#মেঘের আড়ালে 💞
#পর্ব__১৫
#লেখিকাঃফাতেমা_জোহরা_নাভিলা
৩৩.
চারটে বিয়ারের ক্যান এর সামনে গোল হয়ে বসে আছে দুই জন বালিকা।। ছাদ থেকে বাহুত কষ্টে কাঠখড় পুড়িয়ে এই চারটি ক্যানকে কিডন্যাপ করেছি এক প্রকার সবার চোখ ফাঁকিবাজি দিয়ে সেই চারটে কথা।
ইশারাঃ এইকি তোরা বসে আছিস কেন শুরু কর ওয়াশরুম থেকে বের হতে হতে।।।
নূরঃ তোমার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। এখন টুপুস করে বসে পরতো,,,, মিশন বিয়ার এর টেস্টিং সেস্টিং শুরো করা যাক। আজ টেস্ট করে জানতে হবে এর মধ্যে কাইশার ভাইয়ের কোন ফর্মুলা মুলার জুস লুকানো আছে । যার কারনে আমার অতি প্রিয় ভাইয়েরা তাদের ব্যাচেলার পার্টিতে এন্টি নিতে দিলো না।এই মালিহা যাতো নিচ থেকে দুইটো গ্লাস নিয়ে আয় চ্রটজলদি করে।।
মালিহাঃ দুইটো কেনো!!! আমরা তো তিন জন আপি।।
নূরঃ এতো কথা কস কিল্লাই যাতো এখন,,, আর শুন নিচে বাবুচি মামা ফ্রাই বাজঁছে অইখান থেকে আমাদের জন্য গরম গরম ছয়টা ফ্রাই নিয়ে আসবি আসার সময় মনে করে আহহহহহা।।।(দুই হাত পিছে ভর দিয়ে কাধ হয়ে আধো শুয়া হয়ে) এভাবে তাকিয়ে আছিস কিল্লাই এলিয়েন দের মতো রসগোল্লার চোখ করে, তোরা টিভিসিভিতে মুভি দেখিস না বিয়ার সাথে যে ফ্রাই ট্রাই খাই নায়িকা নায়করা তাই তো বললাম। জীবনে প্রথম যেহেতু একটু টেস্টিং করছি সেই ভালো করেই করি।।।।৩২ বাতি লাইট দেখিয়ে।।
মালিহাঃ আচ্ছা ঠিক আছে।।
নূরঃ আর শুন এসে ডাক দিবি আমাদের, তোর আওয়াজ শুনেই দরজা খুলবো এর আগেনা।।।
মালিহাঃ আচ্ছা আপি।।
.
.
মিনিট পাঁচ না হতে হতেই মালিহা যাওয়া পর পরই দরজায় টোক্কা পরলো। দরজায় টোক্কা হওয়াতে আমার আপির গলা শুখিয়ে কাঠ হয়ে গেলো ইতিমধ্যে একে উপরের দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে চোখ ফিরিয়ে দরজার দিকে জোরসোড় হয়ে তাকিয়ে আছি ভয়ে,মালিহা আসলে তো ডাক দিবে,,,,,,,, তাহলে,,,,,এরা কি কোন ভাবে টের পেয়ে গেলো আমরা যে চারটে বোতল লুকিয়ে এনেছি। (ঢোক দিয়ে নূর বলল)
ইশারাঃ এইইইই নূর গিয়ে দেখনা কে আসছে।।।কাপা কাপা কণ্ঠে বলল।।।।
নূরঃ চোখের সামনে এতো বড় বইন বসে থাকতে আমি কেন বাচ্চা মানুষ যাবো খুলতে,, তুমি গিয়ে দেখে আসো আমি পারমুনা।।।
ইশারাঃ দেখ বোন তোর মতো কি আর আমার
মনে এতো শতো সাহস সঞ্চয় আছে বল।।।। যেখানে সব ভাইদের চোখ ফাঁকি দিয়ে ছাদ থেকে তুই অনায়ার বিয়ার এনেছিস ,,,,সেখানে দরজায় খুলা কোন মুলার ক্ষেত তুই দরজা ঠিকই খুলতে পারবি এটা কোন বড় ব্যাপার স্যাপার না তোর কাছে।।।
নূরঃ পাম দিচ্ছো আমাকে,, (অসহায় সুরে)এভাবে আমাকে ঠেলে দিতে পারলা। হেইইইই আল্লা, এইইইই আমি ঘসিটির বেগমের মতো বইন এর কথায় শুনে নাচতে নাচতে শেষ মেস চুরিটা করছিলাম।।।।।। আল্লা (আড়চোখে তাকিয়ে দেখি আপি খাটে কম্বল টেনে বসে আছে আমার বুঝতে আর বাকি রইলনা আমার ডারফক বইন যে ইহা কালে আর উঠবে না)তুমি এতো অকামের ডেহি কেন।।।(অসহায় ফ্রেশ করে জিভ দিয়ে ঠোট ভিজিয়ে),,,,, এক কাজ করো তুমি ঘুমের নাটক করো আর বিয়ার এর বোতল গুলো কম্বল এর নিচে লুকিয়ে রাখো।।।আমি দেখছি।।।
ইশারাঃ আচ্ছা।।।
৩৪.
“আল্লা এভারের যাএরায় মতো বাঁচিয়ে দিও।।।পিছে দিকে তাকিয়ে আমি খুললাম ” (ঢোক গিলে)
দরজায় খুলে আমি যা দেখলাম বিশ্বাস করেন রাসেল ভাই,,,,, তা দেখে আমার মেজাজ গেলো তিব্বো পরিমান চ্রটে। দরজার ওইপাশে আর কেউনা আমার কাজিন গুনোধর খালাতো বইন মালিহা দাঁড়িয়ে আছে এক হাতে ট্রে যার মধ্যে গ্লাস আর কিছু ফ্রাই নিয়ে আছে,,,আর এক হাতে ফ্রাই যা ও কিছুক্ষন পর পর মুখে পুরচ্ছে আর চোখ বুঝে চিবাচ্ছে।। এমনেই আমি সেই সন্ধায় থেকে ইয়াদ এর ভয়ে রুমে লুকিয়ে আছি এর মধ্যে এই মাইয়া আরো ভয় দিলো এই ছোট মনে। দুই ভয় মিলে মনের মধ্যে যদি ব্লাস্ট ফ্লাস্ট হয়ে যেতো তখন কি হতো আমার ভেবেই মালিহার পিঠে দিলাম এক কিল্লল্ল,,,,,,
মালিহাঃ আহা মারলা কেন!!চিল্লিয়ে।।।।
নূরঃ বদ এর হাড্ডি টোক্কা দিলি কেন।।।।রেগে।।।
মালিহাঃ তাই মারবা আমাকে।।।।
ইশারাঃ তোরে যে অয় এই দোতালা সিঁড়ি থেকে ধাক্কা দেই নাই এই শুকরিয়া কর আল্লার কাছে ।।।খাট থেকে উক্কি দিয়ে বললো।।।
মালিহাঃ আমারে কেউ ভালোবাসে না,,,ন্যাকা কান্না করে।।
নূরঃ চুপ কর বজ্জাত বেটি।।।
ইশারাঃ আচ্ছা এখন ভিতরে আয় কেউ দেখলে সমস্যা হবে।।।
“নিচে ফ্লোরে বসে আল্লার নাম নিয়ে বিয়ার এর ক্যান খুলে একে উপরে মুখের দিকে তাকিয়ে কয়েকটা সেল্ফি তুলে নিলাম।।হায়য়য়য়য় সেই ফিলিংস,,,,,,,,,,,
নূরঃ এভার খাওয়া যাক,,,, বলে মুখে এক সিপ দিতেই নিমিষে করলার মতো মুখ তিতো হয়ে গেলো।।।।ইয়াজ্ঞজ্ঞজ্ঞজ্ঞ ছিয়য়য়য়য় এসব ছাইপাঁশ খাই কেমনে মানুষ,,,,,,,,, নেশা হওয়ার তো দূরের কথা মুখই চিরতা হয়ে গেলো আমার।।। ইয়াজ্ঞজ্ঞ থু থু।।
ইশারাঃ শুন নূর প্রথম সিপে একটু তিতো লাগে পরে আর লাগেনা খেয়ে দেখ আমার তো এর টেস্ট সেই লাগছে।।।
নূরঃ বলছো??? খাবো।।
মালিহাঃ হ্যা,আপি খেয়ে দেখো না অতো ও খারাপ না।
নূরঃ আচ্ছা, বলেই নিজের হাতের ক্যান দিকে তাকিয়ে চোখ নাক কুঁচকে দুই সিপে শেষ করে ফেললাম,, (এক নিশ্বাসে) শেষ করার সাথে সাথেই হৈচঁকি উঠে গেলো।।। রুমে তো পানিও নেই যে পানি খেয়ে এই হৈচকি থেকে রেহাই পাবো কুল কিনারা না পেয়ে পাশে যে আর একটা এক্সট্রা বিয়ার ছিলো তা খেয়ে ফেললাম।।। হৈচকি তো বন্ধ হলো কিন্তু এখন লাগছে অতি গরম কান দিয়ে ট্রেন এর ধোয়া বের হচ্ছে আমার। নিচ থেকে উঠে হুডি খুলে ফেলে দিলাম ফ্লোরে তার পর ও গরম কমছেনা। মাথা ও যেমন চোরকির মতো ঘুরছে।। সব কিছু যেমন ঘোলা ঘোলা লাগছে।।।।অৎতেরিকি এই কি হলো আমার এক সাথে এতো কিছু কেন লাগছে।।।।আল্লাহ,,,, এই মালু ফেন এর সুইচটা দেয় তো।।।।
.
এ এএএএইইইই ক ক কই কি করচ্চছিস কি তোরা।।।।
.
এভাবে কেপে কেপে কথা বলছো কেন? তুমি কি শেষমেস মিরকি টিরকিতে আক্রান্ত হলা আপি।(খাটে আধো শুয়া হয়ে)
.
থাপপ্পড়া চি চিনিসসস(হাত নাড়িয়ে) ফাজিল মাইয়া।।।ফে য়ন কেন ছারচ্ছিস !!(নিচ থেকে উঠতে উঠতে )
.
তো।
.
তো তোর মুন্ডু বদ এর হাড্ডি, (ফেন অফ করে)আজ এমনেই খুব ঠ্যান্ডা পরছে বাহিরে তার উপরে সন্ধায় থেকে একটু পর পর ক্ষনে ক্ষনে বৃষ্টি হচ্ছে তার মধ্যে কোন সুখে এই খাট্রার গাট্রার উড়ো চান্ডিকা ছারচ্ছিস!!!! এমনে তেই তোর ঠ্যান্ডার সমস্যা আছে জানিস না।।রেগে।।।হেলেদুলে।।।।
.
বাহিরে ঠ্যান্ডা, কাল বৈশাখী আদি তুফান বৃষ্টি থাকলে কি হবে আপি!!! মনটা আজ আমার বড্ডো অশান্ত এই অশান্তকে শান্ত করার প্রচেষ্টাই মূলত ফেন অন করেছি। যদি এতে একটু শান্ত হয়।
চলবে,,,,
[ভুলগুলো ক্ষমার চোখে দেখবেন আসা করি।]