#ভালোবাসার_রং_বদল
#Abanti_Islam
#part:2
অনু সোফার মধ্যে এক ধ্যান এ বসে আছে।কোন কথা বলছে না।
অভি: ঘুমাবে না নাকি সারা রাত ওখানে থাকতে চাও।
অনু ঘৃণা লাগে আপনাকে আমার আমি থাকতে চাইনা আপনার সাথে।আপনার মত একজন মানুষ এর মুখ দেখতেও ইচ্ছে করে না আমার।
কথা শেষ না হতেই ওর গালে ঠাস ঠাস শব্দে দুইটা চর দেয়। অনেক সাহস হয়ে গেছে তোর। কালকে রাতের কথা সব ভুলে গেছিস।বলেই বিছানার মধ্যে ফেলে নিজের খেলায় মেতে উঠে অভি।সারা শরীর রক্তাত করে ক্লান্ত হয়ে শুয়ে পরে।অন্য পাশে।
অনু: চোখের পানি ফেলে যাচ্ছে ঘুম যেন তার কাছে এখন বিষাদের মত লাগছে।বারান্দায় বসে চোখের পানি ফেলে যাচ্ছে।
____________
অভির চিৎকার এ বাসার সব লোক এখানে এসে জরো হয়। এসে যা দেখে তার জন্য কেউ প্রস্তুত ছিল না।
সারা ফ্লোর রক্তে লাল হয়ে আছে। ফ্লোরে গ্লাস ভাঙা পরে আছে।
— ঘুম থেকে উঠে যেই মেঝেতে পা রেখেছে তখনি সব কাচের টুকরো অভির পায়ের মধ্যে ডুকে গেছে। তাতেই রক্তে ফ্লোর ভাসছে।
অনু চুপ করে সোফার মধ্যে বসে আছে,,,
চোখে মুখে প্রশান্তির ছাপ ফুটে ওঠেছে দেখে বুঝা যাচ্ছে খুব খুশি হয়েছে।
সাহারা বেগম খুব ঝাঝালো কন্ঠে জানতে চাইল এখানে এই ভাবে কাচের টুকরো কোথা থেকে এসেছে।
অনু কিছুক্ষন উনার দিকে তাকিয়ে থেকে বলল,,,
আমি ফেলেছি এই গুলো বলেই টেবিলের দিকে ইশারা করে বলল ওখানে থাকা কাচের জগ আর গ্লাস ভেঙ্গে এখানে রেখে দিয়েছি।
এটা শুনে অভি রাগে অনুর কাছে আসতে যেয়ে মেজেতে আবার পা রাখে যার ফল আরো কিছু কাচের টুকরো পায়ের মধ্যে ডুকে যায়।
সাহারা বেগম অনুর সামনে প্রচুর রাগ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।চোখ লাল হয়ে আছে মনে হচ্ছে অনুকে শেষ করে দিতেও পারলে খুশি হবে।
তাতে অনুর কোন কিছুর প্রভাব পরছে না ও নিজের মনে হেসে চলেছে। একবার অভি দিকে তো একবার শাশুড়ির দিকে তাকিয়ে হেঁসে যাচ্ছে।
সাহারা বেগম খুব রাগ নিয়ে জানতে চাইল তুই এই রকম কেন করেছে। দেখ ওর পায়ের অবস্থা কি করেছ। এখনো রক্ত পরে যাচ্ছে। এত তোমার কি লাভ হয়েছে।
অনু কিছুক্ষণ চুপে থেকে সবাইকে রুম থেকে বাহির হয়ে যেতে বলল।
ওর সাথে তাল মিলিয়ে সাহারা বেগম চোখের ইশারা করে যেতে বলল।
সবাই চলে যাওয়ার পর অনু ওঠে দড়জা আটকে শাশুড়ির সামনে দাঁড়িয়ে শরীর থেকে শাড়ির আচলটা সরিয়ে বলল। দেখুন আপনার ভালো ছেলে আমার সাথে গত দুইদিন কি কি করেছে আমি তো শুধু উনার পা গুলো ঘত করেছি আর উনি আমার সারা শরীর ঘত করে রেখেছে। কই তখন তো আপনি একবার ও জানতে চান নি।
সাহারা বেগম: অনুর দিকে তাকিয়ে আতকে উঠেছে সারা শরীরে নখের আচড় দেখে মনে হচ্ছে কোন হিংস্র পশু নিজের রাগ মিটিয়েছে।শরীরে রক্তের জমাট বেধে আছে।উনি কিছু না বলে শড়িটা তুলে কাধে দিয়ে দেয়। চোখ থেকে দুইফোটা পানি পরে। ওটা মুছে ছেলের দিকে তাকিয়ে জানতে চায় এই গুলো কি।
অভি: মাথা নিচু করে বসেসাছে বলার মতো কোন কিছু ওর কাছে নাই। কি বলবে রাতে রাগ আর শরীর এর স্বাদ মেটানোর জন্য তো নিজে এই অবস্থা করেছে।
______________
কিছুক্ষণ এর মধ্যে এভ্যালেন্স চলে আসে।অভিকে স্টেজে করে নিয়ে যাওয়া হয়।অনু আগের মত করে সোফার মধ্যে বসে আছে।
সাহারা বেগম অনেক বার বলেছে অনুকে ওনাদের সাথে হসপিটালে যেয়ে ডাক্তার দেখানোর কথা কিন্তু অনু কোন কথা বলে নি। চুপ করে এখানে বসে ছিল।
অন্যদিকে,,,,
অভিকে হসপিটালে ভর্তি আনার পর অপারেশন এর জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। প্রায় ২ ঘন্টা চেষ্টা করার পর পা থেকে সব গুলো কাচের টুকরো বাহির করা হয়।
এখানে ৩ দিন থাকতে হবে তার পর রিলিজ করা হবে। তাই এখানে অভির সাথে ওর বোন আহেলী থাকবে।
কোহেলী আর সাহারা বেগম সন্ধ্যায় বাসায় চলে আসে।
আহেলীকে দেখে বুঝা যাচ্ছে খুব রেগে আছে। অনুকে কয়েকটা কথা শুনাতে পারলে খুশি হবে।
কিন্তু সাহারা বেগম খুব কড়াকড়ি ভাবে নিষেধ করে দিয়েছে জেন অনুকে কিছু না বলা হয়।বলে উনি রুমের মধ্যে চলে যায়।
কোহেলী রাগে গজ গজ করতে করতে নিজের রুমে চলে যায়।
ফ্রেস হয়ে সবাই নিচে চলে আসে খাবার খাওয়ার জন্য।এসে দেখে অনু খাবার খাওয়া শেষ করে প্লেট রেখে রুমে চলে যাচ্ছে।
আহেলী এটা দেখে রেগে যায়।অনুকে কিছু বলার আগেই সাহারা বেগম হাত ধরে চুপ করিয়ে দেয়।মার ভয়ে আহেলী কিছু বলতে পারে নি।
আজকে রাতে খুব আনন্দের সাথে ঘুমিয়েছে অনু অনেক দিন পর এতটা নিস্বচিন্তে ঘুমিয়েছে।
________________
আজকে অভি বাসায় আসবে আমি চাইনা তুমি ওর সাথে কোন খারাপ ব্যাবহার কর। ছেলেটাকে তো আর কম কষ্ট দেও নি তুমি। আপনার ছেলেও আমাকে কম কষ্ট দেয় নি আমি তো তার শিকি ভাগ ও দেই নি। এতেই আপনাআএত কষ্ট হচ্ছে আপনার তাহলে আমার আর আমার বাবা মার কথাটা ভেবে দেখুন তাদের কেমন লেগেছে।বলেই ওখান থেকে অনু নিজের রুমে চলে যায়।
অনু নিজে নিজে গজ গজ করছে আর বলছে অভি চৌধুরী তৈরি থাকুন যতটা কষ্ট আপনি আমাকে দিবেন তার থেকে কয়েকগুন বেশি কষ্ট আপনার নিজের জন্য অপেক্ষা করে থাকবে। অনু ছাড় দেয় কিন্তু কখনও কাউকে ছেড়ে দেয় না।হঠাৎ গাড়ির হর্ন শুনে বেলকনি দিয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে দেখে অভি, আহেলী আর কোহেলী গাড়ি থেকে নামছে। হাটতে পাড়ছে না তার জন্য হুইল চেয়ারে করে নিয়ে আসা হয়েছে।
অনু ওখানে দাড়িয়ে আছে অভি একবার উপরের দিকে তাকিয়ে আবার মাথা নিজের দিকে করে নেয়।
— বাড়ি আসার সাথে সাথে ছেলের কি কি দরকার শরীর কেমন আছে সব কিছুর খোঁজ নিচ্ছে সাহারা বেগম। মা আমি রুমে যেতে চাই এখানে বসে থাকতে ভালো লাগছে না।
— আহেলী আমাকে একটু রুমে নিয়ে যা।
সাহারা বেগম অভির কথা শুনে কিছুটা বিরক্ত হয়ে বলল ওই রুমে এখন তোমাকে থাকতে হবে না তুমি অন্য রুমে থাকবে।আমি তোমার জন্য রুম ঠিক করে রেখেছি।
অভি মায়ের কথা শুনে অবাক হয়ে বলল,,,
— আমি ওই রুমে থাকব আমাকে ওই রুমে দিয়ে আস আমি অন্য কোথাও থাকব না। তোমরা দিয়ে আস তো ভালো নয়ত আমি নিজে চলে যাব।
সাহারা বেগম এর ছেলের রাগ সম্পর্কে খুব ভালো ধারণা আছে একবার যেহেতু বলেছে তাহলে আর কোন কিছুতেই ডিসিশন চেঞ্জ করবে না এটা উনি ভালো করে জানেন তাই আর কথা না বাড়িয়ে বলল ঠিক আছে তোমাকে ওই রুমে থাকতে দেওয়া হবে। কিন্তু অনু অন্য রুমে থাকবে।তোমার সাথে এক রুমে থাকবে না।
—এটা শুনে অভি অনেকটাই রাগ নিয়ে বলল ও আমার বিবাহিত স্ত্রী ও আমার সাথেই থাকবে এটা নিয়ে কোন ধরনের কথা আমি শুনতে চাই না।
সাহারা বেগম কিছু একটা ভেবে বলল,,,
— যাও ভাইয়া কে ওর রুমে দিয়ে আস।আর সাবধানে নিয়ে যাবে। যেন কোথাও ব্যাথা না পায়। আর অনুকে একবার আমার কাছে আসতে বলবে।
দুই মেয়ে মাথা নেড়ে মায়ের কথায় সম্মতি জানিয়ে অভি কে নিয়ে চলে যায়।অভিকে বিছানায় বসিয়ে অনুকে উদ্দেশ্য করে বলল আপনাকে মা ডাকছে।
অনু কিছু না বলে একবার ওদের দিকে নিচে চলে আসে।
চলবে,,,,,