ভাড়াটে বউ
লেখকঃ সানভি আহমেদ সাকিব।
পর্ব ৫
.
পুরো রাস্তা কথা বলতে বলতে যায় সানভি। কথা বলতে বলতে কিছুটা জড়তা কেটে যায় রিহার।
মনেই হয়না এটা তার জব। সানভিকে কিছু একটা বলতে যাবে সানভিকে এমন সময় ফোনটা বেজে উঠে রিহার।
– হ্যালো…(রিহা)
– হ্যা মা রিহা আসার সময় কিছু বাজার নিয়ে আসিস।(আম্মু)
– আচ্ছা মা আর কিছু বলবে?(রিহা)
– না আচ্ছা রাখি।(আম্মু)
– আচ্ছা।
.
ফোনটা কেটে দিয়ে সামনের দিকে তাকায় রিহা।
– কে ফোন দিয়েছিলো?(সানভি)
– আম্মু।(রিহা)
– ওহ।
গাড়িটা পার্কিং করে রিহাকে নিয়ে মলের ভিতরে ঢুকে সানভি। রিহার কেমন জানি লাগে। শাড়ি পড়ে এর আগে কখনো বাইরে বের হয়নি রিহা। সানভি ব্যাপারটা লক্ষ করে কিন্তু কিছু বলেনা।
রিহাকে তার কাছে শাড়িতেই ভালো লাগে।
সানভি রিহাকে জিজ্ঞেস করে,
.
– টি-শার্ট নিবো নাকি শার্ট?(সানভি)
.
– শার্ট নেন আর পান্জাবি ও নিতে পারেন।(রিহা)
.
– আচ্ছা পছন্দ করো কোনটা নিবো।(সানভি)
.
– স্যার আমি কেনো আপনি কিনুন না।(রিহা)
.
– আমি তোমাকে পছন্দ করতে বলছি করো।(সানভি)
.
রিহা কিছু না বলে চুপচাপ দেখতে থাকে।
নিল রঙের একটা পান্জাবি কিনে কয়েকটা শার্ট প্যান্ট আরো অনেক কিছু। তারপর রিহার জন্য একটা ড্রেস কিনে সানভি।
রিহাকে না জানিয়েই কিনে ফেলে।
তারপর বাসায় চলে আসার পথে একটা জায়গায় গাড়ি থামিয়ে রিহাকে নিয়ে একটা নিরিবিলি জায়গায় যায় সানভি।
.
– বুঝলে রিহা এইটা হলো আমার সবচেয়ে প্রিয় জায়গা। আমার মন খারাপ থাকলে আমি এখানে আসি। এইযে ছোট ছোট গাছগুলা দেখতাছো সবগুলা গাছ আমার নিজের হাতে লাগানো।আর জমিটা আমি কিনে নিয়েছি।(সানভি)
.
– এতোটাই পছন্দের যে কিনে নিলেন?(রিহা)
.
– হ্যা। সামনের পুকুরটাও কি আপনার?(সানভি)
.
– হ্যা। মাঝে মাঝে এসে মাছ ধরি। কালকে তোমাকে নিয়ে আসবো মাছ ধরতে।(সানভি).
.
– আপনি মাছ ধরতে পারেন?(রিহা)
.
– ভুলে গেছো সব? আমি গ্রামে থাকতাম তুমিও তো ছিলে। সবকিছু কি ভুলে গেছো?(সানভি)
.
– না ভুলিনি তবে আমি ভাবছি শহড়ে এসে সবকিছু ভুলে গেছেন। (রিহা)
.
– কিছু জিনিস চাইলেও ভুলা যায়না।যেমন,..
বলতে গিয়েও থেমে যায় সানভি।
রিহার মনটাও খারাপ হয়ে যায়। সানভি গাড়িতে গিয়ে বসে।
রিহা পিছনের সিটে গিয়ে বসে এবার।
.
সারা রাস্তা নিশব্দে কান্না করে রিহা। অতিত মনে পড়তেই অপরাধবোধ কাজ করে নিজের মধ্যে। নিজেকে আপরাধি মনে হয় রিহার। আর সানভি সে তো সরল মনের মানুষ। কারো ওপর রাগ করে থাকতে পারেনা।
যার কারনে আজো রিহাকেই ভালোবাসে।
.
বাসায় ফিরে রিহা আবার রান্না করে সানভির জন্য তারপর সবকিছু গুছিয়ে দিয়ে সানভির কাছে যায়।
সানভি তখন সিগারেট খাচ্ছিলো। রিহাকে দেখে সিগারেটটা ফেলে দিয়ে বলে,
– কিছু বলবে?(সানভি)
.
– আমাকে যেতে হবে।(রিহা)
.
– আচ্ছা যাও।(সানভি))
– ওয়েট দাড়াও (সানভি)
সানভি রিহার হাতে ড্রেসটা দিয়ে বলে,
– যদি শাড়ি পড়তে ইচ্ছা না করে তাহলে কালকে থেকে এইটা পড়ে এসো।(সানভি)
রিহা কিছু বলতে গিয়েও বলতে পারেনা।
কারন সে জানে সানভি আর তার কোনো কথাই শুনবেনা।
.
সানভি রিহার দিকে তাকিয়ে থাকে। কেমন জানি এক মায়া আছে রিহার চোখে। যা বারবার সানভিকে আকৃষ্ট করে।
বাসায় ফিরার পথে বাজার করে রিহা।
বাসায় ফিরতে ফিরতে সন্ধা হয়ে যায়।
বাসায় গিয়ে আবারো রান্না করে রিহা তারপর সবাই মিলে খায়।
.
– মা আমি স্যারের বাসায় থাকবোনা বলেছি। আমি বাসা দেখতাছি দুই একদিনের মধ্যেই নতুন বাড়িতে উঠবো।(রিহা)
– তুই যা খুশি কর। পুরো পরিবারটা তো তুই ই চালাচ্ছিস আমাকে বলার কি আছে?(মা)
– আম্মু কি বলো তুমি এসব? (রিহা)
– আচ্ছা তুই খা এখন।(মা)
– আচ্ছা।(রিহা)
.
ঘুমানোর আগে রিহা ভাবতে থাকে। সানভি তাকে বলছিলো তাকে ভালোবাসতে হবে। কিন্তু কই আমিতো এসবের কিছুই করতাছি না। আর সানভিও তো তেমন কিছু বলেনা। যাই হোক তবে সানভিকে কখনো বুঝার চেষ্টা করিনি সে কেমন। শুধু অবহেলা আর অপমানই করেছি। সবসময় ভেবেছি টাকাই সব। যার টাকা নাই তার কিছুই নাই।
ওদিকে সানভি ভাবতাছে কালকে রিহাকে ভালোবাসারর কথাটা বলতে হবে।
.
চলবে?