রাত যখন গভীর পর্ব-৭+৮

0
1397

#রাত_যখন_গভীর
#জান্নাতুল_মাওয়া_মহুয়া
#(jannatul_mawa_moho)
Season:02
Part :০৭
************
হাবিব এখন অনেক টা সুস্থ।

বসে আছে নিজের রুমে। এমন সময়,তার মা।
তার জন্য নাস্তা আনে।আর বলে, অর্কের বাসায় গিয়ে সমস্যা টা সমাধান করে ফেল।আমার মনে হচ্ছে, তুর সাথে যা হচ্ছে, সব রিনির ঘটনার সাথে জড়িয়ে আছিস বলে।

হাবিব বলেঃ মা,একটু পর বেরিয়ে পড়বো।আমার ও তাই মনে হচ্ছে। যেদিন, রিনিকে স্ফটিকে দেখেছি। সেদিন থেকে এসব হচ্ছে। বুঝতে পারছি না।কেন আমাকে রিনির বিষয়ে খুঁজতে বাঁধা দিচ্ছে। তবে মা মনে হচ্ছে, সেটা যে হবে হোক,অনেক শক্তিশালী।

হাবিব এর মা সব জিনিস পত্র ঘুছিয়ে দেয়। ঘুছাতে ঘুচাতে বলেঃ বাপু আর পারিনা।এবার তো বউ ঘরে তোল?একা হাতে আরোও কদিন এঘর সামলাবো???

হাবিব মিষ্টি একটা হাসি দেয়।। এই হাসি যেন অন্য কিছু বুঝাতে চাইছে.?????

জান্নাত, সুমি,মুগ্ধ, রাবেয়া, কামাল গাড়ী তে বসে ছিল প্রকৃতি দেখছিল। কিন্তু একটু পর কামার ড্রাইভ করছে। এমন সময় মাঝ পথে, গিয়ে কামাল জোরে ব্রেক কষলো।

সবাই ভয় পাই।
মুগ্ধ বলেঃ ভাই,কোন কি সমস্যা?

কামার বলেঃ একটা খরগোশ দেখলাম গাড়ীর সামনে। সেটাকে বাঁচাতে গিয়ে ব্রেক কষলাম।
সবাই গাড়ি থেকে নেমে যাই। দেখে কিছু নেই। রাবেয়ার মুখে একটা রহস্য মাখা হাসি। অতচ সে ঘুমের মধ্যে।

ব্রেক কষার ফলে, জান্নাত ও সুমির
গাড়িটা মাঝ পথে এসে নষ্ট হয়ে গেছে।

কামাল বলেঃ আমি গাড়ি ঠিক করে আনি।তোরা বরং বাস নিয়ে চলে যা।মুগ্ধ ভাই,আপনি তো আছেন।

মুগ্ধ বলেঃ নিশ্চিতে থাকেন।বাস নিয়ে যাবো সবাই রাজি তো?কেউ বমি করিও না আবার।চোখ গুলো জান্নাত এর দিকে তাকিয়ে একথা বলে।

সবাই রাজি হয়ে যাই। বাসে উঠে। তবে বাসটা বড্ড অদ্ভুত। একদম কম মানুষ। কেমন কেমন করে সবাই তাকিয়ে আছে তাদের দিকে।

রাবেয়া কে একটা সিটে শুয়ে দেয়। পাশে সুমি বসে যাই। এখন জান্নাত এর বাধ্য হয়ে বসতে হলো মুগ্ধ এর পাশে।

মুগ্ধ তো মহা খুশি। এমন সময়, জান্নাত তার সাইটে কেউ একজন কে দেখলো।সমস্ত শরীর ঢেকে রেখেছে।শুধু চোখ জোড়া দেখা যাচ্ছে। চোখ গুলো অসম্ভব ভয়ংকর ছিল। তবে মুগ্ধ সেটা দিয়ে তাকাতেই গায়েব হয়ে গেছে।।।

এই প্রথম জান্নাত মুগ্ধ এর এতো কাছে বসে আছে। বাহুতে বাহুতে স্পর্শ করছে।

এমন সময় মুগ্ধ বলেঃ “ভালোবাসার বিনিময়ে অবহেলা পেয়ে ও যে ভালোবাসছে,সেই মূলত ভালোবাসছে,হয়তো সে বোকা হয়েছে কিন্তু জেনে রেখো,বোকারাই একমাত্র ভালোবাসাতে জানে”

শুনো জান্নাত,
যেটা একবার হারায় ওটা ফিরে আসলে ও আগের মতো পূর্ণতার স্বাদটা পাওয়া যায় না।
তাই এভাবে হারিয়ে যেতে বাধ্য কর না জান্নাত।

জান্নাত কিছু না বলে তাকিয়ে আছে জানালার বাইরে। একসময় ঘুমিয়ে পড়লো। বেশ কিছুক্ষণ পরে,গাড়ি থেকে গেল।জান্নাত চোখ জোড়া খুলে দেখে। সে নিজেকে মুগ্ধের বুকের মধ্যে মাথা দিয়ে ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় পেল।

জান্নাত বলেঃ আপনি আমাকে জাগিয়ে তুলতে পারতেন?এই ভাবে এতক্ষণ আপনার বুকে মাথা দিয়ে ছিলাম।কষ্ট হয়েছে নিশ্চয়ই দুঃখীত আমি।আসলে, বাসে উঠলেই আমার ঘুম চলে আসে।

মুগ্ধ বলেঃ sleeping is nice
Unitil,you wake up
And realize You’re
Still sad….
তুমি জেগে থাকলে দুশ্চিন্তা করতে।তাছাড়া, মানুষ ঘুমিয়ে থাকলে,মনের দুঃখ, কষ্ট ভুলে থাকে।ঘুমের মধ্যে তাদের মনে হয়। everything is ok…

তাছাড়া ঘুমন্ত মানুষ কে জাগাতে নেই।কষ্ট হলো এ কথা কে বলছে?
এই কষ্ট দেখলে মনের মধ্যে যে হৃদয় টা দুই টুকরো হয়ে যাচ্ছে সেটা দেখলে না!

জান্নাত কিছু বললো না।জান্নাত জানে তার এই কথার কোন উত্তর জান্নাত এর কাছে নেই।

আসলে, এই মুগ্ধ নামেন মানুষ টার প্রতিটি কথা মনে বাধছে। আবার,কিছু কথা একদম সুজা হৃদয়ে গিয়ে তীরের মতো আঘাত করছে।

সুমি বলেঃ
তাড়াতাড়ি উঠ জান্নাত ।আমরা পৌঁছে গেছি।বসে থাকবি নাকি গাড়ি তে?

জান্নাত বলেঃ আসছি তো।

সবাই গাড়ি থেকে নেমে যাই। কামাল গাড়ি নিয়ে দাড়িয়ে আছে। সবাই হাবিবের বাসার খুব কাছাকাছি চলে এসেছে। তবে,,হাবিবের বাসার আসে পাশে আসতেই, সুমির একটা নেগেটিভ সিগনাল পাচ্ছে। শেষ পর্যন্ত তারা অর্কের কাছে যেতে পারবে তো???

রিনি চোখ জোড়া আবার বন্ধ করে দেয়। কারণ সেই রুমের সামনে কে যেন এসে দাঁড়িয় আছে মনে হলো তার।

রিনি স্পষ্ট শুনতে চেষ্টা করলো।২ টা বিড়াল এর শব্দ শুনতে পাচ্ছে।মেউ মেউ।।

একটু পর মহিলাটার গলা শুনতে পেল। মহিলা বলছেঃস্যার কেমন আছেন?আপনাদের জন্য দুধ আনি?

হঠাৎ করে কে যেন একটা ছেলে কন্ঠে বলেঃনা।ওর জন্য আনলে আন।

মহিলা বলেঃ আফা আপনি খাইবেন?

মেয়ে কন্ঠ বলেঃ হুম আনো।

মেয়ে কন্ঠ বলেঃ রিনি কে তো ১ মাস ধরে ঘুম পাড়িয়ে রাখলি।ও তো মানুষ, ওর খাবার খাওয়ার দরকার। না হয়,শরীর খারাপ হবে।

ছেলে কন্ঠে বলেঃ আজ তাহলে, ওকে জাগিয়ে রাখবো।

মেয়ে কন্ঠ বলেঃআমার চাই,প্রিন্স কে।কিন্তু আমার প্রিন্স এর কোন খুঁজ ই পাচ্ছি না।পাঁজি মেয়ে টার পরিবার এতো কঠোর কেন??এমন অমানবিক শাস্তি টা কেন দিতে হলো?

ছেলে কন্ঠ বলেঃ মুখ সামলে।।রিনির ব্যাপারে একদম বাজে কথা বলবি না।অনেক কষ্টে পেয়েছি। সেদিন যদি, বিদ্যুৎ যাওয়ার সাথে সাথে না নিয়ে আসতাম তাহলে তো আমার রিনি কে পেতাম না।অনেক ভালোবাসি।
“রিনি তুমি সেই কবিতা,
যা প্রতিদিন ভাবি,
লিখতে পারি না,,,
রিনি সেই ছবি।।
যা কল্পনা করতে পারি,,
আঁকতে পারি না”।।।।।

আরেকটা কথা হচ্ছে, হাতের রেখা মানুষের ভাগ্যে থাকে না,মানুষের ভাগ্য থাকে তার কর্মে।চেষ্টা করলে সব সম্ভব। আজ চেষ্টার ফলে রিনি আমার কাছে।।।
তাছাড়া,
।পথের কাটা হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল শালার প্রিন্স। হা হা হা।এমন জাল বিছিয়ে ছিলাম।শালা,মাইকার চিপায় পড়ে গেছে।হা হা।।।।

রিনির সারা শরীর ভয়ে চুপসে গেছে। কে এরা??তাহলে, কি রিনি আবার কোন বিপদে পরতে যাচ্ছে?????

প্রিন্স এর মনে আশার আলো জ্বলে উঠে। প্রিন্স (ইনতিয়াজ)স্পষ্ট বুঝতে পারছে সে এখন পানির বাইরে। তাকে কোন এক জায়গা তে নিয়ে যাচ্ছে। আর একটু ধৈর্য ধরে থাকতে হবে। অতি তাড়াতাড়ি মুক্তি পাবে।এটা ভাবতেই, প্রিন্স এর মন খুশীতে ভরে গেল।

বিপদে আল্লাহ পাক এর প্রতি অটুট বিশ্বাস রাখতে হবে। কারণ, বিপদ থেকে বাঁচানোর মালিক তিনি।
বিপদে ধৈর্য হারানো উচিত নই।
প্রিন্স পেরেছে,ধৈর্য রাখতে।তাই সে একটু পর মুক্তি পেতে চলছে।।।

এক লোক বলছেঃ মাছ নিবানি মাছ।টাটকা মাছ।কোন ভেজাল নাইকা!লইবানি।।।।

এইভাবে বলতে বলতে রাজবাড়ীর সামনে চলে আসে। তখনই, একজন মহিলা বেরিয়ে আসে।

মহিলা বলেঃ মাছ দেখি।
লোকটা মাছ দেখায়।
মহিলা বলেঃ আবে এটা তো দেহি মেলা বড় মাছ। আইজকা স্যার ও আপা মনি দুজনে আচে।মাছটা মজা কইরা জুল দি রান্দবার পারোম।দাম কত?

দরদাম করে মাছ নিয়ে বাসায় ফিরে আসে।মহিলা টা।মাছটা রান্না ঘরে রাখে।
মহিলা দা নিয়ে আস্তে আস্তে কেটে ফেলছে।।।।।

মুক্তি পাচ্ছ প্রিন্স (ইনতিয়াজ)। তবে মাছ থেকে মুক্তি পেলে ও।বোতল থেকে কেমনে মুক্তি পাবে????

জিন শাম্মি, মা জিন লোভা কে রুম থেকে বের করে আনে।অবশ্য, অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে এ-ই কাজ করতে। রশিদ জিন(রাজা মশাই) অনেক খুশি হয়েছে।
তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।কাল,পরশু করে।তারা সবাই রিনির বাসায় যাবে।রিনির সাথে দেখা করে আসবে।
ওইদিন চলে আসার পর আর যাওয়া হয়নি।তাছাড়া জান্নাত এর কাছ থেকে কয়েক বার ডাক পড়েছিল। রাজ্যের কাজের চাপে সাড়া দিতে পারিনি।
আরেকটা দুশ্চিন্তা ছিল,শক্তি শালি শয়তান জিনের উৎপাত বেড়ে গেছিলো। প্রিন্স এসব দিক দেখতো।সে না থাকাতেই, আমার সব দেখতে হচ্ছিল। তবে,আল্লাহ এর রহমতে তাদের উৎপাত কমে গেছে।।।

পর মূহুর্তে।,,
জিন রাজা মশাই বলেঃ শাম্মি, পৃথিবীতে যাবি!!!!

চলবে…….

#রাত_যখন_গভীর
#জান্নাতুল_মাওয়া_মহুয়া
#(jannatul_mawa_moho)
Season:02
Part :০৮
************
রিনির সারা শরীর ভয়ে চুপসে গেছে।রিনির মনে হাজারো প্রশ্ন তবে নেই কোন উত্তর। এক মনে ভেবেই চলেছে।

রিনি মনে মনে বলেঃ আমি এক মাস ধরে এখানে আছি। হায় আল্লাহ। মা বাবা তো পাগল প্রায় মনে হয়।আমার কিছু একটা করতে হবে। না হয় সারাজীবন এখানে থাকতে হবে।

রিনির রুমের দরজা তে কে যেন কড়া নাড়ে।রিনি তাড়াতাড়ি চোখ বন্ধ করে দেয়। একটা কালো অবয়ব আস্তে আস্তে রিনির দিকে আসছে। রিনি হালকা চোখ জোড়া খুলে দেখে, একটা কালো বিড়াল খুবই ভয়ংকর দেখতে। চোখ জোড়া নীল, বিড়াল টার সম্পূর্ণ শরীর কালো বলতে একদম কুচকুচে কালো। বিড়ালটা রিনির মুখের কাছে চলে আসে। এক নজরে তাকিয়ে আছে রিনির দিকে।

বিড়াল টা বলেঃ মেউ মেউ করে। এরপর ব’লে,

kaash ki tum meri
Maut hoti
Toh ek din mil hi
Jaati😩

Rini you don’t have any idea about my feelings for you.because, you donot try to understand my feeling anytime. Love u rini.
রিনি তোমাকে প্রথম দেখে মনের সুপ্ত আসনে বসিয়ে ছিলাম।এখন আমার প্রতি নিশ্বাসে তুমি আছো শুধু তুমি।

এমন সময় বিড়াল টার পেছন থেকে কেউ একজন রহমান ভাইয়া বলে ডাক দেয়।
আরে তাসনিয়া এটা তো তাসনিয়া।রহমান এর একমাত্র বোন।

দুজনে বিড়াল থেকে মানুষ রুপ নিয়ে নে। দুজনে জিন।।তাই তারা তাদের রুপ সহজে পরিবর্তন করতে পারে।জিনদের মধ্যে অনেক জিন পশু পাখির রুপ ধরে থাকতে পছন্দ করে।

রহমান ও তাসনিয়া,
।দুজনের চোখ নীল রঙের। অসম্ভব ফর্সা দু’জনই।দুজন কে দেখে বুঝার উপায় নেই তারা যে রিনি কে সবার চোখ এর আড়ালে নিয়ে এসেছে। আর ১ মাস ধরে রেখেছে। দুজন এর চেহারা একদম নিষ্পাপ লাগছে হুহ।।তারাই এমন ব্যবস্হা করেছে কেউ যেন রিনির খবর না পাই।যে চেষ্টা করবে, তার জন্য অপেক্ষা করছে ভয়ংকর কিছু।।।

তাসনিয়া বলেঃ কি করস এখানে? ১মাস ধরে তো দেখছিস।আরোও দেখার কি আছে। বলতো?আর আমি আমার প্রিন্স (ইনতিয়াজ) কে দেখি না কত দিন হলো!!!

রহমান(বিড়াল এবং প্রিন্সের বন্ধু) বলেঃজানিস একটা কথা। সৃষ্টি কর্তা কারো উপর অবিচার করে না।কাউকে রুপ ঢেলে দিয়েছেন তো কাউকে দিয়েছেন মায়া।মেয়ে টার মুখে অনেক মায়া।যতো দেখি মন ভরে না রে।আল্লাহ ওর মুখে যে কি পরিমাণ মায়া দিয়েছে যা দেখে এক মূহুর্তের মধ্যে যে কেউ ঘায়েল হয়ে যাবে।আমিও ব্যাতিক্রম নই।

তাসনিয়া(বিড়াল এবং রহমানের বোন) বলেঃতুই ওর জন্য এত কিছু করছস?
ও যদি তুকে ভালো না বাসে তাহলে?

তুই ওকে এত ভালোবাসিস কেন?

রহমান জিন বলেঃভালোবাসা হলো ঠিক জ্বলন্ত আগুন এর মতো। তুই যদি কোন ভাবেই আগুন জ্বালিয়ে ফেলিস,এ ব্যাপারে নিশ্চিত থাকতে পারবি না যে তা জ্বলতেই থাকবে। এজন্য রিনি কে প্রতিটি দেখি, আর জ্বালানি দেয়।অবশ্য, জ্বালানি দিয়েই যেতে হবে।

ঠিক তেমনই,তুই যদি চাস যে তুর ভালোবাসার মানুষ টি চিরকাল তুর সাথে থাকুক তবে অবহেলা নয়,তাকে ও প্রতিদিন নতুন করে ভালোবাসা তে হয়।নতুন করে উপলব্ধি করতে হয়।

তাসনিয়া বলেঃ বাহ বাহ ভাই লা জাবাব।আমিও চাই প্রিন্স কে!!তাকে ওভালবাসা দিবো।রিনির কথা ভুলিয়ে দিবো।।।

রহমান বলেঃ খুব শীঘ্রই পেয়ে যাবি।

দু’জন ই রুম থেকে বেরিয়ে আসে। রিনি চোখ জোড়া খুলে। তার মন বড্ড খারাপ হয়ে যায়। রিনির চোখ দিয়ে অশ্রু টলটল করে ঝরছে।

রিনি বলেঃমেয়ে হয়ে জন্মানো সহজ,কিন্তু মেয়ে হয়ে বেঁচে থাকা টা অনেক কষ্টের। হাসতে গেলে ও ভাবতে হয়।আর কাঁদতে গেলে ও ভাবতে হয়। কোথায় যেতে গেলেও ভাবতে হয় ।হাই আল্লাহ বড্ড ভুল হয়ে গেছে, সেদিন কেন যে বেরিয়ে ছিলাম।আমার জীবন টা নষ্ট হয়ে গেল এটা বলে ডুকরে কেঁদে দেয়।

রিনি আবার বলেঃ আমার কি দোষ? প্রথমে প্রিন্স নিজের প্রতিশোধ নিয়েছে। এখন, অন্য জন ১ মাস ধরে আমাকে আটকে রেখেছে। এরা জিন এদের চোখ ফাকি দিবো কেমনে। রিনি প্রচুর কান্না করছে।

এমন সময়, রিনি কেউ একজন এর পায়ের শব্দ শুনতে পেল। কে যেন আসছে। তবে কে আসছে?
তার রুমে আবার!!!!

মহিলা দা নিয়ে আস্তে আস্তে মাছটা কেটে ফেলছে।হঠাৎ দাঁ টা মাছের পেট বরাবর এসে, কিছু একটাতে গিয়ে আটকে যায়। মহিলা দেখে পেট টা ভালো ভাবে দেখে। তারপর ,সে একটা খুব সুন্দর কাচের বোতল। অনেক রঙিন দেখতে।মহিলার এটা পছন্দ হয়েছে।বোতল টা একদম আনকমন। তাই ভালো ভাবে পরিস্কার করে নিজের রুমে রেখে দেয়।

মহিলা মাছটা রান্না করে নেই। পুরো ঘরে রান্নার সুগন্ধি তে মু মু করছে।মহিলা মাছের টুকরো গুলো সাজিয়ে নে।টেবিলে রেখে দেয়।এরপর নিজে খেতে যায়।

প্রিন্স আল্লাহ পাক এর কাছে শুকরিয়া আদায় করে।

প্রিন্স বলেঃ তবে এখন এইভাবে বোতল বন্দী হয়ে কারো রুমের সৌন্দর্য বাড়ালে হবে না।বের হতে হবে।

প্রিন্স চিন্তার মধ্যে পড়ে যায়। কেমনে বের হবে????

জান্নাত(মহু),মুগ্ধ, সুমি,কামাল,রাবেয়া। গাড়ি তে আছে। তারা যখনই, হাবিবের বাসার গলির মধ্যে প্রবেশ করে। তখনই, দেখে একটা মহিলা হাবিবের বাসার সামনে বসে আছে। মহিলাটা আস্তে আস্তে তাদের গাড়ির সামনে চলে আসে।
কামাল গাড়ি চালাচ্ছিল।মুগ্ধ বলেঃ গাড়ি সোজা চালিয়ে যাও।একদম হাবিবের বাসার দরজায় গিয়ে থামাবে।

কামাল ঠিক তাই করলো।রাবেয়া এখন ও ঘুম। এর মধ্যে মুগ্ধ আবার ঘুমের ইনজেকশন পুস করে দিয়ে ছিল রাবেয়া কে।যদি জেগে ওঠে, তাহলে মারাত্মক কান্ড করবে।

সবাই গাড়ির থেকে নেমে যাচ্ছে। সবার শেষে জান্নাত বেরিয়ে আসতেই হুঁচট খেয়ে পড়ে যাচ্ছিলো।এমন সময় মুগ্ধ ধরে ফেলে।
জান্নাত তাড়াতাড়ি দাঁড়িয়ে যায়। কেউ লক্ষ্য করার আগে। অতঃপর,

হাবিবের বাসায় কলিং বেল টিপ দেয় সুমি।একটু পর হাবিবের মা আসে। সবাই কে দেখে খুশি হয়।তবে জিজ্ঞেসো দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে মুগ্ধ এর দিকে।

কামাল বলেঃ আন্টি এটা আমাদের নতুন বন্ধু। তবে নিচু স্বরে বলে, ভবিষ্যতে দোলাভাই হবে।

হাবিবের মা বলেঃ ওহ নতুন বন্ধু। ছেলে তো দেখতে মাশাল্লাহ হিরার টুকরোর মতো। আসো আসো সবাই ভেতরে আস।রাবেয়া কই?

কামাল বলেঃ ও ঘুমাচ্ছে। গাড়ি তে আছে।

হাবিবের মা বলেঃ হাবিব কই তুই?দেখ কারা আসছে?

হাবিব সবাই কে দেখে খুশি হয়ে যাই। কারণ এ কদিন যে ঝামেলা গেছে। আল্লাহ পাক বাচিয়ে রাখছে এটাই অনেক।

একটু পর হাবিবের মা সবার জন্য বিরিয়ানি নিয়ে আসে। অবশ্য রান্না করাই ছিল। হাবিবের জন্য রান্না করেছিল। কেন জানি আজকে একটু বেশি রান্না করে ছিল।সবাই খেতে বসে। হাবিবের মা ও সাথে বসে খাচ্ছে। এমন সময়,হাবিবের মা হাবিবের সাথে যা যা ঘটেছে সব খুলে বলে। সবাই তো তব্দ হয়ে গেছে।
হাবিব বলেঃ জানিস আমি রিনি কে দেখছি।ও বেচে আছে।

সবাই খুশি হয়।এরপর খাওয়া শেষ করে। হাবিবের মা কে সবাই সালাম করে।হাবিবের মা লক্ষ্য করে, জান্নাত এর সাথে মুগ্ধ কে বেশ মানিয়েছে।
সবাই অর্কের বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিচ্ছে।

এমন সময়, হাবিবের মা জান্নাত এর কানে কানে বলেঃ মা শুন,ছেলে টার পাশে তুকে ভালই লাগে দেখতে, শীঘ্রই যেন সুখবর পাই।নিজের তো মেয়ে নেই। তুই ও আমার মেয়ের মতো, তুর বিয়ে তে গিয়ে শখ মেটাবো।
জান্নাত একটা ম্লান হাসি দেয়। সবাইকে হাবিবের মা বিদায় দেয়। হাবিব যাওয়ার সাথে সাথে একটা ঠান্ডা বাতাস ঘরের বাইরে চলে গেল। হাবিবের মা এই বিষয় টা লক্ষ্য করলো।

সবাই গাড়ি তে উঠে পড়ে। গাড়ি চালাচ্ছে হাবিব। মেইন রোড এ উঠে পড়ে।একটু পর…….

পর মূহুর্তে।,,
জিন রাজা মশাই বলেঃ শাম্মি, পৃথিবীতে যাবি!!!!

শাম্মি বলেঃ হুম বাবা যাবো।মাকে বলছি আমি। রেডি হতে। তবে বাবা ভাই কে খুব মিস করছি।

শাম্মি রেডি হতে লাগলো। আজকে সে খয়েরী রঙের শাড়ি পড়ে।পায়ে নুপুর দিল।হাতে আলতা। চোখে কাজল।চুল গুলো হালকা খোপা করেছে।রাজার মেয়ে বলে কথা। এইটুকু সাজগোছ তো চলেই।

শাম্মির মা ( লোভা) এবং বাবা (রশিদ) সবাই এখন রেডি।একটু পর সবাই বেরিয়ে পড়বে।রাজা রশিদ ঠিক করে, প্রথমে অর্কের বাসায় যাবে।তারপর, রিনির পরিবার কে আসতে বলবে।

অর্ক,লাবু,রাহাত হুজুর, রেশমী একসাথে বসে আছে। জান্নাত, সুমি,রাবেয়া ও বন্ধু দের জন্য অপেক্ষা করছে। তাছাড়া, লাবু ও রেশমী কে একা কিছু করতে দিতে গেলে বিপদ। সেদিন, রেশমি।ড্রইং রুমে ব্রেসিনটা পরিষ্কার করছিল।হঠাৎ কি যেনো অদৃশ্য শক্তি এসে।রেশমী কে পানির মধ্যে মাথা টা ঢুকিয়ে চেপে ধরে। রেশমির গুঙিয়ে উঠে। রাহাত হুজুর এর মা শব্দ টা শুনে দৌড়ে আসে।না হয়।রেশমী কে আর পাওয়া যেতো না।পরপারে চলে যেতো। তবে,
মিনিট পাঁচেক পর,অর্ক, লাবু,রেশমি, রাহাত হুজুর লক্ষ্য করে। তাদের রুমের লাইট অন এন্ড অফ হচ্ছে। একটু পর দেখে………
চলবে…….

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে