Monday, October 6, 2025







মনের মাধুরীতে তুমি পর্ব-১+২

#মনের মাধুরীতে তুমি
#লেখিকাঃনওশিন_আদ্রিতা
#পার্টঃ১

পিচ ঢালা রাস্তার উপরে রক্তাক্ত অবস্থায় শুয়ে আছে এক অষ্টাদশী কণ্যা। পরণের নীল রাঙ্গা জামদানী শাড়ীটা রক্তে লাল বর্ণ ধারণ করেছে।সাথে লাল রঙ টা ছড়িয়ে পড়েছে রাস্তাতে।আশেপাশে সবাই ঘীরে রেখেছে মেয়েটাকে।কারো সাহস হচ্ছে এক পা এগিয়ে মেয়েটাকে সাহায্য করতে আদৌ তার নিশ্বাস চলছে না কি সেটাও জানেনা কেউ।সবাই নিজ নিজ কর্মে ব্যাস্ত কেউ আবার ব্যস্ত এই নির্মম ঘটনার ভিডিও করতে।

হঠাৎ সেখানে উপস্থিত হলো এক সাদা গাড়ির। ভিড় দেখে দরজা খুলে বেরিয়ে এলো ৪৫ উর্ধে এক ভদ্রলোক।সুর্দশন সে লোকটিকে দেখে বয়স আন্দাজ করা খুবই কঠিন বলে ধারণা করলেন উপস্থিত সবাই।লোকটা ভীড় ঠেলে এগিয়ে এলো মেয়েটির কাছে। অষ্টাদশী কণ্যার এই করুন দশা থেকে কেপে উঠলো ব্যাক্তিটির হৃদয়। দ্রুত নিজের হাত মেয়েটির নাকে ধরলেন নিশ্বাসের গতি প্রচন্ড ধীর হয়তো আর কিছু ক্ষন এইভাবে পড়ে থাকলে এখানে তার ইহকালের জীবনের সমাপ্তি ঘটবে। লোকটি আর সময় নষ্ট করলোনা কোলে তুলে নিলো রক্তে মেখে গেলো ভদ্র লোকটির সাদা কোর্ট টি।

—স্যার কি করছেন এটা এক্সিডেন্ট কেস। পড়ে আপনি ফেসে যেতে পারেন

ড্রাইভার এর কথায় রক্তচক্ষুদ্বয় নিক্ষেপ করতেই চুপ হয়ে গেলো বাকীরাও আর কিছু বলার সাহস পেলোনা। গাড়িতে বসে মেয়েটির মাথা নিজের কোলে নিয়ে সিটে শরীর এলিয়ে দিলো।

ভদ্রলোকটি একবার তাকালো বন্ধ আখিজোড়ার দিকে। রক্তাক্ত মুখশ্রীর দিকে। অজানা কারনে বুকটা কেপে উঠলো।মেয়েটির মুখ দেখে আপন কারো কথা মনে পড়তে শুরু করলো ভিষণ ভাবে। সাথে মেয়েটির এহেন অবস্থা দেখে কষ্টও হলো।পাশে থাকা পানির বোতল থেকে পানি নিয়ে ছিটিয়ে দিলো মেয়েটির রক্তাক্ত মুখশ্রী তে।।

—আ আমাকে ফেলে দিন

হঠাৎ মেয়েটির এমন বাক্যতে অবাক হয় ভদ্র লোকটি।সাথে গাড়ি চালক ও।

—কি বলছ মা তুমি কষ্ট পাচ্ছো কথা বলোনা আমরা হাসপাতালে পৌছে যাবো

—এই কষ্ট সহ্য করে নিবো আমি কিন্তু তার দেওয়া ব্যাথা নিয়ে বেচে থাকতে পারবো,,,

কাপা কাপা কন্ঠনালী আর শব্দ উচ্চারণ করতে পারলোনা তার আগেই জ্ঞান শুণ্য হয়ে নেতিয়ে পড়লো মেয়েটি।

ইতিমধ্যে তারা পৌঁছে গেলো হাসপাতালে। ভদ্রলোকটি দ্রুত মেয়েটিকে নিয়ে ভিতরে প্রবেশ করলো।উনাকে দেখে ওয়ার্ড বয় নার্স ছুটে এলো মেয়েটিকে সাথে সাথে ওটিতে নেওয়া হলো

নার্স লোকটির অস্থিরতা দেখে বলে উঠলো

—অভিরুপ স্যার আপনি প্লিজ হাইপার হবেন না।আপনার বিপি হাই হয়ে যেতে পারে।

—আমার চিন্তা ছাড়ো আর আহিয়ান কে ইনফর্ম করো

লোকিটির কথা শেষ হওয়ার পূর্বেই এপ্রোণ পরিহিত একজন সুদর্শন যুবক রুমে প্রবেশ করলো।

—ওটি রেডি নার্স

—ইয়েস স্যার

—অভিরুপ আমি ওই মেয়েকে সুস্থ চাই

—আমার উপর বিশ্বাস আছেনা

—হুম

—তুমি কেবিনে ওয়েট করো সি উইল বি অলরাইট

লোকটি যেনো ভরসা পেলেন ছেলেটির মাথায় হাত বুলিয়ে বেরিয়ে গেলেন।

_____

আসুন লোকটির পরিচয় জেনে নি লোকটি হলো অভিরুপ আশিক চৌধুরী। নামকরা হার্টসার্জান।আর যে যুবক ওটিতে প্রবেশ করলো তিনি হলেন অভিরুপ চৌধুরীর মেঝো সন্তান আহিয়ান অরিশ চৌধুরী। কিছুদিন হলো নিজের বাবার হস্পিটালে জয়েন করেছে।২৭ বছরের এই যুবকটি অত্যন্ত রসিকতাই ভরপুর কেউ দেখে বলতে পারবে ঠিক কতোটা তেজী আর জেদী এই যুবোক।

_______

সবসময়ের মতো এবার ও আহিয়ান নিজের ওটি সাকসেসফুলি সম্পূর্ণ করে বেরিয়ে এলো।সে বের হতেই হুরমুর করে সেখানে উপস্থিত হলো এক বয়স্ক লোক।

ঃআমার সুখ কোথায় আমার নাতনী কেমন আছে

আহিয়ান এর বুঝতে বাকি নেয় লোকটি হয়তো মেয়েটির দাদা নয়তো নানা।আর মেয়েটির নাম সুখ আনমনেই আহিয়ান এর চোখে ভেসে উঠলো ব্যান্ডেজে মোড়ানো মলিন শুভ্র মুখটি হঠাৎ বিরবির করে আওড়ে উঠলো

“সুখ পাখী”

—আপনি চিন্তা করবেন না স্যার তিনি এখন ভালো আছে মাথার ইঞ্জুরি টা একটু গভীর কিন্তু আশা করা যায় আজকে রাতের মাঝে জ্ঞান ফিরে আসবে।

—তোমাকে কি বলে ধন্যবাদ দিবো আমার জানা নেই বাবা। আজ তুমি না থাকলে আমার নাতনী টা

কথাটা উচ্চারণ করার পূর্বেই ফুপিয়ে উঠলেন বৃদ্ধটি। আহিয়ান লোকটিকে ব্রেঞ্চে বসিয়ে পানি এগিয়ে দিলো

—আমি কিছু মহান কাজ করিনি স্যার এটা আমার দ্বায়িত্ব আর যদি কাউকে ধন্যবাদ দিতে হয় তাহলে আমার বাবাকে দিন। বাবা যদি সমিয় মতো আপনার নাতনীকে না নিয়ে আসতেন তাহলে হয়তো তাকে বাচানো যেতোনা।

—কোথায় তোমার বাবা।

আহিয়ান নার্স কে ইশারা করে বললেন তারা বাবাকে ডেকে দিতে কিন্তু নার্স জানায়

—স্যার আহনাফ স্যার এর জরুরি কল আসায় উনি চলে গেছেন

—সমস্যা নেই বাবা তোমাকে দেখে নিলাম এতেই তোমার বাবাকে দেখা হয়ে গেছে তোমার গুন দেখেই বুঝা যায় তোমার বাবা নিশ্চয় কোন সুপুরুষ হবে।

আহিয়ান স্মিত হাসলো।

______
বিকাল গড়িয়ে রাত্রী নেমে এলো।সমস্ত পেশেন্ট চেকআপ করে সুখ নামক রমনীর কেবিনের সামনে এসে উপস্থিত হলো।আর এসেই অবাক হয়ে গেলো। মেয়েটি ইতিমধ্যে উঠে বসে রয়েছে পাশে থাকা গ্লাসটা নেওয়ার চেষ্টা চালাছে হঠাৎ আহিয়ান এর রাগ উঠলো সোফায় বসে ঘুমন্ত নার্স এর উপর এতো বেখেয়ালি কেনো হলো সে। সাথে রাগ উঠছে এলোকেশী রমনী টার উপরেও ক্যানোলা লাগানো হাত থেকে রক্ত ঝড়ে পড়ছে কিন্তু সেদিকে তার খেয়াল নেই এতোটাই কি পিপাসা পেয়েছে তার

আহিয়ান দ্রুতে পায়ে এগিয়ে যেয়ে পানির গ্লাস টা ধরিয়ে দেয়। পানি হাতে পেয়ে দিক বেদিক না দেখেই পানি টা পান করে নিজের পিপাসা নিবারন করে ফেলে।আর তার সে পানি খাওয়ার দৃশ্য টা কেউ একজন মুগ্ধ হয়ে দেখতে থাকে।

আহিয়ান টুল এগিয়ে এনে বসে পরে।

—কেমন লাগছে মিস সুখ

পানির গ্লাস টা পাশে রেখে সামনে তাকায় সুখ।

—তাহলে বেচে গেলাম

সুখ এর বলা কথায় স্পষ্ট আফসোস এর সুর টের পেলো।কিসের এই আফসোস তাহলে কি মেয়েটা বাচতে চায়ছিলোনা কিন্তু কেনো

—এতো সুন্দর জীবন টাকে পুনরায় ফিরে পেয়ে আনন্দিত না হয়ে এই ভাবে বলছেন কেনো মিস সুখ

—সুন্দর জীবন আপনাদের জন্য বরাদ্দ ডাক্তার। আমার জন্য নয়। আমার জন্য এটি শুধু কষ্টের বেড়াজাল বয় কিছুই না

—কেনো জীবনের প্রতি এতো অনিহা।সেচ্ছায় বুঝি নিজের জান দিতে রাস্তাই নেমেছিলেন

—উহু আমি বড্ড ভিতু জানেন তো।সু*সাইড আমার দ্বারা সম্ভব নই। কিন্তু বেচে থাকার ইচ্ছাটাও শূণ্যর কোঠায়

—কেনো এই অনিহা

—আজকে আপনি এক রক্তাক্ত রমনী কে দেখেছিলেন যে রক্তে লেপ্টে ছিলো কিন্তু সে রমনীকে দেখেন নি যে প্রথম বার শরীরে নীল শাড়ি জড়িয়েছিলো নিজেকে সুন্দর করে সাজিয়েছিলো হাতে নীল চুড়ি পড়েছিলো।

আহিয়ান চুপ হয়ে গেলো। সুখ মৃদু হাসলো সিলিং এর দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে আখিজোড়া বন্ধ করে ফেললো মানস্পটে ভেসে উঠলো কিছু কষ্টের সৃতি

বাবা মায়ের একমাত্র মেয়ে সুখ পুরো নাম ইনায়াত রহমান সুখ।বাবা অনেক আগেই মারা গেছে সে শোকে ঘড় বন্দি করে নিজেকে আটকে রাখে সুখের মা ইনসিয়া রহমান।বলতে গেলে সে তার দাদু ইশহাক রহমান এর কাছেই মানুষ। ছোট বেলা থেকেই বেপরোয়া ভাবেই মানুষ হয়েছে সে বাকী স্বাভাবিক মেয়েদের ন্যায় তার বেড়ে উঠা হয়নি।মেয়েদের মতো নিজেকে সাজায় ও নি কখনো কিন্তু ঝড়ের মতো তার জীবনে প্রবেশ করে আতিক নামক এক অগুন্তিক।প্রথম অনূভুতি জাগ্রত হয় তাকে দেখেই। দীর্ঘ ৩ বছরের চেনা পরিচয়ের এক পর্যায়ে সুখ বুঝতে পারে সে ভালোবেসে ফেলেছে তার অগুন্তিক কে। তাই তো তার দেওয়াই নীল রাঙা শাড়ী তে নিজেকে সাজিয়েছিলো যে মেয়ে ২ মিনিট আয়ানার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে কোনদিন দেখেনি। সে মেয়েটি ২ ঘন্টা সময় নিয়ে নিজেকে সাজিয়েছিলো স্নিগ্ধ রুপে।এক গুচ্ছ লাল গোলাপ নিয়ে দাড়িয়েছিলো প্রিয় মানুষ টির সামনে কিন্তু সে অগুন্তিক,,,,,,,,

চলবে!

#মনের_মাধুরীতে_তুমি
#লেখিকাঃনওশিন_আদ্রিতা
#পার্টঃ২
,
,
,
,
কিন্তু সে ছেলেটা বুঝেনি মেয়েটির অনুভূতি নির্মমতার সাথে সুখ এর সামনে দাড় করিয়েছিলো নিজের প্রেমিকাকে।

—সুখ এই দেখ আমার ভালোবাসা

প্রিয় মানুষ টির মুখে অন্যকাউকে ভালোবাসা হিসেবে জানাতে যে ঠিক কতোটা পরিমান কষ্ট সেটা হারে হারে টের পাচ্ছিলো নতুন অনুভূতি জন্মানো সে অভিমানীনি।চোখের সামনে ভেসে উঠছিলো প্রিয় মানুষ টির বলা নানা ভালোবাসার বানী গুলো। ভালোবাসি না বলেও বিভিন্ন আকার ইঙ্গিতে বুঝিয়েছিলো সুন্দর করে তার প্রতি অনুভূতি গুলো তার জন্য নেওয়া ছোট খাটো যত্ন গুলো।তার সামান্য ব্যাথায় অস্থির হয়ে যাওয়া।

—তুমি মজা করছ তাইনা আকাশ

সুখ এর কন্ঠে স্পষ্ট ব্যাথার ছাপ কিন্তু সে ছাপ ফেলতে পারেনি প্রিয় মানুষ টির বুকে। আকাশ এর স্পষ্ট স্বিকার উক্তি

—আমি ওকে ভালোবাসি সুখ।নয়না কে আমার অনেক ভালো লাগে।

সুখ অশ্রুসিক্ত নয়নে তাকায় আকাশের হাতের ভাজে থাকা নয়নার হাতের দিকে।

—কি হলো তোমার চোখে পানি কেন

—ওহ কিছুনা প্রথম বার চোখে কাজল দিয়েছি তাই জ্বলছে সমস্যা নাই ঠিক হয়ে যাবে

(কি করি বলি আকাশ তোমাকে এই অশ্রু যে আমার ভুলের আমার মনে সৃষ্টি হওয়া ভুল অনুভূতি তোমার মজার ছলে বলা কথা গুলো সত্যি ভেবে তোমাকে ভালোবাসার।তুমি তো আমাকে কোনদিন পছন্দও করোনি কিন্তু আমি ভুল।ছিলাম চাদের পাশে বামুন কে কল্পণা করা শুরু করে দিয়েছিলাম আমার ভুলের শাস্তি আমি নাহয় পায়)

আকাশ এবার দেখলো ভালো করে অবাক হলো সুখ এর এমন সাজ দেখে
—ব্যাপার কি সুখ আজ এতো সেজেছো জিন্স আর শার্ট ছাড়া তো তোমাকে কিছু পড়তে দেখিনি

—ওই আর বলোনা আমাদের বাসায় যে চাচী আম্মু কাজ করে সে আজ আলমাড়ি পরিষ্কার করতে যেয়ে শাড়িটা পেয়েছিলো দিয়ে জেদ ধরেছিলো আমাকে পড়াবেই তাই আর কি

—বাহ তোমার চাচীআম্মুকে আমার তরফ থেকে ধন্যবাদ দিয়ে দিও তিনি না থাকলে সুখ এর কি এই রুপ দেখতে পেতাম

—আজ আসি ভালো থেকো। বাসায় কিছু মেহমান আসবে

—দেখেশুনে যেয়েও আজকে নয়না আছে সাথে তাই আর ড্রোপ করতে যেতে পারবোনা মেয়েটাকে আমি নিয়ে এসেছি কিভাবে একা ছাড়ি বলো মাঝরাস্তাই।

—হুম সমস্যা নাই আমি যেতে পারবো তোমার সুন্দরী প্রিয়সীকে তুলে নিয়ে গেলেও আমাকে নিয়ে যাবেনা

—এই রুপে তোমাকে দেখলে যে কেউ তুলে নিবে
(কথাটা আকাশ এর মাঝে থাকলেও বলতে পারলো না হাজার হোক পাশে প্রিয়সীকে রেখে অন্য কোন মেয়ের রুপের প্রশংসা করা টা মানায় না)

সুখ কিছু বললোনা ছোট একটা হাসি দিয়ে সেখান থেকে চলে গেলো। আকাশ বুঝলোনা সে হাসির মানে হাসির আড়ালে লুকানো সে ব্যাথা।

______

সুখ এর ধ্যান ভাংলো পুরুষালি গম্ভির কন্ঠে।

—কই হারালেন মিস সুখ

—আমার ফোনটা কোথায়

—এই অবস্থায় ফোন আপনার জন্য ক্ষতিকরক আপনার ব্রেনে চাপ পড়বে

—কিছু হবেনা ডাক্তার নানু চিন্তা করছে এখনো বাসায় ফিরি নি

—আপনার নানু সারাদিন এখানেই ছিলো একটু আগেই আমি পাঠিয়েছি উনি ক্লান্ত ছিলেন।

—ওহ।আচ্ছা আমাকে এখানে একজন আঙ্কেল নিয়ে এসেছিলো আপনি কি তার কোন খোজ দিতে পারবেন

—হুম আসবে আপনার সাথে দেখা করতে আপনার সাথে আপনি রেস্ট নেন

_________

ঘুমন্ত সুখের দিকে একমনে চেয়ে আছে আহিয়ান।চোখে অজস্র মায়া শুয়ে থাকা মেয়েটির প্রতি। অদ্ভুদ এক টান অদ্ভুদ এক অনূভুতি। মনে হচ্ছে এই মুখের দিকে তাকিয়ে সারাজীবন পার করে দিতে পারবে বিনা সংকচে।

—সুখ পাখি। কাজটা বড্ড খারাপ করলা। উড়তে উড়তে আমার খাচাতেই আসতে হলো। ব্যাপার টা দারুন ইন্টারেস্টিং। কিন্তু তোমার চোখে অন্যকারো জন্য ভালোবাসাটা মোটেও ইন্টারেস্টিং না উহু একদম না এই দুই নয়নে ভালোবাসা মায়া অনুভূতি থাকবে কেনো উহু ভেরি বেড।

আহিয়ান এর কথাই ছিলো অদ্ভুদ রহস্য। কেমন একটা পাগলামো শান্ত চোখ জোড়াতে অদ্ভুদ কিছু ছিলো। আহিয়ান এর তীক্ষ্ণ নজরে ঘুমন্ত সুখ কেপে উঠলো।যে কম্পন আহিয়ান এর ঠোঁটের কোনে সৃষ্টি করলো মনমুগ্ধকর হাসি।

____

মাথায় কারো স্নেহ ভরা হাতের পরশ পেয়ে ঘুম ভেংগে যায় সুখের। আলতো করে চোখ খুলে সামনে থাকা ব্যাক্তিটাকে চিনতে সমস্যা হয়না তার লোকটা আর কেউনা যিনি তাকে বাচিয়েছিলেন তিনি।

—এখন কেমন লাগছে মা

—ঠিক আছি এখন আমি

—এমন কেউ করে আজ যদি সময় মতো না আসতাম তখন কি হতো

—বেশি কিছু হতো আর কই বাবাই এর কাছে চলে যেতাম

—এইসব কথা বললে কিন্তু বকবো বলে দিলাম।তোমার নাম কি মা

—ইনায়াত রহমান সুখ

—বাহ মিষ্টি মেয়ের মিষ্টি নাম

সুখ আলতো হাসলো।।

ইতিমধ্যে একজন নার্স খাবার নিয়ে এলো

—ম্যাম স্যার বলেছে সম্পূর্ণ টা ফিনিস করতে মেডিসিন নিতে হবে

—এই সব ঘাস খাবোনা আমি

সুখের নাক সিটকানো দেখে হাসলো অভিরুপ চৌধুরী নার্স এর থেকে খাবারের প্লেট টা হাতে নিলো

—সেটা বললে তো হবেনা মা। আজকে তোমার ওয়েলী ফুড খাওয়া সম্পূর্ণ মানা কালকে থেকে আর এগুলো খেতে হবেনা

;মানে কি কইদিন থাকতে হবে এখানে

অভিরুপ কিছু বলতে যাবে তার আগেই আহিয়ান বলে উঠলো

—১ সপ্তাহ

সুখ সেদিকে তাকালো ক্লান্তি ভরা চেহারার দিকে তাকাতেই সুখ এর কেমন অনুভূতি হলো হাতে রাখা সাদা এপ্রোন টা স্পষ্ট বলে দিচ্ছে যে সে আর সম্পূর্ণ ডিউটি শেষ করে বাসায় যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে কিন্তু রাত ১১টা এতো দেরিতে।

সুখ কে সম্পূর্ণ অবাক করে দিয়ে আহিয়ান সোফায় বসে পড়লো

—বাবা আমি আজ হস্পিটালেই থাকবো মিস সুখ এর হয়তো মাথাই পেন উঠতে পারে সেজন্য উনাকে এই অবস্থায় একা রাখা উচিৎ হবেনা আর উনার নানু কে আমি আসতে নিষেধ করে দিয়েছি এই রাতে

সুখ আরও এক দফা চমকালো মানে লোকটি উনার বাবা ভাবতেই কেমন শিরদার বেয়ে শীতল স্রোত বেয়ে গেলো।লোকিটা নাকি আজ সারারাত এই কেবিনে তার সাথে থাকবে ব্যাপার টা ঠিক কতোটা অস্বস্তি কর সেটা ভাবতেই নিশ্বাস আটকে আসছে তার।

এতো এতো ভাবনার মাঝে কখন অভিরুপ তাকে সম্পূর্ণ খাবার খাইয়ে দিলো সে টের ও পেলোনা। তার ধ্যান ছিলো সম্পূর্ণ কালো সার্ট পরিহিত ফাইল এর দিকে দৃষ্টি রাখা আহিয়ান এর দিকে।কিন্তু অবুঝ সুখ বুঝতে পারলোনা আহিয়ান ও ঠিক তার দিকেই তাকিয়েছিলো ফাইল শুধু বাহানা মাত্র।আড়ালে আবডালে সে তার সুখ পাখির চোখের কালচে মণি টাকে পর্যবেক্ষন করতে ব্যাস্ত ছিলো।।

______

রাত যতোটা গভীর হচ্ছে ততো গভীর হচ্ছে সুখের ছোটফোটানি। তার নিশ্বাস আটকে আসছে। যন্ত্রণা বাড়ছে বয় কমছেনা। সে যে কাউকে ডেকে বলবে তার এই যন্ত্রণার কথা তার সে উপায় অব্দি নেই। তার মুখ দিয়ে শব্দ বের করার মতো শক্তি নেই।

হুট করে আহিয়ান এর এলার্ম বেজে উঠলো সে৷ আগে থেকেই এলার্ম দিয়ে রেখেছিলো চোখ খুলতেই সুখ কে ছোটফোট করতে দেখে বুকের মাঝে ব্যাথা করে উঠে।দৌড়ে তার কাছে যেয়ে তাকে বুকের সাথে জড়িয়ে নেয়।

—সুখ পাখি কি হয়েছে তোমার কথা বলো

সুখ কথা বলতে পারছেনা তার দম আটকে আসছে। মাথার রগ মনে হচ্ছে ছিড়ে আসছে।

—আকাশ

অনেক কষ্টে শব্দটা উচ্চারণ করলো সুখ সাথে সাথে আহিয়ান এর হাতের বাধন শক্ত হয়ে গেলো তার।পাশ থেকে ইনজেকশন নিয়ে পুষ করে দিলো সুখের ঘাড়ে। সুখ চিৎকার করে উঠলেও কিছুক্ষন পরে ঘুমিয়ে পড়লো

—কাজটা ঠিক করলেনা সুখ পাখি।এটার সুধ আসল সব তোমাকে দিতে হবে। এতোটা যন্ত্রণা দিবো যে তুমি কল্পনাও করতে পারবেনা আর না আমাকে ছেড়ে যেতে পারবে।আই প্রমিজ ইউ মাই হ্যাপিনেস

চলবে!

গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ