ভাড়াটে বউ
লেখকঃ সানভি আহমেদ সাকিব।
পর্ব ৪
.
পরের দিন সকালে রিহা সবকিছু গুছিয়ে নিয়ে রওনা দেয় সানভির কাছে। ভাবতাছে সানভির বাসায় উঠাটা কি ঠিক হবে?
এখনো ঠিক করেনি রিহা যে সানভির বাসায় উঠবে।
মনে মনে ভাবতাছে সানভির এতো কাছে থাকাটা উচিত হবে কি?
ভাবতে ভাবতে সানভির বাসায় চলে আসে সানভি।
দরজায় নক করতেই দরজা খুলে যায়।
মনে হয় দরজা খোলাই ছিলো।
ভিতরে ঢুকে রিহা ব্যাগটা রেখে সোজা রান্নাঘরে চলে যায়।
সানভি এখনো ঘুমাচ্ছে তাই ডাকেনি তাকে।
রান্না করতে করতে গুনগুন করে গান গাইতে থাকে রিহা।
রান্না শেষ করে সানভির রুমেরর বাইরে দাড়িয়ে বলে,
– স্যার আসবো?(রিহা)
-…..
– স্যার আসবো?(একটু জোরে)
সানভির ঘুম ভেঙে যায়। উঠে বসে বলে,
– হ্যা আসো।(সানভি)
– স্যার আপনি ফ্রেস হয়ে নিন রান্না হয়ে গেছে। (রিহা)
– কখন আসলে আর রান্নাই বা করলে কখন?(সানভি)
– আসছি অনেকক্ষণ হলো আপনি ঘুমাচ্ছিলেন তাই ডাকিনি।(রিহা)
– ঠিক আছে আমি আসতাছি।(সানভি)
.
বলেই ফ্রেস হতে চলে যায়। হাত মুখ ধুয়ে এসে খেতে বসে সানভি। রিহা সানভির প্লেটে খাবার দিতে দিতে বলে,
– স্যার আমি আপনার বাসায় থাকতে পারবোনা।(রিহা)
– কেনো?(সানভি)
– আমারর লাগবেনা স্যার আমি আর আম্মু ওখানেই থাকতে পারবো।(রিহা)
– আমি তোমাকে করুনা করিনি আমি ভালোবেসে দিয়েছি।(সানভি)
– মানে?(রিহা)
– কিছুনা। তোমাকে ওইটা নিতে হবে।(সানভি)
– প্লিজ স্যার আমি পারবোনা।(রিহা)
চাবিটা সানভির সামনে রাখে রিহা।
অনিচ্ছা সত্তেও চাবিটা নেয় সানভি।
বুঝতে পারেনা রিহা কেনো এমন করলো। যাই হোক খাওয়ায় মন দেয় সানভি। রান্নাটা খু্ব ভালো হইছে। ভাবতেই অবাক লাগে যেই মেয়ে এক গ্লাস পানি পর্যন্ত নিজে নিয়ে খেতোনা সেই মেয়ে এতো ভালো রান্না কিভাবে করে?
.
পেট ভরে খায় সানভি। অনেকদিন পর একটু বেশিই খেয়ে ফেলছে। তবে খারাপ লাগছেনা তার। রিহার কথা খেয়াল হতেই সানভি বলে,
– তুমিও খেয়ে নাও।(সানভি)
– হুমম আচ্ছা।(রিহা)
.
সানভি রুমে চলে যায় রিহা খেতে বসে।
সানভি ল্যাপটপ টা বের করে কাজ করতে থাকে।
রিহা খাওয়া শেষ করে সবকিছু গুছিয়ে নিয়ে সানভির জন্য চা বানিয়ে নিয়ে যায়।
সানভির এরকমই ফিল হচ্ছিলো কি জানি নাই।
তখনই রিহা চা নিয়ে এলো। মনে মনে বেশ খুশি হলো সানভি।
.
রিহা সানভির পাশে এসে বসে। দেখতে থাকে কি করে সে।
কিন্তু কিছুই বুঝতে পারেনা সে। তারপরও বোকার মতো দেখতে থাকে। রিহা সানভির পাশে বসায় সানভি অন্যমনস্ক হয়ে পড়ে।
মনে মনে ভাবে আজকে একটু বাইরে থেকে ঘুরে আসা যাক। কিন্তু কোথায় যাবে এটাই বুঝতে পারেনা।
শপিংয়ে যাবে ভাবতাছে।
কাজ শেষ করে সানভি ওয়ারড্রপ থেকে রিহার জন্য একটা শাড়ি বের করে রিহাকে ডাকে,
– রিহা এদিকে আসো।(সানভি)
– জ্বি বলুন।(রিহা)
– শাড়িটা পড়ে নাও শপিংয়ে যাবো।(সানভি)
– স্যার শপিংয়ে যাবেন তাহলে যান আমাকে কেনো ডাকতাছেন?(রিহা)
– তুমিও যাবে তাই।(সানভি)
– আমি কেনো? আপনি যান।(রিহা)
– না তুমিও যাবা। যাও শাড়িটা পড়ে এসো।(সানভি)
– আচ্ছা। (রিহা)
.
শাড়িটা হাতে নিয়ে রিহা চলে যায়।
সানভিও রেডি হয়ে অপেক্ষা করে রিহার জন্য।
কিন্তু প্রায় দশমিনিট পর ও রিহা বের হয়না দেখে সানভি দরজায় নক করতে যায়। দরজার সামনে দাড়াতেই দরজা খুলে রিহা। দরজা খুলেই সানভিকে সামনে দেখে ঝোক সামলাতে না পেরে পরে যায় সানভির ওপর।
।
ফ্লোরে পড়ে গিয়েও ব্যাথা পায়না রিহা।
পুরো শরিরটা সানভির ওপর ব্যাথা পাবে কিভাবে।
সানভি রিহার চোখের দিকে তাকিয়ে আছে।
এতো কাছে থেকে রিহার চোখ কখনো দেখেনি সানভি।
অদ্ভুত সুন্দর লাগে রিহার চোখ। চোখে কাজল দিয়েছে কপালে টিপ ঠোটে লিপস্টিক তবুও কি জানি নাই। কেমন জানি অসম্পুর্ন লাগছে রিহাকে।
রিহা উঠে দাড়িয়ে নিজেকে সামলে নেয়।
সানভির দিকে হাত বাড়িয়ে দেয় রিহা।
সানভি রিহার হাত ধরতেই শরিরে যেনো কারেন্টের শক খায় সানভি। হার্টবিট ৪ গুন বেড়ে গেছে তার। শীতল নরম হাতটা ধরে বুঝতে পারে ভালোবাসার মানে কি।
কিন্তু শুধুই এক তরফা। কেও জানেনা ওপাশের মানুশটা এখন কি ভাবছে। তবে রিহা যে লজ্জা পাচ্ছে এটা সানভি ঠিকই বুঝতে পারে।
উঠে দাড়ায় সানভি। পায়ে বেশ লেগেছে তবে সমস্যা হবেনা।
.
সানভি রিহাকে নিয়ে বাইরে এসে গাড়িতে উঠে।
সানভি গাড়িতে উঠে রিহার দিকে তাকায়।
রিহা পেছনে বসতে যেতেই সানভি বলে,
– সামনে এসে বসো।(সানভি)
– জ্বি স্যার। (রিহা)
রিহা সামনে এসে বসতেই সানভি গাড়ি স্টার্ট করে।
রিহা চুপচাপ রাস্তা দেখে। চন্ঞল মেয়েটাকে এরকম চুপচাপ দেখতে মোটেও ভালো লাগছেনা সানভির।
,
– রিহা একটা কথা বলবো?(সানভি)
– বলেন(রিহা)
– তোমাকে এরকম চুপচাপ ভালো লাগেনা।তুমিকি আমাকে ভয় পাও নাকি লজ্জায় কথাথা বলোনা কোনটা?(সানভি)
– কোনোটাইনা। (রিহা)
– আচ্ছা তুমি আমার ফ্রেন্ড আজকে থেকে ঠিক আছে? এখন তো কথা বলবা আর আমাকে স্যার বলবা না।(সানভি)
– আচ্ছা বলুন তাহলে কি কি কিনবেন?(রিহা)
কেমন জানি লাগে রিহার কাছে সানভির সাথে কথা বলতে।
বারবার মনে হয় বেশি কথা বললে সানভির প্রেমে পড়ে যাবে তাই কথা বলেনা।
– কিনবো অনেককিছু তুমি কিছু কিনবা?(সানভি)
– না স্যার আমার লাগবেনা কিছু।(রিহা)
– আবারো স্যার?(সানভি)
– সরি। সানভি।(রিহা)
– হুমম আচ্ছা একটা গান গাওতো।(সানভি)
– আমি গান পারিনা।(রিহা)
– আচ্ছা থাক তাহলে।(সানভি)
.
পুরো রাস্তা কথা বলতে বলতে যায় সানভি। কথা বলতে বলতে কিছুটা জড়তা কেটে যায় রিহার।
মনেই হয়না এটা তার জব। সানভিকে কিছু একটা বলতে যাবে সানভিকে এমন সময় ফোনটা বেজে উঠে রিহার।
.
চলবে??