#ভালোবাসার_রং (❣️You are my Lifeline ❣️)
#Part_11
#Ishita_Rahman_Sanjida_(Simran)
আকিব: কিছু হয়নি মানে,,,, কি হয়েছিল,,,,
(উঠতে উঠতে মাথায় হাত দিল,,,)উফফফ মাথাটা ঘুরছে খুব,,,,,,
তখনই আকিবের চোখ গেল মাটিতে পড়ে থাকা মদ আর গ্লাসের দিকে,,,,আকিব আস্তে আস্তে বিছানা থেকে উঠে দাঁড়ায়,,,,,,
আকিব: কালকে রাতে,,,,,, এতো ড্রিংকস করেছিলাম,,,,,আনহা তুমি একবার আমাকে বারোন করলে না,,,,
আনহা:আ আমি মানে,,,,
আকিব: আমি মানে কি,,,,,
আনহা: ত তুমি তো মদ খেয়েই গেলে আমি অনেক বারন করেছি কিন্তু আমার কোন কথাই শুনলে না,,,,,,,ইশ আমি যদি এখন বলে দেই যে অতিরিক্ত মদ খাওয়ার কারণে কাল রাতের ঘটনা আমার ও কিছু মনে নেই তাহলে তো আকিব রেগে যাবে তার চেয়ে বরং মিথ্যে বলেই কাটিয়ে দেই,,,, (মনে মনে)
আকিব: ওহ শেট,,,,,
আনহা: আরে আকিব কিছু হবে না,,,, একদিন মদ খেলে কিছু হয় না,,,,,
আকিব: কিছু হয় না কে বলেছে এসব,,,, ভাগ্যিস কিছু হয়নি,,,,
আনহা: কিছু হয়নি মানে,,,,(চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে)
আকিব: তুমি কি জানো নেশার ঘোরে মানুষ কত কিছু করে বসে,,,,
আনহা: কি করে,,,,
আকিব: নেশার ঘোরে মানুষ,,,,,,,,,, ক কিছু না,,,, আমি যাই ফ্রেশ হয়ে নেই,,,,
আনহা: না বলে যাও,,,,,, আকিব,,,,,,
আনহার কোন কথা না শুনে আকিব চলে যায়,,,
আনহা: নেশার ঘোরে মানুষ কি করে ???? হুম আনহা এসব ভাবা তোর কাজ না,,
আর শত ভেবেও তুই বের করতে পারবি না,,,
আকিব ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে এলে আনহা যায় ফ্রেশ হতে,,,,, শাওয়ারের নিচে দাঁড়িয়ে আছে আনহা,,,,,,পানি ছিটকে এসে আনহার শরীরের প্রতিটি অঙ্গ ভিজিয়ে দিচ্ছে,,,,আনহা
চোখ বন্ধ করে পানির পরশ অনুভব করছে,,,,
আনহা নিজের সব কষ্টকে এই পানির সাথে মিশিয়ে বের করে দিচ্ছে,,,,, অনেক হয়েছে আর ও কষ্ট পাবে না,,,,কেন জানি সোহানের এরকম করায় কষ্ট ওর হচ্ছেও না,,,, তার কারণটাও খুঁজে পাচ্ছে না,,,,, খোঁজার চেষ্টা ও করছে না,,,, লম্বা শাওয়ার নিয়ে আনহা বের হয়,,,, কিন্তু রুমে আকিব কে দেখতে পায় না,,,,,,আনহা রুমের বাইরে চলে আসে,,,,, কটেজের চারপাশে আকিবকে খুঁজতে থাকে
অবশেষে কটেজের পিছনে গিয়ে আকিবের দেখা পায়,,,, বেঞ্চিতে আকিব মনমরা হয়ে বসে আছে,,,,,আনহা গিয়ে আকিবের পাশে বসে ওর কাঁধে হাত রাখে,,,,,,
আনহা: কি হয়েছে,,,,মন খারাপ,,,,
আকিব: সেটা তো তুমি ভালো করেই জানো,,,
(নিচের দিকে তাকিয়ে)
আনহা: দেখ আকিব এখন এসব নিয়ে ভাবার সময় না,,,,জাস্ট রিল্যাক্স,,,,,
আকিব: আচ্ছা আমি বুঝতে পারছি না তুমি এতো কিছুর পরেও এতোটা স্বাভাবিক থাকছো কিভাবে,,,, তুমি তো সোহানকে ভালোবাসতে,,,,, ও তোমাকে ধোকা দিল,,,, এরপরও তোমার একটু ও কষ্ট হচ্ছে না,,,,,,How is this possible,,,,,,,???
আনহা: আমার কষ্ট তখন হয়েছিল যখন আমি সোহানকে রিধির সাথে ওইভাবে দেখেছিলাম,,,, আমার ভালোবাসার মানুষ আমাকে এভাবে ঠকালো সেটা ভেবে তখন আমার খুব কষ্ট হয়েছিল,,,,, কিন্তু পরে যখন সোহান আমার সম্পর্কে বাজে কথাগুলো বলল তখন ওর প্রতি আমার সব ভালোবাসা শেষ হয়ে গেছে,,,,,,,ও কিভাবে বলতে পারল আমার চরিত্র খারাপ,,,,, একবছর আমি ওর সাথে সময় কাটিয়েছি,,,, আর তোমার সাথে একমাস,,,, আর দেখ এই একমাসে তুমি আমাকে যতোটা চিনেছো সোহান তার এক ইঞ্চি ও চিনতে পারেনি,,,, আর তার প্রমাণ ওর কালকের ব্যবহার,,,,, কালকের পরে ওর প্রতি আমার ঘৃণা হচ্ছে,,,,,
আকিব একধ্যানে আনহার দিকে তাকিয়ে ওর কথাগুলো শুনছিল,,,,আনহার কথাগুলো আকিবের কাছে খুব ভালো লাগছে,,,,আকিব মুগ্ধ হয়ে আনহার কথা শুনতে লাগলো,,,,,
আনহা: তাই আমি ঠিক করেছি সোহান নামের কালো ঝড়টাকে আমার জীবন থেকে সরিয়ে দেব,,,, দিয়েছি ও,,,, আর ওকে নিয়ে আমি কখনো ভাববো না,,,,,তাই ওই আপদটাকে কাল রাতেই বিদায় করে দিলাম,,,
দেখ আকিব,,,, আমার মতো করে তোমার ও ভাবা উচিৎ,,,, তোমার লাইফে এখনো কিছুই শুরু হয়নি,,,, লেখাপড়া শেষ করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে তোমাকে,,,,লাইফে তোমার এখন অনেক কিছু করা বাকি,,,,, আর তুমি যদি এখন ছোট একটা ঝড়ে পড়ে যাও তাহলে তুমি আর উঠে দাঁড়াতে পারবে না,,,,,
রিধি আর সোহান অন্যায় করেছে,,,, ওদের অন্যায়ের প্রতিদান তো আমরা দেব না,,,,চলো আজ থেকে তুমি নতুন জীবন শুরু কর,,,
নতুন ভাবে নিজেকে তৈরি করো,,,,,দেখো যে থাকে সে হাজার কষ্ট হলেও থাকে,,,, আর যে চলে যায় তাকে হাজার চেষ্টা করেও আটকানো যায় না,,,,,,সো ভূলে যাও সব
আকিব অপলক দৃষ্টিতে আনহার দিকে তাকিয়ে ছিল আনহা আকিবের হাত ধরে পাহাড়ের কিনারায় নিয়ে যায়,,,,, নিজের হাত দুটো প্রসারিত করে চোখ বন্ধ করে ফেলল,,,,
আকিব চেয়ে চেয়ে আনহাকে দেখছে,,,,
আনহা: আকিব আমার মতো হাত দুটো প্রসারিত করে চোখ বন্ধ করে বাতাস অনুভব করো,,,,, দেখবে সব কষ্ট অসহ্যকর যন্ত্রনা গ্লানি এই বাতাস তোমার থেকে শুষে নেবে,,,,
আর তোমাকে ভালোলাগা ভালোবাসা দিয়ে ভরে দেবে,,,,, ঠিক যেমন গাছ আমাদের থেকে ক্ষতিকর কার্বন ডাইঅক্সাইড নিয়ে অক্সিজেন ফেরত দেয় ঠিক তেমনি,,,,,,
আনহার কথাবলার মধ্যেই আকিব নিজের হাত দুটো প্রসারিত করে দিয়ে চোখ বন্ধ করে শান্ত বাতাস অনুভব করতে করতে আনহার কথাগুলো শুনছিল,,,,,আকিব ঘন ঘন নিঃশ্বাস নিয়ে বাতাসের সাথে ওর সব অতীত গুলো মিশিয়ে দূর দেশে পাঠিয়ে দিচ্ছে,,,,বাতাস থেকে শান্তির গ্লানি গুলো টেনে নিচ্ছে,,,,,,এভাবে ওরা কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকে,,,,,আনহা হাত নামিয়ে আকিবকে ডাকলো,,,,,,
আনহা: কি হলো আকিব,,,, কমেছে তোমার,,,,
আনহা আর কিছু বলতে পারল না,,, তার আগেই আকিব আনহাকে জড়িয়ে ধরল,,,,
আনহা তো পুরাই অবাকের গোডাউন হয়ে গেছে,,,, হঠাৎ করে আকিবের কি হলো যে খুশিতে আটখানা হয়ে আনহাকে এভাবে জড়িয়ে ধরলো,,,,আনহা কিছুই বুঝতে পারছে না,,,,,,
আকিব: থ্যাঙ্ক ইউ সো মাচ আনহা,,,, আমার লাইফটাকে তুমি আবার আগের মতো করে দিলে,,,,, বিশ্বাস করো এখন আমার রিধির কথা মনে পড়ছে না,,,,,,, ওর জন্য কষ্ট ও হচ্ছে না,,,, আমার লাইফটাকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য থ্যাঙ্কস,,,,,,
আনহা: আরে এটা আবার কেমন কথা,,,, থ্যাঙ্কস বলার জন্য জড়িয়ে ধরা লাগে নাকি,,,
শুনেছি বিদেশে নাকি থ্যাঙ্কস বলার সময় জড়িয়ে ধরে,,,, দুঃখ পেলেও জড়িয়ে ধরে,,,,
এই নিয়ম কি বাংলাদেশে চালু হলো,,, নাকি
আকিবই প্রথম চালু করলো,,,, বুঝলাম না কিছু,,,,,আরে কেউ কি আমাকে A to Z পর্যন্ত
সব বোঝাবে,,,,,, (মনে মনে)
হঠাৎ করেই আকিব আনহাকে ছেড়ে দেয়,,,,
একটু লজ্জা পেল আকিব,,,, আনহাকে এভাবে জড়িয়ে ধরার জন্য,,,,,
আকিব: আ,,,ব,,, সরি,,,, আবেগের বশে এটা করেছি,,,, সরি,,,,, (মাথা চুলকাতে চুলকাতে নিচের দিকে তাকিয়ে)
আনহা: ইটস্ ওকে,,,,, এখন চল লাঞ্চ করি,,,
মনটা তো হালকা হয়েছে,,,, এখন চলো,,,
আকিব: ওকে,,,,
আকিব আর আনহা লাঞ্চ করে রুমে গিয়ে কিছুক্ষণ রেস্ট নেয়,,,,, তারপর আনহা আকিবকে জোর করে বাইরে নিয়ে যায়,,,,,
রাস্তা দিয়ে আনহা আকিব হেঁটে যাচ্ছে যাতে মনটা একটু ভালো হয়,,,
আনহা: আচ্ছা আকিব বাড়ি ফিরব কবে সবাইকে দেখতে খুব ইচ্ছে করছে,,,,,,
আকিব: কাল সকালে রওনা হবো,,,,
আনহা: ওহ আচ্ছা,,,,,,আকিব ওই দোকান থেকে বাদাম কিনে নিয়ে আসো,,,,,, হাঁটতে হাঁটতে বাদাম খাওয়ার মজাই আলাদা,,,,,
আকিব: ঠিক আছে,,,, তুমি এখানে দাঁড়াও,,,,
আকিব গিয়ে বাদাম নিয়ে আসে,,,,,
আনহা: এতো বড় প্যাকেট আর এতো বাদাম খাওয়া অসম্ভব,,,,
আকিব: কি করবো দোকানদার দিলো,,,,
আনহা: আচ্ছা প্যাকেট তোমার হাতে রাখো আমি নিয়ে নিয়ে খাবো,,,,,
আকিব: আমি খাব না,,,,,,
আনহা: আমি ছিলে দিচ্ছি তুমি খেও,,,, ওকে,,,
আকিব: ওকে (মাথা ঝাঁকিয়ে)
আনহা হাঁটতে হাঁটতে বাদাম খাচ্ছে আর আকিবকেও খাওয়াচ্ছে,,,,, হঠাৎ করেই আনহার চোখ পড়ল রাস্তার পাশের একটা নদের উপর,,,,আনহা আকিবকে নিয়ে নদের তীরে গিয়ে বসে,,,,,, পা দুটো নদের পানিতে ডুবিয়ে দিলো,,,,,,সেটা দেখে আকিব নিজের প্যান্ট হাঁটুর নিচ পর্যন্ত ভাজ করে পা ডুবিয়ে দিলো,,,,, দুজনের মাঝে বাদামের প্যাকেট রেখে দুজনেই খেতে লাগল,,,,,আনহা এবার বাদাম ছিলে ছিলে পানিতে ফেলতে লাগলো,,,
আকিব : এটা কি করছো,,,,,
আনহা: মাছেদের বাদাম খাওয়াচ্ছি,,,,
আকিব: মাছেরা বুঝি বাদাম খায়,,,,( বলেই আকিব হেসে উঠলো) এই প্রথম শুনলাম,,,,
তাও তোমার থেকে,,,,,
আনহা: হুম,,, জুনিয়র দের থেকেও অনেক কিছু শেখার আছে বুঝলে,,,,,
আনহা আর আকিব বসে বসে গল্প করছে আর একেকটা করে ঢিল ছুড়ছে পানিতে,,,,, সাজেকের সুন্দর বিকেল আর মনোরম দৃশ্য উপভোগ করছেসন্ধ্যায় ওরা কটেজে ফিরে আসে,,,,,, রাতে আনহা সব ব্যাগ পত্র গুছিয়ে নেয়,,,,,,
।
।
।
।
।
।
পরের দিন সকালে ব্রেকফাস্ট সেরে দুজনে বাড়ির দিকে রওনা হলো,,,,,,ম্যানেজারের গাড়িতে করে ওরা বাস স্ট্যান্ড পর্যন্ত আসে তারপর বাসে করে চট্টগ্রাম আসে,,,,,, তারপর ওখান থেকে ট্রেন ধরল,,,,, রিমি ওদের বলেছিল ফ্লাইটে আসার কথা কিন্তু আনহা বারন করেছে,,,,ট্রেনে আসবে বলে,,,,, ট্রেন জার্নি ওর খুব ভালো লাগে,,,,,ট্রেনে করে আসার কারণে ওদের ফিরতে অনেক রাত হয়ে যায়,,,,, ক্লান্ত থাকার কারণে আকিবের মা ওদের রুমে পাঠিয়ে দেয়,,,,ফ্রেশ হয়ে দুজনে ঘুমের দেশে পাড়ি দেয়,,,,,
সকাল বেলা ফোনের আওয়াজে আনহার ঘুম ভেঙ্গে যায়,,,,ফোন হাতে নিয়ে দেখল সোহানের ফোন,,,,এটা দেখেই আনহার মেজাজ গরম হয়ে যায়,,,,,, সকাল সকাল মুডের বারোটা বাজিয়ে দিল ফোন রিসিভ করে,,,,,বলল,,,,
আনহা: তোর সাহস তো কম না তুই আমাকে ফোন করেছিস,,,,,
সোহান: দেখ আনহা তোমার সাথে আমার কিছু কথা আছে,,,,,
আনহা: বাট তোমার সাথে আমার কোন কথা নেই,,,,,
সোহান: প্লিজ আনহা একবার আমার কথা শোন,,,,
আনহা: না তোমা,,,,,,
আকিব আনহার হাত থেকে ফোন নিয়ে নেয়
আকিব: মিস্টার সোহান,,,,,অন্যের ওয়াইফকে বিরক্ত করার ফল কি হতে পারে সেটা আপনার নিশ্চয়ই জানা আছে,,,,সো এরপর যদি দেখি আপনি আনহাকে কল করেন তাহলে কিন্তু ভালো হবে না,,,,,আশা করি আপনি বুঝতে পারছেন,,,, ওকে বাই,,,
আকিব ফোন কেটে দিল,,,,,,আনহা আকিবের দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে ছিল এতোক্ষণ,,,,,আকিব ফোন কেটে দেওয়ার পর ওর দিকে ছোট ছোট চোখে তাকায়,,,,
আনহা: তুমি কখন ঘুম থেকে উঠলে,,,,,
আকিব: তুমি যেভাবে চেঁচিয়ে কথা বলছিলে আমি কেন বাড়ির সবার ঘুম ভেঙ্গে গেছে,,,,
আনহা: সোহানকে এসব কি বললে,,,,
আকিব: তোমাকে হেল্প করলাম,,,, সোহান আর তোমাকে বিরক্ত করবে না,,,,
আনহা আকিবের হাতে একটা চিমটি কেটে চলে গেল ফ্রেশ হতে,,,,,
আকিব: আউচচ বাবা,,,, কি রামচিমটি দিলো রে,,, ওকে আমার ও সময় আসবে,,,,,, (ব্যথা স্থানে হাত বুলাতে বুলাতে)
আনহা তোয়ালে দিয়ে মুখ মুছতে মুছতে বেরিয়ে এসে দেখে দেখে আকিব বিছানায় বসে আছে,,,,,, আর হাত ডলছে,,,,,,
আনহা: হোয়াট হ্যাপেন্ড আকি,,,,,,ব,,,,,
আকিব: নট হ্যাপেন্ড,,,,, শুধু একটা রামচিমটি খেয়েছি,,,,,তাও আবার এক শাকচুন্নীর হাতে
আনহা: কি আমি শাকচুন্নী,,,,, (কটমট করে তাকিয়ে)
আকিব: আমি কি সেটা বলেছি,,,,
আনহা: তুমি তো সেটাই বললে,,,,,
আকিব: না,,, আমি বলিনি,,,,,
আনহা: তুমি বলেছ,,,,, চেঁচিয়ে,,,,
আকিব: এইতো শাকচুন্নীর রুপ ধারণ করে দিয়েছে,,,, আমি এখন কোথায় লুকাই,,,,,,
আনহা: আকি,,,,,ব,,,,
হাতের তোয়ালেটা আকিব মুখের উপর ছুড়ে মেরে রুম থেকে বেরিয়ে যায়,,,,,,আকিব হাসতে হাসতে তোয়ালে টা সরিয়ে ফ্রেশ হতে চলে যায়,,,,,,তারপর নিচে আসে ব্রেকফাস্ট করতে,,,,আনহা সবাইকে খেতে দিচ্ছে,,,,,,
রিমি আর ওর মা বসে বসে খাচ্ছে,,,,, আকিবকে দেখে রিমি বলে উঠলো,,,,,,
রিমি: কি রে আকিব কেমন কাটলো,,,,, তোদের হানিমুন,,,,,
রিমির কথায় আনহা আর আকিব দুজনের দিকে তাকিয়ে শুকনো ঢোক গিললো,,,,
রিমি: এই কথা কানে যাচ্ছে না তোর,,,,
আকিব: আপু ছাড়ো তো এইসব,,,, তানভীর ভাইয়া কোথায়,,,,,,
রিমি: বাবার সাথে অফিসে গেছে,,,রাকিব ভাইয়া তো নেই,,,,বাবা একা সামলাবে কিভাবে আর তুই তো তুইই,,,,,
আকিব: আমি মানে,,,, এখন আমার দোষ কোথা থেকে আসল,,,,,পড়ালেখা শেষ হাওয়ার আগেই তো বিয়ে করিয়ে দিলে,,,,, আর এখন দোষ আমার হলো,,,,,
রিমি: এই গাধা আমি তোকে কিছু বলেছি নাকি,,,
আকিব: তোমার কথাতেই বোঝা যায় তুমি কি বলতে চেয়েছ,,,,,
রিমি: দেখ আকিব,,,,
মা: আহ হচ্ছে কি এসব,,,,তোরা চুপ করবি,,,,
খাওয়ার সময় এতো কথা বলে না,,,,
।
।
।
।
।
।
।
।
তিনদিন পর আকিব ভার্সিটিতে যায় কিন্তু আনহা যায় না,,,, শুধু নতুন নতুন অজুহাত দেখায়,,,,আকিব তাই একাই চলে যায়,,,,,
আনহা সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামছে,,,,, হঠাৎ করে প্লাজুতে পা পেঁচিয়ে নিচে পড়ে যায় মাথায় হালকা আঘাত পাওয়ায় অজ্ঞান হয়ে যায়,,,,,
রিমি সোফায় বসে টিভি দেখছিল,,,,ও দৌড়ে আসে,,,,আকিবের মা ও এসে আনহাকে নিয়ে
সোফায় শুইয়ে দেয়,,,, মুখের উপর পানির ছিটা কয়েকবার দেওয়ার পর আনহার জ্ঞান ফেরে,,,,,,,
মা: আনহা কি হয়েছিল তোমার,,,, পড়ে গেলে কিভাবে,,,,
আনহা: এখন কি বলি,,,,,যদি বলি প্লাজোতে আটকে পড়ে গিয়েছি তাহলে এতো গুলো বকা দিবে,,,, (মনে মনে) আ আসলে হঠাৎ মাথা ঘুরে গিয়েছিল,,,,,,
রিমি: ওহ,,,,,, মাথা ঘুরালে তেঁতুল খেলে মাথা ঘোরানো কমে,,,,,ওয়েট আমি নিয়ে আসছি,,,
রিমি আনহাকে তেঁতুল এনে দিল,,,,,আনহা তেঁতুল একটু মুখে দিয়েই ওয়াক ওয়াক করতে করতে বাথরুমে গিয়ে বমি করে দিল অন্যসব মেয়েদের মতো ও তেঁতুল একদম খেতে পারে না তাই বমি করে দিলো,,,,,
আনহার এহেম কান্ডে আকিবের মা রিমি কিছু একটা সন্দেহ করলো,,,,,রিমি ওর মায়ের দিকে তাকিয়ে একটু মুচকি হাসলো,,,,,
!
!
!
!
!
!
!
!
দুপুরে আকিব ভার্সিটি থেকে বাড়ি আসতেই আনহা গিয়ে চেপে ধরে,,,,
আনহা: আকিব তোমার বাড়ির লোকেদের মাথায় গন্ডগোল আছে সেটা আগে বলোনি কেন,,,,,
আকিব: মানে,,,, কি বলছো কিছুই বুঝতে পারছি না তোমার কথা,,,,
আনহা: সকালে একটু মাথা ঘুরে পড়ে গিয়েছিলাম,,,, আর ওনারা উল্টাপাল্টা ভেবে
ডক্টরের কাছে নিয়ে গেল,,,,
আকিব: ঠিকই তো করেছে,,,, অসুস্থ হলে তো ডক্টরের কাছে নিয়ে যাবে,,,,, এতে মাথা খারাপের কি হলো,,,,
আনহা: আরে আমাকে ডক্টরের কাছে নিয়ে গিয়ে প্রেগনেন্সি টেস্ট করিয়েছে,,,,
আকিব: কি,,,,,,,,,,,,,
আনহা: আজ্ঞে হ্যাঁ,,,,,, এখন কি করব,,,, বিকেলে রিপোর্ট আনতে ডক্টরের কাছে যেতে হবে,,,, এখন কি করব,,,,
আকিব: কি করবে মানে,,,,,চাপ নিও না,,,,
নেগেটিভই তো আসবে,,,,,
আনহা: কিন্তু যদি,,,,,
আকিব: যদি কি,,,,, তোমার কি কোন সন্দেহ আছে নাকি,,,,,
আনহা: আকিব তুমিও,,,,,
আকিব: ওকে রিল্যাক্স,,,, কিছু হবে না দেখো
আকিব ফ্রেশ হতে চলে যায়,,,,,
।
।
।
।
।
বিকেল বেলা,,,,,
ডক্টরের চেম্বারে আনহা আকিব রিমি তানভীর
বসে আছে,,,,,
রিমি: ডক্টর রিপোর্ট এ কি এসেছে,,,,,
ডক্টর একজনকে কল করে বলল আনহার রিপোর্ট দিয়ে যেতে,,,, আনহার রিতিমত অস্বস্তি লাগছে না জানি কি আসে রিপোর্টে,,,,
এমন সময় একজন এসে রিপোর্ট দিয়ে যায় ডক্টর সেটা নিয়ে চেক করছে,,,
আকিব আর আনহা ডক্টরের দিকে তাকিয়ে আছে,,,,দুজনেই অস্থির হয়ে গেছে,,,,,
রিমি: ডক্টর কি আছে রিপোর্টে,,,,,
ডক্টর: Congratulations মিস্টার আকিব,,,,
আপনার ওয়াইফ প্রেগন্যান্ট,,,,, আপনি বাবা হতে চলেছেন,,,,,,
ডক্টরের কথায় আনহা আর আকিব বসা থেকে দাঁড়িয়ে যায়,,,,,এটা কি করে সম্ভব আনহা প্রেগন্যান্ট,,,, How is this possible???
চলবে,,,,,,,,