ভাড়াটে বউ পর্ব-০২

0
2789

ভাড়াটে বউ
লেখকঃ সানভি আহমেদ সাকিব।
পর্ব ২
.
রিহা মাথা নিচু করে ভিতরে ঢুকে। সানভি বুঝে যায় রিহা চাকরিটা করবে। রিহা সানভির বেডরুমে ঢুকে দেখে রুমটা অগোছালো হয়ে আছে। সানভি ফ্রেস হতে চলে যায়।
ততক্ষণে রিহা রুমটা গুছিয়ে ফেলে। অগোছালো জিনিস তার ভালো লাগেনা। আর এটাতো এখন তার কাজ হয়ে গেছে।
.
সানভি ফ্রেস হয়ে এসে দেখে রুমটা পরিষ্কার গোছানো।
রিহা করেছে সব বুঝতে পারে সে। রিহার দিকে তাকিয়ে দেখে জানালা দিয়ে ভোরের সুর্য দেখছে।
সানভির ডাকে ঘোর ভাঙে রিহার,
– রিহা?(সানভি)
– হ্যা বলুন?(রিহা)
– তুমি বলতে হবে আমাকে।(সানভি)
– তু তুমি বলতে হবে? (রিহা)
– হ্যা তুমি বলতে হবে।(সানভি)
– আচ্ছা বলো কি বলবা।(রিহা)
– চলো ভোরের সুর্য দেখবো।(সানভি)
– আচ্ছা।(রিহা)
.
ছাদে যায় দুজনে।গিয়ে দেখে দুইটা চেয়ার আর একটা ছোট্ট টেবিল রাখা আছে। আর টেবিলের ওপর গরম গরম চা বিস্কুট।
– নাও চা খাও।(সানভি)
রিহা চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে ভাবে
এটা কি চাকরি নাকি অন্যকিছু? চাকরের মতো খাটানোর জায়গায় এতো ভালোবাসছে কেনো? এমন ভাবে কথা বলছে যেনো আমি তার অতিথি।
সে যাই হোক অনেকদিন হলো এভাবে সুর্য দেখিনা।
মনে মনে সানভিকে ধন্যবাদ দেয় রিহা।
.
সানভি জিজ্ঞেস করে,
– বিয়ে করেছো?
যদিও সে জানে রিহা বিয়ে করেনি তারপরও জিজ্ঞেস করে।
– না বিয়ে করলে তো আর তোমার কাছে আসতে পারতাম না।(রিহা)
– তাও ঠিক। তবে বিয়েটা করে নিও। আর একটা কথা আজকে যাওয়ার আগে আমার বাসার নিচে যে ঘরটা আছে ওটার চাবি নিয়ে যেও।কালকে থেকে তোমরা ওখানে থাকবে।(সানভি)
– না না থাক লাগবেনা(রিহা)
– আমি জানি তোমার লাগবে।(সানভি)
– এতোটা ভালো কেনো তুমি?(রিহা)
.
সানভি উত্তর দেয়না।
রিহার নিজেকে বড্ড অপরাধি মনে হয়। এই সেই রিহা যে সানভি গরিব বলে অপমান করতো। আজ সেই সানভি তার থাকার জায়গা করে দিলো।
বাস্তবতা বড়ই কঠিন। সময় কখনো নিজের অনুকুলে থাকেনা।
সানভি রিহার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলে,
– বিরিয়ানি রান্না করতে পারো?(সানভি)
– পারি। (রিহা)
– আমাকে রান্না করে খাওয়াবে?(সানভি)
– হুমমম।(রিহা)
.
চোখের কোনে জল চিকচিক করে উঠে রিহার।
সানভিকে বুঝতে না দিয়ে রান্নাঘরের দিকে পা বাড়ায় রিহা।
সানভি পেছন পেছন যায় রিহার।
রান্নাঘরে ঢুকে রিহা দেখলো সবকিছু গোছানো আছে তাই কষ্ট করতে হলোনা।
রিহা কাপড়টা কোমরে গুজে রান্না করতে লাগলো।
সানভি রান্না ঘরে ঢুকে আরো একবার ক্রাশ খেলো।
কেনো জানি রিহাকে বউ বউ লাগতাছে। যদিও সে তার কিছুই না তবুও মনে হচ্ছে জড়িয়ে ধরে কানের লতিতে একটা কিস করি।
.
সানভি নিজেকে সামলে নিয়ে জিজ্ঞেস করে,
– কাদতাছো কেনো?(সানভি)
– পেয়াজের ঝাঝে।(রিহা)
সানভি আস্তে করে বলে,
– কিছু পেয়াজের ঝাঝ একদিন ঠিকই কমে যায়।
আস্তে বললেও কথাটা রিহার কান এড়ায় না।
বুঝতে পারে তাকে উদ্দেশ্য করেই কথাটা বললো সানভি।
কথাটা তো সত্তিই একদিনন সেও এইরকমই ছিলো।
আর এখন হাহাহা। ভাবতেই কেমন লাগে।
.
আনমনে পেয়াজ কাটতে থাকে রিহা।
হঠাৎ আঙুলটা কেটে যায় রিহার। রিহা হালকা আওয়াজ করে উঠে।
সানভি রিহার কাছে এসে দেখে বেশ কিছুটা কেটে গেছে।
দৌড়ে রুমে যায় সানভি। স্যাভলন আর ব্যান্ডেজ কাপড় নিয়ে আসে সানভি।
,
তারপর হাতটা ধরে রিহার।
ঠান্ডা পানিতে হাতটা ধুয়ে নিয়ে স্যাভলন দিয়ে ধুয়ে দেয় তারপর ব্যান্ডেজ করে দেয়।
রিহা আবার ছুড়ি ধরতেই সানভি ধমক দেয়,
– হইছে আর রান্না করতে হবেনা। আমি করছি দেখো।(সানভি)
– তুমি কেনো করবা আমিই পারবো।(রিহা)
– আচ্ছা তুমিই করো আমি হেল্প করতাছি।(সানভি)
.
তারপর দুজনে মিলে রান্না করে।
রান্না শেষ হওয়ার পর রিহা জিজ্ঞেস করে,
– কোথায় খাবেন?টেবিলে নাকি রুমে?(রিহা)
– রুমে নিয়ে আসো।(সানভি)

যেহেতু বা হাতে কেটেছে তাই সানভির উদ্দেশ্য হলো রিহার হাতে খাবে। মানে রিহা তাকে খাইয়ে দিবে।
খাবার রুমে নিয়ে আসে রিহা। তারপর বলে,
– স্যার আপনার খাবার।(রিহা)
সানভি রিহার দিকে তাকিয়ে বলে,
– তুমি খাইয়ে দাও।(সানভি)
– স্যার খাইয়ে দিবো মানে?(রিহা)
– খাইয়ে দিবা মানে খাইয়ে দিবা।(সানভি)

রিহা উপায় না পেয়ে সানভিকে খাইয়ে দেয়।
সানভি জিজ্ঞেস করে,
– সকালে খেয়েছো কিছু??(সানভি)
– না।(রিহা)
– হা করো।(সানভি)
– স্যার আমি খেয়ে নিবোনি সমস্যা নাই।আপনি খান।(রিহা)
– আমি যা বলছি তাই করো।(সানভি)
রিহা ছোট্ট করে হা করে।
সানভি কিছুটা খাবার রিহার মুখে তুলে দেয়।
অনেকদিনের অপুর্ন ইচ্ছাটা পুরন করে সানভি।
রিহার চোখ দিয়ে অবিরত পানি পড়ছে।
সানভি তাকে এখনো ভালোবাসে এতে কোনো সন্দেহ নেইই রিহার।
.
#______চলবে_____?

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে