মাফিয়ার ভালোবাসা পর্বঃ ০২
– আবির খান
আবির ৫ ঘন্টায় ঢাকায় পৌছে যায়। আবির নামতেই, আবিরের মনটা সেই ফেলে আসা ৫ বছর আগের স্মৃতিগুলো মনে করে বিষন্ন হয়ে পরে। কিন্তু সে সাথে প্রচন্ড রাগও হয় সেই ৫ বছর আগের কথা মনে করলে। আবির এখন তা আর মনে করতে চায় না।
আবিরের জন্য ব্লাক জিপ পাঠানো হয়েছে। ওরা বাসার দিকে রওনা দিচ্ছে। রাস্তায় আসতেই আবিরের আগে পিছে মোট ৭ টা গাড়ি চলছে। সব নরমাল গাড়ি। মানে দামি বাট বাংলাদেশে যা চলে আরকি। আবিরের আগে ৩ টা পিছে ৩ টা আর পাশে একটা। সবই আবিরের প্রটেকশনের জন্য। আবিরের বাসার কাছে আসতেই গাড়িগুলো সব একসাথে হয়ে যায়। আর আবিরের সাথে ওর বাড়িতে ঢুকে। আবির নামতেই ওকে স্বাগতম করতে এগিয়ে আসে রহিম চাচা। সব চেয়ে বয়স্ক আর বুদ্ধিমান সেবক কম আপন লোক। আবিরের ঢাকার যাবতীয় সব তিনি একাই দেখেশুনে রাখেন।
রহিম চাচাঃ আবির বাবা ওয়েলকাম, ভেরি ভেরি ওয়েলকাম তোমাকে। চল ভিতরে যাই। শুভ তুই তাহলে পেরেছিস। আয় তোরা।
আবির বুঝতে পারলো না সাথে রাফিও। শুভ হেটে যাচ্ছে সবার সাথে।
আবিরের বাসাটা বিশাল বড়। সব হাইটেক জিনিসপত্র। বিদেশি ইঞ্জিনিয়ার দিয়ে ওর বাসাটা বানানো। বাসাটা সম্পুর্ন ডিজিটালাইজ। বর্তমানে এই বাসাটার শুধু মূল্য হবে ৫০০ কোটি টাকা। তারও বেশি হতে পারে। ভিতরে সব দামি দামি আসবাবপত্র। আবিরের বাসাটায় আছে অনেক রহস্য। আস্তে আস্তে জানবেন।
আবির ওর রুমটায় চলে যায় ফ্রেশ হওয়ার জন্য। আবিরের রুমটা সবচেয়ে বেশি সুন্দর আর হাইটেক। ৫০০ আমেরিকান আর্মস আছে এখানে। সব গুলাই লুকানো। আবিরের চোখের রেটিনা স্ক্যান ছাড়া তা দেখার কোনো সুযোগ নাই। আবির ফ্রেশ হয়ে এসে আর্মসগুলো দেখছে, সব ঠিক আছে কিনা।
হঠাৎ বাইরে কেউ নক করে। আবির ওর ৫৬ ইঞ্চি এলিডি টিভিতে দেখে রাফিএসেছে।
আবিরঃ ওপেন।
আবির ওপেন বলাতেই দরজা অটো খুলে যায়। আর রাফি ভিতরে চলে আসে।
রাফিঃ দোস্ত রহিম চাচা কি বলল তখন কিছু বুঝছছ??
আবিরঃ নাহ। আমিও তাই ভাবছি। গম্ভীর কণ্ঠে।
রাফিঃ কিন্তু শুভটাও বা কেন রহিম চাচার কথায় আমাদের এখানে আনলো??
আবিরঃ আচ্ছা চল আপাতত নিচে যাই। ওরাই সব বলবে।
রাফিঃ আচ্ছা।
আবির আর রাফি নিচে খাবার টেবিলে কাছে আসতেই শুভ আর রহিম চাচা কি নিয়ে যেন কথা বলতে বলতে ওদের কাছে আসলো। মনে হচ্ছে ওরা খুব চিন্তিত। আসলে ঢাকা দেখে রহিম চাচা আর শুভ বাকি সবটা দেখে। আর আবির দেখে ঝামেলা।
আবিরঃ শুভ…. গম্ভীর কণ্ঠে।
আবিরের ডাক শুনে সবাই কেপে উঠে। আবির চেয়ারে বসতে বসতে বলে,
আবিরঃ রহিম চাচা আপনিও এখানে বসেন।
শুভ আর রহিম চাচা আবিরের ডান পাশে বসলো। আর রাফি বামে।
আবিরঃ কি হয়েছে এখন তাড়াতাড়ি বলেন।
রহিম চাচাঃ আস…লে….বাবা হইছে কি…মা…নে…
আবিরঃ আহ… শুভ তুই বল। আর আমতা আমতা করবি না। নাহলে কিন্তু আমার রাগটা আবার উঠে যাবে।
শুভঃ দোস্ত তোকে মারার জন্য অনেক বড় একটা প্লান করছে আজুমে গিক। তাই তোকে এখানে নিয়ে এসেছি।
আবিরঃ কেন করছে??
রহিম চাচাঃ তুমি যে তার ছেলেকে গত সপ্তাহে মেরে ফেলেছো তাই।
আবিরঃ মারবো না। সে যা করছিলো তা আমার পছন্দ হয়নি।
রাফিঃ হ্যাঁ। ওর আজুমের ছেলে, মেয়ে পাচাঁরের সাথে জড়িত ছিলো। আবির সব সহ্য করতে পারে কিন্তু মেয়েদের কোনো ক্ষতি সে কোনো দিন সহ্য করতে পারেনা। তার জন্যইতো মারলো।
আবিরঃ তোরে আবার এগুলো কে বলতে বলল থাম।
রাফিঃ আরে ভাই তুই আমার গৌরব। তোর প্রশংসা করাটা আমার ন্যায্য অধিকার।
আবিরঃ হইছে থাম। ও তাই বলে আজুমে এখন আমাকে মারবে। বাহ দেখি কিভাবে মারে।
শুভঃ না দোস্ত। ও একা হলে আমরাই ওকে মারতাম। কিন্তু ওর সাথে কিছু আরো মাফিয়ারা যোগ দিছে। আমি লোক লাগিয়ে দিয়েছি। বেটাদের সব এক সাথে শেষ করবো।
রহিম চাচাঃ এরজন্যই তোমাকে এখানে আনা বাবা।
আবিরঃ হুম বুঝলাম। আপনারা আমাকে কত ভালোবাসেন।
রহিম চাচাঃ তোমাকে যদি নিজের জীবন দিয়াও বাচাঁতে হয় তাও বাচাঁবো। কারণ তুমি মাফিয়া ঠিকই। কিন্তু সবার জন্য না। তোমার জন্য কত মানুষ সুখে জীবনযাপন করছে তা আমার চেয়ে ভালো কে জানে।
শুভঃ একদম ঠিক বলেছেন চাচা।
আবিরঃ তোরা বেশি বলছিস। আমি এতো ভালো না। আমি মাফিয়া। হা হা।
রাফিঃ হুম তুই খারাপদের জন্য মাফিয়া আর ভালোদের জন্য মাসিহা।
আবিরঃ আমি কিন্তু সারাদিন বাসায় বসে থাকতে পারবো না। কিছু একটা করতে চাই।
রহিম চাচাঃ কিন্তু!!!
শুভঃ এক কাজ কর, একটা ভারসিটিতে ঢুকে পরি আয়। তুইতো পড়তে পছন্দ করিস। সেখানে সময়ও যাবে মজাও হবে।
রাফিঃ ও ওই বুড়া বয়সে আবার ভারসিটিতে যাবে?? মজা করে।
আবিরঃ কি আমি তোরে বুড়া দেখাই। তোর চেয়ে ১০ টা মেয়ে আমার জন্য বেশি পাগল থাকে। যাহ আমি আবার ভারসিটিতেই ভর্তি হবো।
শুভঃ এই যে আমিও আছি কিন্তু বন্ধু। মজা করে।
রাফিঃ আমিও আছি। দেখবো এবার কয়টা মেয়েকে পটাছ। মজা করে।
আবিরঃ আচ্ছা দেখিস। সবচেয়ে সুন্দরী মেয়েটাকে আমি পটাবো। আর তুই হা করে থাকবি।
রহিম চাচাঃ বাবা রা মজা করো ঠিক আছে। বাট তোমাদের পরিচয় ভুলো নাহ।
আবিরঃ জ্বি আঙ্কেল।
রহিম চাচাঃ আমি সব ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। কাল বলে দিবো কোন ভারসিটিতে তোমরা যাচ্ছো।
শুভঃ ঠিক আছে চাচা।
আবির সারাদিন কিছু কাজ দেখলো। সময়টা কেটে গেলো। রাতে খেয়ে ঘুমিয়ে পরলো।
পরদিন সকালে,
আবিরঃ আঙ্কেল আমি একটু জগিং করে আসি।
চাচাঃ না বাবা। তোমার যদি কোনো ক্ষতি হয়??
আবিরঃ আরে তাহলে এখানে আসলাম কেন। ওরা এই ঘন বসতির মাঝে আমাকে খুঁজে পাবে না।
চাচাঃ তাও বাবা।
আবিরঃ আঙ্কেল আপনি টেনশন নিয়েন নাহ। আমার কাছে আছে। সমস্যা হলে এটা দিয়েই হবে।
চাচাঃ আচ্ছা।
আবির ট্রাউজার আর টিশার্ট পরে বেরিয়ে পরলো জগিং এ। কানে এয়ারপড। আবির ওর বাসা থেকে একটু দূরে একটা সুন্দর পার্কে জগিং করছে।
এখন সকাল ৭ টা। পার্কে এতো সকালে অনেককেই দেখছে আবির। অবাক হচ্ছে আবির এতো মানুষদের দেখে। তবে কিছু কিছু মর্ডান মেয়ে টাইপ মেয়েরা জগিং এ এসে আবিরকে দেখে জগিং করাই মনে হয় ভুলে গিয়েছে। কারণ আবিরের সিক্স প্যাক বডি আর মাসল দেখে পাগল হয়ে যাচ্ছে তারা। কারণ এদেশে এরকম ফিটনেস বয় পাওয়া খুবই দায়। আবির দেখে ওর পিছনে গোটা ১০ জন মেয়ে পিছু নিয়েছে। মনে হচ্ছে ওকে পেলে খেয়ে ফেলবে। তাই আবির তাড়াতাড়ি দ্রুত জগিং করে সেখান থেকে ওদের পিছনে ফেলে সামনে এসে পরে। অনেক ক্লান্ত হয়ে পরায় একটা বেঞ্চে বসে আরাম করার জন্য। আরামের এক পর্যায় হঠাৎ আবিরের চোখ যায়…..
চলবে…?