মেঘের আড়ালে পর্ব-১৬ শেষাংশ

0
3029

#মেঘের_আড়ালে
#পর্ব__১৬ (শেষাংশ)
#লেখিকাঃফাতেমা_জোহরা_নাভিলা

৩৯.

ছাদে রেলিং হাত রেখে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছি, পাশে ইয়াদ দাঁড়ানো আমার সাথে। আজ আবহাওয়াটা খুব ফুরফুরে চারপাশে বসন্তময় হওয়া বয়ছে। অনিক ভাইয়ার বিয়ে শেষ হয়েছে আজ এক সাপ্তাহ। এই এক সাপ্তাহ আমার জীবনে এক মাজিক এর মতো ছিলো সব কিছু। মানুষজন আসলে ঠিকই বলে প্রেমের শহর হলো সাজেক আর চ্রটগ্রাম তাইতো সেইখান থেকে আসার পর আমার জীবনে একটু হলেও সুপ্ত রঙ এসেছে। ইয়াদ এখন আমার সাথে আগের মতো রাগারাগি করেন না।আমার দুষ্টু মিতে সে এখন আমার পাশে থাকে আমার কাছে ব্যাপারটা মানতে খুব বদহজম টাইপ।সব থেকে অদ্ভুত ব্যাপার হলো আমি যখন রাতে রুমে বসে টিভি দেখি ইয়াদ তখন হুট করে এসে আমার ঘা এর সাথে ঘা ঘেঁষে বসে টিভি দেখে চেহারার এমন ভাব থাকে উনি কিছুই করেনি।। রাতে যখন বেডে ঘুমাতে যাই তখন মাঝ বরাবর আমাদের পাহাড় সমান মহারাজা কোলবালিশ মশায় থাকে কিন্তু সকালে যখন চোখ খুলি তখন নিজেকে ইয়াদ এর উম্মাদ বুকে আষ্টেপৃষ্ঠে আবিষ্কার করি নিজেকে আর কোলবালিশ মহারাজকে উঠে নিচে ফ্লোরে পাই। তখন সব কিছু সাজানো এক সুন্দর সপ্নের মতো মনে হয়। চলুক না এভাবে কিছু অজানা ভালো লাগা সপ্নোগুলো যদি জানতে গেলে এই সপ্নো ফুরে যায়।।।।।।

.

.
“নূর”।।

.
হুম(আকাশের দিকে তাকিয়ে)
.
আমার সাথে আজ একটু বাহিরে যাবা!!!
.
আমি আকাশ থেকে চোখ সরিয়ে উনার দিকে তাকালাম উনি আমার থেকে উত্তর জানার জন্য অসহায় ভাবে তাকিয়ে আছে।আমি কিছু না বলে শুধু মাথা দুলালাম। উনি বিবরীতে সেই মাতাল করা বিশ্বজয় হাসি দিলেন আর আমি মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে আছি উনার দিকে,একটা মানুষ এর হাসি এতো সুন্দর নিখুঁত হয় কিভাবে তা আমার জানা নেই।

.
চারটা বাজে উনার সাথে বের হওয়ার কথা, উনি লাঞ্চ করে একটু আগে বাহিরে গেছে যাওয়ার আগে অভস্য আমাকে বলে গেছেন আমি যাতে রেডি থাকি সময় মতো। রুমে এসে আলমারি খুলে মিনিট বিশ এর মতো দাঁড়িয়ে আছি কি পারবো কি বের করবো তাই ভাবছি।আজ উনার সাথে এই প্রথম তিন মাস এর মধ্যে কোচিং সেন্টার ছাড়াও কোথাও বাহিরে যাচ্ছি ভাবতেই মনে এক ভালো লাগা দোল বয়ছে, তাই আজ একটু আলাদাভাবে নিজেকে সাজাতে চাই।।অনেক ভেবে ঠিক করলাম আজ শাড়ি পরবো। বসন্তের এক তারিখ আজ প্রিয়সি সাথে বের হচ্ছি। এই মাসে সবায় সবার প্রিয়তমার সাথে হাতে হাত ধরে শাড়ি পরে ল্যাম্পপোস্ট নিচে হাতে, আবার অনেকে রিক্সা করে ঘুরে,,আমি হয়তো হাতে হাত ধরে হাটতে পারবো না,কিন্তু শাড়িতে তো নিজেকে সাজাতে পারবো।। নিয়তি কখনো এমন সুযোগ আবার নিয়ে আসবে কিনা জানা নেই, তাই হারাতে চাচ্ছিনা এই সুযোগটা।

.

.
কালো শাড়িতে চোখে হাল্কা কাজল,চুলগুলো আদ খোঁপা ঠোঁটে লাল ক্লার লিপস্টিক, কানে ঝুমকো, হাতে সাদা কালো রেশমি চুড়ি। নিজেকে আয়না খুঁটিয়ে দেখছি খারাপ লাগছেনা তো এই হাল্কা সাজে লাগলে ও কিছু করার নাই। আমি এর থেকে বেশী সাজতে পারিনা।মুঠো ফোন রিং হওয়াতে আমি আয়না থেকে চোখ ফিরিয়ে খাটে উপর থেকে ফোন নিলাম স্কিনে বড় বড় অক্ষরে ভেসে উঠল সাইকো নামটা দেখেই মুখে লজ্জা আভা এসে ভর করলো। লোকটা এমন কেন কাছে না থেকে ও এতো লজ্জা দিচ্ছে। আমি কাপা কাপা হাতে ফোন রিসিভ করলাম।অই পাশ থেকে নরম কণ্ঠে বলে উঠল,,,,

” নিচে আসো, আমি দাঁড়িয়ে আছি ম্যাডাম তোমার জন্য”।।

.

.
আদুরে মাখা কণ্ঠ তার মুখ থেকে” তোমার জন্য” শুনেই চোখ থেকে এক ফোটা খুশির পানি বেয়ে পরল। আমি তার বিবরীতে কিছু বলতে পারলাম না শুধু বললাম ছোট করে।”হুম্ম”
.

.
নিচে এসে দেখি সেই গাড়ির সাথে হেলাল দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে সব থেকে অদ্ভুত ব্যাপার হলো। সে ও আজ নিজেকে কালো পাঞ্জাবীতে পরিহিত করেছে মুখে তার আকাঁবাকা দাতের সেই হাসি। সাদা চামড়ায় কালো পাঞ্জাবীতে মারাত্মক লাগছে।আমি মনে মনে চোখ বুঝে বলে উঠলাম, “বাচ্চেকি জান লোগে কেয়া”।।।

.
উনি আমার সামনে এসে হাতের তুড়ি বাজিয়ে বলে উঠল,, এভাবে কি এখানে দাঁড়িয়ে থাকবে না চলবে ম্যাডাম।।।

.
ইশশশশশশ কি লজ্জা আমি উনার দিকে তাকিয়ে বলে উঠলাম,,,,আমি তো যেতে নিচ্ছিলাম আপনি এসেই তো মাঝ পথে দাঁড়িয়ে আছেন মশায়।
.
উনি আমার কথা শুনে নিঃশব্দে উপরের বাকা দাত দিয়ে ঠোটঁ কামড়িয়ে হাসলেন।
.
লোকটা আজ এতো হাসছে কেন।।।উনি কি বুঝে না উনার এই মুগ্ধ করা টোল পরা হাসি দেখে আমার বড্ডো হিংসে হয়।আমি কপাল কুঁচকে পাশ কাটিয়ে গাড়িতে গিয়ে বসলাম।উনি ও আমার পিছু পিছু এসে গাড়িতে বসলো।।।

.”আচ্ছা,আমারা কোথায় যাচ্ছি “।(সীট ব্যাল্ট লাগাতে লাগাতে)

.কোনো এক জায়গা তো যাচ্ছি ।।।(সামনের দিকে তাকিয়ে গাড়ি চালাতে চালাতে)

.
সেই তো আমি ও জানি। জায়গায় টার তো অাদৌ কোনো নাম আছে।।।(কপাল কুঁচকে)
.
না নেই,, নামবিহীন জায়গা।(আমার দিকে তাকিয়ে চোখ টিপ দিয়ে)
.
আজ উনার কার্যকলাপে খুব অদ্ভুত লাগছে কথা না বারিয়ে গাড়ির জানালায় হাতের উপর মাথা রেখে বাহিরে তাকিয়ে আছি।প্রায় তিশ মিনিট পর গাড়ি এসে থামল নিজ গন্তব্য । বাহিরে তাকিয়ে দেখি বড় বড় অক্ষরে সাইন বোডে লিখা রসুলপুর নিচে লিখা নারায়ণগঞ্জ। বুঝতে আর সমস্যা হল না আমরা যে আমাদের প্রিয় জেলা নারায়ণগঞ্জে আছি। ইয়াদ গাড়ি থেকে নেমে আমার পাশের দরজা খুলে আমাকে নামিয়ে গাড়ি লক করে সামনে আঁকাবাকা মাটির উঁচু পথে হাটা ধরল।আমি মুগ্ধ নয়নে আশেপাশে তাকিয়ে আছি। এতোবছর নারায়ণগঞ্জ থাকলে ও এইখানে আসা হয়ে উঠেনি আমার, আশেপাশে ফুলের রাজ্য আর সবজির চাষ আর মাঝে দূরে একটা কুরের ঘর দেখা যাচ্ছে। ইয়াদ আমাকে নিয়ে হাটতে হাটতে সেই কুরের ঘরে নিয়ে গেলো। ঘরটি সামনে গিয়ে আমি পুরো থ সামনে ইয়া বড় এক বিল জায়গাটা আসলে অসম্ভব সুন্দর পিছে ফুলের রাজ্য আর মাঝে এক চিলতে কুরের ঘর আর সাথে বিল।

.
“পছন্দ হয়েছে ”

.

অনেক বলে বুঝানো যাবেনা। অনেক অনেক ধন্যবাদ ইয়াদ আমাকে এইখানে নিয়ে আসার জন্য।উনার হাত ধরে।।।।

.
উনি বিবরীতে আমার হাতের উপরে নিজের হাত রেখে মিস্টি এক হাসি দিয়ে, হাতের ইশারা উনার সাথে সামনে বিলের পারে যেতে বললেন।

৪০.
সন্ধায় হয়ে গেছে এখনো বিলের পারে পা ডুবিয়ে বসে আছি চারপাশে থেকে জি জি আওয়াজ হচ্ছে জোনাকির পোকার আরো কতো না জানার কিছুর পোকার ও আওয়াজ হচ্ছে। আমাদের আশেপাশে দূর দূরান্ত কোনো বাসা নেই এতো বড় জায়গায় আমরা দুইজন আছি দূর দূরান্ত আর কেউ নেই। আজ আর ভয় করছেনা মনে মধ্যে করছে একঝাক ভালো লাগা।হঠাৎ নিরবতা ভেঙে ইয়াদ বলে উঠল,,,

.
নূর

.
“আমি বিলের দিকে তাকিয়ে উনার বিবরীতে বলে উঠলাম।হুম্ম।”

.
ভালোবাসো আমায়!!!

.
উনার এমন কথা শুনে আমি চুপ হয়ে গেলাম। কি বলবো উনাকে।।
.
কি হলো চুপ করে আছো যে!!ভালোবাস বল।।(সামনের থেকে চোখ সরিয়ে নূরের দিকে তাকিয়ে)

.
যদি বলি বাসি তাহলে আপনি কি আমাকে নিজের থেকে দূরে ঠেলে দিবেন ইয়াদ।(ছলছল চোখে উনার দিকে তাকিয়ে)
.
উনি আমার দিকে তাকিয়ে বলে উঠল,, আমি সাদিয়াকে ভালোবাসি তা জেনে ও আমাকে ভালোবাসবে!!!
.
আমি জানি আপনি সাদিয়াকে ভালোবাসেন,
হয়তো আজও বাসেন। আপনার ভালোবাসায় আমার কোনো সন্দেহ নেই ইয়াদ।।আমি কখনো বলবো না আপনি সাদিয়াকে ভুলে জান আমাকে ভালোবাসেন। আমি শুধু বলবো, আমাকে কি আপনার একটু পাশে থাকতে দিবেন,,,, দূরে ঠেলে দিবেন না নিজের থেকে। আমি আপনার পাশে থেকেই আপনার মতো উম্মাদ হয়ে নির্সাথ্য ভাবে আপনাকে বাকীটা জীবন ভালোবাসতে যেতে চাই।।। যে ভালোবাসায় থাকবেনা কোনো সার্থ্য শুধু থাকবে সুপ্ত অনুভুতির একঝাক অফুরন্ত ভালোবাসা।।।দিবেন কি ইয়াদ আমাকে সেই ভালোবাসার সুযোগটা।।।

.
যদি বলি, সাদিয়া মারা যাইনি তখন কি তুমি চলে যাবে।।।(উনি আমার দিকে প্রশ্ন বিন্দুক ট্যাগ করে তাকিয়ে আছে)

.
আমি চুপ করে আছি, কি বলবো উনাকে। উনার এই প্রশ্নের উত্তর আমার জানা আছে কিন্তু আমি এই মূহুতে তা বলতে চাচ্ছিনা আমার গলার সুর ভিতরে সব আটকে আসছে।আমি নিজেকে কন্ট্রোল করে বলে উঠলাম মলিন হেসে।যে আমার না তাকে হাজার লাক্ষ চেষ্টা করে বেধে রাখলে সে আমার কখনো হবেনা।(বিল থেকে উঠতে উঠতে) আর যে আমার তাকে যতো দূরে ঠেলে দেই সেই আমারই থাকবে।আর কিছু বলতে মন চাইছে না তাই চলে যেতে নিতেই,,,,

.
“উনি পিছ থেকে আমার হাত খোপ করে ধরলেন”
আমি উনার দিকে তাকিয়ে আছি নিজেকে আর কন্ট্রোল করতে পারছিনা।চোখের অবাধ্য পানি গুলো আর আটকে রাখতে পারলাম না গাল বেয়ে নিচে বেয়ে পরছে”।উনি এক হেঁচকা টানে আমাকে নিজের বুকের সাথে মিশে নিয়ে আমার এক হাত আমার পিঠের পিছে যা উনি ধরে রেখেছেন নিজের হাত মুঠো দ্বারা খুব শক্ত করে আর এক হাত দিয়ে আমার চোখের পানিগুলো মুছে বলে উঠলেন,,,

.
এতোই যেহেতু আমাকে ভালোবাস তাহলে এভাবে চলে যাচ্ছো কেন। নিজের ভালোবাসার উপরে কি তোমার একটু ও ভরসা নেই।এতোই ঠুংকো তোমার ভালোবাসা।

.
আমি ছলছল চোখে উনার দিকে তাকিয়ে আছি কিছু বলার শক্তি নেই। কিন্তু উনি আমার ভালোবাসাকে ঠুংকো বলেছেন। তাই কান্নামিশিতো সুরে বলে উঠলাম আমার ভালোবাসা ঠুংকো হলো কিভাবে ইয়াদ আপনিতো সাদিয়া আপুকে ভালোবাসেন তাইনা।।।

.
ভালোবাসি আর ভালোবাসা এই দুইটা কথায় মাঝে পার্থক্য আছে তা জানো তো??
.
মানে!!
.
সাদিয়া আমার ভালোবাসা ছিলো যাকে আমি উম্মাদ এর মতো ভালোবাসতাম আর তুমি যাকে আমি ভালোবাসি। হলো না পার্থক্য বলো।

.
কিন্ত আপনি,যে বললেন সাদিয়া আপু বেচেঁ আছে তাহলে আপনি তো এখনো তাকেই ভালোবাসেন।
.
ভুল আমি সাদিয়াকে ভালোবাসতাম কিন্তু এখন আর বাসি না।।আমার ভালোবাসা অর প্রতি কোনো ঠুংকো ভালোবাসা ছিলো না। আমি অকে উম্মাদ এর মতো ভালোবাসতাম কিন্তু নিয়তি এক বড় খেল খেলেছে আমার সাথে জানতো ও আমাকে কখনো আদৌ ভালোবাসেনি অর ভালোবাসা ছিলো ঠুংকো কাচ এর মতো। যদি ও আমাকে ভালোই বাসতো তাহলে তিনটে বছর আমার থেকে দূরে পালিয়ে সিলেটে এতো সুখে শান্তিতে সংসার করতে পারতোনা।

.
সিলেটে।।।। আপনি জানলেন কিভাবে।।।

.
তোমার এক্সাম এর পরে আমি একটা অফিসের কাজে সিলেটে গিয়েছিলাম মনে আছে অইখান থেকে আসার সময় আমার সাদিয়ার সাথে দেখা হয়।।কিছুক্ষন চুপ থেকে,,,,,,,,,

.
নূর ,আমি ভালোবেসে একবার ঠকেছি দ্বিতীয় বার ঠকার আর শক্তি নেই আমার মধ্যে । এভার ঠকলে হয়তো আমি মরেই যাবো আর বাচঁবো না।আমি তোমাতে আমি হয়ে হারিয়ে যেতে চাই(কান্নামিশিতো কণ্ঠে)। এই আমি তুমিতে তুমিবিহীন কে চাই যাকে ছাড়া আমার একটি মূহুত ও যাবেনা। আমি তুমিবিহীন অসুখে নিজেকে বিলিন করতে চাই।।।জীবনকে আবার রংধনুর রঙে সাজাতে চাই তোমার মাধ্যমে। অফুরান্ত ভালোবাসতে পারবো কিনা জানিনা কিন্তু নির্সাথ্য ভাবে ভালোবাসে বাচঁতে চাই তোমার সাথে। এই তুমিতে আমি মিশে ইনআয়াত কে চাই,, দিবে কি।।।

.
আমি উনার কথাগুলো শুনে কান্নায় ভেঙে উনাকে শক্ত করে ধরে বললাম।দিবো এই সাইকো কে যে বড্ডো বেশী ভালোবাসি ফেলেছি। এই আপনিহীনা যে আমি থাকতে আর পারবো না ইয়াদ।

.
উঁহু শুধু ভালোবাসলে চলবেনা ম্যাডাম । (বুক থেকে মুখ তুলে হাতের আঙুলের বাজে মুখ উঁচু করে)নাম যেহেতু সাইকো দিয়েছন, এখন এই সাইকোর পাগলামো গুলো ও সহ্য করতে হবে পারবে তো।।

.
আমি ইয়াদ এর বুকে মুখ লুকিয়ে বলে উঠলাম পারবো।।

“এই সাইকো কিন্তু খুব জ্বালাবে, আপনি পারবেন তো তার জ্বালাতোনে পুরতে।।।
.
পারবো কোনো সন্দেহ আছে মশায়।(নাক ফুলিয়ে)
.
উঁহু। বলেই আমাকে কোলে নিয়ে হাটা দিলে সেই কুঁরের ঘরের আর আমি তার বুকে মুখ লুকালাম।
.

.
দুইবছর পর,,,,,,

ভার্সিটি ক্লাসে বসে ক্লাস করছে নূর আজ তার সেকেন্ড ইয়ারে লাস্ট ক্লাস এক মাস পর ফাইলান এক্সাম।মাথায় গুরছে শত শত অনেক টেনশন, আজ অনেক দিন পর ভার্সিটিতে এসেছে সামনে পরীক্ষা কিন্ত সে কিছুতেই চেয়ে ও ক্লাসে মনোযোগী হতে পারছেনা ঘুমে হেলেদুলে বার বার তাসফি আর আয়াত এর উপরে পরে যাচ্ছে।

তাসফিঃ অই মাইয়া, ঢইলা পরস কে,(বিরক্তি সুরে)এটা কি তোর ঘুমানোর জায়গায় যে ঘুমাস বড এর হাড্ডি, বজ্জাত ছেমরি । রাইতে কি করসোস!! চুরি করস!!সারারাত কি বসে বসে মশা মারসোস।।।। যে ক্লাসে ঘুমাস দূর হয় আমার গাল্ডফ্রেন্ড ভুলে টুলে দেখলে আমারে হুদাই ভুল বুঝে প্যারা দিবো।

.

.
“এটা যদি তুই বুঝতি তাইলে আর জিজ্ঞাইতিনা”।নূর

আয়াতঃ হ্যা,তাসফি বুঝলে বুঝ পাতা না বুঝলে তেসপাতা তা না বল,,,, দোস্ত (মুখ চেপে হেসে)

.
কচুঁ
.

“এর মধ্যে ক্লাসের বাহির থেকে কেউ বলে উঠল স্যার আসবো??

.
আরে আপনি আসুন আসুন, আমি তো আপনার জন্যই অপেক্ষা করছিলাম।
.
সবায় ক্লাসের বাহিরে দাঁড়ানো সেই লোকটির দিকে তাকিয়ে আছে। দেখতে অসম্ভব সুর্দশন চোখে কালো সানগ্লাস, গায়ে হোয়াইট ক্লার টি-শার্ট কালো ক্লার প্যান্ট মুখে আঁকাবাকা দাতের সেই মুগ্ধ কড়া হাসি উচ্চতা পাঁচ ফুট দশ ইঞ্চি হবে একদম বড় সড় ক্রাশ খাওয়ার মতো।এভার সে এক গাল হেসে ক্লাসে প্রবেশ করল ইতিমধ্যে সবার মন গেলো ভেঙে কারন তার বুকে বেবি ক্যারি ব্যাগ যার মধ্যে এক ফুটফুটে বাচ্ছা বাবার শাটের বোতাম আদৌ অাদৌ আঙুল দিয়ে ছুঁয়ে দিছে আর খিলখিল করে খেলছে।।।।

.

“তাকে দেখে তাসফি আর আয়াত হাসচ্ছে মুখ চেপে।।।আর নূর বিরক্তি নিয়ে তাকিয়ে আছে।।।
.

“তা স্যার,, আমি কি আমার বাচ্চার মাকে নিয়ে যেতে পারি।।।৩২ বাতি দিয়ে।।।

.

না, নিয়ে গিয়ে কি তুই আমাকে শান্তি দিবি শালা(রাহাত)। তুই বাচ্চা বউ নিয়ে ঘুরঘুর করিস আর আমি এখনো বিয়াটাই করতে পারলাম না।যাহ দূর হয় শয়তান।।।আমি পরে তোরে নোট দিমুনে।।।

.
ইতিমধ্যে নূর ক্লাস থেকে ব্যাগ নিয়ে হনহন করে বেরে গেলো। হঠাৎ পিছ থেকে কেউ এসে নূরের হাত শক্ত করে ধরলো,,

.
নূর রেগে চিল্লিয়ে বলে উঠল,,,, এটা কি ছিলো ইয়াদ।।।। এখন ক্লাসের সবায় আমার ব্যাপারে কি ভাববে।।।।আপনি এমন কেন!!!বলুন তো?
.
কি আর ভাববে, বলবে মেয়েটার হ্যাসবেন্ড মেয়টারে কতো ভালোবাসে।।।আর আমি যেমনই তোমার তো।। ৩২ বাতি দেখিয়ে।।।
.
অসহ্য।।
.
সহ্য।
.
আপনারা বাপ মেয়ে দুইটা এমন কেন বলুন তো।। আমার জীবন পুরো ত্যানা ত্যানা করে দিয়েছেন।বয়সে সাত মাস হলে কি হবে একদমই বাবা মতো মিস্কা শয়তান খালি আমাকে জ্বালায়। রাত ভরে
ঘুমাতে দেয় না ফাজিল।।।আর দিনে বাপ মেয়ে দুইটাই আমার পিছ ছাড়েনা। জীবনটা আসলেই বেদনাময় আমার। তাইতো ইয়ান না এসে ইনআয়াত আসছে বাপ মেয়ে মিলে আমাকে জ্বালাতে।।।।
_________________সমাপ্ত___________________

[ভুলগুলো ক্ষমার চোখে দেখবেন আসা করি।আমার মতো ছোট লিখিকার গল্প শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ে সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ 🥰]

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে