#মেঘের আড়ালে 💞
#পর্ব__১১
#লেখিকাঃফাতেমা জোহরা নাভিলা
২৩.
রান্নাঘরে তাক এর উপরে বসে চোখের মধ্যে গোল বড় ফ্রেম এর কালো সানগ্লাস পরে চোখের পানি নাকের পানি এক করে বেটা পেয়াজকে কুচিকুচি করে কেটে উদ্ধার করছে নূর। সবে মাএরো আট থেকে নয়টা কেটেই তার অব্যস্থা করুন নাজেহাল।ইশারা ডিম এর কোরমা করছে আর মামনি ভুনাখিচুড়ি রান্না করছে আপাততো । আর নূরকে দিয়েছিলো মাংসের জন্য পেয়াজ কাটতে।।।। বাকিটা ইতিহাস।।।
.
নূরঃ মামনি দেখতো মাংসের জন্য আরো পেয়াজ কাটতে লাগবে কিনা!!নাক টেনে টেনে জিজ্ঞাস করলো।।।।
.
” নূর এর এমন টানটান আওয়াজে রান্না থেকে চোখ সরিয়ে দুইজন থ হয়ে তাকিয়ে আছে।।।।। মিনিট পাঁচ এর মধ্যে এই কি অব্যস্থা করে ফেলেছে চেহারার।।। ফর্সা চেহারাতে নাক এর ঢকাটা লাল হয়ে আছে,, আর পুরো চেহারা চোখের পানিতে ভিজে আছে। হাতের উল্টো পিঠ দিয়ে সানগ্লাস ঠেলছে তার সাথে তাল মিলিয়ে নাক টানছে।।।।নূরের এই করুন অব্যস্থা দেখে দুইজন একে উপরের দিকে তাকিয়ে ফিক করে হেসে দিলো।।।।।।। এই কি অব্যস্থা করেছিস মামনি তোর।।।।।।
.
“অলে আমার বাবুটা তোকে এই অব্যস্থাই যে কতো কিউট লাগছে রে বনু।।।।।আমার ভাসুর মশায় যদি তোরে এখন দেখতো তাহলে নির্ঘাত হার্টফেইল করতো তার সাথে সাথে এলাকাজুড়ে মাইকিং এ রটে যেতো ব্যাপারটা।। বউ এর করুন চেহারা দেখে জামাই ফেইল হায় হায় কি সাংঘাতিক ব্যাপার স্যাপার ।গাল টেনে।।। রোল পরা হাসি দিয়ে।।
.
নূরঃ মজা নিচ্ছো তোমরা আমার।।।। এতো হাসার কি হলো।।। অভিমান এর সুরে।।।শুনো,,,পেয়াজটা ভালো দোকান থেকে কিনা ছিলো না তাই এমন হয়েছে।।।তার ইয়াদ কেনো হার্টফেইল করবে আমার করুন অব্যস্থা দেখে!! করবে তো আমার সেইইই আশিক ভাই ।।।।৩২ বাতি দেখিয়ে।।।
.
” আশিক কে”??? গম্ভীর হয়ে।।।
.
আপনার অভ্যাস টা আর পাল্টাতে পারলাম না মশায়,,,,,,,, তাক থেকে নামতে নামতে।।।কেউর কথার মাঝ বরাবর যে খরগোশ এর মতো কান খাড়া করে কথা শুনতে নেই এভাবে আড়ালে দাঁড়িয়ে। আপনি জানেন না ম্যানাস এর নানা।।।নাক ফুলিয়ে।।
.
আমাকে দেখে কি তোমার অকর্মা মনে হয়।।।।(চোখ ছোট ছোট করে) যে আমি সারাদিন আমার কাজকর্ম রেখে তোমার পিছু পিছু ঘুরবো কখন তুমি মুখ থেকে খই ফুটবা।।।।ধমক এর শুরে।। পানি খেতে এসেছিলাম বেয়াদব।।।।।
ইফরানঃ ভাই তুই দেখি আমার ভাবিকার মতো কথা বলা শিখে গেছিস এক্কেবারে তাহার স্টাইলে ।।।। রান্নাঘরে আসতে আসতে।।।
.
ইশারাঃ এই ভাবিকা টা আবার কে??হাতে খুন্তি নিয়ে সন্দেহ চাহনিতে।।। বল ইফরান চুপ কেন।।।
ইফরানঃ আরে এভাবে তাকিয়ে আছো কেন ইশু।।
আমার ভাবিকা আই মিন তোমার ছোট আদরের বোন আমার এক মাএ শালিকা, আমার এক মাএ বড় ভাইয়ের একমাএ বউ,সাথে তোমার বড় ভাবি। সেই সূএে হলো না ভাবিকা। ভাবি +শালিকার (কা)= ভাবিকা।।। সম্পক কে বণ্টন করে মিলিয়ে নিলাম।।।হুদাই আমারে খালি ভুল ভাবো তোমরা।।।। আর ভাই তুমি আশিককে ভুলে গেলা?? আরে আমার স্কুল ফ্রেন্ড আশিক।।।
.
ইয়াদঃ তোর স্কুল ফ্রেন্ড এর সাথে নূর এর কি সম্পর্ক!!আড়চোখে নূরের দিকে রাগিতো ভাবে তাকিয়ে।।।
.
নূরঃ সম্পক হইতে কতো দূর,,,,,,,, আর হইতে বা দিলেন কই আপনি মশায়।।আফসোস এর শুরে।।ইফরান আর ইশারার দিকে চোখ টিপ দিয়ে।।।
.
ইয়াদঃ মানে!!
.
ইশারাঃ আশিক ভাই নূরকে খুব পছন্দ করতো।।।
.
ইফরানঃ শুধু পছন্দ করতো এই কথা বললেই ভুল হবে পুরো পাগল ছিলো,,,বাকা হাসি দিয়ে।।।
.
নূরঃ জানেন আমার কতো ইচ্ছে ছিলো, একটা প্রেম স্রেম করবো এটাও আবার ভার্সিটি সিনিয়র ভাই এর সাথে হায়য়য় সেই ফিলিংস। (রান্নাঘর থেকে ড্রয়িং আসতে আসতে)তার পর আশিক ভাইকে দেখে আর তার প্রেম প্রেম ভাব দেখে চিন্তা ভাবনা বদলে ফেললাম, এতো কষ্ট করে ভার্সিটিতে গিয়ে প্রেম করবো কেন হাতের সামনে আশিক ভাই এর মতো অতি হ্যান্ডসাম মুন্ডা থাকতে।আপুর বিয়ের পর ভেবেছিলাম আশিক ভাইকে এভার হ্যা বলে জীবনটা পুরা আমিষ ময় করে তুলবো তা আর হইলো কই।।।।।। আপনার মতো নিরামিষ এর পাল্লায় পরে নিরামিষ হয়ে গেলাম।।।। ( আহাত এর শুরে)তার পর ও এখনো একটা আসা আছে এই মনে।।। জীবন যেহেতু আছে আসা ঘর তো থাকবেই মনে।।। আর তা হলো ভার্সিটি তে গিয়ে সিন, , ,,
.
ইয়াদঃ চলো।।। হাতের বাহু টেনে।।।
.
নূরঃএভাবে কথায় কথায় টানাটানি করেন কেন।।।হাত ভেঙে ফেলবেন তো।।। ছাড়েন তখন আমার কি হবে??
.
ইয়াদঃ তুমি এতো পাল্লাই পাল্লাই করো কেন তাইতো টানতে হয় (শয়তানি হাসি দিয়ে) চল পড়তে বসবা বহুত হইসে তোমার উড়াধুরা এক সাপ্তাহ পর যে পরীহ্মা সেই খবর কি আসে!!।।।আর হাত ভাঙলে সমস্যা নাই।। বাসার সাথেই কবরস্থান আছে দুইটা। অইখান থেকে একটা হাত এনে জোড়া লাগিয়ে দিবো কেমন।
নূরঃ কথা বলতে ঠিকই পারে আর মাথা শত শোয়াসের কুটনা বুদ্ধি ঠিকই দৌড়াই।।।।।। খালি প্রেমটাই চলে না হায়য়য়য়। বেটা ইবলিশ এর নানার টেম্পুতে মনে হয় পেট্টল শেষ আর নাহলে চাক্কা মনে হয় পাঞ্চার হইসে নির্ঘাত ,,,, সমস্যা নাই আমি আছি তো।।।মনে মনে।।।
২৪.
রাত এগারোটায় সবায় রাতের খাবার খেয়ে নিচে গল্প গুজব করছে।।। আর নূর মাথা ব্যাথার বাহানা দিয়ে ইয়াদ এর চোখ ফাঁকি দিয়ে রুমে এসেছে।।।।
মুখে তার এক রহস্যময় হাসি। রুমে এসেই ফট করে দরজার ছিটকিনি লাগিয়ে এক দৌড়ে ওয়াশরুমে চলে গেলো, আসার সময় হাতে করে এক মগ পানি নিয়ে বের হলো বেডের এক পাশে আর কিছুটা সোফার মধ্যে মগে পানি হিসাববিজ্ঞানের বণ্টন এর সূএ প্রয়োগ করে ঢেলে দিলো। এভার কোথায় যাবেন বাবু মশায়।।।।। লাইট অফ করে শয়তানি হাসি দিয়ে নূর খাটের এক সাইডে গিয়ে চেপে শুয়ে পরলো।।।।।
।
।
মিনিট তিশ এর পর ইয়াদ রুমে আসলো এসে দেখে রুম পুরো অন্ধকার। রাস্তার ল্যাম্পপোস্ট এর মৃদু আলো বারান্দা থাই বেদ করে রুমে আসায় সেই আলোতে দেখা যাচ্ছে নূর বাচ্চাদের মতো গুটি মেরে কম্বল মুড়ি দিয়ে খাটে একদম কিনারে শুয়ে আছে।।ইয়াদ কিছুক্ষণ অর দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে লাইট না অন করে ওয়াশরুমে চলে গেলো চেঞ্জ করতে।।।।ওয়াশরুম থেকে এসে বাধল বিপত্তি খাটে শুতে গিয়ে দেখে মাঝ বরাবর পানি দেওয়া।।। নূর এর দিকে তাকিয়ে মেজাজ গেলো চটে সব সময় বলে অকে সাবধানে কাজ করতে নিশ্চয় তারাতারি করে পানি খেতে গিয়ে ফেলে দিসে রিডিকুলাস।।।। এখন তাকে সোফায় শুতে হবে,,,,, সোফায় গিয়েও বাধল সেইম বিপত্তি, পুরো সোফায় পানিতে ভিজা এভার ইয়াদ এর মেজাজ গেলো সপ্তম আকাশ চ্রটে।।।। নূরকে তুলে ঠ্যাঠিয়ে অত্যন্ত একটা কষে চড় দিতে পারলে রাগটা কমতো।।। বেডে গিয়ে মাঝ বরাবর থেকে কোলবালিশ সরিয়ে ভিজা যায়গা রেখে ইয়াদ ঘুটি মেরে নূর থেকে কিছু দূরত্ব ব্জায় রেখে শুয়ে পরলো।। মিনিট বিশ এর পর ইয়াদের সবে মাএরো চোখে ঘুমে আসতে নিলো এর মাঝেই ঘটলো আর এক বিপত্তি, ইয়াদ কাচা ঘুম এর মধ্যে অনুভব করছে তার শ্বাস নিতে খুব কষ্ট হচ্ছে।।। বুকটা কেমন ভারি ভারি হয়ে আছে লড়ানো খুব দ্বায় মনে হচ্ছে।ঘুমো ঘুমো চোখে তাকিয়ে দেখে নূর তাকে গলা পেঁচিয়ে কোলবালিশ বানিয়ে বুকের সাথে একদম মিশিয়ে দিব্বি ভাবে শুয়ে। এভাবে কি ঘুমানে সম্ভব,,,,,, ইয়াদ অনেক চেষ্টা করে ও নূরকে এক ইঞ্চি ও সরাতে পারলো না। না পেরে ক্লান্ত হয়ে শেষমেস নূরকে অইভাবে কম্বল মুড়িয়ে জড়িয়ে ধরে ঘুমের রাজ্য পারি দিলো।
“নূর ইয়াদ বুকে মাথা রেখেই চোখ বুজে এক প্রশান্তি হাসি দিয়ে বিড়বিড় করে বলে উঠল,,,, এটা কে বলে মাঝ বরাবর থেকে পাহাড় সরানো নিঞ্জাটেক বাবু মশায়।।।।
চলবে,,,,,,
[ভুল গুলো ক্ষমার চোখে দেখবেন আসা করি]