ভাড়াটে বউ
Writer : Sanvi Ahmed Shakib
পর্ব ৩
.
খাওয়া দাওয়া শেষ করে সবকিছু রান্নাঘরে রেখে আসে রিহা।
খাওয়ার পর সানভির এক কাপ চা খাওয়ার অভ্যাস বলতে পারেন বদঅভ্যাস। রিহা যখন থালা বাসন গোছাতে ব্যাস্ত সানভি তখন চা বানাতে চলে যায়।
.
রিহা ফিরে এসে দেখে সানভি চা খাচ্ছে,
– কি ব্যাপার এখন চা খাচ্ছেন যে?(রিহা)
– তুমি বলতে বলছিলাম।(সানভি)
– সরি স্যার।(রিহা)
– আসলে খাওয়ার পর চা খাওয়াটা আমার বদঅভ্যাস।(সানভি)
– আচ্ছা।(রিহা)
.
রিহা অপলক দৃষ্টিতে দেখে সানভির দিকে।
সাদা ফ্রেমের চশমায় একটু বয়স্ক লাগছে তাকে তবে বয়স কিন্তু কম। রিহা ভাবনায় পড়ে যায় এরপর কি ঘটবে?
এইপর্যন্ত তো মনে হচ্ছেনা সে চাকরিতে আছে।
এটা যেনো তার নিজেরই বাড়ি এমনই একটা ভাব।
.
– স্যার এখন কি করবো আমি?(রিহা)
– কিছুনা বসে বসে আড্ডা দিবা আমারর সাথে।(সানভি)
– জ্বি স্যার।(রিহা)
.
– আচ্ছা ওই প্যাকেটটা একটু আনোতো।(সানভি)
রিহাকে উদ্দেশ্য করে বলে সানভি।
– কোন প্যাকেট স্যার? (রিহা)
– ওইযে টেবিলের ওপর ওইটা।(সানভি)
.
রিহা টেবিলের ওপর থেকে প্যাকেটটা এনে সানভির হাতে দেয়।
সানভি প্যাকেটটা হাতে নিয়ে বলে,
– এই শাড়িটা তোমার।(সানভি)
– না স্যার আমি এটা নিতে পারবোনা।(রিহা)
– কেনো পারবানা?(সানভি)
– স্যার আমি শুধুমাত্র একজন কর্মচারি আপনি আমাকে কেনো গিফট করবেন? এমনিতেই অনেক কিছু দিয়েছেন।(রিহা)
– আমি তোমাকে নিল শাড়িতে দেখতে চাই তাই নিবা এটা।(সানভি)
– আমি পারবোনা স্যার।(রিহা)
– আমি নিতে বলছি।(সানভি) একটু ধমকের সুরে বলতেই রিহা নিয়ে নেয়।
.
– তোমরা মেয়েরা না ঢং করতে জানো আর কিছু পারো না পারো।(সানভি)
– জ্বি স্যার বুঝলাম না।(রিহা)
– কিছুনা। আচ্ছা তুমি ইচ্ছা হলে চলে যেতে পারো।(সানভি)
– না স্যার আমি সন্ধায় যাবো।(রিহা)
– আচ্ছা ঠিকআছে।(সানভি)
।
আসলে সানভি এখন সিগারেট খাবে তাই রিহাকে পাঠিয়ে দিতে চাইছিলো বাট গেলো না এখন কি কররে?
যদিও রিহা তার কিছুই না তারপরও ওর সামনে সিগারেট খাইতে কেমন জানি একটা লাগে। তাই সিগারেটের প্যাকেটটা পকেটেই রেখে দিলো সানভি।
বেশ নেশা লাগছে সিগারেটেরর অনেকক্ষণ খায়না সে।
মাথা গরম হয়ে যাচ্ছে। দিনে এক প্যাকেট সিগারেট লাগে সানভির। আর থাকতে না পেরে রিহার সামনেই সিগারেট ধরায় সানভি।
,
সিগারেটে টান দিতেই ভিতরটা ঠান্ডা হয়ে যায়।
রিহা ছলছল দৃষ্টিতে দেখে সানভিকে। তার কেনো জানি কষ্ট হচ্ছে। সহ্য করতে পারছেনা সানভির সিগারেট খাওয়া।
আরো কয়েক টান দিতেই রিহা হুট করে সিগারেটটা ফেলে দেয় সানভির হাত থেকে।
কেনো এমন করলো সে নিজেও জানেনা।
সানভি অবাক হয়ে দেখে রিহাকে।
হঠাৎ কি হলো ওর?
.
– আর খাবেন না সিগারেট।(রিহা)
– কেনো?(সানভি)
– আমি বলছি তাই।(রিহা)
– তুমি কে বলার?(সানভি)
– সরি স্যার আমি ভুলে গেছিলাম আমি শুধুই চাকর।(রিহা)
– হুমম। (সানভি)
.
কথাটা বলে রিহা ভাবতে থাকে উনি সিগারেট খেলে আমার কষ্ট কেনো হবে? উনিতো আমার কেওনা। আমি চাকরি করবো টাকা পাবো আর বেশি কিছুনা।
.
– স্যার আমি কি যেতে পারি আজকে?(সানভি)
– হুম যাও। আর নিচের তালার চাবিটা নিয়ে যাও।(সানভি)
– আচ্ছা।(রিহা)
.
সানভি ড্রয়ার থেকে চাবি আর ২০ হাজার টাকা বের করে রিহার হাতে দিয়ে বলে,
– কিছু টাকা নিয়ে যাও আর বাকিটা মাস শেষে নিয়ো।(সানভি)
– Thank You Sir..(Riha)
– Wellcome… (Sanvi)
.
২০ হাজার টাকা হাতে পেয়ে রিহা আনন্দে কেদে ফেলে।
বাসায় যাওয়ার পথে বাজার থেকে মাছ মাংস ডিম আর মায়ের জন্য ঔষুধ নিয়ে যায়।
বাসায় গিয়ে রান্না করে রিহা। হাতটা কিছুটা কেটেছে তবে ব্যাথা নাইই একটুও। হাতে ব্যান্ডেজ করা দেখে রিহার আস্মু জিজ্ঞেস করে,
– কিরে হাতে কি হইছে?(আম্মু)
– একটু কেটে গেছে।(রিহা)
– বেশি কাটেনাই তো?(আম্মু)
– না আম্মু একটু কাটছে স্যার খুব ভালো মানুষ সাথে সাথেই ব্যান্ডেজ করে দিছে। (রিহা)
– খুব ভালো।(আম্মু)
– আর মা তোমার ঔষুধ আর কালকে আমরা এই বাসা ছেড়ে দিচ্ছি।(রিহা)
– বাসা ছেড়ে দিলে থাকবো কোথায়?(আম্মু)
– স্যার তার বাসার নিচের তলাটা আমাদের থাকার ব্যাবস্থা করে দিয়েছে।(রিহা)
.
আনন্দে রিহার মাও কেদে ফেলে।
ওদিকে সানভি ভাবতাছে কালকে কি হবে?
কতদুর আগাতে পারবো এইসব।
রিহাকে পাওয়ার সেই পুরনো ভুত আবারো তার মাথায় চাপছে। তবে এইবার আর প্রেম নয় করলে ডিরেক্ট বিয়ে।
.
চলবে?