#ভালোবাসার_রং_বদল
#Abanti_Islam
#Part:3
সাহারা বেগম এখানে এসে বস তোমার সাথে আমার কিছু কথা আছে। অনু জি বলুন কি বলতে চান।
— অভি বলেছে ও তোমাকে ভালোবেসে বিয়ে করেছে। আর তোমার পরিবার মেনে নেয় নি। তাই তুমি বাসা থেকে চলে এসেছ। যার জন্য হঠাৎ করে তোমাকে এই ভাবে নিয়ে এসেছে। এখন আমার প্রশ্ন? তোমরা ভালো বেসে বিয়ে করলে, তোমাদের মধ্যে এত ঝামেলা কেন।
অনু উনার কথা শুনে আমি কি বলব ভেবে পাচ্ছি না!
— কিছুক্ষন উনার দিকে তাকিয়ে থেকে বলতে শুরু করে। আপনার মনে হয় আমি আপনার ছেলেকে ভালোবাসি। এটা যদি ভুল করেও ভেবে থাকেন সেটা আপনার পৃথিবীতে সব খেকে বড় ভুল ছাড়া, আর কিছু হবে না। আর বাকি বিয়ে সেটা আপনার ছেলেকে জিগ্যেসা করে দেখবেন। কি ভাবে বিয়ে করেছে আমাকে? কোন পরিস্থিতি নিয়ে এসেছে। আপনার এই ছেলে যদি মরেও যায়! তাহলেও আমার কিছু যায় আসবে না। বলে ওখান থেকে চলে যায়।
সাহারা বেগম অনুর চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে। আর নিজের মনে ভাবল অনেক বড় ভুল করেছে অভি।এই মেয়ে কোন কিছুতে বস হওয়ার মেয়ে নয়।
_______________
এখন অভি একটু একটু হাটতে পারে। অনু বারান্দায় দাড়িয়ে আছে।অভি অনুকে পেছন থেকে ঝরিয়ে ধরেছে।
— হঠাৎ করে কেউ ঝরিয়ে ধরাতে অনু কিছুটা চমকে যায়।নিজেকে দূরে সরিয়ে পেছনে ফিরে তাকিয়ে দেখে অভি দাড়িয়ে আছে।অনু অনেকটা রেগে জিগ্যেসা করে সমস্যা কি আপনার কেন আমার সাথে এই রকম করছেন কি চাইছেন। কেন আমার জীবন নষ্ট করে দিচ্ছেন।
অভি অনুর কথায় কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে বলল,,
–তুই কি ভেবেছিস এই সব করে আমার থেকে মুক্তি পাবি? কখনো সেটা হবার নয়, আমি তোকে কোনদিন মুক্তি দিব না। আমাকে সুস্থ হতে দে তারপর তোকে বুঝিয়ে দিব আমি কি জিনিস।
অনু অভির কথায় কিছুক্ষন হেসে বলল,,,
— কি ভাবছিস আমি তোর মত এত খারাপ একজন ছেলের সাথে থাকব কখনো সেটা হবার নয়। আমি মরে যাব কিন্তু তোর মত একজন কে কখনো স্বামী বলে মেনে নিব না। আর তুই কি বুঝাবি আমাকে তার থেকে বেশি আমি তোকে বুঝিয়ে দিব।বলে বারান্দা থেকে চলে আসার সময় অভির বেন্ডেজ করা পায়ে ইচ্ছে করে একটা পারা দিয়ে চলে আসে।
অভি বেথায় চিৎকার দিয়ে উঠে। আর অনু সেই চিৎকার শুনে হাসতে হাসতে নিচে চলে আসে।
— ডাইনিং টেবিলে বসে খাবার খেয়ে চলে কারো দিকেই তাকাচ্ছে না। নিজের মন মতো খাবার খেয়ে শেষ করে।ওখান থেকে হাত ধুয়ে ছাদের দিকে পা বাড়াতে গেলে আহেলী বলে উঠে এই যে নবাব নন্দিনী খাবার খেয়ে চলে যাচ্ছেন। কোন কাজ তো কখনো করেন না। খাবার কি বাবা বাড়ি থেকে নিয়ে এসেছেন। আহেলীর কথা শুনু অনু কিছুক্ষণ ওদের সবার দিকে একবার তাকিয়ে থেকে বলল,,,
— খাবার বাবা বাড়ি থেকে কেন নিয়ে আসব তোমার ভাই কি ফকির হয়ে গেছে নাকি। আর আমি এই বাড়িতে নিজে থেকে আসি নি। তোমার ভাই জোর করে নিয়ে এসেছে। তাই আমার যে ভাবে ইচ্ছে ওই ভাবেই থাকব। আর তোমাদের কাউকে আমার পছন্দ না। তাই এই পরিবারের কোন কাজ বা আমার থেকে ভালো ব্যাবহার আশা করা ভুল। বলে ওখান থেকে চলে আসে।
কুহেলী এর আগে কখনও কেউ আমাদের সাথে এত খারাপ ব্যাবহার করে নি।
সাহারা বেগম এই মেয়েটা অনেক বেশি কথা বলছে এই মেয়েকে যে ভাবে হোক চুপ করতে হবে। নয়ত ঝামেলা দিন দিন বেড়ে যাবে। বলে নিজের মনে হেসে উঠে।
[রোজ ঝামেলা আর নয়ত কারো সাথে তর্ক করে অনুর দিন কেটে যাচ্ছে। এই গুলোর মধ্যে নিজেকে মানিয়ে নিয়েছে অনু কোন কিছুতেই এর আর কিছু যায় আসে না। ]
________________
আমি মাস্টার্স ভর্তি হতে চাই আপনার ছেলেকে ব্যাবস্থা করে দিতে বলুন। খুব কড়া গলায় অনু কথাটা শাশুড়ি মাকে বলল।
সাহারা বেগম কিছুক্ষন চুপ করে থেকে বলল,,,
— এটা কোন ভাবে সম্ভব নয় আমাদের বাড়ির বউ রা বিয়ের পর পড়াশোনা করে না। তাই তোমার পড়াশোনা আর করা হবে না।
অনু উনার কথায় অনেকটা রাগ নিয়ে বলল।আমি নিজেকে আপনার বাড়ির বউ বলে মানি না।আর আমি পড়াশোনা করতে চাই আর করব সেটা যে ভাবে হোক। বলে টেবিল এর উপর থাকা ফুলদানি আছাড় মেরে ভেঙ্গে ওখান থেকে চলে আসে।
অভি রুমে এসে কোন কথা না বলে অনুর চুল গুলো পেছন থেকে মুঠোর মধ্যে নিয়ে বলতে শুরু করে। তোর এত বড় সাহস কি করে হলো তুই আমার মায়ের রুমে ঢুকে নিজের ইচ্ছে মতো জিনিস ভেঙ্গে এসেছিস।
অনু কোন ভাবে নিজেকে অভির থেকে ছাড়িয়ে বলতে শুরু করে যা করেছি বেশ করেছি। কি ভাবছিস তোদের সব কথা আমি মেনে চলব এটা তোদের সব থেকে বড় ভুল ধারনা। এমনটা ভুল করেও ভাবা উচিৎ নয়।
অভি অনুর কথা শুনে অনেক রেগে যায়। যার ফলে অনুকে থাপ্পড় দিয়ে ফ্লোরে ফেলে দেয়। অনু ফ্লোর থেকে উঠতে যাবে তার আগেই লাথি দিয়ে আবার ফ্লোরে ফেলে দিয়ে গলার মধ্যে এক পা দিয়ে দাড়িয়ে থাকে।
এতে অনুর দম আটকে আসে কথা বলতে পারছিল না। অনু অনেক চেষ্টা করে পা সরাতে পারছিল না। একসময় অনুর মুখ দিয়ে রক্ত বাহির হয়ে আসে। অনুর মুখের রক্ত দেখে অভি অনুকে ছেড়ে দেয়। ছেড়ে দেওয়াতে অনুর কাশতে শুরু করে।
অভি অনুকে ফ্লোর থেকে রক্ত মুছে দিতে দিতে বলল কেন এত রাগ করছ। কেন আমাকে একবার বুঝার চেষ্টা করছ না কেন। এটা বলে অনুকে ঝরিয়ে ধরতে গেলে অনু অভিকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে গালের মধ্যে একটা থাপ্পড় দিয়ে উঠে চলে যার বাথরুমে। বাথরুমে বসে ঝড়না ছেড়ে চোখের পানি ফেলে যাচ্ছে।
প্রায় একঘন্টা পর শাওয়ার নিয়ে বাহির হয়ে আসে। এসে দেখে দেখে অভি বিছানায় হেলান দিয়ে বসে আছে। অনু কিছু না বলে চুল মুছে সোফার মধ্যে বসে আছে।
____________
ফোনে কথা বলতে বলতে অভি নিচে নেমে আসছিল তার মধ্যে পা স্লিপ করে শিরি থেকে নিচের দিকে পড়তে থাকে। অভির অবস্থা দেখে সাহারা বেগম দৌড়ে ছেলের কাছে চলে যায়।
অনু চেয়ারের মধ্যে বসে থেকে হেসে যাচ্ছে। কোন কথা বলছে না।
অভির মাথা ফেটে রক্ত পরছে হাত পায়ের অবস্থা খারাপ হয়ে গেছে নাক ফেটে গেছে। আহেলী হসপিটালে ফোন করে এম্ভ্যলেন্স পাঠাতে বলে দেয়। কোহেলি পানি নিতে যেয়ে দেখে অনু মনের সুখে হেসে যাচ্ছে। এটা দেখে রাগে চোখ মুখ শক্ত করে বলল এবার তুমি কি করেছ বল ভাইয়া কেন এই ভাবে পরে গেল।
অনু কিছুক্ষন হেসে বলল,,,,
চলবে,,,,,