যৌনকর্মী
#পর্ব_১
লেখিকা_নুসরাত_হক..
আমরা এমন হতভাগ্য যে মরার পর জানাজা টা ও পায়না। এমনকি লাশটা দাফন ও হয়না ভালো করে কোনো রকম মাটিতে পুঁতে ফেলে।
আপনাদের শুনাবো আজ আমার জীবনি। আপনারা অনেকেই সামান্য দুঃখ পেলে বলেন যে মারা যাবো বাঁচতে ইচ্ছে করে না।কিংবা কেউ সুইসাইড সহ নেশার জগতে চলে যায়।
বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবো আমাদের চেয়ে করুন কিন্তুু আপনার জীবনি নয়।
আমার ছোটো বেলা থেকে শুরু করি। আমার জন্ম গত ভাবে যৌনকর্মী। আমার মা ও ছিলেন একজন পতিতা।
আমার মা নিদিষ্ট করে বলতে পারবে না যে আমার বাবা কে। কারন অহরহ পুরুষ এর আগমন হয় আমার মায়ের কাছে।
তাই বাবার পরিচয় আপনাদের কাছে দিতে পারবো না।
আমার বেড়ে উঠা দৌলতদিয়া পতিতা পল্লীর অলিতে গলিতে।
এটা আমাদের এলাকা। যৌনকর্মীদের এলাকা।
এখানে কোনো মসজিদ মন্দির কিছু নেই। এখানে জাত পাতের ও কোনো ঠিক নেই।
আমি যখন হয় আমার মায়ের তখন খুব অভাব কারন খদ্দেররা আসতো না আর আমার মা বাচ্চা জন্ম দিয়েছে তাই ৩ বা ৪ মাস ধরে কোনো কাজ ছিলো না মার।
মা আমাকে দুধের বদলে ভাতের ফ্যান খাওয়াতো।
সত্যি বলতে আমার মায়ের বুকের দুধ খদ্দেররা খেয়ে ফেলতো সেজন্য আমি আর দুধ পেতাম না।
ধীরে ধীরে যখন বড় হয় তখন থেকে মাকে দেখতাম ঠোঁটে লাল লিপি স্টিক দিয়ে একটা লাল টিপ পড়ে খুব বাজে রকমের সেজে আমাদের ছোট্ট কুট্টির এর সামনে দাঁড়িয়ে থাকতো।
ছোট্ট কুট্টির টা ছিলো আমাদের ঘর।এখানে একটা খাট, একটা আলনাা আর কিছু হাড়ি পাতিল ছিলো।
যা দিয়ে রান্না করে খেতাম।
যখন খদ্দের আসতো তখন মা আমাকে রুম থেকে বের করে দিতো।
ওহ ভুলতে ভুলে গেছি আমার নাম রানী মা আমার নাম রেখেছিলো রানী।
আমাদের পল্লীতে একটা খদ্দের আসলে তাকে নিয়ে কাড়াকাড়ি শুরু হয়ে যেতো।
কারন সবাই সবার কুটিরে ডাকতো।
কিন্তুু খদ্দের এর যাকে ভালো লাগতো যার সাথে দামে মিলতো তার কুটিরে যেতো।
আমাদের পল্লীতে একটা সরদারনী ছিলো তাকে আমি নানি ডাকতাম।
সে আমাদের পরিচালনা করতো।
সে প্রতিদিন রাত ১০ টার সময় আসতো আর তাকে আমরা সবাই ৫০ টাকা করে দিতে হতো।
এছাড়া আমাদের রুম ভাড়া ছিলো ৩০০ টাকা।
খদ্দের রা খুব বেশি টাকা দিতো না।
২০০ বা ৩০০ টাকা দিতো।
কোনো কোনো দিন ১ টা ও আসতো না খদ্দের আবার কোনো কোনো দিন ৫ বা ৬ টা ও আসতো।
আমার বয়স যখন ৯ তখন খদ্দেররা আমার দিকে খুব বাজে ভাবে তাকাতো।
একদিন এক খদ্দের আসে।
আমার মায়ের কাছে।
তো তার কাজ শেষে চলে যাওয়ার সময় আমাকে দেখে।
তখন আমার মাকে বলে এইটা কেরে।
আমার মা আমায় তার পিছনে লুকিয়ে ফেলে।
তখন আমার মা বলে।
–আরে যা যা মরদ কাম শেষ হয়ছে এহন যা,
তখন খদ্দের বলে এটারে ১০ মিনিট এর জন্য দিলে তোরে ৫০০ টাকা দিবো।
কিন্তুু আমার মা রাজি হয়না।
যখন লোকটা ১ হাজার টাকা বললও তখন মা রাজি হয়।
আর মা আমাকে আর লোকটাকে কুটিরে রেখে বাইরে চলে যায়।
লোকটা আমার কাছে আসতে থাকে।
আমার শরীরটা কুবড়ে থুবড়ে খায়।আমি চিৎকার করি কান্না করি অনেক।
কিন্তুু কেউ আসে না।
আমার সারা শরীর রক্তে ভেসে যায়।
আমি মাএ ৯ বছর বয়সে রেপ হয়।
লোকটা যাওয়ার সময় আমার মাকে ১৫০০ শত টাকা দেয়।
বলে ডাক্তার দেখাইতে।
চলবে…..