাম্মির কথা ভাবা😊😊
এই রাহাত উঠে পড়ো?আর কতক্ষণ ঘুমাবে?রাতে জেগে থাকবে।নামাজ টা পড়ে যে ঘুম দাও একদম ঘুম ভাঙ্গে তোমার দুপুরে।
রাহাত হুজুর বলেঃ আহা!রেশমি।বিরক্ত কর না।আমি একটা গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা করছি।তাই রাতে ঘুমাইনা।
এতক্ষণ চলছিল রাহাত হুজুর ও তার বউ রেশমির কথোপকথন।
রাহাত হুজুরের মিষ্টি বউটা তার ঘুম নষ্ট করতে উঠে পড়ে লেগেছে।
রেশমি বলেঃ উঠবে নাকি বল?😠
নাকি পানি দিবো?
এককথা শুনে রাহাত হুজুর তাড়াতাড়ি বিছানা থেকে নেমে যাই।
ঠিক সেই মুহূর্তে, রেশমি মাথা ঘুরে পড়তে যাচ্ছিলো।রাহাত হুজুর তার বাহুতে টেনে নিয়ে আসে তার মিষ্টি বউটাকে।কিন্তু অদ্ভুত ব্যাপার রেশমীর চোখ জোড়া বন্ধ হয়ে গেছে।
রাহাত হুজুরঃবউ ও বউ,উঠ প্লিজ।কি হয়েছে?
রেশমি আমার চিন্তা হচ্ছে কিন্তু।
রাহাত হুজুর ডেকেই চলছে রেশমি কে কিন্তু রেশমির কোন সাড়াশব্দ নেই। রাহাত হুজুর কান্না করছে।
রেশমি তুমি সবাই কে খুশি রাখার চেষ্টা করতে করতে, নিজের জীবন থেকেই খুশি কবে চলে গেছে বুঝতে পারনি।
আমি এতটা কেয়ারলেস কেমনে হলাম।তোমার জীবনে খুশির ঠিকানা আমি। আমি যখন তোমার যত্ন নেই তুমি বল, দুনিয়াতে আমার দেয়া শ্রেষ্ঠ উপহার হচ্ছে আমার তোমার প্রতি যত্ম নেয়া😥😥
।তবে আমার কাজের চাপে তোমার খুশি আমি ঠোঁটে বজায় রাখতে পারিনি।সরি প্রিয়।।
চোখ জোড়া অশ্রু সিক্ত হয়ে গেছে রাহাত হুজুরের।ছেলে রা সহজে কান্না করে না।তবে মনে গহীনে তীব্র আঘাত পেয়ে আহত হলে।কষ্ট টা কান্না হয়ে বের হয়ে যাই।
রাহাত হুজুর বলেঃ রেশমি কথা দিচ্ছি।আমার যতই কাজ থাকুক না কেন!
তোমাকে আমি সময় দিব।এমন ভুল আর হবে না।প্লিজ চোখ জোড়া খুল।
রাহাত হুজুরের কান্না তে রাহাত হুজুর এর মা আসে রুমে। সাথে সাথে চেচামেচি শুনে অর্ক আসে।লাবু বাবার বাড়ি গেছে আজ সকালে। তবে অর্ক, তার প্রিয়তমা কে সকাল থেকে মিস করছে।আসলে পৃথিবীতে সব চেয়ে বেশি যন্ত্রণা দায়ক কষ্ট হলো কাউকে miss করা।😨😨😨😨
অর্কের ঘুর কাটে রাহাত হুজুর এর ডাকে।
অর্ক দেখ না আমার রেশমির কি হলো????
অর্ক বলেঃদেখি সর।
অর্ক রেশমির শ্বাস ভালো ভাবে চলছে নাকি দেখছে। আর হার্ডবিট কেমন চেক করে দেখে।
অর্ক বলেঃ হাসপাতালে চল
তবে ভাবীর নরমাল মাথা ঘুরছে। তাও নিশ্চিত করতে ডাক্তারের কাছে চল।তবে?
রাহাত হুজুর বলেঃ তবে কি?
অর্ক বলেঃ মনে হচ্ছে এর পিছনে অদৃশ্য কিছুর হাত আছে।অদৃশ্য জিনিস টা মারাত্মক ভাবে ক্ষতি করতে চেয়েছে।তুমি পাশে ছিলেন বলে পারেনি হয়তো।
রাহাত হুজুর বলেঃ কি বলছো অর্ক?
কে সে?
কি চাই?
কি হচ্ছে সবার সাথে?
একের পর এক অদ্ভুত ঘটনার সামনে পড়ছে সবাই?
কি মহা তান্ডব শুরু হতে চলছে তাদের সবার জীবনে?
চলবে……