Monday, October 6, 2025







“মেঘনাদ”পর্ব ৬-৭

“মেঘনাদ”পর্ব ৬

জিসান আজকাল বাইকের ডিমান্ড করায় সাথে সাথে একটা পেয়ে গেছে। সে আমার জন্যও একটা চয়েজ করে এনেছে। আমার কাছে বাইক চালানোয় ইন্টারেস্ট নেই। কোথাও যেতে ইচ্ছে হয় না। তবে বাইক পাওয়ার পর শুরুতেই আলিয়ার কথা মনে পড়ল। কলেজ ব্যতীত ওর বাসায়ই আমার যাওয়া হয়।
দুটো দিন শেষ হতে চলেছে, আমি আলিয়াকে দেখতে যাইনি। ও এখন কেমন ফিল করছে? ওর সাথে যা হচ্ছে, তা কোনো মেয়েই সহ্য করতে পারবে না। অবশ্য একদিক থেকে আমি নিশ্চিন্ত আছি। কারণ এখন তার বন্ধুত্ব সাবিলার সাথে হয়েছে। সম্ভবত এখন আমার আর প্রয়োজন নেই। তাইতো একটা ফোনও দেয়নি। ওহ্, সে তো মোবাইল ইউজ করে না। আমি একটা বোকাই। আমি রীতিমতো রাতের দিকে বাসা থেকে বেরুলাম। আশ্চর্য হয়ে নিজেকে বললাম, আগে আমি মানুষের দৃষ্টিভঙ্গির “বোরিং” জীবনটাকেই ইন্টারেস্টিং মনে করতাম। কিন্তু যখন থেকে আমার জীবনে একটা বন্ধু এসেছে, আমি ওই জীবনটাকে বোরিং মনে করতে শুরু করেছি। জানতে শুরু করেছি, কারও অর্থাৎ কোনো মানুষের বন্ধুত্ব এরচেয়েও বেশি ইন্টারেস্টিং। আলিয়ার সাথে দেখা না হলে মনে হয়, সময়গুলো যাচ্ছেই না। আগেও এরকম জীবনই কাটাচ্ছিলাম। মা আমার এই জীবন দেখে হাসতেন।
তার রুমের বেলকনিতে গিয়ে দেখলাম, সে এখানে নেই। একসময় তাকে বাসায় ঢুকতে দেখলাম। এই সময়ে? সম্ভবত সাবিলার সাথে দেখা করতে গিয়েছিল। দরজা তার বাবাই খুললেন। তিনি জিজ্ঞেস করছেন, এতটা সময় সে কোথায় ছিল। সে খুব উগ্রভাবে জবাব দিলো, ‘বাবা, আমাকে আমার মতো করে থাকতে দিন। আমি যেখানেই থাকি না কেন, আপনার কী!’
তিনি চুপ হয়ে গেলেন। সে রুমে খাবার খেয়ে এলো। তাকে খুব ক্লান্ত দেখাচ্ছে। বিছানায় শোয়ার সাথে সাথেই সে ঘুমিয়ে পড়ল। আমি একটা বীভৎস দুর্গন্ধ পেলাম। বেলকনির দরজা বন্ধ হওয়ার সত্ত্বেও তার গন্ধটা এখানে কেন আসছে তাই বুঝছি না। আমি অগত্যা ওখান থেকে নেমে বাসায় ফিরে এলাম।
আলিয়া কলেজে যাওয়া ছেড়ে দিয়েছে। জানি না, এসব কতদিন চলবে। কতদিন সে ওই গন্ধের কারণে নিজেকে বাসায় বন্দি করে রাখবে। তার প্রায়ই কয়েকটা রুটিন হয়ে গেছে। ঘুম, খাওয়া-দাওয়া, সাবিলাদের বাসায় গিয়ে আড্ডা দেওয়া, আবিরদের ইনভেস্টিগেশন দেখা। আমি মাঝে মাঝে তার সাথে দেখা করতে যাই। এখনও ওই বিকর্ষণটা আমি অনুভব করি। কেন যেন লাগছে, একই ব্যাপারটা ওর ক্ষেত্রেও ঘটছে। দ্বিধার কারণেই কিছু জিজ্ঞেস করি না। তার মধ্যে অনেক পরিবর্তন এসেছে। সে অনেক রাগী। ভয়ংকর ধরনের। তবে তার বাবার প্রতি রাগ কমেছে। আসিয়াকে মাঝে মাঝে দেখতে পাওয়ার কথাও সে আমায় জানিয়েছে। আর তার কেসটা.. কোনোভাবেই গতি হচ্ছে না। তারা একটা সপ্তাহ ওই বার্থডে পার্টিতে উপস্থিত লোকদের স্বভাবের সম্বন্ধে তদন্ত করছে। আরিয়ান স্যারের কাছে ইতোমধ্যে আরেকটা কেস এসে পড়েছে। কেবল আবির স্যারই প্রাইভেটলি ইনভেস্টিগেশন করে যাবেন।
পরবর্তী সপ্তাহে তার বেলকনিতে যাওয়া দুঃসাধ্যকর হয়ে পড়ল। কারণ সে নিজেই ওই বেলকনিতে থাকে। আমি যদি অদৃশ্য হয়েও যাই, ধরা পড়ব। কারণ আমার সুগন্ধটাকে সে চেনে; এটা তো মেটে না। আমি নিচে দাঁড়িয়েই দেখি, আলিয়া ওই দুর্গন্ধ নিয়ে দাঁড়িয়ে মুখে বিড়বিড় করছে। দিনদিন সে উদ্ভট হচ্ছে। তার কি কোনো অসুস্থতা আছে? ইদানীং দেখেছি, রাতের বেলায় সে ঘুমাতে পারে না। কি কষ্টেই না ঘুমায়! সে যেন দুঃস্বপ্ন দেখছে আর স্বপ্নগুলো অনেক ভয়ঙ্কর। সে ওই স্বপ্ন দেখে ঘেমে যায়, কেঁপে ওঠে। এই মুহূর্তে অন্য কেউ হলে, আমি ওই দুঃস্বপ্নগুলোও পড়তে পারতাম। কিন্তু ও আলিয়া। সবসময় আমি কনফিউশনে থাকার জন্যই হয়তো তার মস্তিষ্ক পড়ার যোগ্যতা আমি পাইনি। সে আজকাল জিনিস ভাঙচুর করতে শুরু করেছে। আমি বেলকনিতে দাঁড়িয়েই দেখি, সে কিছু একটা দেখে তাড়াতাড়ি চোখ সরায়। রাগ উঠলে সে ওই জায়গায় লক্ষ্য করে জিনিস ছোঁড়ে। কিন্তু সে কি দেখছে, তা আমি দেখতে পারছি না। নাকি সেই কিছু মনে মনে ইমাজিন করে? তবে বলা যায়, তার ভয়ংকর ধরনের অসুখ হয়েছে। তার মনের কারণেই সে এমনটা করছে। সে দুঃস্বপ্নের কারণেই ভয়ে রাতে ঘুমায় না। যেটুকু বুঝছি, সে অনেক লড়াই করছে। অনেক কষ্ট পাচ্ছে সে। আমি কিছু জিজ্ঞেস করলে সে তেমন কিছু বলতে পারে না। কারণ সে নিজেই আমার থেকে দূরত্ব বজায় রাখে। হয়তো আমাকে ভয় পাচ্ছে। কিন্তু এটা যেন ভয়ও না। সে অন্যকিছুকে ভয় করছে। নিজেকে?
আমি একবার জিজ্ঞেস করলাম, ‘তুমি কি ঘুমাও না? তোমার চোখের নিচে ডার্ক সার্কেল হয়েছে। তুমি কি আবারও দুঃস্বপ্ন দেখছ?’
সে কেবল মাথা নাড়ে, যেন কথা বলারও শক্তি নেই। তার কপালটা কুঞ্চিত দেখায়, যেন মাথাব্যথা করছে। একটা ব্যাপার নির্দিষ্ট, মজিদ ভাই খুব হিসাব করে চলছে। আঙ্কেল দূরে দূরেই থাকছেন।
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি মাসে জিতে নিন নগদ টাকা এবং বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।

গল্পপোকার এবারের আয়োজন
ধারাবাহিক গল্প প্রতিযোগিতা

◆লেখক ৬ জন পাবে ৫০০ টাকা করে মোট ৩০০০ টাকা
◆পাঠক ২ জন পাবে ৫০০ টাকা করে ১০০০ টাকা।

আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/?ref=share

আমার কাছে কলেজ আগে এতো বোরিং লাগেনি, যতটা না আলিয়ার অনুপস্থিতিতে এখন বোধ করছি। অথচ তার সাথে কলেজে তেমন একটা ক্লাস করা হয়নি। আসিয়ার মৃত্যু, তার নিজেরও অসুস্থতা..
কলেজ থেকে বাসায় এলে দুটো সপ্তাহ পর প্রথম আলিয়ার ফোন পেলাম, যদিও আসিয়ার মোবাইল থেকে; অকস্মাৎ। সে বিস্ময়কর একটা খবর শোনাল। আসিয়ার রুমে ড্রেসিং টেবিলের পেছনে একটা গোপন পথ পাওয়া গেছে। আমি উদ্বিগ্নতা নিয়ে তড়িঘড়ি করে ওদের বাসায় গেলাম। আঙ্কেল বাসায় আছেন। কিন্তু হয়তো রুমের ভেতর। এমন সময় খেয়াল করলাম, আমার সুগন্ধটা হয়তো আগে থেকেই এখানে আছে। অন্য কেউ এখানে এসেছে নাকি? বাইরে তো বাইক দেখলাম। সম্ভবত.. আবির স্যার এসেছে। কিন্তু এটা উপলব্ধি করার আগেই আমি আসিয়ার রুমে পৌঁছে গেলাম। আবির স্যারই এসেছে। আমি ঢোকার সময় তিনি ভ্রূ কিছুটা কুঞ্চিত করে তাকালেন। ভাবছেন, “এই হয়তো সে, যে কিনা পালিয়ে এসেছিল।” শিট!
আমি কিছুটা ইতস্তত করলাম। আলিয়ার পাশে গেলে ফিসফিসিয়ে বললাম, ‘তোমায় বলেছি না, আবির স্যারদের পাশে থাকতে চাই না? দেখ, তিনি আমার রূপে আমায় সন্দেহ করছেন।’ হ্যাঁ, নইলে তিনি কিন্তু মাইন্ড রিডার না।
ভাগ্যিস, আলিয়া আমাদের বিভ্রান্ত করল। সে দুইজনকেই আয়নাটির কথা বলল, ‘আয়নাটা আমার দ্বারা ভেঙে গিয়েছিল। এরপরই এই জায়গাটি দেখলাম। অথচ এটার কথা আমরা কেউই জানি না।’
আবির ড্রেসিং টেবিলটা সরাল। আয়নার পেছনের দিকটা সত্যই। পথটা আরও বড়। একটা দরজা লাগানো যাবে। আবির স্যারকে সে জানাল, ‘আসিয়ার জন্মদিনে সে অসুস্থ থাকার সত্ত্বেও শপিং করার জেদ করেছিল। কিন্তু বাবা তাকে যেতে দিচ্ছিল না। সে আমায় বাইরে অপেক্ষা করতে বলে রুমের দরজা বন্ধ করে দেয়। বাইরে গিয়ে আমি অবাক হয়ে দেখি, সে আমার আগেই নিচে পৌঁছে গেছে। অথচ বাবা সোফায় ছিলেন। তাকে তিনি দেখেননি। আসিয়া বলল, এটা একটা সিক্রেট। আমায় তা পরে বলতে চেয়েছিল। কিন্তু…’
আবির স্যার বকা দিলেন, ‘শিট! এটাই মেইন ক্লু। তুমি আমাদের আগে জানাওনি কেন? ক্লু’টা আমাদের নাগালেই ছিল। আমরা কিনা দুই সপ্তাহ এমনিই ওয়াস্ট করেছি।’
বলতে বলতেই তিনি ওই ছোট সাইজের পথ দিয়ে ঢুকে পড়লেন। ক্রমে আমরাও তাকে অনুসরণ করলাম। আবির স্যার বলল, ‘এই কাঁচগুলো কিসের?’
‘হয়তো আয়না ভেঙেছি বিধায়।’
তাকে চিন্তিত দেখাল, ‘না, আয়নার টুকরো তো এদিকে পড়েনি। ওইদিকেই টুকরোগুলো পড়েছে। আয়না ভাঙার পর পেছনের বোর্ডটিও পড়ে যাওয়ায় তুমি এই জায়গাটি দেখতে পাও। এগুলো অন্যকিছুর কাঁচ।’
‘আবির, আমরা এগুলো পরে না হয় দেখব। এখন সামনের দিকটা দেখি। আমি খুব কিউরিয়াস।’
‘ওহ্, তাইতো। আমিও।’
বলা বাহুল্য, আমিও খুব উদ্বিগ্ন। আবির সামনে। আলিয়া তার পেছনে এবং আমি তারই পেছনে হাঁটছি। যথাসম্ভব আবিরের থেকে দূরত্ব বজায় রাখছি। জায়গাটা অসমতল হওয়ায় আমি আলিয়ার আশেপাশে হাতদুটো রক্ষাকবচের ন্যায় ধরে রইলাম। সে যদি পড়ে যায় বা ব্যথা পায়! আমি তো ব্যথা পাই না।
চারিদিকে ঘন আঁধার। সুড়ঙ্গটা একজনের সাইজের। আবির স্যার মোবাইলের ফ্ল্যাশলাইট জ্বালাল। আমরা তাকে অনুসরণ করে চলতে লাগলাম। জায়গাটা নিচু হলেও হাঁটার যোগ্য। তবে মাথা এখন খানিকটা নিচু করে হাঁটতে হচ্ছে। আবির একটা জিনিস দেখালে আলিয়ার আঁতকে উঠল, ‘দেখ, রক্ত।’
সে বুঝেছে, এগুলো হয়তো আসিয়ারই। তার হয়তো কান্না পাচ্ছে। তার ঘাড়ে তার হাত ঘঁষে বললাম, ‘কাম ডাউন। সব ঠিক হয়ে যাবে।’
চিকন সিঁড়ি করা আছে, আমরা চলতে লাগলাম। আবির স্যার বলল, ‘এই জায়গাটার কথা আসগর সাহেব আমাদের জানাননি কেন?’
‘হয়তো বাবা নিজেই জানেন না। বাড়িটি তিনি বিদেশে থেকে বাঁধিয়েছিলেন। হয়তো..’
‘আসিয়া আর তার মা’ই জানত।’
অর্ধেকের পর আমাদের কুঁজো হতে হলো। আলিয়া আমার হাত ধরে রইল। আমিও তাকে ছাড়লাম না, যদিও বিকর্ষণ কাজ করছে। সে হোঁচট খেতে গেলে আমি তাকে বারবারই তাগাদা দিলাম, ‘আলিয়া, বি কেয়ারফুল।’
এই সময় একটা তেলাপোকা দেখে ‘ইয়াক’ বলে আমি লাফিয়ে উঠলাম। টাল সামলাতে না পেরে ওর ঘাড়ে গিয়ে পড়ি। আলিয়া তৎক্ষণাৎ আমাকে ধরে ফেলল। আমি এইসব উদ্ভট পোকামাকড় একদমই পছন্দ করি না। সে হাসল। সম্ভবত সে আমাকে হালকা টের পাওয়ায়। আমিও হাসলাম।
আবির স্যার একইভাবে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল। মাত্র কয়েক মিনিটেই আমরা পথটির শেষ মুখে পৌঁছলাম। পথটার মুখ কিছু একটা দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। আর পথটা এতই ছোট যে, হামাগুড়িই দিতে হবে। আবির স্যার ঢাকনাটি ঠেলে বলল, ‘এই ঢাকনাটি নড়ছে। কিন্তু সরাতে তো পারছি না। অপর পাশ থেকে সাহায্য লাগবে। আমরা এক্সেক্টলি কোথায় পৌঁছিয়েছি তাই তো বুঝছি না।’
‘আমি দেখি তো।’ আলিয়া এগিয়ে গিয়ে পিচবোর্ডটা ছুঁয়ে দেখল। সেও নড়াচ্ছে। কয়েক মুহূর্ত চিন্তা করে সে বলল, ‘আবির, আমরা গ্যারেজে এসেছি।’
‘হোয়াট?’ আমি আর আবির স্যার একত্রে বিস্ময়ে বলে উঠলাম।
‘হ্যাঁ, আমি গ্যারেজে গ্লাস করা লুবনা মায়ের পরিত্যক্ত একটি স্ক্র‍্যাচ দেখেছিলাম। আই থিংক, ওটাই।’
‘আমাদের একজনের বাইরে গিয়ে ওই গ্লাসটা নেওয়া উচিত।’
আবির স্যারের কথায় সাথে সাথে আমি বললাম, ‘আমি যাচ্ছি।’
.
“মেঘনাদ”
পর্ব ৭…

আমি মোবাইলের ফ্ল্যাশলাইট জ্বালিয়ে আঁধারে মিলিয়ে গেলাম। যেতে সময় লাগেনি। আমি তড়িঘড়ি করে নিচে নেমে গ্যারেজে এলাম। একটা একটা পেইন্টিং সত্যিই লাগানো আছে। আমি ওটা সারালাম। আমি দুটো মানুষ দেখতে পেলাম। আলিয়া ঠিকই আন্দাজ করেছে।
তারা দু’জন গ্যারেজে নামল। আবির স্যার বলল, ‘এই একটা গোপন পথই কেসটার সবধরনের ক্লু লুকিয়ে রেখেছিল। আরেকটু আগে জানলে.. বাই দ্যা ওয়ে, আলিয়া, একটু মজিদকে ডেকে আনতে পারবে?’
সে মজিদ ভাইকে ডেকে আনল। সে এলে আবির বলল, ‘গ্যারেজ সাধারণত কতক্ষণ খোলা থাকে?’
‘এটার চাবি আমার আছে। যখনই কারো প্রয়োজন হয়, তখন খুলে দিই।’
‘তাহলে তুমি পার্টির রাতে অস্বাভাবিক কিছু দেখনি কেন?’
‘ওহ্, আমি তো সেদিন খুলে রেখেছিলাম। গাড়ির আসা-যাওয়া চলতে থাকবে ভেবে সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত খুলে রেখেছি।’
‘ওহহো, তুমি কি শিওর এখানে কেবল আসগর সাহেব আর তার বোনের গাড়িই ছিল?’
‘হ্যাঁ। গ্যারেজটা শুধু ওই দুটো গাড়িই রাখার মতো। বাকি গাড়ি বাইরে উঠোনে পার্ক করানো ছিল।’
‘আর… আসগর সাহেবের বোনের গাড়িটা কোন সাইডে ছিল?’
মজিদ ভাই কিছুই মনে করতে পারল না।
‘আমার লাগছে, সেই রাতে আসিয়া রুমে এসে কান্না করছিল। ওই রুমে কেউ একজন আগে থেকেই লুকিয়ে ছিল। এমন সময় সে তার খুন করল। এরপর আসিয়ার লাশকে বস্তায় ঢুকিয়ে টেনে-হিঁচড়ে এই পথের শেষের অংশে আনা হয়। যেহেতু ফ্লোরে রক্ত দেখেছি, সেহেতু বস্তা টেনেই আনা হয়েছে। পথটাও একই সময়ে কেবল একজনের হাঁটার যোগ্য হওয়ায় আমার লাগছে, খুন একজনই করে তাকে এখানে এনেছে। কিন্তু এখানেই শেষ নয়। এখানে গ্যারেজে হয়তো একজন ছিল, যে কিনা গ্লাসটা সরিয়ে দেওয়ার অপেক্ষা করছিল। এরপর দুই খুনি কিংবা ততোধিক খুনি লাশকে গাড়িতে বসিয়ে জঙ্গলের দিকে নিয়ে যায়।’
‘কিন্তু..’ আলিয়া বলল, ‘আসিয়ার রুমের দরজা খোলা পাওয়া যায়, বাবার কথায় জেনেছিলাম। যদি এখানেই শেষ হয়, তবে ওর লক করে রাখা রুমের দরজা বাহির থেকে কীভাবে… আর ওই ড্রেসিং টেবিলটা পথটার ভেতর থেকে সরানো যায় না। ওটা ভারী ছিল।’
‘তাইতো। আমার লাগছে, খুনিদের একজন পুনরায় এই পথ দিয়ে গিয়ে ড্রেসিং টেবিল জায়গায় এনে পথটা ঢেকে দিয়েছিল। আর…’
‘আর ওটা কোনো ছেলেরই কারসাজি।’ হঠাৎ আমি বলে উঠলাম, ‘কারণ আলিয়া ড্রেসিং টেবিল সরাতে পারছিল না।’
‘হ্যাঁ, আমার ভীষণ বল প্রয়োগ করতে হয়েছিল। আর আমি বলতে চাইছিলাম, এরপর ওই ব্যক্তিই দরজা খুলে বাইরে বেরিয়ে মেহমানদের সাথে মিশে যায় বা বেরিয়ে পড়ে।’
‘আপনি বুঝাতে চাইছেন, এখানে থাকা দুটো গাড়ির মালিকের যেকোনো একজনই খুনটা করেছে?’
‘এক্সেক্টলি! নইলে লাশটা কোনো বোকাই এইটুকু পথ গোপনভাবে এনে বাকিটা কাউকে দেখিয়ে নিয়ে যাবে। তবে এমনটা সরাসরি বলছি না, গাড়ির মালিকগুলোই দোষী। এমনও হতে পারে, গাড়ি তাদের। খুনি অন্যকেউ। আমরা বরং আবারও এই পথ দিয়ে যাই। আর কোনো ক্লু পেলে…’
আবির স্যার ওখানে ঢুকতে লাগল। আমি আর আলিয়া তাকে অনুসরণ করলাম। কয়েক মিনিটেই আমরা পথটার শুরুর মুখের কাছে পৌঁছে গেলাম। সারাপথ আর কিছুই পাওয়া যায়নি। কিন্তু আবির ভাঙা গ্লাসগুলোর ওপর ঝুঁকে পড়ল। সবুজ রঙের গ্লাসগুলো ভেজাও দেখাচ্ছে। আবির একটি টুকরোর ঘ্রাণ নিয়ে নাক কুঁচকাল, ‘মদ।’
‘মদের বোতল এখানে কেন আসবে? আসিয়া কখনওই ড্রিংকস করেনি!’
‘তোমার আপন-আত্মীয় যারা আছে, তাদের মধ্যে মদ কে খায় তা জানো?’
‘না।’ নিশ্চয় বাবা খান না।
‘আমারও কিছু মনে পড়ছে না। তবে এটুকু জানি, কেউ একজন আছে, যে মদ পান করে। কেসটার কোনো গতি না দেখায়, আমি সবগুলো ইনফরমেশন ডকুমেন্ট করে রেখেছি। বাসায় গেলে হয়তো জেনে ফেলতে পারব।’
‘সন্ধ্যা পেরিয়ে গেছে। সাবিলা কিন্তু…’
‘ওহহো। এই, তুমি কি মুখেই এতক্ষণ শ্বাস নিচ্ছিলে?’ আমিও এইমাত্র খেয়াল করলাম।
‘হ্যাঁ। ওসব বাদ দাও। আমি তোমার সাথে যাব।’ আলিয়া তাকে তুমি করে বলছে। তাহলে আমিও বলতে পারি।
হঠাৎ আলিয়া চক্কর খেতে লাগল। সে পড়ে যাওয়ার আগেই তৎক্ষণাৎ আমি তাকে ধরে ফেললাম। বিকর্ষণ সত্ত্বেও আমি তার পরিচিত শরীরটাকে কোলে নিলাম। সে আমার জন্য ভারী নয়। কারণ আমরা মানুষের চেয়ে অনেকগুণ বেশি শক্তিশালী। তার কষ্ট হচ্ছে। তবু সে বলল, ‘আবির, আমি অনেকদিন সাবিলার কাছে যাইনি। আমি যাব.. তোমা..’
‘প্লিজ, কথা বলো না।’ আবির মিনতি করল।
‘তুমি ঠিক হলে আমিই তোমাকে দিয়ে আসব।’ আমি তাকে আশ্বস্ত করে আবিরকে বললাম, ‘ওর মস্তিষ্ক সবসময় উত্তেজিত থাকে। তাই মাঝে মাঝে ওর অস্বস্তি বোধ হয়। এটা তেমন কিছু নয়। আপনি যেতে পারেন।’
আবির আলিয়ার জন্য চিন্তিত হলেও তড়িঘড়ি করে সাবিলার জন্য চলে গেল। আলিয়াকে আমি ভেতরে তার রুমে নিয়ে এলাম। এরই মাঝে আমার আর আবিরের আসা-যাওয়া এগুলো সম্বন্ধে আঙ্কেল জানেনও না। তাকে আমি বিছানায় শুইয়ে দিই। আলিয়ার কিছুটা ভালো লাগছে। কিন্তু সে.. সে অনেক কষ্ট পায়।
‘আলিয়া, তুমি জানো, তোমার অবস্থা খুব খারাপ? তুমি কিসের বিরুদ্ধে লড়ছ বলো তো একটু।’
সে কিছুক্ষণ ভেবে বলল, ‘কিছুরই না। আজকাল একটু ভাবলেই ঘুরপাক খাই। তুমি বলো, আবির কি তোমায় সন্দেহ করেছে? আই অ্যাম সরি। কিন্তু কেন তুমি কাউকে কিছু জানাতে চাও না? ওরা অনেক ভালো। সাবরিনা আর আদিলও।’
‘আমি জানি। তবু। সাবরিনা কিন্তু তাদের পরিবারের বংশধরদের মাঝে অধিক ক্ষমতাশীল। তিনি আমার মায়ের সমতুল্য হলেও, তারা বছরের পর বছর ভালোবাসার অপেক্ষা করায় তাদেরকে পূর্বপুরুষই ধরা যায়। সর্দারের আশেপাশে ক্ষমতাধরদের মাঝে তিনি থাকেন। আর আমি পালিয়ে এসেছি বিধায়.. ‘
‘তুমি পালিয়ে এসেছ?’
‘হ্যাঁ,’ সবকিছু খুলে বলার জন্য আমি তার দিকে ঘুরে বসলাম। কারণ আমি তাকে আর ভয় পাই না। সে অনেক ভালো একটা বন্ধু। ‘শোন, সাবরিনা যখন আদিলের সাথে ওই বাড়িতে সংসার পেতেছিল, তখন সে দুয়েকবার আমাদের ভুবন ঘুরে এসেছে। আমরা সেই ফাঁকে তার জীবনের কাহিনি শুনলাম। তোমাদের কাছে যেমন আমাদের জীবনী ইন্টারেস্টিং লাগে, তেমনই মানুষের জীবনী আমার খুব ইন্টারেস্টিং লেগেছে। কিন্তু আমি ছিলাম আমার বংশে মা-বাবার পর একমাত্রই ক্ষমতাধর। আমার সঙ্গী নির্ধারিত ছিল। সেও তার বংশের মধ্যে চতুর্থ ক্ষমতাধর।’
‘কি! সঙ্গী? আর ইউ ম্যারিড?’
সে কি ভয় পেয়েছে? আমি হাসলাম, ‘না, আমাদের আঠারো বছরের পরই মিলন মানে বিয়ে হয়। এর আগে সঙ্গী খুঁজে পাওয়া গেলেও কেউ এক হয় না, তবে ফ্রেন্ডের ন্যায় থাকে। আমার সূত্রী পরীকে খুব তাড়াতাড়িই খুঁজে পাওয়া গেছে। এইজন্যই সর্দার আমাদের কালো ব্যান্ডগুলোও দিয়েছেন।’
‘তোমার সঙ্গীর শক্তি কেমন?’ সে আমাকে থামাল।
‘ডেঞ্জারাস। একমাত্র তাদের বংশেই সবার চরিত্রে রাগ বেশি। তাদের বংশের মোট চারজন বজ্রপাতের সংস্পর্শে আসতে পারে। আমি তো ছোট ছিলাম। সেসময় সে তখনও বজ্রের সঠিক ব্যবহার করতে পারত না।’
‘তারপর?’ মেয়েটির ব্যাপার ওর হয়তো ভালো লাগল না। হয়তো তার কোনো বয়ফ্রেন্ড থাকলে আমারও ভালো লাগত না। কারণ বয়ফ্রেন্ড থাকলে মেয়েরা বেস্টফ্রেন্ডদের ভুলে যায় কিংবা কম প্রাধান্য দেয়। ‘ওর নাম কী?’
‘আমাদের নাম থাকে না! ইউ নো, সকলেই মাইন্ড রিডার। কথা.. ভাষা কিছুর প্রয়োজন নেই।’
‘ওহ্, ভুলে গিয়েছি।’
‘তবে ওর কাজ অনুযায়ী ওকে বিজলী বলতে পার।’
‘নামটিও ডেঞ্জারাস।’
‘হা হা। শোন, আমি এখানেই নয়, উপরেও সবসময় সোজা, ইমোশনলেস থাকতাম। ওকে ফ্রেন্ড হিসেবেও আমার ভালো লাগত না।’ আহ্, শান্তি। ‘তবে ও আমাকে সবসময় ঠিক করার চেষ্টা করত। তার অহেতুক রাগ আমার ভালো লাগত না। আচ্ছা যাক…
আমি তখন নয়-দশ বছরের ছিলাম। সাবরিনার কাহিনিগুলো শুনে আমার পৃথিবীতে আসার ইচ্ছে জাগে। আমার মা এসব বুঝতে পারলেন। তিনি আমাকে অন্যান্য ভাই-বোনের ন্যায় অনেক ভালোবাসতেন। সেসময়ই সাবরিনা নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল।
এটা ঠিক না হলেও মা আমায় পৃথিবীতে নিয়ে এলেন। আমরা দুজনই হাতকে ব্যবহার করে মানুষের জ্ঞান রপ্ত করি। মা অনিচ্ছাসত্ত্বেও আমাকে রেখে চলে যান। আমাকে তখন আমার বর্তমান মা পেলেন। ওদের একটা ছেলে জিসান থাকার সত্ত্বেও আমার রূপ দেখে আমাকে তারা পালতে শুরু করেন। আমি কিন্তু আমাদের সব সংযোগ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে এখানে থাকতে শুরু করলাম। কিন্তু জানতাম না, ঠিক এই নির্জন জায়গায়ই একদা সাবরিনা থাকার জন্য সিলেক্ট করেছিল। আমি দশ বছর বয়সী হয়েও এখানের সতেরো বছর বয়সী ছেলেদের সমতুল্য জ্ঞান রাখতাম।
সত্যিই, এখানের সবকিছু আমার খুব ভালো লাগে। আমি বেট ধরতে পারি, আমাদের জায়গা থেকে এই জায়গাই বেশি সুন্দর। এবং বন্ধু হিসেবে তুমিও।’
সে হাসল। খুব মিষ্টি তার হাসি, একদম তার স্বভাবের মতোই। ‘তুমি মনে করো, সাবরিনা সর্দারকে তোমার ঠিকানা জানিয়ে দেবে? তিনি এমনটা নয়। তিনি ভালোবাসার অনেক দাম দেন। আর তিনিও পৃথিবীর মায়া বুঝেন। তোমাকে ধরিয়ে দেবেন না। আমি বিশ্বাস করি।’
‘তুমি আমাদের মিলাতে কেন চাও বলো তো?’
‘কারণ.. আমাকে একদা আবির বলেছে, আসিয়ার লাশ পাওয়ার পর তারা যে তদন্ত শুরু করেছিল, সে সময় ধ্রুব নামের একটি ছেলেকে দেখে সে কিছুটা দ্বিধা করেছে। কিসের সাথে যেন তোমার মিল পাচ্ছিল। সে আবারও তোমাকে নিয়ে ভেবে বলল, তুমি দেখতে আদিলদের মতোই। আমাকে বলেছিল, “এটাই হয়তো সেই ছেলেটি, যে কিনা আট বছর আগে পরীদের ভুবন থেকে পালিয়েছিল।”‘
আবির হয়তো এই কথাই ভাবছিল। কিছু যদি হয়ে যায়! আমার শ্বাস থেমে গেল।
‘আবির তবু বিষয়টাকে নিয়ে সিরিয়াসলি কিছু ভাবেনি। হয়তো সে তোমার ব্যাপারে পড়তে চায় না। তুমি আমার সাথে ওই বাসায় চলো। আই প্রমিজ ইউ, কিছু হবে না।’
তার কথাগুলোর সাথে কিছুটা মিল পাচ্ছি। আবির কিন্তু সত্যিই তেমন সন্দেহ আমায় করেনি। বাইরে এসে আমি বাইকে উঠার পর আলিয়াও তাতে উঠল। আমরা কয়েক মিনিটেই বাড়িটায় পৌঁছে গেলাম। ভেতরে যেতে আমি সাহস পাচ্ছিলাম না। আলিয়া আশ্বস্ত করে আমাকে হাত ধরে নিয়ে ভেতরে ঢুকল। সাবরিনাকে আমি চিনলাম। কয়েকবার আমাদের ভুবনে গিয়েছিল। তার পাশের জ্বিনটিই হয়তো আদিল। হলরুমের এই ছেলেটিকে দেখে আমি শুরুতে আবিরই ভেবেছিলাম। কিন্তু তার ভ্রূ, চোখ, নাক সবই আমার মতো। তাঁরা দু’জন আমাকে দেখে থমকে গেল।
সাবরিনা কথা বলার আগেই তাঁর মস্তিষ্ক পড়ে বুঝে গেলাম; তিনি বললেন, ‘এই ছেলেটি… ধ্রুব। নামটা খুব সুন্দর, মিনিংফুল। ঠিক তোমার গুণের মতোই।’
আলিয়া বলল, ‘দেখেছ? সাবরিনা বুঝছে তোমার তেষ্টা।’
‘আসলেই,’ সাবরিনা বললেন, ‘পৃথিবী লোভনীয় একটি জায়গা। আর মানুষগুলোও। তুমি ভয় পেও না। আমি সর্দারকে কিছুই জানাব না। কারণ তুমি যে ভুলটি করে ফেলেছ, তার জন্য শাস্তি বরাদ্দই।’ তিনি হাসলেন, ‘তুমি এই শাস্তি এখন তো মোটেও চাইতে পার না।’
তিনি ভাবছেন, এখন আমি আলিয়ার বন্ধুত্বে এতই জড়িয়ে পড়েছি যে, এখন একদমই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করতে পারব না। কারণ আমি তাকে ছাড়া একটা সপ্তাহও কল্পনা করতে পারি না। আর শাস্তি হলো, আমাকে নিয়ে যাওয়া হবে। এটা আমি চাই না। ওখানের একরোখা রং.. সাবরিনা আমার মনের কথাগুলো পড়ে মৃদু হাসছেন। “আমারও আকাশের রং একরোখা লাগে। তোমার দুঃখ বুঝছি। তাই আমাকে ভয় পাওয়ার কিছুই নেই।” তাঁর মন পড়ে স্বস্তি পেলাম।
আমি বাকিদের সাথে পরিচিত হতে লাগলাম। আলিয়া উপরে সাবিলাদের রুমের দিকে গেল।
(চলবে…)
লেখা: ফারিয়া কাউছার

পূর্ববর্তী নিবন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধ
গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES
- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ